পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭। পর্ব ৮। পর্ব ৯। শেষ পর্ব ।
ভূমিকা :
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (১৮৬৮-১৯৪৮) উপমহাদেশের একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি গভীর জ্ঞানের অধিকারী আলেমে দ্বীন, অবিসংবাদিত ধর্মতাত্ত্বিক, অপ্রতিদ্বন্দ্বী মুনাযির, অনলবর্ষী বাগ্মী, মুহাদ্দিছ, মুফাস্সির, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সংগঠক, সম্পাদক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তবে মুনাযির বা তার্কিক হিসাবেই তাঁর খ্যাতি বিশ্বময়। ‘শেরে পাঞ্জাব’ (পাঞ্জাবের সিংহ) ও ‘ফাতিহে কাদিয়ান’ (কাদিয়ান বিজয়ী) মুনাযির খ্যাত মাওলানা অমৃতসরী বাহাছ-মুনাযারার ইমাম ও মুকুটহীন সম্রাট ছিলেন। এক হাযারের অধিক মুনাযারায় অংশগ্রহণ করে তিনি এক বিরল নযীর স্থাপন করেছিলেন। খ্রিষ্টান, কাদিয়ানী সহ যেকোন বাতিল ফিরক্বা ও ইসলাম বিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে যে নির্ভীক সৈনিকটি সর্বাগ্রে ময়দানে আবির্ভূত হতেন তিনি হলেন মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী। বলা হয়ে থাকে, ইসলামের বিরুদ্ধে রাত্রির গভীর অন্ধকারে যদি কোন ফিরক্বার আবির্ভাব ঘটে তাহলে সকাল বেলায় অমৃতসরী তার জবাব দেয়ার জন্য প্রস্ত্তত হয়ে যান। বক্তব্য, লেখনী ও মুনাযারার মাধ্যমে তিনি ভন্ড নবী মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী (১৮৩৫-১৯০৮) ও তার বশংবদদের বিরুদ্ধে হিমাদ্রিসম ঈমানী দৃঢ়তা ও অসীম সাহসিকতার সাথে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর এক অমূল্য রত্ন ও সম্পদ ছিলেন।
জন্ম ও বংশ পরিচয় :
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ১৮৬৮ সালে (১২৮৭ হিঃ) ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষের আদি ভিটা ছিল কাশ্মীরের ইসলামাবাদ যেলার (বর্তমানে অনন্তনাগ)[1] ডোর এলাকায়। তাঁর পিতা খিযির জূ পশমী কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। ১৮৬০ সালের দিকে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে অথবা কাশ্মীরের ডোগরা রাজা রণবীর সিং-এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অমৃতসরে বসতি গড়েন।[2] ছানাউল্লাহ অমৃতসরী নিজেই বলেছেন, ‘আমি পাঞ্জাব প্রদেশের অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করি। আমার পিতা খিযির জূ ও আমার চাচা আকরাম জূ কাশ্মীরের শ্রীনগরের ইসলামাবাদ যেলা (বর্তমানে অনন্তনাগ) থেকে অমৃতসরে হিজরত করেন। পশমী কাপড়ের ব্যবসা করার জন্য তাঁরা দু’জন এ শহরে আসতেন। কাশ্মীরী পরিবারগুলোর মধ্যে একটি পরিবারকে ‘মিন্টু’ বলা হত। এটি ব্রাহ্মণদের একটি শাখা। তাঁরা (অর্থাৎ আমার পিতা ও চাচা) এই পরিবারের সন্তান’।[3] কাশ্মীরী পন্ডিতদের অপর শাখা ‘নেহরু’-এর মতো ‘মিন্টু’কেও সমাজের মানুষ অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখত।
