ইসলামী সম্মেলন
ইসলাম বিশ্বজয়ী দ্বীন
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
হাটগাঙ্গোপাড়া, বাগমারা, রাজশাহী ১২ ডিসেম্বর শনিবার: অদ্য বাদ আছর হাটগাঙ্গোপাড়া হাইস্কুল মাঠে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ বাগমারা এলাকার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রচলিত সকল দ্বীনের উপর বিজয় লাভের জন্য ইসলামের আগমন ঘটেছে। ইসলামের তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পূর্ণতা, চিরন্তনতা ও এর মহত্ত্ব। তিনি বলেন, ইসলামের বিজয় লাভের পথে অনেক বাধাবিঘ্ন রয়েছে। সেগুলি উত্তরণের জন্য জাতিকে নিঃশর্তভাবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের মর্মমূলে জমায়েত হ’তে হবে। তিনি বলেন, আহলেহাদীছ আন্দোলন যুগে যুগে এ পথেই পরিচালিত হয়েছে এবং এ পথেই সকলকে আহবান জানায়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আহলেহাদীছ যুবসংঘের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন ও সোনামণির কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক আব্দুল হালীম বিন ইলিয়াস।
সবদিক ছেড়ে ফিরে চলুন মহাসত্যের দিকে
-আমীরে জামা‘আত
বিরামপুর, দিনাজপুর ২৭ ডিসেম্বর রবিবার: অদ্য বাদ আছর বিরামপুর থানাধীন বেগমপুর ঈদগাহ মাঠে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ দিনাজপুর-পূর্ব সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে যেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব কিতাবুদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বিশাল সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, মানব রচিত কোন মতবাদ নয়, অহি-র বিধানই অভ্রান্ত সত্যের চূড়ান্ত উৎস। সমাজে সত্যিকারের শান্তি চাইলে আমাদের সবাইকে সবদিক ছেড়ে কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর মহাসত্যের দিকে ফিরে যেতে হবে। উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ ও শিক্ষক মাওলানা রুস্তম আলী ও যেলা ‘আন্দোলন’ ও ‘যুবসংঘে’র দায়িত্বশীলগণ।
আহলেহাদীছ কোন মতবাদ নয়; এটি একটি পথের নাম
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
ভীমশহর, রংপুর ৩০ ডিসেম্বর বুধবার : অদ্য দুপুর ২-টা হ’তে মাগরিব পর্যন্ত স্থানীয় ভীমশহর ময়দানে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ রংপুর সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইসলামী সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, আহলেহাদীছ আন্দোলন কোন মতবাদ নয়, এটি একটি পথের নাম। এ পথ আল্লাহর অহি-র পথ। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পথ। এ পথের শেষ ঠিকানা হ’ল জান্নাত। তিনি ধর্ম-বর্ণ ও দল-মত নির্বিশেষে সকলকে এ পথে ফিরে আসার উদাত্ত আহবান জানান। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল ওয়াহহাবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ, সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম।
সুধী সমাবেশ
তালতলী, ক্ষেতলাল জয়পুরহাট ৮ জানুয়ারী, শুক্রবার: অদ্য বাদ জুম‘আ ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ জয়পুরহাট সাংগঠনিক যেলা কমিটি পুনর্গঠন উপলক্ষে তালতলী মৎস হ্যাচারী সংলগ্ন জামে মসজিদে এক সুধী ও কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ মাহফূযুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ২০০৯-২০১১ সেশনের জন্য মুহাম্মাদ মাহফূযুর রহমানকে সভাপতি, মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলামকে সহ-সভাপতি ও মুহাম্মাদ আবুল কালাম আযাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট যেলা ‘আন্দোলন’-এর কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে ‘তালতলী মৎস্য হ্যাচারী’-এর শুভ উদ্বোধন করেন অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা তোফায়েল আহমাদ, সভাপতি মুহাম্মাদ মাহফূযুর রহমান, সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ মুয্যাম্মেল হক, মৎস্য হ্যাচারীর লীজ গ্রহীতা মোল্লা মুহাম্মাদ শামসুল আলম ও যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম ও অন্যান্যগণ। উল্লেখ্য, হ্যাচারীটি প্রায় ১৯ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত।
