
ভূমিকা :
মানব জীবনের মূল উদ্দেশ্য শুধু বেঁচে থাকা নয়; বরং এমন একটি জীবন গঠন করা যা সম্মান, মর্যাদা ও কল্যাণে পরিপূর্ণ। এ ধরনের জীবন বস্ত্তগত কোন উপাদানের মাধ্যমে গঠিত হয় না; বরং গঠিত হয় সৃষ্টিকর্তার নিখাঁদ আনুগত্য ও তাঁর রাসূলের আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। আর সম্মানিত জীবন মানে কেবল বাহ্যিক খ্যাতি নয়; বরং এটা হ’ল দুনিয়াতে পবিত্র জীবন লাভের মাধ্যমে মানুষের কাছে সম্মানিত হওয়া এবং পরকালে জান্নাতের নে‘মতপূর্ণ জীবন পেয়ে ধন্য হ’তে পারার এক অনুপম সংমিশ্রণ। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সোনালী পাতায় এমন বহু আমলের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো সম্পাদনের মাধ্যমে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, গৌরবের সুউচ্চ চূড়ায় উন্নীত হয়। আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত সম্মানের শামিয়ানা তার জীবনকে সর্বদা ছায়া দিয়ে রাখে। ফলে আকাশবাসী ও যমীনবাসীর কাছে সে বরণীয় ও শ্রদ্ধার পাত্রে পরিণত হয়। বক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে আমরা সম্মান বৃদ্ধিকারী আমল নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
সম্মান ও মর্যাদার উৎস :
সম্মান হচ্ছে মানবজীবনের এক মূল্যবান অলংকার এবং হৃদয়ের আভিজাত্য, যা একমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে আসে। তিনিই যাবতীয় সম্মান ও মর্যাদা প্রদানের মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন। বিশ্বব্যাপী তার ইচ্ছাই বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু মানুষ বস্ত্তগত জিনিষের মাধ্যমে নিজের সম্মান বাড়াতে চায়, অপর মানুষের কাছে মর্যাদা তালাশ করে বেড়ায়। অথচ আল্লাহ বলেন, أَيَبْتَغُونَ عِنْدَهُمُ الْعِزَّةَ فَإِنَّ الْعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا ‘তারা কি তাদের (মানুষের) কাছে সম্মান কামনা করে? অথচ সকল সম্মান কেবল আল্লাহরই জন্য’ (নিসা ৪/১৩৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, مَنْ كَانَ يُرِيْدُ الْعِزَّةَ فَلِلَّهِ الْعِزَّةُ جَمِيعًا، ‘যে ব্যক্তি সম্মান চায়, সে জেনে রাখুক যে, আল্লাহর জন্যই রয়েছে সকল সম্মান’ (ফাতির ৩৫/১০)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنِ التَمَسَ رِضَاءَ اللهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ، وَمَنِ التَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللهِ وَكَلَهُ اللهُ إِلَى النَّاسِ، ‘যে ব্যক্তি মানুষের অসন্তুষ্টি থাকা সত্ত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে, আল্লাহ তাকে মানুষের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অসন্তুষ্টির বিনিময়ে মানুষের সন্তুষ্টি লাভে মগ্ন হয়, আল্লাহ তাকে মানুষের উপরেই ছেড়ে দেন’।[1] অতএব বোঝা গেল, যাবতীয় সম্মান প্রদানের মালিক একমাত্র আল্লাহ। তাই যে ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষের কাছে সম্মান চায়, বস্ত্তগত বিষয়ের মাধ্যমে মর্যাদা লাভের স্বপ্ন দেখে, আল্লাহ তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগত্যের মাধ্যমে সম্মানিত হ’তে চায়, আল্লাহ তাকে দুনিয়াতে ও পরকালে মহা সম্মানে ভূষিত করেন।
