পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । শেষ পর্ব ।
মোযা, পাগড়ী ও ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ সম্পর্কিত মাসআলা :
মোযার উপর মাসাহ করার হুকুম :
মোযা দুই প্রকার। যথা- ১- اَلْخُفُّ অর্থাৎ চামড়ার তৈরী মোযা। ২- اَلْجَوْرَبُ অর্থাৎ কাপড়ের তৈরী মোযা। এই উভয় প্রকার মোযার উপর মাসাহ করা জায়েয।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, ليس في قلبي من المسح شيء، فيه أربعون حديثا عن النبي صلى الله عليه وسلم. অর্থাৎ মোযার উপরে মাসাহ করা জায়েয, এতে আমার অন্তরে সামান্যতম সন্দেহ নেই। এ সম্পর্কে নবী করীম (ছাঃ) হ’তে ৪০টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[1]
মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّهُ خَرَجَ لِحَاجَتِهِ فَاتَّبَعَهُ الْمُغِيْرَةُ بِإِدَاوَةٍ فِيْهَا مَاءٌ فَصَبَّ عَلَيْهِ حِيْنَ فَرَغَ مِنْ حَاجَتِهِ فَتَوَضَّأَ وَمَسَحَ عَلَى الْخُفَّيْنِ.
একদা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলে তিনি (মুগীরাহ) পানি সহ একটা পাত্র নিয়ে তাঁর অনুসরণ করলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজন শেষ করে এলে তিনি তাঁকে পানি ঢেলে দিলেন। আর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ওযূ করলেন এবং উভয় মোযার উপর মাসাহ করলেন।[2]
মোযার উপর মাসাহ ছহীহ হওয়ার পূর্বশর্ত সমূহ :
(ক) পবিত্র অবস্থায় অর্থাৎ ওযূ অবস্থায় মোযা পরিধান করা। অতএব ওযূ বিহীন অবস্থায় মোযা পরিধান করলে তার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়।
উরওয়া ইবনে মুগীরাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ فَأَهْوَيْتُ لأَنْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَإِنِّيْ أَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا.
আমি নবী করীম (ছাঃ)-এর সঙ্গে কোন এক সফরে ছিলাম। (ওযূ করার সময়) আমি তাঁর মোযা দু’টি খুলতে চাইলে তিনি বললেন, ও দু’টি থাক, আমি পবিত্র অবস্থায় ওদু’টি পরেছিলাম। (এই বলে) তিনি তার উপর মাসাহ করলেন।[3]
(খ) মোযা বৈধ হওয়া। অর্থাৎ যদি কেউ অন্য কারো মোযা জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে ছিনিয়ে নিয়ে পরিধান করে অথবা চুরিকৃত মোযা পরিধান করে অথবা রেশমী কাপড়ের তৈরী মোযা পরিধান করে। তাহ’লে তার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়।
(গ) মোযা পবিত্র হওয়া। অর্থাৎ অপবিত্র মোযার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়। যেমন কুকুর অথবা গাধার চামড়া দ্বারা তৈরীকৃত মোযার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়।
(ঘ) শারঈ দলীল দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাসাহ করা। আর তা হ’ল, মুক্বীমের জন্য এক দিন, এক রাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন, তিন রাত।
শুরাইহ ইবনে হানী বলেন, سَأَلْتُ عَلِيَّ ابْنِ أَبِى طَالِبٍ عَنِ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ جَعَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيَهُنَّ لِلْمُسَافِرِ وَيَوْمًا وَلَيْلَةً لِلْمُقِيْمِ. অর্থাৎ আমি আলী ইবনু আবি তালেব (রাঃ)-কে মোযার উপর মাসাহ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম (মাসাহ কতদিন যাবৎ করা যায়?) উত্তরে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা মুসাফিরের জন্য তিন দিন, তিনি রাত এবং মুক্বীমের জন্য এক দিন, এক রাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন’।[4]
অতএব মুক্বীমের জন্য এক দিন, এক রাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন, তিন রাত অতিক্রম হ’লে তার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়।
মোযার উপর মাসাহ করার নিয়ম :
মোযার উপর মাসাহ করার সময় তার উপরিভাগ মাসাহ করতে হবে। অর্থাৎ পায়ের পাতার উপর মাসাহ করতে হবে।
মুগীরাহ ইবনে শু‘বাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُ عَلَى الخُفَّيْنِ عَلَى ظَاهِرِهِمَا. অর্থাৎ আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মোযাদ্বয়ের উপরিভাগ মাসাহ করতে দেখেছি।[5]
অতএব মোযার নিম্নভাগ ও পেছনের দিকে মাসাহ করা বৈধ নয়। আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
لَوْ كَانَ الدِّيْنُ بِالرَّأْىِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلاَهُ وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ عَلَى ظَاهِرِ خُفَّيْهِ.
