১৯৯৭
সাল। সবেমাত্র মাষ্টার্স পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তখন আমি ‘যুবসংঘ’ রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। থাকি নগরীর কাজলাস্থ ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন ভবনে’।
একাডেমিক পাঠ চুকিয়ে এবার কর্মস্থলে পা রাখার পালা। সে লক্ষ্যে রাজশাহী
ছেড়ে চলে যাব ঢাকা। ব্যাগ-ব্যাগেজও প্রস্ত্তত। কিন্তু না। আর যাওয়া হ’ল না।
সাংগঠনিক দায়িত্বের এক বিশাল বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হ’ল এই অধমের স্কন্ধে। যে
মানুষটির কারণে আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হ’ল বা যার প্রেরণায় কাজলা থেকে
নওদাপাড়া যোগদান করতে হ’ল তিনি আর কেউ নন, আমাদের প্রিয় দ্বীনী ভাই আমীনুল
ইসলাম। তিনি তখন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি। দেখা করার জন্য সংবাদ
পাঠালেন। সাক্ষাতে বললেন, আপাতত রাজশাহী ছাড়ার চিন্তা না করে কেন্দ্রীয়
সংগঠনের কিছু দায়িত্ব পালন করুন এবং পাশাপাশি চাকুরীর প্রস্ত্ততি নিন।
কোথাও চাকুরী হ’লে তখন যাবেন। ওনার অনুরোধ ফেলতে না পেরে গোছানো
ব্যাগ-ব্যাগেজ নিয়ে নওদাপাড়া চলে আসলাম। ‘যুবসংঘ’-এর নেতৃবৃন্দের থাকার
জন্য মারকাযের নিকটবর্তী ভাড়া বাসায় উঠলাম। আমীনুল ভাই সহ আমরা বেশ কয়েকজন
দায়িত্বশীল সেখানে থাকতাম। মূলতঃ এখান থেকেই আমীনুল ভাইয়ের সাথে আমার
চলাফেরা শুরু। ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদকের দায়িত্ব
দেওয়া হ’ল আমাকে। অতঃপর এক মাস বাদে ১৪ই অক্টোবর ১৯৯৭ সালে মাসিক
আত-তাহরীকের খেদমতে যোগদান করি।
দীর্ঘ সাংগঠনিক জীবনের সাথী আমীনুল ভাই আজ আমাদের মাঝে নেই। মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক বছর ভোগান্তির পর গত ১৪ই ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২-টায় ৫২ বছর বয়সে তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার ডাকে সাড়া দিয়ে ইহলোক থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। রেখে গেছেন একরাশ স্মৃতি। বিশেষ করে ১৯৯৭ থেকে ২০২১ এই ২৪ বছরের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমার সাথেই রয়েছে তাঁর অজস্র স্মৃতি। যা সংক্ষিপ্ত পরিসরে তুলে ধরা কষ্টসাধ্য। তারপরও পাঠকদের উদ্দেশ্যে উল্লেখযোগ্য দু’একটি স্মৃতি তুলে ধরার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।-
আমীনুল ভাই ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তাঁর সাংগঠনিক প্রজ্ঞা ছিল অনন্য। রাজশাহী যেলার মোহনপুর থানার প্রত্যন্ত গ্রাম মেলান্দী থেকে নওদাপাড়া এসে তিনি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতেন ফী সাবীলিল্লাহ। দায়িত্ব পালনে তিনি কখনো ক্লান্তিবোধ করতেন না। নিরলসভাবে কাজ করতেন। ২০০৫ সালে যখন সংগঠনের উপর রাষ্ট্রীয় যুলুম-নির্যাতন নেমে আসে, ২২শে ফেব্রুয়ারী-২০০৫ আমীরে জামা‘আতসহ নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তৎকালীন জোট সরকার কর্তৃক গ্রেফতার করা হয়, তখন তিনি সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। সেই কালো রাতগুলির কথা সবমসময় মনে পড়ে, যে রাতগুলোতে আমরা নিশ্চিন্তে কোথাও ঘুমাতে পারতাম না। প্রতি রাতেই গ্রেফতার আতঙ্কে জায়গা বদল করতে হতো। সে সময় রাজশাহী শহরের