পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । শেষ পর্ব ।

চতুর্থ মূলনীতি: সকল সমস্যায় ইসলামকেই একমাত্র সমাধান হিসাবে পরিগ্রহণ : এর অর্থ- ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের সকল সমস্যায় ইসলামকেই একমাত্র সমাধান হিসাবে গ্রহণ করা। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর সিদ্ধান্তকে অকপটে মেনে নেওয়া। যেকথা মহান আল্লাহ স্পষ্টতই বলে দিয়েছেন যে, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর এবং আনুগত্য কর রাসূলের ও তোমাদের আমীরের। অতঃপর যদি কোন বিষয়ে তোমরা বিতন্ডা কর, তাহ’লে বিষয়টি আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে সর্বোত্তম’ (নিসা ৪/৫৯)। অতএব নিজেদের মস্তিষ্কপ্রসূত কোন সিদ্ধান্ত শারঈ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষণে আমরা ইসলাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে জানার প্রয়াস পাব।-

ইসলাম অর্থ:

ইসলাম (الإسلام) শব্দটি سلم  শব্দমূল হ’তে উৎপন্ন। سلم  অর্থ শান্তি, সন্ধি ইত্যাদি। الإسلام  শব্দটি باب إفعال   -এর ক্রিয়ামূল (مصدر) । এর আভিধানিক অর্থ আত্মসমর্পণ করা, অনুগত হওয়া ইত্যাদি।

হাদীছে জিবরীলে ইসলামের সংজ্ঞা এভাবে উল্লিখিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِىَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً ‘ইসলাম হচ্ছে এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল, ছালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, রামাযান মাসের ছিয়াম পালন করা এবং সামর্থ্য থাকলে বায়তুল্লাহর হজ্জ সম্পাদন করা’।[1] অর্থাৎ ঈমানের দাবী অনুযায়ী শরী‘আত নির্ধারিত বিধি-বিধান সমূহ যথাযথভাবে পালন করার নাম হচ্ছে ইসলাম।

ঈমান অর্থ :

ঈমান (ايمان) শব্দটি باب إفعال  এর ক্রিয়ামূলأمن  মূলধাতু হ’তে উদ্গত। أمن  অর্থ শান্তি বা নিরাপত্তা। ايمان এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে নিশ্চিত বিশ্বাস, যা ভীতি ও সন্দেহের বিপরীত (الإيمان من الأمن ضد الخوف والشك)। পরিভাষায়الإيمانُ هو التَّصْديقُ بِالْجِنانِ وَالْإقرارُ بِاللِّسانِ وَالْعَمَلُ بِالْأرْكانِ ‘হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত রূপকে ঈমান বলে’।[2]

ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য :

ঈমান হচ্ছে আভ্যন্তরীণ বিষয় আর ইসলাম হচ্ছে বাহ্যিক অনুশীলন। ঈমান হচ্ছে দ্বীনের বিশ্বাসগত দিক, যাকে হাদীছে তাওহীদ ও রিসালাতের শাহাদতরূপে উল্লেখ করা হয়েছে। আর ইসলাম হচ্ছে সেই বিশ্বাসের দাবী অনুযায়ী ইখলাছের সাথে আমল বা ইবাদত করা। যেমন ইসলামের পরিচয় দিতে গিয়ে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, بُنِيَ الْإِسْلَامُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি জিনিসের উপর: (১) এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল (২) ছালাত কায়েম করা (৩) যাকাত আদায় করা (৪) হজ্জ করা এবং (৫) রামাযানের ছিয়াম পালন করা’।[3]

ঈমান ও ইসলাম একটির সাথে আরেকটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটিকে বাদ দিয়ে আরেকটি কল্পনা করা যায় না। ঈমানহীন আমলের যেমন কোন গুরুত্ব নেই, তেমনি আমলহীন ঈমানও পত্র-পল্লবহীন একটি ন্যাড়া বৃক্ষের ন্যায় গুরুত্বহীন। যেমন অনেকের পোষাক-আষাকে মুসলমানিত্ব থাকলেও বাস্তবে তার মধ্যে প্রকৃত ঈমান নেই। আবার অনেকের ঈমান আছে কিন্তু ঈমান অনুযায়ী আমল নেই। যেমন আল্লাহ বলেন,قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا قُلْ لَمْ تُؤْمِنُوا وَلَكِنْ قُولُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيمَانُ فِي قُلُوبِكُمْ ‘আরব মরুবাসীরা বলল, আমরা ঈমান এনেছি। তুমি বল, তোমরা ঈমান আননি। বরং বল, আমরা মুসলমান হয়েছি। কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি...’ (হুজুরাত ৪৯/১৪)

বস্ত্তত ঈমান ও ইসলামের পরস্পর সম্পর্ককে মানুষের দেহ ও প্রাণের সঙ্গে তুলনা করা চলে। ইসলাম হচ্ছে দেহ ও তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, আর ঈমান হচ্ছে ঐ দেহের প্রাণ। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ কর্তিত হ’লেও যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে, ততক্ষণ দেহের মূল্য আছে, কিন্তু প্রাণহীন দেহের কোন মূল্য নেই।      

ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন :

আল্লাহ বলেন, قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ ‘তুমি বল, হে আহলে কিতাবগণ! এসো! একটি কথায় আমরা একমত হই, যা আমাদের ও তোমাদের মাঝে সমান। আর তা এই যে, আমরা অন্য কারু ইবাদত করব না আল্লাহ ব্যতীত এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করব না। আর আল্লাহকে ছেড়ে আমরা কেউ কাউকে ‘প্রতিপালক’ হিসাবে গ্রহণ করব না। এরপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তোমরা বল, তোমরা সাক্ষী থাক যে, আমরা ‘মুসলিম’ (আলে ইমরান ৩/৬৪)। অতএব তাওহীদের ব্যাপারে ইসলামের সাথে অন্য কোন ধর্মের কোনরূপ আপোষ নেই।

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে আখেরাতের অনন্ত জীবনে অফুরন্ত সুখ-শান্তির অধিকারী হ’তে পারে। এটি মহান আল্লাহ প্রেরিত এলাহী দ্বীন। মানব কল্যাণে যা প্রেরিত হয়েছে। এটি আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন। আল্লাহ বলেন, إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلَامُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَنْ يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللهِ فَإِنَّ اللهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট মনোনীত একমাত্র দ্বীন হ’ল ইসলাম। আর আহলে কিতাবগণ (শেষনবীর উপর ঈমান আনার ব্যাপারে) মতভেদ করেছে তাদের নিকট ইল্ম (অর্থাৎ তাদের কিতাবে শেষনবী আগমনের খবর) এসে যাবার পরেও কেবলমাত্র পারস্পরিক বিদ্বেষবশত। বস্ত্ততঃ যারা আল্লাহর আয়াত সমূহকে অস্বীকার করে, সত্বর আল্লাহ তাদের হিসাব গ্রহণকারী’ (আলে ইমরান ৩/১৯)

এটি সত্য ও ন্যায় দ্বারা পরিপূর্ণ এক অপরিবর্তনীয় স্বচ্ছ দ্বীন। আল্লাহ বলেন, وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَعَدْلًا لَا مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ‘তোমার প্রতিপালকের বাণী সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ। তাঁর বাণীর পরিবর্তনকারী কেউ নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’ (আন‘আম ৬/১১৫)। বিদায় হজ্জের দিন আল্লাহ তা‘আলা নিম্নোক্ত আয়াত নাযিলের মাধ্যমে তাঁর রাসূলকে জানিয়ে দেন যে,الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ  دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার নে‘মতকে সম্পূর্ণ করলাম। আর ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)। সুতরাং মহান আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।

এই দ্বীনের সম্মুখ ও পশ্চাতে বাতিলের কোন প্রবেশাধিকার নেই। যেমন পবিত্র কুরআনের সত্যায়ন করতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنْزِيلٌ مِنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ ‘(এটি এমন গ্রন্থ) যার অগ্র-পশ্চাত কোন দিক হ’তেই বাতিল অনুপ্রবেশ করতে পারে না। এটি প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর নিকট হ’তে নাযিলকৃত’ (ফুছি্ছলাত ৪১/৪২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,وَايْمُ اللهِ لَقَدْ تَرَكْتُكُمْ عَلَى مِثْلِ الْبَيْضَاءِ لَيْلُهَا وَنَهَارُهَا سَوَاءٌ ‘আল্লাহর কসম অবশ্যই আমি তোমাদেরকে এমন এক শ্বেত-শুভ্র পথের উপরে ছেড়ে যাচ্ছি, যার রাত্রি দিবসের ন্যায় সমুজ্জল’।[4]

এই স্বচ্ছ দ্বীনে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ বিশ্বাসভাজনদের প্রতি জোরাল তাকীদ করেছেন। তিনি বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন’ (বাক্বারাহ ২/২০৮)

ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণযোগ্য নয় :

ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন আল্লাহর নিকটে আদৌ গ্রহণযোগ্য হবে না। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,أَفَغَيْرَ دِينِ اللهِ يَبْغُونَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ ‘তবে কি তারা আল্লাহর দ্বীন বাদ দিয়ে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? অথচ আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, সবই স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তাঁর নিকটে আত্মসমর্পণ করেছে এবং সকলকে তাঁর নিকটেই ফিরে যেতে হবে’ (আলে ইমরান ৩/৮৩)। তিনি আরো বলেন, وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ ‘আর যে ব্যক্তি ‘ইসলাম’ ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, তার নিকট থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং ঐ ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে (আলে ইমরান ৩/৮৫)

অত্র আয়াতে মানবজাতিকে সাবধান করা হয়েছে। যেন তারা আল্লাহর মনোনীত দ্বীন ‘ইসলাম’ (আলে ইমরান ১৯) বাদ দিয়ে অন্য কোন দ্বীন তালাশ না করে। যদি করে, তাহ’লে আল্লাহর কাছে ফিরে যাবার পর তাদেরকে এর কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে এবং জাহান্নামের অধিবাসী হ’তে হবে।

অন্যত্র তিনি বলেন,وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللهِ إِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহর হেদায়াত অগ্রাহ্য করে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? নিশ্চয় আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেন না’ (কবাছাছ ২৮/৫০)। জানা আবশ্যক যে, পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর পূর্বের সমস্ত আসমানী কিতাব রহিত হয়ে গেছে। সেকারণ ঐ সকল কিতাব এখন সাধারণভাবে পাঠ করা যাবে না। একদা ওমর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে তাওরাত পড়তে লাগলে তিনি অত্যন্ত রেগে যান এবং বলেন, তোমরা কি বিভ্রান্ত হবে, যেভাবে ইহূদী-নাছারারা বিভ্রান্ত হয়েছে। যদি আজ মূসা বেঁচে থাকতেন, তাহ’লে আমার অনুসরণ করা ব্যতীত তার কোন উপায় থাকতো না’।[5] তবে অমুসলিমদের ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের জবাবদানের উদ্দেশ্যে শরী‘আতসম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত আলেমদের জন্য এগুলি পাঠ করায় কোন বাধা নেই।[6]

অমুসলিম মনীষীদের দৃষ্টিতে ইসলাম :

জর্জ বার্নাড’শ বলেন, ‘আমি সব সময়ই মুহাম্মাদের ধর্মের প্রতি, তার চমৎকার প্রাণবন্ত ধর্মের কারণে অতিমাত্রায় শ্রদ্ধা পোষণ করতাম। আমার নিকটে প্রতীয়মান হয় যে, এটিই একমাত্র ধর্ম যা অস্তিত্বের পরিবর্তনশীল অবস্থাসমূহের সঙ্গে এসে মিলিয়ে চলতে পারার ক্ষমতার অধিকারী। এর ফলেই এই ধর্মটি প্রত্যেক যুগেই তাঁর আবেদন বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমি এই মর্মে ভবিষ্যৎ বাণী উচ্চারণ করছি যে, আজকের ইউরোপে যেভাবে মুহাম্মাদের প্রতি বিশ্বাস গ্রহণযোগ্য হ’তে শুরু করেছে, সেভাবে আগামী দিনেও এটি গ্রহণযোগ্য হবে’। ...‘আমি বিশ্বাস করি যে, তাঁর ন্যায় একজন ব্যক্তি যদি আধুনিক বিশ্বের একনায়কত্ব গ্রহণ করতেন, তবে তিনি এমন এক উপায়ে সমস্যাসমূহের সমাধানে সক্ষম হ’তেন যার ফলে সর্বত্র শান্তি ফিরে আসতো’।[7]

স্যার উইলিয়াম মুইর বলেন, ‘এ বিষয়টি প্রশ্নাতীত যে, বিশুদ্ধ একেশ্বরবাদী ন্যায়বিচার এবং মানবতা ভিত্তিক মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত একটি বিধানের সাহায্যে মধ্য আফ্রিকার জাতিসমূহের ন্যায় অন্য জাতি সমূহ যারা মূর্তিপূজা এবং নানা ধরনের বস্ত্ত পূজায় নিমগ্ন ছিল, ইসলাম সে সকল জাতির নিকট গৃহীত হয়েছে এবং সহনশীলতার ন্যায় লক্ষণীয়ভাবে নৈতিকতার বিষয়ে ইসলাম এইসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাস্তবিকই উন্নয়ন সাধন করেছেন।[8]

এডমন্ড বার্ক লিখেছেন, ‘ইসলাম ধর্ম মুকুট পরিহিত রাজা এবং দরিদ্রতম প্রজাকে একই আইনের অধীনস্ত করেছে। এ সব আইন এমন জ্ঞানী কর্তৃক সৃষ্ট, যারা ছিলেন এ পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোত্তম জ্ঞানী এবং সর্বোত্তম আলোকপ্রাপ্ত আইনবেত্তা’।[9]  

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে এইচ. আর. গিব বলেন, ‘যদি কুরআন তার নিজস্ব রচনা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে অন্য কোন মানুষও সেটি রচনা করতে সক্ষম হ’ত। এর সঙ্গে তুলনীয় দশটি পঙ্ক্তিমালা তারা প্রস্ত্তত করুক। যদি তারা তা না করতে পারে (এটি সুস্পষ্ট যে, তারা তা পারবেনা), তবে সেক্ষেত্রে তারা কুরআনকে একটি অসাধারণ স্বাক্ষ্যযুক্ত অত্যাশ্চর্য ঘটনারূপে গ্রহণ করুক’।[10]

উপরের আলোচনা হ’তে একথা স্পষ্ট হ’ল যে, ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন। এটি একটি সামগ্রিক ও সার্বজনীন কল্যাণধর্ম। যা অমুসলিম মনীষীরাও অকপটে স্বীকার করেছেন। ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধান নিহিত আছে ইসলামের মধ্যে। সুতরাং শান্তি ও মুক্তির স্বার্থে ইসলামের কাছেই আমাদেরকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। 

সকল সমস্যায় ইসলামকেই একমাত্র সমাধান হিসাবে পরিগ্রহণ :

মানুষের জীবন আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক তথা ইবাদত ও মু‘আমালাত দু’ভাগে বিভক্ত। দু’দিকেই রয়েছে বিভিন্নমুখী সমস্যা। জাহেলী যুগে উক্ত দু’টি বিষয় ধর্মনেতা ও সমাজপতিদের হাতে ছিল। তাদের তৈরি করা ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি ও আইনের উপরেই সাধারণ জনগণকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় নির্ভর করতে হ’ত। এদেরকেই মানুষ আল্লাহর ছায়া ভাবত। ইহূদী-নাছারাগণ তো তাদের আলিম ও ধর্মযাজক ব্যক্তিদেরকে ‘রব’-এর মর্যাদা দান করেছিল। ভয় ও ভক্তির চোরাগলি দিয়ে এরা হরণ করে নিয়েছিল মানুষের স্বাধীনতা। জনগণ তাদের স্বার্থের বলি হিসাবে ব্যবহৃত হ’ত। বর্তমান যুগেও বস্ত্তবাদী শক্তিগুলি স্ব স্ব দার্শনিক পন্ডিত ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে উক্ত আসনে বসিয়েছে। জনগণের নামে সার্বভৌম ক্ষমতা তারা কতিপয় ব্যক্তির হাতে সোপর্দ করেছে। নিজেদের ইচ্ছামত আইন তৈরী করে ওটাকেই জনগণের আইন বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

অন্যদিকে ধর্মনেতারা নিজেদের কল্পিত মাযহাব ও ত্বরীকা সমূহের বেড়াজালে জনগণকে বন্দী করে ফেলেছেন। জায়েয ও নাযায়েয, সুন্নাত ও বিদ‘আত, শিরক ও তাওহীদ এমনকি হালাল-হারামও নির্ণীত হচ্ছে এঁদের নিজস্ব ফৎওয়ার উপরে। ফলে ইহূদী-নাছারাদের আলেম ও দরবেশদের ন্যায় মুসলিম উম্মাহর এইসব ধর্মনেতারা প্রকারান্তরে জনগণের রব-এর আসন দখল করেছেন। যাদেরকে এড়িয়ে নিরপেক্ষভাবে কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ করা কার্যতঃ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অথচ সকল ব্যাপারে কুরআন সুন্নাহর মূল উৎস থেকে হেদায়াত গ্রহণ করাই হ’ল মুসলিম উম্মাহ‌‌র নিকটে ইসলামের মূল দাবী। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ মুসলিম উম্মাহর আধ্যাত্মিক ও বৈষিয়ক তথা দ্বীনী ও দুনিয়াবী সকল বিষয়ে সর্বদা ইসলামকেই একমাত্র সমাধান হিসাবে বিশ্বাস করে ও সেদিকেই উম্মতকে উদাত্ত আহবান জানায়।[11]

ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি বিষয়সমূহ মানুষের জীবনের একটি বিরাট অংশ ‘মু‘আমালাত’-এর অন্তর্ভুক্ত। ইসলামী শরী‘আত উপরোক্ত সকল বিষয়েই কখনও মূলনীতি আকারে আবার কখনও        বিস্তৃতভাবে পথনির্দেশ দান করেছে। যেমন-

(১) বিচারনীতি :

সামাজিক শান্তি-শৃংখলা রক্ষার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে সুষ্ঠু বিচারনীতি। যার অভাবে সমাজে অন্যায়-অপকর্ম, যুলুম-নির্যাতন, সূদ-ঘুষ, দুর্নীতি ইত্যাদি ব্যাপকতা লাভ করে। সেকারণ ইসলাম ন্যায়বিচারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে মূলনীতি আকারে এরশাদ হয়েছে, وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার-ফায়ছালা করে না, সে ব্যক্তি কাফের’ (মায়েদা ৫/৪৪)। একই সূরার পরবর্তী ৪৫ ও ৪৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে ‘যালেম’ ও ‘ফাসেক’। স্মর্তব্য যে, যিনি আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার করতঃ মানব রচিত বিধান অনুযায়ী ফায়ছালা করেন, তিনি নিঃসন্দেহে কাফের গণ্য হবেন। আর আল্লাহর বিধানকে স্বীকার করতঃ পারিপার্শ্বিক কারণে অপারগ হ’লে তিনি ফাসেক বা যালেম হবেন। ন্যায়বিচারকদের জান্নাতের সুসংবাদ জানিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

الْقُضَاةُ ثَلاَثَةٌ وَاحِدٌ فِى الْجَنَّةِ وَاثْنَانِ فِى النَّارِ فَأَمَّا الَّذِىْ فِى الْجَنَّةِ فَرَجُلٌ عَرَفَ الْحَقَّ فَقَضَى بِهِ وَرَجُلٌ عَرَفَ الْحَقَّ فَجَارَ فِى الْحُكْمِ فَهُوَ فِى النَّارِ وَرَجُلٌ قَضَى لِلنَّاسِ عَلَى جَهْلٍ فَهُوَ فِى النَّارِ-

‘বিচারক তিন  শ্রেণীর। এক শ্রেণীর বিচারক জান্নাতী, আর দুই শ্রেণীর বিচারক জাহান্নামী। অতঃপর যিনি জান্নাতী তিনি ঐ বিচারক, যিনি হক বুঝেন এবং সে অনুযায়ী ন্যায়বিচার করেন। আর যিনি হক বুঝেন কিন্তু অন্যায় বিচার করেন তিনি জাহান্নামী এবং যিনি মানুষের মধ্যে অজ্ঞতাপ্রসূত বিচার করেন তিনিও জাহান্নামী’।[12] এই হাদীছটি সমাজের মোড়ল-মাতাববর ও গ্রাম্যবিচারক থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকসহ সর্বস্তরের সালিশ ও বিচারকদের জন্য একটি চূড়ান্ত সতর্কবাণী। এই একটি হাদীছই যথেষ্ট সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। শুধুমাত্র প্রয়োজন আল্লাহভীতি ও আখেরাতে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। আল্লাহ আমাদের ন্যায়বিচার করার তাওফীক দান করুন-আমীন!   

অতঃপর বিচারকার্যে সত্য সাক্ষ্যদানের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُونُوْا قَوَّامِيْنَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ وَلاَ يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآنُ قَوْمٍ عَلَى أَلاَّ تَعْدِلُوْا اعْدِلُوْا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُوْنَ- ‘হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে সত্য সাক্ষ্যদানে তোমরা অবিচল থাকবে। কোন দলের প্রতি বিদ্বেষ যেন তোমাদেরকে অবিচারে প্ররোচিত না করে, তোমরা ন্যায়বিচার করবে ইহাই তাক্বওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আল্লাহ্কে ভয় কর। আল্লাহ সবকিছুই খবর রাখেন, যা তোমরা কর’ (মায়েদা ৫/৮)

(২) জনগণের জান-মাল ও ইয্যতের হেফাযতের ব্যাপারে নীতিমালা :

জনগণের জান-মাল ও ইয্যতের হেফাযতের ব্যাপারে কুরআন ঘোষণা করেছে,وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ‘হে জ্ঞানীগণ! ক্বিছাছের মধ্যেই তোমাদের জীবন নিহিত আছে, যেন তোমরা সাবধান হ’তে পার’ (বাক্বারাহ ২/১৭৯)

ক্বাতাদাহ বলেন, ইহূদীদের সমাজে হত্যার বদলে হত্যা আবশ্যিক ছিল। ক্ষমার কোন সুযোগ ছিল না। নাছারাদের সমাজে হত্যাকারীকে ক্ষমা করার আদেশ দেওয়া হ’ত। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মাদীকে তিনটির যেকোন একটির আদেশ দেওয়া হয়েছে : হত্যার বদলে হত্যা অথবা ক্ষমা অথবা রক্তমূল্য গ্রহণ (কুরতুবী, ইবনু কাছীর)। এটা তাদের জন্য নিঃসন্দেহে লঘু বিধান। এখানে হত্যা বলতে ইচ্ছাকৃত হত্যা বুঝানো হয়েছে। বিদ্বানগণের মধ্যে এ বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে যে, ব্যক্তিগতভাবে কেউ কারু বদলা নিতে পারবে না। বরং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে (কুরতুবী)।[13]

মুসলমানদের পারস্পরিক রক্ত, মাল ও ইয্যত হারাম করে বিদায় হজ্জের ভাষণে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণ করেন,فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِى بَلَدِكُمْ هَذَا فِى شَهْرِكُمْ هَذَا.. ‘অতঃপর নিশ্চয়ই তোমাদের পরস্পরের রক্ত, মাল ও সম্মান আজকের এই দিবস, এই শহর ও এই মাসের ন্যায় হারাম’।[14] হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত অন্য হাদীছে তিনি বলেন,كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ ‘প্রত্যেক মুসলমানের উপরে অপর মুসলমানের রক্ত, মাল ও ইয্যত হারাম’।[15]                          [চলবে]



[1]. মুসলিম হা/৮, মিশকাত হা/২ ‘ঈমান’ অধ্যায়

[2]. তাফসীরুল কুরআন, ৩০তম পারা, পৃঃ ৪৬২-৪৬৩।

[3]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪

[4]. ইবনু মাজাহ হা/৫, সনদ হাসান।

[5]. আহমাদ হা/১৫১৫৬; মিশকাত হা/১৭৭

[6]. বুখারী হা/৪৫৫৬; মিশকাত হা/১৭৭; বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১/১১

[7]. বেগম আয়েশা বাওয়ানী, ইসলাম : প্রথম ও চূড়ান্ত ধর্ম, অনুবাদ : খন্দকার হাবীবুর রহমান (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, জুন ২০০৪), পৃঃ ৬৪।

[8]. ইসলাম : প্রথম ও চূড়ান্ত ধর্ম, পৃঃ ৬৬; গৃহীত : উইলিয়াম মুইর, মুহাম্মাদ এন্ড ইসলাম, (লন্ডন ১৮১৫), পৃঃ ২৪৬।

[9]. ঐ, পৃঃ ৭২।

[10]. ঐ, পৃঃ ৮৬; গৃহীত : এইচ. এ. আর. গিব, মুহামেডানিজম (লন্ডন, ১৯৫৩), পৃঃ ৩৩।

[11]. আহলেহাদীছ আন্দোলন: উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ, পৃ. ১৮৫-১৮৬।

[12]. আবূদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৩৭৩৫

[13]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, তাফসীরুল কুরআন, উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[14]. বুখারী হা/১৭৩৯; মুসলিম হা/১৬৭৯; মিশকাত হা/২৬৫৯

[15]. আবূদাঊদ হা/৪৮৮৪; ইবনু মাজাহ হা/৪০৬৮





ওয়াহ্হাবী আন্দোলন : উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ এবং মুসলিম বিশ্বে এর প্রভাব (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
আল্লামা আলবানী সম্পর্কে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্বের সমালোচনার জবাব (৩য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
প্রাক-মাদ্রাসা যুগে ইসলামী শিক্ষা (২য় কিস্তি) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (৫ম কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
হাদীছ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পরিক্রমা (৫ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
ভুল সংশোধনে নববী পদ্ধতি (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
অল্পে তুষ্টি (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
চিন্তার ইবাদত (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আদর্শ শিক্ষকের গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
বৈঠকের আদব বা শিষ্টাচার - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
বিদ‘আত ও তার পরিণতি (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আরও
আরও
.