পর্ব ১। পর্ব ২। পর্ব ৩। পর্ব ৪। পর্ব ৫। পর্ব ৬। পর্ব ৭। পর্ব ৮। পর্ব ৯। পর্ব ১০। পর্ব ১১। পর্ব ১২। পর্ব ১৩। পর্ব ১৪। পর্ব ১৫। পর্ব ১৬।
সকল মানুষের সকল স্থানে আইনের আশ্রয় পাবার অধিকার :
Article-6 : Everyone has the right to recognition every where as a person before the law. ‘স্থান-কাল নির্বিশেষে সকল জায়গায় মানুষ হিসাবে প্রত্যেকেরই আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার রয়েছে’ (অনু: ৬)।[1]
এখানে জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৬ নং ধারাতে বলা হয়েছে, মানুষ হিসাবে পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষের স্থান-কাল ও দেশ ভেদে সকল স্থানে আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ একজন মানুষের নিজ এলাকা বা দেশের অভ্যন্তরে সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য তার কোন অধিকার যেন ক্ষুণ্ণ না হয় সে বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। তবে এ ধারাতে একটি বিষয় অস্পষ্ট যে, ‘সকল জায়গা’ বলতে কি বুঝানো হয়েছে? যদিও আমরা ধরে নিচ্ছি ‘সকল জায়গা’ বলতে শুধু নিজ দেশ নয় পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের কথা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ একজন নাগরিক যদি কোন রাষ্ট্রে বৈধ বা অবৈধভাবে যে অবস্থায় অবস্থান করুক না কেন ঐ নাগরিক সে দেশের প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে পারবে।
ইসলামের আলোকে জবাব : জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৬ নং ধারাতে যা উল্লেখ করা হয়েছে, ইসলাম বহু পূর্বে এটা প্রতিষ্ঠা করে গেছে। ইসলাম স্থান-কাল-দেশ-জাতি ভেদে সকল শ্রেণীর মানুষকে আইনের আশ্রয় পাবার কার্যকর ব্যবস্থা করেছে। উঁচু-নিচু, ধনী-গরীব, আমীর-ফকীর, রাজা-বাদশাহ, মুসলিম, ইহুদী-খৃষ্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ বলে আইনের কম-বেশী করার কোন সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে মদীনার রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের কাছে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তবে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি কখনও কারো দ্বারা অত্যাচারিত হয় তখন প্রয়োজনে তাদেরকে হিজরত বা স্থান ত্যাগ করার কথাও বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَفَّاهُمُ الْمَلاَئِكَةُ ظَالِمِيْ أَنْفُسِهِمْ قَالُوْا فِيْمَ كُنْتُمْ قَالُوْا كُنَّا مُسْتَضْعَفِيْنَ فِي الْأَرْضِ قَالُوْا أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُوْا فِيْهَا فَأُولَئِكَ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا- ‘যারা নিজেদের উপর যুলুম করে, ফেরেশতারা তাদের প্রাণ হরণের সময় বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম। তারা বলে, আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না, যেথায় তোমরা হিযরত করতে? অতএব এদের বাসস্থান হ’ল জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত মন্দ আবাস’ (নিসা ৯৭)।
আবার অত্যাচারিত ও আশ্রয় প্রার্থীদের সাহায্য সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,وَمَا لَكُمْ لاَ تُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَالْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيْرًا ‘আর তোমাদের কি হ’ল যে, তোমরা লড়াই করছ না আল্লাহর রাস্তায় এবং অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের এই জনপদ থেকে অন্যত্র নিয়ে যাও; যার অধিবাসীরা অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অভিভাবক নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ কর’ (নিসা ৭৫)।