অমৃতসরীর পূর্বপুরুষের মধ্যে সর্বপ্রথম কে এবং কখন ইসলাম গ্রহণ করে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় না।[4] ধারণা করা হয়, কাশ্মীরের মুসলিম গভর্ণর যয়নুল আবেদীন শাহের (মৃঃ ৮৭৭ হিঃ) শাসনামলে তাঁর পরিবার ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়।[5] ‘নুযহাতুল খাওয়াতির’ গ্রন্থে বলা হয়েছে,أسلم آباؤه في القديم ‘তাঁর পূর্বপুরুষ প্রাচীনকালে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন’।[6]
দুঃখের অথৈ সাগরে ভাসমান জীবন তরী :
৭
বছর বয়সে ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর পিতা মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর দগদগে
ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই কিছুদিন পর পিতৃত্বের শূন্যতা পূরণে যৎকিঞ্চিৎ
সচেষ্ট চাচা মুহাম্মাদ আকরামও পরপারে পাড়ি জমান। পিতা ও চাচার মৃত্যুতে
শিশু অমৃতসরীর জীবনে ঘোর অমানিশা নেমে আসে। তখন পরিবারে তার একমাত্র সহায়
ছিল বড় ভাই মুহাম্মাদ ইবরাহীম। কিন্তু তার অবস্থাও খুব একটা ভাল ছিল না।
কাপড় রিফু করে কোন মতে তার দিন চলত। এরূপ দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায়
জীবন-জীবিকার তাগিদে তিনি বড় ভাইয়ের কাছে রিফু করা শেখেন এবং এতে পূর্ণ
দক্ষতা অর্জন করেন। ১৪ বছর বয়সে মাতার জীবন প্রদীপও নিভে যায়। ফলে
স্নেহ-মমতার পরশের শেষ আশ্রয়স্থল ও সুতোটাও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।[7]
অভাব-অনটন ও দুঃখের অথৈ সাগরে ভাসমান নিজের জীবনের নিষ্করুণ দৃশ্যকল্প তিনি
তাঁর আত্মজীবনীতে এভাবে এঁকেছেন, ‘আমার বয়স যখন ৭ বছর তখন আমার পিতা মারা
যান। অতঃপর আমার চাচাও মারা যান। আমার বড় ভাই মুহাম্মাদ ইবরাহীম কাপড় রিফু
করার কাজ করতেন। তিনি আমাকে এই কাজ শেখান। আমি যখন ১৪ বছরে উপনীত হই তখন
আমার মাও মারা যান। আমার পিতার আমরা চার সন্তান ছিলাম। তিন ভাই ইবরাহীম,
ইসহাক ও ছানাউল্লাহ এবং এক বোন’।[8]
জীবনের মোড় পরিবর্তন :
একদিন ছানাউল্লাহ অমৃতসরী দোকানে কাপড় রিফু করছিলেন। ইত্যবসরে একজন আলেম একটি দামী জুববা রিফু করার জন্য নিয়ে আসেন। তিনি সময়মতো জুববাটি রিফু করে ফেরৎ দিলে সেই আলেম তার কাজের দক্ষতা দেখে খুব খুশী হন। এ সময় কিছু দ্বীনী আলোচনাও হয়। মাওলানা ছাহেব যুবক অমৃতসরীকে কিছু প্রশ্ন করেন। তিনি সেগুলোর যুক্তিসংগত উত্তর প্রদান করেন। মাওলানা তার উত্তর শুনে ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান এবং কৌতূহলবশতঃ জিজ্ঞাসা করেন, ‘বৎস! তুমি কতদূর পড়াশোনা করেছ’? এ প্রশ্ন শুনে তার দু’চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। তিনি ভগ্নহৃদয়ে উত্তর দেন, ‘আমি লেখাপড়া কিছুই জানি না। আমার পিতা-মাতা মারা গেছেন। এখন না আছে পড়ানোর মতো কেউ আর না আছে উপার্জন করে দু’লোকমা মুখে তুলে দেওয়ার মতো কেউ। জামা-কাপড় রিফু করে যে দু’চার পয়সা কামাই করি তা দিয়ে কোনমতে দিন চলে যায়’।
