পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭। পর্ব ৮। পর্ব ৯। শেষ পর্ব ।
ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর উপস্থিত জওয়াব প্রদানে দক্ষতা : ৩টি মজার ঘটনা
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ছাত্রজীবন থেকেই উপস্থিত জওয়াব প্রদানে পারঙ্গম ছিলেন। ছাত্রজীবনে কোন ছাত্র তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি দ্রুত এমন উত্তর দিতেন যে, প্রশ্নকারী হতভম্ব হয়ে যেত। ফারেগ হওয়ার পর দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে বিদায়লগ্নে স্বীয় শিক্ষক মাওলানা মাহমূদুল হাসান দেওবন্দীও তাঁর এই গুণের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন।[1] নিম্নে তাঁর উপস্থিত উত্তর প্রদানের দক্ষতা সম্পর্কিত ৩টি মজার ঘটনা উল্লেখ করা হ’ল-
১. একবার জনৈক শিখ নেতা মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মাওলানা! ভেড়া ও শূকরের চেহারা-ছুরত দেখতে প্রায় একই রকম। তাহ’লে আপনারা কেন ভেড়ার গোশত খান এবং শূকরের গোশত খাওয়াকে কেন হারাম মনে করেন? একথা শুনেই অমৃতসরী হাসতে শুরু করেন এবং বলেন, সরদার ছাহেব! আপনি তো কঠিন ত্যাড়া প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু এটা বলুন তো যে, আপনি যখন স্ত্রী এবং মা-বোন বা পুত্রবধূ ও কন্যার মধ্যে পূর্ণ সাদৃশ্য দেখতে পান, তখন স্ত্রীকে কেন হালাল মনে করেন আর মা-বোন বা পুত্রবধূ ও কন্যাকে কেন হারাম মনে করেন? শুনুন! ইসলাম আমাদেরকে ভেড়ার গোশত ভক্ষণের বৈধতা প্রদান করেছে আর শূকর হারাম হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু আপনার ধর্মে তো এটা সুস্পষ্টভাবে বলাও নেই যে, অমুককে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করো আর অমুককে করো না। এরূপ উত্তর শুনে শিখ নেতা লজ্জায় ঘাম মুছতে মুছতে সেখান থেকে প্রস্থান করেন।[2]
২. একবার বিতর্ক চলাকালে জনৈক খ্রিস্টান তার্কিক বলে উঠেন, আপনাদের রাসূল মুহাম্মাদ যদি আল্লাহর এতই প্রিয় হয়ে থাকেন, তাহ’লে তাঁর কলিজার টুকরা নাতি হুসাইনকে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হ’তে দেখে কেন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে তাঁকে বাঁচিয়ে নিলেন না? মাওলানা এ প্রশ্ন শুনে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে জবাব দিলেন, ভাই তিনি তো আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু আল্লাহ উত্তর দেন যে, আমার হাবীব আমি কি কবর? আমি তো নিজেই এই চিন্তায় আছি যে, যালেম খ্রিস্টানরা আমার একমাত্র পুত্রকে শূলিকাষ্ঠে চড়িয়েছে। কিন্তু আমি তার জন্য কিছুই করতে পারিনি। আর হুসাইন তবু তো তোমার নাতি।
একথা শুনে খ্রিস্টান তার্কিক অত্যন্ত লজ্জিত হন। অমৃতসরী বলেন, পাদ্রী ছাহেব! জ্ঞান ও বুদ্ধি-বিবেকপ্রসূত কিছু বলুন, বালকসুলভ কি ধরনের কথাবার্তা বলছেন?[3]
৩. একবার জনৈক আর্য তার্কিক লাহোরে ‘গোশত ভক্ষণ’ বিষয়ে অমৃতসরীর সাথে বিতর্ক করছিলেন। তিনি বিদ্রুপাত্মক ভঙ্গিতে অমৃতসরীকে বলেন, গোশত ভক্ষণের ফলে কামভাব জাগ্রত হয়। মুসলমানরা যেহেতু যৌন-পূজারী তাই তারা গোশত খায়। জবাবে মাওলানা বললেন, পন্ডিতজী! একটু ভেবে-চিন্তে কথা বলুন! মুসলমানরা যৌন-পূজারী, না আপনি? গোশতখোর যৌন-পূজারী হয়, না ডালখোর? দেখুন! বাঘ গোশতখেকো জন্তু। কিন্তু সে তার সঙ্গীনীর কাছে একবারই যায়। কিন্তু চড়ুইকে আপনি হয়তো দেখেছেন যে, এরা ডালখোর। অথচ এরা অনেক যৌন-পূজারী। মোরগ-মুরগীও গোশতখোর নয়, আপনার মতোই ডালখোর। কিন্তু এরাও অনেক যৌন-পূজারী। এ ধরনের আরো কিছু উদাহরণ অমৃতসরী পেশ করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পন্ডিতজী লজ্জিত হয়ে বললেন, আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিচ্ছি। এখন আপনি আর বেশী ব্যাখ্যা করবেন না।[4]