সম্মান বৃদ্ধিকারী আমল সমূহ
১. ঈমান আনা ও নেক আমল করা :
সম্মানিত জীবন লাভের প্রথম ও প্রধান শর্ত হ’ল ঈমান। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা ছাড়া পৃথিবীতে কেউ প্রকৃত সম্মানের অধিকারী হ’তে পারে না। ঈমান এমন এক মুক্তা, যা হৃদয়ের মাঝে থাকলে মানুষ আল্লাহর দরবারে সবচেয়ে দামী হয়ে ওঠে। আর ইসলামী শরী‘আতের নির্দেশনা মেনে নেক আমল করলে দুনিয়াতে মানুষ গৌরবান্বিত হয় এবং আখেরাতে জান্নাতের সম্মানিত মেহমান হ’তে পারে। আল্লাহ বলেন,وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُولَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَى، جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاءُ مَنْ تَزَكَّى، ‘আর যে ব্যক্তি তাঁর নিকটে হাযির হয় সৎকর্মসমূহ সম্পাদনকারী মুমিন হিসাবে, তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ স্তরের মর্যাদা সমূহ। আর রয়েছে স্থায়ী বসবাসের বাগিচা সমূহ, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। যেখানে তারা চিরকাল থাকবে। এটা কেবল তাদেরই প্রতিদান, যারা (ভিতরে-বাইরে) পরিশুদ্ধি অর্জন করেছে’ (তোয়াহা ২০/৭৫-৭৬)।
অত্র আয়াতে তিনটি বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে : (১) ঈমান, (২) নেক আমল এবং (৩) অন্তরের পরিশুদ্ধতা। এই তিনটি বিষয়ের কোন একটি বাদ পড়লে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা লাভে বান্দা বঞ্চিত হ’তে পারে। সুতরাং বান্দা যখন এই তিনটি জিনিসের সৌরভে নিজেকে সুরভিত করতে পারবে, তখন তার জীবন উচ্চ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে। আল্লাহ আরো বলেন, ‘মুমিন কেবল তারাই, যখন তাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করানো হয়, তখন তাদের অন্তর সমূহ ভয়ে কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করে। যারা ছালাত কায়েম করে এবং তাদেরকে আমরা যে রূযী দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করে। أُولَئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَهُمْ دَرَجَاتٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ- এরাই হ’ল সত্যিকারের মুমিন। এদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে উচ্চ মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা’ (আনফাল ৮/২-৪)।
ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেছেন,إِنَّا كُنَّا أَذَلَّ قَوْمٍ فَأَعَزَّنَا اللهُ بِالْإِسْلَامِ فَمَهْمَا نَطْلُبُ الْعِزَّةَ بِغَيْرِ مَا أَعَزَّنَا اللهُ بِهِ أَذَلَّنَا اللهُ، ‘আমরা ছিলাম সবচেয়ে লাঞ্ছিত জাতি। আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমাদের সম্মানিত করেছেন। সুতরাং আল্লাহ আমাদের যার মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন, তাছাড়া অন্য কিছুতে যদি আমরা সম্মান তালাশ করি, তবে তিনি আমাদের (পুনরায়) লাঞ্ছিত করবেন’।[2] সুতরাং ক্ষমতা-প্রতিপত্তি, পদ-পদবী, ধন-সম্পদ দিয়ে প্রকৃত সম্মান অর্জন করা যায় না; বরং যারা ইসলামের বিধান সমূহ মেনে নিবে, সার্বিক জীবনে ঈমানের সাথে নেক আমল করবে এবং যাবতীয় পাপাচার থেকে দূরে থাকবে, আল্লাহ তাদের উভয় জগতে সম্মানিত করবেন।
