১. ইমাম মালেক রাহেমাহুল্লাহ (৯৩-১৭৯ হি.)-এর নিকটে বিশ বছর অধ্যয়নকারী ছাত্র আব্দুল্লাহ ইবনু ওয়াহাব (১২৫-১৯৬ হি./৭৪৩-৮১২ খৃ.) বলেন,نَذَرتُ أَنِّي كُلَّمَا اغْتَبْتُ إِنْسَاناً أَنْ أَصُوْمَ يَوْماً فَأَجْهَدَنِي فَكُنْتُ أَغْتَابُ وَأَصُوْمُ، فَنَوَيْتُ أَنِّي كُلَمَّا اغْتَبتُ إِنْسَاناً أَنْ أَتَصَدَّقَ بِدِرْهَمٍ فَمِنْ حُبِّ الدَّرَاهِمِ تَرَكتُ الغِيْبَةَ ‘একবার আমি শপথ করলাম যে, কারো গীবত করলেই আমি একদিন ছিয়াম রাখব। কিন্তু এটা আমাকে খুব কষ্টে ফেলল। এরপরেও আমি গীবত করতাম ও ছিয়াম রাখতাম। অতঃপর আমি নিয়ত করলাম যে কারো গীবত করলেই একটি করে দিরহাম ছাদাক্বা করব। (এবার এতে কাজ হ’ল) ফলে দিরহামের ভালোবাসায় আমি গীবত ছেড়ে দিলাম (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৮/১৫)।
২. ফুযায়েল বিন ইয়ায (১০৭-১৮৭ হি.) বলেন,عَلَيْكَ بِطُرُقِ الْهُدَى وَلاَ يَضُرُّكَ قِلَّةُ السَّالِكِيْنَ، وَإِيَّاكَ وَطُرُقِ الضَّلاَلَةِ وَلاَ تَغْتَرَّ بِكَثْرَةِ الْهَالِكِيْنَ- ‘তুমি হেদায়াতের রাস্তাসমূহের পথিক হও। সঠিক পথের অনুসারীদের সংখ্যাল্পতা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর তুমি ভ্রষ্টতার রাস্তাসমূহ হ’তে বেঁচে থাক এবং ধ্বংসের পথের যাত্রীদের আধিক্য দেখে প্রতারিত হয়ো না’ (নববী, মানাসিকুল হাজ্জ ২/৬৮-৬৯; আলবানী, তাহযীরুস সাজেদ ১০৫-১০৭ পৃ.)।
৩. ইবনুল জাওযী (৫০৮-৫৯৭ হি.) বলেন,المِسْكِينُ كُلُّ المِسْكِيْنِ مَنْ ضَاعَ عُمْرَهُ فِي عِلْمٍ لَمْ يَعْمَلْ بِهِ، فَفَاتَتْهُ لَذَّاتُ الدُّنْياَ وَخَيْرَاتُ الآخِرَةِ، فَقَدِمَ مُفْلِسًا عَلىَ قُوَّةِ الحُجَّةِ عَلَيْهِ ‘সব মিসকীনের বড় মিসকীন সেই, যে তার সারাটা জীবন ব্যয় করল জ্ঞানের অন্বেষণে। অথচ সে অনুযায়ী আমল করল না। ফলে সে দুনিয়াবী সুখ থেকে বঞ্চিত হ’ল এবং আখেরাতের কল্যাণ সমূহ থেকেও বঞ্চিত হ’ল। অতঃপর নিজের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সাক্ষ্যের বোঝা নিয়ে সে নিঃস্ব অবস্থায় হাশরের ময়দানে উপস্থিত হ’ল’ (ইবনুল জাওযী, ছায়দুল খাত্বের ১৫৯ পৃ.)।
