ভূমিকা :

ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী ভারতের একজন খ্যাতিমান আহলেহাদীছ আলেম, লেখক, গবেষক এবং জামে‘আ সালাফিয়ার সাবেক রেক্টর। ইমাম মুহাম্মাদ বিন সঊদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আব্দুর রহমান ফিরিওয়াঈ বলেন,

أحد العلماء المبرزين فى الأوساط العلمية بنشاطه المكثف فى التأليف والترجمة والصحافة والتدريس و نظارة الجامعة السلفية ومؤسساتها.

‘তিনি গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ, সাংবাদিকতা, পাঠদান, জামে‘আ সালাফিয়ার প্রশাসন ও অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সমূহের তদারকি প্রভৃতি কর্মতৎপরতার মাধ্যমে জ্ঞান জগতের একজন খ্যাতিমান আলেম’।[1]

জন্ম, শৈশব ও শিক্ষা :

ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী ১৯৩৯ সালের ৮ আগষ্ট ভারতের উত্তর প্রদেশের আযমগড় যেলার অন্তর্গত মৌনাথভঞ্জন নামক স্থানে এক মধ্যবিত্ত মুসলিম ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুহাম্মাদ ইয়াসীন। স্থানীয় ‘দারুল উলূম’ মাদরাসায় কুরআন মাজীদ পাঠের মাধ্যমে তাঁর শিক্ষার হাতে খড়ি হয়। এখানে তিনি কুরআন মাজীদ হিফয (মুখস্থ) করেন এবং তাজবীদ শিক্ষা লাভ করেন। অতঃপর মৌ-এর ‘জামে‘আ আলিয়া আরাবিয়া’তে ৪র্থ শ্রেণী পর্যন্ত আরবী ও ফার্সী শিক্ষা অর্জন করেন। এরপর ‘জামে‘আ ইসলামিয়া ফয়যে আম’ মাদরাসায় ভর্তি হয়ে তাফসীর, হাদীছ, ফিকহ, আরবী ভাষা ও সাহিত্য প্রভৃতি বিষয় অধ্যয়ন করেন। এখানে দাওরায়ে হাদীছ পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা থাকলেও ড. আযহারী ছানুবিয়াহ (মাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়েন। অতঃপর ‘জামে‘আ আছারিয়া দারুল হাদীছ’ মাদরাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশুনা শেষ করে সনদ লাভ করেন। এখানে তিনি যেসব শিক্ষকের কাছে অধ্যয়ন করেন তাদের মধ্যে প্রখ্যাত সাহিত্যিক আব্দুল্লাহ আশ-শায়িক (মৃঃ ১৩৯৪ হিঃ/ ১৯৭৪ খৃঃ)-এর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এভাবে মৌ-এ অবস্থিত তিনটি মাদরাসার খ্যাতিমান শিক্ষকদের কাছে শিক্ষালাভ করে তাঁর জ্ঞানপিপাসা নিবৃত্ত করেন।

‘জামে‘আ আছারিয়া দারুল হাদীছ’-এ পড়াশুনার সময় তিনি ইউ.পি বোর্ড থেকে প্রথম বিভাগে মৌলভী ও আলিম এবং দ্বিতীয় বিভাগে ফাযিল পাশ করেন।[2]

উচ্চশিক্ষার জন্য মিসর গমন :

ভারতে পড়াশুনা শেষ করে ড. আযহারী উচ্চশিক্ষা লাভের উদগ্র অনিঃশেষ বাসনায় ১৯৬৩ সালে মিসরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। থিওলজি বা ধর্মতত্ত্ব অনুষদ (كلية أصول الدين) থেকে তিনি ১৯৬৬ সালে এম.এ পাশ করেন। অতঃপর তিনি ‘নওয়াব ছিদ্দীক হাসান কনৌজী ভূপালী : জীবন ও অবদান (النواب صديق حسن القنوجى البوفالى: حياته وآثاره) বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন। কিন্তু অভিসন্দর্ভের কাজ সমাপ্ত করার পূর্বেই ভারতে ফিরে আসেন।[3]