২. ছালাতের প্রতি যত্নশীল হওয়া :
ছালাত মানুষকে অন্তরের অহংকার থেকে মুক্ত করে বিনয়ের শিক্ষা দেয়, দায়িত্বহীনতা থেকে টেনে আনে সময়ানুবর্তিতার দিকে এবং গাফিলতির গভীর ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে তাক্বওয়ার জাগরণে। একটি জাতি যতক্ষণ পর্যন্ত ছালাতকে জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখে, ততক্ষণ সে সম্মান, আত্মমর্যাদা ও নৈতিক উৎকর্ষতায় অটল থাকে। ছাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْجُدُ لِلَّهِ سَجْدَةً إِلَّا رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً، ‘বান্দা যখন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করে, আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার একটি গোনাহ ক্ষমা করে দেন।[3] এখানে সিজদার কথা উল্লেখ করে ছালাতকে বুঝানো হয়েছে।
আমর ইবনে আবাসা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি,أَيُّمَا رَجُلٍ قَامَ إِلَى وَضُوءٍ يُرِيدُ الصَّلَاةَ، فَأَحْصَى الْوَضُوءَ إِلَى أَمَاكِنِهِ، سَلِمَ مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ أَوْ خَطِيئَةٍ لَهُ، فَإِنْ قَامَ إِلَى الصَّلَاةِ، رَفَعَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِهَا دَرَجَةً، وَإِنْ قَعَدَ، قَعَدَ سَالِمًا، ‘যখন কোন ব্যক্তি ওযূ করার উদ্দেশ্যে উঠে দাঁড়ায় এবং ওযূর অঙ্গগুলো পূর্ণরূপে ধৌত করে (অর্থাৎ যথাযথ ও নিখুঁতভাবে ওযূ সম্পন্ন করে), তখন সে তার সমস্ত গুনাহ বা ভুল-ত্রুটি থেকে নিরাপদ হয়ে যায় (অর্থাৎ তার পাপরাশি ক্ষমা করা হয়)। অতঃপর সে যদি ছালাত আদায়ের জন্য দাঁড়ায়, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর সে যদি ছালাতে না দাঁড়িয়ে বসে থাকে, তবুও সে নিরাপদ (গোনাহমুক্ত) অবস্থায় বসে থাকে’।[4] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,أَكْثِرْ مِنَ السُّجُودِ فَإِنَّهُ لَيْسَ مِنْ مُسْلِمٍ يَسْجُدُ لِلَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى سَجْدَةً إِلاَّ رَفَعَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى لَهُ بِهَا دَرَجَةً، ‘তুমি বেশী বেশী সিজদা কর (অর্থাৎ ছালাত আদায় কর)। কেননা মুসলিম ব্যক্তি যখনই মহান আল্লাহর জন্য একটি সিজদা দেয়, এর বিনিময়ে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন’।[5] সুতরাং ফরয বা নফল যে ছালাতই হোক না কেন, সেটা নিছক ইবাদতই নয়; বরং ছালাত হ’ল আল্লাহর কাছে প্রিয় হওয়ার ও মর্যাদপূর্ণ জীবন লাভের একটি বড় হাতিয়ার।
৩. পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা :
যখন মুমিন বান্দা একনিষ্ঠ নিয়তে মসজিদের দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসর হয়, তখন তার প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর রহমতের দরজা খুলে যায়। প্রতিটি কদমে মুছে যায় পূর্বের গোনাহ, প্রতিটি পদক্ষেপ লেখা হয় একটি করে নেকী, আর প্রতিটি ধাপে সে আল্লাহর কাছে আরও মর্যাদা লাভ করে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলছেন,أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الْخَطَايَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ؟ ‘আমি কি তোমাদের এমন একটি (আমলের) কথা বলব না? যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গোনাহখাতা মাফ করে দিবেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন? ছাহাবীগণ আবেদন করলেন, হ্যাঁ! হে আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই। তখন তিনি বললেন,إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ وَكَثْرَةُ الْخُطَى إِلَى الْمَسَاجِدِ وَانْتِظَارُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الصَّلَاة، ‘কষ্ট হ’লেও পরিপূর্ণভাবে ওযূ করা, অধিক পদক্ষেপে মসজিদে হেঁটে যাওয়া এবং এক ওয়াক্ত ছালাত আদায়ের পর আরেক ছালাতের প্রতীক্ষায় থাকা’।[6]
অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ تَطَهَّرَ فِي بَيْتِهِ، ثُمَّ مَشَى إِلَى بَيْتٍ مَنْ بُيُوتِ اللهِ لِيَقْضِيَ فَرِيضَةً مِنْ فَرَائِضِ اللهِ، كَانَتْ خَطْوَتَاهُ إِحْدَاهُمَا تَحُطُّ خَطِيئَةً، وَالْأُخْرَى تَرْفَعُ دَرَجَةً، ‘যে ব্যক্তি বাড়ীতে পবিত্র হয় (ওযূ করে), অতঃপর কোন ফরয ছালাত আদায় করার জন্য আল্লাহর ঘরের দিকে পায়ে হেঁটে গমন করে, তখন তার প্রতিটি পদক্ষেপে একটি করে পাপ ঝরে পড়ে এবং অপরটিতে একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়’।[7] অতএব মসজিদের পথ কেবল ইট-পাথরের রাস্তা নয়; বরং তা একটি ইবাদতের সফর, যার প্রতিটি পদক্ষেপে আমালনামায় জমা পড়ে ছওয়াব এবং মর্যাদার সোপান বেয়ে মুমিন ছুটে চলে জান্নাতের পানে।
৪. জামা‘আতে ছালাত আদায়কালে কাতারের ফাঁকা জায়গা বন্ধ করা :
মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহর উপর পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত যেমন ফরয করেছেন, ঠিক তেমনি এই ছালাতগুলো জামা‘আতের সাথে আদায় করার ব্যাপারে জোর তাকীদ দিয়েছেন। আর জামা‘আতে ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে পায়ে পা এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানো ইসলামের বিধান। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الَّذِينَ يَصِلُونَ الصُّفُوفَ، وَمَنْ سَدَّ فُرْجَةً رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرْجَةً، ‘যারা কাতারগুলো মিলিয়ে রাখে তাদের প্রতি আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য রহমতের দো‘আ করেন। আর যে ব্যক্তি কাতারের ফাঁক বন্ধ করে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন’।[8] যখন এক মুসলিম অপর মুসলিমের পাশে এসে দাঁড়ায়, কাঁধে কাঁধ মিলে যায়, পায়ে পা মিলে যায়- তখন হৃদয়গুলোও মিলে যায় এক আত্মিক তারে। শয়তানের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে যায় তাদের মাঝে। ফলে তাদের মাঝে রচিত হয় ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব এবং তাওহীদের অমলিন বন্ধন।
৫. তাক্বওয়া অবলম্বন করা :