অর্থাৎ দ্বীন যদি বিবেক-বুদ্ধি অনুসারেই হ’ত, তাহ’লে মোযার উপরিভাগ অপেক্ষা নিম্নভাগ মাসাহ করাই উত্তম হ’ত। অথচ আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেছি, তিনি তাঁর মোযাদ্বয়ের উপর দিকেই মাসাহ করতেন।[6]
মোযার উপর মাসাহ ভঙ্গের কারণ সমূহ :
(ক) গোসল ফরয হ’লে : অর্থাৎ মোযার উপরে মাসাহ করার পরে স্ত্রী মিলন করলে অথবা স্বপ্নদোষ হ’লে তা ভঙ্গ হয়ে যাবে। ছফওয়ান ইবনু আস্সাল (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُنَا إِذَا كُنَّا فِيْ سَفَرٍ أَلاَّ نَنْزِعَ خِفَافَنَا إِلاَّ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، إِلاَّ مِنْ جَنَابَةٍ... অর্থাৎ আমরা যখন সফরে থাকতাম তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ দিতেন, আমরা যেন আমাদের মোযা না খুলি তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে। তবে জানাবাতের অবস্থা ব্যতীত।[7]
(খ) মোযা খুলে ফেললে মাসাহ ভঙ্গ হয়ে যাবে। অর্থাৎ পবিত্র অবস্থায় মোযা পরিধান করার পরে তা খুলে পুনরায় পরিধান করলে উক্ত মোযার উপরে মাসাহ করা বৈধ নয়।
(গ) নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে গেলে : ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পরে মোযার উপর মাসাহ করা জায়েয নয়। আর তা হ’ল, মুক্বীমের জন্য এক দিন ও এক রাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন ও তিন রাত।[8]
সফর অবস্থায় মোযার উপর মাসাহ করে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই মুক্বীম হ’লে তার হুকুম :
সফর অবস্থায় মোযার উপর তিন দিন, তিন রাত মাসাহ করা বৈধ। কিন্তু সফরকারী এক দিন অথবা দুই দিন পরে নিজ বাড়ীতে ফিরে আসলে সে মুক্বীম হয়ে গেল। এ অবস্থায় তার জন্য এক দিন, এক রাতের বেশী মাসাহ করা বৈধ নয়। এমতাবস্থায় তার করণীয় হ’ল, সে মুক্বীমের হুকুম পালন করবে। অর্থাৎ যদি এক দিন, এক রাত অতিক্রম হয়ে থাকে তাহ’লে মাসাহ ত্যাগ করবে। আর যদি এক দিন, এক রাতের কিছু অংশ বাকী থাকে তাহ’লে তা পূর্ণ করবে।[9]
মুক্বীম অবস্থায় মোযার উপর মাসাহ করে নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার পূর্বেই সফরে বের হ’লে তার হুকুম :
কেউ মুক্বীম অবস্থায় মোযার উপর মাসাহ করে এক দিন অতিক্রম হ’লে এবং এক রাত বাকী থাকতেই সফরে বের হ’ল। এখন যেহেতু সে মুসাফির সেহেতু তার জন্য তিন দিন, তিন রাত মাসাহ করা বৈধ। এমতাবস্থায় তার করণীয় হ’ল, সে মুক্বীমের হুকুম বাস্তবায়ন করবে। অর্থাৎ সে তার মুক্বীম অবস্থার বাকী এক রাত মাসাহ করে মাসাহ ত্যাগ করবে। কেননা এক্ষেত্রে মুসাফিরের হুকুম পালন করলে মাসাহ ছহীহ হবে কি-না এ ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। অতএব যে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে তা থেকে দূরে থাকাই উচিত।