১. আবুদ্দারদা (রাঃ) বলেন,إِنَّ مَنْ أَكْثَرَ ذِكْرَ الْمَوْتِ قَلَّ حَسَدُهُ وَبَغْيُهُ، ‘যে ব্যক্তি মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণ করে, তার হিংসা ও পাপ কমে যায়’।[1]
২. আবুবকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলেন, لا يحقرن أحد أحداً من المسلمين فإن صغير المسلمين عند الله كبير، ‘তোমাদের কেউ যেন অপর কোন মুসলিমকে তুচ্ছ মনে না করে। কেননা (মানুষের দৃষ্টিতে) তুচ্ছ বিবেচিত মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর কাছে অনেক বড় মর্যাদাবান হ’তে পারে’।[2]
৩. ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, لا يَجْتَمِعُ الإخلاصُ في القلبِ وَمَحَبَّةُ الْمدحِ والثَّنَاءِ والطَّمَعِ فِيمَا عِنْدَ الناسِ إِلا كَمَا يَجْتَمِع الْمَاءُ والنارُ والضبُّ والحوتُ، فإذا حَدَثَتْكَ نَفْسُكَ بطلَبِ الإخلاصِ فَأقْبِلْ عَلى الطَّمَعِ أَولاً فَاذْبَحْهُ بِسِكينِ اليأسِ، واقبلْ على الْمدَحِ والثناءِ فازْهَدْ فِيهِمَا زُهْدَ عُشَّاقِ الدُّنْيَا فِي الآخرةِ، فإذا استقامَ لك ذَبحُ الطَّمعِ والزهدُ في الثناءِ والمدحِ سَهُلَ عَلَيْكَ الإخْلاصُ- ‘ইখলাছ এবং মানুষের প্রশংসা লাভ ও কিছু পাওয়ার লোভ কখনো কারো হৃদয়ে একসাথে থাকতে পারে না, যেমনভাবে আগুন ও পানি, গুইসাপ ও মাছ এক জায়গায় থাকতে পারে না। যদি তোমার নফস ইখলাছ অর্জন করতে চায়, তবে লোভহীনতার ছুরি দিয়ে লোভ-লালসাকে যবেহ করে ফেল। অতঃপর মানুষের কাছে প্রশংসিত হওয়ার বাসনার প্রতি মনোনিবেশ কর। তারপর দুনিয়াদাররা যেভাবে পরকাল থেকে বিমুখ হয়, তুমিও প্রশংসা ও স্ত্ততি পাওয়ার লোভ থেকে বিমুখ হয়ে যাও। যখন তুমি লোভ-লালসাকে যবেহ করে প্রশংসা পাওয়ার বাসনা থেকে বিমুখ হ’তে পারবে, তখন তোমার জন্য ইখলাছ অর্জন করা সহজ হয়ে যাবে’।[3]
৪. ইমাম আবূদাঊদ (রহঃ) বলেন,كَانَتْ مَجَالِسُ أَحْمَدَ مَجَالِسَ الْآخِرَةِ، لَا يُذكَرُ فِيْهَا شَيْءٌ مِنْ أَمرِ الدُّنْيَا، مَا رَأَيْتُهُ ذَكَرَ الدُّنْيَا قَطُّ، ‘আহমাদ বিন হাম্বলের মজলিস সমূহ ছিল আখেরাতের মজলিস। তার মজলিসে দুনিয়াবী কোন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হ’ত না। আমি তাঁকে কখনো পার্থিব বিষয়ে আলোচনা করতে দেখিনি’।[4]
৫. ইমাম আওযা‘ঈ (রহঃ) বলেন,عَلَيْكَ بِآثَارِ مَنْ سَلَفَ، وَإِنْ رَفَضَكَ النَّاسُ، وَإِيَّاكَ وَآرَاءَ الرِّجَالِ، وَإِنْ زَخْرَفُوا لَك الْقَوْلَ، ‘তোমার জন্য অবশ্য কর্তব্য হ’ল সালাফদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা, যদিও মানুষ তোমাকে প্রত্যাখ্যান করে। আর মানুষের নিজস্ব মতামত তোমার কাছে যতই চটকদার মনে হোক না কেন, সেটা গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকবে’।[5]
৬. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,العملُ بغير إخلاص ولا اقتداءٍ كالمسافر يَملأُ جرابَهُ رملًا يُثْقِلُهُ ولا ينفعُهُ، ‘ইখলাছ ও নবীর আনুগত্য বিহীন আমল হচ্ছে সেই মুসাফিরের মতো যে তার থলে বালু দিয়ে ভর্তি করে। আর সেই বালু তার থলে ভারী করলেও তার কোন উপকার করতে পারে না’।[6]
৭. বিশর ইবনুল হারেছ (রহঃ) বলেন,لا تجد حلاوت العبادت حتى تجعل بين الشهوات وبينك ضابطا من حديد، ‘তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত ইবাদতের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তুমি তোমার ও তোমার কামনা-বাসনার মাঝে লোহার শক্ত প্রাচীর তথা প্রতিবন্ধক দাঁড় করাবে’।[7]
৮. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) বলেন,مَنْ تَهَاوَنَ بِالْأَدَبِ عُوقِبَ بِحِرْمَانِ السُّنَنِ وَمَنْ تَهَاوَنَ بِالسُّنَنِ عُوقِبَ بِحِرْمَانِ الْفَرَائِضِ وَمَنْ تَهَاوَنَ بِالْفَرَائِضِ عُوقِبَ بِحِرْمَانِ الْمَعْرِفَةِ، ‘যে ব্যক্তি আদব-আখলাককে তুচ্ছ জ্ঞান করে, তাকে সুন্নাত থেকে বঞ্চিত করে শাস্তি দেওয়া হয়। যে সুন্নাতকে উপেক্ষা করে চলে, তাকে ফরয ইবাদত পালন থেকে বঞ্চিত করে শাস্তি দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ফরয সম্পাদনে অমনোযোগী হয়, তাকে আল্লাহর পরিচয় লাভের তাওফীক্ব থেকে বঞ্চিত করে শাস্তি দেওয়া হয়’।[8]
৯. আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) তার সঙ্গীদের বলেন, أنتم أكثرُ صلاةً وصوماً وجهاداً من أصحاب محمد، وهم كانوا خيراً منكم، قالوا: كيف ذلك؟ قال: كانوا أزهدَ منكم في الدنيا وأرغبَ منكم في الآخرة، ‘তোমরা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ছাহাবীদের চেয়ে অধিক ছালাত, ছিয়াম ও জিহাদ করা সত্ত্বেও তারা তোমাদের চেয়ে উত্তম ছিলেন। তারা বলল, সেটা কিভাবে? তিনি বললেন, ‘(এর কারণ হ’ল) তারা তোমাদের চেয়ে দুনিয়ার প্রতি অধিক নিরাসক্ত এবং আখেরাতের প্রতি অধিক আগ্রহী ছিলেন’।[9]
[1]. আহমাদ বিন হাম্বল, কিতাবুয যুহ্দ, পৃ. ১১৭।
[2]. গাযালী, ইহ্য়াউ উলূমিদ্দীন, ৩/৩৩৮।
[3]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ, পৃ. ১৪৯।
[4]. যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১১/১৯৯।
[5]. ইবনুল মুফলিহ, আল-আদাবুশ শার‘ঈয়াহ, ১/১০২।
[6]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ ১/৬৬।
[7]. ইবনু আসাকির, তারীখু দিমাশ্ক, ১০/১৯৫।
[8]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ৪/৫৫৯।
[9]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ৭/৩৭৫।