সাংবাদিকতায় মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর অবদান :
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ছাত্রজীবন শেষ করামাত্রই শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। তিনি সর্বমোট ৮ বছর শিক্ষকতা করেন। অতঃপর এ পেশা ছেড়ে দিয়ে গ্রন্থ রচনা, বক্তৃতা প্রদান ও মুনাযারায় আত্মনিয়োগ করেন।
শিক্ষকতা ছেড়ে গ্রন্থ রচনায় নিয়োজিত হওয়ার কিছুদিন পরেই অমৃতসরী অনুভব করেন যে, দ্বীনের দাওয়াত প্রচার এবং ইসলাম বিরোধীদের হামলা মুকাবিলা করার জন্য শুধু গ্রন্থ রচনাই যথেষ্ট নয়; বরং যুগের চাহিদা ও দাবী অনুযায়ী পত্রিকা প্রকাশ অপরিহার্য ও অনিবার্য। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি সাংবাদিকতার জগতে প্রবেশ করেন এবং মোট ৩টি পত্রিকা প্রকাশ করেন।[5] নিম্নে এ সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল-
১. সাপ্তাহিক আহলেহাদীছ : ১৩২১ হিজরীর ২৩শে শা‘বান মোতাবেক ১৯০৩ সালের ১৩ই নভেম্বর উর্দূ সাহিত্যাকাশে একটি নতুন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘আহলেহাদীছ’-এর আবির্ভাব ঘটে।[6] মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী লিখেছেন, ثم رجع إلى أمرتسر واشتغل بالتصنيف والتذكير والمناظرة، وأسس دار الطباعة، وأنشأ صحيفة أسبوعية في سنة إحدى وعشرين و ثلاث مائة وألف ةسمى أهل الحديث، اسةمرة في الصدور أربعا وأربعين سنة- ‘অতঃপর তিনি অমৃতসরে ফিরে আসেন এবং গ্রন্থ রচনা, বক্তৃতা ও মুনাযারায় নিয়োজিত থাকেন। তিনি একটি প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৩২১ হিজরীতে ‘আহলেহাদীছ’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা চালু করেন। যা ৪৪ বছর যাবৎ প্রকাশিত হয়েছে’।[7]
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী পত্রিকাটি প্রকাশের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, প্রেক্ষাপট ও বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে বলেন, ‘যখন আমরা অনুভব করলাম যে, ইসলামের দাওয়াত প্রচারের প্রয়োজনীয়তা দৈনন্দিন বাড়ছে এবং শুধু গ্রন্থ রচনাই যথেষ্ট নয় বলে প্রমাণিত হ’ল তখন আহলেহাদীছ পত্রিকা বের করা হ’ল। যাতে সকল ভ্রান্ত ধ্যান-ধারণা অপনোদন করা যায় এবং প্রত্যেক অমুসলিমের হামলার জবাব দেওয়া যায়’।[8] তিনি আরো বলেন, ‘এটি কেমন পত্রিকা? এটি দুই সমুদ্রের মিলনস্থল (مجمع البحرين) তথা দ্বীন ও দুনিয়ার সমন্বিত রূপ। এতে জাতীয়, ধর্মীয়, নৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রবন্ধাবলী ছাড়াও নানান প্রশ্নের জবাব, ফৎওয়া এবং বিরোধীদের অভিযোগ বা সমালোচনার জবাব সন্নিবেশিত হয়। মোটকথা এই পত্রিকাটি তাওহীদ ও সুন্নাতের রক্ষক, শিরক ও বিদ‘আতের দুশমন, বিরোধীদের সামনে ঢালের ভূমিকা পালনকারী এবং সমগ্র বিশ্বের বাছাইকৃত সংবাদ পরিবেশনকারী’।[9]
সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’ উপমহাদেশে কুরআন ও সুন্নাহর দাওয়াত প্রচার-প্রসারে নিবেদিতপ্রাণ ছিল। পত্রিকার কভার পৃষ্ঠায় বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম-এর পরে সর্বদা এই হাদীছটি লিপিবদ্ধ থাকত تَرَكْتُ فِيْكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ، ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বস্ত্ত রেখে যাচ্ছি। তোমরা যতদিন এ দু’টিকে অাঁকড়ে ধরে থাকবে, ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না’। বস্ত্ত দু’টি হ’ল আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবীর সুন্নাত’।[10] এরপর নিম্নোক্ত ফার্সী কবিতাটি লেখা থাকত-
