পর্ব ১। পর্ব ২। পর্ব ৩। পর্ব ৪। পর্ব ৫। পর্ব ৬। পর্ব ৭। পর্ব ৮। পর্ব ৯। পর্ব ১০। পর্ব ১১। পর্ব ১২। পর্ব ১৩। পর্ব ১৪। পর্ব ১৫। পর্ব ১৬

মৌলিক অধিকার (Fundamental Rights) :

Article-8. Everyone has the right to an effective remedy by the competent national tribunals for acts violating the fundamental rights granted him by the constitution or by the law.[1] ‘শাসনতন্ত্র বা আইনে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তিরই যথাযথ আদালতের শরণাপন্ন হবার অধিকার রয়েছে’ (অনুঃ ৮)।

এখানে জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৮নং অনুচ্ছেদে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদকে বিশ্লেষণ করলে তিনটি বিষয় স্পষ্ট হয়। এক. মানুষের মৌলিক অধিকার (Fundamental Rights), দুই. এ অধিকার একটি রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে নির্বাচিত মানুষ কর্তৃক নির্ধারিত হয় এবং তিন. তা সংরক্ষণ ও প্রয়োগের দায়িত্ব কেবল আদালতের কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। যদিও একটি রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী কখনও কখনও বলতেই পারেন যে, ‘ও বিষয়টি আমরা বলতে পারব না, ওটা আদালতের এখতিয়ার’ (!) অর্থাৎ সনদের এই ধারা অনুযায়ী কোন মানুষের মৌলিক অধিকার নষ্ট বা ক্ষুণ্ণ করা হ’লে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রীয় আইন-আদালতেই আশ্রয় নিতে পারে অন্যত্র নয়; যদিও সে তার অধিকার বাস্তবে কতটুকু পেল, না পেল তা আদালতের দেখার বিষয় নয়। কিন্তু ইসলাম এখানে তা বলে না। ইসলামের আলোকে এই ধারার বিশ্লেষণ করার পূর্বে মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা আবশ্যক।

মানবাধিকার (Human Rights) ও মৌলিক অধিকার (Fundamendal Rights) :

মানবাধিকার বিষয়টি পুরো মানবজাতির সাথে সংশ্লিষ্ট। মানব পরিবারের সকল সদস্যের জন্য সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলংঘনীয় অধিকার হ’ল মানবাধিকার।[2] এসব অধিকারের মধ্যে পড়ে মানুষের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক, রাজনৈতিক সহ নানান ধরনের অধিকার। যেমন কথা বলার অধিকার, মুক্ত ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার, কাজ করার, মতামত ব্যক্ত করার, শিক্ষা ও জাতীয়তা পাবার অধিকার প্রভৃতি। পৃথিবীতে মানুষের জন্মগ্রহণের সাথে সাথে তার মানবাধিকারের সূচনা হয়। এই অধিকার বিশ্বের সকল মানুষের ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। তবে মানবাধিকার ঘোষণাটি বিশ্বের সকল রাষ্ট্র মানতে বাধ্য নয়। কারণ বর্তমান বিশ্বে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সরকার নিজ ক্ষমতা বলে দেশের অভ্যন্তরে অথবা অন্য রাষ্ট্রে নানাভাবে মানবাধিকার লংঘন করে চলেছে। পক্ষান্তরে মেŠলিক অধিকার কেবলমাত্র একটি রাষ্ট্রের মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট। যখন কিছু/সমস্ত মানবাধিকার কোন দেশের সংবিধান দ্বারা মৌলিক অধিকাররূপে অন্তর্ভুক্ত, রক্ষিত ও নিশ্চয়তাপ্রাপ্ত হয় তখন সেগুলোকে মৌলিক অধিকার বলা হয়।[3]

