নিম্নের বিষয়গুলো পিতা-মাতার পক্ষ থেকে আদায় করলে তা ছাদাক্বা হিসাবে গণ্য হবে
(ক) অছিয়ত পূর্ণ করা : পিতা-মাতার অছিয়ত পূর্ণ করলে তারা এর ছওয়াব পাবেন এবং ওয়ারিছরা দায়মুক্ত হবেন। পিতা-মাতার কোন ন্যায়সঙ্গত অছিয়ত থাকলে তা পালন করা সন্তানদের জন্য আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘কিন্তু যদি মৃতের ভাইয়েরা থাকে, তাহ’লে মা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ মৃতের অছিয়ত পূরণ করার পর এবং তার ঋণ পরিশোধের পর’ (নিসা ৪/১১)। তিনি আরো বলেন,كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ إِنْ تَرَكَ خَيْرًا الْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِيْنَ بِالْمَعْرُوْفِ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِيْنَ، ‘তোমাদের কারো যখন মৃত্যুকাল উপস্থিত হয়, তখন যদি সে কিছু ধন-সম্পদ ছেড়ে যায়, তবে তার জন্য অছিয়ত করা বিধিবদ্ধ করা হ’ল পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ন্যায়ানুগভাবে। এটি আল্লাহভীরুদের জন্য আবশ্যিক বিষয় (বাক্বারাহ ২/১৮০)। একজন ব্যক্তি তার সম্পদের সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ অছিয়ত করতে পারে। এর বেশী করলে তা পালন করা যাবে না’।[1] তবে অছিয়ত ওয়ারিছদের জন্য নয়। আবু উমামাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি,إِنَّ اللهَ قَدْ أَعْطَى كُلَّ ذِى حَقٍّ حَقَّهُ فَلاَ وَصِيَّةَ لِوَارِثٍু ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক হক্বদারের অংশ নির্দিষ্ট করেছেন। সুতরাং কোন ওয়ারিছের জন্য অছিয়ত নেই’।[2] অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আমের বিন সা‘দ বর্ণনা করেন, তার পিতা সা‘দ বলেন, বিদায় হজ্জের সময় আমি রোগাক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন হয়ে পড়ছিলাম। নবী করীম (ছাঃ) সে সময় আমাকে দেখতে এলেন। তখন আমি বললাম, আমি যে রোগাক্রান্ত, তা আপনি দেখছেন। আমি একজন বিত্তবান লোক। আমার এক মেয়ে ব্যতীত কোন ওয়ারিছ নেই। তাই আমি কি আমার দুই-তৃতীয়াংশ সম্পদ ছাদাক্বা করে দিতে পারি? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তবে অর্ধেক সম্পদ? তিনি বললেন, না। এক-তৃতীয়াংশ অনেক। তোমার ওয়ারিছদের মানুষের কাছে ভিক্ষার হাত বাড়ানোর মত অভাবী রেখে যাবার চেয়ে তাদের বিত্তবান রেখে যাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম। আর তুমি কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যা কিছুই ব্যয় করবে নিশ্চয়ই তার প্রতিদান দেয়া হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমাটি তুলে দিয়ে থাক, তোমাকে এর প্রতিদান দেয়া হবে। আমি বললাম, তাহ’লে আমার সঙ্গীগণের পরেও কি আমি বেঁচে থাকব? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই তুমি এদের পরে বেঁচে থাকলে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যা কিছু নেক আমল কর না কেন, এর বদলে তোমার মর্যাদা ও সম্মান আরও বেড়ে যাবে। আশা করা যায় যে, তুমি আরও কিছু দিন বেঁচে থাকবে। এমনকি তোমার দ্বারা অনেক কওম উপকৃত হবে। আর অনেক সম্প্রদায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারপর তিনি দো‘আ করলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার ছাহাবীগণের হিজরতকে বহাল রাখুন। আর তাদের পেছনে ফিরে যেতে দিবেন না। কিন্তু সা‘দ ইবনু খাওলাহ-এর দুর্ভাগ্য। (কারণ তিনি বিদায় হজ্জের সময় মক্কায় মারা যান) সা‘দ বলেন, মক্কায় তাঁর মৃত্যু হওয়ায় রাসূল (ছাঃ) তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন’।[3]