أصل ديں آمد كلام الله معظم داشتن
پس حديث مصطفى برجاں مسلم داشتن
মর্মার্থ : দ্বীনের মূল হ’ল আল্লাহর কালাম কুরআন মাজীদকে সম্মান করা। অতঃপর হাদীছে নববীর জন্য মুসলমান তাঁর জীবন উৎসর্গ করবে।
উক্ত হাদীছ ও কবিতা পত্রিকার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে সুস্পষ্টভাবে প্রতিভাত করত।[11]
পত্রিকাটি প্রত্যেক শুক্রবার নিয়মিত প্রকাশিত হ’ত। ১৯০৩ সালের ১৩ই নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ১লা আগস্ট (১৩ই রামাযান ১৩৬৬ হিঃ) পর্যন্ত ৪৪ বছর যাবৎ এটি ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত ছিল। এ সুদীর্ঘ সময়ে মাত্র একবার এটি বন্ধ হয়েছিল। ১৯১৩ সালের ১০ই ডিসেম্বর একটি প্রবন্ধ প্রকাশের জেরে পাঞ্জাব সরকার এর প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়ে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে দেয় এবং ভবিষ্যতের জন্য যামানত বাবদ ২ হাযার রূপী তলব করে। এজন্য অমৃতসরী উক্ত সালের ১৯শে ডিসেম্বর-এর সংখ্যার পর পত্রিকার প্রকাশনা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বাধ্য হন।[12] মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী নিজেই বলেছেন, ‘১৯১৩ সালের ১৯শে ডিসেম্বরও ‘আহলেহাদীছ’-এর ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকার যোগ্য। যেই তারিখের পর প্রায় সাড়ে তিন মাস যাবৎ ‘আহলেহাদীছ’ ইউসুফ (আঃ)-এর মতো কুঁয়ায় পড়েছিল’।[13] ১৯১৪ সালের ২রা এপ্রিল অমৃতসরী দুই হাযার রূপী যামানত দাখিল করেন এবং ১৯১৪ সালের ১০ই এপ্রিল থেকে পত্রিকাটি পুনরায় প্রকাশিত হ’তে শুরু করে। মাঝখানের সময়টায় তিনি ‘মাখযানে ছানাঈ’ ও ‘গুলদাস্তায়ে ছানাঈ’ নামে দু’টি পত্রিকা প্রকাশ করে ‘আহলেহাদীছ’ প্রকাশিত না হওয়ার শূন্যতা পূরণ করেন।[14] এজন্য আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী যথার্থই বলেছেন, ‘এই সংখ্যাগুলো সর্বদিক বিবেচনায় ‘আহলেহাদীছ’-এরই সংখ্যা ছিল। আইনী বাধ্যবাধকতার কারণে শুধু নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল’।[15]
৪৪ বছরে প্রকাশিত উক্ত পত্রিকার সর্বমোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল ৩৫ হাযারের বেশী। প্রথমে এটি ৮ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হ’লেও পরবর্তীতে পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৪-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৬-২০ পৃষ্ঠার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত।[16] এতে শুধু কাদিয়ানীদের ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডনে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর ৪৫৫টি প্রবন্ধ, বাহাঈদের বিরুদ্ধে ৪১টি প্রবন্ধ, আর্য সমাজীদের খন্ডনে ৯১টি প্রবন্ধ, শী‘আ মতবাদের খন্ডনে ৩৩টি প্রবন্ধ, প্রকৃতিবাদীদের বিরুদ্ধে ২৪টি প্রবন্ধ এবং ব্রেলভীদের খন্ডনে ১৮টি প্রবন্ধ রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বিষয়ে আরো বহু প্রবন্ধ রয়েছে।[17]
এবার পত্রিকার বিষয়সূচী সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা যাক-
১. সম্পাদকীয় (اداريه) :
