পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । শেষ পর্ব 

পাত্র বিষয়ক মাসআলা

الآنية-এর পরিচিতি : যে পাত্রে পানি অথবা অন্য কোন খাদ্য সংরক্ষণ করা হয় তাকে الآنية বলা হয়। এর আসল বা মূল হ’ল হালাল হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, هُوَ الَّذِيْ خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيْعًا ‘তিনি যমীনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন’ (বাক্বারাহ ২৯)। আর পাত্র আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টি সমূহের অন্তর্ভুক্ত। অতএব পাত্র যতক্ষণ পর্যন্ত অপবিত্র হওয়ার যথাযথ দলীল পাওয়া না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত তা পবিত্র।

স্বর্ণ ও রৌপ্যের তৈরী পাত্রের ব্যবহার এবং তাতে রক্ষিত পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জনের হুকুম :

স্বর্ণ ও রৌপ্যের তৈরী পাত্রে শুধুমাত্র খাওয়া ও পান করা হারাম। এছাড়া অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা জায়েয। হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى قَالَ خَرَجْنَا مَعَ حُذَيْفَةَ وَذَكَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : لاََ تَشْرَبُوْا فِيْ آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ، وَلاَ تَلْبَسُوْا الْحَرِيْرَ وَالدِّيْبَاجَ فَإِنَّهَا لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَكُمْ فِي الآخِرَةِ.

ইবনু আবি লায়লা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা হুযায়ফা (রাঃ)-এর সঙ্গে বাইরে বের হ’লাম। এ সময় তিনি নবী করীম (ছাঃ)-এর কথা আলোচনা করেন যে, তিনি বলেছেন, তোমরা স্বর্ণ ও রেŠপ্যের পাত্রে পান করবে না। আর মোটা বা পাতলা রেশম বস্ত্র পরিধান করবে না। কেননা এগুলো দুনিয়াতে তাদের (অমুসলিমদের) জন্য। আর তোমাদের জন্য রয়েছে আখিরাতে।[1] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : الَّذِيْ يَشْرَبُ فِيْ إِنَاءِ الْفِضَّةِ إِنَّمَا يُجَرْجِرُ فِيْ بَطْنِهِ نَارَ جَهَنَّمَ.

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সহধর্মিনী উম্মু সালামাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রেŠপ্যের পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের অগ্নি প্রবিষ্ট করায়’।[2]

উলিলখিত হাদীছদ্বয়ে স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্র শুধুমাত্র খাওয়া এবং পান করার কাজে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা জায়েয। এসব পাত্রে রাখা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করাও জায়েয। কেননা যদি অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যবহার অবৈধ হ’ত তাহ’লে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) শুধুমাত্র নির্দিষ্টভাবে খাওয়া ও পান করতে নিষেধ করতেন না।[3]

কাফিরদের পাত্র ব্যবহার করার হুকুম :

যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, কাফিরদের ব্যবহারিক পাত্রে কোন অপবিত্র বস্ত্ত তোলা হয়নি, তাহ’লে তা ব্যবহার করা হালাল। আর যদি জানা যায় যে, তাতে অপবিত্র বস্ত্ত তোলা হয়েছে এবং সে পাত্র ছাড়া অন্য কোন পাত্র পাওয়া না যায়, তাহ’লে তা ভালভাবে ধৌত করে ব্যবহার করা জায়েয। হাদীছে এসেছে, আবু ছা‘লাবা খুশানী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বাস করি, তাদের পাত্রে আহার করি। আর আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি, শিকার করি তীর ধনুক দিয়ে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে এবং প্রশিক্ষণ বিহীন কুকুর দিয়েও। অতএব আমাকে বলে দিন, এর মধ্যে আমাদের জন্য কোন্টি হালাল? তিনি বললেন, তুমি উল্লেখ করেছ যে, তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস কর, তাদের পাত্রে খানা খাও। তবে যদি তাদের পাত্র ব্যতীত অন্য পাত্র পাও, তাহ’লে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি না পাও, তাহ’লে ঐগুলো ধুয়ে নিয়ে তাতে আহার করবে। আর তুমি উল্লেখ করেছ যে তুমি শিকারের অঞ্চলে থাক। তুমি যা তীর ধনুক দ্বারা শিকার কর, তাতে তুমি বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে যা শিকার কর, তাতে বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। আর তুমি যদি প্রশিক্ষণ বিহীন কুকুর দ্বারা শিকার কর, সেক্ষেত্রে যদি যবেহ করা যায়, তাহ’লে খেতে পার’।[4]