(খ) মানত পূর্ণ করা : পিতা-মাতার কোন শরী‘আত সম্মত মানত থাকলে তা পূরণ করা সন্তানের জন্য আবশ্যক। আর সন্তান তা পূরণ করলে পিতা দায়মুক্ত হবেন এবং এর ছওয়াব পাবেন। যেমন হাদীছে এসেছে, ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল,يَا رَسُولَ اللهِ! إِنَّ أُمِّى مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ نَذْرٍ أَفَأَصُومُ عَنْهَا قَالَ: أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ فَقَضَيْتِيهِ أَكَانَ يُؤَدِّى ذَلِكِ عَنْهَا. قَالَتْ نَعَم قَالَ : فَصُومِى عَنْ أُمِّكِ، ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার উপর মানতের ছাওমের কাযা রয়েছে। আমি তার পক্ষ হ’তে এ ছাওম আদায় করতে পারি কি? তখন তিনি বললেন, যদি তোমার মায়ের উপর কোন ঋণ থাকত, তাহ’লে তুমি তা পরিশোধ করে দিলে তা তার পক্ষ হ’তে আদায় হ’ত কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘তাহ’লে তোমার মায়ের পক্ষ হ’তে তুমি ছাওম পালন কর’।[4]
(গ) কাফ্ফারা আদায় করা : পিতা-মাতার উপর কোন কাফফা্রা থাকলে সন্তান তা আদায় করবে। সেটা কসমের কাফ্ফারা হোক বা ভুলবশতঃ হত্যার কাফফা্রা হোক। কারণ এগুলো পিতা-মাতার ঋণের অর্ন্তভুক্ত। আর পিতা-মাতার ঋণ পরিশোধ করা সন্তানের দায়িত্ব। এতে যেমন পিতা-মাতা দায়মুক্ত হবেন, তেমনি ছওয়াবও পাবেন। ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,أَنَّ امْرَأَةً رَكِبَتِ الْبَحْرَ فَنَذَرَتْ إِنْ نَجَّاهَا الله أَنْ تَصُومَ شَهْرًا فَنَجَّاهَا اللهُ فَلَمْ تَصُمْ حَتَّى مَاتَتْ فَجَاءَتِ ابْنَتُهَا أَوْ أُخْتُهَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَهَا أَنْ تَصُومَ عَنْهَا، ‘এক মহিলা সমুদ্রে ভ্রমণে গিয়ে মানত করল যে, আল্লাহ তাকে নিরাপদে ফেরার সুযোগ দিলে সে একমাস ছিয়াম পালন করবে। অতঃপর আল্লাহ তাকে সমুদ্রের বিপদ থেকে মুক্তি দিলেন। কিন্তু ছিয়াম পালনের পূর্বেই সে মারা গেল। তার মেয়ে অথবা বোন রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট আসলে তিনি তাকে মৃতের পক্ষ থেকে ছিয়াম পালনের নির্দেশ দিলেন’।[5]
(ঘ) ঋণ পরিশোধ করা : পিতা-মাতার ঋণ থাকলে সন্তানরা সর্বপ্রথম তাদের ঋণ পরিশোধ করবে। কারণ ঋণ এমন এক বোঝা যা ঋণদাতা ব্যতীত কেউ হালকা করতে পারবে না। সেজন্য পিতা-মাতার যাবতীয় সম্পদ দ্বারা হ’লেও তাদের ঋণ পরিশোধ করবে। সামর্থ্য না থাকলে ঋণদাতার নিকট থেকে মওকূফ করিয়ে নিবে। মওকূফ না করলে ধনী ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে হ’লেও তা পরিশোধ করার চেষ্টা করবে। কারণ ঋণ মাফ হবে না। তবে পিতা-মাতা অন্যায় কাজে অনেক ঋণ করে থাকলে নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে তা পরিশোধ করতে সন্তান বাধ্য নয়। ঋণ এমন এক মারাত্মক পাওনা যা পরিশোধ না করলে ঋণগ্রহীতা ঝুলন্ত থাকে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ ‘মুমিন ব্যক্তির রূহ তার ঋণের কারণে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে, যতক্ষণ না তা পরিশোধ করা হয়’।[6] আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, يُغْفَرُ لِلشَّهِيْدِ كُلُّ ذَنْبٍ إِلاَّ الدَّيْنَ ‘ঋণ ব্যতীত শহীদের সকল গুনাহ্ই মাফ করে দেওয়া হবে’।