পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭। পর্ব ৮। পর্ব ৯। শেষ পর্ব  

আহলেহাদীছ আন্দোলনে অবদান :

মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী উপমহাদেশে ইসলামের খিদমতে নিয়োজিত মুখলিছ দাঈ এবং আহলেহাদীছ জামা‘আতের রাহবার ও নিশানবরদার ছিলেন। আহলেহাদীছ জামা‘আতের মাঝে সাংগঠনিক চেতনা জাগ্রতকরণ ও তাদের উন্নতি-অগ্রগতি বিধানে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯০৬ সালের ২২ ও ২৩শে ডিসেম্বর (৬ ও ৭ই যুলকা‘দা ১৩২৪ হিঃ) ভারতের বিহার প্রদেশের আরাহ যেলায় (বর্তমানে ভোজপুর যেলার কেন্দ্রীয় শহর) অবস্থিত ও খ্যাতনামা আহলেহাদীছ আলেম ইবরাহীম আরাভী প্রতিষ্ঠিত ‘মাদরাসা আহমাদিয়াহ’-এর ইলমী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারতবর্ষের বহু শীর্ষস্থানীয় আহলেহাদীছ আলেম-ওলামা অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ছিলেন অন্যতম। আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী বলেন, ‘মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) শুধু সেমিনারে অংশগ্রহণকারীই ছিলেন না; বরং সংগঠন প্রতিষ্ঠার অন্যতম অগ্রচিন্তক ও উৎসাহ-অনুপ্রেরণাদাতা ছিলেন’।[1] উক্ত ইলমী সেমিনারে আহলেহাদীছ জামা‘আতের অবস্থা আলোচনা করা হয়। দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আহলেহাদীছদেরকে সুসংগঠিত করা এবং জনগণের দোরগোড়ায় কুরআন ও সুন্নাহর দাওয়াত পৌঁছিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সেমিনারে উপস্থিত ওলামায়ে কেরাম ও সুধীমন্ডলীর সর্বসম্মতিক্রমে ‘অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স’ নামে সর্বভারতীয় আহলেহাদীছ সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে।[2] ‘উসতাযুল আসাতিযাহ’ (শিক্ষককুলের শিক্ষক) মাওলানা হাফেয আব্দুল্লাহ গাযীপুরী এর প্রথম সভাপতি (ছদর), মাওলানা হাফেয আব্দুল আযীয রহীমাবাদী সহ-সভাপতি (নায়েবে ছদর), মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী সাধারণ সম্পাদক (নাযেমে আ‘লা), মাওলানা মুহাম্মাদ ইবরাহীম মীর শিয়ালকোটী সহ-সম্পাদক ও আল্লামা শামসুল হক আযীমাবাদী কোষাধ্যক্ষ (আমীন) নির্বাচিত হন। মাওলানা অমৃতসরী আমৃত্যু কনফারেন্স-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।[3] সেমিনারে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তীতে মাওলানা হাফেয আব্দুল আযীয রহীমাবাদীকে প্রধান করে মাওলানা অমৃতসরী ও মাওলানা শিয়ালকোটীর সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি দাওয়াতী টিম গঠন করা হয়। এই তিন দেশবরেণ্য আলেমে দ্বীন ও দাঈ আড়াই মাস[4] দেশব্যাপী দাওয়াতী সফর করে আহলেহাদীছদের সামনে কনফারেন্স গঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তুলে ধরেন, তাদেরকে জামা‘আতী যিন্দেগী গঠনের দাওয়াত দেন এবং আঞ্জুমান গঠনের প্রতি উৎসাহিত করেন। ফলে অল্প দিনের মধ্যেই সারাদেশে কনফারেন্সের বহু শাখা গঠিত হয়। ঝিমিয়ে পড়া আহলেহাদীছ সমাজ সঞ্জীবনী শক্তি ফিরে পায়। বড় বড় আহলেহাদীছ আলেম ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ কনফারেন্স-এর সাথে একাত্মতা ঘোষণা পূর্বক দাওয়াতী কর্মতৎপরতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।[5]