তাক্বওয়া বা আল্লাহভীরুতা বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। আকাশবাসী ও যমীনবাসীর কাছে তাকে সম্মানিত করে তোলে। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে পরহেযগার বান্দাকে সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তিরূপে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ বলেন, إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকটে সর্বাধিক সম্মানিত ঐ ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক আল্লাহভীরু’ (হুজূরাত ৪৯/১৩)। এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা গেল- আল্লাহর নিকটে সম্মানিত হওয়ার মাপকাঠি হ’ল তাক্বওয়া। মানুষের মর্যাদা কখনো তার ধন-সম্পদ বা সামাজিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে না; বরং নির্ভর করে তার আল্লাহ ভীরুতা, ঈমানে দৃঢ়তা এবং আল্লাহর একনিষ্ঠ অনুগত্যের উপর।
ইসলামের চতুর্থ খলীফা আলী ইবনু আবী ত্বালেব (রাঃ) তাক্বওয়ার পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, التقوى هي الخوف من الجليل والعمل بالتنزيل والقناعة بالقليل والاستعداد ليوم الرحيل. ‘মহান আল্লাহকে ভয় করে চলা, তাঁর নাযিলকৃত কিতাব অনুযায়ী আমল করা, অল্পেতুষ্ট থাকা এবং মৃত্যুর দিনের জন্য সদা প্রস্ত্তত থাকার সমন্বিত নাম হ’ল তাক্বওয়া’।[9] ওমর ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ) বলেন,لَيْسَ تَقْوَى اللهِ بِصِيَامِ النَّهَارِ، وَلَا بِقِيَامِ اللَّيْلِ، وَالتَّخْلِيطِ فِيمَا بَيْنَ ذَلِكَ، وَلَكِنَّ تَقْوَى اللهِ تَرْكُ مَا حَرَّمَ اللهُ، وَأَدَاءُ مَا افْتَرَضَ اللهُ، فَمَنْ رُزِقَ بَعْدَ ذَلِكَ خَيْرًا، فَهُوَ خَيْرٌ إِلَى خَيْرٍ، ‘দিনের বেলা ছিয়াম রাখা এবং রাতের বেলা ক্বিয়াম করার নাম তাক্বওয়া নয়। আবার ছিয়াম ও তাহাজ্জুদ এক সাথে আদায় করার নামও তাক্বওয়া নয়। বরং আল্লাহ যা কিছু হারাম করেছেন তা বর্জন করা এবং যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন, তা পরিপূর্ণভাবে আদায় করার নামই হ’ল প্রকৃত তাক্বওয়া। আর যাকে আরো নেক আমলের তাওফীক্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা তো সোনায় সোহাগা (ভালোর উপরে ভালো)’।[10]
অর্থাৎ তাক্বওয়া কেবলই বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠানের নাম নয়- এটি অন্তরের এক বিশুদ্ধ ও পবিত্র অনুভূতির নাম। যা বান্দাকে নেক আমলে উৎসাহিত করে এবং একই সাথে তার হৃদয়তন্ত্রীতে পাপ থেকে বিরত থাকার শক্তি সঞ্চার করে। সুতরাং দিনভর ছিয়াম রাখা, রাতভর তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে থাকা- এসব নিঃসন্দেহে মূল্যবান ইবাদত করার পরেও বান্দা যদি নিজেকে হারাম কথা-কর্ম থেকে বিরত না রাখতে পারে, তবে তাক্বওয়ার সীমানায় নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।
অতএব প্রকৃত তাক্বওয়া হ’ল- আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ থেকে নিজেকে বিরত রাখা এবং তাঁর নির্দেশাবলী আন্তরিকতার সাথে পালন করা। এই ভিত্তির উপর বান্দার জীবন- জুড়ে সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। প্রখ্যাত তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনে কা‘ব আল-কুরাযী (রহঃ) বলেন, مَا عُبِدَ اللهُ بِشَيْءٍ أَحَبَّ إلَيْهِ مِنْ تَرْكِ الْمَعَاصِي ‘গোনাহ বর্জন করার চেয়ে আল্লাহর অধিক পসন্দনীয় কোন ইবাদত করা হয় না’।[11]
৬. আল্লাহর জন্য বিনয়ী হওয়া :