[7] জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘জনৈক লোক মারা গেলে আমরা তাকে গোসল দিয়ে সুগন্ধি মাখিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে নিয়ে গেলাম, যাতে তিনি তার জানাযার ছালাত আদায় করেন। আমরা তাঁকে জানাযার ছালাত আদায়ের জন্য অনুরোধ করলাম। তিনি এক কদম এগিয়ে বললেন, তার কোন ঋণ আছে কি? আমরা বললাম, দু’দীনার রয়েছে। তিনি ফিরে গেলেন। আবু ক্বাতাদা তা পরিশোধ করতে চাইলে আমরা তাঁর নিকট আসলাম। আবু ক্বাতাদা বললেন, দু’দীনার পরিশোধের দায়িত্ব আমার। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তাহ’লে ঋণী অধিকার প্রাপ্ত হ’লেন এবং মাইয়েত তা থেকে দায়মুক্ত হ’লেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর তিনি তার জানাযার ছালাত আদায় করলেন। একদিন পর রাসূল (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, দীনার দু’টির কী হয়েছে? তিনি বললেন, তিনি তো কেবল গতকাল মারা গেছেন। পরের দিন তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট ফিরে এসে বললেন, দু’দীনারের ঋণ আমি পরিশোধ করেছি। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন,الْآنَ بَرَدَتْ عَلَيْهِ جِلْدُهُ ‘এখন তার চামড়া শীতল হ’ল’।[8] অন্য হাদীছে এসেছে, ‘আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُؤْتَى بِالرَّجُلِ الْمُتَوَفَّى عَلَيْهِ الدَّيْنُ فَيَسْأَلُ هَلْ تَرَكَ لِدَيْنِهِ فَضْلاً. فَإِنْ حُدِّثَ أَنَّهُ تَرَكَ لِدَيْنِهِ وَفَاءً صَلَّى، وَإِلاَّ قَالَ لِلْمُسْلِمِينَ صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ. فَلَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ الْفُتُوحَ قَالَ أَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ، فَمَنْ تُوُفِّىَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ فَتَرَكَ دَيْنًا فَعَلَىَّ قَضَاؤُهُ، وَمَنْ تَرَكَ مَالاً فَلِوَرَثَتِهِ-
‘রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে ঋণগ্রস্ত কোন মৃত ব্যক্তিকে (জানাযার জন্য) আনা হ’লে, তিনি জিজ্ঞেস করতেন, সে কি ঋণ পরিশোধ করার মত অতিরিক্ত কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হ’ত যে, সে ঝণ পরিশোধ করার মত সম্পদ রেখে গেছে, তাহ’লে তিনি তার জানাযা পড়তেন। অন্যথা তিনি মুসলমানদের বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়। তারপর আল্লাহ যখন তার জন্য বহু দেশ বিজয়ের দ্বার খুলে দিলেন, তখন তিনি বললেন, আমি মুমিনদের নিজেদের চেয়েও বেশী ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং মুমিনদের মধ্যে কেউ ঋণ রেখে মারা গেলে, তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমারই। আর যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীরা পাবে’।[9]
ঋণ দু’প্রকার। যথা- ১. যে ব্যক্তি তার ওপর থাকা ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা নিয়ে মৃত্যুবরণ করল, রাসূল (ছাঃ) তার অভিভাবক। ২. যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা না করে (আত্মসাৎ করার ইচ্ছায়) মৃত্যুবরণ করল। এর কারণে সেদিন তার নেকী হ’তে কর্তন করা হবে, যেদিনে কোন দিরহাম ও দীনার থাকবে না।
আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, এমন অর্থবোধক অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) এটা বলেছেন, ঋণী ব্যক্তির ওপর জানাযা নিষিদ্ধ হওয়ার পর যখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে অনেক দেশের বিজয় দান করলেন এবং প্রচুর সম্পদ অর্জিত হ’ল। তখন তিনি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা আদায় করতেন এবং বায়তুল মাল হ’তে তাদের ঋণ পরিশোধ করতেন। আর এটা যাকাত বণ্টনের আটটি খাতের একটি।[10]
(ঙ) জীবিত অবস্থায় কোন ভাল কাজের সূচনা করে গেলে তার ছওয়াব মৃতব্যক্তি কবরে পেতে থাকবেন : মুনযির ইবনু জারীর (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন একদা দিনের পূর্বভাগে আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কাছে ছিলাম। এ সময় নগ্নপদ, খালি মাথা, চামড়ার বস্ত্র পরিহিত ও তরবারী গলায় লটকিয়ে এক দল লোক তাঁর নিকট আগমন করল। তাদের অধিকাংশ বরং সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। তাদের মাঝে অনাহারের নিদর্শন দেখে রাসূল (ছাঃ)-এর মুখমন্ডল বিবর্ণ হয়ে গেল। অতঃপর তিনি (গৃহাভ্যন্তরে) প্রবেশ করলেন এবং বেরিয়ে এলেন। এরপর বেলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলেন। তিনি (বেলাল রাঃ) আযান দিলেন ও ইক্বামত দিলেন। ছালাত আদায় করার পর নবী করীম (ছাঃ) ভাষণ দিলেন এবং তিলাওয়াত করলেন, ‘হে মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হ’তেই সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তা থেকে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেন। যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নর নারী ছড়িয়ে দেন এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা কর এবং সতর্ক থাক জ্ঞাতি বন্ধন সম্পর্কে। আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখেন’ (নিসা ৪/১)। আল্লাহর বাণী, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ্কে ভয় কর, প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক আগামীকালের জন্য সে কী অগ্রিম পাঠিয়েছে’ (হাশর ৫৯/১৮)। পুরুষ তার দীনার হ’তে, তার দিরহাম হ’তে, তার বস্ত্র হ’তে ছাদাক্বা করুক এবং গম থেকে এক ছা‘ও খেজুর থেকে এক ছা‘ দান করুক। এমনকি তিনি বললেন, এক টুকরো খেজুর দিয়ে হ’লেও। বর্ণনাকারী বলেন, তখন এক আনছার ব্যক্তি একটি থলে নিয়ে আসল তার হাত যেন তা তুলতে সক্ষম হচ্ছিল না। বরং অপারগই হয়েছিল। অতঃপর লোকজন একের পর এক ছাদাক্বা নিয়ে আসতে লাগল। অবশেষে আমি খাদ্য ও বস্ত্রের দু’টি স্তূপ দেখতে পেলাম। তখন আমি দেখলাম, রাসূল (ছাঃ)-এর চেহারা সমুজ্জ্বল হ’ল যেন এক টুকরা সোনা। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) বললেন,
مَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَىْءٌ وَمَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ،
‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোন উত্তম প্রথা চালু করবে, সে তার নেককর্মের ছওয়াব পাবে এবং ঐ ব্যক্তির সম পরিমাণ ছওয়াবও লাভ করবে যে ব্যক্তি তার পরে ঐ নেক আমল করবে। এতে তাদের নেকী বিন্দুমাত্রও কমবে না। পক্ষান্তরে যদি কোন ব্যক্তি ইসলামে কোন কুপ্রথা চালু করে তবে এ অসৎকর্মের গোনাহ তার উপর বর্তাবে এবং ঐ ব্যক্তির গোনাহও, যারা তার পরবর্তীতে সে অসৎকর্ম করবে। এতে তাদের গোনাহ বিন্দু পরিমাণও কমবে না। এরপর তিনি তেলাওয়াত করলেন, ‘আমরাই মৃতদের জীবিত করি এবং লিখে রাখি যা তারা অগ্রে প্রেরণ করে ও যা তারা পিছনে ছেড়ে যায়’ (ইয়াসীন ৩৬/১২)।[11]
তিন. ফরয ছিয়াম ও মানতের ছিয়াম পালন করা :
