পর্ব ১। পর্ব ২। পর্ব ৩। পর্ব ৪।

পুরুষের টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান নিষিদ্ধ :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا أَسْفَلَ مِنَ الْكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِى النَّارِ، ‘টাখনুর নিচে ইযারের (লুঙ্গি, প্যান্ট) যে অংশ থাকবে সেটুকু জাহান্নামে যাবে’।[1] অন্য বর্ণনায় এসেছে,لاَ يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى مَنْ جَرَّ إِزَارَهُ بَطَرًا، ‘যে ব্যক্তি অহংকার বশতঃ টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধান করবে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না’।[2]

পুরুষের টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করা শুধু পরকালীন অকল্যাণেরই কারণ নয়, ইহকালীন স্বাস্থ্যগত বিশেষ ক্ষতিরও কারণ। পুরুষের পায়ের টাখনুতে থাকে টেস্টোস্টেরণ নামক যৌন হরমোন, যা সঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের প্রয়োজন। টাখনুকে ঢেকে রাখলে টেস্টোস্টেরণ হরমোন শুকিয়ে কমে যায়। ফলে সহজে বাচ্চা হয় না। বর্তমানে এ সমস্যাটি আমাদের সমাজে মহামারির আকার ধারণ করেছে। তাছাড়া টেস্টোস্টেরণের অভাব মস্তিষ্ক ‘ঘোলাটে’ করে দেয়। এতে মনোযোগ নষ্ট হয়। স্মৃতিশক্তিও কমে আসে ধীরে ধীরে। হয়তো এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিভিন্ন হাদীছে টাখনুর নিচে কাপড় পরাকে নিষিদ্ধ করেছেন’।[3]

বিষয়টি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ গবেষণা করে বের করেছেন এবং টাখনুর উপর কাপড় পরিধানের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। আমেরিকার মিসিগান সিটিতে একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লেখা রয়েছে, ‘টাখনুর উপর প্যান্ট পরিধান করুন। এতে টাখনু ফুলে যাওয়া, যকৃত ও উন্মাদনা রোগ থেকে রক্ষা পাবেন।[4]

টাখনুর উপর কাপড় পরার এ সুন্নাত মুসলিমগণ প্রত্যেকেই না মানলেও পশ্চিমা দেশের অমুসলিমরা এটাকে মডেল হিসাবে নিয়েছেন। বিশেষ করে ইতালিতে টাখনুর উপর কাপড় পরে ইতালিয়ান তরুণরা ফ্যাশন করছেন। দীর্ঘ দশ বছর ধরে টাখনুর উপর প্যান্ট পরা তাদের জন্য আধুনিক যুগের মডেল’।[5]

তবে মহিলাদের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরাই সুন্নাত। এ মর্মে হাদীছে এসেছে,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ ذَكَرَ الإِزَارَ فَالْمَرْأَةُ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ تُرْخِى شِبْرًا قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ إِذًا يَنْكَشِفُ عَنْهَا قَالَ فَذِرَاعًا لاَ تَزِيدُ عَلَيْهِ-

‘উম্মু সালামাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইযার সম্পর্কে আলোচনা করলেন, তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এ ব্যাপারে মহিলাদের বিধান কি? তিনি বললেন, এক বিঘত পরিমাণ ঝুলাতে পারবে। তখন উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, এমতাবস্থায় তার অঙ্গ (পা) খুলে যাবে। তিনি বললেন, তবে এক হাত, তার অধিক যেন না হয়’।[6]

মহিলারা যদি পা খোলা পায়জামা বা টাখনুর উপর কাপড় পরিধান করে, তাহ’লে তাদের নারী জনিত Hormone-এর হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে শরীরের ভিতর ফুলে যাওয়া (Vaginal Inflammation), কোমর ব্যথা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, খিঁচুনী ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়।[7]

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করা :

