পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭ । পর্ব ৮ । পর্ব ৯ । শেষ পর্ব ।
আহাদ হাদীছ আক্বীদা ও আহকাম উভয় ক্ষেত্রেই হুজ্জত :
যারা বলে থাকে যে, আহাদ হাদীছ দ্বারা আক্বীদা সাব্যস্ত হয় না, তারাই আবার একই সময়ে বলে, শারঈ বিধানসমূহ আহাদ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত হয়। এমন দাবীর মাধ্যমে তারা আক্বীদা ও আহকামের মাঝে পার্থক্য করেছে। এই পার্থক্য কি কিতাব ও সুন্নাতের উপরোক্ত দলীল সমূহে আপনি পেয়েছেন? কখনো না; হাযার বার নয়। বরং সুন্নাহ সাধারণভাবে আকবীদাকেও শামিল করে। এ বিষয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর ইত্তেবাকেও ওয়াজিব করে। কেননা নিঃসন্দেহে তা আল্লাহ তা‘আলার নিমেণাক্ত বাণীতে উল্লেখিত বা নির্দেশের আওতাভুক্ত। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُولُهُ أَمْراً أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ- ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়ছালা দিলে কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর সে বিষয়ে নিজস্ব কোন ফায়ছালা দেওয়ার এখতিয়ার নেই’ (আহযাব ৩৩/৩৬)।
এভাবেই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীর অনুসরণ করতে আদেশ করেছেন, তাঁর অবাধ্য হ’তে নিষেধ করেছেন, তাঁর বিরোধিতা করা হ’তে হুঁশিয়ার করেছেন। তিনি ঐ সকল মুমিনের প্রশংসা করেছেন যাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট ফায়ছালার জন্য আহবান করা হ’লে তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম ও মানলাম’। এগুলি সবই আক্বীদা ও আহকামের ক্ষেত্রে নবী করীম (ছাঃ)-এর আনুগত্য ও ইত্তেবা ওয়াজিব হওয়ার দলীল। মহান আল্লাহ বলেন,وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ ‘রাসূল তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছে তা গ্রহণ কর’ (হাশর ৫৯/৭)।
এখানে ما ‘আম’ শব্দের অন্তর্ভুক্ত, যা ব্যাপকতা বুঝায়। আপনি যদি তাদেরকে দলীল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন যারা বলে যে, আহাদ হাদীছ দ্বারা আহকামের ক্ষেত্রে দলীল গ্রহণ করা ওয়াজিব, তাহ’লে তারাও পূর্বোল্লেখিত আয়াত ও অন্যান্য কিছু আয়াত দিয়েই দলীল পেশ করবে, সংক্ষিপ্ততার প্রতি খেয়াল রেখে যেগুলি আমরা উল্লেখ করিনি। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) তার ‘আর-রিসালাহ’ গ্রন্থে সেগুলিকে বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। আগ্রহী ব্যক্তিরা তা অধ্যয়ন করতে পারে। কিসে তাদেরকে আক্বীদার ক্ষেত্রে খবরে আহাদ গ্রহণ করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে পার্থক্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করল? অথচ আক্বীদাও আয়াতসমূহের ‘আম’ হুকুমের আওতাভুক্ত। নিশ্চয়ই সেগুলিকে আক্বীদা ব্যতীত কেবল আহকামের সাথে ‘খাছ’ করা মুখাছছিছ (খাছকারী) বিহীন খাছ করার নামান্তর, যা নিঃসন্দেহে বাতিল। আর যার কারণে কোন কিছু বাতিল হয় সেটিও বাতিল।
একটি সংশয় ও তার জবাব :
প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের মাঝে একটি সংশয়ের সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে তা তাদের আক্বীদা-বিশ্বাসে পরিণত হয়। তা হ’ল আহাদ হাদীছ কেবল ধারণার ফায়েদা দেয়। এটা দ্বারা অবশ্য তারা প্রবল ধারণা বুঝিয়ে থাকেন। আর প্রবল ধারণা দ্বারা আহকামের ক্ষেত্রে দলীল গ্রহণ করা সর্বসম্মতিক্রমে ওয়াজিব। কিন্তু তাদের নিকট গায়েবী বিষয়, আমলগত বিষয় সমূহে তা গ্রহণ করা জায়েয নয়। আর আক্বীদা দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য। আমরা যদি তর্কের খাতিরে তাদের দাবী ‘আহাদ হাদীছ কেবল ধারণার ফায়েদা দেয়’ মেনেও নেই তবে আমরা তাদেরকে প্রশ্ন করতে চাই; তোমরা এই পার্থক্য কোথায় পেলে? আক্বীদার ক্ষেত্রে আহাদ হাদীছ গ্রহণ করা জায়েয নেই মর্মে তোমাদের দলীল কোথায়?