প্রত্যেক মযলূম ও নির্যাতিত মুসলমানের অধিকার রয়েছে যে, ইসলামী রাষ্ট্রের যেখানে সে নিরাপদ মনে করবে, আশ্রয় প্রার্থনা করবে। তার জাতীয়তা, বিশ্বাস ও বর্ণ যাই হৌক না কেন। ইসলাম নির্যাতিতের ব্যাপারে মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছে যে, যখনই সে তাদের কাছে আশ্রয় চাইবে, তাকে আশ্রয় দেয়া হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ اسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلاَمَ اللهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُ- ‘কোন মুশরিক যদি তোমার কাছে আশ্রয় চায় তবে তাকে আল্লাহর বাণী শ্রবণ পর্যন্ত আশ্রয় দাও। তারপর তাকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দাও’ (তওবা ৬)।
অন্য কোন ধর্মের অনুসারী যখন ইসলামী সরকারের নিকটে বিচারপ্রার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী হবে তখন ইসলামী বিধান অনুযায়ী আশ্রয় বা ফায়ছালা দিতে হবে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, فَإِنْ جَاءُوكَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ أَوْ أَعْرِضْ عَنْهُمْ وَإِنْ تُعْرِضْ عَنْهُمْ فَلَنْ يَضُرُّوكَ شَيْئًا وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِالْقِسْطِ ‘তারা যদি তোমার কাছে আসে, হয় তাদের বিরোধ নিষ্পন্ন করে দাও, অথবা তাদের ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাক। তুমি যদি নির্লিপ্ত থাক, তবে তারা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করে দাও; তবে তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার কর’ (মায়েদাহ ৪২)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কোন লোকের মানহানি করে অথবা কোন প্রকার যুলুম করে তবে সেদিন আসার পূর্বেই তার ক্ষমা চেয়ে নেয়া উচিত, যেদিন তার না থাকবে ধন-সম্পদ, আর না অন্য কিছু। অবশ্য তার নেক আমল সমূহ তার থেকে কেড়ে নেয়া হবে সেই যুলুমের সমপরিমাণ। যদি তার কোন নেক আমল না থাকে, তাহ’লে মযলূম ব্যক্তির মন্দ আমলগুলো তাঁর কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হবে।[2] এমনিভাবে কারও মানহানিকে রাসূল (ছাঃ) হারাম বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের জান-মাল ও সম্মানে হস্তক্ষেপ করা হারাম’।[3] অন্যত্র তিনি মুসলমানের সম্মানে হস্তক্ষেপ করাকে সূদের ন্যায় অন্যায় বলেছেন। যেমন তিনি বলেন, অন্যায়ভাবে কোন মুসলমানের মানসম্মানে হস্তক্ষেপ করা ব্যাপকভাবে প্রচলিত সূদের অন্তর্ভুক্ত (গুরুতর অন্যায়)।[4] ওমর ফারূক (রাঃ) শাসকগণকে নিম্নোক্ত উপদেশ দিতেন, ‘আমি তোমাদেরকে যালিম ও অত্যাচারী হিসাবে নয় বরং ঈমান ও সত্য পথের দিশারী হিসাবে নিয়োগ দান করে পাঠাচ্ছি। সাবধান! মুসলমানদের মারপিট করে তাদের অপমানিত করবে না।[5] মান-মর্যাদা এবং আইনের আশ্রয় প্রার্থী হিসাবে সকল স্থানে সকলে সমান।
আইনের দৃষ্টিতে মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নিরূপণ করে কাউকে আইনের অধীন ও কাউকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখাকে ধ্বংস ও কঠিন বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করে মহানবী (ছাঃ) বলেন, ‘হে মানবমন্ডলী! তোমাদের পূর্বে এমন সব লোক ছিল যাদের কোন অভিজাত ব্যক্তি চুরি করলে তার উপর আইনের দন্ড কার্যকর করা হ’ত না। আর কোন নিম্নশ্রেণীর লোক চুরি করলে তার উপর আইনের দন্ড কার্যকর করা হ’ত।[6]
