১. আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,لَا تُجَالِسْ أَهْلَ الْأَهْوَاءِ، فَإِنَّ مُجَالَسَتَهُمْ مُمْرِضَةٌ لِلْقُلُوْبِ ‘তুমি প্রবৃত্তির অনুসারীদের সাথে ওঠাবসা করো না। কেননা তাদের সঙ্গ অন্তরকে ব্যাধিগ্রস্থ করে তোলে’।[1]
২. ইয়াযীদ বিন আবু হাবীব (রহঃ) বলেন,مِنْ فِتْنَةِ الْعَالِمِ أَنْ يَكُوْنَ الْكَلَامُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنَ الِْاسْتِمَاعِ، وَإِنْ وَجَدَ مَنْ يَكْفِيهِ، فَإِنَّ فِي الِْاسْتِمَاعِ سَلَامَةً، وَزِيَادَةً فِي الْعِلْمِ وَالْمُسْتَمِعُ شَرِيكُ الْمُتَكَلِّمِ فِي الْكَلاَمِ ‘শিক্ষিত ব্যক্তির জন্য অন্যতম ফিৎনা হ’ল, অন্যের কথা শোনার চেয়ে নিজের কথা বলা তার কাছে অধিক পসন্দনীয় মনে হয়। যদি তিনি কোন যোগ্য ব্যক্তির সন্ধান পান তাহ’লে মনোযোগ দিয়ে তার কথা শ্রবণ করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে নিরাপত্তা ও জ্ঞান বৃদ্ধির সম্ভাবনা। কেননা শ্রোতা চুপ থাকার মাধ্যমে বক্তার আলোচনায় অংশগ্রহণ করে থাকেন’।[2]
৩. হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) বলেন, يَأْتِي عَلَيْكُمْ زَمَانٌ لَا يَنْجُو فِيهِ إِلَّا مَنْ دَعَا دُعَاءَ الْغَرَقِ ‘তোমাদের সামনে এমন একটি যুগ আসবে, যখন পানিতে ডুবন্ত ব্যক্তির মত প্রার্থনা করা ছাড়া কেউ ফিৎনা থেকে নিষ্কৃতি পাবে না’।[3]
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দো‘আ করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَدْمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ التَّرَدِّى وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْغَرَقِ وَالْحَرَقِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ يَتَخَبَّطَنِى الشَّيْطَانُ عِنْدَ الْمَوْتِ وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أَمُوتَ فِى سَبِيلِكَ مُدْبِرًا وَأَعُوذُ بِكَ أَنْ أَمُوتَ لَدِيغًا
‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট (কোন কিছু) চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ থেকে পানাহ চাই। তোমার কাছে আশ্রয় চাই গর্তে পড়ে মৃত্যুবরণ করা থেকে। আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই পানিতে ডুবে ও অগ্নিদদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা থেকে এবং অতি বার্ধক্য থেকে। আমি পানাহ চাই তোমার কাছে মৃত্যুর সময় আমার উপর শয়তানের প্রভাব থেকে, আমি পানাহ চাই তোমার রাস্তায় জিহাদ থেকে পলায়নপর মৃত্যুবরণ করা থেকে এবং আমি আরো পানাহ চাই তোমার কাছে বিষাক্ত প্রাণীর দংশনে মৃত্যুবরণ করা থেকে’।[4]
৪. সুফিয়ান ইবনে উয়ায়না (রহঃ) বলেন,لاَ يُصِيْبُ عَبْدٌ حَقِيْقَةَ الْإِيْمَانِ؛ حَتَّى يَجْعَلَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْحَرَامِ حَاجِزًا مِنَ الْحَلاَلِ، وَحَتَّى يَدَعَ الْإِثْمَ وَمَا تَشَابَهَ مِنْهُ ‘কোন বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে না, যতক্ষণ না সে হালাল এবং হারামের মাঝে হালালকে প্রতিবন্ধক হিসাবে দাঁড় করাবে এবং পাপ ও পাপ জাতীয় সব কিছু পরিত্যাগ করবে’।[5]
