পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭ । পর্ব ৮ । পর্ব ৯ । শেষ পর্ব ।

তাক্বলীদকে মাযহাব ও দ্বীনরূপে গ্রহণ করা

তাক্বলীদের স্বরূপ ও তা থেকে সতর্কীকরণ :

অভিধানে ‘তাক্বলীদ’ শব্দটি আরবী ‘ক্বিলাদাতুন’ (قِلاَدَةٌ) হ’তে গৃহীত, যা মানুষ অন্যের গলায় পরিয়ে দেয়। এখান থেকেই تَقْلِيْدُ الْهَدْىِ অর্থাৎ কুরবানীর পশুর গলায় কণ্ঠহার বা রশি ঝুলানো। মুক্বাল্লিদ যে বিষয়ে মুজতাহিদের তাক্বলীদ করেছে সে যেন সে বিষয়ে তার গলায় তার আনুগত্যের রশি বেঁধে নিয়েছে। পারিভাষিক অর্থে তাক্বলীদ হল,هُوَ الْعَمَلُ بِقَوْلِ الْغَيْرِ مِنْ غَيْرِ حُجَّةٍ ‘দলীল ব্যতীত অন্যের কথা অনুযায়ী আমল করা’।

এর মাধ্যমে আল্লাহর রাসূলের কথা অনুযায়ী আমল, ইজমার উপর আমল, সাধারণ ব্যক্তির মুফতীর এবং বিচারকের ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির সাক্ষ্যের শরণাপন্ন হওয়ার মত বিষয়গুলি (তাক্বলীদের আওতাভুক্ত হওয়া থেকে) বাদ পড়ে যায়। কেননা এসব বিষয়ে দলীল রয়েছে।[1]

এই উছূলী নছ থেকে আমরা দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ফায়েদা লাভ করেছি।

এক : তাক্বলীদ কোন উপকারী ইলম নয়।

দুই : এটি সাধারণ ও অজ্ঞ মানুষের কাজ।

এ দু’টি বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে এর স্বরূপ বর্ণনা করা এবং এর প্রত্যেকটিতে ইমামগণের উক্তি দ্বারা দলীল পেশ করতঃ কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে এ বিষয়ে আলোকপাত করা যরূরী। অতঃপর আমরা ইমামদের অনুসরণকারী দাবীদারদের অবস্থা ও তাদের উক্তি অনুযায়ী তাদের অনুসরণ করার দাবীর যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করব।

১. তাক্বলীদ কোন ইলম নয়। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদের একাধিক আয়াতে তাক্বলীদের নিন্দা করেছেন। এজন্যই পূর্বের ইমামগণ পর্যায়ক্রমে তাদের বক্তব্য দ্বারা তাক্বলীদের ব্যাপারে নিষেধ করেছেন। আন্দালুসের ইমাম খ্যাত ইমাম ইবনু আব্দিল বার্র তাঁর প্রসিদ্ধ ‘জামিঊ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাযলিহী’ গ্রন্থে (২/১০৯-১১৪) এর বিশ্লেষণে বিশেষ একটি অধ্যায় রচনা করেছেন। তাঁর আলোচনার সারসংক্ষেপ নিমণরূপ:

তাক্বলীদের অপকারিতা, এর নিষিদ্ধতা এবং তাক্বলীদ ও ইত্তেবার মাঝে পার্থক্য :

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবের একাধিক জায়গায় তাক্বলীদের নিন্দা করেছেন। যেমন- তিনি বলেন,اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَاباً مِنْ دُونِ اللهِ  ‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম-ওলামা ও পোপ-পাদ্রীদেরকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে’ (তওবা ৯/৩১)