নিকট ও দূরবর্তী আমীনুল ভাইয়ের আত্মীয়-স্বজনের বাসাতেই রাতগুলো কাটাতাম। আজ একজন তো কাল অন্য একজনের বাসা। কখনো এমন হয়েছে যে, সারাদিন এক বাড়ীতে থেকে রাতে অন্য বাড়ীতে গিয়ে ঘুমাতে হয়েছে। একদিন রাতে আমীনুল ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ীতে রাতের খাবার খেয়ে সরিষা ক্ষেতের মাঠ পেরিয়ে পাশের গ্রামে গিয়ে রাত্রি যাপন করেছি। যালেম সরকারের মিথ্যাচার ও হিংস্র থাবা থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখার স্বার্থে এই কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে। কেননা নওদাপাড়া ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা তখন গোয়েন্দাজালে আচ্ছন্ন ছিল। সে দিনগুলিতে আমীনুল ভাইয়ের সহযোগিতা কখনো ভুলবার নয়। তিনি ছায়ার মত আমাদের পাশে ছিলেন। কখন কোন বাড়ীতে যেতে হবে, কোথায় ঘুমাতে হবে, কোথায় খাওয়া-দাওয়া হবে এসবই তিনি ঠিক করতেন। আজ তার অবর্তমানে স্মৃতির আয়নায় সে দিনগুলির কথা ভেবে বারবার অশ্রুসিক্ত হচ্ছি।
সংগঠনকে আদর্শচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায়ও তিনি ছিলেন দৃঢ়। আদর্শের পক্ষে আত-তাহরীকের অটল অবস্থানের পশ্চাতে নৈতিক সমর্থক ও সহযোগী হিসাবে সে সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক দল গঠনের ধোঁয়া তুলে সংগঠনকে দ্বিধা-বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রে যারা মেতেছিল, তাদের প্রধান টার্গেট ছিল সংগঠনের একমাত্র প্রচার মাধ্যম আত-তাহরীককে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। সে সময় যাদের সুচিন্তিত বুদ্ধি-পরামর্শ ও সিদ্ধান্তের কারণে এটি সম্ভব হয়নি, তাদের মধ্যে আমীনুল ভাই ছিলেন অন্যতম। ফলে একাধিকবার শোকজ করা হলেও আহলেহাদীছ আন্দোলনের মূল আদর্শ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আত-তাহরীককে আমরা কখনো হাতছাড়া করিনি।
অতঃপর ২০০৯ সালে মাদ্রাসা দখলের ষড়যন্ত্র শুরু হ’লে এমনকি ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে মাদ্রাসার কক্ষসমূহ তালাবদ্ধ ও সীলগালা করার কারণে যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করেছিল সে সময়েও তিনি বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে এবং প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত থেকে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০১৫ সালে মারকাযে তথাকথিত ছাত্র বিদ্রোহ প্রতিরোধেও তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। আমাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শের সাথী ছিলেন তিনি।
‘আন্দোলন’-এর মজলিসে শূরার সিদ্ধান্তক্রমে তাঁকে মারকাযের সেক্রেটারী মনোনীত করা হ’লে তিনি নিষ্ঠার সাথে এ দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনে তিনি নীতির উপরে অটল থাকতেন। এটাকে অনেকে তার কঠোরতা মনে করত। বাস্তবে তিনি নিয়ম-শৃংখলার ব্যাপারে কঠোর ছিলেন। প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে যা হওয়া অত্যাবশ্যক। মারকায পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য হওয়ায় তাঁর প্রায় সকল কাজের সাথেই আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল। বছরের শুরু ও শেষে প্রতিষ্ঠানের কাজে অনেক বেশী ব্যস্ত থাকতে হ’ত