বাংলাদেশ সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকারগুলো হ’ল- আইনের দৃষ্টিতে সমতা (২৭ ধারা), ধর্ম প্রভৃতি কারণে বৈষম্য (২৮ ধারা), সরকারী নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা (২৯ ধারা), আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার (৩১ ধারা), জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা (৩২ ধারা), গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে অধিকার (৩৩ ধারা), জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ (৩৪ ধারা), বিচার ও দন্ড সম্পর্কে রক্ষণ (৩৫ ধারা), চলাফেরার স্বাধীনতা (৩৬ ধারা), সমাবেশের স্বাধীনতা (৩৭ ধারা), সংগঠনের স্বাধীনতা (৩৮ ধারা), চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতা (৩৯ ধারা), পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা (৪০ ধারা), ধর্মীয় স্বাধীনতা (৪১ ধারা), সম্পত্তির অধিকার (৪২ ধারা), গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ (৪৩ ধারা), মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ (৪৪ ধারা)।[4]

মৌলিক অধিকার একটি দেশের আইন আদালত কর্তৃক বলবৎ ও সংরক্ষিত থাকে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৬ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকারের সহিত অসামঞ্জস্য সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান-প্রবর্তন হইতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে’। ২৬ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য কোন আইন প্রণয়ন করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত (তথা মৌলিক অধিকারের) সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে। বাংলাদেশের নাগরিকের কোন লংঘিত মৌলিক অধিকারের প্রতিকার পেতে সংবিধানের ১০২ ধারার আলোকে নিতে হয়। মৌলিক অধিকার যেভাবে বাংলাদেশে বলবৎ করা হয় অন্যান্য রাষ্ট্রেও মোটামুটি সেভাবে বলবৎ করা হয়। কিন্তু মানবাধিকার সুরক্ষিতভাবে বলবৎ করা হয় না এবং ক্ষমতাও কম-বেশী করা যায়।

উপরে যেসব মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার অনেকগুলো সার্বজনীন মানবাধিকার হিসাবেও স্বীকৃত। তবে মৌলিক পার্থক্য হ’ল মানবাধিকার আন্তর্জাতিক সনদে এবং মৌলিক অধিকারগুলো দেশীয় সংবিধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মানবাধিকার লংঘিত হ’লে আন্তর্জাতিক আদালতে এবং মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হ’লে উক্ত দেশীয় আদালতে আশ্রয় নিতে হয়। সর্বশেষ সংযোজন অনুযায়ী মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার ২৭টি অধিকারের মধ্য থেকে বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭টি নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত ও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সংবিধানের ৩য় অধ্যায়ের ২৬-৪৪ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারগুলো সন্নিবেশিত হয়েছে। তবে এ মৌলিক অধিকারের সংখ্যা সব রাষ্ট্রের সংবিধানে এক নয়। যেমন- বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদে দেয়া ‘চলাচল (আন্দোলনের) স্বাধীনতা’ কিংবা ৩৭ অনুচ্ছেদে দেয়া ‘সমবেত হওয়ার স্বাধীনতা’ কিউবা কিংবা চীনের মত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মৌলিক অধিকার রূপে চিহ্নিত নাও হ’তে পারে।[5]

জানা দরকার যে, সার্বজনীন মানবাধিকার হিসাবে কিছু বিষয় ইতিপূর্বে আলোচিত হয়েছে এবং যেগুলো হয়নি পরবর্তীতে তা আলোচনা করা হবে। তবে এখন দেখা যাক ইসলাম মৌলিক অধিকারের বিষয়ে কি বলতে চায়।

ইসলামের আলোকে মানুষের মৌলিক অধিকার :

জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ৮নং অনুচ্ছেদে মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য আদালতের আশ্রয় নেয়ার অধিকার রয়েছে মর্মে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে বহুকাল আগেই মৌলিক অধিকারের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারী বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) কর্তৃক ঘোষিত হয়েছে। একজন শিশু যখন ভূপৃষ্ঠে আগমন করে তখন সে শিশুটি জন্ম নেয়ার সাথে সাথেই চিৎকার করে কেঁদে পৃথিবীবাসীকে জানিয়ে দেয় যে, সে তার মৌলিক অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। সুতরাং তাকে রক্ষা ও দেখাশুনার কাজ পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে সমাজের সকলের। এক পর্যায়ে সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য পালনের মাধ্যমে শিশুটি ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠে। তবে একজন মানুষ ‘পূর্ণাঙ্গ মানুষ’ হ’লেই যে তার অধিকার শেষ হয়ে যায় তা নয়; বরং পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার তার সবকিছু পাবার ও ভোগ করার অধিকার রাখে সে। শুধু তাই নয়, তার অধিকার বাস্তবায়নের দায়িত্ব ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়। আর যদি দেশটি ইসলামী রাষ্ট্র না হয় তবে তার অধিকার কিভাবে রক্ষা হবে তার বিবরণও ইসলামে পূর্ণভাবে দেয়া হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব শুধু আদালতকেই নিতে হবে এমনটি নয়। বরং ব্যক্তি-গোষ্ঠী-সমাজের ওপর বর্তায় অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের আলোচ্য ধারায় তার উল্লেখ নেই।

মহান আল্লাহ তাঁর অসংখ্য মাখলুকাতের মধ্যে মানব জাতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা মর্যাদার দিক থেকে এ জাতিকে ফেরেশতাদের চেয়েও উচ্চ স্থানে আসীন করেছেন। শুধু তাই-ই নয় সৃষ্টির প্রথম মানব আদম (আঃ)-কে সিজদা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, فَإِذَا سَوَّيْتُهُ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِي فَقَعُواْ لَهُ سَاجِدِينَ ‘যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা সকলে তার সামনে সিজদাবনত হবে’ (হিজর ১৫/২৯)

আরো উল্লেখ্য যে, আদম (আঃ)-কে যেমন সর্বাধিক সম্মান-মর্যাদা দান করা হয়েছে তেমনি জগতের নিয়ামতরাজি ও সম্পদ সমূহ মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন এনে তাদের সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلاً ‘আমরা আদম সন্তানদের মর্যাদা দান করেছি, জলে-স্থলে তাদেরকে চলাচলের বাহন দিয়েছি। তাদেরকে পবিত্র বস্ত্তর রিযিক দান করেছি এবং আমাদের অসংখ্য সৃষ্টির উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’ (বনী ইসরাঈল ৭০)

এ আয়াতদ্বয় থেকে বুঝা যায়, আল্লাহ মানুষকে কত মর্যাদাবান ও শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। একইভাবে তাঁরই বংশোদ্ভূত অন্যান্য মানুষও কিভাবে পরস্পরে মান-সম্মান, জান-মালের ব্যবহার ও প্রয়োগ করবে তার নির্দেশনাও দিয়েছেন। এটা কেবল দেখানোর উদ্দেশ্য নয়; বরং প্রত্যেক মানুষ তা পাবার অধিকারী।

এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেন, ‘তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের সম্মান আমাদের মধ্যে ঠিক তেমনি পবিত্র, যেমনি তোমাদের আজকের এই দিন, এই মাস, এই শহর পবিত্র’।[6]

বাংলাদেশ সংবিধানের ৩য় অধ্যায়ের ৩২ ও ৪২ ধারাতে বর্ণিত মৌলিক অধিকার গুলোতে উপরোক্ত আয়াতগুলোর মর্ম প্রতিধ্বনিত হয়েছে। এছাড়া ৩৬ ও ৩৯ ধারাতে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা নিম্নের আয়াত ও হাদীছ থেকে পাওয়া যাবে।

ইসলামে একে অপরের গোপন তথ্য খোঁজা এবং তার ব্যক্তিসত্তার অনুসন্ধান করাও নিষিদ্ধ। যেমন আল্লাহ বলেন, وَلاَ تَجَسَّسُوْا وَلاَ يَغْتَب بَّعْضُكُمْ بَعْضاً  ‘তোমরা গোয়েন্দাগিরি কর না এবং একজন অপরজনের গীবত কর না’ (হুজুরাত ১২)। তিনি আরো বলেন, وَلاَ تَلْمِزُوْا أَنفُسَكُمْ وَلاَ تَنَابَزُوْا بِالْأَلْقَابِ  ‘তোমরা পরস্পরকে দোষারোপ কর না এবং একে অপরকে খারাপ উপাধিতে ভূষিত কর না’ (হুজুরাত ১১)

