যে সময়ের কথা বলছি, তখন আমি জীবনের চল্লিশটি বসন্ত অতিক্রম করেছি। ভাল-মন্দ বোঝার যথেষ্ট বয়স আমার হয়েছিল। দিনে দিনে দুর্বলতাময় পৌঢ়ত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ভুলগুলো শুধরিয়ে জীবনটাকে নির্মল জান্নাতের উপযোগী করে শুভ্রতায় সাজিয়ে তুলছিলাম। তবুও আমার অবসাদগ
একদা বিমানে একজন মধ্যবয়সী ভদ্রলোক আমার সহযাত্রী ছিলেন। তিনি নিজেকে সঊদী আরবের একটি বড় কোম্পানির উপদেষ্টা হিসাবে পরিচয় দিলেন। পরিচিত হওয়ার সময় আমি তার শৈশব সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। তিনি হাসতে হাসতে বললেন, আমি তোমাকে আমার দুই ছেলের গল্প শোনাব
গল্পটি একজন বাদশাহ ও ফকীরের। বাদশাহ প্রতিদিন প্রত্যুষে তার প্রাসাদের বাইরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতেন। একদা প্রভাতে হাঁটার সময় এক অসহায় ভিক্ষুককে দেখে তার মনে দয়ার উদ্রেক হ’ল। তিনি ভিক্ষুকের নিকটে গিয়ে বললেন, আমি এদেশের বাদশাহ। তুমি যা ইচ্ছা আমার কাছে
বহু দিন আগের কথা। প্রাচীনকালে তিন ব্যক্তি ব্যবসা করত। একবার জঙ্গলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতরা তাদের সমস্ত জিনিস পত্র কেড়ে নেয়। তারা শূন্য হাতে বাড়ী ফিরতে চায়নি। তাই তারা একটি শহরে প্রবেশ করল। নিজেরা পরামর্শ করল, একসাথে কাজ কর
একজন পিতা যিনি তার জীবন-যৌবনে অশ্লীলতা পরিহার করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন, সেই কষ্টকর জীবনে কিভাবে তিনি প্রকৃত সুখ পেয়েছিলেন? আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে প্রিয় সন্তানের প্রতি পিতার মূল্যবান নছীহত।প্রিয় সন্তান,আমি সারাটি জীবন সুখ সুখ করে ক
[ক]পড়ন্ত বিকেলে বৃষ্টি ভেজা দিনে প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। এনায়েতের চায়ের দোকানের আড্ডাটিও জমজমাট হয়ে উঠেছে। মাগরিবের আযান হ’তে তখনও মিনিট পনেরো বাকী আছে। বয়স পঞ্চাশোর্ধ আরাফাত সর্দার বাম হাতে চায়ের কাপ ও ডান হাতে জ্বলন্ত বিড়ি নিয়ে লম্বা টান
মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছে বাদীনী মুনীরা বেগম।যবানবন্দী দিতে আদালতের কর্মচারীর সহায়তায় হলফ পড়ছে ‘যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য ব্যতীত মিথ্যা বলিব না, কোন কথা গোপন করিব না’।স্যার আমি মামলাটি প্রত্যাহার চাই।-মামলা চালাবেন না কেন? প্রশ্ন করি আমি।উনার সা
অনেকদিন আগের কথা। গভীর বনে বাস করত এক শিয়াল এবং তার পাশে বাস করত এক গরু। গরু সহ অন্যান্য প্রাণীর জীবনের কোন নিশ্চয়তা ছিল না। তারা প্রতিনিয়ত বনের হিংস্র প্রাণীদের দ্বারা আক্রান্ত হ’ত। তাই শিয়াল ও গরু মিলে চিন্তা করল বনের নিরীহ প্রাণীদের নিরাপত