[10] কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, دَعْ مَا يَرِيْبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيْبُكَ. ‘যা তোমার কাছে সন্দেহযুক্ত মনে হয়, তা পরিত্যাগ করে সন্দেহমুক্ত কাজ কর’।[11]
পাগড়ীর উপর মাসাহ করার হুকুম
পাগড়ীর উপর মাসাহ করা জায়েয। তবে পাগড়ীর বেশী অংশ মাসাহ করতে হবে। সামান্য কিছু অংশ মাসাহ করলে ছহীহ হবে না।[12] জা‘ফর ইবনে আমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَمْسَحُ عَلَى عِمَامَتِهِ وَخُفَّيْهِ. অর্থাৎ আমি নবী করীম (ছাঃ)-কে তাঁর পাগড়ীর উপর এবং উভয় মোযার উপর মাসাহ করতে দেখেছি।[13]
অতএব পাগড়ীর উপর মাসাহ করা জায়েয। কিন্তু এর উপর ভিত্তি করে টুপির উপর মাসাহ করা বৈধ নয়। কেননা হাদীছে টুপির উপর মাসাহ করার কথা বর্ণিত হয়নি। তাছাড়াও পাগড়ী খুলে পুনরায় বাঁধতে যে কষ্ট অনুভূত হয়, টুপিতে তা হয় না।[14]
ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করার হুকুম :
শরীরের কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে বা কেটে গেলে সেই অঙ্গে ব্যান্ডেজ করা হয়। ওযূ করার সময় সেই ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করা জায়েয। এক্ষেত্রে কোন সময় সীমা নির্ধারিত নয়। অর্থাৎ যতদিন পর্যন্ত ব্যান্ডেজ থাকবে ততদিন পর্যন্ত মাসাহ করা জায়েয।[15]
গোসল সম্পর্কিত মাসআলা
الغسل-এর আভিধানিক অর্থ-ধৌত করা।
পারিভাষিক অর্থ- ইবাদতের উদ্দেশ্যে, নির্দিষ্ট নিয়মে, পবিত্র পানি দ্বারা সর্ব শরীর ধৌত করার নাম গোসল।[16]
الغسل-এর হুকুম : গোসল ওয়াজিব হওয়ার কারণ সংঘটিত হ’লে গোসল করা ওয়াজিব। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوْا ‘আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও’ (মায়েদা ৬)।
যে সকল কারণে গোসল করা ওয়াজিব:
(ক) যৌন উত্তেজনার সাথে বীর্য নির্গত হওয়া : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوْا ‘আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও’ (মায়েদা ৬)।
আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كُنْتُ رَجُلاً مَذَّاءً فَجَعَلْتُ أَغْتَسِلُ حَتَّى تَشَقَّقَ ظَهْرِى فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم أَوْ ذُكِرَ لَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليْه وسلم لاَ تَفْعَلْ إِذَا رَأَيْتَ الْمَذْىَ فَاغْسِلْ ذَكَرَكَ وَتَوَضَّأْ وُضُوْءَكَ لِلصَّلاَةِ فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ.