হুযায়ফা প্রমুখ থেকে বর্ণিত আছে, ‘তারা বলেন, ইহুদীরা আল্লাহ ব্যতীত তাদের ইবাদত করেনি। কিন্তু তারা তাদের জন্য যা কিছু হালাল করেছে এবং তাদের ওপর যা হারাম করেছে এ বিষয়ে তারা তাদের অনুসরণ করেছে। আদী বিন হাতিম বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসলাম তখন আমার গলায় ক্রশ ছিল। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে আদী তোমার গলা থেকে এই মূর্তিটিকে ছুঁড়ে ফেলে দাও। আমি যখন তাঁর কাছাকাছি গেলাম তখন তিনি সূরা তওবার এই আয়াতটি পড়ছিলেন, ‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম-ওলামা ও পোপ-পাদ্রীদের এবং মারিয়াম পুত্র মসীহ ঈসাকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে’ (তওবা ৯/৩১)। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা তো তাদেরকে রব হিসাবে গ্রহণ করিনি। তখন তিনি বললেন, কেন; তোমাদের ওপর যা হারাম করা হয়েছে তারা কি তা তোমাদের জন্য হালাল করে না? আর তোমরাও সেটাকে হালাল করে নাও। আর যা আল্লাহ তোমাদের জন্য হালাল করেছেন সেটাকে তারা হারাম করে। আর তোমরাও সেটাকে হারাম মনে কর? আমি বললাম, হ্যঁা। তিনি বললেন, তাহ’লে এটাই তো তাদের ইবাদত করা হ’ল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَكَذَلِكَ مَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ فِي قَرْيَةٍ مِنْ نَذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَا إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَى أُمَّةٍ وَإِنَّا عَلَى آثَارِهِمْ مُقْتَدُونَ، قَالَ أَوَلَوْ جِئْتُكُمْ بِأَهْدَى مِمَّا وَجَدْتُمْ عَلَيْهِ آبَاءَكُمْ قَالُوا إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُونَ-

‘এমনিভাবে তোমার পূর্বে যখনই আমরা কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করেছি, তখনই তাদের বিত্তশালীরা বলেছে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি এক রীতির উপর এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করি। সে (মুহাম্মাদ) বলল, আমি যদি তোমাদের নিকট তার চেয়ে উত্তম পথ নির্দেশ নিয়ে আসি, যার উপরে তোমরা তোমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছ? তারা বলে, তোমরা যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছ, আমরা ওসব প্রত্যাখ্যান করি’ (যুখরুফ ৪৩/২৩-২৪)

এভাবে পূর্বপুরুষদের অনুসরণ তাদেরকে হেদায়াত কবুল করতে বাধা দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল,إِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُوْنَ ‘তোমরা যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছ, আমরা ওসব প্রত্যাখ্যান করি’ (যুখরুফ ৪৩/২৪)। আল্লাহ তা‘আলা কাফির সম্প্রদায়ের নিন্দা ও তিরস্কার করে বলেন, مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ، قَالُوا وَجَدْنَا آبَاءَنَا لَهَا عَابِدِينَ-  ‘এই মূর্তিগুলি কী, যাদের পূজায় তোমরা রত আছ? তারা বলল, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে এদের পূজারী হিসাবে পেয়েছি’ (আম্বিয়া ২১/৫২-৫৩)

এভাবে পূর্বপুরুষ ও নেতাদের তাক্বলীদ করার নিন্দা কুরআনের অনেক জায়গায় রয়েছে। আলেমগণ এই আয়াতগুলি দ্বারা তাক্বলীদ বাতিলের পক্ষে দলীল গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তাদের (যাদের কথা আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে) কাফের হওয়ার ব্যাপারে উক্ত আয়াতগুলি থেকে দলীল গ্রহণে বাধা দেয়নি। কেননা এখানে উভয়ের মধ্যেকার সাদৃশ্য একজনের কুফরী ও অপরজনের ঈমানের দৃষ্টিকোণ থেকে হয়নি। বরং উভয় প্রকার তাক্বলীদে মুক্বাল্লিদ দলীল ছাড়াই ইত্তেবা করার দৃষ্টিকোণ থেকে সাদৃশ্য রাখে। যেমন কেউ কোন লোকের তাক্বলীদ করে কুফরী করল। আবার অন্য কেউ তাক্বলীদ করে পাপ করল। আবার আরেকজন কোন মাসআলায় কারো তাক্বলীদ করতে গিয়ে ভুল করল। এভাবে তারা সবাই দলীলবিহীন তাক্বলীদের কারণে নিন্দিত হবে। কেননা সবগুলিই তাক্বলীদ, যার একটির সাথে অপরটির সাদৃশ্য রয়েছে, যদিও তাতে পাপের ভিন্নতা রয়েছে’।

ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলতেন, اُغْدُ عَالِمًا، أَوْ مُتَعَلِّمًا، وَلَا تَغْدُ إِمَّعَةً فِيمَا بَيْنَ ذَلِكَ ‘আলেম অথবা ছাত্র হও। এতদুভয়ের মাঝে (অর্থাৎ এছাড়া) মুক্বাল্লিদ হয়ো না’।[2]

