অমর বাণী

১. মালেক ইবনু দীনার (রহঃ) বলেন,إِنَّ ‌الْعَالِمَ ‌إِذَا ‌لَمْ ‌يَعْمَلْ ‌بِعِلْمِهِ ‌زَلَّتْ ‌مَوْعِظَتُهُ عَنِ الْقُلُوبِ كَمَا يَزَلُّ الْقَطْرُ عَنِ الصَّفَا، ‘যখন আলেম তার ইলম অনুযায়ী আমল করে না। তখন তার উপদেশ মানুষের অন্তর থেকে পিছলে যায়, যেভাবে মসৃণ পাথরের ওপর থেকে বৃষ্টি ফোঁটা পিছলে পড়ে’।[1]

২. মালেক ইবনু দীনার (রহঃ) বলেন,إذا طلب الرجل العلم ليعمل به سره علمه وإذا طلب العلم لغير أن يعمل به زاده علمه فخرا، ‘যখন কোন ব্যক্তি আমল করার জন্য ইলম অর্জন করে, তখন তার ইলম তাকে আনন্দিত করে। আর যখন সে আমল করা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে জ্ঞান অর্জন করে, তখন সেই জ্ঞান তার অহংকার বাড়িয়ে দেয়’।[2]

৩. আলী (রাঃ) বলেন,‌كونوا ‌لقبول ‌العمل ‌أشد ‌اهتماما ‌منكم ‌بالعمل، فإنّه لن يقلّ عمل مع التّقوى، وكيف يقلّ عمل متقبّل؟ ‘তোমরা আমল করার চেয়ে আমল কবুল হওয়ার ব্যাপারে বেশী গুরুত্ব দাও। কেননা তাক্বওয়ার সাথে সম্পাদিত কোন আমল অল্প হয় না, তাহ’লে কবুলযোগ্য আমল কিভাবে অল্প হবে?’[3]

৪. আবূদ্দারদা (রাঃ) বলেন,‌أنصف ‌أذنيك ‌من ‌فيك، فإنما جعلت لك أذنان وفم واحد لتسمع أكثر مما تتكلم به، ‘তুমি তোমার মুখের চেয়ে দুই কানকে বেশী কাজে লাগাও (অর্থাৎ যে পরিমাণ কথা বলো তার চেয়ে বেশী শোন)। কেননা তোমাকে কান দেওয়া হয়েছে দু’টি এবং মুখ দেওয়া হয়েছে একটি, যাতে তুমি কথা বলার চেয়ে বেশী বেশী শুনতে পার’।[4]

৫. ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহঃ) বলেন,مَا أَفْتَيْتُ حَتَّى

 شَهِدَ لِي سَبْعُونَ أَنِّي أَهْلٌ لِذَلِكَ،‘আমি ফৎওয়া দেওয়ার উপযুক্ত হয়েছি’, এমন সাক্ষ্য ৭০ জন আলেম দেওয়ার আগ পর্যন্ত আমি ফৎওয়া দেইনি।[5]

৬. মায়মূন ইবনে মেহরান (রহঃ) বলেন,مَثَلُ الَّذِي يَرَى الرَّجُلَ يُسِيءُ صَلَاتَهُ فَلَا يَنْهَاهُ، مَثَلُ الَّذِيْ يَرَى النَّائِمَ تَنْهَشُهُ حَيَّةٌ ثُمَّ لَا يُوقِظُهُ، ‘যে ব্যক্তি কাউকে ভুলভাবে ছালাত আদায় করতে দেখেও তাকে নিষেধ করে না; তার উপমা হচ্ছে সেই ব্যক্তির মত, যে কাউকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড়াতে দেখেও তাকে ঘুম থেকে জাগায় না’।[6]

৭. সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন,لَيْسَ عَمَلٌ بَعْدَ الْفَرَائِضِ أَفْضَلُ مِنْ طَلَبِ الْعِلْمِ، ‘ফরয আমল সমূহ আদায়ের পর ইলম অর্জনের চাইতে উত্তম কোন আমল নেই’।[7]