আলী (রাঃ) একদিন বাজারে গিয়ে দেখেন, জনৈক খৃষ্টান লোক একটা লোহার বর্ম বিক্রি করছে। আলী (রাঃ) তৎক্ষণাৎ বর্মটি চিনে ফেললেন এবং বললেন, এ বর্ম তো আমার। চল, আদালতে তোমার ও আমার মধ্যে ফায়ছালা হবে। সেসময় ঐ আদালতের বিচারক ছিলেন কাযী শুরাইহ। তিনি যখন আমীরুল মুমিনীনকে আসতে দেখলেন, তখন তাঁর বসার স্থান থেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং আলী (রাঃ)-কে নিজ স্থানে বসিয়ে তিনি তাঁর পাশে বসলেন। আলী (রাঃ) বিচারপতি শুরাইহকে বললেন, এই ব্যক্তির সাথে আমার বিরোধ মিটিয়ে দিন। শুরাইহ বললেন, আমীরুল মুমিনীন! আপনার বক্তব্য কি? আলী বললেন, এই বর্মটি আমার। অনেক দিন হ’ল এটি হারিয়ে গেছে। আমি তা বিক্রয় করিনি, দানও করিনি। শুরাইহ বললেন, ওহে খৃষ্টান! আমীরুল মুমিনীন যা বলছেন, সে ব্যাপারে তুমি কী বলতে চাও? সে বলল, আমি আমীরুল মুমিনীনকে মিথ্যাবাদিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করছি না, তবে বর্মটি আমারই। শুরাইহ বললেন, বর্মটিতো এই ব্যক্তির দখলে রয়েছে। কোন প্রমাণ ছাড়া তার কাছ থেকে সেটা নেয়া যাবে বলে আমি মনে করি না। আপনার কাছে কোন প্রমাণ আছে কি? আলী (রাঃ) হেসে ফেললেন এবং বললেন, শুরাইহ ঠিকই বলেছেন। আমার নিকট তো কোন প্রমাণ নেই। নিরুপায় শুরাইহ খৃষ্টানের পক্ষেই রায় দিলেন এবং সে বর্মটি গ্রহণ করে রওয়ানা হ’ল। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে সে আবার ফিরে এল এবং বলল, আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে, এটাই নবীদের বিধান ও শিক্ষা। আমীরুল মুমিনীন নিজের দাবী বিচারকের সামনে পেশ করেছেন, আর বিচারক তার বিপক্ষে রায় দিচ্ছেন। আল্লাহর কসম, হে আমীরুল মুমিনীন! এটা আপনারই বর্ম। আমি এটা আপনার কাছে বিক্রয় করেছিলাম। পরে তা আপনার মেটে রঙের উটটির উপর থেকে ছিটকে পড়ে গেলে আমি ওটা তুলে নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। আলী (রাঃ) বললেন, তুমি যখন মুসলমান হয়ে গেলে, তখন এ বর্ম এখন থেকে তোমার। অতঃপর আলী (রাঃ) তাকে ভাল দেখে একটা ঘোড়াও উপহার দিলেন এবং তাতে চড়িয়ে তাকে বিদায় দিলেন।[7]
এ থেকে বুঝা যায় যে, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠীগত পার্থক্য করা যাবে না। তেমনিভাবে বিশ্বের সকল মানুষের সকল স্থানে বিচরণ করা ও সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অধিকার কেউ হরণ করতে পারবে না। এমনকি কোন নাগরিককে দেশে প্রবেশে ও আইনের আশ্রয় নেয়াতে বাঁধা দিতে পারবে না। এটাই ইসলামী আইন।
পর্যালোচনা :
জাতিসংঘ মানবাধিকার সনদের ৬ নং ধারাতে ‘স্থান-কাল-নির্বিশেষে সকল জায়গায় মানুষ হিসাবে প্রত্যেকেরই আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার রয়েছে’ মর্মে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আসলে সুস্পষ্ট করে বলা হয়নি যে, বিশ্বের সকল মানুষ সকল স্বাধীন রাষ্ট্রে সমানভাবে আইনের এই অধিকার ভোগ করতে পারবে কি-না? কিন্তু ইসলামে এ বিষয়ে কোন অস্পষ্টতা রাখা হয়নি। বরং কুরআন ও ছহীহ হাদীছে সুস্পষ্ট করে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্ব হ’ল আল্লাহর কাছে একটা রাজ্য।
শ্রেণী-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার :
Article-7 : All are equal before the law and are entitled without any discrimination to equal protection of the law. All are entitled to equal protection against any discrimination in vilation of this Declaration and against any incitement to such discrimination. ‘আইনের চোখে সবাই সমান এবং শ্রেণী-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমানভাবে আইনের আশ্রয় নিতে পারবে। এই ঘোষণাপত্রে বর্ণিত অধিকারের প্রয়োগ না হ’লে বা প্রয়োগে বাঁধা পড়লে প্রত্যেকেরই অধিকার রয়েছে আইনের আশ্রয়ে সেই অধিকারকে কার্যকর করার’ (অনু: ৭)।
জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৭ ধারাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আইনের দৃষ্টিতে সকল মানুষ সমান এবং শ্রেণী-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে আইনের আশ্রয় নিতে পারবে। এতে আরও বলা হয়েছে, কোন মানুষের কেবল আইনের আশ্রয় নিতে পারাটাই যথেষ্ট নয়, যদি না সে তার ন্যায্য অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। অর্থাৎ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নেয়ার সাথে তার যৌক্তিক অধিকার আদায়ের বা প্রয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, ৬ ধারার সাথে ৭ ধারার কিছু অংশে মিল রয়েছে। তবে এক স্থানে পার্থক্য রয়েছে সেটা হ’ল ৬ ধারাতে ব্যক্তির আইনগত অধিকারের সাথে স্থানকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ৭ ধারাতে স্থানকে প্রাধান্য না দিয়ে শুধু ব্যক্তি-গোষ্ঠীর আইনের আশ্রয় পাবার বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে।
ইসলামের আলোকে জবাব :
জাতিসংঘ মানবাধিকার সনদের ৭ ধারাতে মানুষের আইনগত অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, ইসলাম সে ব্যবস্থাটি বহু পূর্বেই সমাধান দিয়েছে। শুধু সমাধানই দেয়নি, বরং ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সর্বত্র তা প্রতিষ্ঠিত করে গেছে, যার বাস্তব নমুনা খুলাফায়ে রাশেদীন এর শাসন ব্যবস্থা। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক বলেন, فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُوْلِ ‘তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মতভেদ ঘটলে সেটিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে ফিরিয়ে দাও’ (নিসা ৫৯)।
আল্লাহ আরও বলেন, وَأَنِ احْكُمْ بَيْنَهُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللهُ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ ‘আল্লাহ যে বিধান নাযিল করেছেন, তার ভিত্তিতে তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দাও এবং তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না’ (মায়েদাহ ৪৯)।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُوْنُوْا قَوَّامِيْنَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَى أَنْفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِيْنَ إِنْ يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقِيْرًا فَاللهُ أَوْلَى بِهِمَا فَلاَ تَتَّبِعُوْا الْهَوَى أَنْ تَعْدِلُوْا وَإِنْ تَلْوُوْا أَوْ تُعْرِضُوْا فَإِنَّ اللهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرًا ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য দানকারী, যদিও তা তোমাদের নিজেদের অথবা পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়। সে ধনী হৌক বা গরীব হৌক আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। অতএব ন্যায়বিচারে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ো না। যদি তোমরা চক্র কথা বল বা সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাও তাহ’লে (জেনে রেখো) আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ সংবাদ রাখেন’ (নিসা ৪/১৩৫)।
এ আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় যে, কোন মানুষ যদি অন্য মানুষের উপর যুলুম-নির্যাতন করে অথবা তাকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তা হবে অন্যায় ও মানবাধিকার পরিপন্থী। এর প্রতিকার পাবে ইসলামের ছায়াতলে; কুরআন ও ছহীহ হাদীছের ফায়ছালায়, অন্য কোন বিধানে নয়।
এ সম্পর্কে মহানবী (ছাঃ)-এর বাণী সমূহ :
সকল মানুষ যাতে আইনের আশ্রয় লাভ ও প্রতিকার পেতে পারে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বশ্রেষ্ঠ রূপকার মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর এক বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে গেছেন। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবন এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতই’।[8]