মজার ব্যাপার হ’ল, উক্ত টিম রাজশাহী থেকে তাদের দাওয়াতী সফর শুরু করেছিলেন। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে দীর্ঘ কষ্টকর সফর শেষে তারা এখানে এসে পৌঁছেছিলেন। মাওলানা অমৃতসরী উপস্থিত জনতার সামনে উর্দূতে সফরের উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বক্তৃতা করছিলেন। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জ থেকে আগত বাঙ্গালীরা মাওলানার বক্তব্য বুঝতে পারছিলেন না। এজন্য একজন শ্রোতা দাঁড়িয়ে বলেই ফেলে, আমরা মাওলানার কথা বুঝতে পারছি না। এ সময় একজন বাঙ্গালী, যিনি উর্দূ বুঝতেন, তিনি অমৃতসরীর বক্তব্য বাংলায় অনুবাদ করে দেন। এতে উপস্থিত জনতা অত্যন্ত আনন্দিত হয়। তারা তাদের সাধ্যানুযায়ী প্রতিনিধি দলকে সাহায্য-সহযোগিতা করে এবং সংগঠনের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।[6]

মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী এই সফরের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা রাজশাহীতে (বাংলাদেশ) কয়েকদিন অবস্থান করার পর কলকাতা অভিমুখে যাত্রা করি এবং পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই জুম‘আর দিন খুৎবার সময় সেখানে গিয়ে পৌঁছি। তবে তারা ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকা মারফৎ জানতে পেরেছিল যে, কনফারেন্সের প্রতিনিধি দল বঙ্গদেশে সফর করবে এবং অদূর ভবিষ্যতে তাদের নিকট গিয়ে পৌঁছবে। জুম‘আর ছালাত শেষে আমি দাঁড়িয়ে প্রতিনিধি দল পৌঁছার এবং এর দলনেতা যে আল্লামা আব্দুল আযীয রহীমাবাদী তা ঘোষণা করলাম। ফলে উপস্থিত সুধীমন্ডলী মসজিদে বসে অপেক্ষা করতে লাগল। ছালাতের পর তারা প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে লাগল। এরপর কলকাতায় কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হ’ল। কলকাতার মুসলমানরা উর্দূ বলতে পারে এবং সহজেই তা বুঝতে পারে। এজন্য রাজশাহীতে প্রতিনিধি দলটি যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল তা এখানে হয়নি। আমরা কয়েকদিন কলকাতায় অবস্থান করলাম। তাদের সামনে আমাদের সফরের উদ্দেশ্য এবং আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বর্ণনা করলাম। ফলে মানুষজন আমাদের উদ্দেশ্যগুলির সাথে শুধু একাত্মতা ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হ’ল না, বরং নগদ অর্থকড়ি দিয়েও সাহায্য করল’।[7]

গবেষক মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব তাঁর পিএইচ.ডি থিসিসে বলেন, ‘মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (১২৮৭-১৩৬৭/১৮৬৮-১৯৪৮) ১৯১৩ সালে একবার বাংলাদেশ ভ্রমণে আসেন। তিনি পশ্চিম বাংলার দুম্কা ও মুর্শিদাবাদ যেলার কয়েকটি গ্রাম যেমন দিলালপুর, ইসলামপুর, জঙ্গীপুর ও বর্তমান বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলাধীন নারায়ণপুর প্রভৃতি গ্রাম সফর করেন। পাঞ্জাবে ফিরে গিয়ে তিনি স্বীয় ‘আখবারে আহলেহাদীছ’ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকায় তাঁর সংক্ষিপ্ত সফর বৃত্তান্ত প্রকাশ করেন। সেখানে একস্থানে তিনি বলেন, ... ‘আমি এই সফরে কেবলি চিন্তা করেছি বাংলাদেশে আহলেহাদীছের সংখ্যা এত বেশী কিভাবে হ’ল ও কার দ্বারা হ’ল? আমাকে বলা হ’ল যে, এসব মাওলানা এনায়েত আলী ও বেলায়েত আলীর বরকতেই হয়েছে’।[8]

অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর উদ্যোগে প্রত্যেক বছর সাধারণত তিনদিন ব্যাপী বার্ষিক কনফারেন্স বা জালসা অনুষ্ঠিত হত। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্ব পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন শহরে এর মোট ২৪টি বার্ষিক জালসা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাওলানা অমৃতসরী এসব জালসার প্রাণস্পন্দন ছিলেন। তিনি ছাপড়া (১৯৩৩), আরাহ (১৯৪০) ও দিল্লী (১৯৪৪) কনফারেন্সে সভাপতির আসন অলংকৃত করেছিলেন।[9]

আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী বলেন, ‘এই কনফারেন্সের বদৌলতে সমগ্র দেশের আহলেহাদীছ জামা‘আত এক কেন্দ্রবিন্দুতে আবর্তন করছিল এবং মাওলানা অমৃতসরীর ব্যক্তিগত সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’ এর মুখপত্রের ভূমিকা পালন করছিল’।[10]

অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর সুনাম-সুখ্যাতি ও প্রভাব শুধু ভারতের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ও কনফারেন্স-এর সদস্যদের ইলখাছ ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা বহির্বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছিল। তুরষ্ক, আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, মিসর, সঊদী আরব সহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্র এই সংগঠনের কর্মতৎপরতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল এবং এর অবদানের অকুণ্ঠ স্বীকৃতি প্রদান করেছিল। মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী দেশের ভেতরে ও বাইরে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সমূহে এই সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করতেন। ১৯২৬ সালে তিনি বাদশাহ আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর আহবানে হেজাযে অনুষ্ঠিত হারামাইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ইসলামী সম্মেলনে আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর প্রতিনিধি হিসাবে যোগদান করেন। সম্মেলনে তিনি আরবীতে দু’একটি বক্তৃতাও প্রদান করেছিলেন।[11]

এভাবে মাওলানা অমৃতসরী অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স-কে ‘কুল হিন্দ’ (সমগ্র ভারত) থেকে ‘কুল দুনিয়া’ (সমগ্র বিশ্বে) পরিচিত করার যে স্বপ্ন লালন করেছিলেন তা বাস্তবে রূপায়িত হয়েছিল।

অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর বার্ষিক জালসা সমূহ ছাড়া প্রাদেশিক, যেলা, এলাকা ও স্থানীয় জালসাগুলিতেও তিনি অংশগ্রহণ করতেন এবং জনসম্মুখে তেজোদীপ্ত ভাষায় আহলেহাদীছের আক্বীদা ও আমল তুলে ধরতেন।[12]

অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স গঠনের পর পাঞ্জাবে স্থানীয় আহলেহাদীছ আঞ্জুমান সমূহ গঠিত হতে থাকে। বিভিন্ন স্থানে এসব আঞ্জুমান প্রতিষ্ঠায় মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর প্রচেষ্টা ও অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লামা ছফিউর রহমান মুবারকপুরী বলেন, ‘পাঞ্জাবেই সবচেয়ে বেশী আহলেহাদীছ আঞ্জুমান সমূহ গঠিত হয়েছিল এবং এগুলিই সবচেয়ে বেশী তৎপর ছিল। নিকটে হওয়ার কারণে বারবার হাযির হওয়া ও সামনা সামনি কথা বলার সুযোগও তিনি বেশী পেতেন। সম্ভবতঃ এটিও একটি কার্যকরী উপাদান ছিল। অবশ্য দেশের অন্যান্য স্থানের আঞ্জুমানগুলোও কম সক্রিয় ছিল না’।[13] অমৃতসরীর প্রচেষ্টায় পুরা পাঞ্জাবে যখন বহু আঞ্জুমান গঠিত হ’ল তখন তিনি চিন্তা করলেন, পাঞ্জাবে একটি প্রাদেশিক বা কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান প্রতিষ্ঠা করা দরকার যার সাথে বিভিন্ন শহর, এলাকা ও গ্রামীণ জনপদের ছোট-বড় সকল আঞ্জুমান সংযুক্ত থাকবে। এর সদর দফতর হবে লাহোরে। অতঃপর ১৯২০ সালে ‘ছদর আঞ্জুমানে আহলেহাদীছ ছূবা পাঞ্জাব’ নামে সেই কাঙ্ক্ষিত সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হ’ল। এর প্রথম সভাপতি ও সেক্রেটারী নির্বাচিত হলেন যথাক্রমে মাওলানা আব্দুল কাদের কাছূরী (মৃঃ ১৯৪২) ও মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী। ৮ বছর তাদের গতিশীল নেতৃত্বে আঞ্জুমানে আহলেহাদীছ পাঞ্জাব-এর কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। অতঃপর ১৯২৮ সালে ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ গ্রন্থের লেখক মাওলানা কাযী সুলাইমান মানছূরপুরী ও ‘সীরাতে ছানাঈ’-এর লেখক মাওলানা আব্দুল মজীদ খাদেম সোহদারাভী (মৃঃ ১৯৫৯) যথাক্রমে এর নতুন সভাপতি ও সেক্রেটারী নির্বাচিত হন।[14]