ইসলাম চিরশান্তির পথ, সেপথের দিকেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
গান্দাইল, সিরাজগঞ্জ ৯ জানুয়ারী শনিবার: অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ কাযীপুর থানাধীন গান্দাইল নয়াপাড়া এলাকার উদ্যোগে গান্দাইল আহলেহাদীছ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বিশাল ইসলামী সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসলাম এক চিরশান্তিময় জীবনাদর্শের নাম। এ পথেই আছে মানব জীবনের সার্বিক কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। মানব রচিত কোন মতবাদ মানুষকে শান্তি দিতে পারে না। যার প্রমাণ বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত বিভিন্ন মতবাদ। যা কেবলি ব্যক্তিস্বার্থ, দলীয় স্বার্থ ও দুনিয়াবী স্বার্থকে বড় করে দেখে। ফলে সমাজে হিংসা-হানাহানি ও রক্তারক্তি লেগেই থাকে। আর দেশে বিরাজ করে অস্থিরতা। তাই মানব রচিত এসব মতবাদ পরিত্যাগ করে ইসলামের দিকেই আমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।
সিরাজগঞ্জ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ মুর্তযার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুযাফ্ফর বিন মুহসিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল, খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, সিরাজগঞ্জ যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আলতাফ হুসাইন, যেলা ‘যুবসংঘে’র সভাপতি আব্দুল মতীন প্রমুখ। সম্মেলনে ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করেন আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর প্রধান মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম।
বর্ধিত কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলন
আসুন! সার্বিক জীবনে তাওহীদে ইবাদত প্রতিষ্ঠা করি!
-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত
রাজশাহী ১৪ ও ১৫ জানুয়ারী বৃহস্পতি ও শুক্রবার: ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে ১৪ ও ১৫ জানুয়ারী বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠে নওদাপাড়াস্থ বেসরকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (প্রস্তাবিত) জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত দু’দিন ব্যাপী বর্ধিত কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, সার্বিক জীবনে আল্লাহর দাসত্বের মাধ্যমেই পরকালে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, আক্বীদা পরিশুদ্ধ না হ’লে জীবনের সব আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। ভ্রান্ত আক্বীদার কারণেই কেউ চরমপন্থী হচ্ছে ও ধর্মের নামে বোমাবাজি করছে। অপরদিকে ইহুদী-খৃষ্টানদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর্শনের প্রতি আপোষকামী হয়ে কেউ ইসলামী বিধানের প্রতি চরম শৈথিল্য প্রদর্শন করছে। তিনি বলেন, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার মধ্যেই দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
উক্ত সম্মেলনে ‘আন্দোলন’-এর আমেলা ও শূরা সদস্যগণ এবং বিভিন্ন যেলা থেকে আগত কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও সাধারণ পরিষদ সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ‘আন্দোলন’-এর আয়-ব্যয়ের হিসাব, বার্ষিক বাজেট ও পরিকল্পনা পেশ ও অনুমোদন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম। বিভিন্ন যেলার দায়িত্বশীলবৃন্দ সংগঠনের উন্নতি ও অগ্রগতি সম্পর্কে পরামর্শমূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেন। উল্লেখ্য, ১ম দিন বাদ আছর অনুষ্ঠান শুরু হয়ে ২য় দিন শুক্রবার জুম‘আ পর্যন্ত চলে।
সম্মেলনে গৃহীত এক প্রস্তাবে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের দেওয়া মিথ্যা মামলা সমূহ প্রত্যাহারের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি জোর আবেদন জানানো হয়।