অতীত জাহিলিয়াতের যুগে কুরায়েশদের মধ্যে ছিল হিংসা-হানাহানি, গোত্রীয় অহমিকা ও বৈষম্য। আইনের প্রয়োগ হ’ত মানুষ ও গোত্র দেখে। ইসলামের আগমনের পর রাসূল (ছাঃ) উক্ত প্রথাকে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘হে কুরায়েশ বংশের লোকেরা! আল্লাহ তো তোমাদের জাহিলী যুগের অহংকার, গৌরব ও বংশীয় শ্রেষ্ঠত্ব বোধকে সম্পূর্ণ ধ্বংম করে দিয়েছেন’।[9]
এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) আরও বলেন, ‘আরবদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই অনারবদের উপর, অনারবদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই আরবদের উপর। কৃষ্ণাঙ্গদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই শ্বেতাঙ্গদের উপর, শ্বেতাঙ্গদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই কৃষ্ণাঙ্গদের উপর। তোমরা সকলেই আদমের বংশধর আর আদম সৃষ্টি হয়েছে মাটি থেকে।[10]
পর্যালোচনা :
বর্তমান বিশ্বে আইনের অপপ্রয়োগ চলছে। যার করুণ চিত্র আমাদের সামনে ফুটে উঠছে প্রতিনিয়ত, যা দেখে অাঁৎকে উঠতে হয়।
বাংলাদেশের বর্তমান চিত্রপট অত্যন্ত ভয়ংকর। ১৬ কোটি নাগরিকের এই দেশে মানুষ আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সহ নানা কারণে। পক্ষান্তরে যাদের অর্থ রয়েছে, রাজনৈতিক পরিচিতি ও প্রভাব রয়েছে তারাই কেবল আইনের আশ্রয় নিতে পারছে। আর যারা পারছে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের সে অধিকার সময়মত আদায় করতে পারছে না। দেশে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালতের (সুপ্রীম কোর্টের) অবস্থা অত্যন্ত ভয়ংকর। এক রিপোর্ট মতে দেশের আদালতগুলোতে প্রায় ২৮ লাখেরও বেশী মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন আদালতে ২৫ লাখ, সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৩ লাখ ও আপীল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে ১৭ হাযার মামলা। এসব মামলার মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছরের পুরনো মামলাও রয়েছে।
এছাড়া পুরনো ভূমি সংক্রান্ত মামলাগুলোর একটি বিরাট অংশ নিষ্পত্তির জন্য আদালতে উত্থাপিত না হওয়ার ফলেও মামলার জট বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানী হ’লেও জনস্বার্থে রিট আবেদন, ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলার নিষ্পত্তির সংখ্যা যথেষ্ট নয়। এসব কারণে দেশের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন আদালত পর্যন্ত সবখানে মামলার জট কমছে না। এ চিত্র থেকে দু’টি দিক ফুটে উঠে। একটি হ’ল আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থার মারাত্মক দৈন্য দশা। আর অপরটি হ’ল সাধারণ মানুষের ন্যায্যবিচার না পাওয়া। দেশের নিম্ন আদালতের কথা যদি বাদ দিয়ে সর্বশেষ আইনের আশ্রয়স্থল উচ্চ আদালত হাইকোর্টের কথা বলা হয়, তাহ’লে দেখা যাবে সেখানে চলছে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অবিচার, ব্যক্তি পরিচিতি (Face Value) ও রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচার, হয়রানি, বেঞ্চে ঘুষ না দিলে সিরিয়্যাল না পাওয়া প্রভৃতি। এমনকি বিচারকদের মাঝেও দুর্নীতির কথা জানা যায়। টাকা না থাকা ও কোর্ট সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের আইনের আশ্রয় না পাওয়া, এর জন্য বছরের পর বছর অথবা যুগযুগ ধরে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করা, আদালতে বিরোধী দলের দমন-পীড়ন, রাজনৈতিক বিবেচনায় অযোগ্য বিচারক নিয়োগ, ফাইল গায়েব হওয়া, সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় এ্যাটর্নী দপ্তর ও সরকারী পক্ষের লোকজনের অবহেলা ও অনিয়ম সব মিলে বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের বেহাল দশা। এই যদি আমাদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অবস্থা হয়, তাহ’লে এদেশের সাধারণ মানুষ আইনের আশ্রয় পাবে কি করে? ন্যায়বিচারইবা পাবে কোথায়?
