১. ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, ما أبالي أصبحت على ما أحب أو على ما أكره لأني لا أدري الخير فيما أحب أو فيما أكره؟ ‘আমি সকাল বেলা (ঘুম থেকে) উঠে নিজেকে আমার পসন্দনীয় অবস্থায় দেখতে পাই নাকি অপসন্দনীয় অবস্থায় দেখতে পাই, তা নিয়ে আমি কোন চিন্তা করি না। কেননা আমি তো জানি না কিসে কল্যাণ আছে, আমার পসন্দনীয় বিষয়ের মাঝে, নাকি অপসন্দনীয় বিষয়ের মাঝে?’[1]

২. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,أَرْبَعَةٌ تَجْلِبُ الرِّزْقَ: قِيَامُ اللَّيْلِ، وَكَثْرَةُ الِْاسْتِغْفَارِ بِالْأَسْحَارِ، وَتَعَاهُدُ الصَّدَقَةِ، وَالذِّكْرُ أَوَّلَ النَّهَارِ وَآخِرَه. وَأَرْبَعَةٌ تَمْنَعُ الرِّزْقَ: نَوْمُ الصُّبْحَةِ، وَقِلَّةُ الصَّلَاةِ، وَالْكَسَلُ، وَالْخِيَانَةُ، ‘চারটি বিষয় রিযিক্বে প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসে- তাহাজ্জুদের ছালাত, শেষ রাতে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা, নিয়মিত দান-ছাদাক্বাহ করা এবং সকাল-সন্ধ্যা যিকির করা। আর চারটি বিষয় রিযিক্বকে বাধাপ্রাপ্ত করে- সকালের ঘুম, নফল ছালাতের স্বল্পতা, অলসতা এবং খিয়ানত’।[2]

৩. ইবনু রজব (রহঃ) বলেন, لا تكن ممن يرجو الآخرة بغير عمل ويؤخر التوبة لطول الأمل، ‘তুমি ঐ ব্যক্তির মত হয়ো না, যে আমল না করে পরকালে মুক্তির আশা করে এবং দীর্ঘ আশা-আকাঙক্ষার কারণে তওবা করতে বিলম্ব করে’।[3]

৪. মাসরূক্ব (রহঃ) বলেন,بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الْعِلْمِ أَنْ يَخْشَى اللهَ، وَبِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الْجَهْلِ أَنْ يُعْجَبَ بِعِلْمِهِ، ‘কোন ব্যক্তির জন্য অতটুকু জ্ঞানই যথেষ্ট, যে অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী সে আল্লাহকে ভয় করবে। আর কোন লোকের মূর্খ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার অর্জিত জ্ঞান নিয়ে গর্ববোধ করবে’।[4]

৫. ইমাম ইবনু আবিদ্দুনয়া (রহঃ) বলেন,اعْلَمْ أَنَّ الْعِلْمَ أَشْرَفُ مَا رَغَّبَ فِيهِ الرَّاغِبُ، وَأَفْضَلُ مَا طَلَبَ وَجَدَّ فِيهِ الطَّالِبُ، وَأَنْفَعُ مَا كَسَبَهُ وَاقْتَنَاهُ الْكَاسِبُ؛ لِأَنَّ شَرَفَهُ يُثْمِرُ عَلَى صَاحِبِهِ، وَفَضْلَهُ يُنْمِي عَلَى طَالِبِهِ، ‘জেনে রাখ! আগ্রহী ব্যক্তি যা কিছু কামনা করে, তন্মধ্যে ইলমই অধিকতর মর্যাদাবান। অনুসন্ধানী ব্যক্তি যা কিছু তালাশ করে এবং তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে, জ্ঞানই তার মাঝে শ্রেষ্ঠতম। উপার্জনকারী যা কিছু কামাই করে ও সঞ্চয় করে, তার মাঝে জ্ঞানই সর্বাধিক উপকারী উপার্জন। কেননা জ্ঞানের মর্যাদা তার বাহককে সফলকাম করে এবং জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব তার অনুসন্ধানকারীর মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়’।[5]

৬. ইবনু রজব (রহঃ) বলেন,أن العبد إذا اشتد عليه الكرب فإنَّه يحتاج حينئذٍ إِلَى مجاهدة الشيطان؛ لأنّه يأتيه فيقنطه ويسخطه، فيحتاج العبد إِلَى مجاهدته ودفعه، فيكون ثواب مجاهدة عدوه ودفعه: دفع البلاء عنه ورفعه، ‘যখন বান্দার উপর বিপদ ঘনীভূত হয়, তখন তাকে শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। কেননা শয়তান এসে তাকে (কুমন্ত্রণা দিয়ে) নিরাশ ও রাগান্বিত করে তোলে। তাই বান্দাকে সংগ্রাম করে শয়তানকে প্রতিহত করতে হয়। অবশেষে শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও তাকে দমন করার পুরস্কার স্বরূপ বান্দার উপর থেকে সেই বিপদ উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়’।[6]