বিনয় মানব চরিত্রের এক অমূল্য সম্পদ। যারা বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাদের দুনিয়া-আখেরাতে সম্মানিত করেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেল, مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ، وَمَا زَادَ اللهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ، إِلَّا عِزًّا، وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللهُ، ‘দান-ছাদাক্বার মাধ্যমে ধন-সম্পদ কমে যায় না। ক্ষমা-উদারতার মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তার সম্মান বাড়িয়ে দেন’।[12] আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন,إِنَّ مِنْ رَأْسِ التَّوَاضُعِ أَنْ تَرْضَى بِالدُّونِ مِنَ الْمَجْلِسِ، وَأَنْ تَبْدَأَ بِالسَّلَامِ مَنْ لَقِيتَ، ‘বিনয়ের মূলমন্ত্র হ’ল মজলিসে তোমার অনুপস্থিতেও তুমি সন্তুষ্ট থাকবে এবং যার সাথে সাক্ষাত হবে, তাকেই তুমি সালাম দিবে’।[13]
ইয়াহ্ইয়া ইবনু খালেদ (রহঃ) বলেন,من حقوق المروءة، وأمارة النُّبْل: أن تتواضع لمن دونك، وتنصف من هو مثلك، وتستوفي على من هو فوقك، ‘মানবিকতা ও মহানুভবতার নিদর্শন হ’ল- তোমার নিম্ন পর্যায়ের লোকের প্রতি তুমি বিনয় প্রদর্শন করবে, তোমার সমপর্যায়ের ব্যক্তির প্রতি ইনছাফ করবে এবং তোমার চেয়ে ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিকে পূর্ণরূপে তার মর্যাদা প্রদান করবে’।[14] তবে বিনয়ের অনেক চোরাগলি আছে, সেগুলো থেকে সাবধান থাকা উচিত। শয়তান কখনো কখনো বিনয়ের ছদ্মবেশে মানুষকে রিয়াকার বানানোর চেষ্টা করে। ইবনু রজব হাম্বলী (রহঃ) বলেন,أن الإنسانَ قد يذُمُّ نفسهُ بين الناسِ يُريدُ بذلك أن يُرِي أَنه مُتواضعٌ عندَ نفسهِ، فيرتفعُ بذلكَ عندَهُم ويمدحُونَهُ بهِ، وهذا من دَقائقِ أبوابِ الرِّياءِ، ‘মানুষ কখনো কখনো লোকদের সামনে নিজেকে তুচ্ছ করে উপস্থাপন করে। এর মাধ্যমে সে নিজেকে বিনয়ী দেখাতে চায়, তাদের কাছে মহৎ সাজতে চায় আর লোকজনও তার প্রশংসা করে। মূলত এটা রিয়ার একটি সূক্ষ্ম দরজা’।[15] সুতরাং বিনয় প্রদর্শন হ’তে হবে হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশ থেকে স্রেফ আল্লাহর জন্য। তবে সেই বিনয় বানদাকে সম্মানিত করে তুলবে।
৭. বিপদাপদে ধৈর্যধারণ করা :
মুমিনের জীবনে দুঃখ-কষ্ট নিছক দুর্ভোগ নয়; বরং প্রতিটা মুছীবত তার জন্য ছওয়াব ও মর্যাদা লাভের এক একটি মাধ্যম। মুমিনের জন্য প্রতিটি কষ্টই একেকটি সিঁড়ি, যা তাকে আরও উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছে দেয়। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ شَوْكَةٍ فَمَا فَوْقَهَا إِلَّا رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً، أَوْ حَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً، ‘কোন ঈমানদার ব্যক্তির গায়ে যদি কোন কাটার আঘাত কিংবা তার চাইতেও ছোট কোন আঘাত লাগে, তবে আল্লাহ এর মাধ্যমে তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন কিংবা তার একটি গোনাহ মাফ করে দেন’।[16] দুঃখ-কষ্টে ও বিপদাপদে নিষ্পেষিত মুমিনের জন্য অত্র হাদীছে প্রশান্তির খোরাক রয়েছে। একবার ভাবুন তো! একটি কাঁটার খোঁচাও যদি জান্নাতের পথে এক ধাপ এগিয়ে দেয়, তাহ’লে আমাদের জীবনে আগত দুঃখ-কষ্ট, বিপদাপদ কি কখনো বৃথা যাবে?
