কঠোর শাসক গাদ্দাফীর বিরুদ্ধে দমন-পীড়নসহ কিছু কিছু অভিযোগ ছিল। কিন্তু এ কথাও সত্য যে, তার আমলে লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা ছিল। ছিল কর্মসংস্থান। আফ্রিকা তো বটেই, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের কাছে লিবিয়া ছিল লোভনীয় কর্মক্ষেত্র। দেশটিতে গিয়ে তারা বিপুল অর্থ আয় করেছে। জীবনমানের উন্নয়ন করেছে। দারিদ্রে্যর দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু মু‘আম্মার গাদ্দাফীর পতনের পর লিবিয়ায় শুরু হয় অস্থিরতা। হানাহানি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। চরম অরাজক পরিস্থিতিতে আফ্রিকার দেশ ঘানার অনেক প্রবাসী শ্রমিক লিবিয়া ছাড়তে বাধ্য হয়। একই সঙ্গে তাদের স্বপ্নেরও সমাপ্তি ঘটে। ঐ শ্রমিকদের কাছে গাদ্দাফী ছিলেন আফ্রিকার ত্রাতা। লিবিয়ার মৃত নেতার জন্য তাদের মন এখনো কাঁদে। সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটিই উঠে এসেছে। ২০১১ সালের অক্টোবরে পশ্চিমাদের সহায়তায় লিবিয়ার চার দশকের শাসক গাদ্দাফীকে ক্ষমতাচ্যুত ও নির্মমভাবে হত্যা করে দেশটির বিদ্রোহীরা। তার পতনের সময় লিবিয়ার অধিবাসীরা ভেবেছিল, নির্দয় গাদ্দাফী উৎখাত ও নিহত হওয়ায় তাদের জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। কিন্তু তাদের সেই আশা দুরাশায় পরিণত হয়। সেখানে শুরু হয় সহিংসতা ও রাজনৈতিক সঙ্কট। গাদ্দাফীর আমলে তিন বছর লিবিয়ায় থাকা ঘানার অধিবাসী করীম মুহাম্মাদ (৪৫) তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, লিবিয়ায় সবাই সুখী ছিল। আমেরিকার মতো দেশে মানুষ সেতুর নিচে ঘুমায়। কিন্তু লিবিয়ায় তেমনটা কখনো দেখিনি। সেখানে কোন বৈষম্য ছিল না, ছিল না কোন সমস্যা। ভালো কাজ ছিল, মানুষের হাতে অর্থ ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। [দাঁত থাকতে মানুষ দাঁতের মর্যাদা বুঝে না। আর অধিকাংশ মানুষ কখনোই তার প্রকৃত শত্রুকে চিনতে পারে না, দূরদর্শী অল্প সংখ্যক মানুষ ব্যতীত (স.স.)]