একথা শুনে মাওলানা ছাহেব একজন দক্ষ জহুরির ন্যায় উপদেশের সুরে তাকে বললেন, ‘তুমি অবশ্যই পড়াশুনা করবে। তোমার মেধা অত্যন্ত তীক্ষ্ণ। তুমি যদি লেখাপড়া না করো তাহলে নিজের নফসের উপরে যুলুম করবে’। একথা বলে তিনি চলে গেলেন। তাঁর নছীহত যুবক অমৃতসরীর মানসপটে গভীরভাবে রেখাপাত করল। তিনি রিফু করার পাশাপাশি পড়াশোনা আরম্ভ করে দিলেন।
আসলে আল্লাহর হিকমত ও ফায়ছালা ছিল অন্য রকম। অমৃতসরী মানুষের ছেঁড়া কাপড় রিফু করার পরিবর্তে মুসলিম উম্মাহর ঈমানের জীর্ণ-শীর্ণ পোষাক রিফু করবেন এবং ইসলামের উপর আগত মুহুর্মুহু হামলা থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন- এমনটিই তাঁর ভাগ্যলিপি ছিল। এজন্য মহা প্রজ্ঞাময় আল্লাহ রববুল আলামীন তাঁর সামনে জ্ঞানার্জনের পথকে প্রশস্ত করে দেন। এটি ছিল আল্লাহ তা‘আলার এক অপার অনুগ্রহ। তিনি যাকে ইচ্ছা সেই অনুগ্রহে সিক্ত করেন।[9] মহান আল্লাহ বলেন,وَلَمَّا بَلَغَ أَشُدَّهُ آتَيْنَاهُ حُكْمًا وَعِلْمًا وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِين ‘অতঃপর যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে গেল, তখন আমরা তাকে প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করলাম। আমরা এভাবেই সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি’ (ইউসুফ ১২/২২)।
জ্ঞানার্জনের পথে অমৃতসরী :
তিনি
কতিপয় ফার্সী কিতাব পড়ার পর সমকালীন খ্যাতিমান আহলেহাদীছ আলেম মাওলানা
আহমাদুল্লাহ অমৃতসরীর (মৃ: ১৯১৬) দরসে হাযির হন। তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে
নিজের শিক্ষা জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘চৌদ্দ বছর বয়সে আমার
পড়ার আগ্রহ জন্মায়। প্রাথমিক ফার্সী কিতাবপত্র পড়ার পর অমৃতসরের ধনাঢ্য ও
নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মাওলানা আহমাদুল্লাহ ছাহেবের নিকট পৌঁছি। রিফুগিরির
কাজ করতে থাকি এবং মরহূমের নিকট সবকও পড়তে থাকি। শরহে জামী ও কুতবী
পর্যন্ত মৌলভী ছাহেবের কাছে পড়ি। অতঃপর হাদীছের জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে
উস্তাদে পাঞ্জাব মাওলানা হাফেয আব্দুল মান্নান ওয়াযীরাবাদীর খিদমতে হাযির
হই। ওখানে সিলেবাসভুক্ত কিতাব সমূহ পড়ে সনদ হাছিল করি। এটি ১৩০৭ হিঃ
মোতাবেক ১৮৮৯ সালের ঘটনা। এরপর শামসুল ওলামা মাওলানা সাইয়িদ নাযীর হুসাইন
ছাহেবের (রহঃ) খিদমতে হাযির হই। পূর্বোক্ত সনদ দেখিয়ে তাঁর নিকট থেকে
‘ইজাযত’ বা পাঠদানের অনুমতি হাছিল করি।[10] অতঃপর কয়েকদিন (মাযাহিরুল উলূম
মাদরাসা) সাহারানপুরে অবস্থান করে (১৩০৭ হিজরীতেই) দেওবন্দে পৌঁছি। সেখানে
মা‘কূল ও মানকূল-এর সিলেবাসভুক্ত সব ধরনের বই পড়ি। মা‘কূলের কিতাব সমূহের
মধ্যে কাযী মুবারক, মীর যাহেদ, ছদরার উমূরে ‘আম্মাহ, শামসে বাযেগাহ প্রভৃতি
এবং মানকূলাতের মধ্যে হেদায়া, তাওযীহ, মুসাল্লামুছ ছুবূত প্রভৃতি, অংক
শাস্ত্রের শরহে চগমনী প্রভৃতিও পড়ি এবং দাওরায়ে হাদীছে অংশগ্রহণ করি।
উস্তাদে পাঞ্জাব-এর দরসে হাদীছ এবং দেওবন্দের শিক্ষকমন্ডলীর দরসে হাদীছ
দু’টোর মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা থেকে উপকৃত হই। দেওবন্দের সনদ আমার জন্য