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। ডায়াবেটিস রোগী হ’লে অথবা ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগ থেকে রক্ষা পেতে হাঁটাহাঁটির বিকল্প খুব কমই আছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)ও হাঁটাহাঁটিকে উৎকৃষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি বলেছেন। তিনি বলেছেন,إِنَّ خَيْرَ مَا تَدَاوَيْتُمْ بِهِ السَّعُوْطُ وَاللَّدُوْدُ وَالْحِجَامَةُ وَالْمَشِىُّ- ‘তোমরা যা দ্বারা চিকিৎসা কর তার মধ্যে উত্তম হ’ল, নাকে ঔষধ দেয়া, মুখ দিয়ে ঔষধ সেবন করা, হিজামা ও হাঁটাহাঁটি করা’।[8]

হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। ছোট-বড় যে কেউ নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। প্রশ্ন জাগতে পারে ব্যায়ামের জন্য এত কিছু থাকতে হাঁটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? হাঁটলে প্রাকৃতিকভাবে পাবেন সুস্থতা ও প্রাণবন্ত অনুভূতি। আরও রয়েছে শত উপকার। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘টেসকো লিভিং ডটকম’-এ হাঁটার ১০টি উপকারিতা উল্লেখ করা হয়েছে। যা নিম্নরূপ-

১. সুস্থ হৃদপিন্ড ও সুন্দর জীবন : যারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন তাদের হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া হাঁটার সময় শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এলডিআর কমে যায় ও ভালো কোলেস্টেরল এইচডিআর-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়া শরীরের রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকে।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক এসোসিয়েশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটেন, তাদের উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। যাদের উচ্চরক্তচাপ রয়েছে, তাদের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ হয়। এছাড়া নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে শতকরা ২৭ ভাগ পর্যন্ত উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যা কমে। ফলে হার্টের বিভিন্ন রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

এদিকে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। রক্তে চিনির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ও স্থূলতার ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষজ্ঞরা।

২. বাড়বে সুস্থতা : যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে ডাক্তারের পরামর্শে তারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন। এতে অবশ্য তারা উপকার পান। মজার কথা হ’ল এতে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে যায়। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিয়মিত হাঁটলে ৬০ ভাগ পর্যন্ত কোলন ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভালো।

৩. ওযন নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম : ওযন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন রকম ব্যায়াম করতে দেখা যায়। ওযন কমাতে প্রতিদিন ৬০০ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে হবে। যেটা একদিনের খাবার থেকে প্রাপ্ত ক্যালরির চেয়ে বেশী। যার ওযন ৬০ কেজি তিনি যদি প্রতিদিন ঘণ্টায় ২ মাইল গতিতে ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করেন, তবে ৭৫ ক্যালরি শক্তি ক্ষয় করতে পারেন। ঘণ্টায় ৩ মাইল গতিতে হাঁটতে অভ্যস্ত হ’লে, ৯৯ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে পারেন। ঘণ্টায় ৪ মাইল গতিতে হাঁটলে আরও বেশী ক্যালরি ক্ষয় করতে পারবেন। এতে ক্যালরি ক্ষয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫০। তাছাড়া হাঁটলে দেহের পেশীগুলো আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

৪. স্মৃতিশক্তি বাড়ে : বয়স বাড়ার সঙ্গে সাধারণত মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়। ৬৫ বা এর বেশী বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১৪ জনের মধ্যে ১ জনের স্মৃতিভ্রম হয়। আর ৮০ বা এর বেশী বয়সীদের ৬ জনের মধ্যে ১ জনের দেখা দেয় স্মৃতি হারানোর রোগ। নিয়মিত বিভিন্ন ব্যায়াম অনুশীলনে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ে। এতে স্মৃতিহানী হওয়ার ঝুঁকি ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। যুক্তরাজ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের মধ্যে যারা সপ্তাহে অন্তত ৬ মাইল পথ হাঁটেন তাদের স্মৃতিশক্তি অটুট থাকে।

৫. জয়েন্টে ব্যথার ঝুঁকি নেই : নিয়মিত হাঁটাচলা করলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথার ঝুঁকি কমে যায়। সাধারণত বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের শরীরের বিভিন্ন হাড় ও সংযোগস্থলে ব্যথা করে। শরীরের জয়েন্টগুলোকে সুস্থ রাখতে হাঁটা নিঃসন্দেহে খুবই কার্যকর ব্যায়াম।