পক্ষান্তরে যদি জানা না যায় যে, কাফিরদের পাত্রে কোন অপবিত্র বস্ত্ত তোলা হয়েছে কি-না? তাহ’লে তা ব্যবহার করা জায়েয। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও তাঁর ছাহাবীদের একজন মুশরিক মহিলার মশক হ’তে পানি নিয়েছিলেন এবং তা পান করেছিলেন ও ওযূ করেছিলেন।[5]

মৃত পশুর চামড়া দ্বারা তৈরী পাত্র ব্যবহারের হুকুম :

যে পশুর গোশত খাওয়া হালাল সে পশু মৃত্যুবরণ করলে তার চামড়া লবণ বা অনুরূপ পদার্থ দ্বারা পাকা করলে তা পবিত্র হয় এবং তা ব্যবহার করা জায়েয। পক্ষান্তরে যে পশুর গোশত খাওয়া হারাম তার চামড়া পাকা করার মাধ্যমে পবিত্র হয় না এবং তা ব্যবহার করাও জায়েয নয়। এ প্রসঙ্গে হাদীছে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ يَقُوْلُ : أَيُّمَا إِهَابٍ دُبِغَ فَقَدْ طَهُرَ.

ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে চামড়া পাকা করা হয় তা পবিত্র’।[6] অন্য হাদীছে এসেছে, মায়মূনা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, এক সময় মায়মূনার এক দাসীকে ছাদাক্বা হিসাবে একটি ছাগল দেওয়া হয়েছিল। একদিন সেটা মরে গেল (তা ফেলে দেওয়া হ’ল)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, তোমরা এর চামড়া খুলে পাকা করে নিলে না কেন? তাহ’লে প্রয়োজনে ব্যবহার করে উপকৃত হ’তে পারতে। সবাই বলল, ওটা মরে গিয়েছিল তাই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, মরে গেলে তো তা খাওয়া হারাম’ (কিন্তু তার চামড়া ব্যবহার করা তো হারাম নয়)।[7]

অতএব যে পশুর গোশত খাওয়া হালাল, সে পশু মারা গেলে তার পাকাকৃত চামড়া দ্বারা তৈরী পাত্র ব্যবহার করা জায়েয। শায়খুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া এবং মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) অনুরূপ ফৎওয়া প্রদান করেছেন।[8]

পেশাব-পায়খানা সম্পর্কিত মাসআলা

ইসতিনজা তথা মল-মূত্র ত্যাগের পর পবিত্রতা অর্জন :

মল-মূত্র ত্যাগের পর পবিত্রতা অর্জনের দু’টি মাধ্যম রয়েছে। তা হ’ল-

১- ইসতিনজা : পানি দ্বারা ধৌত করে পবিত্রতা অর্জন করা।

২- ইসতিজমার : পবিত্র ঢিলা অথবা পাথর কিংবা অনুরূপ পবিত্র বস্ত্ত দ্বারা মাসেহ করে পবিত্রতা অর্জন করা।

উল্লিখিত দু’টি মাধ্যমের যেকোন একটি দ্বারা মল-মূত্র ত্যাগের পরে পবিত্রতা অর্জন করা জায়েয।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْخُلُ الْخَلاَءَ فَأَحْمِلُ أَنَا وَغُلاَمٌ نَحْوِى إِدَاوَةً مِّنْ مَّاءٍ وَعَنَزَةً فَيَسْتَنْجِى بِالْمَاءِ.

আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) টয়লেটে প্রবেশ করতেন, তখন আমি ও আমার মত একজন গোলাম একটি চামড়ার তৈরী ছোট পাত্রে পানি ও একটি বর্শা বা বল্লম নিয়ে যেতাম। অতঃপর তিনি পানি দ্বারা ইসতিনজা করতেন।[9]

আর যদি কেহ ইসতিজমার তথা পাথর বা অনুরূপ কোন পবিত্র বস্ত্ত যেমন- ঢিলা, টিস্যু, কাগজ ইত্যাদি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে চায়, তাহ’লে সে যেন তিনবারের কম মাসেহ না করে।

عَنْ سَلْمَانَ قَالَ قِيْلَ لَهُ قَدْ عَلَّمَكُمْ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم كُلَّ شَىْءٍ حَتَّى الْخِرَاءَةَ. قَالَ فَقَالَ أَجَلْ لَقَدْ نَهَانَا أَنْ نَسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةَ لِغَائِطٍ أَوْ بَوْلٍ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِالْيَمِيْنِ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِأَقَلَّ مِنْ ثَلاَثَةِ أَحْجَارٍ أَوْ أَنْ نَسْتَنْجِىَ بِرَجِيْعٍ أَوْ بِعَظْمٍ.

