ভারতবর্ষে দুইশ’
বছরের ইংরেজ শাসনামলে দু’টি ভয়াবহতম দুর্ভিক্ষে অনাহারে মারা যায় বাংলা
অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ১১৭৬ বঙ্গাব্দে হওয়া
প্রথম দুর্ভিক্ষ, যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ বলে পরিচিত, তাতে প্রাণহানি হয়
এক কোটি মানুষের। পরের দুর্ভিক্ষ ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ১৩৫০ বঙ্গাব্দে
হওয়া দুর্ভিক্ষ ‘পঞ্চাশের মন্বন্তর’ নামে খ্যাত, যাতে অনাহারে মারা যায় ৩০
লক্ষাধিক মানুষ।
ঐ দুই দুর্ভিক্ষই ঘটে মূলত শাসকশ্রেণীর লোভ, ক্ষমতা দখলের লড়াই আর অবিবেচনার ফলে। জাতিসংঘ জানাচ্ছে, একই কারণে তথা যুদ্ধ ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের শিকার হয়ে সাম্প্রতিক কালে নতুন শতাব্দীর ভয়াবহতম দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন।
ইয়েমেনে বর্তমানে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ অনাহারের শিকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সঊদী আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের প্রতি দেশটিতে আর সামরিক হামলা না চালানোর জন্য আহবান জানানো হয়েছে। অতিসত্বর যুদ্ধ না থামালে আগামী তিন মাসের মধ্যেই দেশটি শতাব্দীর ভয়াবহতম দুর্ভিক্ষের শিকার হ’তে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
তিন বছর আগে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী ‘সানা’সহ ইয়েমেনের বেশীরভাগ জায়গা দখল করে নিলে যুদ্ধ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সমর্থিত সঊদী আরব আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দেশটির সরকারের পক্ষাবলম্বন করে হুতিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এতে এযাবৎ অন্তত ১০ হাযার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। যুদ্ধের ফলে বর্তমানে দেশটিতে ভয়াবহ অর্থ-তারল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গেছে জিনিসপত্রের দাম, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তারা আটকা পড়েছে সরকার ও বিরোধী পক্ষের লড়াইয়ে দীর্ঘ এক গৃহযুদ্ধের মাঝে।
[জাতিসংঘকে শক্তভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে (স.স.)]