১. ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন, إِذَا أَرَدْتَ أَنْ تُؤْذِيَ عَدُوَّكَ فَاصْلِحْ نَفْسَكَ ‘তুমি যদি তোমার শত্রুকে কষ্ট দিতে চাও, তবে নিজেকে সংশোধন করে নাও’।
২. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) ছাবেত বিন কুর্রাকে উদ্ধৃত করে বলেন,رَاحَةُ الْجِسْمِ فِي قِلَّةِ الطَّعَامِ وَرَاحَةُ الرُّوحِ فِي قِلَّةِ الْآثَامِ وَرَاحَةُ اللِّسَانِ فِي قِلَّةِ الْكَلَامِ- وَالذُّنُوبُ لِلْقَلْبِ بِمَنْزِلَةِ السَّمُومِ إنْ لَمْ تُهْلِكْهُ أَضْعَفَتْهُ وَلَا بُدَّ وَإِذَا ضَعُفَتْ قُوَّتُهُ لَمْ يَقْدِرْ عَلَى مُقَاوَمَةِ الْأَمْرَاضِ- ‘শারীরিক প্রশান্তি নিহিত রয়েছে অল্প খাদ্য গ্রহণের মধ্যে, আত্মার শান্তি নিহিত রয়েছে অল্প পাপের মধ্যে এবং জিহবার শান্তি নিহিত রয়েছে বাকস্বল্পতার মাঝে। আর পাপ হ’ল মানবাত্মার জন্য বিষের সমতুল্য। যদি তা আত্মাকে ধ্বংস না করে, তবে তাকে অপরিহার্যভাবে দুর্বল করে ফেলে। আর যখনই আত্মার শক্তি দুর্বল হয়ে যায়, তখন সে আর হৃদয়ের রোগসমূহ মোকাবেলায় সক্ষম হয় না’ (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৪/১৮৬)।
৩. জনৈক কবি বলেন,
تَزَوَّدْ مِنَ التَّقْوَى فَإِنَّكَ لاَ تَدْرِي + إِذَا جَنَّ لَيْلٌ هَلْ تَعِيشُ إِلىَ الفَجْرِ
وَكَم مِن صِغَارٍ يُرْتَجَى طُوْلُ عُمْرَهُمْ + وَقَدْ أُدْخِلَتْ أَجْسَامُهُمْ ظُلْمَةَ الْقَبْرِ
وَكَمْ مِنْ صَحِيْحٍ مَاتَ مِنْ غَيْرِ عِلَّةٍ + وَكَمْ مِنْ عَلِيْلٍ عَاشَ حِيْناً مِنَ الدَّهْرِ
‘আল্লাহভীতির পাথেয় অর্জন কর। কেননা তুমি জান না যে রাত্রি যখন অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে, ফজর পর্যন্ত তুমি বাঁচবে কি-না?
কত স্বল্পবয়সী মানুষের দেহ কবরের অন্ধকারে প্রবেশ করানো হয়েছে, অথচ তাদের জন্য দীর্ঘ জীবনের আশা ছিল।
কত সুস্থ মানুষ কোন কারণ ছাড়াই মৃত্যুবরণ করছে, অথচ কত অসুস্থ ব্যক্তি যুগ যুগ ধরে জীবিত রয়েছে।
৪. ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, حَقَّا عَلىَ مَنْ طَلَبَ الْعِلْمِ أَنْ يَكُوْنَ فِيْهِ وَقَارٌ وَسَكِيْنَةٌ وَخَشِيِّةٌ وَأَنْ يَكُوْنَ مُتَّبِعًا لِآثَارِ مَنْ مَضَى، وَيَنْبَغِي لِأَهْلِ العِلْمِ أَنْ يَخْلُوا أَنْفُسَهُمْ مِنَ الْمَزَاحِ وَبِخَاصَّةٍ إِذَا ذَكَرُوا الْعِلْمَ ‘ইলম অন্বেষণকারীর জন্য যরূরী হ’ল, আত্মমর্যাদা, স্থিরতা ও আল্লাহভীতি বজায় রাখা এবং পূর্বসূরীদের পদাংক অনুসরণ করা। আর আলেম সমাজের জন্য যরূরী হ’ল নিজেদেরকে হাসি-ঠাট্টা থেকে বিরত রাখা। বিশেষতঃ ইলমী আলোচনার সময়’। তিনি বলতেন,مِنْ آدَابِ الْعَالِمِ أَلاَّ يَضْحَكَ إِلاَّ تَبَسُّمًا ‘আলেমের আদব হ’ল মুচকি হাসি ব্যতীত না হাসা’ (মুহাম্মাদ আবু যুহরা, মালেক হায়াতুহু ওয়া আছরুহু পৃ. ৪০)।