এক সৈনিক একবার তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যুদ্ধে গেল। তখন তার স্ত্রী গর্ভবতী। যাবার সময় সে স্ত্রীর কাছে ত্রিশ হাযার স্বর্ণমুদ্রা রেখে গেল। এরপর বহু বছর কেটে যায়। যোদ্ধার ফেরার নাম নেই। অবশেষে দীর্ঘ ঊনত্রিশ বছর পর সে বাড়ি ফিরে আসে। ঘোড়া থ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ মুমিন হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নিজের জন্য যা ভালবাসে তার ভাইয়ের জন্য তা ভালবাসবে’ (বুখারী, ‘কিতাবুল ঈমান’)।ইয়ারমুক যুদ্ধের বিশাল ময়দান। এক প্রান্তে ক্ষুদ্র মুসলিম সেনাদল আর অপর প্রান্তে রো
নারীর বিরহে নারীর মিলনে নর পেল কবিপ্রাণযত কথা তার হইল কবিতা শব্দ হইল গান।রাজা করিতেছে রাজ্য শাসন রাজারে শাসিছে রাণী,রাণীর দরদে ধুইয়া গিয়াছে রাজ্যের যত গ্লানি।মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর স্ত্রী মেহেরুন্নেসার রূপেগুণে মুগ্ধ হয়ে তাঁর নাম দিয়েছিলেন নূর জা
এ জগতে উত্থান-পতন, ভাঙ্গা-গড়ার খেলা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। যাঁর ইশারায় উত্থান-পতন, ভাঙ্গা-গড়ার খেলা সংঘটিত হয়, তিনিই সর্বশক্তিমান আল্লাহ। মানুষ জ্ঞান সাধনা বলে জগতে অনেক কিছু বিস্ময়কর বস্ত্ত আবিষ্কার করে মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মানুষ সময় ও
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। মানুষ আল্লাহর ইবাদত করবে কিন্তু এই ইবাদত করার জন্য মানুষের বেঁচে থাকা অর্থাৎ জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজন হয় কিছু মৌলিক চাহিদা পূরণের। আর এই মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করার জন্য প্রয়োজন হয় অর্থের
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে অধিকাংশ মানুষই নিজের স্বার্থ ও লাভ-লোকসানের চিন্তা করে। এ লাভ-লোকসানের হিসাব কষতে গিয়ে কখনও সে নিজের স্বজনকে ত্যাগ করে কিংবা আপনজনকে হত্যাও করে ফেলে। স্বার্থান্ধ মানুষ কেবল নিজের দিকটাকে বড় করে দেখে; অপরের বিষয়টা ভাব
একজনের অধিকারে অন্যজনের অন্যায় হস্তক্ষেপের ফলেই জগতে অশান্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে। জগতের অধিকাংশ যুদ্ধ-বিগ্রহ এ অন্যায় হস্তক্ষেপের কারণেই সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এ অশান্তি দীর্ঘদিন স্থায়িত্ব লাভ করতে পারে না। তবুও এ অশান্তির শিকার হয় অগণিত
বসরা শহরের এক গৃহস্থের দুই পুত্র ছিল। বড়জনের নাম হাতেম ও ছোটজনের নাম কাযেম। একবার ব্যবসায় তারা কিছু বাড়তি অর্থ লাভ করল এবং মনে করল বিদেশে সফরে যাবে। দিন তারিখ দেখে তারা দু’ভাই এক সাথে বেরিয়ে পড়ল। তিনদিন সফরের পর তারা এক মুসাফির খানায় আশ্রয় নিল।
এ বিশ্ব চরাচরে মানুষ এসেছে নিজেদের সুন্দর কর্ম দ্বারা এ ধরণীকে আরো সুন্দর করতে। আর তার উ ত্তম কর্মের বিনিময়ে পরকালীন জীবনে নাজাত লাভ করতে। কিন্তু পৃথিবীতে এসে মানুষ তার আসল কর্তব্যকে ভুলে গেছে। ফলে অধিকাংশ মানুষ হয়েছে ভোগবাদী। তবে এ জগৎ-সংসার