অন্য সনদে তাঁর থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,كُنَّا نَدْعُو الْإِمَّعَةَ فِيْ الْجَاهِلِيَّةِ الَّذِيْ يُدْعَى إِلىَ الطَّعَامِ فَيَذْهَبُ مَعَهُ بِغَيْرِهِ وَهُوَ فِيْكُمُ الْيَوْم المحقب دينه الرِّجَال يعني المقلد- ‘আমরা জাহেলী যুগে ইম্মা‘আহ ঐ ব্যক্তিকে বলতাম যাকে খাদ্য খাওয়ার জন্য ডাকা হ’লে সে অন্যকেও সাথে নিয়ে যেত। বর্তমানে তোমাদের মধ্যে ইম্মা‘আ ঐ ব্যক্তি যে স্বীয় দ্বীনের উপর অন্য লোকদেরকে সওয়ারী বানায়’। অর্থাৎ মুক্বাল্লিদ’।[3]

ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,

وَيْلٌ لِلْأَتْبَاعِ مِنْ عَثَرَاتِ الْعَالِمِ، قِيلَ: كَيْفَ ذَلِكَ؟ قَالَ: يَقُولُ الْعَالِمُ شَيْئًا بِرَأْيِهِ ثُمَّ يَجِدُ مَنْ هُوَ أَعْلَمُ بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهُ فَيَتْرُكُ قَوْلَهُ ذَلِكَ ثُمَّ يَمْضِي الْأَتْبَاعُ-

‘সর্বনাশ তাদের জন্য যারা আলেমের ভুলের অনুসরণ করে। বলা হ’ল এটা কিভাবে? তিনি বললেন, আলেম নিজস্ব রায় দিয়ে কিছু বলে। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে তার চেয়ে বেশি জানে এমন কাউকে পেলে তার ঐ কথাকে পরিহার করে সে তার অনুসারী বনে যায়’।[4]

অতঃপর ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) বলেন, নবী (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত তিনি বলেন, ‘আলেমগণ চলে যাবে। তারপর লোকজন মূর্খদেরকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হ’লে তারা ইলম ছাড়াই ফৎওয়া দিবে। ফলে নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে’।[5] এগুলি দ্বারা বুদ্ধিমান ও হেদায়াতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিকট স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তাক্বলীদ বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। তাক্বলীদ বাতিলের ব্যাপারে বিশ্ববরেণ্য ইমামগণের মাঝেও কোন মতভেদ নেই। সুতরাং এটাই অধিকাংশের পক্ষ থেকে যথেষ্ট’।[6]

ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, لا يجوز الفتوى بالتقليد لأنه ليس بعلم والفتوى بغير علم حرام ولا خلاف بين الناس أن التقليد ليس بعلم وأن المقلد لا يطلق عليه اسم عالم. ‘তাক্বলীদ করে ফৎওয়া দেওয়া জায়েয নেই। কেননা তা কোন ইলম নয়। আর ইলমবিহীন ফৎওয়া প্রদান হারাম। লোকদের মাঝে এ বিষয়ে কোন মতভেদ নেই যে, তাক্বলীদ কোন ইলম নয় এবং মুক্বাল্লিদেদেরকে আলেম বলা হয় না’।[7]

অনুরূপভাবে সুয়ূত্বী (রহঃ) বলেন,

إن المقلد لا يسمى عالما كما نقله أبو الحسن السندي الحنفي في أول حاشيته على ابن ماجه وجزم به الشوكاني في "إرشاد الفحول" ص 236، فقال: إن التقليد جهل وليس بعلم-

‘মুক্বাল্লিদকে আলেম বলা হয় না। এমনটিই উল্লেখ করেছেন আবুল হাসান সিন্ধী হানাফী তাঁর ইবনু মাজাহর হাশিয়ার শুরুতেই। শাওকানী এ বিষয়ে জোরালোভাবে বলেছেন, ‘তাক্বলীদ অজ্ঞতা, তা কোন ইলম নয়’।[8]

বিষয়টি হানাফীদের পুস্তকগুলিতে যা পাওয়া যায় তার সাথে মিলে যায়। তা হ’ল কোন জাহেলকে বিচারকার্য পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করা জায়েয নয়। আল্লামা ইবনুল হুমাম ‘জাহেল’-এর ব্যাখ্যা করেছেন ‘মুক্বাল্লিদ’।

