সাম্যবাদী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিডেল ক্যাস্ট্রো (Fidel Castro) মৃত্যুবরণ করেছেন। ২৫শে নভেম্বর শুক্রবার কিউবার রাজধানী হাভানায় স্থানীয় সময় রাত্রি সাড়ে ১০-টায় ৯০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বাণী দিয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। তবে তার মৃত্যুতে আনন্দ মিছিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ভিন্ন মতাবলম্বী কিউবানরা। যেখানে প্রায় ২০ লাখ কিউবানের বসবাস।

১৯২৬ সালে কিউবার পূর্বাঞ্চলে বিরান যেলায় স্পেনীয় বংশোদ্ভূত এক অভিবাসী পরিবারে ফিডেল ক্যাস্ট্রোর জন্ম। আইনের স্নাতক  হিসাবে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করেন। অতঃপর একজন আইনজীবী হিসাবে পেশা জীবনের শুরুতে দরিদ্র মক্কেলদের পক্ষে লড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই সুনাম অর্জন করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি কিউবান পিপলস পার্টির সদস্য হন।  মার্কিন ব্যবসায়ী শ্রেণী ও সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অবিচার, দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও নিম্ন মজুরির অভিযোগ নিয়ে লড়াইয়ের আহবান জানিয়ে তুখোড় বক্তা ফিদেল দলের তরুণ সদস্যদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ১৯৫২ সালে জেনারেল বাতিস্তা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে কিউবার ক্ষমতা দখল করেন। এসময় সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন ক্যাস্ট্রো। অতঃপর ১৯৫৩ সালে ছোট একটি বিদ্রোহী বাহিনী নিয়ে হামলা শুরু করেন সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। পরিণামে তাঁকে কারাগারে যেতে হয়। দু’বছর কারাভোগের পর ক্যাস্ট্রো মেক্সিকোয় নির্বাসনে যান। বন্ধু চে গুয়েভারার ভাষায়- আমরা যখন মেক্সিকোর উদ্দেশ্যে কিউবা ত্যাগ করি, তখন ফিদেল দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা আবার ফিরব, আবার লড়ব, আমরাই বিজয়ী হব। অতএব কান্না বন্ধ করে লড়াই চালিয়ে যাও’। অতঃপর ১৯৫৫ সালে বন্ধু চে গুয়েভারাকে নিয়ে তিনি পুনরায় গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেন। ১৯৫৯ সালে বাতিস্তা সরকারকে উৎখাত করে কিউবার প্রধানমন্ত্রী হন। তারপর রাষ্ট্রপতি হন ১৯৭৬ সালে। ফিদেল তার রাষ্ট্র পরিচালনায় অনেক সময় অনেক কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসব সিদ্ধান্তের সমালোচনাও হয়েছে। তবে তিনি বারবার বলতেন, আমাকে ঘৃণা কর, কোন সমস্যা নেই; তবে দেশের কল্যাণ বুঝে যেসব সিদ্ধান্ত আমি নিয়েছি, আমার দৃঢ় বিশ্বাস সেই নিরিখে ইতিহাস আমাকে ক্ষমা করবে। দীর্ঘ ৪৭ বছর যাবৎ বিপুল জনপ্রিয়তার সাথে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করে ২০০৬ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ছোট ভাই রাউল ক্যাস্ট্রোর কাছে তিনি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

তার গুরুত্বপূর্ণ বাণীসমূহের অন্যতম হ’ল- ‘আমি ৮২ জনকে নিয়ে বিপ্লব শুরু করি। তা যদি আমাকে আবার করতে হয়, তবে আমি ১০ বা ১৫ জন এবং দৃঢ় বিশ্বাসকে সাথে নিয়ে করব। সংখ্যায় আপনি কত কম, সেটা কোন বিষয় নয়, যদি আপনার বিশ্বাস ও কর্মপরিকল্পনা থাকে’।

উলে­খ্য, ৯০ বছরের জীবনে ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে ৬৩৮ বার হত্যার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রত্যেকটিই ছিল অভিনব। একবার তার স্ত্রীকে হাত করে বিষযুক্ত ক্যাপসুল দিয়ে হত্যা পরিকল্পনা করে সিআইএ। কিন্তু ক্যাস্ট্রো তা আগেই জেনে ফেলেন এবং স্বীয়   পিস্তল স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়ে তাকে বিষ নয়, বরং সরাসরি গুলি করে হত্যা করতে বলেন। কিন্তু স্ত্রী তা পারেনি।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তার খাবারে বিষ রেখে, তার ব্যবহৃত কলমে বিষযুক্ত সুঁচ রেখে, পোশাকে জীবাণু ছড়িয়ে দিয়ে ও বোমা পেতে রেখে তাকে হত্যার চেষ্টা চালায় সিআইএ।

ফিডেল ব্যক্তিপূজা পসন্দ করতেন না। তার নযীর রেখে গেছেন মৃত্যুর সময়ও। অন্তিম ইচ্ছা হিসাবে বলে গেছেন, দেশের কোথাও যেন তার মূর্তি, সৌধ, স্মৃতিস্মারক বা নামফলক তৈরী না হয়।






বাংলাদেশের মুগ্ধতায় অর্ধ শতাব্দী পার করলেন যে বৃটিশ নারী
আইসিডিডিআরবির গবেষণা টাইফয়েড শনাক্ত করার নতুন পদ্ধতি
চাউল চিকন করতে গিয়ে প্রতি বছর ১৬ লাখ টন চাল মিলে নষ্ট হচ্ছে -খাদ্যমন্ত্রী
২০১৫ সালে নোবেল বিজয়ী যারা
ভালোবাসায় সাপও প্রাণ দেয়!
সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণের মূর্তিটি মূর্তি নয়, ভাস্কর্য - -এ্যাটর্নি জেনারেল
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের আহবান জাতিসংঘের
স্বদেশ-বিদেশ
সিগারেট নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে নিউজিল্যান্ড
যুদ্ধের চেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৪ গুণ বেশী মার্কিন সেনা
করোনায় বাংলাদেশসহ ৫৭ দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ বেকার : গ্যালাপ
বিবাহ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিশ্বযুদ্ধ চলছে : পোপ ফ্রান্সিস
আরও
আরও
.