অমর বাণী

১. শায়েখ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন,ينبغي لمن يُستفتى أن يستغفر الله قبل الإجابة، حتى يمحو الاستغفار ما كان على القلب من الرين، ‘যার কাছে ফৎওয়া চাওয়া হয় তার উচিত উত্তর দেওয়ার পূর্বে আল্লাহর নিকটে ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা, যাতে ইস্তিগফার তার অন্তরের মরিচা দূর করে দেয় (আর সে সঠিক উত্তর দিতে পারে)’।[1]

২. বিশর আল-হাফী (রহঃ) বলেন, لقد أدركنا الناس ولهم أعمال صالحة كالجبال، ومع ذلك كانوا لا يغترون وأنتم لا أعمال لكم ومع ذلك تغترون، والله إن أقوالنا أقوال الزاهدين، وأعمالنا أعمال الجبابرة والمنافقين، ‘আমরা এমন অনেক মানুষের সাক্ষাৎ পেয়েছি, যাদের পাহাড় সমপরিমাণ নেক আমল থাকা সত্ত্বেও তারা আমলের ধোঁকায় পড়তেন না। আর তোমাদের উল্লেখ্যযোগ্য আমলই নেই, অথচ তোমরা ধোঁকায় পড়ে আছ। আল্লাহর কসম! আমরা দুনিয়াবিমুখ ব্যক্তিদের মত কথা বলি, কিন্তু আমাদের কর্মকান্ড অহংকারী ও মুনাফিকদের মত’।[2]

৩. আমর ইবনে ক্বায়েস (রহঃ) বলেন,أَكْثَرُ النَّاسِ فَرَحًا فِي الْآخِرَةِ أَطْوَلُهُمْ حُزْنًا فِي الدُّنْيَا، وَأَكْثَرُ النَّاسِ ضَحِكًا فِي الْآخِرَةِ، أَكْثَرُهُمْ بُكَاءً فِي الدُّنْيَا، وَأَخْلَصُ النَّاسِ إِيمَانًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ، ‌أَكْثَرُهُمْ ‌تَفَكُّرًا ‌فِي ‌الدُّنْيَا، ‘আখেরাতে সবচেয়ে বেশী আনন্দিত থাকবে সেই ব্যক্তি, যে দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশী চিন্তাগ্রস্ত থাকত। আখেরাতে সবচেয়ে বেশী হাসবে সেই ব্যক্তি, যে দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশী (আল্লাহর ভয়ে) কান্নাকটি করেছে। আর ক্বিয়ামতের দিন ঈমানের দিক থেকে সেই ব্যক্তি হবে সবচেয়ে বেশী একনিষ্ঠ, যে পার্থিব জীবনে সবচেয়ে বেশী (আল্লাহর সৃষ্টিরাজি নিয়ে) চিন্তা-ভাবনা করেছে’।[3]

৪. ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,لَا أضرّ على العَبْد أَمريْن ‌غفلته ‌عَن ‌ذكر ‌الله وَمُخَالفَة لأمر الله، ‘বান্দার জন্য দু’টি বিষয়ের চেয়ে ক্ষতিকর আর কোন কিছু নেই : আল্লাহর যিকর থেকে উদাসীন হওয়া এবং তাঁর নির্দেশের বিপরীত কাজ করা’।[4]