তাক্বলীদের ব্যাপারে ইমামগণের নিষেধাজ্ঞা :

মুজতাহিদ ইমামগণের অসংখ্য উক্তি এসেছে যাতে তাঁরা তাদের ও অন্যদের তাক্বলীদ করতে জোরালোভাবে নিষেধ করেছেন।

১. ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন,

لَا يَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ- وفي رواية : حَرَامٌ عَلَى مَنْ لَمْ يَعْرِفْ دَلِيْلِيْ أَنْ يُفْتِيَ بِكَلَامِيْ فَإِنَّنَا بَشَرٌ نَقُوْلُ الْقَوْلَ الْيَوْمَ وَنَرْجِعُ عَنْهُ غَداً-

‘কোন ব্যক্তির জন্য আমাদের কোন কথাকে গ্রহণ করা বৈধ হবে না যে পর্যন্ত সে কথা আমরা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি তা অবগত না হবে’। অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল সম্পর্কে জানে না, তার জন্য আমার কথা অনুযায়ী ফৎওয়া দেওয়া হারাম। কেননা আমরা মানুষ। আজ কোন কথা বলি, আগামীকাল তা থেকে ফিরে আসি’।[9]

২. ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ أُخْطِئ وَأُصِيْبُ فَانْظُرُوْا فِيْ رَأْيِيْ فَكُلُّ مَا وَافَقَ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ فَخُذُوْهُ وَكُلُّ مَا لَمْ يُوَافِقِ الْكِتَابَ وَالسُّنَّةَ فَاتْرُكُوْهُ- ‘আমি একজন মানুষ মাত্র। আমি ভুল করি, সঠিকও বলি। অতএব আমার সিদ্ধান্তগুলি তোমরা যাচাই কর। যেগুলি কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পাও, সেগুলি গ্রহণ কর, যেগুলি না পাও, সেগুলি পরিত্যাগ কর’।[10]

৩. ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন,أَجْمَعَ الْمُسْلِمُوْنَ عَلَى أَنَّ مَنِ اسْتَبَانَ لَهُ سُنَّة عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَحِلَّ لَهُ أَنْ يَدَعَهَا لِقَوْلِ أَحَدٍ- ‘মুসলিমগণ এ মর্মে ইজমা করেছেন যে, যে ব্যক্তির নিকট রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত স্পষ্ট হয়ে যাবে সে ব্যক্তির জন্য অন্য কোন ব্যক্তির কথার (মতের) কারণে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে ত্যাগ করা বৈধ নয়’।[11]  

তিনি আরো বলেন, كُلُّ مَسْأَلَةٍ صَحَّ فِيْهَا الْخَبَرُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ أَهْلِ النَّقْلِ بِخِلاَفِ مَا قُلْتُ فَأَنَا رَاجِعٌ عَنْهَا فِيْ حَيَاتِيْ وَبَعْدَ مَوْتِيْ- ‘যে কোন বিষয়ে আমি যা কিছু বলেছি তার বিপরীতে যদি মুহাদ্দিছীনের নিকট রাসূল (ছাঃ) থেকে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয় তাহ’লে আমি আমার জীবদ্দশায় এবং আমার মৃত্যুর পরে তা থেকে প্রত্যাবর্তন করছি’।[12]

তিনি আরো বলেন,كُلُّ مَا قُلْتُ فَكَانَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ خِلاَفَ قَوْلِيْ مِمَّا يَصِحُّ فَحَدِيْثُ النَّبِيِّ أَوْلَى فَلَا تُقَلِّدُوْنِيْ- ‘আমি যা কিছু বলেছি নবী (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে সেগুলির বিপরীতে যদি ছহীহ হাদীছ প্রমাণিত হয় তাহ’লে নবীর হাদীছই উত্তম। সুতরাং তোমরা আমার তাক্বলীদ করো না’।[13]

৪. ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, لَا تُقَلِّدْنِيْ وَلَا تُقَلِّدْ مَالِكًا وَلاَ الشَّافِعِيَّ وَلَا الْأَوْزَاعِيَّ وَلَا الثَّوْرِيَّ وَخُذْ مِنْ حَيْثُ أَخَذُوْا- ‘তুমি আমার তাক্বলীদ করো না। তাক্বলীদ করো না মালেক, শাফেঈ, আওযাঈ ও ছাওরীর। বরং তুমিও সেখান থেকেই বিধান গ্রহণ করো যেখান থেকে তারা গ্রহণ করেছেন’।[14]