অর্থাৎ কেউ কাউকে ছোট-বড় ভাবার সুযোগ নেই। এখানে ধনী-গরীব, আমীর-ফকীর সকলে সমান। ‘বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদে ২৭ ও ২৮ ধারায় আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ধর্ম প্রভৃতি কারণে বৈষম্য না করার ঘোষণা এসেছে। অথচ এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘একজন অনারবের উপর একজন আরবের, একজন আরবের উপর অনারবের, কালো মানুষের উপর সাদা মানুষের, সাদা মানুষের উপর কালো মানুষের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই’।[7] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরো বলেন, ‘মুহাম্মাদের মেয়ে ফাতেমাও যদি চুরি করত তবে আমি তার হাত কেটে দিতাম’।[8]

এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وَلِكُلٍّ دَرَجَاتٌ مِّمَّا عَمِلُوا وَلِيُوَفِّيَهُمْ أَعْمَالَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ ‘সকল মানুষের জন্য নিজ নিজ কাজ অনুপাতে মর্যাদা রয়েছে। এটা এজন্য যে, আল্লাহ প্রত্যেকের কাজের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না’ (আহকাফ ৪৬/১৯)

আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেন, فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَرَهُ، وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرّاً يَرَهُ- ‘যে অনু পরিমাণ ভাল কাজ করবে সে তা দেখবে, আর যে অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করবে সেও তা দেখবে’ (যিলযাল ৭-৮)

মৌলিক অধিকারের ২৯ ও ৪০ ধারায় উল্লেখ রয়েছে- একটি দেশের প্রত্যেক মানুষ সরকারী চাকুরীতে সমতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মে যোগ দিতে পারবে এবং প্রত্যেকে পেশা ও ব্যক্তির স্বাধীনতা পাবে। যার জবাব উক্ত আয়াতে পাওয়া যায়। কারণ ইসলাম সব সময়ে যোগ্যতা, সততা, দক্ষতা ও আল্লাহভীরুতাকে অগ্রাধিকার দেয়। কেউ কোন চাকুরী বা ক্ষমতা চেয়ে নিতে পারবে না। আর এগুলো সংরক্ষণ ও প্রয়োগের দায়িত্ব সরকারী কর্তৃপক্ষের। তবে বাংলাদেশ সংবিধানের যোগ্যতা, পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতার নামে সরকার সূদ, মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি ও অন্যান্য ক্ষতিকর নিষিদ্ধ ক্ষেত্র ও তার সাথে জড়িত পেশা-শ্রেণীকে বৈধ করে দিয়েছে, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও মানব কল্যাণের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বরং মৌলিক অধিকারের নামে এগুলো সংরক্ষণ করাটায় এক প্রকার মানবাধিকার লংঘন। আর যোগ্যতার কথা? সে তো অনেক দূরের কথা। এখন দলীয় সরকার কর্তৃক অযোগ্য, অদক্ষ, অনভিজ্ঞ, অসৎ লোকদেরকে সরকারী নিম্ন থেকে উচ্চ পদমর্যাদায় নিয়োগ বদলী, পদন্নোতি দেয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সরকার পরিচালনায় অদূর ভবিষ্যতে সৎ, যোগ্য, দক্ষ লোক পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। বিশ্বে অন্যান্য দেশেও দেখা যায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যখন যে সরকার আসে তখন সে সরকার নিজ দলীয় লোক নিয়োগ দেয়। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে এ ঘটনা ঘটছে। জানা যায়, আমেরিকাতে কোন দলীয় সরকার পরিবর্তন হ’লে পূর্ববর্তী সরকারের নিয়োগ দেয়া শতকরা ৮০-৯০% কর্মচারী পরিবর্তন করা হয় অথবা বাতিল করা হয়। এখন দেখুন বাতিলকৃত কর্মচারীদের অবস্থাও কেমন হ’তে পারে। এটা কি মৌলিক অধিকার পরিপন্থী নয়?