কায়রো রেডিওর উর্দূ বিভাগে চাকরি :

আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি কায়রো রেডিওর উর্দূ বিভাগের অনুবাদক ও ঘোষক হিসাবে ২ বছর চাকরি করেন।[4]

জামে‘আ সালাফিয়ায় শিক্ষকতা :

১৯৬৭ সালে মিসর থেকে ভারতে প্রত্যাবর্তন করে ১৯৬৮ সালে বেনারসের ‘জামে‘আ সালাফিয়া’য় আরবী ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি এখানকার রেক্টর নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু খেদমত আঞ্জাম দেন।[5] দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এ প্রতিষ্ঠানের শনৈঃ শনৈঃ উন্নতি-অগ্রগতি সাধনে প্রবৃত্ত হন এবং এটিকে ভারতে আহলেহাদীছদের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। বহির্বিশ্বে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে এটির পরিচিতি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রত্যেক বছর এখান থেকে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররা পড়তে যায়। এখান থেকে ফারেগ হওয়া ছাত্ররা ভারতে আহলেহাদীছ আন্দোলনের প্রচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ডিগ্রী লাভ :

জামে‘আ সালাফিয়ায় শিক্ষকতা করার সময় ১৯৭০ সালে তিনি আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.ফিলে ভর্তি হন এবং ১৯৭২ সালে এম.ফিল ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে এখান থেকেই আরবী ভাষা ও সাহিত্যে পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তাঁর পিএইচ.ডির বিষয় ছিল ইবনু আব্দিল বার্র এর বাহজাতুল মাজালিস গ্রন্থের তাহকীক্ব (تحقيق كتاب بهجة المجالس لابن عبد البر)।[6]

পত্রিকা সম্পাদনা :

১৯৬৩ সালে জামে‘আ সালাফিয়ায় পাঠদান শুরু হবার পর ১৯৬৯ সালে এখান থেকে একটি আরবী পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ড. আযহারী এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিযুক্ত হন। প্রথমতঃ পত্রিকাটি ‘ছাওতুল জামে‘আ’ (صوة الجامعة) নামে বের হ’ত। পরবর্তীতে পত্রিকার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ছাওতুল জামে‘আ আস-সালাফিয়া’ (صوة الجامعة السلفية) এবং তারপর ‘ছাওতুল উম্মাহ’ (صوت الأمة)। বর্তমানে শেষোক্ত নামেই পত্রিকাটি বের হচ্ছে।[7] ইতিমধ্যে পত্রিকাটি ৪০ বছর অতিক্রম করেছে। ড. আযহারীর সম্পাদনায় পত্রিকাটি দিন দিন উন্নতি-অগ্রগতির শীর্ষে আরোহণ করে। এ পত্রিকায় গবেষণামূলক, সমাজ সংস্কারমূলক, দাওয়াতী ও সাহিত্যিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে আসছে। পত্রিকাটির জুন ২০০৭ সংখ্যার সূচীপত্র নিম্নরূপ-

১. সম্পাদকীয় : ‘রিয়াদ শীর্ষ সম্মেলন : দায়িত্ববোধের স্মারক, ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নির্ণায়ক এবং ষড়যন্ত্রের নিন্দাজ্ঞাপক।

২. ইসলামী দিক নির্দেশনা (التوجيه الإسلامى) : আল্লাহ ও মানুষ রচিত বিধানে নারীর মর্যাদা (المرأة بين أمر الله وأمر البشر) -ড. মুহাম্মাদ বিন সা‘দ আশ-শুআইয়ির।

৩. ইসলামী দাওয়াত (الدعوة الإسلامية) : দাঈর সফলতা (نجاح الداعية)- শায়খ ফাহদ বিন সুলাইমান বিন আব্দুল্লাহ আত-তুয়াজরী।

