১. মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন,أتدري من النَّبِيل؟ هو الذي إذا رأيته هِبْتَه، وإذا غاب عنك اغتبته، ‘তুমি কি জান, মহৎ ব্যক্তি কে? মহৎ তো সেই ব্যক্তি, সামনাসামনি দেখা হ’লে তুমি যাকে শ্রদ্ধা কর এবং তোমার অগোচরে থাকলে তুমি তার নিন্দা কর’।[1]
২. আবুদ্দারদা (রাঃ) বলেন,ويل لمن لم يعلم ولم يعمل مرَّةً، وويل لمن علم ولم يعمل سبعين مرَّةً، ‘যে জানেনি এবং আমল করেনি, তার জন্য একবার আফসোস। আর যে জেনেছে কিন্তু আমল করেনি, তার জন্য সত্তর বার আফসোস’।[2]
৩. ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ) বলেন, أَحَبُّ الْأُمُورِ إِلَى اللهِ تَعَالَى ثَلَاثَةٌ: الْعَفْوُ عِنْدَ الْمَقْدِرَة، وَالْقَصْدُ فِي الْجِدَةِ، وَالرِّفْقُ بِعِبَادِ اللهِ، ‘তিনটি বিষয় আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পসন্দনীয়- (১) প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ক্ষমা করে দেওয়া (২) পর্যাপ্ত সচ্ছলতার মাঝেও মধ্যপন্থা অবলম্বন করা এবং (৩) আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করা’।[3]
৪. ইয়াহ্ইয়া বিন খালেদ (রহঃ) বলেন,من حقوق المروءة وأمارة النُّبْل: أن تتواضع لمن دونك، وتنصف من هو مثلك، وتستوفي على من هو فوقك، ‘মানবিকতা ও মহানুভবতার নিদর্শন হ’ল- তোমার সামনে থাকা সকলের প্রতি তুমি বিনয় প্রদর্শন করবে, তোমার সমমর্যাদার ব্যক্তির প্রতি তুমি ইনছাফ করবে এবং তোমার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিকে পূর্ণরূপে তার মর্যাদা প্রদান করবে’।[4]
৫. শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,أَدْنَى خَصْلَة لِأهْلِ الْحَدِيْثِ مَحَبَّةُ الْقُرْآنِ وَالْحَدِيثِ وَالْبَحْثِ عَنْهُمَا وَعَنْ مَعَانِيْهِمَا وَالْعَمَلِ بِمَا عَلِمُوهُ مِنْهمَا ‘আহলুল হাদীছদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হ’ল, তারা কুরআন-হাদীছের প্রতি অগাধ ভালোবাসা রাখেন, এ দু’টি নিয়ে গবেষণা করেন ও এর তত্ত্বানুসন্ধান করেন। আর তারা কুরআন ও হাদীছ থেকে যা জানতে পারেন, তার উপরে আমল করেন’।[5]
৬. ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,دخل إبليس عَلَى هذه الأمة فِي عقائدها من طريقين أحدهما التقليد للآباء والأسلاف والثاني الخوض فيما لا يدرك غوره، ‘এই উম্মতের আক্বীদায় দু’ভাবে শয়তানের অনুপ্রবেশ ঘটেছে- (১) বাপ-দাদা ও পূর্ববর্তীদের তাক্বলীদ (অন্ধ অনুসরণ) করা এবং (২) অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের প্রতি অধিক মনোনিবেশ করা’।[6]
৭. হুযায়ফা (রাঃ)-কে একবার জিজ্ঞাসা করা হ’ল,أَيُّ الْفِتْنَةِ أَشَدُّ؟ ‘সবচেয়ে ভয়াবহ ফেৎনা কোনটি? জবাবে তিনি বললেন, أَنْ يُعْرَضَ عَلَيْكَ الْخَيْرُ وَالشَّرُّ لَا تَدْرِي أَيَّهُمَا تَتْبَعُ ‘যখন তোমার সামনে ভাল-মন্দ উভয়টিই প্রদর্শিত হবে, অথচ তুমি বুঝতে পারবে না যে কোনটির অনুসরণ করবে (এটাই সবচেয়ে গুরুতর ফেৎনা)’।[7]
৮. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, من رَفَقَ بعبادِ الله رَفَقَ الله به، ومن رحمَهمْ رحمَه، ومن أحسن إليهم أحسن إليه، ومن جاد عليهم جاد الله عليه، ومن نفعهم نفعه، ومن سترهم ستره، ومن منعهم خيره منعه خيره، ومن عامل خلقه بصفةٍ عامله الله بتلك الصِّفة بعينها في الدنيا والآخرة، فالله تعالى لعبده حسب ما يكون العبد لخلقه ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি কোমলতা প্রদর্শন করে, আল্লাহও তার প্রতি কোমল হন। যে তাদের প্রতি দয়া করে, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন। যে তাদের প্রতি অনুগ্রহ করে, তিনিও তার উপর অনুগ্রহ করেন। যে তাদেরকে দান করে, তিনিও তাকে দান করেন। যে তাদেরকে উপকার করে, তিনিও তাকে উপকৃত করেন। যে তাদের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, তিনিও তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখেন। যে তাদেরকে কল্যাণে পথে বাধা দান করে, তিনিও তাকে কল্যাণের পথে বাধাপ্রাপ্ত করেন। আর কোন ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিকূলের সাথে যেমন আচরণ করে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহও তার সাথে সেইরূপ আচরণ করেন। সুতরাং সৃষ্টিকূলের সাথে বান্দার ব্যবহারের মাত্রা অনুযায়ী তার প্রতি আল্লাহর ব্যবহারের ধরণ নির্ণিত হয়’।[8]
৯. ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,أف لمترخص في فعل ما يكره لنيل ما يحب! تالله، لقد فاته أضعاف ما حصل ‘সেই ব্যক্তির জন্য বড় আফসোস! যে নিজের পসন্দনীয় কিছু অর্জন করার জন্য আল্লাহর অপসন্দনীয় কাজে লিপ্ত হয়। আল্লাহর কসম! সে যা কিছু অর্জন করেছে, তার চেয়ে বহুগুণ বেশী কল্যাণ থেকে সে নিজেকে বঞ্চিত করেছে’।[9]
১০. ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন,عَلَيْكُمْ بِأَصْحَابِ الْحَدِيثِ فَإِنَّهُمْ أَكْثَرُ النَّاسِ صَوَابًا، ‘অবশ্যই তোমরা আহলুল হাদীছদের অনুসরণ করবে। কেননা মানুষের মধ্যে তারাই সর্বাধিক সঠিক’।[10]
[1]. আল-জাহিয, আর-রাসাইলুল আদাবিইয়াহ, পৃ. ১৩৩।
[2]. ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের, পৃ. ৫৭।
[3]. সামারকান্দী, তাম্বীহুল গাফেলীন, পৃ. ৩৮৭।
[4]. আল-আসকারী, আল-মাছূন ফিল আদাব, পৃ. ১১৭।
[5]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া, ৪/৫৯ পৃ.।
[6]. ইবনুল জাওযী, তালবীসু ইবলীস, পৃ. ৭৪।
[7]. মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ৭/৫০৩, হা/৩৭৫৬৯।
[8]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ওয়াবিলুছ ছাইয়িব, পৃঃ ৩৫।
[9]. ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের, পৃঃ ২০৯।
[10]. ইবনুল মুফলিহ, আল-আদাবুশ শার‘ঈয়্যাহ, ১/২১১ পৃ.।