
ভূমিকা :
কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হয় এবং অশেষ ছওয়াব লাভ করা যায়। তাই এই ইবাদত পালনের জন্য আল্লাহ ও তদীয় রাসূল নির্দেশিত পদ্ধতিতে কুরবানী করা যরূরী। যে কোন ইবাদত সম্পন্ন করার সাথে সাথে তা কবুল হওয়ার জন্য সাধ্যমত তা সঠিকভাবে আদায় করা আবশ্যক। কেননা পদ্ধতি সঠিক না হ’লে তা কবুল হয় না। প্রতিটি ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য যেমন কিছু শর্ত রয়েছে তেমনি কুরবানী কবুল হওয়ার জন্যও বিভিন্ন শর্ত রয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল।-
কুরবানীর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট :
আবহমান কাল থেকে কুরবানীর এই ত্যাগপুত ইতিহাস চলে আসছে। আদম (আঃ)-এর দু’পুত্র ক্বাবীল ও হাবীল প্রদত্ত কুরবানী থেকেই এর সূচনা হয়েছে। আল্লাহ বলেন,وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ، ‘আর তুমি তাদের নিকট আদম পুত্রদ্বয়ের বৃত্তান্ত যথার্থভাবে বর্ণনা কর। যখন তারা কুরবানী পেশ করল। অতঃপর একজনের কুরবানী কবুল হ’ল, কিন্তু অন্যজনেরটা হ’ল না। তখন সে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। তখন অপরজন বলল, নিশ্চয়ই আল্লাহ তো মুত্তাক্বীদের কুরবানীই কবুল করে থাকেন’ (মায়েদাহ ৫/২৭)। এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কুরবানীর সূচনা তাদের মাধ্যমেই হয়েছিল। তারপর থেকে বিগত সকল যুগে এ বিধান অব্যাহত ছিল। আল্লাহ বলেন,وَلِكُلِّ اُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِّنْ بَهِيْمَةِ الْأَنْعَامِ، فَإِلـَهُكُمْ إِلـهُ وَّاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوْا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِيْنَ، ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমরা কুরবানীর বিধান রেখেছিলাম, যাতে তারা যবহ করার সময় আললাহর নাম উচ্চারণ করে। এজন্য যে, তিনি চতুষ্পদ গবাদিপশু থেকে তাদের জন্য রিযিক নির্ধারণ করেছেন। আর তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। অতএব তাঁর নিকটে তোমরা আত্মসমর্পণ কর এবং তুমি বিনয়ীদের সুসংবাদ দাও’ (হজ্জ ২২/৩৪)। তবে তৎকালীন কুরবানীর নিয়ম-পদ্ধতি সবিস্তার জানা যায় না। সে সময়ে কবুলযোগ্য কুরবানীটি আকাশ থেকে আগুন এসে জ্বালিয়ে দিয়ে যেত। আল্লাহ বলেন,الَّذِينَ قَالُوا إِنَّ اللهَ عَهِدَ إِلَيْنَا أَلَّا نُؤْمِنَ لِرَسُولٍ حَتَّى يَأْتِيَنَا بِقُرْبَانٍ تَأْكُلُهُ النَّارُ، ‘যেসব লোক বলে যে, আল্লাহ আমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে, আমরা কোন রাসূলের উপর ঈমান আনব না, যতক্ষণ না তিনি আমাদের নিকট এমন কুরবানী নিয়ে আসবেন, যা (আল্লাহর পক্ষ হ’তে) আগুন এসে খেয়ে নিবে’ (আলে ইমরান ৩/১৮৩)।
উম্মাতে মুহাম্মাদীর জন্য কুরবানীর যে নিয়ম-পদ্ধতি নির্ধারিত হয়েছে, তা মূলতঃ সুন্নাতে ইবরাহীমী হিসাবে প্রচলিত আছে।[1] এ সুন্নাত মুক্বীম (বাড়ীতে অবস্থানকারী) ও মুসাফির (ভ্রমণকারী) সর্বাবস্থায় পালনীয়।[2] হিজরত পরবর্তী মাদানী জীবনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নয় বছর নিয়মিত কুরবানী করেছেন।[3] ইবরাহীম (আঃ) প্রদত্ত কুরবানীর বিবরণ পবিত্র কুরআনে এভাবে উল্লেখিত হয়েছে,
فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ السَّعْىَ قَالَ يَابُنَىَّ اِنِّىْ اَرَى فِى الْمَنَامِ اَنِّىْ اَذْبَحُكَ فَانْظُرْ مَاذَا تَرَىط قَالَ ياَأَبَتِ افْعَلْ مَا تُؤْمَرُ سَتَجِدُنِىْ إِنْ شَآءَ اللهُ مِنَ الصَّابِرِيْنَ، فَلَمَّا أَسْلَمَا وَتَلَّهُ لِلْجَبِيْنِ، وَنَادَيْنَاهُ أَنْ يَّا إِبْرَاهِيْمُ، قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا، إِنَّا كَذَالِكَ نَجْزِى الْمُحْسِنِيْنَ، إِنَّ هذَا لَهُوَ الْبَلاَءُ الْمُبِيْنُ، وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيْمٍ، وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى الْآخِرِيْنَ، سَلاَمٌ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ-
‘অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরার বয়সে উপনীত হ’ল, তখন ইব্রাহীম তাকে বলল, হে আমার পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবহ করছি। এখন ভেবে দেখ তোমার অভিমত কি? সে বলল, হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। অতঃপর পিতা-পুত্র উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করল এবং পিতা পুত্রকে উপুড় করে ফেলল। তখন আমরা তাকে ডাক দিলাম হে ইব্রাহীম! অবশ্যই তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। এভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা ছিল একটি সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আর আমরা তার বিনিময়ে তাকে দান করলাম একটি মহান কুরবানী। এবং আমরা তার প্রশংসাবাণী অব্যাহত রাখলাম পরবর্তীদের মধ্যে। ইব্রাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হৌক! এভাবেই আমরা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি’ (ছাফফাত ৩৭/১০২-১১০)।
উল্লেখ্য, যবহের সময় ইসমাঈলের বয়স ছিল ১৩ বছর। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ঐ সময় তিনি কেবল প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছিলেন।[4] তখন পিতা ইবরাহীম স্বপ্নে দেখলেন যে, তিনি বৃদ্ধ বয়সের একমাত্র পুত্রসন্তান ইসমাঈলকে কুরবানী করছেন। নবীদের স্বপ্ন ‘অহী’ হয়ে থাকে।[5] তাঁদের চোখ বন্ধ থাকলেও অন্তরচক্ষু খোলা থাকে। ইবরাহীম (আঃ) একই স্বপ্ন পরপর তিনরাত্রি দেখেন। প্রথম রাতে তিনি স্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে উঠে ভাবতে থাকেন, কি করবেন। এজন্য প্রথম (৮ই যিলহজ্জ) রাতকে ‘ইয়াউমুত তারবিয়াহ’ বা ‘স্বপ্ন দেখানোর দিন’ বলা হয়। দ্বিতীয় রাতে পুনরায় একই স্বপ্ন দেখার পর তিনি নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারেন যে, এটা আল্লাহর পক্ষ হ’তে নির্দেশ। এজন্য এ দিনটি (৯ই যিলহজ্জ) ইয়াউমু আরাফা বা নিশ্চিত হওয়ার দিন বলা হয়। তৃতীয় দিনে পুনরায় একই স্বপ্ন দেখার পর তিনি ছেলেকে কুরবানী করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন এবং মিনাপ্রান্তরে নিয়ে যান। এজন্য এ দিনটিকে (১০ই যিলহজ্জ) ‘ইয়াউমুন নাহর’ বা ‘কুরবানীর দিন’ বলা হয়।[6]
ইবরাহীম (আঃ) ছেলেকে কুরবানী করার প্রস্ত্ততি নিলেন এবং তাকে মাটিতে উপুড় করে শোয়ালেন। এমন সময় পিছন থেকে আওয়ায এলো- (يَا اِبْرَاهِيْمُ قَدْ صَدَّقْتَ الرُّؤْيَا) ‘হে ইবরাহীম! তুমি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছ’ (ছাফফাত ৩৭/১০৫)। ইবরাহীম (আঃ) পিছন ফিরে দেখেন যে, একটি সুন্দর শিংওয়ালা ও চোখওয়ালা সাদা দুম্বা (كَبْشٌ أَبْيَضُ أَقْرَنُ أَعْيَنُ) দাঁড়িয়ে আছে। অতঃপর তিনি সেটি মিনা প্রান্তরে (ছাবীর টীলার পাদদেশে) কুরবানী করেন।[7]
ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ঐ দুম্বাটি ছিল হাবীলের কুরবানী, যা জান্নাতে সংরক্ষিত ছিল, যাকে আল্লাহ ইসমাঈলের ফিদইয়া হিসাবে পাঠিয়েছিলেন।[8] ইবরাহীম উক্ত দুম্বাটি ছেলের ফিদইয়া হিসাবে কুরবানী করলেন ও ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন (يَا بُنَىَّ اَلْيَوْمَ وُهِبْتَ لِىْ) ‘হে পুত্র! আজই তোমাকে আমার জন্য দান করা হ’ল।[9] এখানে সন্তান যবেহ মূল উদ্দেশ্য ছিল না, বরং উদ্দেশ্য ছিল পিতা-পুত্রের আনুগত্য ও তাক্বওয়ার পরীক্ষা নেওয়া। সে পরীক্ষায় উভয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন পিতার পূর্ণ প্রস্ত্ততি এবং পুত্রের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি ও আনুগত্যের মাধ্যমে।
কুরবানীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য :
কুরবানী আল্লাহর নৈকট্য হাছিলকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা আদায় করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ‘অতএব তোমার প্রভুর উদ্দেশ্যে ছালাত আদায় কর ও কুরবানী কর’ (কাওছার ১০৮/২)। কুরবানীর গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীছে এসেছে,
عَنْ مِخْنَفِ بْنِ سُلَيْمٍ قَالَ: كُنَّا وُقُوفًا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ بِعَرَفَاتٍ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، عَلَى كُلِّ أَهْلِ بَيْتٍ فِي كُلِّ عَامٍ أُضْحِيَّةٌ وَعَتِيرَةٌ،
মিখনাফ ইবনু সুলাইম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আরাফাতের মাঠে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, হে জনগণ! প্রতি বছর প্রতিটি পরিবারের পক্ষ হ’তে একটি করে কুরবানী ও আতীরা রয়েছে’।[10] অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ، وَلَمْ يُضَحِّ، فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا، ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে’।[11]
কুরবানী বিধিবদ্ধ হওয়ার হিকমত :
কুরবানী সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, যা রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী এবং নিয়মিত কর্মের মাধ্যমে প্রমাণিত। এটা ইবরাহীম (আঃ)-এর সুন্নাতের অন্তর্গত। কুরবানী বিধিবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কিছু হেকমত রয়েছে। নিম্নে সেসব উল্লেখ করা হ’ল।-
১. কুরবানীতে আল্লাহ প্রদত্ত দু’টি অমূল্য নে‘মত তথা জীবন ও জীবিকার জন্য শুকরিয়া জ্ঞাপন হয়।
২. ইসলামের অন্যতম বড় শে‘আর বা নিদর্শন হচ্ছে কুরবানী, যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হয় এবং রবের নির্দেশ প্রতিপালন হয়।
৩. কুরবানী ব্যক্তি, পরিবার ও দরিদ্রের প্রশস্ততা, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা, মেহমানের আতিথেয়তা, প্রতিবেশীর মহববত ও গরীবদের জন্য ছাদাক্বা। যাতে রয়েছে বান্দার উপরে আল্লাহর নে‘মতের কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।
৪. কুরবানী হচ্ছে পিতা ইবরাহীম (আঃ)-এর সুন্নাতের পুনরুজ্জীবন।
