আমার বাড়ি চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলার শিবগঞ্জ থানার রসূলপুর গ্রামে। আমরা এখানকার নতুন বাসিন্দা। এ এলাকার একটি মাদরাসা হ’তে দাখিল পাশ করি ২০১০ সালে। তারপর আলিমে ভর্তি হই চাঁপাই নবাবগঞ্জ যেলার হেফযুল উলূম কামিল মাদরাসায়। আমি থাকতাম মাদরাসা হোস্টেলে। কয়েক মাস পর আমার পাশের রুমে কয়েকজন ভাই আসলো। খবর নিয়ে জানলাম তারা এ মাদরাসায় কামিলে ভর্তি হয়েছে। সেই ভাইদের সাথে আমার একটা ভাল সম্পর্ক হয়ে যায়। আমি দেখতাম তাদের ছালাত আর আমার ছালাতে অনেক পার্থক্য। আমি তাদেরকে বললাম যে, আপনারা কেন এভাবে ছালাত আদায় করেন? তারা বলে যে, হাদীছ অনুযায়ী এটাই ছালাতের সঠিক পদ্ধতি। আমি অবাক হয়ে গেলাম। তারা আমাকে দাওয়াত দেয় যেন আমিও তাদের মত করে ছালাত আদায় করি। আমি দাওয়াত গ্রহণ করলাম। আমাদের ক্লাশে যে মিশকাত শরীফ পড়ানো হয় তাতে দেখলাম যে এটাই ছালাতের সঠিক পদ্ধতি। তারপর থেকে ছহীহ হাদীছ মোতাবেক ছালাত আদায় করা শুরু করি। ঐ ভাইদের কাছ থেকেই জানলাম, আহলেহাদীছ আন্দোলন সম্পর্কে। তাদের মোবাইল থেকে আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ, আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল, মোযাফফর বিন মুহসিন, মুতীউর রহমান মাদানীর বেশ কিছু বক্তব্য সংগ্রহ করি। এই বক্তব্যগুলো শুনার পর আসল হক সম্পর্কে জানতে পারলাম। একদিন বাড়ি এসে আমার গ্রামের একটি ছেলেকে সঠিক ছালাত আদায় করা সম্পর্কে বললাম। আমাদের গ্রামের সকলেই হানাফী মাযহাবের অনুসারী। তাই সে আমার কথা বিশ্বাস করতে পারল না। তারপর তাকে আমি মিশকাত থেকে কয়েকটি হাদীছ দেখালাম। তারপর সে বুঝতে পারে এবং হাদীছ মোতাবেক জোরে আমীন, পায়ে পা মিলিয়ে দাঁড়ানো, বুকে হাত বাধা, রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে ছালাত আদায় করা শুরু করে। এক সময় আমরা ফরয ছালাতের পর মুনাজাত করাও ছেড়ে দেই। কিন্তু হানাফী মসজিদের কারণে তারা আমাদের এভাবে ছালাত আদায় করা মেনে নিতে পারে না। তারা জোরে আমীন বলাতে বিরক্ত মনে করে এবং পায়ে পা মিলিয়ে দাঁড়ানোকে মান সম্মানের  হানী মনে করে। কিন্তু আমরা তাদের কথায় কান না দিয়ে ছহীহ হাদীছ মোতাবেক ছালাত আদায় করে যাই। আমরা আমাদের আরেক বন্ধুকে হকের দাওয়াত দিলে সেও তা গ্রহণ করে। ফলে এলাকাবাসী আমাদের উপর ভীষণ রেগে যায়। তারা বলে, আমরা নাকি পাগল হয়ে গেছি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে। আমাদের মসজিদের ইমাম আমাদের সম্পর্কে নানা বাজে কথা বলে। একদিন তাকে আমরা হাদীছ দেখালাম। কিন্তু তিনি তা মানলেন না বরং নানা যুক্তি দেখালেন, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছের সাথে মিলে না। হুযুরের সাথে আমাদের দু’কথা হ’লে এলাকাবাসী আমাদের উপর ভীষণ ক্ষেপে যায়। তারা বলে যে, তোরা কত জানিস যে হুযুরের সাথে তর্ক করছিস। এলাকাবাসী কেউ আমাদের পক্ষে নেই। এলাকাবাসীর কেউ কেউ বলে, আমরা নাকি জঙ্গি, আমাদেরকে নাকি পুলিশে দিবে। আবার কেউ বলে, তোরা এ মসজিদে ছালাত আদায় করতে আসবি না। এলাকার একদল যুবক, যাদের কুরআন ও হাদীছের কোন জ্ঞান নেই তারা আমাদের বিভিন্ন যুক্তি দেখায়। কিন্তু আমরা তাদের কথা না মানার কারণে তারা আমাদেরকে মারার হুমকি দেয় এবং বিভিন্ন বাজে কথা বলে। সবচেয়ে বেশি আমাদের বিরোধিতা করছে ইমাম ছাহেব। সাধারণ জনগণ হয়তোবা না জানার কারণে আমাদের বিরুদ্ধাচরণ করছে। কিন্তু ইমাম ছাহেবতো জেনে বুঝেই করছেন। এখন পরিস্থিতি চরম অবস্থায় পৌঁছেছে যে, ছহীহভাবে ছালাত আদায় করাও আমাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। ছালাতের প্রতি ওয়াক্তেই লোকেরা আমাদের অপমান করে। এলাকার মহিলা-পুরুষ কেউই আমাদের মেনে নিতে পারে না। এমতাবস্থায় আমাদের পাশে দাঁড়াবার মতো কেউ নেই। একমাত্র আল্লাহই আমাদের সহায়। এহেন প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা দৃঢ় মনোবলের সাথে এগিয়ে চলেছি। আল্লাহ আমাদের কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী আমল করার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!

তাওহীদুল ইসলাম, নয়ন, পলক

সাং- শেখটোলা, উপযেলা- শিবগঞ্জ, যেলা- চাঁপাই নবাবগঞ্জ






তোমাকে দাওয়াতী কাজের জন্য ঘর ভাড়া দেইনি - ডা. মুহাম্মাদ ফযলুল হক, সফিপুর, গাযীপুর।
কোন মুফতী লাগবে না... তুই কাফের হয়ে গেছিস - ডা. মুহাম্মাদ মাহবূবুর রহমান
ও চটি বই পড়ে পাগল হয়ে গেছে...
‘সকলের সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে বল, এখন থেকে ইমাম আবু হানীফার আদর্শ অনুযায়ী জীবন-যাপন করব’ (!)
আক্বীদার কারণে শত্রুতে পরিণত হওয়া আপন ভাইও শেষ পর্যন্ত হকের দিশা পেলেন - আত-তাহরীক ডেস্ক
স্রেফ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই হোক আমাদের পথচলা
আহলেহাদীছ আক্বীদায় বিশ্বাসী, এটাই কি আমার অপরাধ!
আহলেহাদীছ হওয়ার কারণে বাড়ীছাড়া! - -মুহাম্মাদ ইবরাহীম, দাগনভূঞা, ফেনী।
এই মসজিদে এসো না, আসলে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব। - কাউছার, মাদারগঞ্জ, জামালপুর।
আমি কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বিপরীতে কারো কথা মানি না - * আশরাফুল ইসলামস্থলচর, চৌহালী, সিরাজগঞ্জ।
আহলেহাদীছ হওয়ার কারণে বাড়ীছাড়া! - -মুহাম্মাদ ইবরাহীম, দাগনভূঞা, ফেনী।
থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেব - -আব্দুল্লাহ, গাযীপুর।
আরও
আরও
.