‘মুআররেখে আহলেহাদীছ’ খ্যাত মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক ভাট্টী বলেন, ‘পাঞ্জাবের সকল আহলেহাদীছ আঞ্জুমানের সম্পর্ক ছিল আঞ্জুমানে আহলেহাদীছ পাঞ্জাব-এর সাথে এবং পাঞ্জাবের আঞ্জুমানে আহলেহাদীছ ‘অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স’-এর সাথে সংযুক্ত ছিল। এটি ছিল একটি সিলসিলা, যা নিচ থেকে উপর পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। এটি পুরা হিন্দুস্তানের আহলেহাদীছ জামা‘আতের মযবূতির প্রমাণ। আহলেহাদীছ জামা‘আতের এই সিলসিলা দেশ বিভাগ পর্যন্ত কায়েম ছিল। দেশের সকল মাযহাবী জামা‘আত ও মাসলাকী পরিমন্ডলে এই সিলসিলাকে সম্মানের চোখে দেখা হত এবং খায়বার পাখতুনখোয়া থেকে রাস কামারী পর্যন্ত এর ধ্বনি গুঞ্জরিত হত। ছোট-বড় বিভিন্ন স্থানে এর তাবলীগী জালসা সমূহ অনুষ্ঠিত হত, যাতে ওলামায়ে কেরাম বক্তব্য প্রদান করতেন এবং দূর-দূরান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এসে তাদের বক্তব্য শুনত ও প্রভাবিত হত’।[15]

১৯২১ সালের ২০শে অক্টোবর (১৭ই রবীউল আউয়াল ১৩৪০ হিঃ) ইসলামিয়া কলেজ, লাহোর সংলগ্ন মসজিদে মুবারকে আহলেহাদীছ জামা‘আতের এক প্রতিনিধি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীকে আহলেহাদীছ জামা‘আতের ‘আমীর’ নির্বাচিত করা হয়। তিনি ‘অল ইন্ডিয়া আহলেহাদীছ কনফারেন্স’-এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আমৃত্যু আহলেহাদীছ জামা‘আতের ‘আমীর’ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[16]

মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী আহলেহাদীছ জামা‘আতকে আর্থিক সহযোগিতাও করতেন। যখনই জামা‘আতের অর্থের প্রয়োজন পড়ত তখনই তিনি উদারহস্তে খরচ করতেন। বহু জালসা ও সাংগঠনিক প্রোগ্রামের প্রচারপত্র, পোষ্টার প্রভৃতি নিজ খরচে ছাপাতেন। ১৯৩০ সালে তিনি শত শত টাকা খরচ করে আহলেহাদীছ কনফারেন্স-এর পনের হাযার প্রচারপত্র নিজ খরচে ছাপেন। এভাবে ১৯৩৫ সালে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে তিনি কয়েক হাযার প্রচারপত্র ছাপিয়ে জামা‘আতের পক্ষ থেকে ফ্রি বিতরণ করেন। অনেক সময় আহলেহাদীছ কনফারেন্স বা জালসায় আগত অতিথিদের আপ্যায়নের দায়িত্বও তাঁকে পালন করতে হত। একবার অমৃতসরে আহলেহাদীছ জামা‘আতের চারশ ব্যক্তির এক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তাদের থাকা-খাওয়ার যাবতীয় ব্যয় তিনি নির্বাহ করেন এবং তিনদিন পর্যন্ত তাদের আতিথেয়তা প্রদান করেন।

একবার তিনজন আহলেহাদীছ ছাত্র উচ্চশিক্ষার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। কিন্তু দরিদ্রতা তাদের সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। মাওলানা অমৃতসরী তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন এবং শেষ পর্যন্ত তাদের পড়াশোনার যাবতীয় ব্যয়ভার তিনি একাই বহন করেন।[17]

নাদওয়াতুল ওলামা, লাক্ষ্ণৌ প্রতিষ্ঠায় অবদান :