সতী-সাধ্বী নারীর সম্ভ্রম হরণ করা যায় না। তার সম্মান নষ্ট করা যায় না। সতীত্ব ও সম্ভ্রম রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনে সে জীবন দিতেও কুণ্ঠিত হয় না। খাত্তাবী তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আকাশের ইনসাফ’-এ একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন, যা নিম্নরূপ-চল্লিশ বছর পূর্বে বা
এ জগতে অনেক মানুষ আছে, যারা অন্যের ভাল দেখতে পারে না। অন্যের সুখে তাদের গা জ্বালা করে। ফলে নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গের চেষ্টা করে। পরের অকল্যাণের চিন্তা সদা তাদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। অনেক সময় অন্যের ক্ষতি সাধন করতে গিয়ে নিজেই সেই
আমীন অনার্স-মাষ্টার্স পাশ একজন টগবগে যুবক। অন্যান্য ছেলেদের মতো তাকে চাকরির জন্য দ্বারে দ্বারে হাঁটতে হয়নি বেশী দিন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে ছয় মাসের মধ্যে চাকরি জুটে গেল। খুব ভাল চাকরি। বড় অফিসার পদে। বেতনও বেশ ভাল। কিন্তু পরিশ্রমটা একটু বেশ
নারীর জীবনে আজন্ম লালিত স্বপ্ন থাকে একটা সুন্দর সংসার, স্বামীর ভালবাসা, সন্তানের মা ডাক প্রভৃতির। একজন নারী সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে স্বামীর সংসারকে আগলে ধরে রাখে স্বামীর এতটুকু ভালবাসার জন্য। সন্তান গর্ভ ধারণে, প্রতিপালনে সীমাহীন কষ্ট করে
একজন কৃষক কৃষিকাজের মাধ্যমে তার অভাব-অনটন দূর করতে না পেরে ছালাত আদায় কালে আল্লাহর কাছে অতি বিনীতভাবে কিছু ধন-দৌলত তার উনুনের কাছে পাবার আবেদন-নিবেদন করে। একদিন সে মাঠে চাষ করতে গেলে তার লাংগল একটি গাছের শিকড়ের সাথে বেধে যায়। সে তখন লাংগল বের
অজ পাড়াগাঁয়ের ছেলে আব্দুল্লাহ। বছর পনের হ’ল গ্রামের মায়া-মমতা ত্যাগ করে দ্বীনী ইলম অর্জনের জন্য তার বাইরে যাওয়া। গ্রামে কোন ভাল আলেম ছিল না, যার কাছ থেকে গ্রামবাসী দ্বীনী ইলম শিক্ষা করবে। এতদিন পরে আব্দুল্লাহ যোগ্য আলেম হয়ে নিজ গ্রামে ফিরে এসেছ
মানুষের হায়াত-মউত আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। যার যতদিন হায়াত আছে সে পৃথিবীতে ততদিন বেঁচে থাকবে। আবার যার যেখানে যে অবস্থায় মৃত্যু নির্ধারিত আছে, তাকে সেখানে সে অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হবে। এ ব্যাপারে মানুষের কোন হাত নেই। কিন্তু পৃথিবীতে কোন কোন সম
জনৈক ব্যক্তির চোখের সমস্যা ছিল। সে একদিন ডাক্তারের কাছে গেল। ডাক্তার একটা টেষ্ট করার জন্য লিখে দিয়ে বললেন, টেস্টটি করে রিপোর্ট নিয়ে আগামীকাল দেখা করবেন। পরের দিন রিপোর্ট দেখে ডাক্তার একটা চশমা ও কিছু ঔষধ লিখে দিলেন। লোকটি চশমার দোকানে গিয়ে চশ
এক দেশে ছিল এক গরীব কৃষক। তার অল্প কিছু জমি ছিল। সে জমিতে কিছু পেয়ারা গাছ লাগাল। তার নিবিড় পরিচর্যায় গাছগুলি অনেক বড় ও সুন্দর হয়ে ওটলো। গাছের পাতার ফাঁকে ফাকে ধরল প্রচুর পেয়ারা। সে নিজে খাওয়ার পরেও একদিন কিছু পেয়ারা গাছ থেকে নামিয়ে বাড়ির কাছে
‘খলীলিয়াহ’ নদীর দক্ষিণ প্রান্তে ‘মাহারীক’ শহরের নিকটে একটি ছোট্ট নিরালা স্থান- যা কেবল একজন বুযর্গের ছালাতের জন্য নির্দিষ্ট। জায়গাটি ছোট হ’লেও উহা পাঁচ ওয়াক্তের মুছল্লী হ’তে কখনোই খালি থাকে না। বিশেষ করে জুম‘আর দিন আশপাশের এলাকাসমূহ হ’তে দলে দল