৪. মুসলিম মনীষী চরিত (شخصية إسلامية) : আল-ইমাম আবু আব্দিল্লাহ বিন আবী যামনীন আল-ইলবীরী : জীবন ও অবদান (الإمام أبو عبد الله بن أبى زمنين الإلبيرى : حياته وآثاره) ড. মুহাম্মাদ ইবরাহীম মুহাম্মাদ হারূণ আল-মাদানী।

৫. প্রবন্ধ পরিচিতি : প্রফেসর ড. নিছার আহমাদের কতিপয় প্রবন্ধের পরিচিতি -ড. ফাওযান আহমাদ।

৬. ইসলামের মাহাত্ম্য (سمو الإسلام) : যুদ্ধবন্দীদের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি (الأسرى وموقف الإسلام منهم) -মাসঊদ আলম আব্দুল কাইয়ূম সালাফী।

৭. ছাহাবী চরিত : অশ্বারোহী ছাহাবী কবি আয-যাবারকান বিন বদর : জীবন ও কাব্য-প্রতিভা (من الشعراء الصحابة الفرسان الزبرقان بن بدر: حياته وشعره) -আব্দুল হাদী আযমী।

৮. মুসলিম বিশ্ব : মুসলিম বিশ্বের খবর।

৯. জামে‘আ সালাফিয়া সংবাদ।

১০. পত্রিকার উদ্দেশ্য। সব মিলিয়ে প্রচ্ছদ ব্যতীত মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬০।

ড. আযহারী এ পত্রিকার সম্পাদকীয় লিখতেন। তাঁর সম্পাদকীয়গুলো আরবী ভাষা ও সাহিত্যে অপরিসীম দখল ও সমকালীন পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর মনীষীর পরিচয়বাহী। ২০০৭ সালের ২৮ ও ২৯ মার্চ রিয়াদে দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ফিরে এসে এ সম্পর্কে ‘ছাওতুল উম্মাহ’ পত্রিকার জুন ২০০৭ সংখ্যায় একটি চমৎকার সম্পাদকীয় লিখেন। উক্ত সম্পাদকীয়তে তিনি সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় ও গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করেন। এ সম্পাদকীয়র এক স্থানে তিনি বলেন,

وهناك قرارآخر مهم، بل هو الأهم، وهو قرار ةدريس العلوم والةقنياة النبوية فى الجامعاة العربية. والغريب أن مثل هذا القرار جاء فى وقة مةأخر جدا، ان الدول الغربية، الصليبية والصهيونية، لم ةنل من الإسلام والمسلمين إلا بعد قوةها المادية وةقدمها العسكرى. إن الإسلام لم يحرم على المسلمين هذا الةقدم، ولم يأمرهم بأن يصيروا لقمة سائغة للظلمة والطغاة.

‘সম্মেলনে আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর তা হ’ল- আরব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিজ্ঞান ও পারমাণবিক প্রযুক্তি শিক্ষাদান। বিস্ময়ের ব্যাপার হ’ল এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনেক দেরীতে নেয়া হ’ল। পশ্চিমা খৃষ্টান ও জায়োনিষ্ট দেশগুলো তাদের জাগতিক শক্তি ও সামরিক অগ্রগতির মাধ্যমেই ইসলাম ও মুসলমানদের উপর আঘাত হেনেছে। ইসলাম মুসলমানদের জন্য এই অগ্রগতি অর্জন নিষিদ্ধ করেনি এবং অত্যাচারী ও সীমালংঘনকারীদের গোগ্রাসে পরিণত হ’তে আদেশ দেয়নি’।

এরপর তিনি বলেন,

ويا للآسف! غريب أمرالمسلمين، إنهم يوصفون بأنهم إرهابيون، ولكنهم هم يخافون الآخرين ولايخافهم أحد! إن القوة المجلوبة لاتنفع الآن، بل الأمة تحتاج إلى قوة حقيقية، وهى تنشأ من عند أنفسنا بعد العناية بالعلوم والتقنية، وبتسليح أنفسنا بأحدث الأسلحة التى تصنع عندنا، وقبل هذا وذاك الرجوع إلى الدين، والإنابة إلى الله خالق السماوات والأرض، وتطهير القلوب والنفوس من الأرجاس التى لحقتنا، ثم التخلى عن الحرب الكلامية التى لم تغننا قط ولن تغنينا الآن!

