এক দেশে ছিল এক গরীব
কৃষক। তার অল্প কিছু জমি ছিল। সে জমিতে কিছু পেয়ারা গাছ লাগাল। তার নিবিড়
পরিচর্যায় গাছগুলি অনেক বড় ও সুন্দর হয়ে ওটলো। গাছের পাতার ফাঁকে ফাকে ধরল
প্রচুর পেয়ারা। সে নিজে খাওয়ার পরেও একদিন কিছু পেয়ারা গাছ থেকে নামিয়ে
বাড়ির কাছে ছোট্ট বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে গেল। পেয়ারা কেনার জন্য অনেক
ক্রেতা আসল। ক্রেতাদের মধ্যে একজনের পেয়ারা কেনার টাকা ছিল না। কিন্তু
তরতাজা পেয়ারা খাওয়ার জন্য খুব লোভ হ’ল। কি করে পেয়ারা খাওয়া যায়, সেজন্য
সে ঐ কৃষকের সাথে আলাপ শুরু করল। সে বলল, বাহ! বেশ সুন্দর তরতাজা পেয়ারা
যে! এর পিছনে আপনার অনেক শ্রম আছে নিশ্চয়ই। অন্যথা এত সুন্দর ফল হ’তে পারে
না। এতে কোন দাগও নেই। দেখতে যত সুন্দর খেতে তদ্রূপ মিষ্টি ও সুস্বাদু কি?
এসব শুনে কৃষক লোকটিকে পেয়ারা খাওয়ার জন্য অনুরোধ করল। কিন্তু ক্রেতা
পেয়ারা খেল না। অবশেষে কৃষক ঐ ব্যক্তিকে এক কেজি পেয়ারা বাকিতে দিতে চাইল।
ক্রেতা প্রথমে নিতে রাযী না হ’লেও কৃষকের কথায় পরে রাযী হ’ল। ক্রেতা পুনরায়
বলল, পেয়ারা খেতে ভাল হবে তো? কৃষক তখন ঝুড়ি থেকে আরো একটা পেয়ারা ক্রেতার
হাতে দিয়ে বলল, খেয়ে দেখুন, এটার পয়সা লাগবে না। ভাল হ’লে নিবেন, আর ভাল
না হ’লে নিতে হবে না। তখন ক্রেতা বলল, এখন খাওয়া যাবে না, আমি ছিয়াম আছি।
কৃষক বলল, রামাযানের তো মাত্র দু’দিন বাকী, এই অসময় কিসের ছিয়াম? ক্রেতা
বলল, গত রামাযান মাসের কাযা ছিয়াম আদায় করছি। কৃষক রেগে পেয়ারার ব্যাগ কেড়ে
নিয়ে বলল, যে আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করতে এত দেরী করে, সে মানুষের ঋণ সময় মত
পরিশোধ করবে কি করে?
শিক্ষা : সময়ের কাজ সময়ে করতে হয়, না হ’লে ঠকতে হয়।
-মুহাম্মাদ খাদিমুল ইসলাম
নওদাপাড়া মাদরাসা, রাজশাহী।