সমসাময়িক কিছু লোককে আমরা দেখি, এ ব্যাপারে মুশরিকদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে মর্মে আল্লাহ তা‘আলার বাণীগুলিকে তাদের স্বপক্ষে দলীল হিসাবে পেশ করে থাকে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنْ يَتَّبِعُوْنَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ ‘তারা কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং যা তাদের মনে আসে তাই করে’ (নাজম ৫৩/২৩)। তিনি আরোও বলেন, إِنَّ الظَّنَّ لا يُغْنِيْ مِنَ الْحَقِّ شَيْئاً ‘আর সত্যের মুকাবিলায় ধারণার কোন মূল্য নেই’ (নাজম ৫৩/২৮)। ইত্যাদি বিভিন্ন আয়াত যেখানে ধারণার অনুসরণ করার কারণে আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদেরকে তিরস্কার করেছেন।
ঐ সকল দলীল গ্রহণকারীরা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে, এই আয়াতগুলিতে ধারণা বলতে প্রবল ধারণা উদ্দেশ্য নয়, যা খবরে ওয়াহেদ দিয়ে থাকে এবং তা গ্রহণ করা সকলের মতে ওয়াজিব। বরং এখানে ধারণা বলতে সন্দেহ ও সংশয় উদ্দেশ্য। ‘আন-নিহায়া’ ও ‘লিসানুল আরব’ সহ অন্যান্য অভিধানগ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, اَلظَّنُّ اَلشَّكُّ يَعْرِضُ لَكَ فِي الشَّيْءِ فَتُحَقِّقُهُ وَتَحْكُمُ بِهِ- ‘ধারণা হ’ল সন্দেহ, যা কোন বিষয়ে তোমার মাঝে উদিত হয় অতঃপর তুমি তা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাক’। এটি সেই ধারণা যার কারণে আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদেরকে তিরস্কার করেছেন। এর স্বপক্ষে আল্লাহ তা‘আলার বাণী,إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُوْنَ، ‘তারা কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং তারা কেবল কল্পনাপ্রসূত কথা বলে’ (ইউনুস ১০/৬৬)। তিনি এখানে কল্পনাকে কেবল আন্দায ও অনুমান হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
এই আয়াতগুলিতে ধারণা দ্বারা যদি প্রবল ও প্রাধান্যযোগ্য ধারণা বুঝানো হ’ত যেমন দাবী করেছে ঐ সমস্ত দলীল গ্রহণকারীরা, তাহ’লে তা দ্বারা আহকামের ক্ষেত্রেও দলীল গ্রহণ করা জায়েয হ’ত না দু’টি কারণে। ১. আল্লাহ তা‘আলা তাদের এমন কল্পনাকে চরমভাবে ভৎর্সনা করেছেন। তিনি আহকাম ব্যতীত কেবল আক্বীদার ক্ষেত্রেও তা ‘খাছ’ করেননি। ২. আল্লাহ তা‘আলা কিছু আয়াতে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তিনি মুশরিকদের যে কল্পনাকে তিরস্কার করেছেন তা দ্বারা আহকামও উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলার স্পষ্ট বাণী শুনুন,سَيَقُوْلُ الَّذِيْنَ أَشْرَكُوْا لَوْ شَاءَ اللهُ مَا أَشْرَكْنَا وَلا آبَاؤُنَا ‘সত্বর মুশরিকরা বলবে, যদি আল্লাহ চাইতেন, তাহ’লে না আমরা শিরক করতাম, না আমাদের বাপ-দাদারা করত’ (আন‘আম ৬/১৪৮)। এটি হ’ল আক্বীদা-বিশ্বাস।