তাদের সবার বহুল প্রসিদ্ধ কথা হ’ল,إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ- ‘যখন কোন হাদীছ ছহীহ পাবে জেনো সেটিই আমার মাযহাব’। তাদের আরোও অনেক উক্তি বর্ণিত আছে। তন্মধ্যে কিছু সুন্দর উক্তি আমি আমার ‘ছিফাতু ছালাতিন নাবী’ বইয়ের ভূমিকাতে উল্লেখ করেছি।[15] এখানে যতটুকু উল্লেখ করেছি তা যথেষ্ট হবে।

ইলম হ’ল স্রেফ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাণী :

আলেমগণের দৃষ্টিতে তাক্বলীদের অবস্থান যদি এই হয় তাহ’লে আহলে ইলমের মধ্যে যারা দলীল সহ হক জানতে সক্ষম তাদের জন্য কিতাব ও সুন্নাতে যা আছে তা ব্যতীত ফিক্বহ বিষয়ে কথা বলা জায়েয নয়। কেননা সত্যিকারের ইলম এ দু’য়ের মাঝেই রয়েছে; লোকদের রায়ের মধ্যে নেই। এজন্যই ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন,

فَالْوَاجِبُ عَلَى الْعَالِمِيْنَ أَنْ لَا يَقُوْلُوْا إِلَّا مِنْ حَيْثُ عَلِمُوْا وَقَدْ تَكَلَّمَ فِي الْعِلْمِ مَنْ لَوْ أَمْسَكَ عَنْ بَعْضِ مَا تَكَلَّمَ فِيْهِ مِنْهُ لَكَانَ الْإِمْسَاكُ أَوْلَى بِهِ وَأَقْرَبُ مِنَ السَّلاَمَةِ لَهُ إِنْ شَاءَ اللهُ-

‘আলেমগণের ওপর ওয়াজিব যে উৎস থেকে তারা জেনেছেন তা ব্যতীত কথা না বলা। ইলমের বিষয়ে অনেকেই এমন কিছু কথা বলেছেন যেগুলি না বলে তারা যদি চুপ থাকতেন তাহলে সেটাই উত্তম হ’ত এবং আল্লাহ চাহে তো ভুল হওয়া থেকে নিরাপদ থাকার ক্ষেত্রে তাদের জন্য ভাল হ’ত’।[16]

তিনি অন্যত্র বলেন,لَيْسَ لِأَحَدٍ أَبَدًا أَنْ يَّقُوْلَ فِيْ شَيْءٍ حِلٌّ وَلَا حَرَامٌ إِلَّا مِنْ جِهَةِ الْعِلْمِ وَجِهَةُ الْعِلْمِ الْخَبَرُ فِي الْكِتَابِ أَوِ السُّنَّةِ أَوِ الْإِجمْاَعِ أَوِ الْقِيَاسِ- ‘ইলম ব্যতীত হালাল ও হারামের কোন বিষয়ে কোন কথা বলা কারো জন্য কখনই জায়েয নয়। আর ইলমের উৎস হ’ল কিতাব অথবা সুন্নাতে বর্ণিত খবর অথবা ইজমা অথবা ক্বিয়াস’।[17]

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি অকাট্য অবগতি এবং ক্বিয়াস ব্যতীত কথা বলে সে ঐ ব্যক্তির চেয়ে পাপের বেশি কাছাকাছি যে ব্যক্তি না জেনেই কথা বলে। পূর্বে উল্লেখিত ইলমের উৎসগুলির আলোকে ইলম ছাড়া (শারঈ বিষয়ে) আল্লাহর রাসূলের পরে কথা বলার অনুমতি আল্লাহ তা‘আলা আর কাউকেই দেননি। আর কিতাব ও সুন্নাতের পরে ইলমের উৎস হ’ল ‘ইজমা, আছার এবং এগুলির আলোকে বর্ণিত ক্বিয়াস’।[18]