৭. ইবনুল মুনকাদির (রহঃ) বলেন,الصَّائِمُ إِذَا اغْتَابَ خُرِقَ، وَإِذَا اسْتَغْفَرَ رُقِّعَ، ‘ছায়েম যখন গীবত করে, তখন তার ছিয়াম ছিন্ন হয়ে যায়। আর যখন ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন (তার ছিন্নভিন্ন ছিয়ামকে) জোড়া দেওয়া হয়’।[7]

৮. ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, اَلسُّنَّةُ سَفِينَةُ نُوحٍ مَنْ رَكِبَهَا نَجَا وَمَنْ تَخَلَّفَ عَنْهَا غَرِقَ، ‘সুন্নাত হ’ল নূহ (আঃ)-এর কিশতির মতো, যে ব্যক্তি এতে আরোহণ করবে সে নাজাত পাবে। আর যে ব্যক্তি তাতে আরোহণ করা থেকে পিছিয়ে পড়বে, সে ডুবে যাবে’।[8]

৯. আবুল লায়েছ সামারকান্দী (রহঃ) বলেন,مَثَلُ مَنْ يَعْمَلُ الطَّاعَاتِ لِلرِّيَاءِ وَالسُّمْعَةِ كَمَثَلِ رَجُلٍ خَرَجَ إِلَى السُّوقِ وَمَلَأَ كِيسَهُ حَصَاةً، فَيَقُولُ النَّاسُ مَا أَمْلَأَ كِيسَ هَذَا الرَّجُلِ وَلَا مَنْفَعَةَ لَهُ سِوَى مَقَالَةِ النَّاسِ، وَلَوْ أَرَادَ أَنْ يَشْتَرِيَ لَهُ شَيْئًا لَا يُعْطَى بِهِ شَيْءٌ، كَذَلِكَ الَّذِي عَمِلَ لِلرِّيَاءِ وَالسُّمْعَةِ لَا مَنْفَعَةَ لَهُ مِنْ عَمَلِهِ سِوَى مَقَالَةِ النَّاسِ وَلَا ثَوَابَ لَهُ فِي الْآخِرَةِ، ‘যে ব্যক্তি লোক দেখানো বা প্রশংসা পাওয়ার জন্য ইবাদত-বন্দেগী করে, তার দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত, যে পাথরকণায় ভরা থলি নিয়ে বাজারে গেল। লোকজন তাকে দেখে বলল এই লোকের থলিটা কত পরিপূর্ণ! অথচ মানুষের প্রশংসা ছাড়া এই থলিটা তার কোন উপকার বয়ে আনে না। যদি সে এটা দিয়ে কিছু কিনতে চায়, বিনিময়ে তাকে কিছুই দেওয়া হবে না। অনুরূপ লোক দেখানো ও খ্যাতির আকাঙ্খী ব্যক্তির আমল কোনই কাজে আসে না। সাময়িক মানুষের প্রশংসা পায় মাত্র। কিন্তু আখেরাতে তার জন্য কোন নেকী বরাদ্দ থাকে না’।[9]


[1]. ইবনু রজব, নূরুল ইক্বতিবাস, পৃ. ১৫৩; আল-মাওয়ারিদুয যামআন ১/৫৭।

[2]. ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৪/৩৭৮।

[3]. ইবনু রজব, লাত্বায়েফুল মা‘আরেফ, পৃ. ৩৪৪।

[4]. খত্বীব বাগদাদী, আল-ফাক্বীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ ২/৫৭।

[5]. ইবনু আবিদ্দুনয়া, আদাবুদ্দুনয়া ওয়াদ্দীন, পৃ. ৩৬।

[6]. ইবনু রজব, নূরুল ইক্বতিবাস, পৃ. ১৫১।

[7]. জামে‘উল উলূম ওয়াল হিকাম ২/৮০৩।

[8]. ইবনু তায়মিয়াহ, আল-উবূদিয়াহ, পৃ. ৭১; যাম্মুল কালাম ৫/৮১।

[9]. আবুল লায়েছ সামারকান্দী, তাম্বীহুল গাফেলীন, পৃ.২৫।






আরও
আরও
.