এখানে স্পষ্টত বুঝা যাচ্ছে যে, আইনের সমতা বিধানে ইসলাম কত সুন্দরতম সমাধান দিয়েছে। একইভাবে ধর্মীয় বৈষম্য না করার কথা বলা হয়েছে। যা ২৮ ধারাতে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধর্ম-গোষ্ঠীর ধর্ম পালন ও কাজ-কর্মে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইসলাম সুন্দর উদারতা ও মানবতা দেখিয়েছে। পবিত্র কুরআনে উল্লেখ রয়েছে لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ‘ধর্মের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই’ (বাক্বারাহ ২৫৬)

কুরআনে আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা যদি আপনার কাছে আসে তবে হয় তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করে দিন অন্যথায় তাদের ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকুন। আপনি যদি নির্লিপ্ত থাকেন, তবে কেউ আপনার ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করেন, তবে তা ন্যায়সংগতভাবে করে দিন’ (মায়েদাহ ৪২)

অর্থাৎ ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ভেদে মানুষের পরস্পরের অধিকার আদায়ের উত্তম ব্যবস্থা ইসলামেই বর্ণিত রয়েছে। একটি ইসলামী রাষ্ট্রের শাসক তাঁর সকল নাগরিকের মূল যিম্মাদার বা আমানতদার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে খলীফা বা প্রতিনিধি হিসাবে তিনি কুরআনী বিধানানুযায়ী মানুষের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দু’একটি দৃষ্টান্ত দিলে তা বুঝা যাবে যে, ইসলামী রাষ্ট্রের শাসকগণ মানুষের মৌলিক চাহিদা ও অধিকারের ব্যাপারে কত সজাগ ও সচেতন ছিলেন। মুসলিম জাহানের খলীফা ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, لو ماةة شاة على شط الفراة ضائعة لظننة أن الله سائلي عنها يوم القيامة- ‘ফোরাতের তীরে যদি কোন একটি ছাগলও না খেয়ে মারা যায়, তাহ’লে আমি ধারণা করি যে, কিয়ামতের আল্লাহর কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে?[9]

২য় খলীফা হযরত ওমর (রাঃ) জনৈকা অসহায়-অন্নহীনা মহিলাকে রাতের অাঁধারে আটার বস্তা নিজ ঘাড়ে করে বাড়ীতে পৌঁছে দিয়েছিলেন।[10] হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁর খেলাফতকালে অসহায় অন্ধ এক বৃদ্ধার বাড়ীতে গিয়ে খাবার তৈরীসহ সকল কাজ সম্পন্ন করে আসতেন।[11]

বাদশাহ আলমগীরের আমলে তাঁর একজন মুসলিম সেনাপতি পাঞ্জাব অভিযানকালে একটি গ্রাম অতিক্রম করছিলেন। সে সময় একজন ব্রাহ্মণের পরমা সুন্দরী এক মেয়েকে দেখে তিনি তার পিতার কাছে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পিতা অনন্যোপায় হয়ে বাদশাহর শরণাপন্ন হ’লেন। ওয়াদা অনুযায়ী উক্ত সেনাপতি এক মাস পরে বরবেশে উক্ত ব্রাহ্মণের বাড়ীতে উপস্থিত হ’লেন। কিন্তু ঘরে প্রবেশ করেই দেখলেন ছদ্মবেশী সম্রাট আলমগীর উলঙ্গ তরবারি হাতে স্বয়ং তার সম্মুখে দন্ডায়মান। ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে সেনাপতি সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। গ্রামবাসী হিন্দুরা ঐ দিন থেকে গ্রামের নাম পাল্টিয়ে রাখল ‘আলমগীর’। যে কামরায় বসে বাদশাহ আলমগীর ঐ রাতে ইবাদতে রত ছিলেন, ঐ কামরাটি আজও হিন্দুদের নিকট পবিত্র স্থান বলে সম্মানিত হয়ে আছে। কেউ সেখানে জুতা পায়ে প্রবেশ করে না।[12]