গর্বের বিষয়, যেটি আমার নিকট মওজূদ রয়েছে’।[11]
অমৃতসরীর প্রতি শায়খুল হাদীছ ওয়াযীরাবাদীর স্নেহাশিস :
উসতাদে
পাঞ্জাব খ্যাত হাফেয মাওলানা আব্দুল মান্নান ওয়াযীরাবাদী একবার বলেছিলেন,
আল্লাহ আমাকে কিয়ামতের দিন যখন জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায়
কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পাদন করেছ? তখন আমি বলব, আমি মাওলানা
ছানাউল্লাহকে মুহাদ্দিছ বানিয়েছি। সে আমার নিকট থেকে ইলম হাছিল করে সমগ্র
দেশে ইলমে হাদীছের আলো ছড়িয়ে দিয়েছে।[12] হাদীছের ভাষ্য অনুযায়ী এটাই তো উপকারী ইলম, মৃত্যুর পরেও যার ছওয়াব জারী থাকে।[13]
মেধাবীর প্রতি হিংসা : একটি শিক্ষণীয় ঘটনা
ছানাউল্লাহ অমৃতসরী দারুল উলূম দেওবন্দের প্রধান শিক্ষক শায়খুল হাদীছ মাওলানা মাহমূদুল হাসান দেওবন্দীর (১৮৫১-১৯৩০) নিকট প্রত্যেকটি কিতাব পড়ার সময় অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে ক্লাসে নানাবিধ প্রশ্নের অবতারণা করতেন। উসতাদকে ঠেকানো তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। বরং অধিক জ্ঞান হাছিল ও বিষয়ের গভীরে পৌঁছার জন্যই তিনি তা করতেন। বেশী প্রশ্ন করার কারণে মাওলানা ছাহেব বিরক্ত হতেন না। বরং মমত্বপূর্ণ ভাষায় হাসিমুখে তাঁর উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করতেন। এতে অমৃতসরীর পেছনে তাঁর অনেক সময় ব্যয় হত। দেওবন্দ থেকে ফারেগ হওয়ার পর তিনি তাঁর সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে যান। দুপুর ১১-১২টার মাঝামাঝি সময়। মাওলানা মাহমূদুল হাসান তখন তাঁর মসজিদের দক্ষিণ দেয়ালের গায়ে হেলান দিয়ে একাকী বসা ছিলেন। তিনি অমৃতসরীকে বিদায় দেয়ার সময় বলেন, ‘তোমার অনেক সহপাঠী তোমার বিরুদ্ধে আমার নিকট অভিযোগ করত যে, তুমি প্রশ্ন করে অনেক সময় নষ্ট করে দাও। আমি বলতাম, কোন ছাত্র প্রশ্ন করতে চাইলে করুক। তার প্রশ্নগুলো ঠিক হোক বা বেঠিক কিছু তো জিজ্ঞাসা করুক। তোমারও খুশী হওয়া উচিত। কারণ আল্লাহ কাউকে কিছু দিলে মানুষেরা সে বিষয়ে তার প্রতি হিংসা করে’। একথা শুনে অমৃতসরীর দু’চোক্ষ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। তিনি জীবনে কোনদিন এই ঘটনা ভুলেননি। বরং যখন সমকালীন ব্যক্তিদের নিকট থেকে দুঃখ-কষ্ট পেয়েছেন তখন উসতাদে মুহতারামের এই বাণী চিরন্তন তাঁর সকল মনোবেদনা দূর করে দিয়েছে। এই ঘটনাটি যখনই তাঁর মনে পড়ত তখনই তিনি এই কবিতাটি আওড়াতেন,
هُمْ يَحْسُدُوْنِيْ وَشَرُّ النَّاسِ كُلِّهِمْ
مَنْ عَاشَ فِي النَّاسِ يَوْمًا غَيْرَ مَحْسُوْدِ-
‘তারা আমার প্রতি হিংসা করে। অথচ তারা সবাই নিকৃষ্ট প্রকৃতির মানুষ। এমন কে আছে যে হিংসার শিকার হওয়া ছাড়া একদিন মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে পারে’।[14] এইসব হিংসুকদের থেকে ইমাম বুখারীও (রহঃ) রক্ষা পাননি। এজন্যই বলা হয়, هَلْ مَاتَ الْبُخَارِىُّ رَحِمَهُ اللهُ إِلاَّ مَحْسُوْدًا ‘ইমাম বুখারী (রহঃ)ও কি মৃত্যুবরণ করেছেন হিংসার শিকার না হয়ে’?