ঢাকা ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার: অদ্য বাদ মাগরিব পুরাতন ঢাকার মাজেদ সরদার লেনে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ ঢাকা যেলার যৌথ উদ্যোগে এক ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদুয়ার জামে মসজিদের খত্বীব মাওলানা শামসুদ্দীন সিলেটীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রীয় দারুল ইফতার সদস্য মাওলানা আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুযাফফর বিন মুহসিন ও প্রবীন আলেমে দ্বীন মাওলানা আব্দুস সাত্তার ত্রিশালী। যেলা ‘আন্দোলন ও ‘যুবসংঘে’র নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। বিপুল সংখ্যক সুধী ও শ্রোতার উপস্থিতিতে সম্মেলন স্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় এবং অনেকে দাঁড়িয়ে থেকে বক্তব্য শ্রবণ করেন। উক্ত সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর অর্থ সম্পাদক কাযী মুহাম্মাদ হারূনুর রশীদ ও ‘যুবসংঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ ফযলুল হক।
মেন্দিপুর, গাবতলী, বগুড়া ১৬ জানুয়ারী : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ বগুড়া যেলার উদ্যোগে গাবতলী থানাধীন মেন্দিপুর সালাফিয়া হাফেযিয়া মাদরাসা ময়দানে এক ইসলামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহাতারাম আমীরে জামা‘আত ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রায্যাক বিন ইউসুফ, ঢাকা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিন হাবীব। সম্মেলনে ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করেন ‘আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠী প্রধান শফীকুল ইসলাম ও অন্যান্য ক্ষুদে শিল্পীরা।
কর্মী ও সুধী সমাবেশ
দুর্গদহ, দুর্গাপুর, রাজশাহী ৩০ ডিসেম্বর বুধবার: অদ্য বাদ আছর ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ রাজশাহী উত্তর সাংগঠনিক যেলার উদ্যোগে দুর্গদহ আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক কর্মী ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘যুবসংঘ’-এর যুগ্ম-আহবায়ক মুহাম্মাদ মুস্তাকীম হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় তাবলীগ সম্পাদক মুহাম্মাদ আরীফুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা পেশ করেন বড়গাছী উত্তর পাড়া আহলেহাদীছ জামে মসজিদের ইমাম মুহাম্মাদ রূহুল আমীন।
কৃতি সংবর্ধনা
নওদাপাড়া, রাজশাহী ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার: অদ্য বেলা ১১-টায় ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর উদ্যোগে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলদের মধ্য থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রী অর্জনকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মাদ নযরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক গোলাম মুক্তাদির ও দফতর সম্পাদক বাহারুল ইসলাম।
সংবর্ধিত চারজন হ’লেন (১) ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ (শিরোনাম: ইবরাহীম খাঁ: সাহিত্যকর্ম ও জীবনদর্শন), (২) বর্তমান সভাপতি ডঃ মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম (শিরোনাম: আহমাদ ইবনুল হুসাইন আল-বায়হাক্বী: হাদীছ শাস্ত্রে তাঁর অবদান), (৩) সাবেক কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক এবং মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ডঃ মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (শিরোনাম: মুহাম্মাদ ইবন তাহের আল-মাক্বদেসী: হাদীছ চর্চায় তাঁর অবদান), (৪) রাজশাহী যেলা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যুবসংঘ’-এর সাবেক সভাপতি ডঃ মুহাম্মাদ আতাউর রহমান (শিরোনাম: আরবী ও ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে বৃহত্তর খুলনা জেলার আলিমগণের অবদান (১৯০৫-২০০০খ্রীঃ)।
অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধান অতিথি তাদের হাতে ‘যুবসংঘ’-এর মনোগ্রাম খচিত সুদৃশ্য ক্রেষ্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ এবং ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় ও সাধারণ পরিষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ডিগ্রী অর্জনকারীদের উদ্দেশ্যে নছীহত মূলক বক্তব্যে বলেন, তারা যেন আহলেহাদীছ আন্দোলনকে তাদের জীবনের লক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করেন এবং সাংগঠনিক জীবনে তারা উক্ত লক্ষ্যে যে শপথ নিয়েছিলেন, তা যেন অক্ষুণ্ণ রাখেন। তিনি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে দো‘আ করেন।
যুবসংঘ সভাপতি ও আত-তাহরীক সহকারী সম্পাদকের পিএইচ.ডি. ডিগ্রী লাভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ৩১ ডিসেম্বর ’০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডেকেট সভা মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলামকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রী প্রদান করে। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘আহমাদ ইবনুল হুসাইন আল-বায়হাক্বী : হাদীছ শাস্ত্রে তাঁর অবদান’। তাঁর গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ইসলামকি স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবূবুর রহমান। তিনি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে ১৯৯৮ সালে বি.এ (অনার্স) এবং ১৯৯৯ সালে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি গোপালগঞ্জ যেলার কোটালীপাড়া থানাধীন বর্ষাপাড়া গ্রামের অধিবাসী। বর্তমানে তিনি মাসিক আত-তাহরীকের সহকারী সম্পাদক ও যুবসংঘের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সকলের নিকট দো‘আ প্রার্থী।
‘তাওহীদের ডাক’ পুনঃ প্রকাশিত
১৯৮৫-এর ফেব্রুয়ারীতে প্রথম প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর মুখপত্র মাসিক ‘তাওহীদের ডাক’ জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী ২০১০ সংখ্যা পুনরায় প্রকাশিত হয়েছে। ফালিল্লাহিল হামদ। ৫৬ পৃষ্ঠায় সুদৃশ্য কভারে মূল্যবান প্রবন্ধ ও সাহিত্যপুষ্ট উক্ত পত্রিকার মূল্যমাত্র ১৫/= টাকা। সকলে সংগ্রহ করুন।
মৃত্যু সংবাদ
(১) মাওলানা আব্দুল মতীন সালাফী আর নেই
(১৯৫৪-২০১০)
১.১.১৯৮০ইং হ’তে ২.৭.১৯৮৯ পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর ৭ মাস ২ দিন বাংলাদেশে সঊদী মাব‘ঊছ হিসাবে চাকুরীরত থাকাকালীন সময়ে যিনি এ দেশের আহলেহাদীছ জনগণের হৃদয়ের গভীরে স্থান করে নিয়েছিলেন। স্বীয় বিদ্যাবত্তায়, বাগ্মিতায়, সদা হাস্যোজ্জ্বল ব্যবহারে ও উচ্ছ্বল কর্মস্পৃহায় যিনি ছিলেন অন্য অনেকের ঊর্ধ্বে ও নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য, ‘বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলেহাদীস’-এর সাবেক কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র সাবেক কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মাওলানা আব্দুল মতীন সালাফী গত ১৬ই জানুয়ারী শনিবার সকাল ১১-টা ৪৭ মিনিটে ভারতের বিহার প্রদেশের কিষাণগঞ্জ শহরে নিজ বাড়ীতে হঠাৎ হার্টফেল করে মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। পরের দিন সকাল ৯-টায় মাদরাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত তাঁর প্রথম জানাযায় ইমামতি করেন তাঁর শ্বশুর ‘মারকাযী জমঈয়তে আহলেহাদীছ হিন্দ’-এর নেতা শায়খ আতাউর রহমান মাদানী এবং বেলা ১১-টায় গ্রামের বাড়ী ভুলকিতে দ্বিতীয় জানাযায় ইমামতি করেন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র মতীউর রহমান মাদানী। জানাযার পর পিতা-মাতার কবরের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয়।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি ২ স্ত্রী, ৪ ছেলে, ৭ মেয়ে ও দেশ-বিদেশে অগণিত গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আমরা তাঁর রূহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
সংক্ষিপ্ত জীবনী :
