আমি মুহাম্মাদ মুস্তাফীযুর রহমান। চূয়াডাঙ্গা যেলাধীন মাখালডাঙ্গা গ্রামে আমার জন্ম। ছোট বেলা থেকেই বেশ ধর্মভীরু ছিলাম। তবে হক পথ কোন্টি তা বুঝতাম না। এজন্য বন্ধুদের পরামর্শে ১৯৯৭ সাল থেকে তাবলীগ জামাআতের সাথে দাওয়াতী কাজ শুরু করি এবং ২০০০ সালে এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়ে ১ চিল্লা দিতে ফেনী যেলায় যাই। এরপর আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। এলাকায় আমি তাবলীগ জামাআত প্রচার ও প্রসার করার লক্ষ্যে কাজ করতে থাকি। অতঃপর এইচ.এস.সি পাশ করে ২০০৬ সালের ২৭ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে’ যোগদান করি। চাকুরীর পাশাপাশি তাবলীগ জামাআতের সাথে কাজ করতে থাকি। অবশেষে ২০১৩ সালে আমার জীবনে পরিবর্তন আসে। সন্ধান পাই ছহীহ আক্বীদার। আর পেছনের ভুল স্মরণে উদ্বিগ্ন হয়ে যাই। কেননা আমি দীর্ঘ ১৬টি বছর তাবলীগ করেও ভুলের মধ্যে হাবুডুবু খেয়েছি। যাই হোক আমার সহকর্মী মুহাম্মাদ আসলামের মাধ্যমে নরসিংদী যেলা থেকে ছহীহ আক্বীদার কিছু বই সংগ্রহ করি। যদিও আমি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করছি। কিন্তু সঠিক আক্বীদার কোন বই এখানকার লাইব্রেরীতে না পেয়ে নরসিংদী থেকে বই সংগ্রহ করি। অতঃপর সংগৃহীত বইগুলো পাঠে নিশ্চিত হই যে, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছই একমাত্র হক। বাকী সবই বাতিল।

অতঃপর আমি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে নিজে আমল শুরু করি এবং আমার পরিবারকে বুঝাই। ফলে মা, বাবা, স্ত্রী, বোন সবাই হক কবুল করে। ফালিল্লা-হিল হাম্দ। পরিবারে দাওয়াত শেষ করে কর্মস্থলে সহকর্মীদেরকে দাওয়াত দেওয়া শুরু করলাম। আমার ছালাত দেখে তারা প্রথমে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতে লাগলো। ধীরে ধীরে বুঝিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে গেলাম। এমনকি আমি ইমাম নিযুক্ত হয়ে ছালাতে মুক্তাদীদের সূরা ফাতেহা পাঠ করা, আমীন জোরে বলা, মোনাজাত না করা সহ বিভিন্ন মাসআলা স্যারদেরকে বুঝিয়ে বলতাম। এভাবে অনেক দূর অগ্রসর হ’লাম। কিন্তু হঠাৎ ২১ ডিসেম্বর’১৩ যোহরের ছালাতে অন্য ইউনিটের একজন লেঃ কর্ণেল স্যারের সাথে ছালাতে রাফঊল ইয়াদায়েন করা নিয়ে বিতর্ক হয়। তিনি সবার সামনে আমাকে বললেন, তোমার ছালাতই হয়নি। কেননা তুমি রাফঊল ইয়াদায়েন করেছ। আমি তখন বুখারী শরীফের ৭৩৫ থেকে ৭৩৯ নং হাদীছের রেফারেন্স তুলে ধরলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। তিনি বললেন, আমাকে শিখাচ্ছ, জ্ঞান দিচ্ছ? প্রায় আধা ঘণ্টা তর্কবিতর্কের পরে শেষ পর্যায়ে তিনি বিষয়টি স্বীকার করলেন। যাই হোক এরপরেও আমি স্যারের নিকটে ক্ষমা চাইলাম। কারণ তিনি একজন আর্মি অফিসার তাকে সম্মান করা আমার কর্তব্য। স্যার আমাকে ক্ষমা করে দেন। কিন্তু এ সময়ে মসজিদে উপস্থিত গোয়েন্দারা উপরে রিপোর্ট করে দেয় যে, একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে তর্কে লিপ্ত হওয়ার অপরাধে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর এই রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ আমাকে চাকুরী থেকে (Remove all from Service) অপসারণ করে দেয়। এক্ষণে এ বিষয়ে আমি একটি আপীল করেছি। আমাদের চাকুরী বিধি অনুযায়ী আপীলে জয়ী হ’লে আমি পুনরায় চাকুরী ফিরে পাব ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্যঃ হকের পথে চলতে গেলে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে, তারপরেও সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমার লক্ষ্য পরকাল। এই পৃথিবীতে আমি সবকিছু হারালেও কোন দুঃখ নেই। কেননা আমি কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়তে চাই এবং তার উপরে অটল থাকতে চাই। পরিশেষে আত-তাহরীক-এর মাধ্যমে দেশবাসীর নিকট দো‘আ চাচ্ছি, আমি যেন সকল বাধা পেরিয়ে আমার কর্মস্থলে যোগ দিয়ে আমার বাকী জীবন দ্বীনের সঠিক দাওয়াত ও খিদমত করে যেতে পারি। আল্লাহ আমাকে তাওফীক দান করুন- আমীন!

-মুহাম্মাদ মুস্তাফীযুর রহমান

অর্ডন্যান্স ডিপো, কুমিল্লা সেনানিবাস।






হকের পথে যত বাধা - .
কুসংস্কারাচ্ছন্ন একটি সমাজে তাওহীদের চারাগাছ রোপিত হ’ল যেভাবে - মুহাম্মাদ বেলাল বিন ক্বাসেম
আহলেহাদীছ হওয়ার কারণে বাড়ীছাড়া! - -মুহাম্মাদ ইবরাহীম, দাগনভূঞা, ফেনী।
তুমি বেলাইনে চলে গেছ - মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান
মাযহাবীদের চাপে নিজের মসজিদ ছাড়তে হ’ল - * মুহাম্মাদ দেলাওয়ার হোসাইনকুঠিপাড়া, ফরিদপুর।
হকের পথে যত বাধা - মুহাম্মাদ ইসমাঈল হোসাইন - মাইজদী, নোয়াখালী
হক-এর পথে যত বাধা
ছহীহভাবে ছালাত আদায় করায় নিজের পিতাও বিদ্রূপ করা শুরু করলেন - আত-তাহরীক ডেস্ক
মাযহাব না মানার কারণে আশ্রয় হারাতে হ’ল - -খালিদ সাইফুল্লাহ, গাযীপুর।
জোরে ‘আমীন’ বলার অপরাধে মুছল্লীদের লাঠির আঘাতে মসজিদে লুটিয়ে পড়লাম - আত-তাহরীক ডেস্ক
যেভাবে হকের দিশা পেলাম! - আত-তাহরীক ডেস্ক
স্রেফ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই হোক আমাদের পথচলা
আরও
আরও
.