অর্থাৎ আমার প্রায়ই মযী নির্গত হ’ত এবং আমি গোসল করতাম। এমনকি এ কারণে আমার পৃষ্ঠদেশে ব্যথা অনুভব করতাম। অতঃপর আমি এ বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট পেশ করি অথবা অন্য কারো দ্বারা পেশ করা হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তুমি এরূপ করবে না। বরং যখনই তুমি মযী দেখবে তখন তোমার পুরুষাঙ্গ ধৌত করবে এবং ছালাত আদায়ের জন্য ওযূ করবে। অবশ্য যদি কোন সময় উত্তেজনা বশতঃ বীর্য নির্গত হয় তবে গোসল করবে’।[17]
অতএব জাগ্রত অবস্থায় অসুস্থতার কারণে যৌন উত্তেজনা ছাড়াই বীর্যপাত হ’লে তার উপর গোসল ওয়াজিব নয়।[18] অর্থাৎ সে ব্যক্তি শুধুমাত্র লজ্জস্থান ধৌত করবে এবং যে পোষাকে বীর্য লেগেছে তা পরিবর্তন করে নতুনভাবে ওযূ করে ছালাত আদায় করবে।
পক্ষান্তরে ঘুমন্ত অবস্থায় বীর্যপাত হ’লেই গোসল ওয়াজিব হবে। এক্ষেত্রে গোসল ওয়াজিব হওয়ার জন্য যৌন উত্তেজনা শর্ত নয়।
উম্মুল মু‘মিনীন উম্মু সালামাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহা (রাঃ)-এর স্ত্রী উম্মু সুলাইম (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর খিদমতে এসে বললেন, يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ اللهَ لاَ يَسْتَحْيِيْ مِنَ الْحَقِّ هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَعَمْ إِذَا رَأَتِ الْمَاءَ. অর্থাৎ হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আল্লাহ তা‘আলা হকের ব্যাপারে লজ্জা করেন না। স্ত্রীলোকের স্বপ্নদোষ হ’লে কি ফরয গোসল করবে? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ, যদি তারা বীর্য দেখে’।[19]
অতএব স্বপ্নের কিছু বুঝতে পারুক বা না পারুক, ঘুম থেকে জেগে বীর্য দেখলেই তার উপর গোসল ওয়াজিব।
(খ) পুরুষাঙ্গের খাতনার স্থান পর্যন্ত স্ত্রীর যৌনাঙ্গে প্রবেশ করালে বীর্য নির্গত হোক বা না হোক গোসল ওয়াজিব হবে। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِذَا جَلَسَ بَيْنَ شُعَبِهَا الأَرْبَعِ، ثُمَّ اجْتَهَدَ فَقَدْ وَجَبَ الْغُسْلُ وَإِنْ لَمْ يَنْزِلْ. ‘তোমাদের কেউ স্ত্রীলোকের চার শাখার (দুই হাত ও দুই পায়ের) সম্মুখে বসে এবং সহবাসের চেষ্টা করলে গোসল ফরয হয়, যদিও সে বীর্যপাত না করে’।[20]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا جَاوَزَ الْخِتَانُ الْخِتَانَ وَجَبَ الْغُسْلُ، فَعَلْتُهُ أَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاغْتَسَلْنَا. ‘যখন (পুরুষের) খাতনার স্থল (স্ত্রীর) খাতনার স্থলে প্রবেশ করবে, তখন উভয়ের উপর গোসল ফরয হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরূপ করেছি। অতঃপর উভয়ে গোসল করেছি।[21]
(গ) মুসলিম ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার উপর গোসল ওয়াজিব।
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
بَيْنَمَا رَجُلٌ وَاقِفٌ بِعَرَفَةَ إِذْ وَقَعَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَوَقَصَتْهُ، أَوْ قَالَ فَأَوْقَصَتْهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اغْسِلُوْهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَكَفِّنُوْهُ فِيْ ثَوْبَيْنِ، وَلاَ تُحَنِّطُوْهُ، وَلاَ تُخَمِّرُوْا رَأْسَهُ فَإِنَّهُ يُبْعَثُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُلَبِّيًا.
অর্থাৎ এক ব্যক্তি আরাফাতে অবস্থানরত অবস্থায় আকস্মাৎ তার উটনী হ’তে পড়ে যায়। এতে তার ঘাড় মটকে গেল অথবা রাবী বলেছেন, ঘাড় মটকে দিল (যাতে সে মারা গেল)। তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তাকে বরই পাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও এবং দু‘কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তাকে সুগন্ধি লাগাবে না এবং তার মস্তক আবৃত করবে না। কেননা ক্বিয়ামত দিবসে সে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উত্থিত হবে’।[22]
উল্লিখিত হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার উপর গোসল ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে যুদ্ধে শহীদ হওয়া ব্যক্তির উপর গোসল ওয়াজিব নয়।
জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ ثُمَّ يَقُوْلُ أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ فَإِذَا أُشِيْرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ وَقَالَ أَنَا شَهِيْدٌ عَلَى هَؤُلاَءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ فِي دِمَائِهِمْ وَلَمْ يُغَسَّلُوا وَلَمْ يُصَلَّ عَلَيْهِمْ.