একদা সিরিয়া বিজেতা সেনাপতি আবু ওবায়দা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) যুদ্ধ কৌশল হিসাবে সিরিয়া থেকে আপাততঃ সৈন্যদল পিছিয়ে অন্যত্র চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফলে সিরিয়ার খৃষ্টান নেতৃবৃন্দকে ডেকে তিনি তাদের নিকট থেকে গৃহীত জিযিয়া কর ফেরৎ দিলেন। এতে শহরের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা দলে দলে এসে ক্রন্দন করতে লাগল ও কাকুতি-মিনতি করে বলতে লাগল, আপনারাই আমাদের এলাকা শাসন করুন। আমাদের স্বজাতি খৃষ্টান যালেম শাসকদের হাতে আমাদেরকে পুনরায় ন্যস্ত করবেন না। সেনাপতি বললেন, আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব যেহেতু নিতে পারছি না, সেহেতু আপনাদের প্রদত্ত জিযিয়া কর আমরা রাখতে পারি না।[13]

জান-মালের নিরাপত্তা বিষয়ক মৌলিক অধিকার রক্ষার এই বিরল দৃষ্টান্ত দেখে তারা মুগ্ধ হ’ল। যার কারণে তখন থেকে আজও সিরিয়াকে শতভাগ মুসলিম দেশ হিসাবে পৃথিবীর মানচিত্রে দেখা যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেখানেই আজ মানুষের জান-মাল রক্তের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। লংঘিত হচ্ছে মৌলিক অধিকার। পদদলিত হচ্ছে মানবাধিকার। এখানে গত আড়াই বছরে ১ লাখেরও বেশী লোক নিহত এবং লক্ষ লক্ষ লোক আহত এবং ২০ লাখের বেশী উদ্বাস্ত্ত হয়েছে।

মুসলিম খলীফা মামূন, হারূনুর রশীদ প্রমুখ জনগণের বাড়ীতে অলি-গলিতে রাতের অাঁধারে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র অনুসন্ধান করে তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা করতেন। ইসলামের অনুসারী ঐ সকল খলীফা ও মুসলিম শাসকগণ একমাত্র আল্লাহর ভয়ে এই দায়িত্ব পালন করতেন। তারা ভাবতেন সাধারণ মানুষ মৌলিক অধিকার বঞ্চিত হওয়ার কারণে আল্লাহর আদালতে তাঁদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। তাঁরা যদি সঠিক জবাব দিতে না পারেন তাহলে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হ’তে পারেন।

এ তো গেল মুসলিম শাসকগণের ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ দায়িত্ববোধের কথা। আর সাধারণ জনগণ বিনা বাধা এবং নির্দ্বিধায় ইসলামী রাষ্ট্রের শাসকদের দরবারে তাদের মৌলিক চাহিদা বা অধিকারের কথা সরাসরি জানাতে পারতেন। এজন্য শাসকগণ রীতিমত প্রত্যহ সময় নির্ধারণ করে রাখতেন। বর্তমানে শুধু বাংলাদেশে কেন বিশ্বের কোথাও সে সুযোগ আছে কি-না সন্দেহ। সাধারণ মানুষকে এমপি/মন্ত্রী/প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রবেশ করতে হ’লে ক্ষেত্র বিশেষে আট/দশ ধাপ পারি দিয়ে অথবা বাধা অতিক্রম করে ঢুকতে হয়। এরপরেও সে তার মৌলিক অধিকার পায় না? পক্ষান্তরে যদি কোন হটলাইনের সুপারিশ বা ফোন না থাকে তাহ’লে তার অধিকার কিছুটা হ’লেও পায়। আর বর্তমানে আদালত ব্যবস্থা এমনি হয়ে গেছে যে, হতদরিদ্র মানুষের অধিকার আদায় তো দূরের কথা, টাকা-পয়সার অভাবের কারণে সে আদালতের চৌকাঠই মাড়াতে পারে না।