সম্পাদকীয় একটি পত্রিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কলাম। সম্পাদকীয়কে পত্রিকার ভরকেন্দ্র ও মেরুদন্ড বলা যেতে পারে। যার ওপর ভর করে পত্রিকা দাঁড়িয়ে থাকে। পত্রিকার স্বরূপ উন্মোচনে সম্পাদকীয় মূল চাবিকাঠি। সম্পাদকীয় পাঠে পত্রিকার নীতি-আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গি বুঝা যায়। এজন্য সম্পাদকীয়কে পত্রিকার দৃষ্টিভঙ্গির ‘উন্মুক্ত দরজা’ও বলা হয়।[18]
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ৪৪ বছর যাবৎ নিয়মিত ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকার অমূল্য সম্পাদকীয়গুলো লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি হজ্জ সফরে গেলে ১৯২৬ সালের ৩০শে এপ্রিল থেকে ২৭শে আগস্ট পর্যন্ত তাঁর পুত্র মাওলানা আবূ রিযা আতাউল্লাহ এর সম্পাদকীয় লিখেন। এ সময় পত্রিকার তত্ত্বাবধান করতেন মাওলানা মুহাম্মাদ ইবরাহীম মীর শিয়ালকোটী।[19]
আহলেহাদীছ পত্রিকায় মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী লিখিত সম্পাদকীয়গুলো ছিল গোটা পত্রিকার সারনির্যাস ও সবচেয়ে আকর্ষণীয় কলাম। এতে সাধারণভাবে শিরক ও বিদ‘আতে নিমজ্জিত বিভিন্ন ফিরকার সমালোচনা ও অভিযোগের জবাব প্রদান করা হ’ত এবং ইসলামী বিধি-বিধান ও মাসআলা সমূহ সম্পর্কে দালীলিক আলোচনা পেশ করা হ’ত। মূলত এগুলি ছিল ইলমের সুমিষ্ট সমুদ্র তুল্য। যা বিদ‘আত ও ভ্রষ্টতার খড়কুটোকে ভাসিয়ে নিয়ে যেত এবং তাওহীদ ও সুন্নাতের বাগিচাকে সিঞ্চিত করে তাকে সবুজ-শ্যামল করে তুলত।[20]
২. পর্যালোচনা (شذرات) : বিশেষ কোন বিষয়ে বা ঘটনা উপলক্ষে সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত নোট বা পর্যালোচনাকে ‘শাযারাত’ বলা হয়। একে ‘সংক্ষিপ্ত সম্পাদকীয়’ বলা হয়ে থাকে।[21] পত্রিকায় এ কলামটি নিয়মিত থাকত না; বরং প্রয়োজন হ’লে এতে বিভিন্ন বিষয়ে অমৃতসরী আলোকপাত করতেন। এর মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে দ্বীনী জাযবা জাগ্রত করতেন, বিরোধীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেন এবং তাদের বাতিল আক্বীদাও খন্ডন করতেন।
৩. কাদিয়ানী মতবাদ (قاديانى مشن) : কাদিয়ানী মতবাদের অসারতা ও ভ্রান্তি প্রমাণের জন্য অমৃতসরী তাঁর নিজের ও অন্যদের লিখিত প্রবন্ধগুলো এ কলামে প্রকাশ করতেন। এসব প্রবন্ধ পাঠ করে অনেকেই কাদিয়ানী মতবাদ থেকে তওবা করেছে। উল্লেখ্য যে, ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকায় কাদিয়ানীদের খন্ডনে শুধু ছানাউল্লাহ অমৃতসরীরই ৪৫৫টি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে।
৪. ফৎওয়া (فتاوى) : এতে অমৃতসরী বিভিন্ন ফৎওয়ার উত্তর প্রদান করতেন এবং কখনো সংক্ষিপ্তাকারে আবার কখনো বিস্তারিতভাবে কুরআন-সুন্নাহর দলীল-প্রমাণ উল্লেখ করতঃ প্রশ্নোত্তরগুলোকে শক্তিশালী করতেন। এ বিষয়ে কোন আলেম ভিন্নমত পোষণ করে লিখিত মতামত পেশ করলে সেগুলিও এ কলামে ছাপা হ’ত। অতঃপর অমৃতসরী সেগুলির দালীলিক জবাব দিতেন। এ ধরনের ফৎওয়াগুলো অত্যন্ত উপকারী ও তথ্যসমৃদ্ধ হ’ত। এতে মানুষ শারঈ বিষয়ে অধিকতর জ্ঞান লাভ করত।[22] উক্ত পত্রিকায় প্রকাশিত অমৃতসরীর ফৎওয়াগুলো পরবর্তীতে ‘ফাতাওয়া ছানাঈয়াহ’ নামে দু’খন্ডে সংকলিত ও প্রকাশিত হয়েছে।
