১. ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহঃ) বলেন, إِنَّ اللهَ قَسَمَ الأَعْمَالَ كَمَا قَسَمَ الأَرْزَاقَ، فَرُبَّ رَجُلٍ فُتِحَ لَهُ فِي الصَّلاَةِ، وَلَمْ يُفتَحْ لَهُ فِي الصَّوْمِ، وَآخَرَ فُتِحَ لَهُ فِي الصَّدَقَةِ وَلَمْ يُفتَحْ لَهُ فِي الصَّوْمِ، وَآخَرَ فُتِحَ لَهُ فِي الجِهَادِ. فَنَشْرُ العِلْمِ مِنْ أَفْضَلِ أَعْمَالِ البِرِّ، وَقَدْ رَضِيْتُ بِمَا فُتِحَ لِي فِيْهِ- ‘আল্লাহ রিযিক বণ্টনের মতো আমলও বণ্টন করে দিয়েছেন। কতক ব্যক্তির জন্য ছালাত সহজ করা হয়েছে, কিন্তু ছিয়াম সহজ করা হয়নি। আবার আরেক জনের জন্য দান-ছাদক্বাহর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাকে ছিয়ামের জন্য সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। আবার কাউকে জিহাদ করার তাওফীক্ব দেওয়া হয়েছে। তবে নেক আমলসমূহের মধ্যে ইলমের প্রচার-প্রসারই সর্বোত্তম। আর আল্লাহ আমার জন্য যে ইবাদত সহজ করে দিয়েছেন, আমি তাতেই সন্তুষ্ট’।[1]
২. ফুযাইল ইবনে ইয়ায (রহঃ) বলেন,رَهْبَةُ العَبْدِ مِنَ اللهِ عَلَى قَدْرِ عِلْمِهِ بِاللهِ، وَزَهَادَتُهُ فِي الدُّنْيَا عَلَى قَدْرِ رَغْبَتِهِ فِي الآخِرَةِ، مَنْ عَمِلَ بِمَا عَلِمَ، اسْتَغنَى عَمَّا لاَ يَعْلَمُ، وَمَنْ عَمِلَ بِمَا عَلِمَ، وَفَّقَهُ اللهُ لِمَا لاَ يَعْلَمُ، وَمَنْ سَاءَ خُلُقَهُ شَانَ دِيْنَهُ، وَحَسَبَهُ، وَمُرُوْءتَهُ- ‘বান্দা আল্লাহকে যতটুকু জানে, ততটুকুই তাকে ভয় করে। সে আখেরাতের প্রতি যতটুকু আগ্রহী থাকে, দুনিয়ার প্রতি সে ততটাই অনাগ্রহী হ’তে পারে। যে ব্যক্তি জেনে-বুঝে আমল করে, অজানা বিষয় থেকে সে অভাবমুক্ত হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি স্বীয় ইলম অনুযায়ী আমল করে, আল্লাহ তাকে অজানা বিষয় সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের তাওফীক্ব দান করেন। আর যার চরিত্র খারাপ হয়ে যায়, সে তার দ্বীন, সম্মান ও মানবিকতাকে কলুষিত করে ফেলে’।[2]
৩. আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,إنَّ كُلَّ مَنْ أَفْتَى النَّاسَ فِي كُلِّ مَا يَسْأَلُوْنَهُ عَنْهُ لَمَجْنُونٌ- ‘যে ব্যক্তি মানুষের সকল প্রশ্নের উত্তর দেয় বা ফৎওয়া দেয়, সে আস্ত একটা পাগল’।[3]
৪. ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহঃ) বলেন,من أجاب في مسألة فينبغي من قبل أن يجيب فيها أن يعرض نفسه على الجنة أو النار وكيف يكون خلاصه في الآخرة- ‘যে ব্যক্তি কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়, সে যেন উত্তর দেওয়ার পূর্বে নিজেকে জান্নাত বা জাহান্নামের সামনে পেশ করে এবং ভেবে দেখে যে, এই ফৎওয়া তাকে কীভাবে আখেরাতে মুক্তি দিতে পারবে?’।[4]
৫. শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন,يجب على المسلم أن يخاف الله في جميع أعماله وعباداته ومعاملاته، والخوف من الله يكون في كل وقت وفي كل مكان وزمان، فإذا خاف المسلم الله خوفًا حقيقيًّا لم يقدم على أي معصية، بل يجتهد في عبادته لله، راغبًا في جنته، مبتعدًا من أعمال أهل النار- ‘মুসলিমের অবশ্য করণীয় হ’ল তার যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগী ও পারস্পরিক লেনদেনে আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকা। সবসময় এবং সকল ক্ষেত্রে আল্লাহভীতি অর্জন করা যরূরী। কেননা কোন মুসলিম ব্যক্তি যখন যথার্থভাবে আল্লাহকে ভয় করে, তখন সে কোন পাপের দিকে পা বাড়ায় না। বরং জান্নাতের জন্য প্রচন্ড আগ্রহী হয়ে সে কেবল আল্লাহর জন্য যাবতীয় ইবাদত করার চেষ্টা করে এবং জাহান্নামের অধিবাসী হওয়ার কর্মকান্ড থেকে সর্বতোভাবে বিরত থাকে’।[5]
৬. ইবনু কুদামা মাক্বদেসী (রহঃ) বলেন, أن أكثر الناس إنما هلكوا لخوف مذمة الناس، وحب مدحهم، فصارت حركاتهم كلها على ما يوافق رضى الناس، رجاء المدح، وخوفاً من الذم، وذلك من المهلكات، فوجبت معالجته- ‘অধিকাংশ মানুষ ধ্বংস হয়ে গেছে অপর মানুষের কাছে নিন্দিত হওয়ার ভয়ে এবং তাদের কাছে প্রশংসিত হওয়ার আকাঙক্ষায়। ফলে অপবাদের ভয় এবং প্রশংসা পাওয়ার লোভে মানুষকে খুশি করার চিন্তায় তার যাবতীয় কর্মতৎপরতা পরিচালিত হয়। এটা ধ্বংস সাধনকারী কর্মপদ্ধতি। এর আশু চিকিৎসা প্রয়োজন’।[6]
[1]. যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৭/১৮৮।
[2]. ঐ ৭/৩৯৬।
[3]. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ), ই‘লামুল মুওয়াক্কি‘ঈন ১/২৮।
[4]. ইবনুল ক্বাইয়িম, বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ, ৩/২৭৬।
[5]. ইবনে বায, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া, ৭/১৭৯।
[6]. ইবনু কুদামাহ, মুখতাছার মিনহাজিল ক্বাছেদীন, পৃ. ২১২।