শেষ পাঠশালা কানপুরের ফয়যে ‘আম মাদরাসায় :
দেওবন্দ
থেকে দাওরায়ে হাদীছের সনদ লাভের পর মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী কানপুরের
ফয়যে ‘আম মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আহমাদ হাসান কানপুরীর মা‘কূলাতে বিশেষ
খ্যাতির কথা শুনে সেখানে ভর্তি হন। তিনি স্বীয় আত্মজীবনীতে লিখেছেন,
‘দেওবন্দ থেকে মাদরাসা ফয়যে ‘আম, কানপুরে যাই। কেননা সে সময় মাওলানা আহমাদ
হাসান মরহূমের মানতিকের দরসের খ্যাতি অনেক বেশী ছিল আর আমারও মা‘কূল ও
মানকূলের ইলম সমূহের প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল। এজন্য মাদরাসা ফয়যে ‘আম
কানপুরে গিয়ে ভর্তি হয়ে যাই। (কোন সন্দেহ নেই মাওলানার জ্ঞানের গভীরতা
বাস্তবিকই প্রশংসনীয় ছিল)। সেখানে গিয়ে আমি পূর্বে পঠিত গ্রন্থগুলোর ক্লাসে
শরীক হই এবং পুনরাবৃত্তির স্বাদ আস্বাদন করি। (মাওলানা আহমাদ হাসান
ব্রেলভী আক্বীদার মানুষ হলেও ছাত্রদের জন্য কোন মাযহাবী বাধ্যবাধকতা পছন্দ
করতেন না)। ঐ সময় মাওলানার হাদীছ পড়ানোর টাটকা শখ হয়েছিল। আমি তাঁর হাদীছের
দরসেও শরীক হই। (সেখানকার হাদীছের পাঠ তৃতীয় ঢংয়ের পাই। ফলকথা আমি ইলমে
হাদীছে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ফায়েদা লাভ করেছি। খালেছ
আহলেহাদীছ, খালেছ হানাফী, ব্রেলভী আক্বীদা)। পাঞ্জাবে মাওলানা হাফেয আব্দুল
মান্নান ছাহেব (আহলেহাদীছ মাসলাক) আমার শায়খুল হাদীছ ছিলেন। দেওবন্দে
মাওলানা মাহমূদুল হাসান ছাহেব এবং কানপুরে মাওলানা আহমাদ হাসান ছাহেব
(রহমাতুল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন) উসতাদুল উলূম ওয়াল হাদীছ আমার শায়খুল হাদীছ
ছিলেন। এজন্য আমি হাদীছের তিনজন শিক্ষকের নিকট থেকে যে পাঠদান পদ্ধতি
শিখেছি তা একটা আরেকটা থেকে একেবারেই ভিন্ন। যেটা এখানে উল্লেখ করার সুযোগ
নেই। শা‘বান ১৩১০ হিঃ মোতাবেক ১৮৯২ সালে ফয়যে ‘আম কানপুরের জালসা অনুষ্ঠিত
হয়। সেখানে ৮ জন ছাত্রকে পাগড়ী ও দাওরায়ে হাদীছের সার্টিফিকেট প্রদান করা
হয়েছিল। ঐ আটজনের একজন আমি অকিঞ্চনও ছিলাম’।[15]
উক্ত
জালসায় মাওলানা আহমাদ হাসান কানপুরী তাঁকে যে সনদ প্রদান করেছিলেন তাতে
লেখা ছিল,هذا الرجل الماهر الكامل، والعالم الفاضل، الذكى اللوذعى، اللهوف
اليلمعى المولوي محمد ثناء الله قد غاص على فرائد اللآلى فى ذلك اليمّ، وقد
خاض لطلب فوائد الجواهر في ذلك الِخضمِّ. ‘পূর্ণ অভিজ্ঞ, মর্যাদাবান আলেম,
মেধাবী, বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মৌলভী মুহাম্মাদ
ছানাউল্লাহ মূল্যবান মুক্তা আহরণের জন্য (ইলমের) এই অথৈ সাগরে সন্তরণ
করেছেন এবং ইলমী ফায়েদার মণি-মাণিক্য অনুসন্ধানে ডুব দিয়েছেন’।[16]
