. ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন,اجْلِسُوْا إِلَى التَّوَّابِيْنَ؛ فَإِنَّهُمْ أَرَقُّ شَيْءٍ أَفْئِدَةً، ‘তোমরা তওবাকারীদের নিকট উঠা-বসা কর। কেননা তারাই সবচেয়ে কোমল হৃদয়ের অধিকারী’।[1]

. আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,لاَ تُجَالِسْ أَهْلَ الْأَهْوَاءِ، فَإِنَّ مُجَالَسَتَهُمْ مُمْرِضَةٌ لِلْقُلُوْبِ، ‘তোমরা প্রবৃত্তিপূঁজারীদের সাথে উঠা-বসা করো না। কেননা তাদের সাথে উঠা-বসা করলে হৃদয়জগৎ রোগাক্রান্ত হয়’।[2]

. আলী ইবনে আবী ত্বালেব (রাঃ) তাক্বওয়ার পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন,التَّقْوَى هِيَ الْخَوْفُ مِنَ الْجَلِيْلِ وَالْعَمَلُ بِالتَّنْزِيْلِ وَالْقَنَاعَةُ بِالْقَلِيْلِ وَالاِسْتِعْدَادُ لِيَوْمِ الرَّحِيْلِ. ‘মহান আল্লাহকে ভয় করে চলা, কুরআন অনুযায়ী আমল করা, অল্পে তুষ্ট থাকা এবং মৃত্যুর দিনের জন্য সদা প্রস্ত্তত থাকার সমন্বিত নাম হ’ল তাক্বওয়া’।[3]

. আবূদ্দারদা (রাঃ) বলেন,إِنَّ الْعَبْدَ يَخْلُوْ بِمَعَاصِي اللهِ فَيُلْقِي اللهُ بُغْضَهُ فِي قُلُوبِ الْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ حَيْثُ لَا يَشْعُرُ، ‘মানুষ যখন নির্জনে আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতা অব্যাহত রাখে, তখন আল্লাহ তা‘আলা এমনভাবে মুমিনদের অন্তর সমূহে তাঁর প্রতি অপসন্দনীয়তা সৃষ্টি করেন যে, সে বুঝতেই পারে না’।[4]

. ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন,وَدَعِ الَّذِيْنَ إِذَا أَتَوْكَ تَنَسَّكُوْا .. وَإِذَا خَلَوْا فَهُمْ ذِئَابُ خِرَافِ، ‘তুমি এমন লোকদের সাহচর্য পরিত্যাগ কর, যারা তোমার সামনে এলে ধার্মিক সাজার ভান করে, আর তোমার অগোচরে মেষশাবকের উপর আক্রমণকারী বাঘের মত হয়ে যায়’।[5]

. ইবনুল  ক্বাইয়িম  (রহঃ)  বলেন,جُمَّاعُ أَمْرَاضِ القَلْبِ هِيَ أَمْرَاضُ الشُّبْهَاتِ وَالشَّهْوَاتِ، وَالقُرْآنُ شِفَاءٌ لِلنَّوْعَيْنِ، ‘অন্তরের রোগ সমূহের মধ্যে অন্যতম বড় রোগ হ’ল সন্দেহপ্রবণতা ও প্রবৃত্তিপূঁজা। আর এই দুই রোগের চিকিৎসা হ’ল আল-কুরআন’।[6]  

. মায়মূন বিন মেহরান (রহঃ) বলেন,إِنَّ أَعْمَالَكُمْ قَلِيْلَةٌ، فَأَخْلِصُوْا هَذَا الْقَلِيْلَ، ‘তোমাদের আমলের পরিমাণ এমনিতেই খুব কম। কাজেই এই কম আমলটুকুই বিশুদ্ধভাবে করার চেষ্টা কর’।[7]

. সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন,

لاَ يَسْتَقِيْمُ قَوْلٌ إِلاَّ بِعَمَلٍ، وَلاَ يَسْتَقِيْمُ قَوْلٌ وَعَمَلٌ إِلاَّ بِنِيَّةٍ، وَلَا يَسْتَقِيمُ قَوْلٌ وَعَمَلٌ وَنِيَّةٌ إِلاَّ بِمُوَافَقَةِ السُّنَّةِ-

‘আমলবিহীন কোন কথা গ্রহণযোগ্য হয় না। নিয়ত ব্যতীত কোন কথা ও আমল সঠিক হয় না। আর কোন কথা, আমল ও নিয়ত বিশুদ্ধ হয় না, যতক্ষণ না তা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী হয়’।[8]

. ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِيُحْيِى بِهِ الْإِسْلاَمَ فَهُوَ مِنَ الصِّدِّيْقِيْنَ وَدَرَجَتُهُ بَعْدَ دَرَجَةِ النُّبُوَّةَ، ‘যে ব্যক্তি ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করে, সে ব্যক্তি ছিদ্দীকূন বা সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। নবুঅতের পরেই তার মর্যাদার স্তর নির্ধারিত’।[9]

১০. আবূ হাযেম (রহঃ) বলেন,اكْتُمْ حَسَنَاتِكَ أَشَدَّ مِمَّا تَكْتُمُ سَيِّئَاتِكَ ‘তুমি যত সতর্কতার সাথে তোমার মন্দ কাজগুলো গোপন রাখার চেষ্টা কর, তার চেয়েও অধিক সচেতনতার সাথে তোমার নেক আমলগুলোকে গোপন রাখ’।[10]

১১. সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার নষ্ট করার ভয়াবহতা বর্ণনা করে বলেন,إِنَّكَ أَنْ تَلْقَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ بِسَبْعِيْنَ ذَنْباً فِيْمَا بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ أَهْوَنُ عَلَيْكَ مِنْ أَنْ تَلْقَاهُ بِذَنْبٍ وَاحِدٍ فِيْمَا بَيْنَكَ وَبَيْنَ الْعِبَادِ. ‘বান্দার সাথে সম্পর্কিত একটি পাপ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করার চেয়ে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত সত্তরটি পাপ নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করা তোমার জন্য অধিকতর সহজ’।[11]

১২. ইমাম আওযা‘ঈ (রহঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُحْرِمَ عَبْدَهُ بَرَكَةَ الْعِلْمِ، أَلْقَى عَلَى لِسَانِهِ الْمَغَالِيْطَ، فَلَقَدْ رَأَيْتُهُمْ أَقَلَّ النَّاسِ عِلْمًا، ‘যখন আল্লাহ তাঁর কোন বান্দাকে ইলমের বরকত থেকে বঞ্চিত করতে চান, তখন তিনি তার যবানে ভুলের প্রবণতা বাড়িয়ে দেন। আর আমি দেখেছি, এই ধরনের বঞ্চিতদের জ্ঞান হয় সবচেয়ে কম’।[12]


[1]. ইবনুল মুবারক, আয-যুহদ ওয়ার রাক্বায়েক্ব, পৃঃ ৪২।

[2]. ইবনু বাত্তাহ, আল-ইবানাতুল কুবরা, ২/৪৩৮।

[3]. শানক্বীত্বী, লাওয়ামি‘উদ দুরার, পৃঃ ১১০; কাওছারুল মা‘আনী আদ-দারারী, পৃঃ ৪০১; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, পৃঃ ৪২১।

[4]. ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের, পৃঃ ১৮৬।

[5]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া, ৯/১৫৪; তালবীসু ইবলীস ১/২৫৯।

[6]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ইগাছাতুল লাহফান, ১/৭০।

[7]. হিলয়াতুল আওলিয়া, ৪/৯২।

[8]. ইবনুল জাওযী, তালবীসু ইবলীস, পৃঃ ১১।

[9]. ইবনুল ক্বাইয়িম, মিফতাহু দারিস সা‘আদাহ ১/১১।

[10]. হিলয়াতুল আওলিয়া, ৩/২৪০।

[11]. কুরতুবী, আত-তাযকিরাহ, পৃঃ ৭২৬

[12]. ইবনু রজব, জামে‘উল ‘উলূম ওয়াল হিকাম ১/২৬১।





আরও
আরও
.