সালমান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাকে বলা হ’ল, তোমাদের নবী (ছাঃ) তোমাদেরকে সব কিছুই শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি পায়খানা করার নিয়মও শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিষেধ করেছেন, পেশাব-পায়খানার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ করতে, ডান হাত দ্বারা ইসতিনজা করতে, তিনটির কম পাথর (ঢিলা) দ্বারা ইসতিনজা করতে, গোবর অথবা হাড্ডি দ্বারা ইসতিনজা করতে।[10] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا ذَهَبَ أَحَدُكُمْ إِلَى الْغَائِطِ فَلْيَذْهَبْ مَعَهُ بِثَلاَثَةِ أَحْجَارٍ يَسْتَطِيْبُ بِهِنَّ فَإِنَّهَا تُجْزِئُ عَنْهُ.

আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় যাবে, সে যেন তিনটি পাথর নিয়ে যায়। সে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। আর এটাই তার জন্য যথেষ্ট হবে’।[11]

পেশাব-পায়খানা করার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ করে বসার হুকুম :

খোলা মাঠে পেশাব-পায়খানা করার সময় ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ ফিরে বসা জায়েয নয়।

عَنْ أَبِيْ أَيُّوْبَ الأَنْصَارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ فَلاَ تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ، وَلاَ تَسْتَدْبِرُوْهَا وَلَكِنْ شَرِّقُوْا، أَوْ غَرِّبُوْا قَالَ أَبُوْ أَيُّوْبَ فَقَدِمْنَا الشَّأْمَ فَوَجَدْنَا مَرَاحِيْضَ بُنِيَتْ قِبَلَ الْقِبْلَةِ فَنَنْحَرِفُ وَنَسْتَغْفِرُ اللهَ تَعَالَى.

আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমরা পায়খানা করতে যাও, তখন ক্বিবলার দিকে মুখ করবে না কিংবা পিঠও দিবে না, বরং তোমরা পূর্ব দিকে অথবা পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে’। আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) বলেন, আমরা যখন সিরিয়ায় এলাম তখন পায়খানাগুলো ক্বিবলামুখী বানানো পেলাম। আমরা কিছুটা ঘুরে বসতাম এবং আল্লাহ তা‘আলার নিকট তওবা ইসতিগফার করতাম।[12]

যেহেতু মদীনাবাসীদের ক্বিবলাহ দক্ষিণে, সেহেতু আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ না করে পূর্ব এবং পশ্চিমে মুখ অথবা পিঠ ফিরে পেশাব-পায়খানা করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং আমাদের ক্বিবলাহ যেহেতু পশ্চিম দিকে সেহেতু খোলা মাঠে পেশাব-পায়খানা করার সময় উত্তর ও দক্ষিণে মুখ অথবা পিঠ ফিরে বসতে হবে।

পক্ষান্তরে যদি ঘরের মধ্যে পেশাব-পায়খানা করে অথবা ক্বিবলার দিকে কোন দেয়াল থাকে তাহ’লে ক্বিবলার দিকে মুখ অথবা পিঠ ফিরে পেশাব-পায়খানা করা জায়েয।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ ارْتَقَيْتُ فَوْقَ ظَهْرِ بَيْتِ حَفْصَةَ لِبَعْضِ حَاجَتِيْ فَرَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقْضِيْ حَاجَتَهُ مُسْتَدْبِرَ الْقِبْلَةِ مُسْتَقْبِلَ الشَّأْمِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বিশেষ এক প্রয়োজনে হাফছাহ (রাঃ)-এর ঘরের ছাদে উঠলাম। তখন দেখলাম, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ক্বিবলার দিকে পিঠ দিয়ে শামের দিকে মুখ করে তাঁর প্রয়োজন পূর্ণ করতে (পেশাব-পায়খানা) বসেছেন।[13] অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ مَرْوَانَ الأَصْفَرِ قَالَ رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ أَنَاخَ رَاحِلَتَهُ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ ثُمَّ جَلَسَ يَبُوْلُ إِلَيْهَا فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَلَيْسَ قَدْ نُهِىَ عَنْ هَذَا قَالَ بَلَى إِنَّمَا نُهِىَ عَنْ ذَلِكَ فِى الْفَضَاءِ فَإِذَا كَانَ بَيْنَكَ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ شَىْءٌ يَسْتُرُكَ فَلاَ بَأْسَ.