সার্টিফিকেট অনুযায়ী তিনি ১.১.১৯৫৪ইং তারিখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর যেলার করণদীঘি থানাধীন ভুল্কী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন মাওলানা আব্দুর রহমান। তিনি মাদরাসা মাযহারুল উলূম বাটনা, মালদহ থেকে ১৯৭২ সালে টাইটেল (কামিল) পাস করেন। অতঃপর ১৯৭৪ সালে জামে‘আ সালাফিইয়াহ বেনারস (ইউপি) থেকে ‘ফযীলত’ ডিগ্রী লাভ করেন। অতঃপর মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গমন করেন ও সেখান থেকে ১৯৭৯ সালে ‘লেসান্স’ ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর বাংলাদেশে সঊদী সরকারের পক্ষ থেকে মাব‘ঊছ (মুবাল্লিগ) হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ঐ বছরের শেষে ঢাকায় আসেন। অতঃপর ১.১.১৯৮০ইং থেকে তিনি ঢাকার মীর হাজীর বাগস্থ তা‘মীরুল মিল্লাত (কামিল) মাদরাসায় শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হ’তে আরবী ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন ও ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করেন।
লেখনী :
১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত বই, পুস্তিকা ও প্রবন্ধ সমূহের তালিকা নিম্নরূপ:
বই ১০টি : ১. কাশফুশ শুবহাত (আরবী হতে অনুবাদ ১৯৮০), ২. আল-উছূল আছ-ছালাছা (ঐ, ১৯৮০) ৩. রহমাতুল লিল ‘আলামীন (১৯৮৩) ৪. মাহে রামাযানের গুরুত্ব ও ছওমের তাৎপর্য (১৯৮৪) ৫. ইসলামের মূল স্তম্ভ : তাওহীদ (১৯৮৫) ৬. ইসলামী জীবন ব্যবস্থা (অপ্রকাশিত) ৭. আল-আক্বীদাতুত তাহাভিয়াহ (অনুবাদ, ১৯৮৪) ৮. ইত্তেবায়ে সুন্নাত (অনুবাদ, ১৯৮৫) ৯. হজ্জ, ওমরাহ ও যিয়ারত নির্দেশিকা (অনুবাদ ১৯৮৫) ১০. ইসলামী আক্বীদা (অনুবাদ ১৯৮৬)।
প্রবন্ধ : ১০টি :
(১) ১লা মার্চ ১৯৮৫তে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামী সেমিনারে পঠিত (নাম পাওয়া যায়নি)।
(২) অপ্রকাশিত আরবী প্রবন্ধ (৩) অপ্রকাশিত আরবী প্রবন্ধ (৪) মদীনা মুনাওয়ারার জন্য নির্দেশিকা (আরবী হতে অনুবাদ। ঢাকার সাপ্তাহিক আরাফাত ২২/১৬-১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত (২রা জুন ১৯৮০)।
(৫) রজব মাসে অনুষ্ঠিত নিকৃষ্ট বিদ‘আত সমূহ (আরবী হতে অনুবাদ। আরাফাত ২৪/৫ সংখ্যায় প্রকাশিত)।
(৬) আল-কুরআনের দৃষ্টিতে শিরক: একটি আলোচনা; দৈনিক কিষাণ ৪ সেপ্টেম্বর ’৮২ এবং দৈনিক সংগ্রাম ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৮২-তে প্রকাশিত।
(৭) ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ রামাযান। সাপ্তাহিক আরাফাত ২৬/১ সংখ্যা ১৮ জুন ১৯৮৪।
(৮) ই‘তিকাফ : সাপ্তাহিক আরাফাত ২৪/২ সংখ্যা।
(৯) ইসলামের দৃষ্টিতে জ্ঞানার্জন। রেডিও কথিকা (ঢাকা কেন্দ্রের জাতীয় অনুষ্ঠানে প্রচারিত এবং সাপ্তাহিক আরাফাত ২৭/৯ সংখ্যায় প্রকাশিত।
(১০) তাওহীদের তাৎপর্য : ১৪০৭ হিজরী (১৯৮৭ইং) রবীউল আউয়াল মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে পঠিত।
গবেষণাকর্ম :
‘ইমাম মুসলিম : জীবন ও কর্ম এবং হাদীছ শাস্ত্রে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব’ বিষয়ে পিএইচ.ডি করার জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ‘গবেষণা পরিকল্পনা’ জমা দিয়েছিলেন।
পত্রিকা প্রকাশনা :
তিনি ‘তাওহীদের ডাক’ (বাংলা) ও ‘পায়ামে তাওহীদ’ (উর্দু) নামে দু’টি পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন। যা অনিয়মিতভাবে কিষাণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত হয়।
সংগঠন ও সমাজসেবা :
১৯৮০ সালে ঢাকায় আসার পর থেকে আব্দুল মতীন সালাফী ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র সাথে যুক্ত হন। কেননা ইতিপূর্বে তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কর্মপরিষদের সদস্য ছিলেন। এখানে এসেই ‘যুবসংঘে’র সাংগঠনিক কার্যক্রমের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হন এবং তাঁকে ‘কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা’ করে নেওয়া হয়। সাথে সাথে ‘বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলেহাদীস’-এর তিনি কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ঐসময় দেশের বিভিন্ন যেলায় অনুষ্ঠিত জমঈয়ত কনফারেন্স সমূহে তিনি জমঈয়ত-সভাপতি ডঃ মুহাম্মাদ আব্দুল বারীর নিয়মিত সফর সঙ্গী