দারুল উলূম নাদওয়াতুল ওলামা, লাক্ষ্ণেŠর সাথে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত সুদৃঢ়। তিনি নাদওয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও স্থায়ী সদস্য ছিলেন। ১৮৯২ সালে (১৩১০ হিঃ) কানপুরের ফয়যে আম মাদ্রাসার ফারেগ ছাত্রদের (৮ জন) মাঝে সনদ বিতরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত দস্তারবন্দী অনুষ্ঠানে নাদওয়াতুল ওলামা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মাওলানা মুহাম্মাদ লুতফুল্লাহ আলিগড়ীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেই অধিবেশনে উক্ত মাদ্রাসা থেকে সদ্য ফারেগ মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীও অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের মাঝে তিনিই সবচেয়ে কমবয়সী ছিলেন।[18] নাদওয়াতুল ওলামার সাবেক রেক্টর মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী বলেন, وكان له فضل في تأييد ندوة العلماء التي ظل عضواً فيها طول حياته. ‘নাদওয়াতুল ওলামা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সমর্থন দানে অমৃতসরীর অবদান ছিল অতুলনীয়। তিনি আজীবন এর সদস্য ছিলেন’।[19]

মাওলানা সাইয়িদ সুলাইমান নাদভী নাদওয়াতুল ওলামা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অমৃতসরীর অবদান সম্পর্কে বলেন, ‘মরহুম মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী শুরু থেকেই নাদওয়াতুল ওলামার সদস্য ছিলেন। এমনকি মাওলানার নিজের ভাষ্য অনুযায়ী কানপুরের ফয়যে আম মাদ্রাসায় তাঁর দস্তারবন্দী অনুষ্ঠানেই নাদওয়াতুল ওলামার জন্ম হয়’।[20]

ভারতের বিভিন্ন শহরে যাতায়াত করার সময় তিনি বছরে দু’একবার লাক্ষ্ণৌতে আসতেন এবং দারুল উলূম নাদওয়াতুল ওলামায় গিয়ে বন্ধু-বান্ধব ও তথাকার শিক্ষকদের সাথে সাক্ষাৎ করতেন।[21]

নাদওয়াতুল ওলামার ছাত্র ও পরিচালনা কমিটির মাঝে বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট মতদ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে ১৯১৪ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে ‘মজলিসে ইছলাহে নাদওয়া’ (নাদওয়া সংস্কার কমিটি) গঠিত হয়। মাওলানা নিযামুদ্দীন হাসান (ভূপাল ও হায়দ্রাবাদের সাবেক আমলা) কমিটির সভাপতি এবং নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রহঃ)-এর পুত্র শামসুল ওলামা নওয়াব সাইয়িদ আলী হাসান খান (মৃঃ ১৯৩৬) এই কমিটির সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী এর সদস্য ছিলেন।[22] এতুদ্দেশ্যে ১৯১৪ সালের ১০ই মে সকাল ৮-টায় হাকীম আজমল খাঁর দাওয়াতে দিল্লীতে একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমগ্র ভারতের খ্যাতিমান ওলামায়ে কেরাম ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক চলাকালে নাদওয়ার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কল্পনাতীত হৈচৈ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা ও দূরদর্শিতার সাথে বৈঠক পরিচালনা করে তাদেরকে নিবৃত্ত করেন।[23] পরবর্তীতে এক সাক্ষাতে হাকীম আজমল খাঁ অমৃতসরীর এই ভূমিকার প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল আপনি সুশৃঙ্খলভাবে বৈঠক পরিচালনা করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যতটা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ঠিক ততটা আমি আশা করিনি’ (আহলেহাদীছ, অমৃতসর, ২২শে মে ১৯১৩, ২৯শে মে ১৯১৪, ৫ই জুন ১৯১৪)। এত্থেকে বুঝা যায়, মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী তাঁর অগাধ পান্ডিত্য, বিচক্ষণতা ও অতুলনীয় ব্যক্তিত্বের কারণে সর্বমহলে সমাদৃত ছিলেন।

যাহোক, বৈঠকে আলোচনা-পর্যালোচনার পর নাদওয়ার গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব-কমিটি গঠিত হয়। মাওলানা অমৃতসরী এর অন্যতম সদস্য ছিলেন। গঠনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য দিল্লীর সাবেক জজ পীরযাদা মুহাম্মাদ হুসাইনের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিন দিনের মধ্যে তিনি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে কমিটির নিকট পেশ করেন।[24]

জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ ও অমৃতসরী :

