পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭ । শেষ পর্ব ।
দুনিয়া নয়, আখেরাতের জীবনই উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী :
আয়তনের দিক থেকেও দুনিয়ার তুলনায় আখেরাত কল্পনাতীত বিশাল। জান্নাতের অতি সামান্য জায়গাও দুনিয়ার চাইতে বহু বহুগুণে উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَوْضِعُ سَوْطٍ فِى الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ‘জান্নাতে চাবুক পরিমাণ জায়গাও দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে, তার থেকে উত্তম’।[1] ওমর (রাঃ) বলেন, ‘একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বাড়িতে প্রবেশ করলাম। তখন তিনি চাটাইয়ের উপর শুয়ে ছিলেন। তাঁর দেহ ও চাটাইয়ের মাঝে কোন বিছানা ছিল না। তাঁর পার্শ্বদেশে চাটাইয়ের স্পষ্ট দাগ পড়ে গিয়েছিল। এ দেখে ওমর কেঁদে ফেললেন। রাসূল (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, কাঁদলে কেন হে ওমর? ওমর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! পারস্য ও রোম সম্রাট কত সুখী ও বিলাসী জীবন-যাপন করছে। আর আপনি আল্লাহর রাসূল হয়েও এ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন? আপনি আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করুন, তিনি যেন আপনার উম্মতকে পার্থিব সুখ-সম্পদে সমৃদ্ধ করেন। পারস্য ও রোমবাসীদেরকে আল্লাহ দুনিয়ার সুখ-সামগ্রী দান করেছেন, অথচ তারা তাঁর ইবাদত করে না। এ কথা শুনে রাসূল (ছাঃ) হেলান ছেড়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, হে ওমর! তুমি এরূপ কথা বলছ? অথচ ওরা হ’ল এমন জাতি, যাদের সুখ-সম্পদকে এ জগতেই ত্বরান্বিত করা হয়েছে। তুমি কি চাও না যে, ওদের সুখ ইহকালে আর আমাদের সুখ পরকালে হোক?।[2] আলোচ্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) আখেরাতের চিরস্থায়ী সুখ-শান্তির তুলনায় দুনিয়ার বিলাসিতাকে তুচ্ছজ্ঞান করেছেন।
দুনিয়ার মোহ অস্থিরতা ও দরিদ্রতার কারণ :
আব্দুর রহমান বিন আবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ، فَرَّقَ اللهُ عَلَيْهِ أَمْرَهُ، وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ، وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا مَا كُتِبَ لَهُ، وَمَنْ كَانَتِ الْآخِرَةُ نِيَّتَهُ، جَمَعَ اللهُ لَهُ أَمْرَهُ، وَجَعَلَ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ ‘পার্থিব চিন্তা যাকে মোহগ্রস্ত করবে, আল্লাহ তার কাজকর্মে অস্থিরতা সৃষ্টি করে দিবেন, দরিদ্রতা তার নিত্যসংগী হবে এবং পার্থিব স্বার্থ সে ততটুকুই লাভ করতে পারবে, যতটুকু তার তাক্বদীরে লিপিবদ্ধ আছে। আর যার উদ্দেশ্য হবে আখেরাত, আল্লাহ তার সবকিছু সুষ্ঠু করে দিবেন, তার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবেন এবং দুনিয়া স্বয়ং তার সামনে এসে হাযির হবে’।[3]
দুনিয়া সম্পর্কিত আরো কিছু হাদীছ :
১. আবূ উমামা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, عَرَضَ عَلَيَّ رَبِّي لِيَجْعَلَ لِي بَطْحَاءَ مَكَّة ذَهَبَا فَقُلْتُ لَا يَا رَبِّ وَلَكِنْ أَشْبَعُ يَوْمًا وَأَجُوعُ يَوْمًا فَإِذَا جُعْتُ تَضَرَّعْتُ إِلَيْكَ وَذَكَرْتُكَ وَإِذَا شَبِعَتُ حَمِدْتُكَ وَشَكَرْتُكَ. ‘আমার রব আমার জন্য মক্কার ‘বাতহা’ (প্রশস্ত উপত্যকা) স্বর্ণে রূপান্তরিত করে দেওয়ার বিষয় আমার নিকট পেশ করলেন, তখন আমি বললাম, না, হে আমার প্রভু! বরং আমি একদিন পরিতৃপ্ত এবং আরেকদিন অভুক্ত থাকতে চাই। যাতে আমি যখন অভুক্ত থাকি তখন তোমার কাছে সকাতরে বিনয় প্রকাশ করতে পারি এবং তোমাকে স্মরণ করতে পারি। আর যখন পরিতৃপ্ত হব তখন তোমার প্রশংসা করব এবং তোমার শুকরিয়া আদায় করব’।[4]