৫. কুরবানী আল্লাহর প্রতি বান্দার ঈমানের সুস্পষ্ট দলীল এবং তিনি যা পসন্দ করেন ও যার প্রতি সন্তুষ্ট হন তা বাস্তবায়ন করা।
৬. কুরবানী করার মাধ্যমে মুমিন ছবরের শিক্ষা লাভ করে। কেননা তাদের অন্তরে ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর ছবর ও আত্মত্যাগের দৃশ্য ভেসে ওঠে। আল্লাহর আনুগত্যে পিতা ইবরাহীম স্বীয় সন্তানকে ও ইসমাঈল (আঃ) নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্ত্তত হয়েছিলেন।
৭. কুরবানীর গোশত দরিদ্র ও অসহায়দের মাঝে বিতরণে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়। যা অন্যতম ছাদাক্বাহ। এর মাধ্যমে সমাজের লোকদের মধ্যে সম্প্রীতি-সদ্ভাব ও পরস্পরের প্রতি দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত হয়।
কুরবানী কবুল হওয়ার শর্তাবলী :
কুরবানী কবুল হওয়ার শর্তগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রে শর্ত (খ) কুরবানী দাতার জন্য শর্ত।
(ক) কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রে শর্ত :
কুরবানী সিদ্ধ হওয়ার জন্য কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রে ৩টি শর্ত রয়েছে। যথা-
(১) চতুষ্পদ জন্তু হওয়া। যেমন- উট, গরু ও ছাগল। আল্লাহ বলেন,وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ، ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমরা কুরবানীর বিধান রেখেছিলাম, যাতে তারা যবহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে এজন্য যে, তিনি চতুষ্পদ গবাদিপশু থেকে তাদের জন্য রিযিক নির্ধারণ করেছেন। আর তোমাদের উপাস্য মাত্র একজন। অতএব তাঁর নিকটে তোমরা আত্মসমর্পণ কর এবং তুমি বিনয়ীদের সুসংবাদ দাও’ (হজ্জ ২২/৩৪)।
উল্লেখ্য, দুম্বা ও ভেড়া ছাগলের মধ্যে গণ্য। প্রত্যেকটির নর ও মাদি। এগুলোর বাইরে অন্য পশু দিয়ে কুরবানী করার প্রমাণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম থেকে পাওয়া যায় না।[12] ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, ‘উপরে বর্ণিত পশুগুলি ব্যতীত অন্য কোন পশু দ্বারা কুরবানী সিদ্ধ হবে না’।[13]
(২) শরী‘আত নির্ধারিত বয়সে উপনীত হওয়া। মুসিন্নাহ পশু দ্বারা কুরবানী করা সুন্নাত। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,لَا تَذْبَحُوا إِلَّا مُسِنَّةً، إِلَّا أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ، فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنَ الضَّأْنِ، ‘তোমরা দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত ওঠা (মুসিন্নাহ) পশু ব্যতীত যবহ করো না। তবে কষ্টকর হ’লে এক বছর পূর্ণকারী ভেড়া (দুম্বা বা ছাগল) কুরবানী করতে পার’।[14] জমহূর বিদ্বানগণ অন্যান্য হাদীছের আলোকে এই হাদীছে নির্দেশিত ‘মুসিন্নাহ’ পশুকে কুরবানীর জন্য ‘উত্তম’ হিসাবে গণ্য করেছেন।[15]
‘মুসিন্নাহ’ পশু ষষ্ঠ বছরে পদার্পণকারী উট এবং তৃতীয় বছরে পদার্পণকারী গরু বা ছাগল-ভেড়া-দুম্বাকে বলা হয়।[16] কেননা এই বয়সে সাধারণতঃ এই সব পশুর দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত উঠে থাকে। তবে অনেক পশুর বয়স বেশী ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও সঠিক সময়ে দাঁত ওঠে না। এসব পশু দ্বারা কুরবানী করা কোন দোষের হবে না ইনশাআল্লাহ।