সাধারণ মুসলিম ছাড়াও বিশেষ শ্রেণীর মুসলমানদের উপর চেপে বসা সবচেয়ে বড় মুছীবতের বিষয় হল বর্তমানে এবং কয়েক শতাব্দীকাল থেকেই তাদের অধিকাংশই তাক্বলীদের নিন্দা বিষয়ে কিতাব, সুন্নাত, ছাহাবীগণের আছার ও ইমামগণের উক্তিতে যা বলা হয়েছে সে সম্পর্কে পুরোপুরি অজ্ঞতার মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে। তাক্বলীদ যে কোন ইলম নয় তা তারা ঘূর্ণাক্ষরেও জানে না। ইলম বলতে বুঝায় যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন। সেজন্য তাদের অন্তরে এটা জাগ্রতই হয় না যে, কিতাব ও সুন্নাতে প্রশংসনীয় ইলম বলতে এদু’য়ের মাঝে বিদ্যমান আক্বীদা ও আহকাম বিষয়ক ইলমকে বুঝানো হয়েছে। যে সকল আলেম প্রশংসিত হয়েছেন তারাও মূলতঃ এই দুই ইলমে পারদর্শী। ইমামগণের উক্তি ও তাদের ইজতিহাদী মতামতে পারদর্শী ব্যক্তিগণ নন। সেজন্য আপনি ওদেরকে (তাক্বলীদপন্থীদের) ইমামদের উক্তি ও ইজতিহাদের বিষয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় দেখতে পাবেন; কোনটি কিতাব ও সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যশীল আর কোনটি এ দু’য়ের বিরোধী তা ওরা জানে না। যখন তারা ক্বিয়ামতের আলামত সম্পর্কিত নিমেণাক্ত হাদীছটি পড়ে يُرْفَعُ فِيْهَا الْعِلْمُ وَيَظْهُرُ فِيْهَا الْجَهْلُ ‘সে সময় ইলম উঠে যাবে এবং মূর্খতা বৃদ্ধি পাবে’,[19] তখন তাদের মনে একটুও ধাক্কা দেয় না যে, মুক্বাল্লিদদের ইলমও এ হাদীছের হুকুমের আওতাভুক্ত, যা মূলত মূর্খতা। কেননা তার নিকট কোন ইলম থাকে না যেমন ইমামগণ বলেছেন। অনুরূপ তারা যখন নবীর নিমেণাক্ত হাদীছ পড়ে,إِنَّ اللهَ لاَ يَقْبِضُ العِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ، وَلَكِنْ يَقْبِضُ العِلْمَ بِقَبْضِ العُلَمَاءِ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ইলমকে মানুষের নিকট থেকে একেবারে ছিনিয়ে নিবেন না। তবে আলেমগণের মৃত্যুর মাধ্যমে ইলম উঠিয়ে নিবেন’,[20] তখন তারা মোটেও সতর্ক হয় না যে, এখানে ‘ওলামা’ বলতে কেবল কিতাব ও সুন্নাতের আলেম-ওলামাকে বুঝানো হয়েছে। বরং আমরা বহুবার তাদের অনেককেই এ হাদীছটিকে তাক্বলীদপন্থী কোন শায়খের মৃত্যুতে উল্লেখ করতে শুনেছি। হাদীছের বাকী অংশ হ’ল,

حَتَّى إِذَا لَمْ يَتْرُكْ عَالِمًا، اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا، فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ- ولفظ البخاري بِرَأْيِهِمْ "فضلوا وأضلوا"

‘এমনকি যখন একজন আলেমও অবশিষ্ট থাকবে না, তখন মানুষেরা অজ্ঞ লোকদেরকে তাদের নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। অতঃপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হ’লে তারা ইলম ছাড়াই ফৎওয়া দিবে’।[21] বুখারীর বর্ণনায় এসেছে ‘তারা তাদের নিজস্ব রায় দিয়ে ফৎওয়া দিবে’।[22] ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে এবং অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে’।

তারা মনে করে এখানে সাধারণ লোকজন উদ্দেশ্য, যারা তাক্বলীদী ফিক্বহের জ্ঞান রাখে না এবং মাযহাবগুলি সম্পর্কেও জানে না। বরং হাদীছে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যের আওতাভুক্ত হবে ঐ সমস্ত মুক্বাল্লিদ, যারা শুধু ইমামগণের ইজতিহাদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করাকেই যথেষ্ট মনে করে এবং এ বিষয়ে না জেনেই তাদের তাক্বলীদ করে। যেমন এমন অর্থের প্রতিই ইংগিত করা হয়েছে ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ)-এর বক্তব্যে। আমরা যা উল্লেখ করেছি এটাকে আরোও শক্তিশালী করে এই হাদীছ দ্বারা আলেমগণের দলীল গ্রহণ পদ্ধতি। তা হ’ল কোন যুগ মুজতাহিদ শূন্য হ’তে পারে, যা ফাৎহুল বারী (১৩/২৪৪)-এ বিস্তারিত উল্লেখিত হয়েছে। তারা সেখানে স্পষ্টভাবে ইংগিত করেছেন যে, ‘ওলামা’ দ্বারা এখানে ‘মুজতাহিদগণ’ আর ‘নেতারা’ বলতে ‘মূর্খ মুক্বাল্লিদদের’ বুঝানো হয়েছে।