২. আলী (রাঃ) বলেন,ارْتَحَلَتِ الدُّنْيَا مُدْبِرَةً وَارْتَحَلَتِ الْآخِرَةُ مُقْبِلَةً وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا بَنُونَ فَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الْآخِرَةِ وَلَا تَكُونُوا مِنْ أَبْنَاءِ الدُّنْيَا فَإِنَّ الْيَوْمَ عَمَلٌ وَلَا حِسَابَ وَغَدًا حِسَابٌ وَلَا عَمَلَ. ‘দুনিয়া পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যাচ্ছে, আর আখেরাত সম্মুখে এগিয়ে আসছে। আর তাদের প্রত্যেকটির সন্তানাদি রয়েছে। তবে তোমরা আখেরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার সন্তান হয়ো না। কেননা আজ আমলের সময়, এখানে কোন হিসাব নেই। আর আগামীকাল হিসাব-নিকাশ হবে, সেখানে কোন আমল নেই’।[5]
৩. আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَا مِنْ أَحَدٍ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ يُحِبُّ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى الدُّنْيَا، وَأَنَّ لَهُ مَا عَلَى الْأَرْضِ مِنْ شَيْءٍ، غَيْرُ الشَّهِيدِ، فَإِنَّهُ يَتَمَنَّى أَنْ يَرْجِعَ، فَيُقْتَلَ عَشْرَ مَرَّاتٍ، لِمَا يَرَى مِنَ الْكَرَامَةِ ‘কোন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশের পরে পুনরায় দুনিয়ায় ফিরে আসতে চাইবে না যদিও তাকে পার্থিব সমস্ত সম্পদ প্রদান করা হয়। তবে শহীদ ব্যতীত। কেননা সে দুনিয়ায় ফিরে এসে পুনরায় দশবার শহীদ হওয়ার আকাংখা পোষণ করবে। আর এ জন্য যে, জান্নাতে সে শহীদের মর্যাদা প্রত্যক্ষ করবে’।[6]
৪. হুযায়ফাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ تَلْبَسُوا الْحَرِيرَ وَلاَ الدِّيبَاجَ وَلاَ تَشْرَبُوا فِى آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ، وَلاَ تَأْكُلُوا فِى صِحَافِهَا، فَإِنَّهَا لَهُمْ فِى الدُّنْيَا وَلَنَا فِى الآخِرَةِ ‘তোমরা মোটা কিংবা মিহি রেশমী বস্ত্র পরিধান করো না এবং সোনা ও রূপার পেয়ালায় পান করো না। আর তামার পাত্রে খেয়ো না। কেননা এগুলো দুনিয়াতে তাদের (কাফেরদের) জন্য, আর আখেরাতে আমাদের জন্য’।[7] অন্যত্র তিনি বলেন, مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِى الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْهُ فِى الآخِرَةِ ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশম পরিধান করবে, আখেরাতে সে রেশম পরিধান করতে পারবে না’।[8]
৫. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلَّا ذِكْرُ اللهِ وَمَا وَالَاهُ وَعَالِمٌ أَوْ مُتَعَلِّمٌ ‘নিঃসন্দেহে দুনিয়া অভিশপ্ত। অভিশপ্ত তার মধ্যে যা কিছু আছে (সবই)। তবে আল্লাহর যিকর এবং তার সাথে সম্পৃক্ত জিনিস, আলেম ও তালেবে-ইলম ব্যতীত’।[9]
৬. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, لَا تَتَّخِذُوا الضَّيْعَةَ فَتَرْغَبُوا فِي الدُّنْيَا ‘তোমরা দুনিয়াতে সহায়-সম্পদ নিয়ে বিভোর হয়ে পড়ো না। কেননা এতে তোমরা দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে’।[10]