৫. ধারাবাহিক তাফসীর (تفسير بالأقساط) : এতে ধারাবাহিকভাবে কিস্তি আকারে কুরআন মাজীদের তাফসীর প্রকাশ করা হ’ত। ১৯৩২ সালের জানুয়ারী মাসে লাহোর থেকে ‘আল-মায়েদা’ নামে খৃস্টানরা একটি মাসিক পত্রিকা বের করে। এর প্রথম সংখ্যাতেই পাদ্রী সুলতান মুহাম্মাদ পাল লিখিত ‘সুলতানুত তাফাসীর’-এর প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয়। অতঃপর প্রত্যেক মাসে এতে ১৬ পৃষ্ঠাব্যাপী পাদ্রী ছাহেবের এই তাফসীর ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হ’তে থাকে। ১৯৩২ সালের ৬ই মে ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকায় মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ‘বুরহানুত তাফাসীর’ শিরোনামে এর জবাব দেওয়া শুরু করেন। ১৯৩৩ সালের ২০শে জানুয়ারী পর্যন্ত ৩৬ কিস্তিতে যা প্রকাশিত হয়। সমুচিত জবাব পেয়ে পাদ্রী তাফসীর লেখা বন্ধ করে দেন। অতঃপর ১৯৩৪ সালের মার্চে পাদ্রী ছাহেব নতুনভাবে তাফসীর লেখা শুরু করলে ১লা জুন ১৯৩৪ থেকে ২৪শে মে ১৯৩৫ পর্যন্ত আহলেহাদীছ পত্রিকায় অমৃতসরী ৮১ কিস্তিতে তার জবাব দেন। এই জওয়াব প্রকাশিত হওয়ার পর পাদ্রী ছাহেব তাফসীর লেখা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।[23]
৬. চিঠি-পত্র (مراسلات) : পত্রিকার এ কলামটি পাঠকদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এতে সাধারণত পাঠকদের প্রশ্ন, লেখনী ও গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশিত হ’ত।
৭. দেশীয় সংবাদ (ملكى مُطَّلَع) : এতে সংক্ষেপে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হ’ত।
৮. বিবিধ বিষয় (متفرقات) : এতে দানের হিসাব, আহলেহাদীছ কনফারেন্স ও জালসা সমূহের বিজ্ঞপ্তি ও সংবাদ এবং গ্রন্থ পর্যালোচনা প্রভৃতি বিষয় প্রকাশিত হ’ত।
৯. নির্বাচিত সংবাদ (انتخاب الاخبار) : বাছাইকৃত ও গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সমূহ এ কলামে প্রকাশিত হ’ত। সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ সমূহের সারনির্যাস ছিল এটি।
১০. বিজ্ঞাপন (اشتهارات) : এখানে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হ’ত। তবে তিনি ছবি সম্বলিত ও নিম্নমানের বিজ্ঞাপন প্রকাশ থেকে বিরত থাকতেন। বরং সর্বদা সভ্যতা-ভব্যতা ও সুস্থ সংস্কৃতির প্রতি খেয়াল রাখতেন।
সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’-এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল এর সময়ানুবর্তিতা। পত্রিকাটি নিয়মিতভাবে যথাসময়ে প্রকাশিত হ’ত এবং প্রত্যেক শুক্রবারে পাঠকের হাতে পৌঁছে যেত। সেজন্য এটি দেশের সকল পত্রিকার চেয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর ছিল।[24]
মোটকথা শিরক-বিদ‘আতের মূলোৎপাটনে, ইসলামের সৌন্দর্য ও দাওয়াত প্রচার-প্রসারে এবং ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডনে গোটা হিন্দুস্তানে সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’-এর কোন জুড়ি ছিল না। আল্লামা রশীদ রিযা মিসরী বলেছেন,له مجلة ومؤلفات في الدفاع عن الإسلام، ‘ইসলামের প্রতিরক্ষায় নিবেদিত তাঁর একটি পত্রিকা (আহলেহাদীছ) এবং অনেক গ্রন্থ রয়েছে’।[25]
সুলাইমান বিন ছালেহ আল-খারাশী বলেন,وكانت هذه الجريدة فريدة في شبه القارة الهندية، في نشر تعاليم الإسلام والدفاع عنه، وبيان صحة منهج السلف وإثباته، ‘ইসলামের শিক্ষাসমূহ প্রচার-প্রসারে ও তার প্রতিরক্ষায় এবং সালাফে ছালেহীনের মানহাজের বিশুদ্ধতা বর্ণনায় ও সাব্যস্তকরণে ভারতীয় উপমহাদেশে এটি একটি অনন্য পত্রিকা ছিল’।[26]
আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) বলেন, إن الخدمات الجليلة التي قام بها العلامة الأمرتسري للملة والجماعة والجهود التي بذلها ضد الديانات الباطلة والفرق الضالة بمجلته أهل الحديث وبجرائده الأخرى كانت عديمة النظير، وكانت شخصيته متجلية فيها، ‘আল্লামা অমৃতসরী ‘আহলেহাদীছ’ ও অন্যান্য পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ ও আহলেহাদীছ জামা‘আতের যে গুরুত্বপূর্ণ খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন এবং বাতিল ধর্ম ও পথভ্রষ্ট ফিরকাগুলির বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছেন তা ছিল অতুলনীয়। এতে তার ব্যক্তিত্ব পরিপূর্ণরূপে উদ্ভাসিত হয়েছিল’।[27]
উপমহাদেশের খ্যাতিমান ঐতিহাসিক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক ভাট্টী বলেন, ‘সমগ্র ভারতের মাযহাবী, ইলমী, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমন্ডলে এই পত্রিকার গুরুত্ব ছিল সুবিদিত। মুসলিম-অমুসলিম সবাই এটি আগ্রহ সহকারে পাঠ করত এবং অধীর আগ্রহে এর অপেক্ষায় থাকত। ... এই পত্রিকাটি বিবিধ বিষয়ের আকর্ষণীয় সমাহার ছিল। এতে হিন্দুস্তানে বিদ্যমান সকল ধর্মীয় সম্প্রদায় সম্পর্কে বিশেষ ভঙ্গিতে লেখা হ’ত। একারণে যে আগ্রহ নিয়ে মুসলমানরা এটি পাঠ করত, ঠিক একই আগ্রহ নিয়ে অমুসলিমরাও এর অপেক্ষায় প্রহর গুণত’।[28]
আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী বলেন, ‘এই অনন্য পত্রিকাটি ইসলামী গোষ্ঠীগুলির ভিতর ও বাহির থেকে উদ্গত বাতিল চিন্তাধারা ও আপত্তিগুলির মূলোৎপাটনে এবং তা ছিন্নভিন্ন করণে সমগ্র অবিভক্ত হিন্দুস্তানের (বর্তমান পাকিস্তান ও ভারত) সবচেয়ে বেশী আলোচিত, সোচ্চার, জবরদস্ত ও অতুলনীয় পত্রিকা ছিল। যেটি কলমী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের দরাজ কণ্ঠকে স্তব্ধ করার ক্ষেত্রে নিজের দৃষ্টান্ত নিজেই ছিল। আমরা পত্রিকাটিকে মাওলানা অমৃতসরী (রহঃ)-এর অসাধারণ প্রতিভার সবচেয়ে বড় নিদর্শন হিসাবে আখ্যায়িত করতে পারি। এতে একদিকে যেমন আর্য সমাজীদের সমালোচনা করা হয়েছে, অন্যদিকে তেমনি খ্রিস্টানদের ভ্রান্ত ধারণাগুলি মহাকাশে বিক্ষিপ্ত হ’তে দেখা গেছে। একদিকে যদিও শী‘আদের প্রতারণা ও শরী‘আত বিকৃতির পর্দা উন্মোচন করা হয়েছে, তো অন্যদিকে রেযাখানী বিদ‘আতের সৈনিকদের সাথে লড়াই করেছে। একদিকে যদিও ইসলাম বিরোধিতার শ্লোগান তুলে আবির্ভূত অমুসলিম ফিরকাগুলির প্রতিরক্ষা রয়েছে, তো অন্যদিকে ইসলাম প্রচারের শ্লোগানের আড়ালে মিথ্যা নবুঅতের প্রসার ঘটানোর অশুভ প্রচেষ্টা বানচাল ও মূলোৎপাটন করেছে।
মোটকথা, এই অতুলনীয় সাপ্তাহিকের এক একটি সংখ্যা তেজোদীপ্ত ইলমী আলোচনার এক সৈন্যবাহিনীর ভূমিকা পালন করেছে। এটি অবিভক্ত ভারতের অর্ধ শতাব্দীর সকল আলোচনা-পর্যালোচনার ভান্ডার এবং ঐ সময়ের সকল মাযহাবী উত্থান-পতনের দর্পণও বটে। ইসলামের বড় দাঈ এবং আহলেহাদীছ আন্দোলনের ইতিহাসের অতন্দ্রপ্রহরী ও আমানতদার। এটি হাযার হাযার মানুষের সঠিক পথের দিশা লাভ থেকে শুরু করে সুস্থতা ও অসুস্থতা এবং জীবন ও মৃত্যুর কাহিনীও স্বীয় বক্ষে ধারণ করে আছে। তেমনি এতে জাতীয় রাজনীতির সকল পর্যায়ের বিবরণও সন্নিবেশিত হয়েছে।[29]
‘আল-জারীদা ওয়াছ ছাহাফাহ ইনদাল মুসলিমীন’ গ্রন্থে ভারতের পত্র-পত্রিকা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে,
ومن المجلات التي تدين بمذهب أهل السنة القديم مجلة (إشاعة السنة)، وكان الغرض الأكبر من إصدارها الرد على الآراء التي تنشرها مجلة (تهذيب الأخلاق)، ومجلة (نور الآفاق) و(نور الأنوار)، وهما تطبعان في كانفور، و(أهل الحديث) وتطبع في أمرتسر،