وَلا حَرَّمْنَا مِنْ شَيْءٍ ‘এবং না আমরা কোন বস্ত্তকে হারাম করতাম’ (আন‘আম ৬/১৪৮)। এটি হুকুম। মহান আল্লাহ আরো বলেন,
كَذَلِكَ كَذَّبَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ حَتَّى ذَاقُوْا بَأْسَنَا قُلْ هَلْ عِنْدَكُمْ مِنْ عِلْمٍ فَتُخْرِجُوْهُ لَنَا إِنْ تَتَّبِعُوْنَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ أَنْتُمْ إِلَّا تَخْرُصُوْنَ-
‘এভাবেই তাদের পূর্বসুরীরা মিথ্যারোপ করত। অবশেষে তারা আমাদের শাস্তি আস্বাদন করেছে। বল, তোমাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে, যা আমাদের দেখাতে পার? বস্ত্ততঃ তোমরা কেবল ধারণার অনুসরণ কর এবং তোমরা কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বল’ (আন‘আম ৬/১৪৮)। আল্লাহ তা‘আলার নিমেণাক্ত বাণী এটাকে ব্যাখ্যা করে।
قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْأِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَنْ تُشْرِكُوا بِاللهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَاناً وَأَنْ تَقُولُوا عَلَى اللهِ مَا لا تَعْلَمُونَ-
‘তুমি বল! নিশ্চয়ই আমার প্রভু প্রকাশ্য ও গোপন সকল প্রকার অশ্লীলতা হারাম করেছেন এবং হারাম করেছেন সকল প্রকার পাপ ও অন্যায় বাড়াবাড়ি। আর তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না যে বিষয়ে তিনি কোন প্রমাণ নাযিল করেননি এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কথা বলো না যে বিষয়ে তোমরা কিছু জানো না’ (আ‘রাফ ৭/৩৩)।
পূর্বের আয়াতগুলি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যে ধারণা গ্রহণ করা জায়েয নয় সেটি হ’ল শাব্দিক অর্থে ধারণা যা আন্দায, অনুমান ও না জেনে কথা বলার প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এমন ধারণা দ্বারা আহকামের ক্ষেত্রে হুকুম গ্রহণ করা যেমন নাজায়েয, তেমনি আক্বীদার ক্ষেত্রেও হারাম। এতদুভয়ের মাঝে কোন পার্থক্য নেই।
বিষয়টি যদি এমনই হয় তাহ’লে আমরা আগের মতই বলতে পারি যে, পূর্বোল্লেখিত যে সকল আয়াত ও আহাদ হাদীছ আহকামের ক্ষেত্রে গ্রহণ করা ওয়াজিব অনুরূপভাবে তা ‘আম’ ও ব্যাপক অর্থে আক্বীদার ক্ষেত্রে গ্রহণ করাও ওয়াজিব। সত্য কথা হ’ল আহাদ হাদীছ দ্বারা হুকুম গ্রহণের ক্ষেত্রে আক্বীদা ও আহকামের মাঝে পার্থক্য করা ইসলামে অনুপ্রবিষ্ট একটি দর্শন সালাফে ছালেহীন ও চার ইমাম বর্তমান যুগে অধিকাংশ মুসলিম যাদের তাক্বলীদ করেন তারাও জানতেন না।
‘আক্বীদার ক্ষেত্রে আহাদ হাদীছ গ্রহণ করা যাবে না’ শীর্ষক আক্বীদার ভিত্তি হ’ল তাদের অনুমান ও কল্পনা :
সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হ’ল আজকাল অনেক বিবেকবান মুসলিম এই বাক্যগুলি শুনে থাকেন যা অনেক আলোচক ও লেখক বার বার পুনরাবৃত্তি করেন। এমন কথা তখনি বলা সম্ভব যখন হাদীছকে সত্যায়ন করার ব্যাপারে তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। হাদীছ যদি মুহাদ্দিছগণের নিকট মুতাওয়াতির সূত্রেও প্রমাণিত হয়, তবুও তারা এসব কথা বলেন। যেমন শেষ যামানায় ঈসা (আঃ)-এর অবতরণ বিষয়ক হাদীছ। তখন ওরা একটি কথা বলেই এই বিষয়টিকে আড়াল করার চেষ্টা করে তা হ’ল حَدِيْثُ الْآحَادِ لَا تَثْبُتُ بِهِ عَقِيْدَةٌ- ‘আহাদ হাদীছ দ্বারা আক্বীদা সাব্যস্ত হয় না’! আশ্চর্যের বিষয় হ’ল তাদের এমন কথা স্বয়ং আক্বীদা। এই কথা আমি যাদের সাথে এই মাসআলাটি নিয়ে বিতর্ক করেছিলাম তাদেরকেও বলেছিলাম। সে কারণে এমন কথার বিশুদ্ধতার স্বপক্ষে অকাট্য দলীল উপস্থিত করা তাদের ওপর আবশ্যক। তা যদি না করতে পারে তাহ’লে তারাই স্ববিরোধী কথা বলে থাকে বলে প্রমাণিত হবে। আফসোস! শুধু দাবী ব্যতীত তাদের কোন দলীল নেই। আর এমন দলীল আহকামের ক্ষেত্রেও প্রত্যাখ্যাত। তাহ’লে আক্বীদার ক্ষেত্রে কিভাবে গ্রহণীয় হ’তে পারে? অন্যভাবে বলা যেতে পারে, তারা আক্বীদার ক্ষেত্রে আহাদ হাদীছ প্রবল ধারণার ফায়েদা দেয় একথা বলা থেকে পলায়ন করে এর চেয়ে নিকৃষ্ট কিছুর মাঝে পতিত হয়েছে, তা হ’ল আহাদ হাদীছ দুর্বল ধারণার ফায়েদা দেয় দাবী করা! فَاعْتَبِرُوْا يَا أُولِي الْأَبْصَارِ ‘হে দূরদর্শী ব্যক্তিগণ! তোমরা উপদেশ হাছিল কর’ (হাশর ৫৯/২)।
এমন কাজ তারা করেছে কিতাব ও সুন্নাহর জ্ঞান হ’তে দূরে থাকা, সরাসরি এ দু’টির আলোয় সুপথ না পাওয়া এবং এ দু’টিকে বাদ দিয়ে মানুষের রায় ও ক্বিয়াস নিয়ে মশগূল থাকার কারণে।
আক্বীদার ক্ষেত্রে আহাদ হাদীছ গ্রহণ করা ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণসমূহ :
পূর্বোল্লেখিত প্রমাণগুলি ছাড়াও আরোও অনেক ‘খাছ’ দলীল রয়েছে যা আক্বীদার ক্ষেত্রে খবরে ওয়াহেদ হাদীছকে গ্রহণ করা ওয়াজিব প্রমাণ করে। তন্মধ্যে কিছুটা এখানে উল্লেখ করা ও দলীল গ্রহণ পদ্ধতি বর্ণনা করা আমরা যরূরী মনে করছি।
প্রথম দলীল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِيَنْفِرُوْا كَافَّةً فَلَوْلا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِيْ الدِّيْنِ وَلِيُنْذِرُوْا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُوْنَ- ‘আর মুমিনদের এটা সঙ্গত নয় যে, সবাই একত্রে (জিহাদে) বের হবে। অতএব তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং ফিরে এসে নিজ কওমকে (আল্লাহর নাফরমানী হ’তে) ভয় প্রদর্শন করে যাতে তারা সাবধান হয়’ (তওবা ৯/১২২)।