৭. ছাওবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে বিজাতীরা তোমাদের উপর বিজয়ী হবে, যেমন খাদ্য গ্রহণকারী বড় পাত্রের দিকে অগ্রসর হয়। জনৈক ছাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের সংখ্যা কি তখন কম হবে? তিনি বললেন, না, বরং সেসময় তোমরা সংখ্যায় অধিক হবে। কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে সমুদ্রের ফেনার মত। আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হ’তে তোমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দূর করে দিবেন এবং তোমাদের হৃদয়ে অলসতা সৃষ্টি করে দিবেন। ছাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, অলসতা সৃষ্টির কারণ কি হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)? তিনি বললেন, দুনিয়ার মহববত ও মৃত্যুর ভয় না করা।[11]
৮. উকবা ইবনু আমির (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنِّي لَسْتُ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا بَعْدِي، وَلَكِنِّي أَخْشَى عَلَيْكُمُ الدُّنْيَا أَنْ تَنَافَسُوا فِيهَا، وَتَقْتَتِلُوا، فَتَهْلِكُوا، كَمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে এই আশংকা করি না যে, তোমরা আমার পরে শিরকে লিপ্ত হয়ে যাবে। তবে আমি এই আশংকা করি যে, তোমরা দুনিয়া অর্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়বে, এবং (দুনিয়ার জন্য) পরস্পরে লড়াই করবে; ফলে তোমরা ধ্বংস হবে,
যেমনভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীরা ধ্বংস হয়েছে।[12]
৯. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন,وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تَذْهَبُ الدُّنْيَا، حَتَّى يَأْتِيَ عَلَى النَّاسِ يَوْمٌ لَا يَدْرِي الْقَاتِلُ فِيمَ قَتَلَ، وَلَا الْمَقْتُولُ فِيمَ قُتِلَ فَقِيلَ: كَيْفَ يَكُونُ ذَلِكَ؟ قَالَ: الْهَرْجُ، الْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ ‘ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন, দুনিয়া ধ্বংস হবে না যতক্ষণ না এমন এক যুগ আসবে, যখন হত্যাকারী জানবে না, কি কারণে সে অন্যকে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না, কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে। জিজ্ঞেস করা হলো, এটি কিভাবে হবে? তিনি বললেন, ফিৎনার কারণে। এতে হত্যাকারী ও নিহত উভয় ব্যক্তিই জাহান্নামে প্রবেশ করবে’।[13]
১০. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন,وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى يَمُرَّ الرَّجُلُ عَلَى الْقَبْرِ فَيَتَمَرَّغُ عَلَيْهِ، وَيَقُولُ: يَا لَيْتَنِي كُنْتُ مَكَانَ صَاحِبِ هَذَا الْقَبْرِ، وَلَيْسَ بِهِ الدِّينُ إِلَّا الْبَلَاءُ ‘সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন! ততক্ষণ পর্যন্ত দুনিয়া ধ্বংস হবে না, যতক্ষণ না কোন ব্যক্তি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে কবরের উপর গড়াগড়ি করবে আর বলবে, হায়! যদি আমি এই কবরবাসীর স্থানে হ’তাম! এরূপ উক্তি সে দ্বীন রক্ষার জন্য করবে না, বরং তা বলবে পার্থিব বালা-মুছীবতে অতিষ্ঠ হওয়ার কারণে’।[14]
উপরোক্ত হাদীছগুলো থেকে দুনিয়া সম্পর্কে বেশ কিছু বার্তা আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আরো বহু হাদীছের মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। প্রবন্ধের কলেবরের দিকে খেয়াল করে আমরা বিষয়টি এখানে শেষ করছি। বস্ত্তত মহান আল্লাহর নিকটে এই দুনিয়া এতই ছোট ও তুচ্ছ যে, সর্বশেষ যে ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং আল্লাহ তা‘আলা নিজ অনুগ্রহে তাকে ক্ষমা করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তাকেও এই দুনিয়ার দশটির সমান জান্নাত প্রদান করা হবে।[15] সুবহানাল্লাহ। অতএব দুনিয়ার মোহ থেকে বেরিয়ে এসে আখেরাতের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করাই হবে মুমিনের বৈশিষ্ট্য।
