গত ২১শে
এপ্রিল রবিবার শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সময় ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনটি হোটেল ও
গির্জায় চারটি বোমা হামলা হয়। পরের ২০ মিনিটে আরও দুটি বোমা হামলা হয়।
বিকেলের দিকে চতুর্থ হোটেল ও একটি বাড়িতে বোমা হামলা হয়। সিরিজ বোমা হামলায়
নিহত হয়েছে ৩১০জন এবং আহত হয়েছে প্রায় ৫০০ জন। হামলায় জড়িত সন্দেহে এ
পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার জন্য শ্রীলঙ্কার সরকার
স্থানীয় ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াতকে (এনটিজে) দায়ী করেছে। দুবাইভিত্তিক
আল-অ্যারাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলের উদ্ধৃতি দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা তাস
জানিয়াছে, জামাত আল-তাওহীদ আল-ওয়াতানিয়া এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সিনারত্নের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স
বলছে, হামলায় আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক জড়িত।
এএফপি বলছে, শ্রীলঙ্কার পুলিশপ্রধান ১১ই এপ্রিল হামলার ব্যাপারে সতর্ক বার্তা দিয়েছিল। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে এতে বলা হয়, উগ্র ইসলামপন্থী দল এনটিজে গির্জাগুলো ও শ্রীলঙ্কায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে হামলার ফন্দি আঁটছে।
শ্রীলঙ্কায় হামলার পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ নেয়া হয় ভারতে : শ্রীলঙ্কায় হামলার মূল হোতা স্থানীয় উগ্রবাদী দল ন্যাশনাল তাওহীদ জামাতের প্রধান জাহরান হাশিম বলে চিহ্নিত করেছেন দেশটির তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ইস্টার সানডের হামলার মূল হোতা উগ্রবাদী এই নেতা ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রদেশে দীর্ঘদিন বসবাস করেছিলেন বলে দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে (দ্য হিন্দু, ২৮শে এপ্রিল)। লঙ্কান সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে গত ২৬শে এপ্রিল শুক্রবার হিন্দু এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। লঙ্কার তদন্তকারী কর্মকর্তারা রোববার শক্তিশালী সমন্বিত সিরিজ বোমা হামলার পেছনে হাশিমকে প্রধান হোতা হিসাবে শনাক্ত করেছেন। হামলার দু’দিন পর জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকার এবং ধারাবাহিক আট বোমা হামলাকারীর ছবিও প্রকাশ করে। ঐ আট হামলাকারীর মাঝে মুখ খোলা অবস্থায় একজনকে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে এই আইএস জঙ্গিই লঙ্কান হামলার মূল হোতা। অন্য জঙ্গিদের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল।
তবে শ্রীলঙ্কার তদন্তকারীরা একজন নারীসহ ৯ আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীকে শনাক্ত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা দ্য হিন্দুকে বলেন, আমরা আইএসের দায়ের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত করছি। আমরা সন্দেহ করছি হামলাকারী যুবকদের কয়েকজন প্রশিক্ষণ নিয়েছে ভারতের তামিলনাড়ুতে। তবে হাশিমের ভারত সফর নিয়ে কোন মন্তব্য করেনি নয়াদিলিলর কর্মকর্তারা। তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণদের সঙ্গে তিনি ভার্চুয়াল যোগাযোগ করতেন সেই আলামত পাওয়া গেছে। হাশিমের ফেসবুকের পেজের একশর বেশি ফলোয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ভারতের এক কর্মকর্তা। হাশিমের উগ্রবাদী মতাদর্শ সম্বলিত বেশ কিছু ভিডিও রয়েছে যা তরুণদের মৌলবাদে উসকানি দেয়।