তাদের এমন নিরেট অজ্ঞতার মূল কারণ হ’ল সত্যিকারের ইলম এবং আলেম কে সে সম্পর্কে অজ্ঞতা। যার ক্ষেত্রে নিমেণাক্ত আয়াত ও হাদীছ সমূহ প্রযোজ্য। মহান আল্লাহ বলেন, هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لا يَعْلَمُونَ ‘যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ (যুমার ৩৯/৯)

يَرْفَعِ اللهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَالَّذِيْنَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ

‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন’ (মুজাদালাহ ৫৮/১১)

রাসূল (ছাঃ) বলেন,فَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُم ‘আবেদের ওপর আলেমের মর্যাদা তেমন, আমার মর্যাদা তোমাদের সাধারণ লোকের ওপর যেমন’।[23]

তিনি আরো বলেন, إِذَا مَاتَ اِبْنُ آَدَمَ اِنْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلاَثٍ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَه  ‘যখন আদম সন্তান মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হ’য়ে যায়। কেবল তিনটি ব্যতীত। ছাদাক্বা জারিয়া বা চলমান ছাদাক্বা অথবা উপকারী বিদ্যা অথবা নেক সন্তান যে তার জন্য দো‘আ করে’।[24]

তিনি আরো বলেন, لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يُجِلَّ كَبِيرَنَا، وَيَرْحَمْ صَغِيرَنَا، وَيَعْرِفْ لِعَالِمِنَا حَقَّهُ ‘যে আমাদের বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের সেণহ করে না এবং আমাদের আলেমের হক সম্পর্কে জানে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।[25]

ইলম ও আলেম-ওলামার ফযীলত সম্পর্কিত আরোও অনেক আয়াত ও হাদীছ রয়েছে। ইবনু আব্দিল বার্র তাঁর ‘জামিঊ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাযলিহী’ নামক গ্রন্থে (২/২৩) এই বাস্তব সত্যটি তুলে ধরে একটি সুনির্দিষ্ট অধ্যায় রচনা করেছেন। তিনি নাম দিয়েছেন ‘ইলম-এর উছূল ও এর স্বরূপ জানা এবং ফিক্বহ ও ইলম বলতে যা বুঝানো হয়’ অধ্যায়। তাঁকে অনুসরণ করেছেন আল্লামা ফাল্লানী তাঁর ‘ইকাযুল হিমামি ঊলিল আবছার’ নামক গ্রন্থের ২৩-২৬ পৃষ্ঠায়। অতঃপর তাঁরা উভয়েই এ বিষয়ে বেশ কিছু হাদীছ ও আছার উল্লেখ করেছেন। ফাল্লানী (রহঃ) শেষে বলেছেন,

قلت فهذه الأحاديث والآثار مصرحة بأن اسم العلم إنما

 يطلق على ما في كتاب الله وسنة رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم والإجماع أو ما قيس على هذه الأصول عند فقد نص على ذلك عند من يرى لا على ما لهج به أهل التقليد والعصبية من حصرهم العلم على ما دون في كتب الرأي المذهبية مع مصادفة بعض ذلك لنصوص الأحاديث النبوية.

‘আমি বলেছি, এই সমস্ত হাদীছ ও আছার স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, ইলম বলতে বুঝায় যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হাদীছ, ইজমা এবং দলীলের অনুপস্থিতিতে এই দলীলগুলির ওপর যা ক্বিয়াস করা হয় তার মধ্যে রয়েছে। এটা তাদের নিকট যারা এগুলিকে সমর্থন করে। তাদের মতে নয় যারা তাক্বলীদপন্থী ও গোঁড়া, যারা ইলম বলতে কেবল যা কিছু মাযহাবী রায়ের কিতাবগুলিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে তাকেই বুঝায়; যদিও (সে কিতাবগুলিতে যা লিপিবদ্ধ আছে) তার কিছু অংশ নবীর হাদীছের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক হয়’।[26]