(৩) কুরবানীর পশু ত্রুটিমুক্ত হওয়া : কুরবানীর পশু এমন দোষ-ত্রুটি মুক্ত হওয়া যেগুলোর কারণে কুরবানী আদায় হয় না। সেগুলো হ’ল-
১. স্পষ্ট অন্ধ : যেমন চোখ একেবারে কোটরের ভেতরে ঢুকে যাওয়া কিংবা বোতামের মত বের হয়ে থাকা কিংবা এমন সাদা হয়ে যাওয়া যে, সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, চোখ অন্ধ।
২. সুস্পষ্ট রুগ্ন : যে রোগের প্রতিক্রিয়া পশুর উপরে সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠে। যেমন এমন জ্বর হওয়া যার ফলে পশু চরতে বের হয় না ও খাবার খায় না। এমন চর্মরোগ যা পশুর গোশত নষ্ট করে দেয় কিংবা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
৩. স্পষ্ট খোঁড়া : যার ফলে পশুর স্বাভাবিক হাঁটা-চলা ব্যাহত হয়।
৪. জীর্ণ-শীর্ণ : যা অস্থির মজ্জা নিঃশেষ করে দেয়। নবী করীম (ছাঃ)-কে কুরবানীর ক্ষেত্রে কোন ধরনের পশু পরিহার করতে হবে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হ’লে তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বলেন,أَرْبَعٌ لَا تَجُوزُ فِي الْأَضَاحِيِّ فَقَالَ : الْعَوْرَاءُ بَيِّنٌ عَوَرُهَا، وَالْمَرِيضَةُ بَيِّنٌ مَرَضُهَا، وَالْعَرْجَاءُ بَيِّنٌ ظَلْعُهَا، وَالْكَسِيرُ الَّتِي لَا تَنْقَى، ‘চার ধরনের ত্রুটিযুক্ত পশু কুরবানী করা জায়েয নয়। অন্ধ যার অন্ধত্ব সুস্পষ্ট, রুগ্ন- যার রোগ সুস্পষ্ট, খোঁড়া- যার পঙ্গুত্ব সুস্পষ্ট, বৃদ্ধ ও দুর্বল-যার হাড়ের মজ্জা শুকিয়ে গেছে’।[17] এ চারটি ত্রুটি থাকলে সে পশু দিয়ে কুরবানী করা জায়েয হবে না।
(খ) কুরবানী দাতার জন্য শর্ত :
১. নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া :
প্রতিটি ইবাদতের ন্যায় কুরবানী কবুল হওয়ার শুরুতেই নিয়ত খালেছ করে নেওয়া যরূরী। আল্লাহ স্বীয় বান্দাদেরকে সকল কাজে ইখলাছ অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন,وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوْا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ- ‘অথচ তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে’ (বাইয়েনাহ ৯৮/৫)। নবী করীম (ছাঃ)-কেও আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন ইখলাছের সাথে ইবাদত করার জন্য। তিনি বলেন, قُلِ اللهَ أَعْبُدُ مُخْلِصًا لَهُ دِيْنِيْ، ‘বল, আমি আল্লাহর ইবাদত করি তাঁর জন্য আমার আনুগত্যকে একনিষ্ঠ করার মাধ্যমে’ (যুমার ৩৯/১৪)।
মুমিনের সব কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে হওয়া আবশ্যক। যেমন আল্লাহ বলেন,قُلْ إِنَّ صَلاَتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ- لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ- ‘বল, আমার ছালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ, সবই বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই। আর এ ব্যাপারেই (অর্থাৎ শরীক না করার ব্যাপারে) আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম’ (আন‘আম ৬/১৬২-১৬৩)।