তাছাড়া দেশে আইন বহির্ভূতভাবে মানুষের উপর যে অত্যাচার-নিপীড়ন, গুম, হত্যা চলছে তা অবর্ণনীয়। ২০১২ সালের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত বাংলাদেশের মানবাধিকার চিত্র দেখলে গা শিউরে ওঠে। ২০১২ সালে বাংলাদেশে ৭০ ব্যক্তিকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাবের হাতে নিহত হয়েছে ৪০ জন। অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ২৪ জন। এ বছর ১৬৯ জন রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৭ হাযার ১৬১ জন। ২৪ জন লোক গুম হয়েছে। অন্য এক রিপোর্টে গুম হওয়া লোকদের সংখ্যা ৫৬ বলা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাব ১০টির সাথে জড়িত বলে দাবী করা হয়েছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭ জন। আইন রক্ষকদের হাতে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ১৩টি।
দেশের কারাগারগুলোতে বন্দিদের ধারণ ক্ষমতা ৩৩ হাযার ৪৭০ জন হলেও সেখানে রাখা হয়েছে ৬৮ হাযার ৭০০ জন। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, দেশে ২০ লাখ ফৌজদারী অপরাধের মামলা ঝুলে আছে। দেশের দুর্বল বিচার বিভাগের কারণে বিচারের আগেই লোকজনকে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হয়। সরকার বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতাকে সীমিত করেছে। সাংবাদিকরা শিকার হচ্ছেন হয়রানি ও সহিংসতার। ২০১২ সালে ৪ জন সাংবাদিক খুন ও ১১৮ জন আহত হয়েছে। হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন আরও ৫০ জন। দুর্নীতি দমন কশিন সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে দুদক ব্যর্থ হয়েছে। সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের এপিএসের ঘুষ কেলেংকারির কোন সুরাহা হয়নি। বিচার বিভাগ সরকারের রাজনৈতিক চাপে চলছে। বিরোধী দলের মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হয় না।[11]
এদিকে মহিলা পরিষদের দেয়া তথ্য মতে, ২০১২ সালে ৬০০০ নারী শিকার হয়েছে ভয়াবহ নির্যাতনের। যদিও প্রকৃত চিত্র আরও বেশী। এর মধ্যে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং নির্যাতনের পর হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন ১৬০০ নারী। ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ১০৬ নারী। ইভটিজিং -এর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ২০ নারী। গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১৫৭টি। এসব অসহায় ধর্ষিতার মধ্যে ৩ বছরের বালিকা থেকে ৫৫ বছরের বৃদ্ধাও রয়েছে। ধর্ষণের ছবি তুলে ব্লাকমেইলের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে শত শত নারীকে।[12]
অথচ এসব অসহায় মানুষ, নারী, শিশুর অভিভাবকবৃন্দ থানা বা কোর্ট-কাচারিতে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না। সন্ত্রাসী ও গড ফাদারদের হুমকি-ধমকিতে ন্যায্যবিচার তো দূরের কথা তার দোরগোড়ায়ও তারা যেতে পারছে না। বরং মামলার কথা বললে জীবনের হুমকিতে পরিবারবর্গ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কিছু মামলা পরিস্থিতির কারণে থানা নিলেও দলীয় গডফাদার, মন্ত্রী/এমপিদের ফোনে অধিকাংশ থানা মামলা পর্যন্ত নিতে চায় না। এ হ’ল বাংলাদেশের আইন ও আইনের