নবী করীম (ছাঃ) ওহুদের শহীদগণের দুই দুই জনকে একই কাপড়ে (ক্ববরে) একত্র করলেন। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, তাদের দু’জনের মধ্যে কে কুরআন অধিক জানত? দু’জনের মধ্যে একজনের দিকে ইঙ্গিত করা হ’লে তাকে ক্ববরে পূর্বে রাখলেন এবং বললেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন এদের ব্যাপারে সাক্ষী হব। তিনি রক্ত-মাখা অবস্থায় তাদের দাফন করার নির্দেশ দিলেন, তাদের গোসল দেওয়া হয়নি এবং তাদের (জানাযা) ছালাতও আদায় করা হয়নি।[23]
(ঘ) হায়েয এবং নিফাসের রক্ত বন্ধ হ’লে তার উপর গোসল ওয়াজিব। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ أَبِيْ حُبَيْشٍ كَانَتْ تُسْتَحَاضُ فَسَأَلَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ذَلِكِ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ، وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْتَسِلِيْ وَصَلِّي.
অর্থাৎ ফাতেমা বিনতে আবূ হুবাইশ (রাঃ)-এর ইস্তিহাযা হ’ত। তিনি এ বিষয়ে নবী (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন। আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘এ হচ্ছে রগের রক্ত, হায়েযের রক্ত নয়। সুতরাং হায়েয শুরু হ’লে ছালাত ছেড়ে দেবে। আর হায়েয শেষ হ’লে গোসল করে ছালাত আদায় করবে’।[24]
নিফাসের ক্ষেত্রেও হায়েযের অনুরূপ হুকুম প্রযোজ্য। কেননা নিফাস হায়েযের মতই। কেননা আয়েশা (রাঃ) হজ্জে গিয়ে সারিফ নামক স্থানে পৌঁছে ঋতুবতী হ’লে রাসূল (ছাঃ) তাকে বলেছিলেন, (لَعَلَّكِ نُفِسْتِ) ‘সম্ভবত তুমি ঋতুবতী হয়েছ’।[25] এখানে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিফাস শব্দের ব্যবহার করে হায়েয হওয়াকে বুঝিয়েছেন। অতএব হায়েয এবং নিফাসের হুকুম একই।
পবিত্রতা অর্জনের গোসলের নিয়ম :
অপবিত্র অবস্থা থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা ওয়াজিব। আর সেই গোসলের সুন্নাতী নিয়ম হ’ল- সে পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করবে এবং বিসমিল্লাহ বলে প্রথমে উভয় হাত ধৌত করবে। অতঃপর লজ্জাস্থান ও তার আশেপাশে যে স্থানগুলোতে বীর্য লেগেছে তা ধৌত করবে। এরপর সে ছালাতের অযূর ন্যায় ওযূ করবে। তারপর হাতে পানি নিয়ে মাথার চুল খিলাল করবে। অতঃপর হাত দ্বারা মাথায় তিন বার পানি দিবে এবং সারা শরীরে পানি ঢেলে দিবে।
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ بَدَأَ فَغَسَلَ يَدَيْهِ ثُمَّ يَتَوَضَّأُ كَمَا يَتَوَضَّأُ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ يُدْخِلُ أَصَابِعَهُ فِي الْمَاءِ فَيُخَلِّلُ بِهَا أُصُوْلَ شَعَرِهِ ثُمَّ يَصُبُّ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ غُرَفٍ بِيَدَيْهِ ثُمَّ يُفِيْضُ الْمَاءَ عَلَى جِلْدِهِ كُلِّهِ.