আমাদের। নতুন ভর্তি পরিকল্পনা, আসন সংখ্যা নির্ধারণ, ফী ধার্যকরণ, বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন ইত্যাদি কাজগুলো দিনরাত দু’জনে একসঙ্গে বসে করতাম। আমি ল্যাপটপে কাজ করতাম, আর তিনি পাশে বসে নির্দেশনা দিতেন। এই স্মৃতি প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের। ভর্তি পরীক্ষার দিনের দৃশ্য ছিল খুবই করুণ। আসন সংখ্যার ৪/৫ গুণ বেশী পরীক্ষার্থীর চাপ, অভিভাবকদের অনুরোধ শুনতে শুনতে রীতিমত নাজেহাল অবস্থা। সে সময় মারকাযের সেক্রেটারী হিসাবে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয়।
তাছাড়া মারকাযের যেকোন নিয়োগ, অব্যাহতি, ছাত্র-ছাত্রীদের দাবী-দাওয়া পূরণ, অভিযোগ-অনুযোগ যেকোন বিষয় তিনি আমাদেরকে সাথে নিয়ে পরামর্শ করে করতেন। পরিবারের চাইতে প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নিয়ে বেশী চিন্তিত থাকতেন তিনি। যেকোন দুঃসংবাদে তাঁর রাতে ঘুম হ’ত না। তিনি বলতেন, কোন খারাপ খবর পেলে দুশ্চিন্তায় আমার ঘুম হয় না। দুশ্চিন্তা তাঁর চেহারাতেও ফুটে উঠত।
আহলেহাদীছ আন্দোলনের সর্ববৃহৎ জমায়েত হচ্ছে বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা। দু’দিন ব্যাপী এই ইজতেমায় প্রায় লাখো জনতার সমাবেশ ঘটে। এই বিশাল আয়োজনের একটি বড় অংশ হচ্ছে ‘খাদ্য বিভাগ’। বছরের পর বছর তিনি এই বিভাগের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতালব্ধ ও দক্ষতাপূর্ণ পরিচালনায় খাদ্য বিভাগে এ যাবত সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়ে এসেছে। একইভাবে বার্ষিক কর্মী সম্মেলন সহ যেকোন অনুষ্ঠান-আয়োজনে তাঁর সরব পদচারণা ও দায়িত্ব পালন এখন কেবলই স্মৃতি।
আমীনুল ভাইয়ের সাথে আমার স্মৃতিময় দিনগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ২০১৯ সালের হজ্জের সফর। দীর্ঘ দেড় মাসের হজ্জ সফরে দু’জনের একসঙ্গে থাকা, উঠা-বসা, চলা-ফেরা, ইবাদত-বন্দেগী, তাওয়াফ-যিয়ারত সবই স্মৃতির পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। বিমানে আসন, হোটেলে আবাসন, সর্বত্র বিচরণ ছিল এক সাথে। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত, তাহাজ্জুদ, তাওয়াফ-সাঈ, সবকিছুই হ’ত একসঙ্গে। মিনা, আরাফা, মুযদালিফার কষ্টকর সফরেও ছিলাম একত্রে একসঙ্গে। মক্কা থেকে জেদ্দায় দুই বারে ৬দিন অবস্থান ও দাওয়াতী কাজে সেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান, বক্তব্য প্রদান ছিল এক সাথে। তাঁর এই বিদায় মেনে নেয়া তাই আমার জন্য ভীষণ কষ্টের।
উল্লেখ্য, আমীনুল ভাইয়ের ঐবছর হজ্জ করার কোন ইচ্ছা বা প্রস্ত্ততি ছিল না। আমার যাওয়ার কথা শুনে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। ফলে একজনের রিপ্লেসমেন্টে তাঁর হজ্জে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়। কাযী হজ্জ কাফেলার স্বত্ত্বাধিকারী কাযী হারূণ ভাই এই ব্যবস্থা করে দেন। সে বছর হজ্জ না করলে হয়তো তাঁর আর হজ্জ করার সৌভাগ্য হ’ত না। কেননা পরের বছর থেকে করোনা মহামারীর কারণে হজ্জ বন্ধ আছে। এটি নিঃসন্দেহে তাঁর প্রতি মহান আল্লাহর একটি বিশেষ অনুগ্রহ। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