৬. পায়ের শক্তি বাড়ায় : হাঁটলে শুধু পায়ের শক্তিই বাড়ে না পায়ের আঙ্গুলেরও ব্যায়াম হয়। এছাড়া কোমর এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ নড়াচড়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ থাকে।

৭. বাড়ে পেশীশক্তি : হাঁটলে শুধু পা চলে না দু’হাতও সমান তালে চলে। এতে হাতের প্রতিটি জয়েন্ট, ঘাড় ও কাঁধের ব্যায়াম হয়। ব্যাকপেইনের সমস্যা কমে যেতে পারে নিয়মিত ব্যয়ামের মাধ্যমে।

৮. ভিটামিন ডি : দিনের আলোতে, বিশেষ করে সকালে হাঁটার অভ্যাস করলে শরীর ভিটামিন ডি-তে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। দৈনন্দিন খাবার থেকে খুব অল্প পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪ হাযার ৪৪৩ জনের শরীরে ভিটামিন ডি-এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে। দেখা গেছে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত রয়েছে তারা অন্যদের তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ সময় রোগটির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে পারে। গবেষকরা আরও জানান, ভিটামিন ডি অন্যান্য কোষের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। এতে ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষ সহজে অন্য কোষে ছড়িয়ে পড়তে পারে না। এজন্য হাঁটা হ’তে পারে উত্তম ব্যায়াম।

৯. প্রাণবন্ত শরীর ও মন :

সকালের প্রকৃতি এমনিতেই থাকে স্নিগ্ধ। এ সময় হাঁটার মজাই আলাদা। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের সময় মন স্বাভাবিকভাবেই ফুরফুরে থাকে, শরীর ও মন সতেজ হয়। শরীরের প্রতিটি জয়েন্টে অক্সিজেনের প্রাণপ্রবাহে মাংসপেশীগুলো শিথিল ও রিলাক্সড হয়।

১০. সুখ প্রতিক্ষণ : যাদের নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস, তাদের সঙ্গীর অভাব হয় না। একজন আরেকজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন আনন্দের মুহূর্তগুলো। সামাজিক পরিমন্ডলে প্রভাব বাড়ার পাশাপাশি মানসিক চাপ ও টেনশন কমা শুরু করে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার এক জরিপে দেখা গেছে, নিয়মিত হাঁটাচলা করলে একাকিত্বের অনুভূতি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়। এছাড়া জরিপে অংশ নেওয়া ৮৩ ভাগ মানুষ জানিয়েছেন নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে মেজায নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এতে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।[9]

খাৎনার উপকারিতা :

ইসলামের প্রতিটি বিধানই ইহকাল ও পরকালের জন্য কল্যাণকামী। এমনই একটি বিধান হ’ল খাৎনা করা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,الْفِطْرَةُ خَمْسٌ أَوْ خَمْسٌ مِنَ الْفِطْرَةِ الْخِتَانُ، وَالاِسْتِحْدَادُ، وَنَتْفُ الإِبْطِ، وَتَقْلِيمُ الأَظْفَارِ، وَقَصُّ الشَّارِبِ. ‘ফিৎরাত পাঁচটি। যথা- খাৎনা করা, নাভির নিচে ক্ষুর ব্যবহার করা, বগলের লোম উপড়ে ফেলা, নখ কাটা ও গোঁফ খাটো করা’।[10]

খাৎনা করার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা অনেক। যেমন- ‘খাৎনা দ্বারা শরীর অধিক পাকপবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকে। খাৎনা করালে শিশুদের মূত্রপথের সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। এর ফলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, জ্বর, খাবারে অনীহা এবং স্বাস্থ্য ভালো না হওয়া ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। খাৎনা করালে লিঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ হয় ও যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকি কমে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষের খাৎনা এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখে। আফ্রিকার যেসব দেশে খাৎনার হার বেশী, সেসব দেশে এইডসের হার তুলনামূলক কম’।[11]