বাদশাহ মালিক শাহ সালজুকী* রাজধানী নিশাপুরে অবস্থান করছিলেন। তখন মহিমান্বিত রামাযান মাসের বিদায় নেবার পালা। রামাযান শেষে তিনি রাজ্যের সর্বত্র পরিদর্শনের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন। তার ইচ্ছা ছিল যে, তিনি ঈদের পরেই সফরে বের হবেন। সুতরাং ২৯শে রা
এশার ছালাতের নিয়ত ‘আমি ক্বিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে এশার চার রাক‘আত ফরয ছালাত এই ইমামের পিছনে আদায় করবার জন্য নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবার’। আমাদের সমাজের মাওলানা ছাহেবরা আমাদেরকে প্রচলিত যে আরবী নিয়তটি মুখস্থ করিয়েছেন, তার বাংলা অর্থ এরূপ।সঊ
বড় ছাহেব এক আজীব ব্যক্তি। বাজার-ঘাট করা তার মোটেই সয়না। যদিও পসন্দ মত জিনিস তার চাই। শত মানুষের ভিড়ের মাঝে দরকষাকষি করা তার পক্ষে অসম্ভব। কাজের লোক ছুটিতে। তাই কি আর করা? বেঁচে থাকার জন্য খেতে তো হবেই। অগত্যা বড় ছাহেব লাল রঙের চটের ব্যাগ নিয়ে
বাদশাহ মালিক শাহ ছিলেন আন্দালুসের (স্পেনের) স্বাধীন সুলতান। তার শখ ছিল হরিণ শিকার করা। তাই রাজকার্যে একটু ফুরসত পেলেই হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে ইস্পাহানের জঙ্গলে গমন করতেন। একদিন কিছু সৈন্য নিয়ে তি নি হরিণ শিকারে বের হ’লেন এবং বনের পাশে এক
২০১৪ সাল। আমি তখন মেহেরপুরের বিচারক ছিলাম। আমার এক দশকের অধিক সময়ের বিচারক জীবনে মেহেরপুরের দিনগুলি আজো আমার কাছে স্বর্ণসময় মনে হয়।একদিনের ঘটনা। আধা কেজি গাঁজা দখলে রাখার দায়ে আসামীর বিচার চলছে। আসামী মধ্যবয়সী। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামী
জনৈক বাদশাহ একদিন তার তিন মন্ত্রীকে ডেকে তাদেরকে একটি থলি নিয়ে রাজপ্রাসাদের বাগানে যেতে বললেন। অতঃপর সেখানে গিয়ে তাদের থলিগুলি উত্তম ফল-ফলাদি দ্বারা পূর্ণ করার নির্দেশ দিলেন। এছাড়া তাদেরকে বলে দিলেন, কেউ যেন একাজে একে অপরকে সাহায্য না করে। মন্ত্রীত্র
জনৈক দরিদ্র ব্যক্তি মক্কায় বসবাস করত। তার ঘরে সতী-সাধ্বী স্ত্রী ছিল। একদিন স্ত্রী তাকে বলল, হে সম্মানিত স্বামী! আজ আমাদের ঘরে কোন খাবার নেই। আমরা এখন কি করব? একথা শুনে লোকটি বাজারের দিকে কাজ খুঁজতে বেরিয়ে গেল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সে কোন কাজ পেল না।
জনৈক বাদশাহর একজন উযীর ছিল, যিনি সকল বিষয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করতেন। একদিন বাদশাহর একটি আঙ্গুল কেটে তা থেকে রক্ত গড়াতে লাগল। এ অবস্থা দেখে উযীর বললেন, এটা অবশ্যই কল্যাণকর হবে ইনশাআল্লাহ। একথা শুনে বাদশাহ উযীরের উপর রাগান্বিত হয়ে বললেন, আমার আঙ্গুল কেটে
শাফীক বালখী কর্তৃক বাদশাহ হারূনুর রশীদকে উপদেশবর্ণিত আছে, একদা শাফীক বালখী বাদশাহ হারূনুর রশীদের দরবারে প্রবেশ করলে বাদশাহ তাকে বললেন, আপনি কী শাফীক যাহেদ (দুনিয়াবিরাগী শাফীক)? তখন তিনি বললেন, আমি শাফীক, তবে যাহেদ নই। বাদশাহ তাকে বললেন, আমাকে ক