মারওয়ান আল-আছফার (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু ওমর (রাঃ)-কে তাঁর উষ্ট্রীর উপর ক্বিবলার দিকে মুখ করে বসে থাকতে দেখেছি। অতঃপর তিনি বসে পেশাব করতে লাগলেন। তখন আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! এই ব্যাপারে কি নিষেধ করা হয়নি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, এই ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে, তবে তা খোলা জায়গায়। অতএব তোমার মাঝে এবং ক্বিবলার মাঝে যদি এমন কিছু থাকে যা তোমাকে

আড়াল করবে, তাহ’লে কোন অসুবিধা নেই।[14]

টয়লেটে প্রবেশকারীর জন্য সুন্নাত কাজ সমূহ :

(ক) বিসমিল্লাহ বলে টয়লেটে প্রবেশ করা :

আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, سِتْرُ مَا بَيْنَ الْجِنِّ وَعَوْرَاتِ بَنِيْ آدَمَ إِذَا دَخَلَ الْكَنِيْفَ أَنْ يَّقُوْلَ : بِسْمِ اللهِ. ‘আদম সন্তানের লজ্জাস্থান এবং জিনের মাঝে পর্দা হ’ল যখন সে টয়লেটে প্রবেশ করবে, তখন বলবে ‘বিসমিল্লাহ’।[15]

(খ) টয়লেটে প্রবেশের দো‘আ পাঠ :

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْخَلاَءَ قَالَ: اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন তিনি বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।[16]

অতএব টয়লেটে প্রবেশের দো‘আ হ’ল, بِسْمِ اللهِ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ ‘আল্লাহর নামে টয়লেটে প্রবেশ করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও নারী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

(গ) টয়লেট থেকে বের হয়ে দো‘আ পাঠ করা :

عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنَ الْغَائِطِ قَالَ غُفْرَانَكَ.

আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) যখন পায়খানা হ’তে বের হ’তেন তখন বলতেন, غُفْرَانَكَ ‘তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’।[17]

(ঘ) নিতম্ব মাটির নিকটবর্তী করার পরে কাপড় উত্তোলন করা :

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ حَاجَةً لاَ يَرْفَعُ ثَوْبَهُ حَتَّى يَدْنُوَ مِنَ الأَرْضِ.

ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন (পেশাব-পায়খানার) প্রয়োজন মেটানোর ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি মাটির নিকটবর্তী না হয়ে কাপড় উত্তোলন করতেন না।[18]

(ঙ) টয়লেটে প্রথমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। এর দ্বারা বাম দিকের চেয়ে ডান দিকের ফযীলত বৃদ্ধি করা হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ডান দিকের ফযীলত বেশী হওয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মসজিদে প্রথমে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করতে বলেছেন এবং বাম পা দিয়ে বের হ’তে বলেছেন। জুতা পরিধান করার সময় ডান পা দিয়ে শুরু করতে বলেছেন এবং খোলার সময় বাম পা দিয়ে শুরু করতে বলেছেন। অনুরূপভাবে টয়লেটে প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং বের হওয়ার সময় প্রথমে ডান পা দিয়ে বের হ’তে হবে। কেননা টয়লেটের ভেতরের চেয়ে বাহির উত্তম।[19]

পেশাব-পায়খানাকারীর উপর হারাম কাজ সমূহ :

(ক) আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা :

عَنْ جَابِرٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى أَنْ يُبَالَ فِى الْمَاءِ الرَّاكِدِ.

জাবের (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি বদ্ধ পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন’।[20]

অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : لاَ يَبُولَنَّ أَحَدُكُمْ فِي الْمَاءِ الدَّائِمِ وَلاَ يَغْتَسِلُ فِيْهِ مِنَ الْجَنَابَةِ.

আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে এবং জানাবাতের অবস্থায় গোসল না করে’।[21]

(খ) পেশাব করার সময় ডান হাত দ্বারা পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করা :

عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : إِذَا شَرِبَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الإِنَاءِ، وَإِذَا أَتَى الْخَلاَءَ فَلاَ يَمَسَّ ذَكَرَهُ بِيَمِيْنِهِ، وَلاَ يَتَمَسَّحْ بِيَمِيْنِهِ.

আবু কাতাদাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায়, তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান হাত দিয়ে শেŠচকার্য না করে’।[22]

অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : إِذَا بَالَ أَحَدُكُمْ فَلاَ يَأْخُذَنَّ ذَكَرَهُ بِيَمِيْنِهِ، وَلاَ يَسْتَنْجِيْ بِيَمِيْنِهِ، وَلاَ يَتَنَفَّسْ فِي الإِنَاءِ.

আবু কাতাদাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন পেশাব করে তখন সে যেন কখনো ডান হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ না ধরে এবং ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য না করে এবং পান করার সময় যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে’।[23]

(গ) রাস্তায়, গাছের ছায়ায়, বাগানে ফলবতী গাছের নীচে এবং পানির হাউজে পেশাব-পায়খানা করা :

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ : قاَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ : اتَّقُوا الْمَلاَعِنَ الثَّلاَثَ : الْبَرَازَ فِي الْمَوَارِدِ، وَالظِّلِّ، وَقَارِعَةِ الطَّرِيْقِ.

মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘অভিশপ্ত তিন ব্যক্তি হ’তে তোমরা বেঁচে থাক। পানির স্থানে মল ত্যাগকারী, ছায়ায় এবং রাস্তার মাঝখানে মল ত্যাগকারী’।[24] অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

اتَّقُوا اللَّعَّانَيْنِ قَالُوْا وَمَا اللَّعَّانَانِ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ الَّذِىْ يَتَخَلَّى فِىْ طَرِيْقِ النَّاسِ أَوْ فِى ظِلِّهِمْ.

‘তোমরা অভিশপ্ত দুই ব্যক্তি হ’তে বেঁচে থাক’। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অভিশপ্ত দুই ব্যক্তি কে? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি লোকজনের চলাচলের রাস্তায় এবং তাদের ছায়ায় পেশাব-পায়খানা করে’।[25]

(ঘ) পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা অথবা কুরআন নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করা : কুরআন আল্লাহর কালাম বা কথা, যা অন্যান্য সকল কালাম অপেক্ষা ফযীলতপূর্ণ ও সম্মানিত।

(ঙ) হাড্ডি, গোবর এবং খাদ্য দ্বারা কুলুক করা :

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি নবী করীম (ছাঃ)-এর ওযূ ও ইস্তিন্জার ব্যবহারের জন্য পানি ভর্তি পাত্র নিয়ে পিছনে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ তিনি তাকিয়ে বললেন, কে? আমি বললাম, আমি আবু হুরায়রাহ। তিনি বললেন, আমাকে কয়েকটি পাথর তালাশ করে দাও। আমি তা দিয়ে ইস্তিন্জা করব। তবে হাড্ডি ও গোবর আনবে না। আমি আমার কাপড়ের কিনারায় কয়েকটি পাথর এনে তাঁর কাছে রেখে দিলাম এবং আমি সেখান থেকে কিছুটা দূরে গেলাম। তিনি যখন ইস্তিন্জা হ’তে বের হ’লেন, তখন আমি এগিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হাড্ডি ও গোবরের ব্যাপার কি? তিনি বললেন, এগুলো জিনের খাবার। আমার কাছে নাছীবীন নামক জায়গা হ’তে জিনের একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। তারা ভাল জিন ছিল। তারা আমার কাছে খাদ্যদ্রব্যের আবেদন জানাল। তখন আমি আল্লাহর নিকট দো‘আ করলাম যে, যখন কোন হাড্ডি বা গোবর তারা লাভ করে তখন তারা যেন তাতে খাদ্য পায়।[26]

অত্র হাদীছ হ’তে জানা যায় যে, পাথর বা তার বিকল্প জিনিস যথা- ঢিলা, টিস্যু, কাগজ ইত্যাদি দিয়ে ইস্তিন্জা করা বৈধ। অন্য হাদীছে এসেছে,

عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرًا يَقُوْلُ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُتَمَسَّحَ بِعَظْمٍ أَوْ بِبَعْرٍ.