১৯৮৯ সালে প্রকাশিত আমেরিকান সায়েন্স ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘খাৎনা এইডস থেকে রক্ষা করে’। এ প্রতিবেদনটি আমেরিকা এবং আফ্রিকায় পরিচালিত তিনটি জরিপের ভিত্তিতে রচিত হয়। এ বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় যে, খাৎনাহীন লোকদের মাঝে এইডস-এর প্রকোপ বেশী দেখা যায়।[12]

খাৎনার সুফল নিয়ে অস্ট্রেলীয় মেডিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. ব্রায়ান মরিস চমৎকার গবেষণা করেছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, যেসব বালকের খাৎনা করা হয়নি, তাদের অপেক্ষাকৃত কিডনি, মূত্রথলি ও মূত্রনালির ইনফেকশন ৪ থেকে ১০ গুণ বেশী হয়। তিনি মনে করেন, খাৎনার মাধ্যমে মূত্রনালির ইনফেকশন অন্তত এক-চতুর্থাংশ হ্রাস করা যায়’।[13]

কিন্তু ইংল্যান্ড জার্নাল ফর মেডিসিন পত্রিকার ১৯৯০ সংখ্যায় বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং কোরিয়া-ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যদের লিঙ্গ অগ্রভাগের প্রদাহ এবং যৌন রোগ থেকে রক্ষায় খাৎনা বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে’। অস্ট্রেলিয়ার একটি সাম্প্রতিক জরিপ থেকে জানা যায় যে, খাৎনাহীন মানুষের মধ্যে চার প্রকারের রোগ সচরাচর বেশী হয়। (১) লিঙ্গে পাঁচড়া (২) Candidiasis (৩) গনোরিয়া (৪) সিফিলিস।[14]

ওয়াশিংটনের সৈনিক মেডিকেল কলেজের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ বিজবেল বলেন, আমি প্রথমে খাৎনার বিরোধী ছিলাম, পরে দীর্ঘ গবেষণার ফলে প্রমাণিত হ’ল যে, মূত্রথলি ও মূত্রনালি বিষয়ক অনেক জটিল রোগের সমাধান হ’ল খাৎনা। ডাঃ রুবসন তাঁর গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন, ১৯৩০ থেকে এ পর্যন্ত ৬০ হাযার মানুষ আমেরিকায় মূত্রনালির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে কেবল ১০ জন খাৎনাকৃত, বাকী সব খাৎনাবিহীন ব্যক্তি।[15]

১৯৯০ খৃষ্টাব্দের ম্যাগাজিন ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ (New England Journal of Medicine) এ ডাক্তার শেভান লিখেছেন, ‘নিঃসন্দেহে শিশু বেলার খাৎনা আজীবন যৌনাঙ্গের পরিচ্ছন্নতা সহজসাধ্য করে। এমনিভাবে এতে করে শৈশবে লিঙ্গের অগ্রভাগের বর্ধিত চামড়ার নীচে কোন রোগের জীবাণু আশ্রয় নিতে পারে না।

১৯৮৯ খৃষ্টাব্দে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায় খাৎনাকৃত শিশুদের তুলনায় খাৎনাহীন শিশুদের মূত্রনালীর প্রদাহের আশংকা ৩৯ গুণ বেশী। ৪ কোটি শিশুদের উপর জরিপ নেওয়ার পর প্রফেসর ভয়েস ভেইস বলেন, খাৎনাহীন শিশুদের মধ্যে মূত্রনালীর প্রদাহ বেশী পাওয়া গিয়েছে। একইভাবে বিশেষজ্ঞদের আরেকটি টীমের অনুমান অনুযায়ী ‘আমেরিকায় খাৎনা প্রচলন না হ’লে প্লীহা এবং মূত্রথলির প্রদাহে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হ’ত হাযার হাযার। বৃটেনের লনেষ্ট নামক প্রসিদ্ধ ম্যাগাজিনের ১৯৮৯ সংখ্যায় বলা হয় যে, ‘জন্মের পরই শিশুদেরকে খাৎনা করানো হ’লে মূত্রনালীর প্রদাহ ৯০ শতাংশ হ্রাস পাবে’।[16]