মোদ্দাকথা তাক্বলীদ নিন্দনীয় বিষয়। কেননা তাক্বলীদ অজ্ঞতা; কোন ইলম নয়। কেননা প্রকৃত ইলম বলতে কিতাব ও সুন্নাতের ইলম এবং এ দু’টি বিষয়ে ব্যুৎপত্তি অর্জন করাকে বুঝায়।                                                              

 [চলবে]


[1]. ইরশাদুল ফুহূল পৃঃ ২৩৪। আমি বলেছি, একটি বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত তা হ’ল সাধারণ লোকের মুফতীর শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়টিকে তাক্বলীদের হুকুম থেকে বের করাটা কেবল পারিভাষিক অর্থে। কিন্তু শাব্দিক অর্থে সেটিও তাক্বলীদ হওয়ার বিষয়টিকে অস্বীকার করে না। সুতরাং সাবধান!

[2]বায়হাকী, আল-মাদখাল ইলাস সুনানিল কুবরা হা/৩৭৮।

[3]তাবারানী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৮৭৬৬। ইবনুল আছীর (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি দ্বীনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের তাক্বলীদ করে তাকে উদ্দেশ্য করেছেন। অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোন প্রকার দলীল, প্রমাণ ও চিন্তা-গবেষণা ছাড়াই নিজের দ্বীনকে অন্য কারো অনুসারী বানায়। المحقب শব্দটি الارداف على الحقيبة থেকে নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সওয়ারীর তার পিছনে রাখা থলের উপর আরোহী হওয়া। 

[4]ইবনু আব্দিল বার্র, জামেউ বায়ানিল ইলম হা/১৮৭৭। 

[5]. বুখারী হা/৭৩০৭; মুসলিম আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আছ থেকে বর্ণনা করেছেন। এটি আমার কিতাব ‘আর-রওযুন নাযীর ৫৪৯ নং-এ তাখরীজকৃত।

[6]. ই‘লাম ২/২৯৪-২৯৮।

[7]. ঐ, ১/৫১।

[8]. ইরশাদুল ফুহূল, পৃঃ ২৩৬।

[9]ঈকাযু হিমাম ১/৫৩।

[10]ইবনু আব্দিল বার্র, জামিউ বায়ানিল ইলম হা/১৪৩৫।

[11]ঈকাযু হিমাম, পৃঃ ৫৮।

[12]হারবী, যাম্মুল কালাম হা/৩৮৯। 

[13]ঈকাযু হিমাম, পৃঃ ৫০। 

[14]ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন ২/১৩৯।  

[15]. ছিফাতুছ ছালাত, পৃঃ ২৩-৪৩।

[16]. আর-রিসালাহ, পৃঃ ৪১, নং ১৩১-১৩২।

[17]. ঐ, পৃঃ ৩৯, নং ১২০

[18]. ঐ, পৃঃ ৫০৮, নং ১৪৬৭-১৪৬৮।

[19]. বুখারী হা/৭০৬৪।

[20]. বুখারী হা/১০০; মুসলিম হা/২৬৭৩।

[21]. মুসলিম হা/২৬৭৩।

[22]. বুখারী হা/১০০।

[23]. তিরমিযী হা/২৬৮৫, সনদ ছহীহ।

[24]. মুসলিম হা/১৬৩১; তিরমিযী হা/১৩৭৬, ছহীহ। 

[25]. হাকেম হা/৪২১; তারগীব হা/১০১ সনদ হাসান। 

[26]ঈকাযু হিমাম পৃঃ ২৬।  





জুম‘আর পূর্বে সুন্নাতে রাতেবা : একটি পর্যালোচনা (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত (৫ম কিস্তি ফেব্রুয়ারী সংখ্যার পর) - মুযাফফর বিন মুহসিন
এক হাতে মুছাফাহা : একটি তাত্ত্বিক পর্যালোচনা - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপনের আবশ্যকতা (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
হজ্জ : ফযীলত ও উপকারিতা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
উত্তম মৃত্যুর কিছু নিদর্শন ও আমাদের করণীয় - ইহসান ইলাহী যহীর
মুসলিম সমাজে মসজিদের গুরুত্ব (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাক্বলীদ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত পরিচিতি (৫ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
বায়তুল মাক্বদিস মুসলমানদের নিকটে কেন এত গুরুত্ববহ? - ড. মুখতারুল ইসলাম
পলাশীর ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণাম - আত-তাহরীক ডেস্ক
আরও
আরও
.