অর্থাৎ নবী করীম (ছাঃ) যখন জানাবাতের গোসল করতেন, তখন প্রথমে তাঁর হাত দু’টো ধুয়ে নিতেন। অতঃপর ছালাতের অযূর মত ওযূ করতেন। অতঃপর তাঁর অঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন। অতঃপর তাঁর উভয় হাতের তিন অাঁজলা পানি মাথায় ঢালতেন। তারপর তাঁর সারা দেহের উপর পানি ঢেলে দিতেন।[26]
যে সকল কারণে গোসল করা সুন্নাত :
(ক) সহবাসের পরে পুনরায় সহবাসে লিপ্ত হ’তে চাইলে ওযূ করা। আবু রাফে‘ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم طَافَ ذَاتَ يَوْمٍ عَلَى نِسَائِهِ يَغْتَسِلُ عِنْدَ هَذِهِ وَعِنْدَ هَذِهِ. قَالَ فَقُلْتُ لَهُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلاَ تَجْعَلُهُ غُسْلاً وَاحِدًا قَالَ هَذَا أَزْكَى وَأَطْيَبُ وَأَطْهَرُ.
অর্থাৎ এক রাত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর সকল বিবির নিকট ঘুরে বেড়ালেন। তিনি এর নিকট একবার ও তার নিকট একবার গোসল করলেন। আবু রাফে‘ বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সর্বশেষে কি একবারই মাত্র কেন গোসল করলেন না? উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘এটা হচ্ছে অধিক পবিত্রতাবর্ধক, অধিক আনন্দদায়ক ও অধিক পরিচ্ছন্ন’।[27]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, إِذَا أَتَى أَحَدُكُمْ أَهْلَهُ ثُمَّ أَرَادَ أَنْ يَعُوْدَ فَلْيَتَوَضَّأْ. ‘যখন তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে, অতঃপর পুনরায় তা করতে ইচ্ছা করে, সে যেন মাঝে ওযূ করে’।[28]
(খ) জুম‘আর ছালাতের জন্য গোসল করা। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الْجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ. ‘তোমাদের মধ্যে কেউ জুম‘আর ছালাতে আসলে সে যেন গোসল করে’।[29]
(গ) দুই ঈদের দিনে গোসল করা। যাযান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
سَأَلَ رَجُلٌ عَلِيًّا رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ الْغُسْلِ قَالَ : اغْتَسِلْ كُلَّ يَوْمٍ إِنْ شِئْتَ. فَقَالَ : لاَ الْغُسْلُ الَّذِى هُوَ الْغُسْلُ قَالَ : يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَيَوْمَ عَرَفَةَ، وَيَوْمَ النَّحْرِ، وَيَوْمَ الْفِطْرِ.
অর্থাৎ এক ব্যক্তি আলী (রাঃ)-কে গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, তুমি চাইলে প্রতিদিন গোসল করতে পার। ঐ ব্যক্তি বলল, না, তবে গোসল হ’ল (সুন্নাতী) গোসল। তিনি বললেন, জুম‘আর দিনে, আরাফার দিনে, কুরবানীর দিনে এবং ঈদুল ফিতরের দিনে।[30]
(ঘ) হজ্জ ও ওমরার ইহরাম বাঁধার পূর্বে গোসল করা। যায়েদ ইবনে ছাবেত (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, أَنَّهُ رَأَى النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم تَجَرَّدَ لإِهْلاَلِهِ وَاغْتَسَلَ. অর্থাৎ তিনি নবী করীম (ছাঃ)-কে এহরামের জন্য সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করতে ও গোসল করতে দেখেছেন।[31]
(ঙ) মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার পরে গোসল করা : আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا فَلْيَغْتَسِلْ. ‘যে মৃত ব্যক্তিকে গোসল করাল, সে যেন গোসল করে’।[32]
(চ) কোন অমুসলিম ইসলাম কবুল করলে তার উপর গোসল করা ওয়াজিব। ক্বায়েস ইবনু আছেম (রাঃ) বলেন, أَتَيْتُ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم أُرِيْدُ الإِسْلاَمَ فَأَمَرَنِىْ أَنْ أَغْتَسِلَ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ. অর্থাৎ আমি ইসলাম কবুল করার আগ্রহে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর খিদমতে হাযির হ’লে তিনি আমাকে কুলের পাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল করার নির্দেশ দিলেন।[33]
গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ সমূহ :