‘আহলুস সুন্নাহর প্রাচীন মাযহাবের অনুসারী পত্রিকাগুলির মধ্যে অন্যতম হ’ল ‘ইশা‘আতুস সুন্নাহ’। এই পত্রিকা প্রকাশের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ‘তাহযীবুল আখলাক’, কানপুর থেকে প্রকাশিত ‘নূরুল আফাক’ ও ‘নূরুল আনওয়ার’ পত্রিকায় প্রকাশিত মতামতগুলি খন্ডন করা। অমৃতসর থেকে প্রকাশিত ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকাটিও আহলুস সুন্নাহর প্রাচীন মাযহাব লালনকারী অন্যতম একটি পত্রিকা ছিল’।[30]
২. মাসিক মুরাককা‘ কাদিয়ানী (مرقع قاديانى) : ভন্ডনবী গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর মিথ্যা দাবী সমূহ খন্ডনের জন্য মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী এ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। ১৯০৭ সালের ১৫ই এপ্রিল মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী ইশতেহার প্রকাশ করে মুবাহালার আমন্ত্রণ জানালে অমৃতসরীর ঈমানী জোশ আরো বৃদ্ধি পায়। ফলে তিনি ১৯০৭ সালের জুন মাসে এই মাসিক পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। প্রত্যেক ইংরেজী মাসের ১ তারিখে এটি প্রকাশিত হ’ত। মুবাহালার ১৩ মাস ১০দিন পরে মির্যা গোলাম আহমাদের নিকৃষ্ট মৃত্যু হ’লে পত্রিকাটির তেমন প্রয়োজন না থাকায় ১৯০৮ সালের অক্টোবর মাসের পর তিনি এর প্রকাশনা
বন্ধ করে দেন। ২২-২৩ বছর পর কাদিয়ানীরা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে ১৯৩১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পুনরায় এটি প্রকাশ করেন। কিন্তু এপ্রিল ১৯৩৩ সালের সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর অমৃতসরী এটি বন্ধ করে দেন। কেননা কাদিয়ান থেকে প্রকাশিত বিষয়গুলো খন্ডনের জন্য সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’-ই যথেষ্ট ছিল।[31] উক্ত পত্রিকায় প্রথম দফায় প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো ‘মুরাককা‘ কাদিয়ানী’ শিরোনামেই ১৯১৭ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছিল।[32]
৩. মুসলমান (মাসিক ও পরে সাপ্তাহিক) : যখন খ্রিস্টান, হিন্দু, আর্য সমাজ ও অন্যান্য গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের উপর হামলা ও অভিযোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেল, তখন মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী বিশেষভাবে তাদের অভিযোগ খন্ডন ও জবাব দেওয়ার জন্য ১৯০৮ সালের মে মাসে এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। প্রত্যেক ইংরেজী মাসের ১৫ তারিখে এটি প্রকাশিত হ’ত। প্রথমে এটি মাসিক পত্রিকা হিসাবে পুস্তিকা সাইজে প্রকাশিত হ’ত। দু’বছর পর ১৯১০ সালের ৭ই জুন সংখ্যা থেকে এটি সাপ্তাহিক হয়ে যায় এবং লার্জ সাইজে প্রকাশিত হ’তে থাকে। তিন বছর পর ১৯১৩ সালের জুলাই মাস থেকে তিনি এর মালিকানা ও সম্পাদনার দায়িত্ব মুনশী আলীমুদ্দীনকে হস্তান্তর করেন। যিনি প্রথম থেকেই এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু মুনশী ছাহেব এটি বেশী দিন চালাতে পারেননি। ফলে ১৯১৩ সালের ৩১শে ডিসেম্বর-এর পর এটি বন্ধ হয়ে যায়।[33]
(ক্রমশঃ)
ড. নূরুল ইসলাম
ভাইস প্রিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
[1]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ১৬৫-১৬৬।
[2]. ঐ, পৃঃ ১৪৯-১৫০; মাসিক ছিরাতে মুস্তাকীম (উর্দূ), বার্মিংহাম, লন্ডন, মে ২০০৭, পৃঃ ২৯।
[3]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ১৬৮-১৬৯।
[4]. ঐ, পৃঃ ১৭০; ছিরাতে মুস্তাকীম, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৯।
[5]. আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৮; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪১।