প্রতিষেধক হিসাবে মধু :

মধু মহান আল্লাহর পক্ষ হ’তে বান্দার জন্য অপরিসীম নে‘মত। যার মধ্যে মানুষের জন্য শেফা তথা রোগমুক্তির ব্যবস্থা রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ، ‘তার পেট থেকে নির্গত হয় নানা রঙের পানীয়। যার মধ্যে মানুষের জন্য আরোগ্য নিহিত রয়েছে’ (নাহল ১৬/৬৯)

মধু দু’ভাবে ব্যবহৃত হয়। যথা- (১) বিভিন্ন রোগের প্রতিকার বা প্রতিষেধক হিসাবে (২) সরাসরি নির্দিষ্ট রোগের ঔষধ হিসাবে।

মধু নির্দিষ্ট কোন একটি রোগের প্রতিষেধক নয়। বরং মধু এমন এক পানীয় যাতে অসংখ্য রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। কেননা মধুতে এমন সকল খাদ্যগুণ ও ঔষদিগুণ রয়েছে, যা কালোজিরা ব্যতীত অন্য দ্রব্যে নেই। যেমন- মধুর শতকরা গড় উপাদান হচ্ছে ৪০.৪% লেভালুজ, ৩৪% ডেকসট্রোজ, ১.৯% সুক্রোজ, ১৭.৭% পানি, ১.৯% ডেকসট্রিন ও গাস এবং ০.১৮% ভষণ। এছাড়া মধুর মধ্যে আছে ১.৫-৬% অন্যান্য পদার্থ। আবার কারো কারো মতে, ১০০ গ্রাম মধুতে নিম্নলিখিত উপাদান পাওয়া যায়। পানি ১৪-২০ গ্রাম, শর্করা ৭০.৮০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫ মিলিগ্রাম, খনিজ লবণ ০.২ গ্রাম, আমিষ ০.৩ গ্রাম, ভিটামিন-বি ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৪.০০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ সামান্য পরিমাণ, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স সামান্য পরিমাণ। মধুতে যে সব এসিড পাওয়া যায় সেগুলির নাম সাইট্রিক, ম্যালিক, বুটানিক, গ্লুটামিক, স্যাক্রিনিক, ফরমিক, এসেটিক, পাইরোগ্লুটামিক এবং এমাইনো এসিড।[17]

মধুতে মিশ্রিত খনিজ দ্রব্যগুলি হচ্ছে পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, ফ্লোরাইড, সালফেট, ফসফেট, কপার, লৌহ, ম্যাংগানিজ প্রভৃতি। থায়ামিন, রিভোফ্লোবিন, ভিটামিন কে এবং ফলিক এসিড নামক ভিটামিন মধুতে বিদ্যমান থাকে।[18]

বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, মধুর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী জীবাণু নাশক ক্ষমতা। এই ক্ষমতার নাম ‘ইনহিবিন’। মধুর সাথে কোন তরল পদার্থ মিশ্রিত হ’লে তা তরলীভূত হয়ে পড়ে। গ্লুকোজ অক্সিডেজ নামক বিজারকের সাথে মধুর বিক্রিয়া ঘটলে গ্লুকোনা ল্যাকটোন হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডে পরিণত হয়। এই বিক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মধুতে ডুবিয়ে দিলে মারা যায়। মধু ইষ্টের (Yeast) বংশ বৃদ্ধি ঘটতে দেয় না। এ কারণে খাটি মধু বোতলজাত করে অনেক দিন রাখা যায়। মধু একটি উৎকৃষ্ট প্রিজার্ভেটিভ বা সংরক্ষক। চিকিৎসা শাস্ত্রের এলোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদীতে ঔষধী গুণ বেশী দিন ধরে রাখার জন্য ঔষধের সাথে এলকোহল বা রেকটিফাইড স্পিরিট মিশানো হয়। ইউনানীতে তৎপরিবর্তে মিশানো হয় মধু। বার্মার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীগণ শবদাহ করার পূর্বে মধুতে ডুবিয়ে রেখে সংরক্ষণ করতেন। মিসরে গিজেহ পিরামিডের গহবর মধু দ্বারা পূর্ণ করা ছিল। সারা পৃথিবীতে কাশির ঔষধ ও অন্যান্য মিষ্টি দ্রব্য তৈরী করতে প্রতিবছর কম পক্ষে ২০০ টন মধু ব্যবহৃত হয়। খুসখুসে কাশিতে মধুর সাথে লেবুর রস উপশমদায়ক। মাতাল রোগীদেরকে স্থিরাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে মধু কার্যকরী ভূমিকা রাখে।[19]