১ম বিশ্বযুদ্ধের পর (১৯১৪-১৯১৮) মিন্টু মরলে (Minto Morley) ভারতীয়দের জন্য একটি স্কীম নিয়ে ভারতে আসেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এটি ‘মিন্টু মরলে স্কীম’ নামে পরিচিত। এ প্রেক্ষিতে মাওলানা আব্দুল বারী ফিরিঙ্গীমহলী ও মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর উৎসাহে লাক্ষ্ণৌতে ১৯১৭ সালে ওলামায়ে কেরামের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভারতীয় মুসলমানদের কিছু ধর্মীয় বিষয় বিবেচনার জন্য আলেমগণের একটি প্রতিনিধি দল মিন্টু মরলের সাথে দেখা করবে মর্মে প্রস্তাব পেশ করা হয়। লাক্ষ্ণৌর সেই সম্মেলনে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী দেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিষয়ে ইসলামের আলোকে জনসাধারণকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য আলেমগণের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাঁর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে দু’দিন ধরে আলোচনা চলে। কিন্তু কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ছাড়াই সম্মেলন সমাপ্ত হয়। তথাপি মাওলানা অমৃতসরী নিরাশ না হয়ে বিভিন্ন জালসা ও সম্মেলনে এবং সাপ্তাহিক ‘আহলেহাদীছ’ পত্রিকায় এ ধরনের অরাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার প্রতি বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকেন। অতঃপর ১৯১৯ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে তাঁর প্রচেষ্টায় দিল্লীতে একটি তাবলীগী জালসা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করেন। এই সুযোগে তিনি জমঈয়ত গঠনের বিষয়ে লাক্ষ্ণৌ সম্মেলনে পেশকৃত প্রস্তাব পুনরায় উত্থাপন করেন। অনেক আলেম তাঁর এ প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। ১৯১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে অমৃতসরে খেলাফত মজলিস ও মুসলিম লীগের সম্মেলন ছিল। এতে খেলাফত ও তুরষ্কের বিষয়ে আলোচনার জন্য দেশের অনেক প্রথিতযশা আলেম অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। এই উপলক্ষ্যে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী ও মাওলানা দাঊদ গযনভী আলেমগণকে অমৃতসরে আসার দাওয়াত দেন। যাতে এই সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ গঠনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। দিল্লী সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯১৯ সালের ২৮শে ডিসেম্বর অমৃতসরে ভারতবর্ষের আলেমগণের এক ঐতিহাসিক সম্মেলন শুরু হয়। এতে দেশবরেণ্য ৫২ জন আলেম অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনার পর ‘জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ’ নামে সর্বভারতীয় আলেমগণের সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সম্মেলনে মাওলানা অমৃতসরী মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ কেফায়াতুল্লাহ দেহলভীকে সভাপতি এবং মাওলানা আহমাদ সাঈদ দেহলভীকে সেক্রেটারী করার প্রস্তাব দিলে মাওলানা সালামাতুল্লাহ জয়রাজপুরী ও মাওলানা মুহাম্মাদ আকরম খাঁ তাতে সমর্থন দেন। এই সম্মেলনে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট মজলিসে আমেলা গঠিত হয়। হাকীম মুহাম্মাদ আজমল খাঁ সংগঠনের খসড়া নীতিমালা তৈরীর জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। ফলে সর্বসম্মতিক্রমে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী, মাওলানা মুহাম্মাদ আকরম খাঁ, মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ কেফায়াতুল্লাহ দেহলভী ও মাওলানা খায়রুয্যামানের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নীতিমালা তৈরী করে ১লা জানুয়ারী ১৯২০ইং তারিখে পেশ করলে তা গৃহীত হয়। এ অধিবেশনে মাল্টা দ্বীপে বন্দী মাওলানা মাহমূদুল হাসান দেওবন্দীর মুক্তির বিষয়ে প্রথম রেজুলেশন পাশ হয়েছিল। মাওলানার মুক্তির দাবীতে ভাইসরয়কে টেলিগ্রাম করা হয়েছিল। এর খরচ বহন করেছিলেন মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী।[25]

১৯২৫ সালে মাওলানা সাইয়িদ সুলাইমান নাদভীর সভাপতিত্বে কলকাতায় অনুষ্ঠিত জমঈয়তের অধিবেশনেও মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী অংশগ্রহণ করেছিলেন।[26]

মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ গঠনে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করতে গিয়ে বলেন, وكان له فضل في تأسيس جمعية العلماء وتقويتها، ‘জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ গঠনে ও তাকে শক্তিশালীকরণে মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরীর অবদান ছিল অতুলনীয়’।[27] অমৃতসরী নিজেই বলেছেন, ‘আমি শুরু থেকেই জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দের সদস্য আছি। এমনকি যদি বলা হয় যে, আমি এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে প্রথম উৎসাহদাতা ছিলাম তাহলে অত্যুক্তি হবে না’।[28] মাওলানা আব্দুল মাজেদ দরিয়াবাদী দারুল মুছান্নিফীন শিবলী একাডেমীর সাবেক সেক্রেটারী মাওলানা শাহ মুঈনুদ্দীন আহমাদ নাদভীকে ১৯৭১ সালের ৬ই জানুয়ারী লিখিত এক পত্রে এবং মুঈনুদ্দীন নাদভী ‘হায়াতে সুলাইমান’ গ্রন্থে অমৃতসরীকে জমঈয়তের ওলামায়ে হিন্দ-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে উল্লেখ করেছেন।[29]

পরবর্তীতে জমঈয়ত তার প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্রমান্বয়ে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং কংগ্রেসের রঙে রঞ্জিত হয়। মাওলানা অমৃতসরী যখন দেখলেন যে, জমঈয়ত ও কংগ্রেসের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই তখন তিনি এই সংগঠন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলেন।[30] এমনকি জমঈয়তের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ দেহলভীও শেষ জীবনে জমঈয়ত ত্যাগ করেছিলেন।[31]

তাছাড়া তিনি মুহাম্মাদিয়াহ কোম্পানী (১৯০৯), আঞ্জুমানে ছাদেকীন (১৯১০), জমঈয়তে ইত্তেহাদুল ওলামা বা জমঈয়তে ইত্তেহাদুল মুসলেমীন প্রভৃতি সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেন।[32]

ড. নূরুল ইসলাম

ভাইস প্রিন্সিপাল, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।

[1]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত আওর মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী, পৃঃ ৪৫।

[2]. মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক ভাট্টী, বার্রে ছাগীর মেঁ আহলেহাদীছ কী সার গোযাশত (লাহোর : আল-মাকতাবা আস-সালাফিইয়াহ, ১ম প্রকাশ, ফেব্রুয়ারী ২০১২), পৃঃ ১৪; প্রফেসর ড. আব্দুল গফূর রাশেদ, আহলেহাদীছ মনযিল বহ্ মনযিল (লাহোর : মারকাযী জমঈয়তে আহলেহাদীছ পাকিস্তান, ১ম প্রকাশ, মে ২০০১), পৃঃ ৬৯-৭১, ৮৪; দাবিস্তানে নাযীরিয়াহ ১/৪৪০, ৪৬২-৪৬৩; আহলেহাদীছ আন্দোলন, পৃঃ ৩৬৭-৩৬৮।

[3]. দাবিস্তানে নাযীরিয়াহ ২/১২৫; মুহাম্মাদ উযাইর সালাফী, হায়াতুল মুহাদ্দিছ শামসুল হক ওয়া আ‘মালুহু (বেনারস : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, ১ম প্রকাশ, এপ্রিল ১৯৭৯), পৃঃ ৩১৪, ৩১৬।

[4]. মুফতী মুহাম্মাদ আব্দুহু আল-ফাল্লাহ, তাহরীকে আহলেহাদীছ কে চান্দে আওরাক (ফয়ছালাবাদ : জামে‘আ সালাফিইয়াহ, ১ম প্রকাশ, ১৯৯১), পৃঃ ৯৮।

[5]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩০৬-৩১০; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৫; বাযমে আরজুমন্দাঁ, পৃঃ ১৬০-১৬১।

[6]. আব্দুল মুবীন নাদভী, আশ-শায়খ আল-আল্লামা আবুল অফা ছানাউল্লাহ আল-আমরিতসারী জুহূদুহু আদ-দা‘বিয়াহ ওয়া আছারুহু আল-ইলমিইয়াহ, পৃঃ ১৩৯-১৪০। গৃহীত : দাঊদ রায, হায়াতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৬২-৮৬।

[7]. নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪০। গৃহীত : হায়াতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৬৩।

[8]. আহলেহাদীছ আন্দোলন, পৃঃ ২৭১; সাপ্তাহিক আহলেহাদীছ, অমৃতসর, ১০ম বর্ষ, ২৬ সংখ্যা, ২৫শে এপ্রিল ১৯১৩।