দুনিয়াদারের অবস্থা হ’ল অতিথিসম! যেন তার জন্য দস্তরখানা বিছানো হ’ল। এদিকে অতিথিপরায়ণ ব্যক্তির অভ্যাস হ’ল স্বীয় অতিথিবৃন্দের সামনে ঘর সাজানো, আগ্রহের সাথে অতিথিকে স্বাগত জানানো, এক দল সৈন্য বা গোত্রকে খাওয়ানোর পর আরেক দল সৈন্য বা গোত্রকে খাবারে
এক দেশে ছিল এক বাদশাহ। তার একজন খুব বিশ্বস্ত খাদেম ছিল। সে বাদশাহর নিকট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিল। যখনই সে বাদশাহর কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হ’ত তখনই এ প্রবাদটি বলত, ‘অনুগ্রহকারীর প্রতি তার অনুগ্রহের জন্য উত্তম আচরণ কর। কেননা খারাপ আচরণকারীর অসৎ আ
এক সময় ইরাকের মুছেলে এক সৎ ব্যক্তি বাস করতেন। তার নাম ছিল আলী ইবনু হারব। তিনি বলেন, আমি নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস ক্রয় করার জন্য মুছেল থেকে সুররামান রায়া নামক স্থানে যাচ্ছিলাম। সে সময় দাজলা নদীতে কিছু নৌকা ছিল। যেগুলো ভাড়ায় লোকজন ও মালামাল প
সাহসিকতা প্রত্যেক মানুষের একটি মৌলিক গুণ। এ সাহসিকতা ভাল কাজে ব্যবহার করলে সুনাম হয়। আর খারাপ কাজে ব্যবহার করলে বদনাম হয়। অন্যায়কারীর সামনে সত্য কথা বলে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করা প্রশংসনীয় কাজ। রাসূলুলাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘সর্বোত্তম জিহাদ হ’ল অত
এক গ্রামে এক পরহেযগার আলেম বাস করতেন। তিনি প্রত্যেক কাজে আল্লাহর প্রতি ভরসা করতেন। তার কাছে কেউ দো‘আ চাইলে তিনি বিদ‘আতী পন্থা ত্যাগ করে সুন্নাতী পন্থায় দো‘আ করতেন। আর তাহ’ল তিনি ছালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আ করার পদ্ধতি
পিতা-মাতা হ’লেন মানুষের পৃথিবীতে আসার একমাত্র মাধ্যম। একজন সন্তানকে সৎ ও আদর্শবান হিসাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পিতা-মাতার। সন্তান আদর্শবান না হ’লে সারাজীবন পিতা-মাতাকে কষ্ট ভোগ করতে হয়। কেবল আদর্শবান সন্তান তার পিতা-মাতাকে প্রাপ্য অধিকার প্রদান ক
ইংরেজীতে একটা প্রবাদ আছে, ‘কাট ইওর কোট অ্যাকোরডিং টু ইওর ক্লোথ’। অর্থাৎ আয় বুঝে ব্যয় কর। যারা আয় বুঝে ব্যয় করে না তাদের বিপদ আসন্ন। যেমন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা ঠিক নয়, তেমন কৃপণতাও কাম্য নয়। আয় বুঝে ব্যয় না করলে নিস্ব হ’তে হয়, এরূপ একটা
আরবে এক স্কুল ছিল। সেখানে সাতজন শিক্ষক ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ব্যতীত সকলে সময়মত ছালাত আদায় করতেন। এ কারণে অন্যান্য শিক্ষকেরা তাকে ঘৃণা করতেন। তারা সকলে তার থেকে দূরে থাকতেন। তারা তাকে বহুবার বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তার সাথে অন্