‘হায় আফসোস! মুসলমানদের ব্যাপারটা বিস্ময়কর। তারা সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত হচ্ছে। কিন্তু (এমন এক সময় ছিল যখন) তারাই অন্যদের (মনে) ভীতির সঞ্চার করত। তারা কাউকেই ভয় করত না। আমদানীকৃত শক্তি এখন কোন কাজে আসবে না। বরং মুসলিম উম্মাহর প্রয়োজন প্রকৃত শক্তি অর্জন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং আমাদের নিকট তৈরীকৃত অত্যাধুনিক অস্ত্র দ্বারা নিজেদেরকে সজ্জিত করার পর এ শক্তি আমাদের কাছ থেকেই জন্ম নিবে। এর পূর্বে আমাদেরকে দ্বীন এবং আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে এবং আমাদের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে লেগে থাকা অপবিত্রতা থেকে আমাদের অন্তরসমূহকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। অতঃপর আমাদেরকে বাকযুদ্ধ পরিত্যাগ করতে হবে, যা অতীত কখনো আমাদের জন্য ফলপ্রসূ হয়নি এবং এখনও হবে না’।

ফিলিস্তীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,

ومأساة فلسطين لم تكن فصلا نهائيا لهذه المسرحية الإجرامية، بل وصل الأمر إلى دولة أفغانستان ثم العراق. إن الأبرياء فى الدولتين، وكذا فى فلسطين، يقتلون ظلما وعدوانا، ولعل العالم ينتظر بعد هذا الدمار والخراب تحقق الديمقراطية فى البلدين!

‘ফিলিস্তীন ট্র্যাজেডি এই অন্যায় নাটকের শেষ দৃশ্য নয়। বরং আফগানিস্তান ও ইরাকেও এ অনৈতিক যুদ্ধ পৌঁছে গেছে। এ দু’টি রাষ্ট্র ও ফিলিস্তীনে নিরপরাধ ব্যক্তিরা নিগ্রহ ও শত্রুতার শিকার হয়ে নিহত হচ্ছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের পরেও হয়ত বিশ্ব দেশ দু’টিতে (ইরাক ও আফগানিস্তান) গণতন্ত্র বাস্তবায়িত হওয়ার প্রতীক্ষা করবে’।[8]

জামে‘আ সালাফিয়ায় অন্যান্য দায়িত্ব পালন :

তিনি জামে‘আ সালাফিয়ার রেক্টরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ‘ইদারাতুল বুহূছ আল-ইসলামিয়্যাহ ওয়াদ দাওয়াহ ওয়াল ইফতা’ বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ড. আব্দুর রহমান ফিরিওয়াঈ বলেন,

وبجانب نشاطه فى مجال التدريس والصحافة ساهم فى مجالات أخرى فى الجامعة السلفية، منها المطبعة، وإدارة البحوث الإسلامية، وأشرف على المؤسستين من وقت إنشائها، بل يعتبر هو من مؤسسيها.

‘শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি জামে‘আ সালাফিয়ার অন্যান্য ক্ষেত্র সমূহেও অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে জামে‘আর প্রেস ও ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠান অন্যতম। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তিনি এ দু’টি সংস্থার তত্ত্বাবধান করে এসেছেন; বরং তিনি সেগুলোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও বটে’।[9]

আরবী, উর্দূ, হিন্দী ও ইংরেজী ভাষায় অসংখ্য পুস্তক এখান থেকে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে বিশ্ববরেণ্য মুহাদ্দিছ ওবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী রচিত মিশকাতুল মাছাবীহ-এর আরবী ভাষ্য ‘মির‘আতুল মাফাতীহ’ অন্যতম।

তিনি এখান থেকে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর ভূমিকা লিখতেন। যেমন ‘মির‘আতুল মাফাতীহ’ গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেন,

والحق أن هذا الشرح رفع مكانة علماء الهند بين علماء الحديث فى العالم وفتح أمامهم طريقا نافعا ومنهجا متميزا لدراسة الحديث النبوى الشريف وللاستنباط منه، زاد الله هذا الشرح قبولا ونفعا، وأسكن مؤلفه جنة الفردوس.

