১. হাসান বছরী (রহঃ) বলেন, الدُّنْيَا ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ: أَمَا أَمْسِ فَقَدْ ذَهَبَ بِمَا فِيهِ، وَأَمَّا غَدًا فَلَعَلَّكَ لَا تُدْرِكُهُ، وَالْيَوْمُ فَاعْمَلْ فِيهِ দুনিয়াবী জীবন তিনদিনের। (১) গতকাল- যা ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে, (২) আগামীকাল-সম্ভবতঃ তুমি তার নাগাল পাবে না এবং (৩) আজ। অতএব তোমার যা করার তা আজই কর (ইবনু আবিদ্দুনিয়া, আয-যুহুদ, ১৯৭ পৃঃ)

২. মা‘কিল বিন ওবায়দুল্লাহ জাযারী (রহঃ) বলেন, كَانَتِ الْعُلَمَاءُ إِذَا الْتَقَوْا تَوَاصَوْا بِهَذِهِ الْكَلِمَاتِ، وَإِذَا غَابُوا كَتَبَ بِهَا بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ أَنَّهُ: مَنْ أَصْلَحَ سَرِيرَتَهُ أَصْلَحَ اللَّهُ عَلَانِيَتَهُ، وَمَنْ أَصْلَحَ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللَّهِ كَفَاهُ اللَّهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّاسِ، وَمَنِ اهْتَمَّ بِأَمْرِ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللَّهُ أَمْرَ دُنْيَاهُ আমাদের সময়ে ওলামায়ে কেরাম কখনো একত্রিত হলে পরস্পরকে কিছু বাক্য দ্বারা উপদেশ প্রদান করতেন। আবার অনুপস্থিতি কালীন কখনো লিখেও পাঠাতেন। তা হ’ল-যে ব্যক্তি অর্ন্তজগতকে পরিশুদ্ধ করে, আল্লাহ তার বাহ্যিক অবস্থা পরিশুদ্ধ করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার মধ্যকার সম্পর্ক সঠিক রাখে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান তার সাথে মানুষের মধ্যকার বিষয়াদির ব্যাপারে। যে পরকালীন বিষয়ে অধিক গুরুত্বারোপ করে, আল্লাহ তার দুনিয়াবী বিষয়াদির জন্য যথেষ্ট হয়ে যান (ইবনু আবিদ্দুনিয়া, আল-ইখলাছ ওয়ান নিয়্যাহ, ৫৪ পৃঃ)

৩. হাসান বাছরী (রহঃ) জনৈক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বলেন, تعشَّ العشاء مع أمك تقرُّ به عينُها، أحب إلي من حجة تحجها تطوعاً তুমি তোমার মায়ের সাথে খাদ্য ভক্ষণ কর, যাতে তার চক্ষু শীতল হয়। আর এ বিষয়টি আমার কাছে নফল হজ্জের চেয়েও অধিক প্রিয় (ইবনুল ক্বাইয়িম, বিররুল ওয়ালেদাইন, ৪ পৃঃ)

৪. হাতেম (রহঃ) বলেন, تَعَاهَدْ نَفْسَكَ فِي ثَلاَثٍ: إِذَا عَلِمتَ، فَاذكُرْ نَظَرَ اللهِ إِلَيْكَ، وَإِذَا تَكَلَّمتَ، فَاذكُرْ سَمْعَ اللهِ مِنْكَ، وَإِذَا سَكَتَّ، فَاذكُرْ عِلْمَ اللهِ فِيْكَ স্বীয় আত্মাকে তিনটি বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ করে নাও। যখন কোন কাজ করবে, সবসময় স্মরণ রাখবে যে, আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। যখন কোন কথা বলবে, স্মরণ রাখবে যে, আল্লাহ তা শুনছেন। আর যখন চুপ থাকবে, তখন স্মরণ রাখবে যে, আল্লাহ তোমার সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১১/৪৮৫ পৃঃ)। 