আশ্রয় প্রার্থীদের লোমহর্ষক কাহিনী। হেফাযতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের উপর (৫ মে রাত ২-টার পর) ঘুমন্ত অস্থায় যে পৈশাচিক ও বর্বর হত্যা-নির্যাতন চালানো হয়েছে তা সুস্পষ্ট মানবাধিকার লংঘন। দ্রুত এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিকে তাকালেও আমরা দেখতে পাব যে, সে দেশগুলোর সাধারণ মানুষ, নারী-শিশু, সংখ্যালঘুরা আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না, তেমনি ন্যায্য বিচারও পাচ্ছে না। এইতো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর দিকে তাকালেই তার বাস্তব নমুনা পেয়ে যাব। মুসলিম জাতি বলে বার্মা থেকে রোহিঙ্গাদেরকে কিভাবে নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিত হত্যা, নির্যাতন, নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, মসজিদ-মাদরাসা সহ তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়ে নিজ ভিটা-বাড়ী ছেড়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ তাদের কাছে এসব কোনটাই মানবাধিকার পরিপন্থী কাজ বলে মনে হচ্ছে না। বিশ্ব মোড়লেরা এগুলো যেন দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে। এভাবে ভারত (আসামে, কাশ্মীরে), ফ্রান্স, আমেরিকা (গুয়ানতানামো বে ও আবু গারীব কারাগারে), চীনসহ প্রায় সারা বিশ্বে জাতিসংঘ সনদের এই ৭ নং অনুচ্ছেদটির চরম অপব্যহার চলছে।
ইসলাম কখনও কারো প্রতি যুলুম, অন্যায়-অবিচার করে না বরং ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী ভেদে সকলের আইনের আশ্রয় নেয়ার অপূর্ব সুযোগ করে দিয়েছে এবং সকল মানুষের অধিকার ফিরে পাবার ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে সঊদী আরবে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার রয়েছে; ইসলামী আইন বলবৎ রয়েছে। সেখান থেকে বিশ্ববাসীকে শিক্ষা নিতে হবে। সবশেষ বলা যায়, জাতিসংঘের ৭ ধারার অস্পষ্টতা, অপূর্ণতা ও মানব রচিত এই সনদের বিশ্বময় অপব্যবহারের কারণে এই ধারাটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হ’তে চলেছে। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকটি গ্রহণ করার তাওফীক দান করুন-আমীন!
[চলবে]
শামসুল আলম
শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
[1]. Fifty Years of the Universal Declaration of Human Rights. P. 200.
[2]. বুখারী, হা/২৪৪৯; মিশকাত হা/৫১২৬ ‘সালাম’ অধ্যায়।
[3]. আবু দাঊদ হা/৪৮৮২, সনদ ছহীহ।
[4]. আবুদাঊদ হা/৪৮৭৬, সনদ ছহীহ।
[5]. আবু ইউসুফ, কিতাবুল খারাজ-এর উর্দু অনুবাদ, পৃঃ ৩৬৭।
[6]. বুখারী হা/৩৭৩৩; মুসলিম হা/১৬৮৯ ‘দন্ডবিধি’ অধ্যায়, ‘চোরের হাত কাটা’ অনুচ্ছেদ।
[7]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা ১০/১৩৬ হা/২০২৫২, ১০/১৩৬; আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ ৮/৫।
[8]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬১০।
[9]. তিরমিযী হা/৩৯৫৫-৫৬, ‘সিরিয়ার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ, সনদ হাসান।
[10]. বায়হাক্বী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০০।
[11]. দৈনিক ইনকিলাব, ২৭ এপ্রিল ২০১৩, পৃঃ ৮।
[12]. দৈনিক আমার দেশ, ০৬ জানুয়ারী, ২০১৩, পৃঃ ৬।