আর আমলের প্রতিদান প্রাপ্তি নির্ভর করে নিয়তের উপরে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، ‘নিশ্চয়ই কর্মের প্রতিফল নিয়ত অনুযায়ী হয়ে থাকে। আর প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে’।[18] এজন্য ইবনু বাত্ত্বাল (রহ.) বলেন,أن الأعمال الصالحة لا تزكو ولا تتقبل إلا مع الاحتساب وصدق النيات، ‘বিশুদ্ধ নিয়ত ও নেকী লাভের প্রত্যাশা ছাড়া নেক আমল পরিশুদ্ধ হয় না এবং কবুল হয় না’।[19] সুতরাং বড় গরু বা বা বড় পশুতে গোশত বেশী হবে, অনেক দিন চলবে এরূপ নিয়ত করলে কুরবানী সিদ্ধ হবে না। এমনকি কেউ শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করলে তার কুরবানীও শুদ্ধ হবে না।
২. কুরবানীর পশুর প্রদর্শনী না করা :
কুরবানী করতে হবে শুধু আল্লাহর জন্য। লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কিংবা সুনাম-সুখ্যাতির জন্য বাজারের বড়, সুন্দর ও দামী পশু ক্রয় করে যবেহ করলে কুরবানী বাতিল হবে। বরং সামর্থ্য অনুযায়ী পশু ক্রয় করে ইবাদতের উদ্দেশ্যে আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিয়তে কুরবানী করলে তবেই কুরবানী কবুল হবে। বস্ত্ততঃ পূর্ণ তাক্বওয়া সহকারে খালেছ নিয়তে কুরবানী করতে হবে। পশু প্রদর্শনীর ইচ্ছা থাকলে এ কুরবানী আল্লাহর কাছে কবুল হবে না। আল্লাহ বলেন,إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তো কেবল মুত্তাক্বীদের কুরবানীই কবুল করে থাকেন’ (মায়েদাহ ৫/২৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের বাহ্যিক আকৃতি ও সম্পদের প্রতি দৃষ্টি দেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি দৃষ্টি দেন’।[20]
৩. কুরআন-হাদীছ অনুযায়ী কুরবানী করা :
আল্লাহ প্রদত্ত ও তাঁর রাসূল প্রদর্শিত পদ্ধতি অনুসরণে কুরবানী করতে হবে। কেননা কুরআন-হাদীছের নির্দেশনার বাইরে কৃত কোন আমল কবুল হয় না। আল্লাহ বলেন,فَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا، ‘অতএব যে ব্যক্তি তার প্রভুর সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (কাহাফ ১৮/১১০)। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا، فَهْوَ رَدٌّ، ‘যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করল, যে সম্পর্কে আমাদের কোন প্রকার নির্দেশ নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[21] সুতরাং কুরবানীদাতার কৃত কুরবানী কবুল হওয়ার জন্য কুরআন-হাদীছের নির্দেশনা মেনে চলা অপরিহার্য।
৪. হালাল টাকায় কুরবানী করা :
কেউ হারাম অর্থ দিয়ে কুরবানী করলে তার কুরবানী আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কেননা আল্লাহ পবিত্র বস্ত্ত ব্যতীত গ্রহণ করেন না। আল্লাহর নির্দেশ হচ্ছে,يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ، ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং যা আমরা তোমাদের জন্য ভূমিতে উৎপন্ন করি, সেখান থেকে উৎকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় কর’ (বাক্বারাহ ২/২৬৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، ‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্ত্ত ছাড়া গ্রহণ করেন না’।[22]
৬. পশু কুরবানীদাতার মালিকানাধীন হওয়া : কুরবানীর জন্য নির্ধারিত পশুটি কুরবানীদাতার মালিকানাধীন হ’তে হবে কিংবা মালিকের পক্ষ থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত হ’তে হবে। অতএব যে ব্যক্তি যে পশুর মালিক নয় তার জন্য সে পশু কুরবানী করা জায়েয নয়। যেমন ছিনতাইকৃত পশু, চুরিকৃত পশু কিংবা অন্যায় মামলার মাধ্যমে প্রাপ্ত পশু ইত্যাদি। কেননা কোন পাপকর্মের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করা যায় না।