৮. ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) বলেন,سَأَلَنِي رَجُلٌ مَرَّةً عَنْ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ أَمُسْلِمُونَ هُمْ؟ فَقُلْتُ لَهُ أَحْكَمْتَ الْعِلْمَ حَتَّى تَسْأَلَ عَنْ ذَا ‘একবার এক লোক আমাকে জিজ্ঞেস করল, ইয়াজূজ-মাজূজ মুসলিম কি-না? তাকে বললাম, তুমি কি অন্যসব ইলম শেখা শেষ করে ফেলেছ যে এখন এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করছ’?[8]

৯. ফুযাইল ইবনে ইয়ায (রহঃ) বলেন,إِنَّمَا يَهَابُكَ الْخَلْقُ عَلَى قَدْرِ هَيْبَتِكَ لِلَّهِ، ‘তুমি আল্লাহকে যতটুকু ভয় করবে, মানুষের কাছে ততটুকু মান্যবর শ্রদ্ধেয় হবে’।[9]

১০. মু‘আবিয়া ইবনে কুর্রাহ (রহঃ) বলেন,بُكَاءُ العَمَلِ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ بُكَاءِ العَيْنِ، ‘চোখের কান্নার চেয়ে আমলের কান্না আমার কাছে অধিকতর প্রিয়’।[10]

১১. মালেক ইবনু দীনার (রহঃ) বলেন,مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِنَفْسِهِ فَالْقَلِيلُ مِنْهُ يَكْفِي، وَمَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِحَوَائِجِ النَّاسِ فَحَوَائِجُ النَّاسِ كَثِيرَةٌ، ‘যে ব্যক্তি নিজের জন্য ইলম অর্জন করে, তার জন্য অল্প ইলমই যথেষ্ট হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি মানুষের প্রয়োজনের জন্য ইলম শিখে, সে যেন জেনে রাখে, মানুষের প্রয়োজন অফুরন্ত’।[11]

১২. ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ)-এর ছেলে ছালেহ (রহঃ) বলেন,كَانَ أَبِي يَبْعَثُ خَلْفِي إِذَا جَاءهُ رَجُلٌ زَاهدٌ أَوْ مُتَقَشِّفٌ لأَنْظُرَ إِلَيْهِ، يُحِبُّ أَنْ أَكُوْنَ مِثْلَهُ، ‘আমার আববার কাছে যখন কোন দুনিয়াবিমুখ-অনাড়ম্বর ব্যক্তি আগমন করতেন, তখন তিনি আমাকে ডেকে পাঠাতেন; যেন আমি মানুষটাকে দেখে শিখতে পারি। তিনি চাইতেন আমি যেন তার মতো হই’।[12]

আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ

এম.এ, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

[1]. আহমাদ ইবনে হাম্বল, কিতাবুয যুহদ, পৃঃ ২৬২।

[2]. ইবনু হিববান, রাওযাতুল উক্বালা, পৃঃ ৩৫।

[3]. হিলয়াতুল আওলিয়া ১/৭৫; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১১/২৯৯।

[4]. ইবনু কুদামা, মুখতাছার মিনহাজুল ক্বাছিদীন, পৃঃ ১৬৫।

[5]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৬/৩১৬; খত্বীব বাগদাদী, আল-ফাক্বীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ ২/৩২৫।

[6]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ৪/৫০৫; ইবনু রজব, ফাৎহুল বারী, ৩/১৪৪।

[7]. হিলয়াতুল আওলিয়া, ৬/৩৬৩।

[8]. ইবনুল মুফলিহ, আল-আদাবুশ শারঈয়াহ ২/৬৯।

[9]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৮/১১০।

[10]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ৫/১৫৪।

[11]. ইবনু আসাকির, তারীখু দিমাশক্ব, ৫৬/৪৩৩; ইবনু হাম্বল, আয-যুহদ, পৃ. ২৬২।

[12]. যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ১২/৫৩০।






আরও
আরও
.