৫. হাসান বছরী বলেন, مِنْ عَلَامَةِ إِعْرَاضِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَجْعَلَ شُغْلَهُ فِيْمَا لَا يَعْنِيهِ ‘কোন বান্দার নিকট থেকে আল্লাহর মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আলামত হ’ল, অপ্রয়োজনীয় কর্মকান্ডে তার ব্যস্ত হয়ে পড়া’ (ইবনু আব্দিল বার্র, আত-তামহীদ ৮/২০০)।
৬. মুজাহিদ বলেন,مَنْ أَعَزَّ نَفْسَهُ أَذَلَّ دِيْنَهُ، وَمَنْ أَذَلَّ نَفْسَهُ أَعَزَّ دِيْنَهُ ‘যে নিজেকে মর্যাদাবান মনে করে, সে তার দ্বীনকে লাঞ্ছিত করে। আর যে নিজেকে অবনত করে, সে তার দ্বীনকে সম্মানিত করে’ (হিলইয়াতুল আওলিয়া ৩/২৭৯)।
৭. ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন,الْعَمَل بِغَيْر إِخْلاَصٍ وَلَا اقْتِدَاءٍ كَالْمُسَافِر يمْلَأُ جَرَابَهُ رَمْلاً يَثْقُلُهُ وَلَا يَنْفَعهُ ‘ইখলাছহীন আমল ও (সুন্নাহর) অনুসরণবিহীন সৎকর্ম করা ঐ মুসাফিরের ন্যায় যে তার বালুভর্তি বস্তার বোঝা বহন করছে, অথচ সেটা তার কোন উপকারে আসে না’ (আল-ফাওয়ায়েদ পৃ. ৪৯)।
৮. ইমাম যাহাবী (রহঃ) ইবনু আব্দিল বার্র সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন,إِذَا أَخْطَأَ إِمَامٌ فِي اجْتِهَادِهِ لاَ يَنْبَغِي لَنَا أَنْ ننسَى مَحَاسِنهُ وَنُغطِي معَارِفه بَلْ نستغفرُ لَهُ وَنَعْتَذِرُ عَنْهُ ‘ইমাম যদি কোন ইজতিহাদের ক্ষেত্রে ভুল করেন, তবে আমাদের জন্য তার কল্যাণময় দিকগুলি ভুলে যাওয়া এবং তার জ্ঞানবত্তাকে ঢেকে দেওয়া উচিৎ হবে না। বরং আমরা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব এবং তার পক্ষ থেকে ওযর পেশ করব’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৮/১৫৭)।
৯. ইবনুল জাওযী বলেন,كَمْ أَفْسَدَتِ الْغَيْبَةُ مِنْ أََعْمَالِ الصَّالِحِيْنَ وَكَمْ أَحْبَطَتْ مِنْ أُجُورِ العَامِلِيْنَ وَكَمْ جَلَبَتْ مِنْ سَخَطِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ- فَالْغِيْبَةُ فَاكِهَةُ الأَرْزَلِيْنَ وَسِلَاحُ الْعَاجِزِينَ- ‘গীবত কত সৎব্যক্তির আমল বিনষ্ট করল, কত আমলদার ব্যক্তির নেকী নিষ্ফল করে দিল, কতবার জগৎসমূহের প্রতিপালকের ক্রোধ বয়ে আনল। অথচ গীবত নিম্নশ্রেণীর মানুষদের জন্য সুমিষ্ট ফল এবং ব্যর্থ-অপারগদের জন্য অস্ত্র’ (ইবনুল জাওযী, আত-তাযকিরাহ ফিল ওয়া‘আয ১২৪ পৃ.)।
১০. ফুযায়েল বিন ‘আয়ায বলেন,الْمُؤْمِنُ يَسْتُرُ وَيَنْصَحُ، وَالْفَاجِرُ يَهْتِكُ وَيُعَيِّرُ ‘মুমিন (কারো দোষ দেখলে তা) গোপন করে এবং তাকে (গোপনে) নছীহত করে। আর পাপী ব্যক্তি (দোষ গোপন না করে তাকে) অপমান ও (জনসম্মুখে) লজ্জিত করে’ (ইবনু রজব হাম্বলী, জামে‘উল ‘উলূম ওয়াল হিকাম ১/২২৫)।