অমর বাণী

 ১. ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, وضع الله المصائب والبلايا ‌والمحن ‌رَحْمَة بَين عباده يكفر بهَا من خطاياهم فَهِيَ من أعظم نعمه عَلَيْهِم وان كرهتها أنفسهم، ‘আল্লাহ তাঁর রহমত হিসাবে স্বীয় বান্দাদেরকে বিপদাপদ ও দুঃখ-কষ্ট দিয়ে থাকেন, যেন এর মাধ্যমে তাদের পাপরাশি ক্ষমা করতে পারেন। সুতরাং তাদের মনঃপূত না হলেও এই বালা-মুছীবত তাদের জন্য অনেক বড় নে‘মত স্বরূপ’।[1]

২. রাগেব ইস্পাহানী (রহঃ) বলেন,إن الطعام غذاء البدن والعلم ‌غذاء ‌الروح، ‘শরীরের খোরাক হল খাদ্য, আর রূহের খোরাক হ’ল ইলম’।[2]

৩. ইবরাহীম ইবনে আশ‘আছ (রহঃ) বলেন,أكذب الناس العائد في ذنبه، وأجهل الناس المدل بحسَنَاته، وأعلم النّاس أخْوَفُهم من الله، ‘সবচেয়ে মিথ্যুক ঐ ব্যক্তি, যে (তওবা করেও) বারবার পাপকর্মে লিপ্ত হয়। নিরেট মূর্খ ঐ ব্যক্তি, যে নেক আমল নিয়ে দম্ভ করে। আর সবচেয়ে জ্ঞানী ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী ভয় করে’।[3]

৪. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,متى ‌كان ‌المال ‌في ‌يدك وليس في قلبك لم يضرَّك ولو كَثُر، ومتى كان في قلبك ضرَّ ولو لم يكن في يديك منه شيءٌ، ‘অর্থ-বিত্ত যখন তোমার হাত থাকবে, কিন্তু তোমার অন্তরে সম্পদের মোহ থাকবে না, তখন সেই সম্পদ বেশী হ’লেও তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। কিন্তু তোমার মনে সম্পদের প্রতি যদি মোহ থাকে, তবে সেটা তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যদিও তোমার হাতে কোন টাকা-পয়সা না থাকে’।[4]

৫. ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) প্রায়ই বলতেন,لَا تَغُرَّنَّكُمْ طَنْطَنَةُ الرَّجُلِ بِاللَّيلِ يَعْنِي صَلَاتَهُ فَإِنَّ الرَّجُلَ كُلَّ الرَّجُلِ مَنْ أَدَّى الْأَمَانَةَ إِلَى مَنِ ائْتَمَنَهُ، وَمَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، ‘ব্যক্তির তাহাজ্জুদ ছালাতের ক্রন্দনধ্বনি যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে। কেননা সত্যিকারের মানুষ হ’ল সেই ব্যক্তি, যে আমানতদাতার কাছে সঠিকভাবে আমানত পৌঁছিয়ে দেয় এবং যার যবান ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদে থাকে’।[5]

৬. ইমাম ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) বলেন,إنما ‌يرفع ‌الله ‌الشخص بقدر تمسكه بسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم، ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে যে ব্যক্তি যতটুকু অাঁকড়ে ধরবে, আল্লাহ তার মর্যাদা ততটুকু বৃদ্ধি করবেন’।[6]

৭. সাহিত্যিক ইবনুল মুকাফ্ফা‘ বলেন,أَحَقُّ النَّاسِ بِالْعِلْمِ أَحْسَنُهُمْ تَأْدِيبًا، ‘ইলমের সর্বাধিক হকদার ঐ ব্যক্তি, যার আদব-আখলাক সবচেয়ে সুন্দর’।[7]

৮. আহমাদ ইবনে সিনান আল-ক্বাত্তান (রহঃ) বলেন, ‌لَيْسَ ‌فِي ‌الدُّنْيَا ‌مُبْتَدِعٌ ‌إِلَّا ‌وَهُوَ ‌يُبْغِضُ أَهْلَ الْحَدِيثِ فَإِذَا ابْتَدَعَ الرَّجُلُ نُزِعَ حَلَاوَةُ الْحَدِيثِ مِنْ قَلْبِهِ، ‘দুনিয়াতে এমন কোন বিদ‘আতী নেই, যে আহলেহাদীছের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে না। মানুষ যখন বিদ‘আত করে, তখন তার অন্তর থেকে হাদীছের স্বাদ তথা ভালবাসা উঠিয়ে নেওয়া হয়’।[8]

৯. ইবনে তায়মিয়া (রহঃ) বলেন, ‌الحسد ‌مرض ‌من ‌أمراض النفس وهو مرض غالب فلا يخلص منه إلا قليل من الناس ولهذا يقال: ما خلا جسد من حسد لكن اللئيم يبديه والكريم يخفيه، ‘হিংসা অন্তরের অন্যতম ব্যাধি। অধিকাংশ ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ বিদ্যমান। খুব কম সংখ্যক মানুষ ছাড়া এ রোগ থেকে কেউ মুক্তি পায় না। এজন্যই বলা হয়, হাসাদ মুক্ত কোন জাসাদ নেই (অর্থাৎ কোন শরীরই হিংসা মুক্ত নয়)। (পার্থক্য শুধু এতটুকুই যে,) নিকৃষ্ট শ্রেণীর লোক সেই হিংসা প্রকাশ করে, আর সম্মানিত ব্যক্তি সেটা গোপন করে রাখে’।[9]

১০. ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,الجوارح ‌السبعة وهى العين، والأذن، والفم، واللسان والفرج، واليد، والرجل: هى مراكب العطب والنجاة،...فحفظها أساس كل خير، وإهمالها أساس كل شر، ‘সাতটি অঙ্গ মুক্তি ও ধ্বংসের মূল বাহন। সেগুলো হ’ল- চোখ, কান, মুখ, জিহবা, লজ্জাস্থান, হাত ও পা। এই অঙ্গগুলোর হেফাযত সকল কল্যাণের ভিত্তি। আর এগুলোর নিয়ন্ত্রণহীনতা সব অনিষ্টের মূল’।[10]

১১. ইমাম মানাভী (রহঃ) বলেন,كل ‌نعْمَة ‌من ‌الله ‌فضل وكل نقمة مِنْهُ عدل، ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি নে‘মতই একেকটি দয়া স্বরূপ। আর তাঁর থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি শাস্তিই ন্যায়বিচার’।[11]


[1]. ইবনুল ক্বাইয়িম, মিফতাহু দারিস সা‘আদাহ ১/২৯১।

[2]. তাফসীরে রাগেব ইস্পাহানী ৫/৪৯৮।

[3]. যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ১২/৩৪৩।

[4]. ইবনুল ক্বাইয়িম, মাদারিজুস সালিকীন ২/১০৮।

[5]. ইবনু আবিদ্দুনয়া, মাকারিমুল আখলাক্ব, পৃ. ৮৯।

[6]. মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদে‘ঈ, তুহফাতুল মুজীব, পৃ. ৩৬৮।

[7]. ইবনুল মুকাফ্ফা‘, আল-আদাবুছ ছাগীর, পৃ. ১০।

[8]. খত্বীব বাগদাদী, শারফু আছহাবিল হাদীছ, পৃ. ৭৩।

[9]. ইবনে তায়মিয়া, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ১০/১২৪।

[10]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ইগাছাতুল লাহফান ১/৮০।

[11]. মানাভী, আত-তায়সীর ১/৪২৮।






আরও
আরও
.