আল্লাহ তা‘আলা মুমিনেদরকে উৎসাহিত করেছেন এ মর্মে যে, তাদের মধ্যে একদল লোক যেন নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকটে গিয়ে দ্বীন শিখে ও জ্ঞানার্জন করে। নিঃসন্দেহে এটা দ্বারা কেবল আহকাম ও শাখা-প্রশাখার জ্ঞান উদ্দেশ্য নয়। বরং এর চেয়েও ব্যাপক। এমনকি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যক হ’ল শিক্ষা দেওয়া ও নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দিয়ে শুরু করা। আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আক্বীদা আহকামের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এজন্যই এক শ্রেণীর দাবীদার বলে থাকে ‘আহাদ হাদীছ’ দ্বারা আক্বীদা সাব্যস্ত হয় না। ফলে এই আয়াতটি তাদের দাবীকে বাতিল প্রমাণ করে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা একদল লোককে যেমন আক্বীদা ও আহকামের জ্ঞান অর্জনের প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তেমনি তারা যে আক্বীদা ও আহকামের জ্ঞান অর্জন করবে তা দ্বারা স্বজাতির নিকট ফিরে গিয়ে তাদেরকে সতর্ক করতেও উৎসাহিত করেছেন।
‘ত্বায়েফা’ (الطائفة) বলতে আরবী ভাষায় এক ও এর অধিক সংখ্যাকে বুঝায়। সুতরাং ‘আহাদ হাদীছ’ দ্বারা যদি আক্বীদা ও আহকাম সাব্যস্ত না হ’ত, তাহ’লে আল্লাহ তা‘আলা একদল মুমিনকে আমভাবে দ্বীনের প্রচার করার প্রতিও উৎসাহিত করতেন না। এর কারণ স্বরূপ তিনি বলেন, لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ ‘যাতে তারা সাবধান হয়’। এতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইলম অর্জিত হয় অন্য দলকে সতর্ক করার মাধ্যমে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শারঈ ও সৃষ্টিগত সম্পর্কিত আয়াত সমূহে বলেন, {لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُوْنَ} {لَعَلَّهُمْ يَعْقِلُوْنَ} {لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُوْنَ} ‘যাতে তারা চিন্তা ও গবেষণা করে’ ‘যাতে তারা উপলব্ধি করে’ ‘যাতে তারা সুপথ পায়’। সুতরাং আয়াতটির স্পষ্ট বক্তব্য হ’ল দ্বীনের প্রচারের ক্ষেত্রে খবরে ওয়াহেদ আক্বীদা ও আহকাম উভয় বিষয়েই হুজ্জত বা দলীল।
দ্বিতীয় দলীল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ‘যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই তার পিছে পড়ো না’ (বনী ইসরাঈল ১৭/৩৬)।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘অর্থাৎ তার অনুসরণ কর না, সে অনুযায়ী আমল কর না। জ্ঞাতব্য যে, ছাহাবীগণের যুগ হ’তে মুসলমানগণ আহাদ হাদীছ অনুসরণ করে আসছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করে আসছেন, তা দ্বারা গায়েবী ও আক্বীদাগত বিষয়সমূহ যেমন সৃষ্টির সূচনা, ক্বিয়ামতের আলামত সমূহ ও আল্লাহর ছিফাতসমূহ সাব্যস্ত করেন। যদি তা ইলমের উপকার নাই দিত এবং আক্বীদা সাব্যস্ত নাই করত তাহ’লে ছাহাবীগণ, তাবেঈগণ, তাবে তাবেঈগণ ও ইসলামের সকল ইমামগণ যে বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই তারা কি তার অনুসরণ করেছেন?[1] আর এমন কথা কোন মুসলিম বলতে পারে না।