দুনিয়ার মোহ থেকে বাঁচার উপায় :
ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত আলোচ্য নিবন্ধের দ্বিতীয় পর্বে দুনিয়াপূজা সম্পর্কে আলোকেপাত করতে গিয়ে আমরা দুনিয়া সম্পর্কে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর উল্লেখযোগ্য বাণীসমূহ তুলে ধরেছি। এ পর্যায়ে দুনিয়ার মোহ থেকে বেঁচে থাকার কয়েকটি উপায় উল্লেখ করা হ’ল।-
১. দুনিয়াকে লক্ষ্যবস্ত্ত না বানানো : দুনিয়ার মোহ থেকে বাঁচার প্রধানতম মাধ্যম হচ্ছে দুনিয়াকে লক্ষবস্ত্ত না বানিয়ে আখেরাতকে লক্ষবস্ত্ত বানানো। আখেরাতের লক্ষ্যেই সকল কর্ম সম্পাদন করা। আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ كَانَتِ الآخِرَةُ هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَجَمَعَ لَهُ شَمْلَهُ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ، وَمَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ جَعَلَ اللهُ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ، وَفَرَّقَ عَلَيْهِ شَمْلَهُ، وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا مَا قُدِّرَ لَهُ ‘আখেরাত যার একমাত্র চিন্তা ও লক্ষ্য হয়, আল্লাহ তা‘আলা তার হৃদয়কে অভামুক্ত করে দেন এবং বিক্ষিপ্ত বিষয়াবলীকে সমাধান করে দেন এবং তার কাছে দুনিয়া তুচ্ছ হয়ে আসে। পক্ষান্তরে যার চিন্তা ও লক্ষ্য হয় দুনিয়া, আল্লাহ তা‘আলা তার দু’চোখের সামনে অভাব তুলে ধরেন, তার সমস্যা- গুলোকে বিক্ষিপ্ত করে দেন আর যতটুকু তার জন্য নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে এর অতিরিক্ত দুনিয়া সে পায় না’।[16]
অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا، هَمَّ آخِرَتِهِ، كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ، وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِي أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللهُ فِي أَيِّ أَوْدِيَتِهَا هَلَكَ ‘যে ব্যক্তি নিজের সমস্ত চিন্তাকে এককেন্দ্রিক তথা শুধুমাত্র আখেরাতের জন্য করে নিবে, আল্লাহ তার দুনিয়ার যাবতীয় মাক্বছাদ পূরণ করে দিবেন। অপরদিকে যাকে দুনিয়ার নানা দিক ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে, তার জন্য আল্লাহর কোন পরওয়াই নেই, চাই সে কোন জঙ্গলে (যে কোন অবস্থায়) ধ্বংস হোক না কেন’।[17]
২. বেশী বেশী নেক কর্ম করা : আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন যে, আল্লাহ বলেন, يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِي، أَمْلَأْ صَدْرَكَ غِنًى، وَأَسُدَّ فَقْرَكَ، وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ، مَلَأْتُ صَدْرَكَ شُغْلًا، وَلَمْ أَسُدَّ فَقْرَكَ ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য সময় বের কর। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করব এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করে দিব। যদি তুমি তা না কর, তাহ’লে আমি তোমার অন্তরকে ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করব না’।[18] আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন,يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثَةٌ، فَيَرْجِعُ اثْنَانِ وَيَبْقَى مَعَهُ وَاحِدٌ، يَتْبَعُهُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ، فَيَرْجِعُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ، وَيَبْقَى عَمَلُهُ. ‘মৃত ব্যক্তিকে অনুসরণ করে (তার কবর পর্যন্ত যায়) তিনটি বস্ত্ত। দু’টি ফিরে আসে, আর একটি তার সাথে থেকে যায়। তাকে অনুসরণ করে তার পরিবার, তার সম্পদ ও তার আমল। অতঃপর (দাফন কার্য শেষে) তার পরিবার ও মাল-সম্পদ ফিরে চলে আসে। শুধুমাত্র আমল তার সাথে থেকে যায়’।