দাওরায়ে হাদীছের সনদের এরূপ ভাষা থেকে সহজেই অনুমেয় যে, ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর শিক্ষক মাওলানা আহমাদ হাসান কানপুরী তাঁর যোগ্যতা সম্পর্কে কতটুকু ওয়াকিফহাল ছিলেন এবং তাঁর বিদ্যাবত্তা ও শ্রেষ্ঠত্বকে কিভাবে তেজস্বী ভাষায় স্বীকৃতি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, কানপুরের উক্ত জালসায় (১৩১০/১৮৯২) মাওলানা মুহাম্মাদ লুতফুল্লাহ আলিগড়ীর (মৃঃ ১৩৩৫ হিঃ) সভাপতিত্বে সর্বপ্রথম তাহরীকে নাদওয়াতুল ওলামা (নাদওয়াতুল ওলামা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন) গঠিত হয় এবং মাওলানা অমৃতসরী উক্ত আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য হিসাবে তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[17] সাইয়িদ সুলাইমান নাদভীর ভাষ্যমতে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী সবচেয়ে কমবয়সী সদস্য ছিলেন।[18] এর মাধ্যমে বুঝা যায় যে, ছাত্রজীবনেই অমৃতসরীর বিদ্যাবত্তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল।
হেকিমী বিদ্যা অর্জন :
তদানীন্তন
সময়ের আলেমদের মাঝে হেকিমী চিকিৎসা শেখার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
মাওলানা অমৃতসরীও কানপুরের ফয়যে ‘আম মাদরাসায় অধ্যয়নকালে হেকিম ফযলুল্লাহ
কানপুরীর নিকট এ বিদ্যায় যথেষ্ট পারদর্শিতা অর্জন করেন। তবে তিনি কখনো
হেকিমীকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেননি।[19]
শিক্ষকতা :
দাওরা ফারেগ হওয়ার পরপরই তিনি শিক্ষকতার জীবনে পদার্পণ করেন। স্বীয় আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রথম শিক্ষক মাওলানা আহমাদুল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) যখন আমার ফারেগ হওয়ার কথা জানতে পারেন তখন তিনি আমাকে স্নেহবশতঃ মাদরাসা তাঈদুল ইসলাম, অমৃতসরে প্রধান শিক্ষকের পদে ডেকে নেন। এখানে পৌঁছে আমি আরবী কিতাব সমূহ পড়াতে থাকি’।
প্রকাশ থাকে যে, মাওলানা আহমাদুল্লাহ তাঈদুল ইসলাম মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীকে তাঁর ফারেগ হওয়ার পর সোজা কানপুর থেকে ডেকে নিয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের পদে বসান। পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে ছাত্রদেরকে তিনি প্রথম ছহীহুল বুখারীর দরস প্রদান করেন। এর মাধ্যমে সহজেই অনুমিত হয় যে, তিনি ছাত্রজীবনেই ইলমী যোগ্যতার কোন উঁচু স্তরে গিয়ে পৌঁছেছিলেন এবং তাঁর শিক্ষকগণ তাঁকে কেমন সম্মানের চোখে দেখতেন।
যাহোক, তাঈদুল ইসলাম মাদরাসায় ৬ বছরের মতো পাঠদানের পর তিনি মালেরকোটলায়[20]
চলে যান। অমৃতসরী লিখেছেন, ‘এরপর কিছুদিনের জন্য ১৮৯৮ সালে মালেরকোটলার
মাদরাসা ইসলামিয়ায় প্রধান শিক্ষক পদে ডাকা হয়। অবশেষে ওখান থেকে আবার
অমৃতসরে চলে আসি’।[21]
জীবনীকার মাওলানা আব্দুল মজীদ সোহদারাভীর বর্ণনা থেকে বুঝা যায়, তিন ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে মালেরকোটলা থেকে চলে এসেছিলেন।[22]
উক্ত মাদরাসায় তিনি দু’বছর তাফসীর, হাদীছ ও ফিক্বহের দরস প্রদান করেন।
অতঃপর শিক্ষকতা একেবারেই ছেড়ে দিয়ে বক্তৃতা, বাহাছ-মুনাযারা, লেখালেখি,
পত্রিকা সম্পাদনা ও গ্রন্থ প্রণয়নে সারা জীবন অতিবাহিত করেন।[23] ‘নুযহাতুল
খাওয়াতির’ গ্রন্থে বলা হয়েছে,ثم رجع إلى أمرتسر واشتغل بالتصنيف والتذكير
والمناظرة. ‘অতঃপর তিনি অমৃতসরে ফিরে আসেন এবং গ্রন্থ রচনা, বক্তৃতা ও
মুনাযারায় নিয়োজিত থাকেন’।[24]
মৌলভী ফাযেল ডিগ্রী লাভ :
মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর যুগটা ছিল বাহাছ-মুনাযারার যুগ। তখন বিভিন্ন ধর্মের পন্ডিতগণ নিজ নিজ ধর্মের সত্যতা প্রমাণের জন্য পরস্পরের প্রতি মুনাযারার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তেই থাকতেন। মুনাযারায় সরকারী সনদকে প্রতিদ্বন্দ্বীর ইলমী যোগ্যতার অনেক বড় মাপকাঠি হিসাবে গণ্য করা হ’ত। সে সময় কোন আলেমের জন্য এটা অনেক বড় সম্মানের বিষয় ছিল। এর ফলে ইলমী ময়দানে অগ্রসর হওয়ার নতুন দ্বার উন্মোচিত হত। তখন প্রাচ্যবিদ্যায় ‘মৌলভী ফাযেল’ পরীক্ষার বিশেষ গুরুত্ব ছিল। সেকারণ তিনি ১৯০২ সালে (১৩২০ হিঃ) কৃতিত্বের সাথে মৌলভী ফাযেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি থেকে সনদ হাছিল করেন।[25] এভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর মর্যাদার মুকুটে আরো একটি নতুন পালক যুক্ত হয়।
[চলবে]
ড. নূরুল ইসলাম
ভাইস প্রিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
[1]. অনন্তনাগ যেলাটি কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং অমৃতসর লাহোর থেকে ৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত।
[2]. মাওলানা আব্দুল মজীদ খাদেম সোহদারাভী, সীরাতে ছানাঈ (দিল্লী : আল-কিতাব ইন্টারন্যাশনাল, ১ম প্রকাশ, মে ১৯৮৯), পৃঃ ৯০; মুহাম্মাদ মুর্তাযা বিন আয়েশ মুহাম্মাদ, আশ-শায়খ ছানাউল্লাহ আল-আমরিতসারী ওয়া জুহূদুহু আদ-দা‘বিয়াহ, অপ্রকাশিত মাস্টার্স থিসিস, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সঊদ বিশ্ববিদ্যালয়, রিয়াদ, ১৪১৭ হিঃ/১৯৯৬ খৃঃ, পৃঃ ১৪।
[3]. আব্দুল মুবীন নাদভী, আশ-শায়খ আল-আল্লামা আবুল অফা ছানাউল্লাহ আল-আমরিতসারী জুহূদুহু আদ-দা‘বিয়াহ ওয়া আছারুহু আল-ইলমিইয়াহ (বেনারস : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, ২০১৬), পৃঃ ৫১। গৃহীত : নেদায়ে মদীনা, কানপুর, ‘শায়খুল ইসলাম মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী’ সংখ্যা, ১৯৪৯, পৃঃ ২৪।
[4]. মাওলানা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী, ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত আওর মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (বেনারস : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, ১৯৭৯), পৃঃ ১৮।
[5]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৯১; মুহাম্মাদ মুর্তাযা, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪।
[6]. নুযহাতুল খাওয়াতির ৮/১২০৫ (মাকতাবা শামেলা)।
[7]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৯৮, ১০২, ১০৬; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ১৮।
[8]. আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৫৫। গৃহীত: নেদায়ে মদীনা, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৪।
[9]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ১০৭-১০৮; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ১৮-১৯।