বিশ্বের অন্যান্য দেশেও মানুষ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার হ’তে বঞ্চিত হচ্ছে। যেমন- যাত্রা দেখতে গিয়ে বিনা দোষে প্রায় ১২ বছর ভারতের কারাগারে কাটাতে হয় কুড়িগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের ছেলে আশিক মিল্টনকে। গত ৭ জুলাই ২০১২ দেশে ফিরে মিল্টন সাংবাদিকদের জানায়, তার সাথে যাওয়া অন্য বন্ধুদের ছেড়ে দিলেও তাকে ছাড়েনি। সে বলে যে, ভারতের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার নাম মিছির দাস ওরফে মিল্টন। তাকে ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারতীয় পুলিশ অন্যায়ভাবে তার নামে চার্জশীট দেয়। সেই বিচারেই সে এতদিন আটকে ছিল।[14]

যুক্তরাষ্ট্রের লস এ্যাঞ্জেলসের এক ব্যক্তি খুনের মামলায় ৩৪ বছর কারাভোগের পর নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ১৯ বছর বয়সে জেলে ঢুকেছিলেন কেস ডেলানো রেজিষ্ট্রার নামক এই ব্যক্তি। বের হয়েছেন ৫৩ বছরে প্রায় বৃদ্ধ হয়ে। যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়টা তাকে জেলে কাটাতে হয়েছে মিথ্যা খুনের মামলায়।[15]

বাংলাদেশে এরকম হাযার হাযার লোকের বিনা দোষে জেল খাটার অভিযোগের কথা জানা যায়। এছাড়া যারা আদালতের আশ্রয়ে গিয়ে রায় পেয়ে থাকেন সেই রায়ের কপিও পেতে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। অর্থাৎ রায়ের ফল পেতে বহু দিন অপেক্ষা করতে হয়। একদিন মামলা সংক্রান্ত কাজে ঢাকা হাইকোর্টে বন্ধুর (ডেপুটি এ্যাটর্নী জেনারেল) চেম্বারে বসে আছি। ভুক্তভোগী এরকম এক কেস এর দায়িত্ব তাঁকে দেয়া হয়েছে। পাশে অনেক সিনিয়র এ্যাডভোকেটও রয়েছেন। প্রসঙ্গক্রমে বিষয়টি আলোচনায় এলে একজন এ্যাডভোকেট বলেন, ‘আমার জানা মতে আপীল ডিভিশনের একটি রায়ের কপি নিম্ন আদালতে পৌঁছিতে কয়েক মাস থেকে শুরু করে কয়েক বছর পর্যন্ত লেগে যায়। আর আপনার রায় তো কয়েক সপ্তাহ হয়েছে। তাহলে দেখুন! মানুষের ন্যায্য মৌলিক অধিকার বা ন্যায়বিচার পাওয়ার সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ আশ্রয়স্থল হ’ল দেশের সুপ্রীম কোর্টের আপীল ডিভিশন, সেখানেই যদি এ অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে কিসের ভিত্তিতে মানুষের মৌলিক অধিকার আদায় হ’তে পারে, তা ভাববার বিষয়।

আর এক বন্ধুর (অতিরিক্ত জেলা জজ) সাথে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গটি উঠে আসে। এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘বন্ধু এখন তো সেরকম ন্যায়বিচার নেই। কারণ সেখানে ন্যায়বিচার বলতে সরকার দলীয় বিচারই হয়ে গেছে’। অর্থাৎ তাঁর কথার সারমর্ম হ’ল এখন বাংলাদেশের আদালতে সকল শ্রেণীর মানুষের আশ্রয় নেয়ার অধিকার যেমন ক্ষীণ, তেমনি তারা ন্যায়বিচারও পাচ্ছে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে পরাশক্তিধর দেশগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে সহজে অনুমান করা যায় যে, বর্তমানে কত লক্ষ-কোটি বনু আদম বিশেষ করে মুসলমান এবং উদ্বাস্ত্তদেরকে তারা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। প্রতিনিয়ত অবলীলায় তারা মানবাধিকার লংঘন করছে। আর আদালতের আশ্রয় পাওয়া তো সুদূর পরাহত।