[9]. বার্রে ছাগীর মেঁ আহলেহাদীছ কী সার গোযাশত, পৃঃ ১৫-১৭।

[10]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৬।

[11]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩১১; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৪৩; ইয়াদে রফতেগাঁ, পৃঃ ৩৭২।

[12]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৬।

[13]. ঐ।

[14]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩০২-০৪; বার্রে ছাগীর মেঁ আহলেহাদীছ কী সার গোযাশত, পৃঃ ২০।

[15]. বার্রে ছাগীর মেঁ আহলেহাদীছ কি সার গোযাশত, পৃঃ ২০।

[16]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৬; মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী হায়াত খিদমাত আছার, পৃঃ ৭৫-৭৬।

[17]. সীরাতে ছানাঈ পৃঃ ৩১৬-৩১৭; আশ-শায়খ ছানাউল্লাহ আল-আমরিতসারী ওয়া জুহূদুহু আদ-দা‘বিয়াহ (মাস্টার্স থিসিস), পৃঃ ৩৭৪।

[18]. হায়াতে শিবলী, পৃঃ ২৫০-২৫১; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ২২, ৪৭; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৩-১১৪।

[19]. নুযহাতুল খাওয়াতির ৮/১২০৫।

[20]. মাসিক মা‘আরিফ, মে ১৯৪৮, পৃঃ ৩৮৮; ইয়াদে রফতেগাঁ, পৃঃ ৩৭০; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৪।

[21]. ইয়াদে রফতেগাঁ, পৃঃ ৩৬৯।

[22]. হায়াতে শিবলী, পৃঃ ৫০৪; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৬-১১৭।

[23]. ইয়াদে রফতেগাঁ, পৃঃ ৩৭১; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৭।

[24]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৭; চালীস ওলামায়ে আহলেহাদীছ, পৃঃ ১৯০; হায়াতে শিবলী, পৃঃ ৫০৫-৫০৮; আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৫-১১৮।

[25]. হাকীম মাহমূদ আহমাদ, ওলামায়ে দেওবন্দ কা মাযী (লাহোর : ইদারা নাশরুত তাওহীদ ওয়াস সুন্নাহ, ২০০৩), পৃঃ ২৯-৩০; সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৬৯-৩৭০; ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৭-৪৮; আহলেহাদীছ মনযিল বহ্ মনযিল, পৃঃ ৮৫-৮৬; মাওলানা আব্দুল ওয়াহ্হাব খালজী, ‘জমঈয়তে ওলামায়ে হিন্দ কী তাসীস মেঁ ওলামায়ে আহলেহাদীছ কা বুনিয়াদী কিরদার’, মাসিক মুহাদ্দিছ, জামে‘আ সালাফিইয়াহ, বেনারস, ২৬/৬ সংখ্যা, জুন ২০০৮, পৃঃ ২১-২৫।

[26]. ইয়াদে রফতেগাঁ, পৃঃ ৩৭১; চালীস ওলামায়ে আহলেহাদীছ, পৃঃ ১৯২।

[27]. নুযহাতুল খাওয়াতির ৮/১২০৫।

[28]. ফিৎনায়ে কাদিয়ানিয়াত, পৃঃ ৪৯। গৃহীত : সাপ্তাহিক আহলেহাদীছ, অমৃতসর, ৩০শে জানুয়ারী ১৯৪২, পঃ ১১।

[29]. আব্দুল মুবীন নাদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১২১।

[30]. সীরাতে ছানাঈ, পৃঃ ৩৬৯-৩৭০; আশ-শায়খ ছানাউল্লাহ আল-আমরিতসারী ওয়া জুহূদুহু আদ-দা‘বিয়াহ, পৃঃ ৩৫২।

[31]. ঐ, পৃঃ ৩৫২।

[32]. ঐ, পৃঃ ৩৫২-৩৫৩।






ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর (৩য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
ইবনু মাজাহ (রহঃ) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (১০ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা আব্দুর রঊফ ঝান্ডানগরী - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা আব্দুল্লাহ মাদানী ঝান্ডানগরী - ড. নূরুল ইসলাম
মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)-এর ব্যাপারেকিছু আপত্তি পর্যালোচনা (শেষ কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (৬ষ্ঠ কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (৯ম কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
আরও
আরও
.