তৃতীয় দলীল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوْا ‘হে মুমিনগণ! যদি কোন ফাসেক ব্যক্তি তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা সেটা যাচাই কর’ (হুজুরাত ৪৯/৬)।
অন্য
ক্বিরাআতে فَتُثَبِّتُوْا এসেছে। এটা দ্বারা বুঝা যায় যদি ন্যায়পরায়ণ
ব্যক্তি কোন সংবাদ নিয়ে আসে তাহ’লে তা দ্বারা হুজ্জত প্রতিষ্ঠিত হয়।
সেক্ষেত্রে তা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হওয়া আবশ্যক নয়। বরং তৎক্ষণাৎ তা
গ্রহণ করা হবে। এজন্য ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘এটা দ্বারা খবরে
ওয়াহেদকে নিশ্চিতরূপে গ্রহণ করা বুঝায়। তা যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত
হওয়ার প্রয়োজন হয় না। যদি তার দেওয়া খবর ইলমের ফায়েদা নাই দিত তাহ’লে তিনি
অবশ্যই তা নিশ্চিত হ’তে নির্দেশ দিতেন, যাতে ইল্মের ফায়েদা দেয়। তাছাড়া
সালাফে ছালেহীন ও ইসলামের ইমামগণ আজও বলে আসছেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) এরূপ
বলেছেন, তিনি এরূপ করেছেন, এরূপ আদেশ করেছেন এবং এরূপ করতে নিষেধ
করেছেন...। এটা তাদের কথার মাধ্যমেই আবশ্যিকভাবে জানা যায়। ছহীহ বুখারীতে
এসেছে, রাসূল (ছাঃ) কয়েক জায়গায় বলেছেন, ছাহাবীগণের হাদীছে তাদের কেউ কেউ
বলেছেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন’। অথচ তিনি এটা অন্য কোন ছাহাবীর নিকট
হ’তে শুনেছেন। এটা দ্বারা যিনি বলেছেন তার স্বপক্ষে সাক্ষী এবং রাসূল
(ছাঃ)-এর প্রতি সম্বোধনকৃত কথা বা কর্মের প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাসের প্রমাণ
মেলে। যদি একজন ব্যক্তির হাদীছ দ্বারা নিশ্চিত জ্ঞানের ফায়েদা হাছিল না
হ’ত, তাহ’লে উপরোক্ত বক্তব্য প্রদানকারী রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে ইল্মবিহীন
সাক্ষ্যদাতা হিসাবে গণ্য হ’ত!’[2]
চতুর্থ দলীল : নবী করীম (ছাঃ) ও তাঁর ছাহাবীগণের সুন্নাত খবরে আহাদ দ্বারা দলীল গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করে :
আমলগত সুন্নাত যার ওপর নবী করীম (ছাঃ) স্বীয় জীবদ্দশাতে এবং ছাহাবীগণ তাঁর জীবদ্দশাতে এবং তাঁর মৃত্যুর পরও আমল করেছেন তা অকাট্যভাবে প্রমাণ করে যে, আক্বীদা ও আহকামের ক্ষেত্রে আহাদ হাদীছের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। এটি উভয়ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠিত দলীল। এ বিষয়ে আমরা যে সকল ছহীহ হাদীছ অবগত হয়েছি তার কিছু এখানে উল্লেখ করছি :
ইমাম বুখারী (৮/১৩২) তাঁর ছহীহ গ্রন্থে বলেছেন,
باب ما جاء في إجازة خبر الواحد الصدوق في الأذان والصلاة والصوم والفرائض والأحكام وقول الله تعالى {فَلَوْلا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ} ويسمى الرجل طائفة لقوله تعالى {وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا} فلو اقتتل رجلان دخلا في معنى الآية وقوله تعالى {إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا} وكيف بعث النبي صلى الله عليه وسلم أمراءه واحدا بعد واحد فإن سها أحد منهم رد إلى السنة-