(ক) মসজিদে অবস্থান করা। তবে মসজিদে অবস্থান না করে তা অতিক্রম করতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلاَ جُنُبًا إِلاَّ عَابِرِيْ سَبِيْلٍ حَتَّى تَغْتَسِلُوْا ‘আর অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে যদি তোমরা পথ অতিক্রমকারী হও’ (নিসা ৪৩)।
(খ) কুরআন স্পর্শ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, لاَ يَمَسُّهُ إِلاَّ الْمُطَهَّرُوْنَ ‘কেউ তা (কুরআন) স্পর্শ করে না পবিত্রগণ ব্যতীত’ (ওয়াকিয়া ৭৯)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَمَسُّ الْقُرْآنَ إِلا طَاهِرٌ. ‘কুরআন স্পর্শ করে না পবিত্র ব্যক্তি ব্যতীত’।[34]
(গ) ছালাত আদায় করা। ছালাত ছহীহ হওয়ার পূর্বশর্ত হ’ল, ছোট ও বড় উভয় প্রকার নাপাকী হ’তে পবিত্রতা অর্জন করা।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ تُقْبَلُ صَلاَةٌ بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلاَ صَدَقَةٌ مِنْ غُلُوْلٍ. ‘পবিত্রতা ব্যতীত ছালাত এবং হারাম মালের দ্বারা দান কবুল হয় না’।৩৫
(ঘ) পবিত্র কা‘বা গৃহ তাওয়াফ করা।
আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم : لاَ نَذْكُرُ إِلاَّ الْحَجَّ فَلَمَّا جِئْنَا سَرِفَ طَمِثْتُ فَدَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أَبْكِي فَقَالَ مَا يُبْكِيكِ قُلْتُ لَوَدِدْتُ وَاللهِ أَنِّي لَمْ أَحُجَّ الْعَامَ قَالَ لَعَلَّكِ نُفِسْتِ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَإِنَّ ذَلِكَ شَيْءٌ كَتَبَهُ اللهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَافْعَلِيْ مَا يَفْعَلُ الْحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لاَ تَطُوفِيْ بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرِيْ.
অর্থাৎ আমরা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর সঙ্গে হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। আমরা ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছলে আমি ঋতুবতী হই। এ সময় নবী করীম (ছাঃ) এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কাঁদছ কেন’? আমি বললাম, আল্লাহর শপথ! এ বছর হজ্জ না করাই আমার জন্য পসন্দনীয়। তিনি বললেন, ‘সম্ভবত তুমি ঋতুবতী হয়েছ’। আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, এটাতো আদম কন্যাদের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত করেছেন। তুমি পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য হাজীদের মত সমস্ত কাজ করে যাও, কেবল কা‘বা গৃহ তাওয়াফ করবে না’।৩৬
[চলবে]
মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।
[1]. ইবনে কুদামা (রহঃ), মুগনী, ১/৩৬০ পৃঃ।
[2]. বুখারী, ‘মোযার উপর মাসাহ করা’ অনুচ্ছেদ, হা/২০৩, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১১৫ পৃঃ।
[3]. বুখারী, ‘পবিত্র অবস্থায় উভয় পা মোযায় প্রবেশ করানো’ অনুচ্ছেদ, হা/২০৬, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১১৬ পৃঃ।
[4]. মুসলিম, হা/৬৬১। মিশকাত, ‘মোযার উপর মাসাহ করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৪৮২। বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/১২৯ পৃঃ।
[5]. ছহীহ তিরমিযী, তাহক্বীক: নাছিরুদ্দীন আলবানী, হা/৮৫। তিনি হাদীছটিকে হাসান ছহীহ বলে উল্লেখ করেছেন। মিশকাত, হা/৪৮৭, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া, ২/১৩২ পৃঃ।
[6]. আবু দাউদ, হা/১৬২, মিশকাত, হা/৪৯০, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া, ২/১৩৩ পৃঃ; হাফেয ইবনে হাজার হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্র. তালখীছুল হাবীর ১/১৬০।
[7]. তিরমিযী, হা/৯৬, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্র. ইরওয়াউল গালীল, হা/১০৪।
[8]. মুসলিম, হা/৬৬১; মিশকাত, ‘মোযার উপর মাসাহ করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৪৮২; বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/১২৯।
