১. ইমাম আওযাঈ (রহঃ) বলেন,إِنَّ المُؤْمِنَ يَقُوْلُ قَلِيْلاً وَيَعمَلُ كَثِيْراً، وَإِنَّ المُنَافِقَ يَتَكَلَّمُ كَثِيْراً وَيَعْمَلُ قَلِيْلاً ‘মুমিন কথা কম বলে, আমল বেশী করে। আর মুনাফিক কথা বেশী বলে, আমল কম করে’ (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৬/৫৫৩)। তিনি আরও বলেন,مَا وَعَظَ رَجُلٌ قَوْمًا لَا يُرِيدُ بِهِ وَجْهَ اللهِ إِلَّا زِلَّتْ عَنْهُ الْقُلُوبُ كَمَا زَلَّ الْمَاءُ عَنِ الصَّفَا ‘কোন ব্যক্তি যখন স্বীয় কওমকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়াই সদুপদেশ দেয়, তখন তার থেকে মানুষের অন্তর সরে যায়, যেমনভাবে মসৃণ পাথরের ওপর থেকে পানি পড়ে যায়’ (হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/১৪১)।
২. ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, لَا يَحْصُلُ الْإِخْلَاصُ إلَّا بَعْدَ الزُّهْدِ وَلَا زُهْدَ إلَّا بِتَقْوَى وَالتَّقْوَى مُتَابَعَةُ الْأَمْرِ وَالنَّهْيِ ‘দুনিয়াবিমুখতা ব্যতীত ইখলাছ অর্জিত হয় না। আর আল্লাহভীরুতা ব্যতীত দুনিয়াবিমুখতা হাছিল হয় না। আর আল্লাহভীরুতা হ’ল শরী‘আতের আদেশ-নিষেধসমূহের অনুসরণ’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১/৯৪)।
৩. ইমাম শা‘বী (রহঃ) বলেন, عَلَيْكَ بِالصِّدْقِ حَيْثُ تَرَى أَنَّهُ يَضُرُّكَ، فَإِنَّهُ يَنْفَعُكَ. وَاجْتَنِبِ الْكِذْبِ فيِ مَوْضَعٍ تَرَى أَنَّهُ يَنْفَعُكَ، فَإِنَّهُ يَضُرُّكَ- ‘তুমি সত্যবাদী হও, কেননা সত্য তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে মনে করলেও মূলতঃ তা তোমার উপকারই করবে। আর তুমি মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা মিথ্যা তোমাকে উপকৃত করবে মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে তা তোমার ক্ষতিই করবে’ (জাহেয, আল-বায়ান ওয়াত তাবয়ীন, ২/১৩৯)।
৪. ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,القُلُوبُ الصَّادِقَةُ وَالأَدْعِيَةُ الصَّالِحَةُ هِيَ الْعَسْكَرُ الَّذِي لَا يُغْلَبُ ‘সত্যবাদী আত্মা এবং মানুষের উত্তম দো‘আ এমন সেনাবাহিনী, যা কখনোই পরাজিত হয় না’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৮/৬৪৪)।
৫. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,
الْجِهَاد نَوْعَيْنِ جِهَاد بِالْيَدِ والسنان وَهَذَا المشارك فِيهِ كثير وَالثَّانِي الْجِهَاد بِالْحجَّةِ وَالْبَيَان وَهَذَا جِهَاد الْخَاصَّة من اتِّبَاع الرُّسُل وَهُوَ جِهَاد الائمة وَهُوَ افضل الجهادين لعظم منفعَته وَشدَّة مُؤْنَته وَكَثْرَة اعدائه-
‘জিহাদ দুই প্রকার। (১) হাত ও অস্ত্রের দ্বারা জিহাদ, যেখানে বহু সাথী পাওয়া যায়। (২) দলীল ও বক্তব্যের মাধ্যমে জিহাদ, এটা নবী-রাসূলদের অনুগামীদের জিহাদ এবং প্রথমটি রাষ্ট্রনেতাদের জিহাদ। উভয় প্রকার জিহাদের মধ্যে দ্বিতীয়টিই অধিকতর উত্তম, এর উপকারিতার আধিক্য, দুর্লভতা এবং শত্রুর সংখ্যাধিক্যের কারণে’ (মিফতাহু দারিস সা‘আদাহ ১/৭০)।