৪. আব্দুছ ছামাদ বিন মা‘ক্বিল (রহঃ) বলেন, আমি ওয়াহাব বিন মুনাবিবহকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,دَعِ الْمِرَاءَ وَالْجِدَالَ عَنْ أَمْرِكَ، فَإِنَّكَ لَا تُعْجِزُ أَحَدَ رَجُلَيْنِ: رَجُلٍ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ، فَكَيْفَ تُمَارِي وَتُجَادِلُ مَنْ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ؟ وَرَجُلٍ أَنْتَ أَعْلَمُ مِنْهُ، فَكَيْفَ تُمَارِي وَتُجَادِلُ مَنْ أَنْتَ أَعْلَمُ مِنْهُ، وَلاَ يُطِيعُكَ، فَاقْطَعْ ذَلِكَ عَلَيْكَ ‘তুমি তোমার বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হ’তে দূরে থাক। কারণ তুমি দু’জনের মধ্যে কাউকে হারাতে পারবে না। প্রথম হল সেই ব্যক্তি, যে তোমার চাইতে অধিক জ্ঞানী। আর তোমার চাইতে জ্ঞানী ব্যক্তির সাথে তুমি কিভাবে তর্ক-বিতর্ক করবে? অপর ব্যক্তি হ’ল, যার চেয়ে তুমি অধিক জ্ঞানী। আর যে তোমার চেয়ে অল্প জ্ঞানী, তার সাথে তুমি কিভাবে তর্ক-বিতর্ক করবে? সে তোমার কথা কখনোই মেনে নিবে না। অতএব তর্ক বর্জনের ওপর অবিচল থাক’ (আবুবকর আল-আজুর্রী, আশ-শারী‘আহ ১/৪৫০)।
৫. ওমর ইবনু খাত্ত্বাব রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু (মৃ. ২৩ হি./৬৪৪ খৃ.) বলেন,اعْتَزِلْ مَا يُؤْذِيكَ وَعَلَيْكَ بِالْخَلِيلِ الصَّالِحِ وَقَلَّمَا تَجِدُهُ وَشَاوِرْ فِي أَمْرِكَ الَّذِينَ يَخَافُونَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ ‘সরে যাও এমন সঙ্গী থেকে, যে তোমাকে কষ্ট দেয়। সৎ সাথীদের সঙ্গী হও, সংখ্যা যতই কম হৌক না কেন। আর যেকোন বিষয়ে পরামর্শ কর এমন ব্যক্তিদের সাথে, যারা মহান আল্লাহকে ভয় করে’ (বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৮৯৯৬, ১২/৪৭ পৃ.)।
৬. জ্যেষ্ঠ তাবেঈ সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব (১৪-৯৪ হি.) বলেন, আমার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর কোন একজন ছাহাবী কিছু উপদেশ পাঠিয়েছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন যে,عَلَيْكَ بِإِخْوَانِ الصِّدْقِ، فَكَثِّرْ فِي اكْتِسَابِهِمْ، فَإِنَّهُمْ زِينَةٌ فِي الرَّخَاءِ، وَعُدَّةٌ عِنْدَ عَظِيمِ الْبَلَاءِ، وَلَا تَهَاوَنْ بِالْحَلِفِ فَيُهِينَكَ اللهُ، وَلَا تَسْأَلَنَّ عَمَّا لَمْ يَكُنْ حَتَّى يَكُونَ، وَلَا تَضَعْ حَدِيثَكَ إِلَّا عِنْدَ مَنْ يَشْتَهِيهِ، وَعَلَيْكَ بِالصِّدْقِ وَإِنْ قَتَلَكَ الصِّدْقُ، وَاعْتَزِلْ عَدُوَّكَ، وَاحْذَرْ صَدِيقَكَ إِلاَّ الْأَمِينَ، وَلَا أَمِينَ إِلَّا مَنْ خَشِيَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ، وَشَاوِرْ فِي أَمْرِكَ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ- ‘তুমি সত্যবাদী সাথীদের সঙ্গী হও। এরূপ সাথী অন্বেষণে অধিক সচেষ্ট হও। নিশ্চয়ই তারা প্রাচুর্যের সময় তোমার সৌন্দর্য এবং ঘোরতর বিপদে তোমার অবলম্বন। বন্ধুদের তুমি তুচ্ছ জ্ঞান করো না, তাহ’লে আল্লাহ তোমাকে লাঞ্ছিত করবেন। কোন কিছু যতক্ষণ সংঘটিত না হয়, ততক্ষণ সে ব্যাপারে প্রশ্ন করো না। এমন কারু নিকটে তুমি বক্তব্য রেখো না, যে তোমার বক্তব্য শুনতে আগ্রহী নয়। সর্বদা সত্যের উপর অবিচল থাকো, যদিও সত্যের কারণে তুমি নিহত হও। শত্রুদের থেকে দূরে থাকো। বিশ্বস্ত বন্ধু ছাড়া অন্যদের ব্যাপারে সতর্ক থাকো। আর আল্লাহভীরু ব্যতীত কেউ বিশ্বস্ত বন্ধু হ’তে পারে না। যেকোন বিষয়ে পরামর্শ কর এমন ব্যক্তিদের সাথে, যারা গোপনে আল্লাহকে ভয় করে’ (বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৯৯২, ১০/৫৬০ পৃ.)।
৭. ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ রাহেমাহুল্লাহ (৬৬১-৭২৮ হি.) বলেন, ‘বান্দা সর্বদা আল্লাহর অফুরন্ত নে‘মত এবং গোনাহের মধ্যে অবস্থান করে। প্রথম কারণে সে সর্বদা শুকরিয়া আদায়ের এবং দ্বিতীয় কারণে সে সর্বদা ক্ষমা প্রার্থনার মুখাপেক্ষী। দু’টি বিষয়ই বান্দার জন্য সর্বদা অপরিহার্য। নিশ্চয় সে নে‘মতরাজির মধ্যে বসবাস করবে এবং সর্বদা তওবা ও ইস্তেগফারের মুখাপেক্ষী থাকবে’। একারণেই আদম সন্তানের নেতা, আল্লাহভীরুদের ইমাম মুহাম্মাদ (ছাঃ) প্রতিনিয়ত ক্ষমা প্রার্থনা করতেন’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ১০/৮৮)।
৮. অন্ধ কবি আবুল ‘আলা আল-মা‘আর্রী (৩৬৩-৪৪৯ হি.) বলেন,
وكَيْفَ يُؤَمِّلُ الإِنْسَانُ رُشداً + وما يَنفَكُّ مُتَّبِعاً هَواهُ
يَظُنُّ بِنَفْسِهِ شَرفاً وقَدْراً + كَأَنَّ اللهَ لَمْ يَخْلُقْ سِواه
‘কিভাবে মানুষ সুপথপ্রাপ্ত হওয়ার আশা করে, অথচ এখনো সে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে মুক্ত হ’তে পারেনি!