৫. প্রখ্যাত তাবেঈ আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) বলেন,يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ تَخْرُبُ صُدُورُهُمْ مِنَ الْقُرْآنِ وَلَا يَجِدُونَ لَهُ حَلَاوَةً وَلَا لَذَاذَةً ‌إِنْ ‌قَصَّرُوا ‌عَمَّا ‌أُمِرُوا ‌بِهِ ‌قَالُوا: إِنَّ اللهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ، وَإِنْ عَمِلُوا بِمَا نُهُوا عَنْهُ قَالُوا: سَيَغْفِرُ لَنَا إِنَّا لَمْ نُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا، أَمْرُهُمْ كُلُّهُ طَمَعٌ لَيْسَ مَعَهُ صِدْقٌ يَلْبَسُونَ جُلُودَ الضَّأْنِ عَلَى قُلُوبِ الذِّئَابِ، أَفْضَلُهُمْ فِي دِينِهِ الْمُدَاهِنُ ‘মানুষের সামনে এমন একটা সময় আসবে, যখন তাদের হৃদয়গুলো কুরআন থেকে বিমুখ হয়ে যাবে। তারা কুরআনের মিষ্টতা ও স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে না। আল্লাহর নির্দেশিত বিষয়গুলো পালনের ক্ষেত্রে তারা শিথিলতা প্রদর্শন করবে আর বলবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অসীম দয়ালু ও ক্ষমাশীল। আবার নিষিদ্ধ কাজ করার সময় বলবে, আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দিবেন, কারণ আমরা তো আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করিনি। তাদের পুরো ব্যাপারটাই লালসাপূর্ণ যেখানে সত্যের লেশমাত্র নেই। তারা নেকড়ের অন্তরে ছাগলের চামড়া পরিধান করাবে। তাদের মধ্যকার তোষামোদকারী ব্যক্তিকে দ্বীনদারিতায় শ্রেষ্ঠ মনে করা হবে’।[5]

৬. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,‌الْعَمَل ‌بِغَيْر ‌إخلاص ‌وَلَا ‌اقْتِدَاء كالمسافر يمْلَأ جرابه رملا يثقله وَلَا يَنْفَعهُ، ‘ইখলাছ বিহীন এবং রাসূলের অনুসরণ ব্যতীত আমল করার উদাহরণ সেই মুসাফিরের মতো, যে বালু দিয়ে তার থলে ভর্তি করে। বালুগুলো তার বোঝা ভারী করে বটে; কিন্তু কোন উপকার করে না’।[6]

৭. ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,أن كثيرا من المرضى أو أكثر المرضى يشفون بلا تداو: ..بدعوة مستجابة أو رقية نافعة أو قوة ‌للقلب ‌وحسن ‌التوكل، ‘ঔষধপত্র ছাড়াই অধিকাংশ রোগ-ব্যাধি ভালো হয়ে যায়, আর সেটা হয় কবুলযোগ্য দো‘আর মাধ্যমে, উপকারী ঝাড়-ফুঁক অথবা মনের শক্তি এবং উত্তম তাওয়াক্কুলের মাধ্যমে’।[7]

৮. ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,إِذا جَلَست فِي ظلام اللَّيْل بَين يَدي سيدك ‌فَاسْتعْمل ‌أَخْلَاق ‌الْأَطْفَال فَإِن الطِّفْل إِذا طلب من أَبِيه شَيْئا فلم يعطه بكى عليه، ‘যখন তুমি রাতের অন্ধকারে তোমার মনিবের সামনে বসবে, তখন তার সাথে শিশুর মতো আচরণ করবে। কারণ শিশু যখন তার বাবার কাছে কোন কিছু চায়, তখন সেটা না দেওয়া পর্যন্ত সে কান্নাকাটি করতে থাকে’।[8]


[1]. তাফসীরুল ওছায়মীন, সূরা আন‘আম, পৃ. ১৩৬।

[2]. আব্দুল ওয়াহ্হাব শা‘রানী, তাম্বীহুল মুগতার্রীন, পৃ. ৫৫।

[3]. আবুল লাইছ সামারকান্দী, তাম্বীহুল গাফিলীন, পৃ. ৫৭০; তাম্বীহুল মুগতার্রীন, পৃ. ৮৪।

[4]. ইবনুল জাওযী, আত-তাযকিরাহ ফিল ওয়ায, পৃ. ১০২।

[5]. আহমাদ ইবনে হাম্বল, কিতাবুয যুহদ, পৃ. ২৪৫।

[6]. ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফাওয়ায়েদ, পৃ. ৪৯।

[7]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২১/৫৬৩।

[8]. ইবনুল জাওযী, আল-মুদহিশ, পৃ. ২১৯।






বিষয়সমূহ: বিবিধ
আরও
আরও
.