১৪ই ডিসেম্বর ২০১৫। বার্ধক্যজর্জরিত জবুথবু শরীরটা গত কয়েক দিনের শীতে আরও কাহিল হয়ে পড়েছে। ফজর ছালাতান্তে শরীরে লেপ চাঁপিয়ে তাসবীহ পাঠ করছিলাম। হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। আতংকিত হয়ে উঠল প্রাণটা। কারণ ইতিপূর্বে ভোর বেলায় যত ফোন পেয়েছি তার সবটিতেই পেয়েছি দুঃসংবাদ। মোবাইল চাপলাম। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ গাইবান্ধা-পশ্চিম যেলার সভাপতি ডাঃ আউনুল মা‘বূদ-এর কল। শংকা আরও বেড়ে গেল। হ্যাঁ, আমার ধারণা সঠিক। আহলেহাদীছ আন্দোলনের সভা-সমিতিতে যার দরায কণ্ঠের জাগরণী সভার লোকজনকে আপ্লুত করে তোলে এবং ‘আন্দোলন’-এর কঠোর বিরোধী লোকটিকেও তার জাগরণী মুহূর্তের মধ্যে পাল্টাতে বাধ্য করে সেই জাগরণীর প্রাণভোমরা শফীকুল ইসলাম গত ১৩ই ডিসেম্বর’১৫ বগুড়ার গাবতলী থানাধীন মেন্দীপুর-চাকলা সালাফিইয়াহ হাফেযিয়া মাদরাসায় বক্তৃতারত অবস্থায় রাত্রি পৌনে এগারটায় অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে রাত্রি দেড় ঘটিকায় বগুড়া শহরের জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন)

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব-এর একনিষ্ঠ ভক্ত, হৃদয়গ্রাহী ও সুললিত আপোষহীন কণ্ঠের ইসলামী জাগরণীর অনেকগুলির রচয়িতা এবং গায়ক শফীকুল ইসলাম-এর মৃত্যুর সংবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বেদনা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে  উচ্চারিত হ’ল, ‘দয়াময় আল্লাহ! তুমি তাকে জান্নাতুল ফেরদাঊসে স্থান দান কর। তার পরিবার-পরিজনকে তোমার মহান অভিভাবকত্বের আবরণে ঢেকে দাও’। মাত্র সপ্তাহখানেক আগে যখন আমি তার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম যে, হরতালজনিত কারণে ২৩শে নভেম্বরের সভা স্থগিত হওয়ায় আগামী ২৭শে জানুয়ারীতে পুনরায় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। আপনি ঐ সভায় অবশ্যই আসবেন। টিএ্যান্ডটি সংলগ্ন আহলেহাদীছ জামে মসজিদটিকে দোতলা করার মনস্থ করেছি। আপনার দরায কণ্ঠের মধুর আহবানে প্রয়োজনীয় পরিমাণ টাকা আদায় করতে পারবেন আশা করি। বিগলিত কণ্ঠে জবাব দিলেন, ‘ভাই প্রধান ছাহেব, আপনার ওখানে যাবার জন্য সর্বদাই শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্ত্তত আছি। আপনার সৎ ইচ্ছাটিও পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ। বাকীটা আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছা’। হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছাই কার্যকর হয়েছে। তিনি যে ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর’। আমার মোবাইলে ধারণ করা তার জাগরণী-

‘আহলেহাদীছ আন্দোলনের কভু মরণ নাই,

সকল পথের মরণ হলেও হকের পতন নাই’...

শুনতে শুরু করলাম আর চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু ঝরতে লাগল। স্মৃতি বড় বেদনাদায়ক। বিশেষ করে যখন কোন একান্ত আপনজনকে বিদায় জানাতে হয়। কবির ভাষায় তাই বলতে হয়,

যেতে নাহি দিব হায়

তবুও যেতে দিতে হয়

তবু চলে যায়।






তাবলীগী ইজতেমার সেই রজনী! - শামসুল আলম
জেল-যুলুমের ইতিহাস - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
জেল-যুলুমের ইতিহাস (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
এক পিতার ঘরে ফেরা... - শরীফা বিনতে আব্দুল মতীন
জেল-যুলুমের ইতিহাস (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
তাবলীগী ইজতেমা ২০১৮ : টুকরো স্মৃতি - মুহাম্মাদ বেলাল বিন ক্বাসেম
শফীকুল ভাইয়ের বিদায় : শেষ মুহূর্তের কিছু স্মৃতি - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
শফীকুলের সাথে কিছু স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
তাবলীগী ইজতেমা ২০০৫ : প্রসঙ্গ কথা - শামসুল আলম
আমীনুলের কিছু স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
দায়িত্বশীলতা ও আদর্শিকতার এক মূর্ত প্রতীক - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
প্রফেসর ড. মুঈনুদ্দীন আহমাদ খান : কিছু স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
আরও
আরও
.