‘নিয়মিত সঠিকভাবে মধু পান করলে রক্তশূন্যতা, ডায়রিয়া বা উদরাময়, আমাশয়, হাঁপানী, কানের ব্যথা ও কান পাকা, দন্তরোগ, পেট ব্যথা, চর্মরোগ, জন্ডিস, অর্শ্বরোগসহ বেশ কিছু রোগের উপকার পাওয়া যায়’।[20]

নিয়মিত মধু পান রক্ত কণিকার সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। কাজেই এনিমিয়া আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে মধু উত্তম পানীয়। হাঁপানী রোগে মধুর স্থান সবার উপরে। প্যারিসের ইনষ্টিটিউট অব বী-কালচার-এর পরিচালক রিমে কুভিন বলেন, ‘রক্তক্ষরণ, রিকেট, ক্যান্সার এবং শারীরিক দুর্বলতায় মধুর অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। চিনির পরিবর্তে শিশুদেরকে মধু পান করতে দেয়া হয়। চিনি দন্ত ক্ষয় ঘটায় কিন্তু মধু তা করে না। মধু ব্যবহারে নবজাতক স্বাস্থ্যবান ও সবল হয়ে ওঠে। গ্লুকোজের ঘাটতিতে হৃদপেশীর শক্তি কমে যায়। মধু ব্যবহারে এ ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। ধমনী সম্প্রসারণ করোনারী শিরার রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে মধুর ভূমিকা অপরিসীম’।[21]

মধুর আরো বিশেষ কতগুলো গুণ আছে। যেমন মধু শীতল, লঘুপাক, অগ্নিবল বৃদ্ধিজনক, মলরোধক, চক্ষু পরিষ্কারক, ভগ্ন সংযোগ, ব্রণরোধক, ত্রিদোষ নাশক, শুক্রস্তম্ভ কারক এবং হিক্কা, কাশ, জ্বর, অতিসার, বমি, তৃষ্ণা, কৃমি ও বিষদোষ নাশক। নতুন মধু কিঞ্চিৎ শ্লেষ্মা বর্ধক ও শরীরের স্থুলতা সম্পাদক’।[22]

প্রতিষেধক হিসাবে কালোজিরা :

কালোজিরার গুণাগুণ ও উপকারিতা অপরিসীম, অসাধারণ ও কালজয়ী। প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা নানা রোগের প্রতিষেধক এবং পতিরোধক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ هَذِهِ الْحَبَّةَ السَّوْدَاءَ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلاَّ مِنَ السَّامِ قُلْتُ وَمَا السَّامُ قَالَ الْمَوْتُ- ‘এই কালোজিরাতে ‘সাম’ ছাড়া সব রোগের নিরাময় আছে। আমি বললাম, সাম কি? তিনি বললেন, ‘মৃত্যু’।[23] নিয়মিত ও পরিমিত কালোজিরা সেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সতেজ করে ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ও সমৃদ্ধি সাধন করে।

কালোজিরাতে প্রায় শতাধিক পুষ্টি ও উপকারী উপাদান আছে। কালোজিরা খাদ্যাভ্যাসের ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কালোজিরা ফুলের মধু উৎকৃষ্ট মধু হিসাবে বিশ্বব্যাপী বিবেচিত, কালোজিরার তেল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বর্তমানে কালোজিরা ক্যাপসুলও বাযারে পাওয়া যায়। এতে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক ক্যারোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক। এর প্রধান উপাদানের মধ্যে আমিষ ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ, স্নেহ বা ভেষজ তেল ও চর্বি ৩৫ শতাংশ। এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। প্রতি গ্রাম কালোজিরা পুষ্টি উপাদান হলো প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি ১.১৫ মাইক্রোগাম, নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রণ ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসফরাস ৫.২৫ মিলিগ্রাম, কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম, জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম, ফোলাসিন ৬১০ আইউ। কালোজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আরও আছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও স্থায়ী তেল। পাশাপাশি কালোজিরার তেলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণ, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিন ও ভিটামিন-সি ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান, যা হাযারও উপকার করে।[24]

চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেছেন, কালোজিরা হচ্ছে উষ্ণ ও শুষ্ক প্রকৃতির পথ্য। জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ পেটের আর্দ্রতার সমস্যায় এটি বেশ উপকারী। এটা গুঁড়া করে গরম পানির সাথে সেবনে প্রস্রাবের সমস্যা দূরীভূত হয়। কালোজিরার গুঁড়া সুতি কাপড়ে নিয়ে শুকলে সর্দি ও ঠান্ডা কাশিতে বেশ উপকার হয়। পানির সাথে সামান্য পরিমাণ কালোজিরা খেলে হাঁপানি রোগের প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। ভিনেগার (সিরকা)-এর সাথে গরম করে কুলি করলে দাঁতের ব্যথায় বেশ কার্যকর। অন্যত্র নবী করীম (ছাঃ) কালোজিরাকে সাধারণভাবে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের পথ্য হিসাবে অভিহিত করেছেন।

আবু বকর ইবনুল আরাবীর মতে, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের নিকট কালোজিরার মাঝে সকল রোগের আরোগ্যের উপাদান রয়েছে। তবে বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতিতে ভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।[25]

কালোজিরা তেলের উপকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, হৃদরোগজনিত সমস্যার আশঙ্কা কমায়, ত্বকের সুস্বাস্থ্য, আর্থাইটিস ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কালোজিরার তেল উপযোগী। কালোজিরা শরীরের জন্য খুব যরূরী। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে। কালোজিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে। কালোজিরা যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অর্জিত হয়। এর তেল ব্যবহারে অনিদ্রা দূর করে প্রশান্তির নিদ্রা হয়। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন থেকে শুরু করে শরীরের কোষ ও কলার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কালোজিরা। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা

কমায়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে যেসব সমস্যা হয়, সেসবের যন্ত্রণাদায়ক উপসর্গের তীব্রতা কমাতে পারে কালোজিরা। হাঁটুর/বাতের ব্যথা, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি ও উন্নয়ন, মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। দেহের সাধারণ উন্নতি, চেহারার কমনীয়তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে টনিকের মতো কাজ করে কালোজিরা।

বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ সারাতে, শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, হজম সমস্যা দূরীকরণে, লিভারের সুরক্ষায়, রুচি বাড়াতে, ভাইরাস, ছত্রাক, যকৃতের বিষক্রিয়া নাশ ও প্রতিরোধে কালোজিরা কার্যকর। টিউমার এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কালোজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কালোজিরাকে এ্যান্টিসেপটিক বলেও অনেক ভেষজবিদ মনে করেন। কালোজিরায় রয়েছে শরীরের রোগ জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এ উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোঁড়া, সংক্রামক রোগ বা ছোঁয়াচে রোগ হয় না।[26]

 [ক্রমশঃ]

ক্বামারুয্যামান বিন আব্দুল বারী

মুহাদ্দিছ, বেলটিয়া কামিল মাদ্রাসা, জামালপুর।


[1]. বুখারী হা/৫৭৮৭; নাসাঈ হা/৫৩৩১।

[2]. বুখারী হা/৫৭৮৮; মুসলিম হা/২০৮৭; আবূদাঊদ হা/৪০৯৩।

[3]. কালের কণ্ঠ, ৮ জুলাই ২০১৯।

[4]. সুন্নাতে রাসূল (ছাঃ) ও আধুনিক বিজ্ঞান ১/১৩৫-১৩৬ পৃঃ।

[5]. ডিবিসি নিউজ, ১৫ মে, ২০১৯।

[6]. আবূদাঊদ হা/৪১১৭; নাসাঈ হা/৫৩৩৬; ছহীহাহ হা/১৮৬৪।

[7]. সুন্নাতে রাসূল (ছাঃ) ও আধুনিক বিজ্ঞান ১/১৩৬ পৃঃ।

[8]. তিরমিযী হা/২০৫৩ ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়, সনদ ছহীহ।

