একজন কৃষক কৃষিকাজের মাধ্যমে তার অভাব-অনটন দূর করতে না পেরে ছালাত আদায় কালে আল্লাহর কাছে অতি বিনীতভাবে কিছু ধন-দৌলত তার উনুনের কাছে পাবার আবেদন-নিবেদন করে। একদিন সে মাঠে চাষ করতে গেলে তার লাংগল একটি গাছের শিকড়ের সাথে বেধে যায়। সে তখন লাংগল বের করার জন্য শিকড় খুঁড়তে গিয়ে একটি কলস দেখতে পায়। কলসের মুখে ঢাকনা অাঁটা। ঢাকনা খুললে সে কলস ভরা ধন-দৌলত দেখতে পায়। এতে সে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। কলসটি বাড়ী আনার সিদ্ধান্ত নেবার সাথে সাথে তার মনে পড়ে যায়, সে ধন-দৌলত পেতে চেয়েছিল তার উনুনের কাছে, এখানে নয়। তাই সে ভাবল আল্লাহপাক সম্ভবতঃ তাকে পরীক্ষা করছেন। একারণে কলসটি পূর্বের অবস্থায় রেখে সে বাড়ী চলে আসে।

বাড়ী এসে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে তার স্ত্রীকে ঘটনাটি বলে। স্ত্রী তখন তাকে ঐ ধন-দৌলত আনতে অনুরোধ করে নিরাশ হয়। সে কিছুতেই ঐ ধন-দৌলত আনতে রাযী হ’ল না। তার বিশ্বাস, আল্লাহ তাকে ধন-দৌলত দিলে তার উনুনের কাছেই দিবেন। স্ত্রী তাকে অনেক ভৎর্সনা ও গালমন্দ করে। তাকে রাযী করাতে না পেরে তার এক প্রতিবেশীকে ধনের খবর বলে এবং কোথায় কিভাবে আছে তাও স্বামীর বর্ণনা মোতাবেক বলে দেয়।

প্রতিবেশী লোকটি উৎসাহে বুক বেঁধে কোদাল হাতে নির্দিষ্ট স্থানে ছুটে যায়। অল্প মেহনতেই সে কলসটি দেখতে পায়। কিন্তু কি আশ্চর্য। কলসে তো কোন ধন নেই, আছে শুধু কলস ভরা বিষধর সাপ। লোকটির রাগ হ’ল। সে মনে করল, কৃষকের স্ত্রী তাকে বিপদে ফেলার জন্য মিথ্যা কথা বলেছে। তাই এর প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে কলসের মুখটি ভালভাবে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কলসটি বাড়ী নিয়ে এল। উদ্দেশ্য, রাতের অন্ধকারে সে কলসটি কৃষকের উনুনের কাছে রেখে মুখটি খুলে দিবে। যাতে কৃষকের স্ত্রী উনুনের কাছে গেলে তাকে সাপে দংশন করে।

রাত ভোর হ’ল। কৃষকের স্ত্রী রন্ধন কাজে উনুনের কাছে গেল। সে আশ্চর্য হয়ে দেখল, উনুনের চার পাশে অনেক ধন-দৌলত রয়েছে। সে তার স্বামীকে ডেকে আনল। স্বামী বলল, আমার মনে এ বিশ্বাস ছিল। আল্লাহপাক আমাকে ধন-দৌলত দিলে আমার উনুনের কাছেই দিবেন। আমি আল্লাহর কাছে সে প্রার্থনাই করেছিলাম। স্ত্রী স্বামীকে ভৎর্সনা ও গালমন্দের জন্য তার নিকট ক্ষমা চাইল। এখন থেকে পরম সুখে স্বামী-স্ত্রীর দিন কাটতে লাগল।

মুহাম্মাদ আতাউর রহমান
সন্ন্যাসবাড়ী, বান্দাইঘাড়া, নওগাঁ।






আরও
আরও
.