সুতরাং যারা রাতের অন্ধকারে কষ্টের অশ্রু লুকিয়ে রাখে, ব্যর্থতার ভারে নুয়ে পড়েও সিজদাবনত হয়, তাদের প্রতিটি যন্ত্রণাই আল্লাহর দরবারে এক একটি অমূল্য ইবাদত তুল্য। এ কষ্ট তাদের পাপ মোচনের ধারা হয়ে ঝরে পড়ে।
অনুরূপভাবে কেউ যদি কোন যালেমের অত্যাচারের শিকার হয়ে ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে, তবে সেই যুলুম তার জন্য আল্লাহর কাছে এবং জগতবাসীর কাছে সম্মানিত হওয়ার একটি বড় উপলক্ষ হয়ে যায়। আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেন, ثَلَاثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ، قَالَ: مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ، وَلَا ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلِمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلَّا زَادَهُ اللهُ عِزًّا، وَلَا فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلَّا فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ، ‘আমি তিনটি বিষয়ে শপথ করছি এবং সেগুলোর ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি। তোমরা এগুলো মনে রাখবে। তিনি বলেন, (১) দান-খায়রাত করলে কোন বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। (২) কোন বান্দার উপর যুলুম করা হ’লে এবং সে তাতে ধৈর্যধারণ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। (৩) কোন বান্দা ভিক্ষার দরজা খুললে আল্লাহ তার অভাবের দরজা খুলে দেন’।[17]
ছাহাবায়ে কেরাম ধৈর্যকে মহৎ গুণ মনে করতেন। যেমন ওমর (রাঃ) বলেছেন,إِنَّ أَفْضَلَ عَيْشٍ أَدْرَكْنَاهُ بِالصَّبْرِ، وَلَوْ أَنَّ الصَّبْرَ كَانَ مِنَ الرِّجَالِ كَانَ كَرِيمًا، ‘আমরা যে উত্তম জীবন লাভ করেছি, তা পেয়েছি ধৈর্যের মাধ্যমে। আর যদি ধৈর্য কোন মানুষ হ’ত, তাহ’লে সে হ’ত এক সম্মানিত মহাপুুরুষ’।[18] হাসান বাছরী (রহঃ) বলেন,الصبر كنز من كنوز الخير، لا يعطيه الله إلا لعبد كريم عنده، ‘ধৈর্য হ’ল কল্যাণের গুপ্তধন। আল্লাহ তা কেবল সেই ব্যক্তিকে দান করেন, যিনি তাঁর কাছে সম্মানিত’।[19]
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ)-কে যখন জেলখানায় নির্যাতন করা হয়, তখন তিনি বলেছিলেন, ما يصنع أعدائي بي؟ أنا جنتي وبستاني في صدري، إن رحت فهي معي لا تفارقني، إن حبسي خلوة، وقتلي شهادة، وإخراجي من بلدي سياحة، ‘শত্রুরা আমার কিইবা করতে পারবে? আমার জান্নাত ও আমার আনন্দ-বাগান তো আমার বুকের ভিতরে। আমি যেখানেই যাই না কেন, এটা আমার সঙ্গেই থাকে, কখনো আলাদা হয় না। যদি তারা আমাকে বন্দী করে, তবে তা আমার জন্য নিঃসঙ্গ ইবাদতের সুযোগ। যদি হত্যা করে, তবে তা আমার জন্য শাহাদত। আর যদি আমাকে নির্বাসনে পাঠায়, তবে তো সেটা আমার জন্য (আল্লাহর পথে নিরন্তর) সফর’।[20] ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ)-এর এই উক্তি একজন সাচ্চা মুমিনের অন্তরজগৎ, ঈমান ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসার প্রতিচ্ছবি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টিকে জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য বানায়, তার শান্তি ও জান্নাত বাহ্যিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে না; বরং তা লুক্কায়িত থাকে তার হৃদয়ে গহীন কোণে।