[6]. মাওলানা মুহাম্মাদ মুস্তাকীম সালাফী, জামা‘আতে আহলেহাদীছ কী ছাহাফাতী খিদমাত (বেনারস : আল-ইয্যাহ ইউনিভার্সাল, জানুয়ারী ২০১৪), পৃঃ ২৪; মুহাম্মাদ মুশতাক বিন আব্দুল মান্নান, আল্লামা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী কী ছাহাফাতী খিদমাত, মাসিক মুহাদ্দিছ, জামে‘আ সালাফিইয়াহ, বেনারস, ভারত, ডিসেম্বর ২০১৫, পৃঃ ৩৮।
[7]. নুযহাতুল খাওয়াতির ৮/১২০৫।
[8]. নুকূশে আবুল অফা, পৃঃ ২৯; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৩। গৃহীত : সাপ্তাহিক আহলেহাদীছ, ২৩শে জানুয়ারী ১৯৪২, পৃঃ ৫।
[9]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৩; মাসিক আস-সিরাজ (উর্দূ), ঝান্ডানগর, নেপাল, জানুয়ারী ২০০৯, পৃঃ ১৫।
[10]. মুওয়াত্ত্বা ইমাম মালেক হা/১৬২৮; মিশকাত হা/১৮৬।
[11]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৩৯।
[12]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪১-৪২; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৮-৯৯।
[13]. মাসিক মুহাদ্দিছ, ডিসেম্বর ২০১৫, পৃঃ ৪০।
[14]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪২; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৮-৯৯; মাসিক মুহাদ্দিছ, ফেব্রুয়ারী ২০০৯, পৃঃ ২৪।
[15]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪২।
[16]. আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৯৮-৯৯; মাসিক মুহাদ্দিছ, ফেব্রুয়ারী ২০০৯, পৃঃ ২৩-২৪।
[17]. মাসিক মুহাদ্দিছ, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৪।
[18]. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সম্পাদকীয়র গুরুত্ব ও আবশ্যিকতা, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ঢাকা, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেষ আয়োজন-১, ১৫ই মার্চ ২০২১, পৃঃ ১৩।
[19]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৩।
[20]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৪২।
[21]. ভারতের দারুল মুছান্নিফীন শিবলী একাডেমী থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত উর্দূ মাসিক পত্রিকা ‘মা‘আরিফ’-এর সম্পাদকীয়গুলো ‘শাযারাত’ শিরোনামেই প্রকাশিত হয়।
[22]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৪৩।
[23]. তাহরীকে খতমে নবুঅত ৩/১৪১-১৪৭; মাসিক মুহাদ্দিছ, ডিসেম্বর ২০১৫, পৃঃ ৪০-৪১।
[24]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৩৮-৩৪৬; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১০১-১০৪।
[25]. আল-মানার, ৩৩তম বর্ষ, ১৩৫১ হিজরী, পৃঃ ৬৩৯।
[26]. ঐ, মুনাছাহাতুশ শায়খায়েন (রিয়াদ : দারুছ ছুলূছিয়া, ১ম প্রকাশ, ১৪৩১ হিঃ/২০১০), পৃঃ ২৮।
[27]. আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১০৪।
[28]. বায্মে আরজুমন্দাঁ, পৃঃ ১৫৬।
[29]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২৬০-২৬১।
[30]. হার্টম্যান, পিকে হিট্টি গং, আল-জারীদা ওয়াছ ছাহাফাহ ইনদাল মুসলিমীন, ইবরাহীম খুরশীদ গং কর্তৃক আরবীতে অনূদিত (বৈরূত: দারুল কিতাব আল-লুবনানী, ১ম সংস্করণ, ১৯৮৪), পৃঃ ৫১।
[31]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৪৬-৩৪৮; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৪; ২৫৮-২৬০; জামা‘আতে আহলেহাদীছ কী ছাহাফাতী খিদমাত, পৃঃ ২৫-২৬।
[32]. মাসিক মুহাদ্দিছ, ফেব্রুয়ারী ২০০৯, পৃঃ ২৪।
[33]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৪; জামা‘আতে আহলেহাদীছ কী ছাহাফাতী খিদমাত, পৃঃ ২৬-২৭।