[9]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি ১/২৫১।
[10]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি ১/২৫২।
[11]. তিরমিযী, তাহক্বীক: নাছিরুদ্দীন আলবানী, হা/২৫১৮, তিনি হাদীছটিকে ছহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
[12]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি ১/২৫৯।
[13]. বুখারী, ‘মোযার উপর মাসাহ করা’ অনুচ্ছেদ, হা/২০৫, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১১৫।
[14]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছাইমীন, শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি ১/২৫৩-২৫৪।
[15]. ফিকহুল মুয়াস্সার, মুজাম্মা মালিক ফাহ্দ, পৃঃ ২৭।
[16]. ঐ, পৃঃ ২৮।
[17]. সুনানু আবি দাউদ হা/২০৬, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন।
[18]. শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি, ১/৩৩৪।
[19]. বুখারী, ‘মহিলাদের স্বপ্নদোষ’ অনুচ্ছেদ, হা/২৮২, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ১/১৪৬।
[20]. মুত্তফাক ‘আলাইহি, মিশকাত, ‘গোসল’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৯৬, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/৯২।
[21]. তিরমিযী, হা/১০৮, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। মিশকাত, হা/৪০৬, বাঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/৯৬।
[22]. বুখারী, ‘দু‘কাপড়ে কাফন দেওয়া’ অনুচ্ছেদ, হা/১২৬৫; বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ২/১৩।
[23]. বুখারী, ‘শহীদের জন্য জানাযার ছালাত’ অনুচ্ছেদ, হা/১৩৪৩; বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ২/৪৭।
[24]. বুখারী, ‘হায়েয শুরু ও শেষ হওয়া’ অনুচ্ছেদ, হা/৩২০, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১৬২।
[25]. বুখারী ‘ঋতুবতী নারী হজ্জের যাবতীয় বিধান পালন করবে তবে কা‘বা গৃহের তাওয়াফ ব্যতীত’ অনুচ্ছেদ, হা/৩০৫, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১৫৬।
[26]. বুখারী, ‘গোসলের পূর্বে অযূ করা’ অনুচ্ছেদ, হা/২৪৮, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১৩৩।
[27]. আবু দাউদ, মিশকাত, ‘নাপাক ব্যক্তির সাথে মিলা-মিশা ও তার পক্ষে যা মোবাহ’ অনুচ্ছেদ, হা/৪৪১, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/১১১, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্র. ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৪৮৬।
[28]. মুসলিম, মিশকাত, ‘নাপাক ব্যক্তির সাথে মিলা-মিশা ও তার পক্ষে যা মোবাহ’ অনুচ্ছেদ, হা/৪২৬, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ২/১০৬ পৃঃ।
[29]. বুখারী, ‘জুম‘আর দিন গোসল করার তাৎপর্য’ অনুচ্ছেদ, হা/৮৭৭, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/৪২৬ পৃঃ।
[30]. সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী, ‘দুই ঈদের ছালাত’ অনুচ্ছেদ, হা/৬৩৪৩।
[31]. তিরমিযী, ‘এহরামের সময় গোসল করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৮৩০, মিশকাত, হা/২৪৩২, বঙ্গানুবাদ, এমদাদিয়া ৫/১৮৯ পৃঃ।
[32]. সুনানু ইবনে মাজাহ, তাহক্বীক: নাছিরুদ্দীন আলবানী, হা/১৪৬৩, হাদীছটি ছহীহ। দ্র. ইরউয়াউল গালীল হা/১৪৪।
[33]. সুনানু আবি দাউদ, ‘ইসলাম গ্রহণের গোসল করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৫৫, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন।
[34]. মুয়াত্ত্বা মালেক, ১/১৯৯, দারাকুতনী, ১/১২১; নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, দ্র: ইরওয়াউল গালীল, হা/১২২।
৩৫. মুসলিম, হা/২২৫, মিশকাত, হা/২৮১, বাংলা অনুবাদ, এমদাদিয়া ২/৪৮।
৩৬. বুখারী, হা/৩০৫, বঙ্গানুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১৫৬।