‘অনুচ্ছেদ : আযান, ছালাত, ছওম,
ফারায়েয ও আহকাম বিষয়ে একজন সত্যবাদী বর্ণনাকারীর হাদীছ গ্রহণ জায়েয হওয়া
সম্পর্কে যা এসেছে’। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘অতএব তাদের প্রত্যেক দলের একটি
অংশ কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং ফিরে এসে নিজ
কওমকে (আল্লাহর নাফরমানী হ’তে) ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়’ (তওবা ৯/১২২)। একজনকেও ত্বায়েফা বলে নামকরণ করা যায়। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী, ‘যদি মুমিনদের দুই দল পরস্পরে যুদ্ধে লিপ্ত হয়’ (হুজুরাত ৪৯/৯)।
সুতরাং যদি দু’জন লোক যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহ’লে তারাও নিমেণাক্ত আয়াতের
অর্থের আওতায় পড়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যদি কোন ফাসেক ব্যক্তি
তোমাদের নিকট কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা সেটা যাচাই কর’ (হুজুরাত ৪৯/৬)।
অনুরূপভাবে নবী করীম (ছাঃ) তাঁর আমীর-ওমারাকে বিভিন্ন এলাকায় এক এক করে
কিভাবে পাঠাতেন? তাদের কারো যদি ভুল-ত্রুটি হয়ে যেত তাহ’লে তিনি সুন্নাতের
দিকে ফিরে যেতেন’।[3]
অতঃপর ইমাম বুখারী অনুচ্ছেদ রচনার পর এমন কিছু হাদীছ উল্লেখ করেছেন যেগুলি খবরে ওয়াহেদ জায়েয হওয়ার দলীল সাব্যস্ত করে। উদ্দেশ্য হ’ল তা দ্বারা আমল করা ও বলা জায়েয তা প্রমাণ করা। তন্মধ্যে আমি কিছু হাদীছ এখানে উল্লেখ করছি,
এক : মালিক বিন হুওয়ায়রেছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَتَيْنَا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ، فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ لَيْلَةً، وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَفِيقًا، فَلَمَّا ظَنَّ أَنَّا قَدِ اشْتَهَيْنَا أَهْلَنَا أَوْ قَدِ اشْتَقْنَا سَأَلَنَا عَمَّنْ تَرَكْنَا بَعْدَنَا فَأَخْبَرْنَاهُ قَالَ: ارْجِعُوا إِلَى أَهْلِيكُمْ، فَأَقِيمُوا فِيهِمْ، وَعَلِّمُوهُمْ وَمُرُوهُمْ، وَذَكَرَ أَشْيَاءَ أَحْفَظُهَا أَوْ لاَ أَحْفَظُهَا، وَصَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي
‘আমরা নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট আসলাম। তখন আমরা সমবয়সী যুবক
ছিলাম। তাঁর নিকট আমরা বিশ রাত থাকলাম। আর রাসূল (ছাঃ) ছিলেন দয়ালু ও কোমল
হৃদয়ের অধিকারী। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে, আমরা পরিবারের প্রতি আসক্ত ও
ব্যাকুল, তখন আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা বাড়িতে কাদেরকে রেখে এসেছি?