ইয়াতীমের অভিভাবক যদি নিয়মানুযায়ী ইয়াতীমের সম্পদ থেকে কুরবানী করে তাহ’লে সে কুরবানী সঠিক হবে; যদিও কুরবানী করতে না পারার কারণে ইতিপূর্বে সে ছিল ভগ্নহৃদয়। কোন প্রতিনিধি তার নিয়োগকারীর পক্ষ থেকে কুরবানী করলে সেটা সিদ্ধ হবে। তদ্রূপ কুরবানীর পশুর সাথে অন্য কারো অধিকার যেন সম্পৃক্ত না থাকে। এ কারণে বন্ধককৃত পশু দিয়ে কুরবানী করা জায়েয হবে না।
৬. শরী‘আত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কুরবানী করা : শরী‘আত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পশুটিকে কুরবানী করতে হবে। এ সময়সীমা হচ্ছে ১০ই যিলহজ্জ হ’তে ১৩ই যিলহজ্জ তথা ঈদের দিন ঈদের ছালাতের পর থেকে তাশরীকের দিনগুলোর সর্বশেষ দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বমোট ৪ দিন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, كُلُّ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ ذَبْحٌ ‘তাশরীকের সকল দিন হচ্ছে পশু যবেহ করার দিন’।[23] সেই সাথে ঈদের ছালাতের পরে এবং ১৩ই যিলহজ্জ সূর্যাস্তের পূর্বে কুরবানী করতে হবে। অন্যথা তা শুদ্ধ হবে না। বারা বিন আযেব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ بِهِ فِى يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّىَ ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، مَنْ فَعَلَهُ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا، وَمَنْ ذَبَحَ قَبْلُ فَإِنَّمَا هُوَ لَحْمٌ قَدَّمَهُ لأَهْلِهِ، لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِى شَىْءٍ، ‘আমাদের এ দিনে আমরা সর্বাগ্রে যে কাজটি করব তাহ’ল ছালাত আদায় করব। এরপর ফিরে এসে আমরা কুরবানী করব। যে ব্যক্তি এভাবে তা আদায় করল সে আমাদের নীতি অনুসরণ করল। আর যে ব্যক্তি আগেই যবেহ করল, তা এমন গোশতরূপে গণ্য যা সে তার পরিবারের জন্য আগাম ব্যবস্থা করল। এটা কিছুতেই কুরবানী বলে গণ্য নয়’।[24] তিনি আরো বলেন,مَنْ ذَبَحَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَإِنَّمَا ذَبَحَ لِنَفْسِهِ، وَمَنْ ذَبَحَ بَعْدَ الصَّلاَةِ فَقَدْ تَمَّ نُسُكُهُ، وَأَصَابَ سُنَّةَ الْمُسْلِمِينَ، ‘যে ব্যক্তি ছালাত আদায়ের পূর্বে যবেহ করল সে নিজের জন্যই যবেহ করল। আর যে ব্যক্তি ছালাত আদায়ের পর যবেহ করল, তার কুরবানী পূর্ণ হ’ল এবং সে মুসলিমদের নীতি গ্রহণ করল’।[25]
উল্লেখ্য, নির্ধারিত দিনগুলোর রাতে কিংবা দিনে কুরবানীর পশু যবেহ করা জায়েয। তবে দিনে যবেহ করা শ্রেয়। আর ঈদের দিন খুৎবার পর পর যবেহ করা উত্তম।[28]
পরিশেষে বলব, ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর অনন্য ইবাদত কুরবানীকে কবুলযোগ্য করার জন্য কুরবানীদাতার আন্তরিক প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই সাথে শরী‘আত নির্ধারিত পশু নির্দিষ্ট সময়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নির্দেশনা মেনে কুরবানী করা কর্তব্য। নিয়তের খুলূছিয়াত ও রাসূলের সুন্নাত যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল ও মঞ্জুর হ’তে পারে। সুতরাং আমাদের সকল ইবাদত যেন আল্লাহর কাছে কবুল হয় সেই চেষ্টা করা আমাদের জন্য আবশ্যক। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন-আমীন!