সে নিজেকে এমন সম্মানিত ও মর্যাদাবান মনে করে, যেন আল্লাহ তার মত আর কাউকে সৃষ্টি করেননি’ (দীওয়ানে আবুল ‘আলা আল-মা‘আর্রী ১৪৬১ পৃ.)।
৯. তাবেঈ বিদ্বান ‘আবদাহ বিন আবু লুবাবা (রহঃ) বলেন,إِذَا رَأَيْتَ الرَّجُلَ لَجُوْجاً، مُمَارِياً، مُعْجَباً، بِرَأْيِهِ, فَقَدْ تَمَّتْ خَسَارَتُهُ ‘যখন কাউকে স্বীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একগুঁয়েমী করতে, বিতর্কে লিপ্ত হ’তে এবং দম্ভ করতে দেখবে, তখন বুঝবে যে, তার সর্বনাশ পূর্ণতা লাভ করেছে’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৫/৫২৬)।
১০. আববাসীয় খলীফা আবু জা‘ফর মুনতাছির বিল্লাহ (২২২-২৪৮ হি.) বলেন, لَذَّةُ العَفْوِ أَعْذَبُ مِنْ لَذَّةِ التَّشَفِّي، وَأَقْبَحُ فَعَالِ الْمُقْتَدِرِ الانْتِقَامُ ‘ক্ষমা করার তৃপ্তি রোগমুক্তি লাভের চেয়েও মধুর। আর ক্ষমতাধরের নিকৃষ্টতম কর্ম হ’ল প্রতিশোধ গ্রহণ করা’ (যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৯/৪৫০)।
১১. ইমাম যুহরী (৫০-১২৪ হি.) বলেন,كُنَّا نَأْتِي الْعَالِمَ فَمَا نَتَعَلَّمُ مِنْ أَدَبِهِ أَحَبُّ إِلَيْنَا مِنْ عِلْمِهِ ‘আমরা (জ্ঞানান্বেষণে) আলেমদের নিকটে গমন করতাম। অতঃপর তাদের শিষ্টাচার থেকে যা শিক্ষা নিতাম, সেটি আমাদের নিকট অধিক প্রিয় ছিল তাদের নিকট জ্ঞান অর্জনের চাইতে’ (যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ৮/১৫৬)।
১২. ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,الصَّبْرِ عَلَى جَوْرِ الْأَئِمَّةِ وَتَرْكِ قِتَالِهِمْ وَالْخُرُوجِ عَلَيْهِمْ هُوَ أَصْلَحُ الْأُمُورِ لِلْعِبَادِ فِي الْمَعَاشِ وَالْمَعَادِ، وَأَنَّ مَنْ خَالَفَ ذَلِكَ مُتَعَمِّدًا أَوْ مُخْطِئًا لَمْ يَحْصُلْ بِفِعْلِهِ صَلَاحٌ بَلْ فَسَادٌ ‘শাসকদের যুলুম-অত্যাচারে ছবর করা, তাদের সাথে লড়াই পরিত্যাগ করা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হ’তে বিরত থাকা ইবাদতগুযার বান্দাদের ইহকাল ও পরকালের জন্য অধিক শ্রেয়তর বিষয়। যে ইচ্ছাকৃত বা ভুলবশতঃ এ নীতি লংঘন করে, তার কাজে কখনই কল্যাণ অর্জিত হবে না, বরং কেবল বিপর্যয়ই সৃষ্টি হবে’ (মিনহাজুস সুন্নাহ আন-নববিইয়াহ ৪/৫৩১)।
১৩. ফুযায়েল বিন ইয়ায (রহঃ) বলেন,مَا مِنْ أَحَدٍ أَحَبَّ الرِّئَاسَةَ إِلاَّ حَسَدَ وَبَغَى وَتَتَبَّعَ عُيُوبَ النَّاسِ وَكَرِهَ أَنْ يُذْكَرَ أَحَدٌ بِخَيْرٍ ‘যখন কোন ব্যক্তি নেতৃত্বের আকাংখী হয়, তখন সে হিংসা করে, সীমালংঘন করে ও মানুষের দোষত্রুটি সন্ধান করে। তার সামনে কারু সম্পর্কে ভালো আলোচনা করা হ’লে সে
তা অপসন্দ করে’ (জামেঊ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাযলিহী ১/৫৬৯)।