৫. প্রখ্যাত তাবেঈ সালামা ইবনু দীনার আবূ হাযেম (রহঃ) বলেন,شَيْئَانِ إِذَا عَمِلْتَ بِهِمَا أَصَبْتَ بِهِمَا خَيْرَ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ .. تَعْمَلُ مَا تَكْرَهُ إِذَا أَحَبَّهُ اللهُ وَتَتْرُكُ مَا تُحِبُّ إِذَا كَرِهَهُ اللهُ ‘দু’টি কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে তুমি দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অর্জন করতে পারবে। (১) আল্লাহ যা ভালবাসেন, তোমার নিকট সেটা অপসন্দনীয় হ’লেও তুমি তা সম্পাদন করবে এবং (২) আল্লাহ যা অপসন্দ করেন, সেটা তোমার নিকটে পসন্দনীয় হ’লেও তা বর্জন করবে’।[6]
৬. যায়েদ বিন আসলাম (রহঃ) বলেন,مَنْ يُكْرِمِ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ بِطَاعَتِهِ يُكْرِمْهُ اللهُ بِجَنَّتِهِ، وَمَنْ يُكْرِمِ اللهَ تَعَالَى بِتَرْكِ مَعْصِيَتِهِ أَكْرَمَهُ اللهُ تَعَالَى بِأَنْ لَا يُدْخِلَهُ النَّارَ، وَقَالَ: اسْتَعِنْ بِاللهِ يُغْنِكَ اللهُ عَمَّا سِوَاهُ، وَلَا يَكُونَنَّ أَحَدٌ أَغْنَى بِاللهِ مِنْكَ، وَلَا يَكُونَنَّ أَحَدٌ أَفْقَرَ إِلَى اللهِ مِنْكَ ‘আল্লাহ যাকে তাঁর ইবাদত করার তাওফীক দিয়ে সম্মানিত করবেন, তিনি জান্নাতে দাখিলের মাধ্যমেও তাকে সম্মানিত করবেন। আর যাকে তিনি পাপ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে মর্যাদামন্ডিত করবেন, তাকে জাহান্নামে প্রবেশ না করিয়ে সম্মানিত করবেন’। তিনি আরো বলেন, ‘তুমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও, তাহ’লে তিনি তোমাকে সকল কিছু থেকে অমুখাপেক্ষী করে দিবেন। তবে আল্লাহর নিকটে তোমার চেয়ে অধিক মুখাপেক্ষী ও অভাবী যেন কেউ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে’।[7]
৭. শায়েখ ছালেহ আলে শায়েখ বলেন,أَعْظَمُ مَا تُجَاهِدُ بِهِ أَعْدَاءَ اللهِ جَلَّ وَعَلاَ وَالشَّيْطَانَ نَشْرُ الْعِلْمِ، فَانْشُرْهُ فِي كُلِّ مَكَانٍ بِحَسْبِ مَا تَسْتَطِيْعُ، وَاتَّقِ اللهَ جَلَّ وَعَلاَ فِي ذَلِكَ ‘আল্লাহর শত্রুদের ও শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হ’ল জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। সুতরাং তুমি তোমার সাধ্য অনুযায়ী সর্বত্র জ্ঞানের প্রসার ঘটাও। আর এ ব্যাপারে তাক্বওয়া অবলম্বন কর’।[8]
[1]. ইবনু বাত্তাহ, আল-ইবানাতুল কুবরা ২/ ৪৩৮।
[2]. ইবনু আবিদ্দুনয়া, কিতাবুছ ছামতি ওয়া আদাবিল লিসান, পৃঃ ৮৮।
[3]. মুস্তাদরাকে হাকেম, ৪/৪৭১ হা/৮৩০৮; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৭১৪৫।
[4]. আবূদাঊদ হা/১৫৫২, হাদীছ ছহীহ।
[5]. ইবনু রজব হাম্বলী, ফাৎহুল বারী ১/২০৫।
[6]. ফাসাবী, আল-মা‘রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৬৭৮।
[7]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৩/২২১।
[8]. আল ওছায়া আল-জালিইয়াহ, পৃ. ৪৬।