সাহিলা অন্যান্য দিনের মত আজও খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠেছে। ওযূ সেরে ফজরের ছালাত আদায় করে কিছুক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করেছে। এরপর সে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়। তখনও আকাশ ফর্সা হয়নি। চারিদিক থেকে পাখির কলরব ভেসে আসছে। সকালের শীতল হাওয়ায় তার মন ফুরফ
স্কুল থেকে ফিরে ফারীহার মন ভীষণ খারাপ। মায়াবী দু’চোখ জুড়ে দুশ্চিন্তার ছাপ। পেলবতায় ভরা মুখটাও কেমন যেন ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। ফারীহার মা হৃদয়ের দর্পণে মেয়ের চেহারা দেখে নিলেন। তিনি মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করলেন। ফারীহা বলল, ‘আম্মু! তানযীলা ম্যাডা
একবার একজন ভদ্র মহিলা কিডনী প্রদাহে আক্রান্ত হ’লেন। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা করালেন। কিন্তু কোনভাবেই নিরাময় সম্ভব হচ্ছিল না। কিডনী প্রতিস্থাপন ব্যতীত কোন উপায় নেই বলে ডাক্তাররা জানালেন। তিনি ছিলেন ধনী মহিলা। তাই তিনি পাঁচ লক্ষ টাকার বি
শৈশবেই পিতৃহারা বালক আব্দুল্লাহ। পিতার মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন যাবৎ সে মায়ের সাথেই বাস করে আসছে। মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে লেখাপড়া শিখে অনেক বড় কিছু হবে। তাই শত কষ্টের মাঝেও সন্তানের পড়ালেখার খরচ নিজেই বহন করতেন। নিজের কষ্টগুলো লুকিয়ে রেখে ছেলের আদর-
একবার এক মহিলা কলেজ থেকে আকর্ষণীয় এক স্থানে শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়। বাস যোগে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের স্পটে পৌঁছে যায়। ছাত্রীরা স্পটের আশপাশেই ঘোরাফেরা করছিল। কিন্তু একজন ছাত্রী সকলের কাছ থেকে আলাদা হয়ে ভিন্ন দিকে
আরবের এক গ্রামে ছিলেন একজন হজ্জের মুনাযযিম বা ব্যবস্থাপক। তিনি ছিলেন অত্যন্ত পরহেযগার। যিনি গ্রামবাসীকে হজ্জ ও ওমরাহর ব্যাপারে সহযোগিতা করতেন। তার একজন প্রতিবেশী ছিল। সে ছিল দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীন। ছালাত-ছিয়াম কিছুই সে আদায় করত না। এক রাতে হ
মানুষ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। বরং বিভিন্ন কাজে তাকে অন্যের উপরে নির্ভর করতে হয়। এক্ষেত্রে যারা মানুষকে বেশী সহযোগিতা করে তারা হচ্ছে প্রতিবেশী। বাড়ীর পার্শ্বের এই মানুষগুলিই সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে আপনজন হয়ে থাকে। কিন্তু মানুষ প্রতিবেশীর সাথে সব সময় সদ
প্রতিদিনের মতো আজও রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় ট্রেনের জন্য প্রতীক্ষা করছি। এই সময়টায় ঢাকা অভিমুখী জয়দেবপুর থেকে তুরাগ এবং নরসিংদীর দিক থেকে তিতাস কমিউটার ট্রেন টংগী জংশনে সামান্য সময়ের ব্যবধানে আগ-পিছে আগমন করে। যেহেতু দু’টো ট্
সন্ধ্যারাতের সড়কে হলুদ-লাল-নীল রঙিন আলো-আঁধারি পেরিয়ে ছুটে চলেছে গাড়ি। সারাদিনের কর্মক্লান্তি শেষে যানজটে ব্যস্ত সড়ক কিছুটা দম নিচ্ছে বোধহয়। হাল্কা যানজটে মাঝে মাঝে গাড়ির গতি কমিয়ে কয়েক মিনিট বিরতি নিয়ে পুনরায় ছুটে চলা। রৌদ্রপ্রখর দিনের তীব্র