১৪. মিশকাতুল মাছাবীহ-এর বিশ্ববিশ্রুত ভাষ্যকার আল্লামা ত্বীবী (মৃ. ৭৪৩ হিঃ) বলেন, ‘নেতৃত্ব ও প্রতিপত্তির মোহ মানুষের অন্তরের অন্যতম জ্বালাকর বিপদ ও প্রতারণার নাম। এর দ্বারা প্রতারিত হন ওলামায়ে কেরাম ও ইবাদতগুযার বান্দাগণ এবং আখেরাতের সন্ধানী দুনিয়াত্যাগীগণ। তারা যতই নিজেদের নফসকে বশীভূত করেন ও তাকে প্রবৃত্তির চাহিদা থেকে দূরে রাখেন, সন্দেহে নিপতিত হওয়া থেকে নিরাপদ রাখেন এবং জোরপূর্বক বিভিন্ন ইবাদতে বাধ্য রাখেন না কেন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাহ্যিক পাপসমূহের আকর্ষণ হ’তে বিরত থাকতে তাদের হৃদয় ব্যর্থ হয়। ফলে তাদের আত্মা নিজ সৎআমল প্রকাশ করে এবং জ্ঞানের গভীরতা প্রদর্শন করে তৃপ্তি পেতে চায়।
সে মানুষের নিকট স্বীকৃতিলাভের প্রশান্তিতে স্বীয় গভীর সাধনার কষ্ট থেকে পরিত্রাণ খুঁজে। স্রষ্টাকে জানিয়ে সে পরিতৃপ্ত হয় না। বরং মানুষের প্রশংসায় খুশী হয়। সে কেবল আল্লাহর প্রশংসায় তুষ্ট হয় না। বরং সে কামনা করে যে মানুষ তার প্রশংসা করুক। তাকে অবলোকনের মাধ্যমে বরকত গ্রহণ করুক। তার সেবা করুক, সম্মান করুক এবং বিভিন্ন সভা-সম্মেলনে তাকে সামনে এগিয়ে দিক। এতেই তার আত্মা সর্বাধিক পরিতুষ্টি লাভ করে এবং প্রবৃত্তির সবচেয়ে বড় স্বাদ আস্বাদন করে। সে মনে করে যে, তার জীবন আল্লাহর পথে নিবেদিত এবং তারই ইবাদত সমূহে রত। অথচ তার জীবন ঐসব গোপন প্রবৃত্তির মাঝে আসক্ত। আত্মসমালোচক চেতনা ব্যতীত সে প্রবৃত্তির গভীরতা অনুধাবনে অন্ধই থেকে যায়। ফলে আল্লাহর নিকটে তার নাম মুনাফিকদের তালিকাভুক্ত হয়ে যায়, অথচ তার ধারণায় সে আললাহর নিকট তাঁর নৈকট্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত! (قَدْ أَثْبَتَ اسْمَهُ عِنْدَ اللهِ مِنَ الْمُنَافِقِينَ، وَهُوَ يَظُنُّ أَنَّهُ عِنْدَ اللهِ مِنْ عِبَادِهِ الْمُقَرَّبِينَ)، প্রকৃত সত্যসেবী মুখলিছ বান্দা ব্যতীত অন্তরের এই গোপন প্রতারণা থেকে কেউ বাঁচতে পারে না। সেজন্য বলা হয়ে থাকে যে, সত্যসেবীদের মস্তিষ্ক থেকে সর্বশেষ যা প্রকাশ পায় তা হ’ল নেতৃত্বের আকাংখা(آخِرُ مَا يَخْرُجُ مِنْ رُءُوسِ الصَّدِّيقِينَ حُبُّ الرِّيَاسَةِ)। যা শয়তানের সর্ববৃহৎ ফাঁদ। অতএব প্রশংসনীয় তিনি, যিনি অখ্যাত থাকেন (الْمَحْمُودُ هُوَ الْمَخْمُولُ)। তবে আত্মপ্রচেষ্টা ছাড়াই যাদেরকে আল্লাহ তার দ্বীনের প্রসারের মাধ্যমে সুখ্যাতি দান করেন, তারা ব্যতীত। যেমন নবী-রাসূল, খুলাফায়ে রাশেদীন, মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরাম, সালাফে ছালেহীনের ক্ষেত্রে পরিদৃষ্ট হয়। অতএব সকল প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য’ (শারহুত ত্বীবী ‘আলা মিশকাতিল মাছাবীহ ১১/৩৩৭৪, হা/৫৩২৬-এর আলোচনা দ্রঃ; মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাত হা/৫৩২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)।