[9]. ফজলে আজিম, বিডিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ১২ই মার্চ, ২০১৪।

[10]. বুখারী হা/৫৮৮৯; মুসলিম হা/২৫৭; আহমাদ হা/৭১৪২।

[11]. মুফতি মাহমুদ হাসান, সুন্নাতে খাৎনার বিস্ময়কর সুফল (প্রবন্ধ) কালের কণ্ঠ, ৭ই এপ্রিল ২০১৭।

[12]. সুন্নাতে রাসূল ও দাতব্য ও আধুনিক বিজ্ঞান ৩/৮২ পৃঃ।

[13]. কালের কণ্ঠ, ৭ই এপ্রিল ২০১৭।

[14]. সুন্নাতে রাসূল (ছাঃ) ও আধুনিক বিজ্ঞান ৩/৮১ পৃঃ।

[15]. কালের কণ্ঠ, ৭ই এপ্রিল ২০১৭।

[16]. প্রাগুক্ত, ৩/৮০-৮১ পৃঃ।

[17]. Scientific Indications in the holy Quran. (Dhaka : Islamic Foundation Bangladesh, 1995) P. 288, কৃষি ও বনায়ন (ঢাকা : ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী, ইফাবা, ২য় প্রকাশ ১৯৯৭), ১৪২-১৪৩ পৃঃ।

[18]. ডাঃ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান, বিজ্ঞানের আলোকে কুরআন সুন্নাহ (ঢাকা : কাসেমিয়া লাইব্রেরী, ১৯৯৯), পৃঃ ২৪; মাসিক আত-তাহরীক, এপ্রিল-মে ২০০২, পৃঃ ২০।

[19]. ইসলামী বিধান ও আধুনিক বিজ্ঞান পৃঃ ১৪৫-১৪৬।

[20]. মাসিক অগ্রপথিক (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), এপ্রিল ২০০১, পৃঃ ১১৪।

[21]. ইসলামী বিধান ও আধুনিক বিজ্ঞান, পৃঃ ১৪৬।

[22]. মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, বিজ্ঞান না কোরআন (কলিকাতা : মল্লিক ব্রাদার্স, ১৯৯৬), পৃঃ ৩১৯।

[23]. বুখারী হা/৫৬৮৭, ৫৬৮৮; মুসলিম হা/২২১৫; ইবনু মাজাহ হা/৩৪৪৭।

[24]. ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কালিজিরা ম্যাজিক ফসল, কৃষিতথ্য সার্ভিস (এআইএস), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

[25]. তাহক্বীক্ব মিশকাতুল মাছাবীহ ৫/২৮৮ পৃঃ।

[26]. কালিজিরা ম্যাজিক ফসল।






বিষয়সমূহ: চিকিৎসা
আল্লাহর উপর ভরসা - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
অভ্যাসকে ইবাদতে পরিণত করার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
নববী চিকিৎসা পদ্ধতি (৩য় কিস্তি) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ভয়াবহ দূষণ, বিপর্যস্ত জীবন! - মুহাম্মাদ আব্দুছ ছবূর মিয়া, ঝিনাইদহ
হতাশার দোলাচলে ঘেরা জীবন : মুক্তির পথ - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
মুসলিম শিশুর জন্ম পরবর্তী করণীয় - মুহাম্মাদ আব্দুল হামীদ
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (৪র্থ কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
পুলছিরাত : আখেরাতের এক ভীতিকর মনযিল (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
রামাযানের প্রভাব কিভাবে ধরে রাখব? - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
ছাহাবী ও তাবেঈগণের যুগে মহামারী ও তা থেকে শিক্ষা - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
মানবাধিকার ও ইসলাম (৯ম কিস্তি) - শামসুল আলম
রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আয় শামিল হওয়ার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
আরও
আরও
.