সুতরাং মুমিনের হৃদয় যদি ঈমান ও ছবরের বলে বলীয়ান থাকে, তবে সে কখনো পরাজিত হয় না। শত্রুরা তার দেহকে আঘাত করতে পারে; কিন্তু তার হৃদয় থাকে অক্ষত, জান্নাতী সওগাতে সিক্ত। অতএব যাদের অন্তরে জান্নাতের অনুভূতি আছে, যাবতীয় বিপদাপদে ধৈর্য ধরার শক্তি আছে- দুনিয়ার যুলুম তাকে কাবু করতে পারে না। জান্নাতের সম্মানিত জীবন তাদের সদা হাতছানি দেয়। (ক্রমশ:)
আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী;
এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়।
[1]. তিরমিযী হা/২৪১৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৬০৯৭; ছহীহাহ হা/২৩১১।
[2]. মুস্তাদরাকে হাকেম হা/২০৭; ছহীহাহ হা/৫১।
[3]. তিরমিযী হা/৩৮৮; নাসাঈ হা/১১৩৯, সনদ ছহীহ।
[4]. মুসনাদে আহমাদ হা/২২৩২১; ছহীহাহা হা/১৭৫৬।
[5]. মুসনাদে আহমাদ হা/১৫৯২৬; ছহীহাহ হা/১৫১৯।
[6]. মুসলিম হা/২৫১; মিশকাত হা/২৮২।
[7]. মুসলিম হা/৬৬৬; ইবনু হিববান হা/২০৪৪।
[8]. ইবনু মাজাহ হা/ ৯৯৫; ছহীহাহ হা/২৫৩২, সনদ ছহীহ।
[9]. ছালেহী আশ-শামী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ (বৈরূত : দারুল কতুব আল-ইলমিইয়াহ, ১৪১৪হি./১৯৯৩খৃ.), ১/৪২১।
[10]. বায়হাক্বী, আয-যুহদুল কাবীর, পৃ. ৩৫১; ইবনু রজব হাম্বলী, জামে‘উল ‘উলূম ওয়াল হিকাম, মুহাক্কিক্ব : শু‘আইব আরনাউত্ব (বৈরূত : মুআস্সাসাতুর রিসালাহ, ৭ম সংস্করণ, ১৪১৭হি./১৯৯৭খৃ.), পৃ. ১/৪০০।
[11]. ইবনু হাজার হায়তামী, আয-যাওয়াজির আন ইক্বতিরাফিল কাবায়ের (বৈরূত : দারুল ফিকর, ১ম মুদ্রণ, ১৪০৭হি./১৯৮৭খৃ.), ১/২০।
[12]. মুসলিম হা/২৫৮৮; তিরমিযী হা/২০২৯; মিশকাত হা/১৮৮৯।
[13]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, হা/১৩২; পৃ. ১৯২।
[14]. আল-আসকারী, আল-মাছূন ফিল আদাব (কুয়েত : মাত্ববা‘আতুল হুকূমাহ, ২য় মুদ্রণ, ১৯৮৪খৃ.), পৃ. ১১৭।
[15]. ইবনু রজব হাম্বলী, শারহু হাদীছি ‘মা যি’বানে জাই‘আন (কায়রো : আল-ফারূক্ব আল-হাদীছাহ, ২য় মুদ্রণ, ১৪২৪হি./২০০৩খৃ), পৃ. ৮৮।
[16]. মুসলিম হা/২৫৭২; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৭৭৯।
[17]. তিরমিযী হা/২৩২৫; তাবারাণী, মু‘জামুল কাবীর হা/৮৫৫, সনদ ছহীহ।
[18]. ইবনু আবীদ্দুনয়া, আছ-ছাবরু ওয়াছ ছাওয়াব (বৈরূত : দারু ইবনে হাযম, ১ম মুদ্রণ, ১৪১৮হি./১৯৯৭খৃ.), পৃ. ২৪।
[19]. ইবনুল ক্বাইয়িম, উদ্দাতুছ ছাবেরীন ওয়া যাখিরাতুশ শাকেরীন (রিয়াদ : দারু আত্বাআতুল ইলম, ৪র্থ মুদ্রণ, ১৪৪০হি./২০১৯হি.), ১/১৭৭।
[20]. ইবনে তায়মিয়াহ, আল-মুস্তাদরাক ‘আলা মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ১/১৫৩; ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ওয়াবিলুছ ছাইয়িব (কায়রো : দারুল হাদীছ, ৩য় মুদ্রণ, ১৯৯৯হি.) পৃ. ৪৮।