আমরা সে বিষয়ে তাঁকে সংবাদ দিলে তিনি বলেন, ‘তোমরা তোমাদের পরিবারের নিকট
ফিরে যাও, তাদের মাঝেই থাক, তাদেরকে শিক্ষা দাও, তাদেরকে নির্দেশ কর এবং
আমাকে যেভাবে ছালাত আদায় করতে দেখেছ ঠিক সেভাবে ছালাত আদায় কর’।[4]
রাসূল (ছাঃ) ঐ যুবকদের প্রত্যেককেই নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা প্রত্যেকেই যেন তাদের পরিবারের লোকজনকে শিক্ষা দেয়। আর শিক্ষা আক্বীদাকেও শামিল করে। বরং আক্বীদায় শিক্ষা সর্বপ্রথম উমূমের অন্তর্ভুক্ত হয়। যদি একজন নবীর বর্ণিত হাদীছ দ্বারা দলীল সাব্যস্ত না হ’ত, তাহ’লে উক্ত নির্দেশের কোন অর্থই থাকত না।
দুই : আনাস বিন মালিক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, أَنَّ
أَهْلَ الْيَمَنِ قَدِمُوْا عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ فَقَالُوا: ابْعَثْ مَعَنَا رَجُلًا يُعَلِّمْنَا السُّنَّةَ
وَالْإِسْلَامَ قَالَ فَأَخَذَ بِيَدِ أَبِي عُبَيْدَةَ فَقَالَ : هَذَا
أَمِينُ هَذِهِ الْأُمَّةِ ‘ইয়েমেনবাসী আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে
বলল, আপনি আমাদের নিকট একজন লোক প্রেরণ করুন, যিনি আমাদেরকে সুন্নাত ও
ইসলাম শিক্ষা দিবেন। তিনি বলেন, ‘তিনি আবূ ওবায়দার হাত ধরে বললেন, ‘সে এই
উম্মতের আমীন’।[5]
আমি (আলবানী) বলছি, ‘খবরে ওয়াহেদ দ্বারা যদি হুজ্জত কায়েম না হ’ত, তাহ’লে তিনি তাদের নিকট আবু ওবায়দাকে একাই পাঠাতেন না। অনুরূপ তিনি বিভিন্ন প্রেক্ষিতে ইয়েমেনবাসীদের নিকট অনেক ছাহাবী প্রেরণ করেছেন এবং বিভিন্ন নগরীতে অন্যান্য ছাহাবীগণকেও পাঠাতেন। যেমন আলী বিন আবু তালিব, মু‘আয বিন জাবাল, আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ), যাদের হাদীছগুলি ছহীহায়েন তথা বুখারী ও মুসলিম সহ অন্যান্য গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তাদেরকে যাদের নিকট প্রেরণ করা হ’ত তারা তাদেরকে যেসব বিষয় শিক্ষা দিতেন তার মধ্যে আক্বীদাও ছিল। তাদেরকে প্রেরণ করার মাধ্যমে তাদের ওপর যদি হুজ্জত কায়েম না হ’ত, তাহ’লে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে এককভাবে পাঠাতেন না। কেননা তা হ’ত অহেতুক কাজ, যা থেকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) সম্পূর্ণ মুক্ত। এটাই ইমাম শাফেঈ (রহঃ)-এর ‘আর-রিসালা’য় (পৃঃ ৪১২) উল্লেখিত কথার অর্থ। তিনি বলেন, ‘তিনি কাউকে কোন নির্দেশ দিয়ে পাঠালে যাকে পাঠাচ্ছেন তার জন্য এবং যাদের নিকট পাঠাচ্ছেন তাদের ওপর আল্লাহর রাসূলের পক্ষ থেকে তার দেয়া খবর গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তা হুজ্জত হিসাবে ক্বায়েম হ’ত। তিনি পারতেন তাদের নিকট এমন কাউকে পাঠাতে যে তাদের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারত অথবা কিছুসংখ্যক লোককে পাঠাতে পারতেন। অথচ তিনি এমন একজনকেই পাঠাতেন যাকে তারা সত্যবাদী হিসাবে চিনত’।
[চলবে]
[1] .মুখতাছারুত ছাওয়াঈক্ব ২/৩৯৬
[2]. ই‘লাম ২/৩৯৪।
[3]. হাদীছ নং ১৩২।
[4]. বুখারী হা/৭২৪৬।
[5]. মুসলিম হা/২৪১৯; ইমাম বুখারী হাদীছটিক সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন।