পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । শেষ পর্ব ।

(৩) মানবীয় সাম্যের ব্যাপারে ইসলামের নীতিমালা : আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ  ‘হে মানব জাতি! নিশ্চয়ই আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে। অতঃপর তোমাদেরকে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরিচিতি লাভ করতে পার। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকটে সবচাইতে সম্মানিত তিনি, যিনি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক তাক্বওয়াশীল। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে পরিজ্ঞাত’ (হুজুরাত ৪৯/১৩)। অনুরূপভাবে রাসূল (ছাঃ) বিদায় হজ্জে সমবেত ছাহাবীদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত যুগান্তকারী ভাষণে বিশ্ব মানবতার সকল ভেদাভেদ ও অহংকারকে চূর্ণ করে দিয়ে যে সাম্যের বাণী শুনিয়েছিলেন তা হচ্ছে-

يَا أيُّهَا النَّاسُ إِنَّ رَبَّكُمْ وَاحِدٌ وَإِنَّ أَبَاكُمْ وَاحِدٌ أَلاَ لاَ فَضْلَ لِعَرَبِيٍّ عَلَى عَجَمِيٍّ وَلاَ لِعَجَمِيٍّ عَلَى عَرَبِيٍّ وَلاَ لِأَحْمَرَ عَلَى أَسْوَدَ وَلاَ لِأَسْوَدَ عَلَى أَحْمَرَ إِلاَّ بِالتَّقْوَى إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتْقَاكُمْ أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ؟ قَالُوْا : بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : فَيُبَلِّغ الشَّاهِدُ الغَائِبَ-

‘হে মানব জাতি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক (আল্ল­াহ) এক এবং তোমাদের পিতা (আদম) এক, অতএব সাবধান! কোন আরবী ব্যক্তির প্রাধান্য নেই অনারবী ব্যক্তির উপরে, অনারবী ব্যক্তির প্রাধান্য নেই আরবী ব্যক্তির উপরে, লাল বর্ণের প্রাধান্য নেই কালো বর্ণের উপরে, কালো বর্ণের প্রাধান্য নেই লাল বর্ণের উপরে শুধুমাত্র তাক্বওয়া ব্যতীত। নিশ্চয়ই  তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকটে সবচাইতে সম্মানিত তিনি, যিনি তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক তাক্বওয়াশীল। (অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করেন) আমি কি (আমার উপরে অর্পিত রিসালাতের দায়িত্ব) পৌঁছে দিয়েছি? ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ পৌঁছে দিয়েছেন হে আল্ল­াহর রাসূল (ছাঃ)! তখন তিনি বললেন, অতএব উপস্থিত ব্যক্তিরা যেন অনুপস্থিত ব্যক্তিদের নিকটে তা পৌঁছে দেয়’।[1]

আলোচ্য আয়াত ও হাদীছ হ’তে স্পষ্টত বুঝা যায় যে, সকল মানুষ এক আদমের সন্তান হিসাবে পরস্পর ভাই ভাই। দুনিয়ার সহায়-সম্পত্তি, যশ-খ্যাতি, মান-মর্যাদার কোনই গুরুত্ব আখেরাতে নেই স্রেফ তাক্বওয়া বা আল্লাভীতি ব্যতীত। আল্লাহর দাসত্বের অধীনে সকল বান্দা তাই সমান। যার   বাস্তবতা দেখা যায় হজ্জের ময়দানে। কি উচ্চবিত্ত, কি মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত, সকলেই সেলাই বিহীন দু’টুকরো সাদা কাপড় পরিধান করে এক কাতারে স্বীয় পালনকর্তার সামনে হাযির, সকলের মুখে একই ধ্বনি অনুরণিত হয়- لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَ شَرِيكَ لَكَ ‘আমি হাযির হে আল্লাহ, আমি হাযির। আমি হাযির, তোমার কোন শরীক নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা, অনুগ্রহ ও সাম্রাজ্য সবই তোমার; তোমার কোন শরীক নেই’।[2] অতএব প্রকৃত তাক্বওয়াশীল ব্যক্তি কখনো অহংকারী হ’তে পারে না।

(৪) পারিবারিক শৃংখলা সম্পর্কিত নীতিমালা : পারিবারিক শৃংখলা একটি পরিবারে শান্তির মূল নিয়ামক। যে পরিবারে শান্তি বিরাজ করে সে পরিবারে দারিদ্র্য জয়লাভ করতে পারে না। দু’বেলা না খেয়ে থাকলেও পারিবারিক বন্ধন ও ভালবাসা অটুট থাকে। পক্ষান্তরে যে পরিবারে শান্তি নেই সে পরিবারে অঢেল বিত্ত-বৈভব থাকলেও তার কোন মূল্য নেই। অশান্তির দাবানলে দগ্ধ হয়ে একসময় পারিবারিক কাঠামোই ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যায়। এজন্যই ইসলাম পারিবারিক শৃংখলা ও বিধি-নিষেধ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে। সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে স্ব স্ব অধিকার। মহান আল্লাহ বলেন, الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللهُ بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَبِمَا أَنْفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهُ- ‘পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল। এজন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যকে প্রাধান্য দান করেছেন এবং এজন্য যে, তারা (নারীদের ভরণ-পোষণের জন্য) তাদের মাল-সম্পদ হ’তে ব্যয় করে থাকে। অতএব সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযত করেছেন, আড়ালেও (সেই গুপ্তাঙ্গের) হেফাযত করে’ (নিসা ৪/৩৪)

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে সম্প্রীতির। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার। তবেই সংসারে শান্তি বিরাজ করবে। আল্লাহ বলেন,وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ  ‘তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে অন্যতম এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সহধর্মীনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকটে প্রশান্তি লাভ করতে পার। আর তিনি তোমাদের (স্বামী-স্ত্রীর) মধ্যে পরস্পরে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে’ (রূম ৩০/২১)

মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল!مَا حَقُّ زَوْجَةِ أَحَدِنَا عَلَيْهِ قَالَ أَنْ تُطْعِمَهَا إِذَا طَعِمْتَ وَتَكْسُوَهَا إِذَا اكْتَسَيْتَ وَلاَ تَضْرِبِ الْوَجْهَ وَلاَ تُقَبِّحْ وَلاَ تَهْجُرْ إِلاَّ فِى الْبَيْتِ. ‘আমাদের উপর স্ত্রীদের কী হক্ব রয়েছে? তিনি বললেন, যখন তুমি খাবে তখন তোমার স্ত্রীকে খাওয়াবে, যখন তুমি পরিধান করবে, তখন তাকেও পরিধান করাবে। আর তার মুখে মারবে না ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করবে না। বাড়ী ব্যতিরেকে স্ত্রীকে কোথাও একাকী ছাড়বে না’।[3] অতএব পারিবারিক শান্তি-শৃংখলার মূল বিষয় হচ্ছে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আনুগত্য ও শ্রদ্ধাশীলতা। পাশাপাশি স্ত্রীর প্রতিও স্বামীর দায়িত্বসচেতনতা।

পক্ষান্তরে স্বামীর অবাধ্যতার পরিণতি উল্লেখ করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,ثَلاَثَةٌ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ آذَانَهُمُ ... وَامْرَأَةٌ بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ .. ‘তিন ব্যক্তির ছালাত তাদের কর্ণকুহর অতিক্রম করে না (অর্থাৎ কবুল হয় না)। ...তন্মধ্যে একজন হচ্ছে ঐ মহিলা যে স্বামীর অসন্তুষ্টিতে রাত্রি যাপন করে’।[4] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ফেরেশতাগণ সকাল পর্যন্ত ঐ মহিলার উপর অভিসম্পাত করতে থাকে।[5] অবাধ্য স্ত্রীদের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,وَاللَّاتِي تَخَافُوْنَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا- ‘আর যদি তোমরা তাদের অবাধ্যতার আশংকা কর, তাহ’লে তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের বিছানা পৃথক করে দাও এবং (প্রয়োজনে) প্রহার কর। অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তাহ’লে তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোচ্চ ও মহীয়ান (নিসা ৪/৩৪)

অতঃপর শত চেষ্টার পরও স্ত্রী সংশোধিত না হ’লে অবশেষে তালাকের পথ অবলম্বন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন,يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ فَطَلِّقُوهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَأَحْصُوْا الْعِدَّةَ وَاتَّقُوا اللهَ رَبَّكُمْ ‘হে নবী! যদি তুমি স্ত্রীদের তালাক দিতে চাও, তাহ’লে ইদ্দত অনুযায়ী তালাক দাও এবং ইদ্দত গণনা করতে থাক। আর তুমি তোমার পালনকর্তাকে ভয় কর’ (তালাক ৬৫/১)। তিনি বলেন,الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوْفٍ أَوْ تَسْرِيْحٌ بِإِحْسَانٍ ‘তালাক হ’ল দু’বার। অতঃপর হয় তাকে ন্যায়ানুগভাবে রেখে দিবে, নয় সদাচরণের সাথে পরিত্যাগ করবে’ (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এখানে الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ ‘তালাক হ’ল দু’বার’ অর্থ তালাকে রাজ‘ঈ দু’বার। অর্থাৎ দু’বার তালাক প্রদানের পর স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে ফেরত নেওয়া যায়। তৃতীয় বার তালাক দিলে তা ‘বায়েন’ হয়ে যায়। তখন আর স্ত্রী ফেরত নেওয়া যায় না।

অনুরূপভাবে মন্দ স্বভাব, অক্ষম ও অপসন্দনীয় স্বামীদের ক্ষেত্রে স্ত্রীদেরও বিবাহ বিচ্ছেদ বা বন্ধন মুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যাকে ‘খোলা’ বলা হয়। ‘খোলা’ অর্থ: মুক্ত করা বা বিচ্ছিন্ন করা। স্বামীর নিকট থেকে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে নিজেকে বিচিছন্ন করে নেওয়াকে শারঈ পরিভাষায় ‘খোলা’ বলা হয়।[6] মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের কন্যা জামীলা একদিন ফজরের অন্ধকারে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দরবারে এসে তার স্বামী ছাবিত বিন ক্বায়েস বিন শাম্মাস-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করল যে, সে তাকে মেরেছে ও অঙ্গহানি করেছে। সে বলল, আল্লাহর কসম! আমি তার দ্বীন বা চরিত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি না বরং তার বেঁটে দেহ ও কুৎসিত চেহারার অভিযোগ করি। হে আল্লাহর রাসূল! যদি আল্লাহর ভয় না থাকত, তাহ’লে বাসর রাতে আমি তার মুখে থুথু নিক্ষেপ করতাম। তখন রাসূল (ছাঃ) ছাবিতকে ডাকালেন ও তার মতামত জানতে চাইলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আমি তাকে ‘মোহর’ স্বরূপ আমার সবচেয়ে মূল্যবান দু’টি খেজুর বাগান দিয়েছিলাম, যা তার অধিকারে আছে। যদি সেটা আমাকে ফেরত দেয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তখন মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি বলতে চাও? সে বলল, হ্যাঁ ফেরত দিব। চাইলে আরো বেশী দিব। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছাবিতকে বললেন, তুমি তোমার স্ত্রীকে পৃথক করে দাও। অতঃপর তাই করা হ’ল’।[7]

সুতরাং পারিবারিক নেতৃত্ব, তালাক ও খোলার ন্যায় অন্যান্য বিষয় যেমন সন্তান প্রতিপালন, সন্তানদের শিক্ষা-দীক্ষা, বিবাহ-শাদী, উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন ইত্যাদি সামগ্রিক বিষয়েই ইসলামে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। অতএব পারিবারিক যেকোন সমস্যার সুষ্ঠু ও কল্যাণকর সমাধানের জন্য ইসলামের কোন বিকল্প নেই।

(৫) অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নীতিমালা :

হালাল উপার্জন : মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অর্থের প্রয়োজন, তেমনি আখেরাতে মুক্তির জন্য প্রয়োজন হালাল উপার্জন। ইসলাম হালাল উপার্জনকে উৎসাহিত করেছে এবং হারামকে নিষিদ্ধ করেছে। কেননা ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হচ্ছে হালাল রূযী। রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ব্যতীত কবুল করেন না’।[8] হালাল ভক্ষণের নির্দেশ প্রদান করে মহান আল্লাহ বলেন,يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُوا مِمَّا فِي الْأَرْضِ حَلَالًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ ‘হে মানব জাতি! তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্ত্ত ভক্ষণ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু’ (বাক্বারাহ ২/১৬৮)। এখানে খাদ্যের জন্য দু’টি শর্ত বলা হয়েছে। হালাল হওয়া ও পবিত্র হওয়া। অতএব চুরি করা ফল পবিত্র হ’লেও তা হালাল নয়। অন্যদিকে নিজের গাছের পচা ফল হালাল হ’লেও তা পবিত্র নয়।

অন্যত্র তিনি বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ ‘হে বিশ্বাসীগণ! আমরা তোমাদের যে রূযী দান করেছি, সেখান থেকে পবিত্র বস্ত্ত সমূহ ভক্ষণ কর। আর আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা কেবল তাঁরই দাসত্ব করে থাক’(বাক্বারাহ ২/১৭২)। হালাল উপার্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَطْيَبُ الْكََسْبِ عَمَلُ الرَّجُلِ بِيَدِهِ، وَكُلُّ بَيْعٍ مَبْرُوْرٍ ‘সবচেয়ে পবিত্র উপার্জন হ’ল, মানুষের নিজ হাতের উপার্জন এবং প্রত্যেক সৎ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জন’।[9] তিনি আরো বলেন,أَرْبَعٌ إِذَا كُنَّ فِيكَ فَلاَ عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا حِفْظُ أَمَانَةٍ وَصَدْقُ حَدِيثٍ وَحُسْنُ خَلِيقَةٍ وَعِفَّةٌ فِى طُعْمَةٍ ‘যখন তোমার মধ্যে চারটি জিনিস থাকবে তখন দুনিয়ার সবকিছু হারিয়ে গেলেও বস্ত্ততঃ তোমার কিছুই হারায়নি। (১) আমানত রক্ষা করা (২) সত্য কথা বলা (৩) সুন্দর চরিত্র (৪) হালাল রূযী’।[10] হালাল রূযী এতটাই গুরুত্ববহ যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রত্যহ ফজরের ছালাতের পর এই দো‘আটি পাঠ করতেন,اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে উপকারী ইলম, পবিত্র রূযী ও কবুলযোগ্য আমল প্রার্থনা করছি’।[11]

হারাম বর্জন : হালালের বিপরীত হচ্ছে হারাম। এর অর্থ নিষিদ্ধ। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক যা চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ সেটিই হারাম। হালাল-হারাম তথা পবিত্র ও অপবিত্র কখনো সমান নয়। আল্লাহ বলেন,قُلْ لَا يَسْتَوِي الْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ وَلَوْ أَعْجَبَكَ كَثْرَةُ الْخَبِيثِ فَاتَّقُوا اللهَ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ‘বলুন! অপবিত্র ও পবিত্র কখনো সমান নয়। যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে বিস্মিত করে। অতএব হে জ্ঞানীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (মায়েদা ৫/১০০)। মুমিন জীবনে হারাম একটি অভিশাপ। এর রয়েছে মোহনীয় ও লোভনীয় শক্তি। হারামের প্রভাবে মানুষ আখেরাত ভুলে যায়। ব্যক্তির অন্তরাত্মা কলুষিত হয়ে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হয়। সমাজে অনেক লোক আছে, যারা হারাম সম্পর্কে উদাসীন। যদিও তারা ছালাত-ছিয়ামে অভ্যস্ত। তাদের এই উদাসীনতা মারাত্মক ক্ষতির কারণ। কেননা হারাম ভক্ষণে ইবাদত কবুল তো হবেই না এমনকি তার দো‘আও আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে না। রাসূল (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে বলেন যে,يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ وَغُذِىَ بِالْحَرَامِ فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ  ‘সে দীর্ঘ সফরে থাকাবস্থায় এলোমেলো কেশ ও ধূলি ধূসরিত চেহারায় দু’হাত আকাশের দিকে উত্তোলন করে হে আমার রব! হে আমার রব! বলে প্রার্থনা করছে। অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোষাক হারাম এমনকি হারাম দ্বারাই সে পরিপুষ্টি লাভ করেছে, তার প্রার্থনা কিভাবে কবুল হবে?’।[12] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন,لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِّيَ بِالْحَرَامِ ‘ঐ দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যা হারাম দ্বারা পরিপুষ্টি লাভ করেছে’।[13]

উল্লেখ্য যে, ইসলামে হালাল-হারাম সুস্পষ্টভাবে বিধৃত হয়েছে। কিন্তু এরপরেও কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা দেখা যায়। বর্তমান যুগে যা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এমন এমন পদ্ধতির ব্যবসা প্রতিনিয়ত সমাজে চালু হচ্ছে যেগুলো হালাল, না হারাম এ বিষয়ে মানুষ ধোঁকায় পড়ে যায়। এখানে গিয়ে ইসলাম এ জাতীয় সন্দিগ্ধ বিষয় থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِى الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِى الْحَرَامِ ‘হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। উভয়ের মাঝখানে রয়েছে সন্দিগ্ধ বিষয় সমূহ, যে বিষয়ে অধিকাংশ মানুষই খবর রাখে না। অতঃপর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকবে, সে তার দ্বীন ও সম্মানকে নিরাপদ করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হ’ল, সে মূলতঃ হারামে পতিত হ’ল’।[14] সুতরাং জান্নাতপিয়াসী মুমিনের জন্য ‘হারাম’ তো বটেই এমনকি সন্দেহজনক বিষয় থেকেও বেঁচে থাকা আবশ্যক।

এখানে আরো কতিপয় উল্লেখযোগ্য নীতিমালা তুলে ধরা হ’ল।-

১. অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ গ্রাস না করা : আল্লাহ বলেন,وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوا بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ ‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের সম্পদ গ্রাস করো না এবং অন্যের সম্পদ গর্হিত পন্থায় গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তোমরা জেনেশুনে তা বিচারকদের নিকট পেশ করো না’ (বাক্বারাহ ২/১৮৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা একে অপরের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না, তোমাদের পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসা ব্যতীত। আর তোমরা একে অপরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়াশীল’ (নিসা ৪/২৯)

পরের আয়াতে উক্ত নির্দেশ অমান্য করার পরিণতি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘যে কেউ সীমালংঘন ও যুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে শীঘ্রই আমরা জাহান্নামে প্রবেশ করাবো। আর সেটা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ’ (নিসা ৪/৩০)

২. সূদ-ঘুষ, জুয়া-লটারী থেকে বেঁচে থাকা : আল্লাহ বলেন, ‘যারা সূদ ভক্ষণ করে, তারা (ক্বিয়ামতের দিন) দাঁড়াতে পারবে না জ্বিনে ধরা রোগীর ন্যায় ব্যতীত। এর কারণ এই যে, তারা বলে ক্রয়-বিক্রয় তো সূদের মতোই। অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন ও সূদকে হারাম করেছেন’ (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূদ গ্রহীতা, সূদ দাতা, সূদের লেখক ও তার সাক্ষীদ্বয়কে অভিসম্পাত করেছেন। তিনি বলেন, তারা সবাই সমান অপরাধী।[15] আল্লাহ বলেন, يَمْحَقُ اللهُ الرِّبَا وَيُرْبِي الصَّدَقَاتِ وَاللهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ أَثِيمٍ ‘আল্লাহ সূদকে নিঃশেষ করেন ও ছাদাক্বায় প্রবৃদ্ধি দান করেন। বস্ত্ততঃ আল্লাহ কোন অবিশ্বাসী পাপীকে পসন্দ করেন না’ (বাক্বারাহ ২/২৭৬)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,الرِّبَا وَإِنْ كَثُرَ فَإِنَّ عَاقِبَتَهُ تَصِيرُ إِلَى قُلٍّ ‘সূদ যতই বৃদ্ধি পাক, তার পরিণতি হ’ল নিঃস্বতা’।[16] পক্ষান্তরে ছাদাক্বা যেমন দুনিয়াতে সমৃদ্ধি আনে, তেমনি আখেরাতে ছওয়াব বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ تَصَدَّقَ بِعَدْلِ تَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ، وَلاَ يَقْبَلُ اللهُ إِلاَّ الطَّيِّبَ، وَإِنَّ اللهَ يَتَقَبَّلُهَا بِيَمِينِهِ، ثُمَّ يُرَبِّيهَا لِصَاحِبِهِ كَمَا يُرَبِّى أَحَدُكُمْ فَلُوَّهُ حَتَّى تَكُونَ مِثْلَ الْجَبَلِ-  ‘যে ব্যক্তি তার পবিত্র উপার্জন থেকে খেজুর পরিমাণ ছাদাক্বা করবে, আর আল্লাহ পবিত্র ব্যতীত কবুল করেন না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর সেটি দানকারী ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন, যেভাবে তোমাদের কেউ ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন কর, এমনকি এটি (বৃদ্ধি পেয়ে) পাহাড়ের সমান হয়ে যায়’।[17]

মদ, জুয়া হারাম করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, বেদী ও শুভাশুভ নির্ণয়ের তীর সমূহ নাপাক ও শয়তানী কাজ। অতএব তোমরা এসব থেকে বিরত থাকো যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও’ (মায়েদা ৫/৯০)

৩. মজুদদারী না করা : ‘ইহতিকার’ বা মজুদদারী হচ্ছে নিষ্প্রয়োজনে বেশী দামের উদ্দেশ্যে শস্যাদি গুদামজাত করা। অথচ মানুষ ঐ শস্যের মুখাপেক্ষী।[18] ইহতিকার বা মজুদদারী সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ- ‘যে ব্যক্তি (খাদ্য) মওজুদ করল (মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে) সে মহাপাপী’।[19]

৪. ওযনে কম-বেশী না করা : ক্রয়ের সময় বেশী নেওয়া ও বিক্রয়ের সময় কম দেওয়ার এই গর্হিত কাজ বর্তমান সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। যা মহা অন্যায়। এ ধরনের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যেই আল্লাহ বলেন,وَيْلٌ لِلْمُطَفِّفِيْنَ، الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُوا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُوْنَ، وَإِذَا كَالُوهُمْ أَوْ وَزَنُوهُمْ يُخْسِرُوْنَ- ‘দুর্ভোগ মাপে কম দানকারীদের জন্য। যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন লোকদের মেপে দেয় বা ওযন করে দেয়, তখন কম দেয়’ (মুত্বাফফেফীন ৮৩/১-৩)