‘বস্ত্তত এ ব্যাখ্যাগ্রন্থটি বিশ্বের মুহাদ্দিছদের মাঝে ভারতীয় আলেমদের মর্যাদাকে সমুন্নত করেছে এবং তাদের সামনে হাদীছে নববী অধ্যয়ন-পর্যালোচনা ও তা থেকে মাসআলা ইস্তিম্বাতের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ পথ ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমন্ডিত পদ্ধতির দ্বার উন্মোচন করেছে। আল্লাহ এই ব্যাখ্যাগ্রন্থটির গ্রহণযোগ্যতা ও উপকারিতা বৃদ্ধি করুন এবং এর রচয়িতাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন’।[10]

অনুরূপভাবে উক্ত বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘হায়াতুল মুহাদ্দিছ শামসুল হক ওয়া আ‘মালুহু’ (حياة المحدث شمس الحق وأعماله) শিরোনামে প্রকাশিত গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেন,

فهذه دراسة تتناول ترجمة علم من أعلام السلفيين فى الهند، أنه قد وقف حياته وكرس جهوده لخدمة الحديث النبوى، واختار لذلك منهجا علميا نزيها يمتاز بالدقة والوضوح، ويخلو من التعصب المذهبى والتأويل البعيد والتعسف الردئ.

‘এটি এমন একজন ভারতীয় আহলেহাদীছ বিদ্বানের জীবন ও কর্মের পর্যালোচনা, যিনি হাদীছে নববীর খিদমতের জন্য নিজের জীবন ও প্রচেষ্টাকে উৎসর্গ করেছিলেন এবং এজন্য সূক্ষ্মতা ও স্পষ্টতার বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এবং মাযহাবী গোঁড়ামী, দূরবর্তী ব্যাখ্যা ও কৃত্রিমতা থেকে মুক্ত পরিচ্ছন্ন গবেষণা পদ্ধতি নির্বাচন করেছিলেন’।[11]

সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন ও অংশগ্রহণ :

তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করে জামে‘আ সালাফিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৮ সালে করাচীতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ‘কাদিয়ানী মতবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ’ শিরোনামে এবং ১৯৮০ সালের ডিসেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠিত সীরাতুন্নবী সম্মেলনে যোগদান করে ‘শরী‘আতের দ্বিতীয় উৎস হাদীছ’ (السنة مصدر ثان للتشريع) বিষয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন। তাছাড়া সঊদী আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশের সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।[12]

২৯ ও ৩০ এপ্রিল ২০০৬ তারিখে বেনারসের ‘জামে‘আ সালাফিয়া’য় দু’দিনব্যাপী ‘নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান হুসাইনী বুখারী (রহঃ) : হায়াত ওয়া খিদমাত’ (নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান হুসাইনী বুখারী : জীবন ও অবদান) শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য প্রফেসরবৃন্দ অংশগ্রহণ করে নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খানের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে ২৯টি তথ্য সমৃদ্ধ প্রবন্ধ পাঠ করেন। উক্ত সেমিনারে ড. আযহারী সেমিনারের গুরুত্ব ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দেন।[13] উক্ত সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ‘আস-সিরাজ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শামীম আহমাদ নাদভী এ সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘জামে‘আ সালাফিয়ার হল রুমে সেমিনার শুরু হ’লে তিনি তাঁর জ্ঞানের গভীরতা প্রমাণ করেন এবং পরিচ্ছন্ন ভাষায় প্রোগ্রামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, গুরুত্ব ও উপকারিতা সম্পর্ক আলোকপাত করার সাথে সাথে নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খানের জীবনের বিভিন্ন দিক এবং ইলমী খিদমতের উপর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেন এবং নিজের প্রবন্ধের উদ্ধৃতিসমূহ পেশ করেন। এর মাধ্যমে তার অধ্যয়নের গভীরতা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গভীর মনীষা সম্পর্কে অবগত হই’।[14]