খুলনার পাইকগাছা উপযেলার একটি অজপাড়া গ্রাম। বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি। অন্যান্য গ্রামের মতো আধুনিকতার ছোঁয়াও লাগেনি। সন্ধ্যা নামতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার। দিনের আলোয় গ্রামের পথ ধরে হাঁটলে সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে। গ্রামে অনেক পুকুর। দূরে দেখা যায় খাল-বিল
অনেক দিন আগের কথা, এক বৃদ্ধ বাবা ও তার সন্তান উটের পিঠে চড়ে এক কাফেলার সাথে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় রওনা হয়। মাঝ পথে হঠাৎ বাবা তার ছেলেকে বললেন, তুমি কাফেলার সাথে চলে যাও, আমি আমার প্রয়োজন সেরেই তোমাদের সাথে আবার যোগ দিব। আমাকে নিয়ে ভয় প
ঢাকার বস্তীবাসীদের জীবন সম্বন্ধে যাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে, তাদের মধ্যে কোমল হৃদয়ের লোকেরা ব্যথিত না হয়ে পারে না। মানবেতর জীবন বলতে যা বুঝায়, বস্তীবাসীদের জীবন তদ্রূপ। জীবন বাঁচানোর তাকীদে এরা স্বামী-স্ত্রী মিলে দিনভর নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। মহি
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাক্কিক আল্লামা নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) স্বীয় গবেষণাকর্মের মূল বিদ্যাপীঠ দামিশকের ‘মাকতাবাতুয যাহিরিয়া’য় সংরক্ষিত ‘ইলমে হাদীছ সংক্রান্ত গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপি সম্পর্কে পরবর্তীদের জ্ঞাতার্থে বহুদিনের পরিশ্রমে একটি সূচী তৈরী করেন। পরবর্তীতে
সম্প্রতি একটি বিতর্ক স্বয়ং সালাফী আক্বীদার কিছু অনুসারীর মধ্যে মাথা চাড়া দিয়েছে। তারা মনে করে থাকেন যে, সালাফী বা আহলেহাদীছ নামকরণ করা বিদ‘আত। কেননা রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে এ নামের কোন অস্তিত্ব ছিল না। আর আল্লাহ তা‘আলা সূরা হজ্জের
জনৈক ব্যক্তি একদিন দূর সফরে বেরিয়েছেন। সাথে আছে তার স্ত্রী ও সন্তানেরা। পথিমধ্যে তিনি রাস্তার পাশে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। গাড়ি থামিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কে? দন্ডায়মান ব্যক্তি বলল, আমি ধন-সম্পদ। আমি চাই তুমি আমাকে তোমাদের সফরসাথী কর
পিতৃ-মাতৃহারা আলেমা খাতুন মামা আনোয়ারের আশ্রয়ে থেকে বড় হয়েছে। মামা তাকে নিজ কন্যা স্নেহে প্রতিপালন করে আসছে। উপযুক্ত শিক্ষিতাও করেছে। আলেমা অতিশয় সুন্দরী যুবতী। যে কোন যুবক এক নযর দেখলে তাকে স্ত্রী হিসাবে পেতে আগ্রহী হবে। মামার আর্থিক অবস্থা সচ্ছল নয়
যে কোন আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার শর্ত হ’ল তিনটি : (১) আক্বীদা বিশুদ্ধ হওয়া (২) তরীকা সঠিক হওয়া এবং (৩) ইখলাছে আমল অর্থাৎ কাজটি নিঃস্বার্থভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে হওয়া (যুমার ৩৯/২)।সৎ কাজের মধ্যে লৌকিকতা আসলে সেটি আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।