আবু যুবাইর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি জাবের (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিষেধ করেছেন হাড্ডি ও গোবর দ্বারা ইস্তিন্জা করতে’।[27]

(চ) মুসলমানদের কবরে এবং বাজারের মধ্যে পেশাব-পায়খানা করা :

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ : لأَنْ أَمْشِيَ عَلَى جَمْرَةٍ، أَوْ سَيْفٍ، أَوْ أَخْصِفَ نَعْلِيْ بِرِجْلِيْ، أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَمْشِيَ عَلَى قَبْرِ مُسْلِمٍ، وَمَا أُبَالِيْ أَوْسَطَ الْقُبُوْرِ قَضَيْتُ حَاجَتِيْ، أَوْ وَسَطَ السُّوْقِ.

উকবা ইবনে আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন মুসলমানের কবরের উপর দিয়ে আমার হেঁটে যাওয়া অপেক্ষা জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়ে অথবা তরবারির উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া অথবা আমার জুতাজোড়া আমার পায়ের সাথে সেলাই করা আমার নিকট অধিক প্রিয়। কবরস্থানে পায়খানা করা এবং বাজারের মাঝখানে পায়খানা করার মধ্যে আমি কোন পার্থক্য দেখি না’।[28]

পেশাব-পায়খানাকারীর জন্য মাকরূহ বা অপসন্দনীয় কাজ সমূহ :

(ক) খোলা জায়গায় প্রবাহিত বাতাসের বিপরীত মুখে পেশাব করতে বসা : কেননা তাতে পেশাব শরীরে লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

(খ) পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় সালাম ও উত্তর দেওয়া :

عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَجُلاً مَرَّ وَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَبُوْلُ فَسَلَّمَ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ.

ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, এক ব্যক্তি পথ চলছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পেশাব করছিলেন। অতঃপর ঐ ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কোন উত্তর দিলেন না’।[29]

(গ) কোন ছিদ্র বা গর্তে পেশাব করা :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَرْجِسَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ يُبَالَ فِى الْجُحْرِ. قَالَ قَالُوْا لِقَتَادَةَ مَا يُكْرَهُ مِنَ الْبَوْلِ فِى الْجُحْرِ قَالَ كَانَ يُقَالُ إِنَّهَا مَسَاكِنُ الْجِنِّ.

আব্দুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) গর্তে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, তারা কাতাদাকে জিজ্ঞেস করল, গর্তে পেশাব করা অপসন্দের কারণ কি? তিনি বললেন, বলা হয়ে থাকে এটা জিনদের আবাস স্থল।[30] অতএব জিন অথবা অন্য কোন প্রাণীর আবাসস্থল হ’লে তারা কষ্ট পাবে।

(ঘ) কোন যরূরী প্রয়োজন ছাড়া এমন কিছু নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করা মাকরূহ বা অপসন্দনীয় যাতে আল্লাহর নাম লিখা আছে। কেননা তাতে আল্লাহ নামের অসম্মান করা হয়।

পক্ষান্তরে যদি যরূরী প্রয়োজনে কেউ আল্লাহর নাম লিখা আছে এমন জিনিস নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করে তাহ’লে তাতে কোন সমস্যা নেই। যেমন- টাকার উপরে যদি আল্লাহর নাম লিখা থাকে, তাহ’লে তা নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করলে কোন সমস্যা নেই। কেননা তা বাইরে রেখে প্রবেশ করলে হারিয়ে যাওয়ার অথবা ভুলে যাওয়ার আশংকা থাকে। তবে কুরআন নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করা তা প্রকাশ্যে হোক বা গোপনে হোক, হারিয়ে যাওয়ার বা ভুলে যাওয়ার আশংকা থাকুক বা নাই থাকুক তা হারাম। [চলবে]

মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম

লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।

[1]. বুখারী, ‘স্বর্ণের পাত্রে পানি পান করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৫৬৩৩; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৫/২৯৩।

[2]. বুখারী, ‘স্বর্ণের পাত্রে পানি পান করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৫৬৩৪; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৫/২৯৩।

[3]. মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন, শারহুল মুমতে আলা যাদিল মসতাকনে ১/৭৫; ফিক্বহুল মুয়াস্সার, পৃঃ ৬।

[4]. বুখারী, ‘শিকার’ অধ্যায়, হা/৫৪৮৮; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৫/২৩০।