৫. পণ্যের দোষ গোপন না করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। কোন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের নিকট ত্রুটিপূর্ণ পণ্য বিক্রয় করা বৈধ নয়। তবে যদি সে তা বলে বিক্রয় করে, তবে তা বৈধ হবে।[20]

৬. দালালী না করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ক্রেতার ভান করে তোমরা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিও না’।[21]

৭. প্রতারণা থেকে বিরত থাকা : ধোঁকা না দেওয়া। একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বাজারের মধ্যে এক খাদ্য স্তূপের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্তূপের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিলে তার মধ্যে আর্দ্রতা পেলেন। তিনি বিক্রেতাকে বললেন, হে খাদ্য বিক্রেতা! কি ব্যাপার? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এতে বৃষ্টির পানি লেগেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তুমি তা স্তূপের উপরিভাগে রাখলে না কেন? তাহ’লে লোকে দেখতে পেত। জেনে রেখ, যে প্রতারণা করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়’।[22]

 [চলবে]


[1]. মুসনাদে আহমাদ হা/২৩৫৩৬; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০০।

[2]. বুখারী হা/১৫৪৯, ১৫৫০; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৫৪১

[3]. আবূদাঊদ হা/২১৪২; আহমাদ হা/২০০২৭; মিশকাত হা/৩২৫৯, সনদ হাসান।

[4]. তিরমিযী হা/৩৬০; মিশকাত হা/১১২২, সনদ হাসান।

[5]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬।

[6]. তালাক ও তাহলীল, পৃঃ ২১।

[7]. বুখারী হা/৫২৭৩; মুওয়াত্ত্বা হা/২০৮২; আবুদাঊদ হা/২২২৮।

[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০।

[9]. হাকেম হা/২১৫৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬০৭; মিশকাত হা/২৭৮৩।

[10]. আহমাদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৫২২২, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৭৩৩।

[11]. ইবনু মাজাহ হা/৯২৫; মিশকাত হা/২৪৯৮, সনদ ছহীহ।

[12]. মুসলিম হা/১০১৫; মিশকাত হা/২৭৬০

[13]. বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৭৮৭; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬০৯

[14]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৭৬২।

[15]. মুসলিম হা/১৫৯৮।

[16]. ইবনু মাজাহ হা/২২৭৯; আহমাদ, হাকেম, মিশকাত হা/২৮২৭।

[17]. বুখারী হা/১৪১০, ৭৪৩০; মিশকাত হা/১৮৮৮।

[18]. তুহফাতুল আহওয়াযী, ৪/৪০৪, ‘ইহতিকার’ অধ্যায়; আত-তাহরীক, জুলাই’০৮ প্রশ্নোত্তর নং ১৮/৩৭৮।

[19]. মুসলিম হা/১৬০৫; মিশকাত হা/২৮৯২।

[20]. ইবনু মাজাহ রভ/২২৪৬; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৭০৫।

[21]. বুখারী, ফাতহুল বারী ১০/৪৮৪।

[22]. মুসলিম হা/১০২।





বিতর্কের ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় - আসাদ বিন আব্দুল আযীয
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাক্বলীদ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
অছিয়ত নামা - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ছিয়ামের ফাযায়েল ও মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
কুরআন শিক্ষা ও তেলাওয়াতের ফযীলত - ইহসান ইলাহী যহীর
শয়তানের চক্রান্ত থেকে আত্মরক্ষার উপায় (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম
আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম (৬ষ্ঠ কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
চুল ও দাড়িতে কালো খেযাব ব্যবহারের বিধান - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ফৎওয়া : গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও বিকাশ (৪র্থ কিস্তি) - ড. শিহাবুদ্দীন আহমাদ, শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, রাজশাহী
ইসলামে যাচাই বাছাই - যহূর বিন ওছমান, দিনাজপুর
আল্লামা আলবানী সম্পর্কে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্বের সমালোচনার জবাব (২য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মুসলিম চেতনা - মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম, যশোর
আরও
আরও
.