[1]. মুহাম্মাদ ইবনু আলী ইবনে মুহাম্মাদ আশ-শাওকানী, নায়লুল আওত্বার (মিছর : দারুল হাদীছ, ১ম প্রকাশ, ১৪১৩ হি./১৯৯৩ খ্রি.), ৫/১৩০ পৃঃ।
[2]. শামসুদ্দীন আল-কুরতুবী, আল-জামেউ লিআহকামিল কুরআন ওরফে তাফসীরে কুরতুবী (কায়রো : দারুল কুতুবিল মিছরিয়া, ২য় সংস্করণ, ১৩৮৪ হি./১৯৬৪খ্রি.) ১৫/১০৯ পৃঃ; নায়লুল আওত্বার ৫/১৩১ পৃঃ।
[3]. শায়খ বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ১৮/৩৮; শাখয় উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ৪২/২৫; ইসলাম ওয়েব : সুয়াল ও জওয়াব, ২০০৫৬২।
[4]. তাফসীরে কুরতুবী ১৫/৯৯।
[5]. বুখারী হা/১৩৮।
[6]. তাফসীরে কুরতুবী ১৫/১০২; তাফসীরে বাগাবী ১/২২৯; মাসায়েলে কুরবানী দ্রষ্টব্য।
[7]. তাফসীরে ইবনু কাছীর ৭/৩১, অত্র আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[8]. ইবনু কাছীর ৭/৩১; তাফসীরে কুরতুবী ১৫/১০৭ পৃঃ।
[9]. তাফসীরে তাবারী, দুররুল মানছূর, কুরতুবী ১৫/১০৭, ৩৭/১০, আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।
[10]. আবূদাউদ হা/২৭৮৮; তিরমিযী হা/১৫১৮; ইবনু মাজাহ হা/৩১২৫।
[11]. ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪৯০।
[12]. আন‘আম ৬/১৪৩-৪৪; মির‘আত ৫/৮১ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/২৯ পৃঃ।
[13]. কিতাবুল উম্ম (বৈরূত : তাবি) ২/২২৩ পৃঃ; গৃহীত : মাসায়েলে কুরবানী ও আক্বীক্বা, পৃঃ ১৪।
[14]. মুসলিম হা/১৯৬৩; মিশকাত হা/১৪৫৫; নাসাঈ তা‘লীক্বাত সহ (লাহোর : তাবি), ২/১৯৬ পৃ. ।
[15]. মির‘আত (লাক্ষ্ণৌ) ২/৩৫৩ পৃ. ; ঐ, (বেনারস) ৫/৮০ পৃ. ।
[16]. মির‘আত, ২/৩৫২ পৃ. ; ঐ, ৫/৭৮-৭৯ পৃ. ।
[17]. আবূদাউদ হা/২৮০২; তিরমিযী হা/১৪৯৭; ইরওয়া হা/১১৪৮।
[18]. বুখারী হা/১; মুসলিম হা/১৯০৭; মিশকাত হা/১।
[19]. ইবনু বাত্ত্বাল, শারহু ছহীহিল বুখারী ৪/২১।
[20]. মুসলিম হা/২৫৬৪; আহমাদ হা/৭৮১৪; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৩৯৪; মিশকাত হা/৫৩১৪।
[21]. মুসলিম হা/১৭১৮; ইরওয়াউল গালীল হা/৮৮, ১৭৬; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৩৯৮।
[22]. মুসলিম হা/১০১৫; তিরমিযী হা/২৯৮৯; মিশকাত হা/২৭৬০।
[23]. আহমাদ হা/১৬৭৫১; ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৮৫৪; ছহীহুল জামে হা/৪৫৩৭; ছহীহাহ হা/২৪৭৬।
[24]. বুখারী হা/৫৫৪৫।
[25]. বুখারী হা/৫৫৪৬, ৫৫৫৬; মুসলিম হা/১৯৬১; মিশকাত হা/১৪৩৭।
[26]. বুখারী হা/৫৫০০; মুসলিম হা/১৯৬০।
[27]. বুখারী হা/৫৫৪৯; মুসলিম হা/১৯৬২; ইরওয়া হা/১১৫৩।
[28]. শায়খ ছালেহ আল-মুনাজ্জিদ, ইসলাম : সুয়াল ওয়া জওয়াব, ফৎওয়া নং ৩৬৭৫৫।