৬. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,الحَقُّ مَنْصُوْرٌ وَمُمتَحَنٌ فَلاَ تَعْجَبْ فَهَذَي سُنّةُ الرحمنِ ‘হক সর্বদাই বিজয়ী ও পরীক্ষার সম্মুখীন। সুতরাং আল্লাহর এই দু’টি চিরন্তন রীতির ব্যাপারে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই’ (আল-কাছীদাতুন নূনীইয়াহ ২/১৪)।
৭. ফুযায়েল বিন আয়ায (রহঃ) বলেন,لَوْ أَنَّ لِي دَعْوَةً مُسْتَجَابَةً، مَا جَعَلْتُهَا إِلاَّ فِي إِمَامٍ، فَصَلاَحُ الإِمَامِ صَلاَحُ البِلاَدِ وَالعِبَادِ ‘আমার যদি কবুলযোগ্য কোন দো‘আ থাকত, তবে তা আমি কেবল রাষ্ট্রপ্রধানের জন্যই নির্ধারণ করতাম। কেননা রাষ্ট্রপ্রধানের কল্যাণের মাঝে দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিহিত থাকে’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৭/১০৪)।
৮. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) বলেন,مَنِ اسْتَخَفَّ بِالعُلَمَاءِ، ذَهَبتْ آخِرَتُهُ، وَمَنِ اسْتَخَفَّ بِالأُمَرَاءِ، ذَهَبتْ دُنْيَاهُ، وَمَنِ اسْتَخَفَّ بِالإِخْوَانِ، ذَهَبتْ مُرُوءتُهُ ‘যে ব্যক্তি আলেমদের মানহানি করে, তার আখেরাত চলে যায়। যে নেতাদের মানহানি করে, তার দুনিয়া চলে যায়। আর যে তার ভাইদের মানহানি করে, তার আত্মসম্মানবোধ চলে যায়’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৫/৪২৫)।
৯. ইমাম যাহাবী (রহঃ) বলেন,إِذَا أَخْطَأَ إِمَامٌ فِي اجْتِهَادِهِ لاَ يَنْبَغِي لَنَا أَنْ ننسَى مَحَاسِنهُ وَنُغطِي معَارِفه بَلْ نستغفرُ لَهُ وَنَعْتَذِرُ عَنْهُ ‘ইজতিহাদের ক্ষেত্রে কোন ইমাম যখন ভুল করেন, তখন তার উত্তম কর্মগুলি ভুলে যাওয়া এবং তাঁর জ্ঞানবত্তাকে ঢেকে রাখা উচিৎ নয়। বরং আমরা তাঁর জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করব এবং তার পক্ষ থেকে ওযর পেশ করব’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১৩/৩৫৯)।
১০. হাসান বাছরী (রহঃ) বলেন, مِنْ عَلَامَةِ إِعْرَاضِ اللهِ تَعَالَى عَنِ الْعَبْدِ أَنْ يَجْعَلَ شُغْلَهُ فِيمَا لَا يَعْنِيهِ ‘বান্দা থেকে আল্লাহর মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার নিদর্শন হ’ল, অনর্থক কাজে তার ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়া’ (জামেঊল ঊলূম ওয়াল হিকাম ১/২৯৪)।
১১. হাসান বাছরী (রহঃ) বলেন,كُلُّ يَوْمٍ لَا يُعْصَى اللهُ فِيهِ فَهُوَ عِيدٌ، فَالْيَوْمُ الَّذِي يَقْطَعُهُ الْمُؤْمِنُ فِي طَاعَةِ مَوْلَاهُ وَذِكْرِهِ وَشُكْرِهِ فَهُوَ لَهُ عِيدٌ ‘প্রত্যেক ঐ দিন মুমিনের জন্য ঈদের দিন, যেদিন সে আল্লাহর অবাধ্য হয় না (অর্থাৎ কোন পাপ করে না)। ঐ দিনটি মুমিনের জন্য ঈদের দিন, যেদিনটি সে প্রভুর আনুগত্যে, তাঁর স্মরণে এবং তাঁর প্রতি শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে অতিবাহিত করে’ (ইবনু রজব, লাতায়েফুল মা‘আরেফ ২৭৮ পৃ.)।