[5]. বুখারী, হা/৩৪৪; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/১৭৪; ফিকহুল মুয়াস্সার, পৃঃ ৭।

[6]. মুসলিম, হা/৩৬৬; তিরমিযী, হা/১৬৫০।

[7]. মুসলিম, হা/৩৬৩; ইবনু মাজাহ, হা/৩৬১০।

[8]. শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২১/১০৩; শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনি, ১/৯২

[9]. মুসলিম, হা/২৭১।

[10]. মুসলিম, হা/২৬২।

[11]. আবু দাউদ, ‘পাথর দ্বারা ইসতিনজা করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৪০।

[12]. বুখারী, ‘মদীনাহ, সিরিয়া ও (মদীনার) পূর্ব দিকের অধিবাসীদের ক্বিবলাহ্’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৯৪; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/২০৩।

[13]. বুখারী, ‘গৃহের মধ্যে পেশাব পায়খানা করা’ অনুচ্ছেদ, হা/১৪৮; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/৯১।

[14]. আবু দাউদ, হা/১১, দারাকুতনী, হা/১৫৮, ইবনে হাজান এবং নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল হা/৬১।

[15]. ইবনু মাজাহ, হা/২৯৭; তিরমিযী, হা/৬০৬; নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৩৬১১।

[16]. বুখারী, ‘পায়খানায় প্রবেশের দো‘আ’ অনুচ্ছেদ, হা/৬৩২২, বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৫/৫৮৮।

[17]. আবূদাউদ, হা/১৭, তিরমিযী, হা/৭, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৪৭০৭।

[18]. আবূদাউদ, হা/১৪, তিরমিযী, হা/১৪, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ছহীহুল জামে আছ-ছাগীর, হা/৪৬৫২।

[19]. শারহুল মুমতে আলা যাদিল মুসতাকনে ১/১০৮; ফিক্বহুল মুয়াস্সার, পৃঃ ১০।

[20]. মুসলিম, হা/২৮১; বুখারী, ‘আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা’ অনুচ্ছেদ, হা/২৩৯।

[21]. আবূদাউদ, ‘আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা’ অনুচ্ছেদ, হা/৭০।

[22]. বুখারী, ‘ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য করা নিষেধ’ অনুচ্ছেদ, হা/১৫৩; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/৮৬।

[23]. বুখারী, ‘ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য করা নিষেধ’ অনুচ্ছেদ, হা/১৫৪; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ১/৮৭।

[24]. আবু দাউদ, হা/২৬, ইবনু মাজাহ, হা/৩২৮, সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল, ১/১০০।

[25]. মুসলিম, ‘রাস্তায় পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ’ অনুচ্ছেদ, হা/২৬৯।

[26]. বুখারী, ‘জিনদের উল্লেখ’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৮৬০; বাংলা অনুবাদ, তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৩/৬১৭।

[27]. মুসলিম, হা/২৬৩।

[28]. ইবনু মাজাহ, হা/১৫৬৭, নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল ১/১০২।

[29]. মুসলিম, ‘তায়াম্মুম’ অনুচ্ছেদ, হা/৩৭০।

[30]. আবু দাউদ, হা/২৯, নাসাঈ, হা/৩৪; হাফেয ইবনে হাজার হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন। দ্রঃ তালখীছুল হাবীর ১/১০৬।






কবিগুরুর অর্থকষ্টে জর্জরিত দিনগুলো - ড. গুলশান আরা
বাহাছ-মুনাযারায় ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা - ড. নূরুল ইসলাম
ছিয়ামের ফাযায়েল ও মাসায়েল
কুরআন-হাদীছের আলোকে ক্ষমা - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
মানবাধিকার ও ইসলাম (১৫তম কিস্তি) - শামসুল আলম
আহলেহাদীছ মসজিদে হামলা : ইসলামী লেবাসে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন (ফেব্রুয়ারী’২১ সংখ্যার পর) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
হজ্জ পরবর্তী করণীয় - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আলেমগণের মধ্যে মতভেদের কারণ (২য় কিস্তি) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধ - ড. মুহাম্মাদ কামরুয্যামান
জামা‘আতবদ্ধ জীবন যাপনের আবশ্যকতা (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
ইসলামী ভ্রাতৃত্বের আদব সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
সীমালংঘন ও দুনিয়াপূজা : জাহান্নামীদের দুই প্রধান বৈশিষ্ট্য (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
আরও
আরও
.