ফরয ছিয়াম যা সফর বা রোগের কারণে আদায় করতে পারেনি। পরবর্তীতে আদায় করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু হঠাৎ মৃত্যুবরণ করায় কাযা আদায় করতে পারেনি। এমন ছিয়াম নিকটতম ওয়ারিছ তথা আত্মীয়রা আদায় করে দিবে।[12] আল্লাহ বলেন,وَأُوْلُواْ الأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِيْ كِتَابِ اللهِ إِنَّ اللهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ، ‘আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়গণ আল্লাহর বিধানে একে অপরের চাইতে বেশী হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে সম্যক অবগত’ (আনফাল ৮/৭৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেন,أَلْحِقُوا الْفَرَائِضَ بِأَهْلِهَا، فَمَا بَقِىَ فَهْوَ لأَوْلَى رَجُلٍ ذَكَرٍ، ‘প্রাপ্যাংশ তার হক্বদারকে পৌঁছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা নিকটতম পুরুষের জন্য’।[13] কারণ এটি আল্লাহর ঋণ যা পরিশোধ করা আবশ্যক। আর এতে মাইয়েত যেমন দায়মুক্ত হবেন, তেমনি ছওয়াবও পাবেন। আর যদি রোগের কারণে রামাযান মাসে ছিয়াম আদায় না করে এবং রামাযানের পরেও সুস্থ হ’তে না পারে ও মারা যায় তাহ’লে তার ছিয়ামের ক্বাযা আদায় করতে হবে না। এক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে ফিদইয়া আদায় করবে। তবে সাধারণভাবে ছিয়াম পালন না করে মারা গেলে তার নিকটাত্মীয়রা তা পালন করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُু ‘ছিয়ামের ক্বাযা যিম্মায় রেখে যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহ’লে তার নিকটাত্মীয় তার পক্ষ হ’তে ছিয়াম আদায় করবে’। [14] আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন,جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ! إِنَّ أُمِّى مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ أَفَأَقْضِيهِ عَنْهَا؟ فَقَالَ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكَ دَيْنٌ أَكُنْتَ قَاضِيَهُ عَنْهَا. قَالَ نَعَمْ. قَالَ : فَدَيْنُ اللهِ أَحَقُّ أَنْ يُقْضَى- ‘জনৈক ব্যক্তি নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মা এক মাসের ছিয়াম যিম্মায় রেখে মারা গেছেন। আমি কি তাঁর পক্ষ হ’তে এ ছিয়াম কাযা করতে পারি? তিনি বললেন, যদি তোমার মায়ের উপর ঋণ থাকত, তাহ’লে কি তুমি তা আদায় করতে না? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করাই হ’ল অধিক উপযুক্ত’।[15] অন্য হাদীছে এসেছে, বুরায়দা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আমি বসা ছিলাম। এমন সময় এক মহিলা তাঁর নিকটে এসে বলল,
يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّى كُنْتُ تَصَدَّقْتُ عَلَى أُمِّى بِجَارِيَةٍ وَإِنَّهَا مَاتَتْ، قَالَ : وَجَبَ أَجْرُكِ وَرَدَّهَا عَلَيْكِ الْمِيْرَاثُ. قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ! إِنَّهَا كَانَ عَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ أَفَأَصُومُ عَنْهَا؟ قَالَ: صُومِى عَنْهَا. قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّهَا لَمْ تَحُجَّ قَطُّ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ : نَعَمْ حُجِّى عَنْهَا-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি আমার মাকে একটি দাসী দান করেছিলাম। তিনি মারা গেছেন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি ছওয়াবের অধিকারী হয়ে গেছ এবং উত্তরাধিকার স্বত্ত্ব তোমাকে দাসীটি ফেরত দিয়েছে। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এক মাসের ছিয়াম আদায় করা তার বাকী আছে। তার পক্ষ হ’তে আমি কি ছিয়াম আদায় করতে পারি? তিনি বললেন, তার পক্ষে তুমি ছিয়াম আদায় কর। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কখনও তিনি হজ্জ করেননি। তার পক্ষ হ’তে আমি কি হজ্জ আদায় করতে পারি? তিনি বলেন, হ্যাঁ, তার জন্য তুমি হজ্জ কর’। [16] উল্লেখ্য যে, মৃতের পক্ষ থেকে ছিয়াম পালন করার মত লোক পাওয়া না গেলে তার পক্ষ থেকে প্রতিদিনের ছিয়ামের বিনিময়ে একজন করে মিসকীনকে খাওয়ালেও মৃতব্যক্তি ছওয়াব পাবেন।[17]