২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে ‘মারকাযী জমঈয়তে আহলেহাদীছ হিন্দ’ এর উদ্যোগে দিল্লীতে একটি ঐতিহাসিক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতেও তিনি উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন।[15]

এছাড়া ১৯৮০ সালে জামে‘আ সালাফিয়ায় দাওয়াত ও শিক্ষা বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে দেশ-বিদেশের ওলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করেন। এ সেমিনারকে সফল করার জন্যও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরে ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে এ সেমিনার নিয়ে ‘মাজাল্লাতুল জামে‘আ সালাফিয়া’র (বর্তমানে ‘ছাওতুল উম্মাহ’) একটি বিশেষ সংখ্যা বের হয়, যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৩৮।

আরবী ভাষা ও সাহিত্যে অবদান :

আরবী ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি ড. আযহারীর দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল। জামে‘আ সালাফিয়াতে তিনি আরবী ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক ছিলেন। আলীগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি থেকে আরবী সাহিত্যে পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন। ‘তারীখে আদাবে আরবী’ শিরোনামে দু’খন্ডে উর্দূতে আরবী সাহিত্যের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন, যেটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক প্রফেসর, প্রবীণ কলামিষ্ট ড. মুহাম্মাদ মুজীবুর রহমান অনুবাদ করেন। অনূদিত ১ম খন্ড প্রথমবার প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ এর জুলাই মাসে এবং দ্বিতীয় বার প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ এর জুনে।

তিনি প্রখ্যাত আরবী সাহিত্যিক- প্রাবন্ধিক আববাস মাহমূদ আল-আক্কাদ বিরচিত আত্মজীবনী ‘আনা’ (আমি)-এর উর্দূ অনুবাদও করেন, যা জামে‘আ সালাফিয়া থেকে ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। ‘মানছূরুল ফাকিহী : হায়াতুহু ওয়া শি‘রুহু’ শিরোনামে আলীগড় ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত ‘মাজাল্লাতুল মাজমা আল-ইলমী আল-হিন্দী’ (مجلة المجمع العلمي الهندى) তে তিনি আরবীতে একটি চমৎকার প্রবন্ধ লিখেন। তাছাড়া আধুনিক আরবী কবিতার পথিকৃত মাহমূদ সামী আল-বারূদী (মাসিক বুরহান, দিল্লী, মে ১৯৬৭), শাওকী ও তাঁর কবিতা (মা‘আরিফ, আযমগড়, মার্চ-জুন ১৯৭০), হাফিয ইবরাহীম একজন জাতীয়তাবাদী মিসরীয় কবি (বুরহান, দিল্লী, অক্টোবর ১৯৭৯), ইবনু কুতায়বার জীবনী এবং অবদান (অর্ধ সাপ্তাহিক দাওয়াত, দিল্লী), উমাইয়া যুগের গীতিকাব্য চর্চা (ছাওতুল জামে‘আ, বেনারস) প্রভৃতি বিষয়ে উর্দূতে প্রবন্ধ লিখে আরবী সাহিত্যে অবদান রাখেন।[16]

রচনাবলী :

মৌলিক গ্রন্থ রচনা ছাড়াও ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী অনেক মূল্যবান গ্রন্থ উর্দূ ও ফার্সী থেকে আরবীতে এবং আরবী থেকে উর্দূতে অনুবাদ করার ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। নিম্নে তাঁর রচিত ও অনূদিত গ্রন্থগুলোর তালিকা পেশ করা হ’ল-

আরবী থেকে উর্দূতে রূপান্তরিত গ্রন্থাবলী :

১. শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব কৃত মুখতাছার যাদুল মা‘আদ (মুম্বাইয়ের আদ-দারুস সালাফিয়া থেকে প্রকাশিত)।

২. সিরিয়ার আহলেহাদীছ বিদ্বান জামালুদ্দীন কাসেমী রচিত ইছলাহুল মাসাজিদ (প্রকাশক : ঐ)।

৩. তালখীস ওয়া তারজামা ফাতাওয়া শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া।

৪. ‘রিসালাত কে সায়ে মেঁ’ শিরোনামে আব্দুল হালীম উআইস এর ‘ফী যিলালির রাসূল’ এর অনুবাদ (প্রকাশিত)।

৫. সুকূতু ছালাছীনা দাওলাহ (ঐ লেখক, প্রকাশিত)।

উর্দূ বা ফার্সী থেকে আরবীতে অনূদিত গ্রন্থাবলী :

১. কাযী সুলাইমান মানছূরপুরী (মৃঃ ১৩৪৯ হিঃ) রচিত রাহমাতুল্লিল আলামীন।

২. ঐতিহাসিক গোলাম রসূল মেহের রচিত ‘সারগুযাশতে মুজাহিদীন’ এর অনুবাদ ‘তারীখুল মুজাহিদীন’।

৩. মুহাম্মাদ ইসমাঈল সালাফীর ‘হারাকাতুল ইনতিলাকিল ফিকরী ওয়া জুহূদুশ শাহ অলিউল্লাহ আদ-দেহলভী’। এতে আহলেহাদীছ আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে এই দাওয়াত প্রচার-প্রসারে নানাবিধ বাধা ও সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ইসমাঈল সালাফী প্রথমত প্রবন্ধাকারে মাজাল্লাতুল জামে‘আ সালাফিয়াতে এটি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে ড. আযহারী আরবীতে অনুবাদ করে জামে‘আ সালাফিয়া থেকে প্রকাশ করেন।

৪. শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী রচিত ‘কুররাতুল আইনাইন ফী তাফযীলিশ শায়খাইন’ গ্রন্থটি ফার্সী থেকে আরবীতে রূপান্তর করেন। এতে অনেক হাদীছ ও আছার রয়েছে। ড. আযহারী এগুলোর তাহক্বীক্ব ও তাখরীজ করেন।

৫. ঐ কৃত ‘ইযালাতুল খাফা আন খিলাফাতিল খুলাফা’ (ফারসী) গ্রন্থের আরবী অনুবাদ।

৬. মুহাম্মাদ ইসমাঈল সালাফী রচিত ‘মাসআলাতু হায়াতিল আম্বিয়া’ (উর্দূ থেকে আরবী অনুবাদ)।

৭. আল-ইসলামু তাশকীলুন জাদীদুন লিল হাযারাহ (রিয়াদ : দারুল উলূম, ১৯৮২)। মূল: তাকী আল-আমীনী।

৮. বায়নাল ইনসান আত-তবী‘ঈ ওয়াল ইনসান আছ-ছিনা‘ঈ (কায়রো : দারুল ই‘তিছাম, ১৯৮২)। মূল: ঐ।

৯. আছরুল ইলহাদ : খালফিয়্যাতুহু আত-তারীখিয়্যাহ ওয়া বিদায়াতু নিহায়াতিহি (কায়রো : দারুছ ছাহওয়া, ১৯৮৪)। মূল: ঐ।

১০. আস-সুনানুর রাববানিয়্যাহ ফী রুকিইয়িল উমাম ওয়া ইনহিতাতিহা (ঐ, ১৯৮৬)। মূল: ঐ।

মৌলিক রচনা :

১. খাতূনে ইসলাম (উর্দূ, প্রকাশিত)।

২. তাখরীজু আহাদীছে বাহজাতুল মাজালিস।[17]

ইন্তিকাল :

ইলমী জগতের এই প্রতিভা ২০০৯ সালের ৩০ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।[18]

উপসংহার :

পরিশেষে বলা যায়, ড. আযহারী আমৃত্যু নিজেকে ইলমের ময়দানে ব্যাপৃত রেখেছিলেন নানামুখী কর্মকান্ডের মাধ্যমে। বিশেষত জামে‘আ সালাফিয়ার উন্নতি-অগ্রগতি সাধনে এবং ভারত ও বহির্বিশ্বে উহার পরিচিতি বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কলমী জিহাদেও তাঁর অবদান ছিল ঈর্ষণীয়। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন! আমীন!!