[19] এই হাদীছ থেকে সুস্পষ্ট হ’ল যে, দুনিয়ার সহায়-সম্পদ পরিবার-পরিজন অর্থকরি পরকালে কোনই কাজে আসবে না। কেবলমাত্র আমল ব্যতীত। সুতরাং আমাদেরকে আমলের খাতা সমৃদ্ধ করতে হবে। মহান আল্লাহর ইবাদতে বেশী বেশী মনোনিবেশ করতে হবে। দুনিয়াবী কোন বিষয়ে নয় প্রতিযোগিতা করতে হবে নেকীর কাজে। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণকর কাজে।
৩. মৃত্যুকে স্মরণ করা : দুনিয়ার মোহ থেকে বাঁচার আরেকটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে বেশী বেশী মৃত্যুকে স্মরণ করা। যে মৃত্যু থেকে পালাবার কোন সুযোগ নেই। এটি চিরন্তন ও শাশ্বত। প্রাণ আছে যার, মৃত্যুও অবধারিত তার। আল্লাহ বলেন, كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ‘প্রত্যেক আত্মাই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে’ (আলে ইমরান ৩/১৮৫)। তিনি বলেন,أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِكْكُمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنْتُمْ فِي بُرُوجٍ مُشَيَّدَةٍ ‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, মৃত্যু তোমাদের গ্রাস করবেই, যদিও তোমরা কোন সুরক্ষিত দুর্গে অবস্থান করো’ (নিসা ৪/৭৮)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, أَكْثِرُوا ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ ‘তোমরা বেশী বেশী দুনিয়ার স্বাদ বিনষ্টকারী মৃত্যুকে স্মরণ কর’।[20]
৪. অন্ধকার কবরের কথা কল্পনা করা : দুনিয়ার মোহ থেকে বাঁচতে চোখ বন্ধ করে একবার অন্ধকার কবরের কথা চিন্তা করুন। কল্পনা করুন কবরের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কথা। মুনকার-নাকীরের প্রশ্নের কথা। অতঃপর সাপের দংশন, লোহার হাতুড়ির পিটুনি, জাহান্নামের পোষাক ও জাহান্নামের লেলিহান আগুনের উত্তাপের কথা। ওছমান (রাঃ) যখন কবরের পাশে যেতেন তখন অঝোর নয়নে কাঁদতেন। সাথীরা জিজ্ঞেস করল, আপনি জান্নাত-জাহান্নামের কথা শুনে কাঁদেন না, অথচ কবরের পাশে দাঁড়িয়ে এভাবে কাঁদেন কেন? তিনি বললেন, দেখো! রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, إِنَّ الْقَبْرَ أَوَّلُ مَنَازِلِ الْآخِرَةِ، فَإِنْ نَجَا مِنْهُ، فَمَا بَعْدَهُ أَيْسَرُ مِنْهُ، وَإِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ، فَمَا بَعْدَهُ أَشَدُّ مِنْهُ ‘কবর হচ্ছে পরকালের প্রথম মনযিল বা ঘাঁটি। কেউ যদি এখান থেকে মুক্তি পায়, তাহ’লে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য সহজ হবে। আর যদি কেউ কবরে মুক্তি না পায়, তাহ’লে পরবর্তী ঘাঁটিগুলো তার জন্য কঠিন হয়ে যাবে’।[21]
৫. হাশরের ময়দানের কথা চিন্তা করা : হাশরের ময়দান আরেক বিভীষিকাময় স্থান। যেদিন বিচারের অপেক্ষায় মানুষ দাঁড়িয়ে থাকবে। সূর্য মাথার নিকটবর্তী হবে। পাপ অনুযায়ী মানুষ স্বীয় ঘামের মধ্যে ডুবে থাকবে। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। কেউ কারো দিক মাথা উঁচু করে তাকানোর ফুসরত পাবে না। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) ব্যতীত অন্যান্য নবী-রাসূলগণও যেদিন ‘রাববী নাফসী, রাববী নাফসী’ ‘প্রভু আমাকে বাঁচাও, প্রভু আমাকে বাঁচাও’ বলে প্রার্থনা করতে থাকবেন। আল্লাহ বলেন, يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ إِلَّا مَنْ أَتَى اللهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ ‘সেদিন ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না। সেদিন ভাগ্যবান হবে কেবল সে, যে আল্লাহর কাছে আসবে বিশুদ্ধ আত্মা নিয়ে’ (শু‘আরা ২৬/৮৮-৮৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ، وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ، وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ، لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ- ‘সেদিন মানুষ পালাবে তার ভাই থেকে, তার মা ও বাপ থেকে এবং তার স্ত্রী ও সন্তান থেকে। প্রত্যেক মানুষের সেদিন এমন অবস্থা হবে যে, সে নিজেকে নিয়েই বিভোর থাকবে (আবাসা ৮০/৩৪-৩৭)। এই কঠিন বিপদ মুহূর্তে মুক্তির কথা চিন্তা করলে দুনিয়ার মহববত ত্যাগ করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
৬. আখেরাতে জবাবদিহিতার কথা স্মরণ করা : আল্লাহ বলেন,الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ‘আজ আমরা তাদের মুখে মোহর মেরে দেব। আমাদের সাথে কথা বলবে তাদের হাত ও সাক্ষ্য দিবে তাদের পা, তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে’ (ইয়াসীন ৩৬/৬৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ، عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ، وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ ‘ক্বিয়ামতের দিন স্বীয় প্রতিপালকের সামনে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোন আদম সন্তান তার পা নড়াতে পারবে না। ১. জীবন কীভাবে অতিবাহিত করেছ? ২. যেŠবন কীভাবে নিঃশেষ করেছ? ৩. ধন-সম্পদ কীভাবে উপার্জন করেছ? ৪. কোন পথে সম্পদ ব্যয় করেছ? ৫. ইলম অনুযায়ী আমল করেছ কি-না?’[22] সুতরাং প্রত্যেকটি কর্মের হিসাব সেদিন দিতে হবে। কোন কিছুই গোপন করা যাবে না। দুনিয়াতে মিথ্যা বলে পার পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে যবান বন্ধ করে দিয়ে হাত, পা, চামড়ার সাক্ষ্য নেওয়া হবে। এতএব এই জবাবদিহীতার কথা মাথায় থাকলে কোন মুমিন বান্দাকে দুনিয়ার মোহ আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল রাখতে পারবে না।
৭. অল্পে তুষ্ট থাকা : দুনিয়ার আকর্ষণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে হ’লে অল্পে তুষ্ট থাকতে হবে। তাক্বদীরে বিশ্বাসী হ’তে হবে। মনে রাখতে হবে কিসমতের বাইরে কোন কিছুই অর্জন করা সম্ভব না। নিজের অবস্থানের চাইতে উচ্চ অবস্থানে যারা আছে তাদের দিকে না তাকিয়ে বরং নিম্ন অবস্থানের লোকদের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে হবে’।[23] আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, কে আছ, আমার নিকট হ’তে এ কয়েকটি বাক্য (বিধান) গ্রহণ করবে? অতঃপর নিজে সে মতে আমল করবে অথবা এমন ব্যক্তিকে শিখিয়ে দিবে, যে তার প্রতি আমল করবে। (রাবী বলেন) আমি বললাম, আমি প্রস্ত্তত আছি হে আল্লাহ রাসূল (ছাঃ)। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন এবং পাঁচটি বিষয় গণনা করলেন তথা বললেন, (১) হারাম থেকে বেঁচে থাক, তাতে তুমি হবে উত্তম ইবাদতকারী। (২) আল্লাহ তোমার জন্য যা বন্টন করেছেন তাতেই তুমি সন্তুষ্ট থাকবে, ফলে তুমি হবে সর্বাপেক্ষা ধনী। (৩) প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করবে, তাতে তুমি হবে পূর্ণ ঈমানদার। (৪) নিজের জন্য যা পসন্দ কর অন্যের জন্যও তা পসন্দ করবে, তখন তুমি হবে পূর্ণ মুসলমান। (৫) অধিক হাসবে না। কেননা, অধিক হাসি অন্তরকে মেরে ফেলে’।[24]