[10]. ২৩শে জানুয়ারী ১৯৪২ সংখ্যার ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকায় মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী লিখেছেন, ‘দেওবন্দে অবস্থানকালীন সময়েই আমি হযরত মিয়াঁ ছাহেব দেহলভীর খিদমতে হাযির হয়ে সনদ হাছিল করে নিয়েছিলাম’। এ উক্তির মাধ্যমে বুঝা যায় যে, মিয়াঁ নাযীর হুসাইন মুহাদ্দিছ দেহলভীর নিকট থেকে সনদ লাভের ঘটনা পাঞ্জাব থেকে ফারেগ হওয়ার পরপরই ঘটেনি। বরং দেওবন্দে পড়ার সময় তিনি তাঁর নিকট থেকে সনদ নিয়েছিলেন (ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২০, টীকা-১)।
[11]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ১৯-২০। গৃহীত: খোদনবিশ্ত সাওয়ানিহে হায়াত, পৃঃ ৭৫; আহলেহাদীছ, অমৃতসর, ২৩শে জানুয়ারী ১৯৪২; নূরে তাওহীদ, পৃঃ ৩৯-৪০।
[12]. পাক্ষিক তারজুমান, দিল্লী, ৩৫/৮ সংখ্যা, ১৬-৩০শে এপ্রিল ২০১৫, পৃঃ ২৬।
[13]. মুসলিম হা/১৬৩১; মিশকাত হা/২০৩।
[14]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২০-২১; দুর্রে মুখতার ১/৪৫। গৃহীত : আহলেহাদীছ, অমৃতসর, ৭ই নভেম্বর ১৯২৪।
[15]. ঐ, পৃঃ ২১-২২। গৃহীত: খোদনবিশ্ত সাওয়ানিহে হায়াত, পৃঃ ৫৮; আহলেহাদীছ, ২৩শে জানুয়ারী ১৯৪২; নূরে তাওহীদ, পৃঃ ৪১।
[16]. নূরে তাওহীদ, পৃঃ ৪২-এর বরাতে ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২৩; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৬।
[17]. আব্দুর রশীদ ইরাকী, তাযকেরায়ে আবুল অফা (গুজরানওয়ালা : নাদওয়াতুল মুহাদ্দিছীন, ১ম প্রকাশ, ১৯৮৪), পৃঃ ১৯; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২২-২৩; সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ১২৩।
[18]. সাইয়িদ সুলাইমান নাদভী, হায়াতে শিবলী (আযমগড় : দারুল মুছান্নিফীন শিবলী একাডেমী, নতুন সংস্করণ, ২০০৮), পৃঃ ২৫০-২৫১; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৪।
[19]. আহলেহাদীছ, ২৩শে অক্টোবর ১৯৪২-এর বরাতে ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২৩; তাযকেরায়ে আবুল অফা, পৃঃ ২০।
[20]. মালেরকোটলা পূর্ব পাঞ্জাবের একটি প্রসিদ্ধ শহর। ঐ সময় এটি পাঞ্জাবের একটি মুসলিম রাজত্বের মর্যাদা লাভ করেছিল। দেশ বিভাগের পর তার এই মর্যাদা শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে এটি লুধিয়ানা যেলার একটি শহর (বাযমে আরজুমন্দাঁ, পৃঃ ১৪৬-৪৭)।
[21]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২৩-২৪; মুহাম্মাদ রামাযান ইউসুফ সালাফী, মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী হায়াত খিদমাত আছার (শিয়ালকোট : জামে‘আ রহমানিয়া, ১ম প্রকাশ, মে ২০১৬), পৃঃ ১৮।
[22]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ১২৮।
[23]. আব্দুর রশীদ ইরাকী, চালীস ওলামায়ে আহলেহাদীছ (নয়া দিল্লী : ফরীদ বুক ডিপো, তাবি), পৃঃ ১৮১; আব্দুল খালেক নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৯।
[24]. নুযহাতুল খাওয়াতির ৮/১২০৫।
[25]. মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক ভাট্টী, বাযমে আরজুমন্দাঁ (লাহোর : মাকতাবায়ে কুদ্দূসিয়া, ২০০৬), পৃঃ ১৪৭।