[1]. ড. আব্দুর রহমান ফিরিওয়াঈ, জুহূদ মুখলিছাহ (বেনারস : জামে‘আ সালাফিয়া, ২য় সংস্করণ, ১৯৮৬), পৃঃ ২৭৩

[2]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৩-৭৪; আবেদ হাসান রহমানী ও আযীযুর রহমান সালাফী, জামা‘আতে আহলেহাদীছ কী তাদরীসী খিদমাত (বেনারস : জামে‘আ সালাফিয়া, ১৯৮৯), পৃঃ ৮৭-৯২; মাসিক আস-সিরাজ (উর্দূ), ঝান্ডানগর, নেপাল, খন্ড ১৬, সংখ্যা ৭, ডিসেম্বর ২০০৯, পৃঃ ২৬-২৭; ড. মুক্তাদা হাসান আযহারী, আরবী সাহিত্যের ইতিহাস, মূল : তারীখে আদাবে আরবী, ড. মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান অনূদিত (রাজশাহী : মুহাম্মাদী সাহিত্য সংস্থা, ২০০৬), পৃঃ ২২৭)

[3]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৪; আস-সিরাজ, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৭

[4]. আস-সিরাজ, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৭

[5]. ঐ, পৃঃ ২৭-২৮; জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৪

[6]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৪; আস-সিরাজ, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৮

[7]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৪; আহলেহাদীছ কী তাদরীসী খিদমাত, পৃঃ ১০৭; আস-সিরাজ, প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৮

[8]. ছাওতুল উম্মাহ, বেনারস, জামে‘আ সালাফিয়া, খন্ড ৩৯, সংখ্যা ৬, জুন ২০০৭, পৃঃ ৩-১০

[9]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৪

[10]. ওবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ (বেনারস : জামে‘আ সালাফিয়া, ৪র্থ সংস্করণ, ১৯৯৮), ১ম খন্ড, ভূমিকা দ্র.

[11]. মুহাম্মাদ উযাইর সালাফী, হায়াতুল মুহাদ্দিছ শামসুল হক ওয়া আ‘মালুহু (বেনারস : জামে‘আ সালাফিয়া, ১৯৭৯), পৃঃ الف

[12]. আরবী সাহিত্যের ইতিহাস, ১ম খন্ড, পৃ. ২৩০

[13]. আস-সিরাজ, মে ২০০৬, পৃঃ ৩-৯; আত-তাহরীক, সেপ্টেম্বর ২০০৬, পৃঃ ১৭, মনীষী চরিত : নওয়াব ছিদ্দীক হাসান খান ভূপালী (রহঃ) দ্র.

[14]. আস-সিরাজ, ডিসেম্বর ২০০৯, পৃঃ ২৫

[15]. ঐ, পৃঃ ২৫-২৬

[16]. আরবী সাহিত্যের ইতিহাস, ১ম খন্ড, পৃঃ ২২৮-৩০

[17]. জুহূদ মুখলিছাহ, পৃঃ ২৭৫-৭৭

[18]. আস-সিরাজ, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৩






মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (২য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (৫ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
মাওলানা আব্দুস সালাম মুবারকপুরী : মুবারকপুরের এক ইলমী নক্ষত্র - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (৮ম কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)-এর ব্যাপারে কিছু আপত্তি পর্যালোচনা (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) (২য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা আব্দুল্লাহ গযনভী - ড. নূরুল ইসলাম
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (৭ম কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (১০ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
আরও
আরও
.