আমীনুল ভাই একাধারে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী কমপ্লেক্স-এর সেক্রেটারী, ইসলামিক কমপ্লেক্স-এর কোষাধ্যক্ষ, ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ‘তাওহীদের ডাক’ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। ইতিপূর্বে তিনি ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র দফতর সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও তিন তিন বারের সভাপতি এবং রাজশাহী যেলা ‘আন্দোলন’-এর সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি আত-তাহরীকের সহকারী সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বিদায়ে সংগঠন একজন যোগ্য সংগঠক ও দায়িত্বশীলকে হারালো। আমরা হারালাম একজন উত্তম সাথী এবং পরম বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীকে।
২০২১ সালের শুরু থেকে তিনি অসুস্থতাবোধ করেন। প্রথমে কয়েক মাস রাজশাহীতে চিকিৎসা নেন। ডাক্তার পরিবর্তন করা হয় দু’এক দফা। শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যেতে থাকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‘লিভার সিরোসিস’ ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে ‘কোলন ক্যান্সার’। ব্যয়বহুল হ’লেও এক বুক আশা নিয়ে অপারেশন করা হয়। স্বল্প মাত্রার দু’টি কেমো থেরাপীও দেওয়া হয়। কিন্তু শরীর দিন দিন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হ’তে থাকে। ওযন হ্রাস পেয়ে এতটা নীচে নেমে আসে যে কেমো গ্রহণের শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। অবশেষে ঢাকা মেডিকেল থেকে ফেরত দেওয়া হয়। নিয়ে আসা হয় রাজশাহী মারকাযে। গ্রামের বাড়ী যাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি নিষেধ করেন। বলেন, মারকাযেই থাকবেন। তিনি মারকায চত্বরে থেকেই চির বিদায় নেওয়ার একটা মানসিক প্রস্ত্ততি যেন নিয়েছিলেন। সেকারণ নিজ জন্মস্থানেও যেতে চাননি। এমনকি ঢাকা থেকে রাজশাহী আসার জন্যও আমীরে জামা‘আতের পরামর্শ ও নির্দেশনা চান। নেতৃত্বের প্রতি প্রগাঢ় আনুগত্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন জীবনের শেষ মুহূর্তেও।
তাঁর সাথে আমার বর্ণাঢ্য স্মৃতিময় ইতিহাসের শেষ পর্বটি ছিল মৃত্যুর পর তাঁর গোসল দেওয়া। জীবনের প্রথম মাইয়েতের গোসল দিয়েছিলাম আমার আববাকে ২০০৬ সালে। অতঃপর দ্বিতীয় মাইয়েত-এর গোসল ছিল আমীনুল ভাইয়ের। মারকাযের স্টাফ মুয্যাম্মিল হক সহ সকাল সাড়ে ৯-টায় আমীনুল ভাইকে সুন্নাতী পদ্ধতিতে গোসল দেই। গোসল দিতে গিয়ে তাঁর হাসিমাখা চেহারাটা ফুটে উঠে। যেন আমাদের দিকে মুখ ফিরে হাসছেন। আন্তরিক প্রশান্তি লাভ করলাম এই ভেবে যে, নেককার বান্দার শেষ বিদায়টাও হাসি মুখেই হয়। অতঃপর গোসল সম্পন্ন হ’ল, কাফন পরানো হ’ল। মারকাযে বেলা ১২-টায় প্রথম ও তাঁর নিজ বাড়ীতে বেলা ২-টায় দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হ’ল। এভাবেই আমাদের সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন দীর্ঘ সাংগঠনিক জীবনের অন্যতম সাথী বন্ধুবর আমীনুল ভাই। মহান আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করি, তিনি যেন তাঁর ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়ে তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মাকামে স্থান দান করেন। সেই সাথে তাঁর পরিবার ও সন্তানদের নিরাপদ আশ্রয় ও সুশিক্ষার ব্যবস্থা করে দেন। -আমীন!!