ইঙ্গ-মার্কিন কর্তৃক মুসলিম যোদ্ধাদেরকে ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের গোপন ঘাঁটিগুলোতে অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের দাবীকে উপেক্ষা করে করা হচ্ছে এবং ঐসব যোদ্ধাদেরকে ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আইন-আদালতের আশ্রয় নেয়ার সুযোগটুকু পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না। ফলে জাতিসংঘ ঘোষিত সার্বজনীন মানবাধিকার আইনের এই ধারাটি সুস্পষ্টভাবে হরহামেশা লংঘিত হচ্ছে।

পক্ষান্তরে ইসলাম মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের ব্যাপারে অত্যন্ত সোচ্চার। যার কোনরূপ অসদ্ব্যহারের সুযোগ নেই। অর্থাৎ একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ইসলামই পারে জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার সনদের ত্রুটিপূর্ণ উক্ত ৮ ধারার উৎকৃষ্টতম সমাধান দিতে।

শামসুল আলম

শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।


[1]. Fifty years of the Universal Declaration of Human Rights Dhaka, P. 200.

[2]. ড. রেবা মন্ডল ও ড. শাহজাহান মন্ডল, মানবাধিকার আইন সংবিধান ইসলাম এনজিও (ঢাকা শামছ পাবলিকেশন্স, ২য় প্রকাশ ২০০৯), পৃঃ ২৪।

[3]. তদেব, পৃঃ ২৬।

[4]. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান, অক্টোবর-২০১১, ঢাকা, পৃঃ ৮-১২।

[5]. মানবাধিকার আইন সংবিধান ইসলাম এনজিও, পৃঃ ২৫-২৬।

[6]. ইবনে মাজাহ হা/৩০৫৫।

[7]. তিরমিযী হা/৩৯৫৫-৫৬, ‘সিরিয়ার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ, সনদ হাসান।

[8]. আবু দাঊদ, হা/৪৩৭৩ ‘হুদূদ’ অধ্যায়।

[9]. হিলইয়াতুল আওলিয়া ১/৫৩।

[10]. ইবনু সা‘দ, তাবাকাতুল কুবরা (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যহ ১৪১০/১৯৯০), ৩/২২৬ পৃঃ।

[11]. তারীখু মাদীনাতি দিমাশক ৩০/৩২২।

[12]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, ইনসানে কামেল (রাজশাহী : হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), পৃঃ ৩১।

[13]. বালাযুরী, ফুতূহুল বুলদান, পৃঃ ১৩৪।

[14]. মাসিক আত-তাহরীক, ১৫তম বর্ষ, ১৩ তম সংখ্যা, পৃঃ ৪৫।

[15]. দৈনিক ইনকিলাব, ১০ নভেম্বর ২০১৩, পৃঃ ১৬।






প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের শিষ্টাচার - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
লজ্জাশীলতা উত্তম চরিত্রের ভূষণ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আহলেহাদীছ আন্দোলন-এর পাঁচ দফা মূলনীতি : একটি বিশ্লেষণ (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
ছিয়ামের আদব - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
বিদ‘আত ও তার পরিণতি (৮ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
ব্রেলভীদের কতিপয় আক্বীদা-বিশ্বাস - মুহাম্মাদ নূর আব্দুল্লাহ হাবীব
জান্নাত লাভের কতিপয় উপায় (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমান (৩য় কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
কিয়ামত আসন্ন ও অবশ্যম্ভাবী - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
আহলেহাদীছ জামা‘আতের বিরুদ্ধে কতিপয় মিথ্যা অপবাদ পর্যালোচনা (৬ষ্ঠ কিস্তি) - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
সফরের আদব (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
১৬ মাসের মর্মান্তিক কারা স্মৃতি (৩য় কিস্তি) - মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম
আরও
আরও
.