৫. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, إِذا أَرَادَ الله بِعَبْد خيرا جعله معترفا بِذَنبِهِ ممسكا عَن ذَنْب غَيره جوادا بِمَا عِنْده زاهدا فِيمَا عِنْده مُحْتملا لأَذى غَيره وَإِن أَرَادَ بِهِ شرا عكس ذَلِك عَلَيْهِ  আল্লাহ যখন কোন বান্দার জন্য কল্যাণ চান, তখন তাকে স্বীয় পাপ স্বীকারের যোগ্যতা এবং অন্যের পাপ অন্বেষণ করা থেকে বিরত থাকার তাওফীক দান করেন। আর সে স্বীয় সম্পদ নিয়েই প্রাচুর্য বোধ করে ও অন্যের সম্পদ থেকে বিমুখ থাকে এবং অন্যের দুঃখ-কষ্টের ভার বহন করে। আর যখন কারো অকল্যাণ চান, তখন বিপরীতটাই ঘটে (আল-ফাওয়ায়েদ, ৯৯ পৃঃ)। 

৬. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, دَخلَ النَّاس النَّارَ من ثَلَاثَة أَبْوَاب : بَاب شُبْهَةٍ أورثتْ شكا فِي دين الله وَبَاب شَهْوَة أورثت تَقْدِيم الْهوى على طَاعَته ومرضاته وَبَاب غضب أورث الْعدوان على خلقه মানুষ তিনটি দরজা দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (১) সন্দেহ, যা তাকে আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করে (২) প্রবৃত্তি, যা তাকে আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উপর আপন স্বেচ্ছাচারিতাকে উস্কে দেয় (৩) ক্রোধ, যা তার মাঝে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি শত্রুতা সৃষ্টি করে (আল-ফাওয়ায়েদ, ৫৮ পৃঃ)

৭. জনৈক কবি বলেন,

الْعَاقِلُ إِذَا اخْطَأَ يَتَأَسَّف  + والأَحْمَقُ إِذَا اخْطَأَ يَتَفَلْسَف
জ্ঞানী সে-ই যে ভুল করলে আফসোস করে। আর নির্বোধ সে-ই যে ভুল করলে তার পক্ষে যুক্তি তালাশ করে।

৮. সুফিয়ান বিন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, مَنْ سُرَّ بِالدُّنْيَا، نُزِعَ خَوْفُ الآخِرَةِ مِنْ قَلْبِهِ যে ব্যক্তি দুনিয়া নিয়ে মত্ত থাকে, তার হৃদয় থেকে আখেরাতের ভীতি দুরীভূত করে দেয়া হয়। (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ৭/২৬৮ পৃঃ)

৯. হাতেম আল-আছাম (রহঃ) বলেন, আমি আমার ভাই বলখীকে বলতে শুনেছি, اصْحَبِ النَّاسَ كَمَا تَصْحَبُ النَّارَ خُذْ مَنْفَعَتَهَا وَاحْذَرْ أَنْ تُحْرَقَكَ তুমি মানুষের সংস্পর্শে ঠিক সেভাবে থাক যেভাবে তুমি আগুনের সংস্পর্শে থাক। অর্থাৎ তার কাছ থেকে উপকার গ্রহণ কর কিন্তু তার দগ্ধাগ্নি থেকে আত্মরক্ষা কর (হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৮/৭৭ পৃঃ)

১০. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,

الْحَقُّ مَنْصُوْرٌ ومُمْتَحَنٌ فَلاََ + تَعْجَب فَهَذِي سُنَّةُ الرَّحْمَنِ

‘হক সবসময় বিজয়ী এবং পরীক্ষিত। অতএব তুমি (বাতিলের আস্ফালনে) বিস্মিত হয়ো না। কেননা এটাই দয়াময় আল্লাহর চিরন্তন রীতি’ (ইবনুল ক্বাইয়িম, মাতনুল ক্বাছীদাহ নূনীয়াহ পৃঃ ১৭)

সংকলন : আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব

এম.ফিল গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।






আরও
আরও
.