চার. বদলী হজ্জ-ওমরা পালন করা : মাইয়েতের পক্ষ থেকে হজ্জ ও ওমরাহ পালন করলে এর ছওয়াব মৃতব্যক্তি পাবেন। এর দ্বারা মাইয়েত কবরে উপকৃতও হবেন। এক্ষেত্রে মাইয়েত অছিয়ত করে যাক বা না যাক। অনুরূপভাবে সম্পদশালী পিতা-মাতা যেকোন কারণে হজ্জ পালন না করে পর্যাপ্ত সম্পদ রেখে মারা গেলে সন্তানের জন্য পিতা-মাতার পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ ও ওমরা পালন করতে হবে’।[18]
ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন,أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: إِنَّ أَبِيْ مَاتَ وَلَمْ يَحُجَّ أَفَأَحُجَّ عَنْهُ؟ قَالَ: أَرَأَيْتَ لَوَ كَانَ عَلَى أَبِيكَ دَيْنٌ أَكُنْتَ قَاضِيَهُ؟ قَالَ: نَعَمْ، قال: حُجِّ عَنْ أَبِيْكَ- ‘একজন লোক নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট গমন করে বলল, আমার পিতা হজ্জ পালন না করে মারা গেছেন, আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ পালন করব? তিনি বললেন, তুমি কি মনে কর, যদি তোমার পিতার উপর ঋণ থাকত, তাহ’লে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূল (ছাঃ) বললেন, অতএব তুমি তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ কর’।[19] আরেকটি বর্ণনায় হজ্জের সাথে ওমরার কখাও উল্লেখ আছে। আবু রাযীন আল-উক্বায়লী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, তিনি একবার নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন,يَا رَسُولَ اللهِ! إِنَّ أَبِىْ شَيْخٌ كَبِيْرٌ لاَ يَسْتَطِيعُ الْحَجَّ وَلاَ الْعُمْرَةَ وَلاَ الظَّعْنَ. قَالَ حُجَّ عَنْ أَبِيكَ وَاعْتَمِرْ- ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা অতিশয় বৃদ্ধ, হজ্জ ও ওমরা করার সামর্থ্য রাখেন না এবং বাহনে বসতে পারেন না। তিনি বললেন, তুমি তোমার পিতার পক্ষ হ’তে হজ্জ ও ওমরা কর’।[20] অন্য বর্ণনায় এসেছে,أَنَّ امْرَأَةً مِنْ خَثْعَمَ اسْتَفْتَتْ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِى حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَالْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ رَدِيفُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ فَرِيْضَةَ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ أَدْرَكَتْ أَبِى شَيْخًا كَبِيرًا لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْتَوِىَ عَلَى الرَّاحِلَةِ ، فَهَلْ يَقْضِى أَنْ أَحُجَّ عَنْهُ قَالَ نَعَمْ ‘খাছ‘আম গোত্রের এক মহিলা বিদায় হজ্জের সময় রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করে। এ সময় ফযল ইবনু আববাস (রাঃ) (সওয়ারীতে) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। মহিলাটি আবেদন করল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি হজ্জ ফরয করেছেন। আমার পিতার উপর তা এমন অবস্থায় ফরয হ’ল যে, তিনি অতীব বয়োবৃদ্ধ, যে কারণে সওয়ারীর উপর ঠিক হয়ে বসতেও সক্ষম নন। এমতাবস্থায় আমি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্জ করলে তা আদায় হবে কি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ।[21] পিতা-মাতা হজ্জ করার মানত করে তা সম্পাদন করার পূর্বে মারা গেলে এবং হজ্জ করার মত অর্থ রেখে গেলে তা পালন করা সন্তানের জন্য আবশ্যক। যেমন হাদীছে এসেছে, ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ جَاءَتْ إِلَى النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّى نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ، فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ : نَعَمْ. حُجِّى عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً اقْضُوا اللَّهَ، فَالله أَحَقُّ بِالْوَفَاءِ، ‘জুহায়না গোত্রের একজন মহিলা নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, আমার মা হজ্জের মানত করেছিলেন। তবে তিনি হজ্জ আদায় না করেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি কি তার পক্ষ হ’তে হজ্জ করতে পারি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তার পক্ষ হ’তে তুমি হজ্জ আদায় কর। তুমি এ ব্যাপারে কি মনে কর যদি তোমার মায়ের উপর ঋণ থাকত, তাহ’লে কি তুমি তা আদায় করতে না? সুতরাং আল্লাহর হক আদায় কর। কেননা আল্লাহর হকই সবচেয়ে বেশী আদায়যোগ্য’।[22] তবে বদলী হজ্জকারীকে অবশ্যই নিজের হজ্জ সম্পাদন করে অন্যের পক্ষ থেকে হজ্জ করতে হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,أَنَّ النَّبِىَّ صلى اللهُ عليه وسلم سَمِعَ رَجُلاً يَقُولُ لَبَّيْكَ عَنْ شُبْرُمَةَ. قَالَ مَنْ شُبْرُمَةَ. قَالَ أَخٌ لِى أَوْ قَرِيبٌ لِى. قَالَ حَجَجْتَ عَنْ نَفْسِكَ. قَالَ لاَ. قَالَ حُجَّ عَنْ نَفْسِكَ ثُمَّ حُجَّ عَنْ شُبْرُمَةَ، ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন, ‘শুবরুমার পক্ষ থেকে আমি হাযির হয়েছি’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, শুবরুমা কে? সে বলল, আমার ভাই অথবা বলল, আমার এক নিকটাত্মীয়। তিনি বলেন, তুমি কি নিজের পক্ষ হ’তে হজ্জ করেছ? সে বলল, না। তিনি বললেন, তাহ’লে তোমার নিজের পক্ষ থেকে আগে হজ্জ কর, অতঃপর শুব্রুমার পক্ষ থেকে হজ্জ কর’।[23] (চলবে)
[1]. বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩০৭১।
[2]. আবূদাঊদ হা/২৮৭০; ইবনু মাজাহ হা/২৭১৩; তিরমিযী হা/২১২০; মিশকাত হা/৩০৭৩; ছহীহুল জামে‘ হা/১৭২০, ৭৮৮, ১৭৮৯।
[3]. বুখারী হা/৬৩৭৩; মুসলিম হা/১৬২৮; মিশকাত হা/৩০৭১।
[4]. বুখারী হা/১৯৫৩; মুসলিম হা/১১৪৮।
[5]. আবূদাঊদ হা/৩৩০৮; নাসাঈ হা/৩৮১৬; ছহীহাহ হা/১৯৪৬।
[6]. ইবনু মাজাহ হা/২৪১৩; মিশকাত হা/২৯১৫।
[7]. মুসলিম হা/১৮৮৬; মিশকাত হা/২৯১২; ছহীহুল জামে‘ হা/৮১১৯।
[8]. আহমাদ হা/১৪৫৭৬; হাকেম হা/২৩৪৬; ছহীহুল জামে‘ হা/২৭৫৩।
[9]. বুখারী হা/২২৯৮; মুসলিম হা/১৬১৯; মিশকাত হা/২৯১৩।
[10]. তোহ্ফাতুল আহওয়াযী, ৩য় খন্ড, হা/১০৭৮-এর আলোচনা।
[11]. মুসলিম হা/১০১৭; মিশকাত হা/২১০।
[12]. উছায়মীন, আশ-শারহুল মুমতে‘ ৬/৪৫০-৪৫২।
[13]. বুখারী হা/৬৭৩২; মুসলিম হা/১৬১৫; মিশকাত হা/৩০৪২।
[14]. বুখারী হা/১৯৫২; মুসলিম হা/১১৪৭; মিশকাত হা/২০৩৩।
[15]. বুখারী হা/১৫৫৩; মুসলিম হা/১১৪৮।
[16]. মুসলিম হা/১১৪৯; তিরমিযী হা/৬৬৭; মিশকাত হা/১৯৫৫।
[17]. নববী, আল-মাজমূ‘ ৬/৩৬৮; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ১০/৩৭২।
[18]. ফৎহুল বারী ৪/৬৪।
[19]. নাসাঈ হা/২৬৩৯; ইবনু হিববান হা/৩৯৯২; ছহীহাহ হা/৩০৪৭।
[20]. নাসাঈ হা/২৬৩৭; তিরমিযী হা/৯৩০; মিশকাত হা/২৫২৮, সনদ ছহীহ।
[21]. বুখারী হা/৪৩৯৯; মুসলিম হা/১৩৩৫; মিশকাত হা/২৫১১।
[22]. বুখারী হা/১৮৫২; ইরওয়া হা/৯৯৩।
[23]. আবূদাঊদ হা/১৮১১; মিশকাত হা/২৫২৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৩১২৮।