৮. কাফেরদের জৌলুস দেখে ধোকায় না পড়া : আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে বলেন,لَا يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي الْبِلَادِ، مَتَاعٌ قَلِيلٌ ثُمَّ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمِهَادُ ‘দেশ-বিদেশে অবিশ্বাসীদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে। এগুলি যৎসামান্য ভোগ্যবস্ত্ত মাত্র। এরপর ওদের ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই ঠিকানা’ (আলে ইমরান ৩/১৯৬-১৯৭)।
উপসংহার : উপসংহারে আমরা পাঠকদের উদ্দেশ্যে ছহীহ মুসলিমে বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীছটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। যেখানে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আদম সন্তান বলে যে, আমার মাল, আমার মাল। অথচ তার মাল তো অতটুকু যতটুকু সে খেয়ে হজম করেছে, যে পোষাক পরিধান করে সে ছিন্ন করেছ এবং যা সে দান-ছাদাক্বার মাধ্যম অগ্রে প্রেরণ করেছে’।[25] অর্থাৎ মানুষ দুনিয়াতে অঢেল সম্পত্তির মালিক হ’লেও, সীমাহীন বিলাসিতায় জীবন যাপন করলেও, সমাজে বা রাষ্ট্রে ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হ’লেও মৃত্যুর সময় সে চরম অসহায় ও একাকিত্বের সাথে শূন্য হাতে বিদায় নিবে। সে সময় তার একমাত্র সাথী হবে তার আমল বা সৎকর্ম। আর চলমান আমল হিসাবে রেখে যাব তার এখলাছপূর্ণ দান-ছাদাক্বা। অতএব মহান আল্লাহর নিকটে আমাদের আকূল প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে দুনিয়ার অন্ধ মোহ থেকে নিরাপদে রাখেন এবং আখেরাতের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্ত্ততি গ্রহণের তাওফীক্ব দান করেন-আমীন!!
[1]. বুখারী হা/৩২৫০; মিশকাত হা/৫৬১৩।
[2]. বুখারী ৫১৯১; মুসলিম ৩৭৬৮; মিশকাত ৫২৪০।
[3]. ইবনু মাজাহ হা/৪১০৫; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৩১৬৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৫০ সনদ ছহীহ।
[4]. আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৯০।
[5]. বুখারী, মিশকাত হ/৫২১৫।
[6]. বুখারী, মুসলিম হা/১৮৭৭; মিশকাত হা/৩৮০৩।
[7]. বুখারী হা/৫৪২৬; মুসলিম হা/২০৬৭; মিশকাত হা/৪২৭২।
[8]. বুখারী হা/৫৮৩৩,৩৪; মুসলিম হা/২০৭৩,৭৪; মিশকাত হা/৪৩১৯।
[9]. তিরমিযী হা/২৩২২; মিশকাত হা/৫১৭৬ সনদ হাসান।
[10]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৭৪ সনদ ছহীহ।
[11]. আবূদাঊদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৫৩৬৯ সনদ ছহীহা; সিলসিলা ছহীহা হা/৯৫৮।
[12]. মুসলিম হা/২২৯৬; মিশকাত হা/৫৯৫৮।
[13]. মুসলিম হা/২৯০৮; মিশকাত হা/৫৩৯০; ‘ফিৎনা সমূহ’ অধ্যায়, ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/৫১৫৭।
[14]. মুসলিম হা/১৫৭; মিশকাত হা/৫৪৪৫।
[15]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৫৮৬।
[16]. তিরমিযী হা/২৪৬৫ সনদ ছহীহ।
[17]. ইবনু মাজাহ হা/২৫৭; মিশকাত হা/২৬৩ সনদ ছহীহ।
[18]. তিরিমিযী হা/২৪৬৬; ইবনু মাজাহ হা/৪১০৭; ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৯৩ সনদ ছহীহ।
[19]. বুখারী হা/৬৫১৪; মুসলিম হা/২৯৬০; মিশকাত হা/৫২৬৭ ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়।
[20]. তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৬০৭।
[21]. ইবনু মাজাহ হা/৪২৬৭; আহমাদ হা/৪৫৪।
[22]. তিরমিযী হা/২৪১৬; মিশকাত হ/৫১৯৭।
[23]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৪২।
[24]. আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৭১; সদন হাসান, সিলসিলা ছহীহা হা/৯৩০।
[25]. মুসলিম হা/২৯৫৮।