থাকতেন। ঐ সময় সর্বত্র যুবসংঘের জোয়ার চলছিল। কনফারেন্সগুলির স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে এবং ব্যবস্থাপনা, প্রচারণা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যুবসংঘের উদ্যমী ভূমিকা প্রায় সকল পর্যায়ের মুরববীদের হৃদয় কেড়েছিল। সম্ভবতঃ নিজে তরুণ হওয়ার কারণে ও দারুণ কর্মচঞ্চল হওয়ার কারণে আব্দুল মতীন সালাফী যুবসংঘের প্রতি অধিক আকৃষ্ট ছিলেন। তিনি তাদের প্রশিক্ষণ সমূহে প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়মিত যোগ দিতেন এবং সর্বদা নানাভাবে তাদেরকে উৎসাহিত করতেন।
১৯৮৪-এর শুরুর দিকে প্রথম কুয়েতী দাতাসংস্থার নেতৃবৃন্দ এদেশে আসেন। আব্দুল মতীন সালাফী ও যুবসংঘের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তারা সপ্তাহকাল ব্যাপী সারা দেশে আহলেহাদীছ মারকাযগুলি পরিদর্শন করেন। তারপর থেকে তারা এ দেশে সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম শুরু করেন। পরে ঢাকায় অফিস খুলে তারা নিজেরাই ইসলামী প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করতে থাকেন। আব্দুল মতীন সালাফীর একটি বড় গুণ ছিল এই যে, তিনি ছিলেন আরবীতে ‘ফ্লুয়েন্ট’। জন্মগতভাবে বাংলাভাষী হয়েও এত সুন্দর ও নির্ভুল এবং দ্রুত আরবী বলা ও লেখার যোগ্যতা সাধারণতঃ দেখা যায় না। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আরবীরা তার প্রতি আকৃষ্ট হ’ত। তিনি সরলভাবেই সবকিছু করতেন। কেন্দ্রীয় জমঈয়তে আহলেহাদীস-এর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য রেখেই তিনি সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম সমূহে সহযোগিতা করতেন। লিল্লাহ কাজ করার জাযবা ব্যতীত তাঁর মধ্যে অন্য কোন স্বার্থ ছিল বলে তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা কখনো বলেননি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে, তাঁর দ্রুত ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অনেকের মধ্যে ঈর্ষার কারণ ঘটায়। ফলে ১৯৮৯ সালের ২রা জুলাই তিনি এদেশ থেকে স্বদেশে চলে যেতে বাধ্য হন।
নিজ দেশে গিয়ে তিনি ‘জমঈয়তে আহলেহাদীছ হিন্দ’-এর সাথে যুক্ত হন এবং একবার কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য হন। তিনি কিষাণগঞ্জে ‘তাওহীদ এডুকেশনাল ট্রাষ্ট’ নামে একটি সমাজসেবামূলক ট্রাষ্ট গঠন করেন এবং ব্যাপক বিদেশী অনুদান এনে সেদেশে অগণিত মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, নলকূপ ও অন্যান্য সমাজসেবামূলক কার্যক্রম সম্পাদন করেন। উক্ত ট্রাষ্টের অধীনে সেদেশে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০-এর অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় হ’ল ২টি, যা কিষাণগঞ্জ শহরতলীর খাগড়ায় অবস্থিত। (১) জামে‘আতুল ইমাম বুখারী (ছাত্রদের জন্য) এবং (২) জামে‘আ আয়েশা আল-ইসলামিয়াহ (মেয়েদের জন্য)। এতদ্ব্যতীত বেকার যুবকদের কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য তিনি সেখানে আই,টি,আই নামে একটি কারিগরী শিক্ষা কলেজ স্থাপন করেন। এতদ্ব্যতীত ‘তাওহীদ চেরিটেবল ডিসপেনসারী’ নামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে আমরা মর্মাহত। আল্লাহ তাঁর অগণিত নেক আমলের উত্তম জাযা দান করুন ও তাঁর সকল গুনাহ-খাতা মাফ করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসে স্থান দান করুন। আমীন! তাঁর রেখে যাওয়া পুণ্য স্মৃতিসমূহ যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে ও আহলেহাদীছ আন্দোলনের অগ্রগতির লক্ষ্যে চালু থাকে, সেজন্য তাঁর উত্তরসুরীগণকে তাওফীক্ব দানের জন্য আল্লাহর নিকটে আমরা আকুলভাবে প্রার্থনা জানাই।
পরিশেষে আমরা আবারও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার বর্গের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তাঁদেরকে ‘ছবরে জামীল’ এখতিয়ার করার আবেদন জানাচ্ছি। [স.স]
اللهم اغفرله وارحمه و عافه و اعف عنه و أكرم نزله و وسِّع مدخله و أبدله داراً خيراً من داره و زوجاً خيراً من زوجه و أهلاً من أهله.. اللهم ادخله الجنة الفردوس و أعذه من عذاب القبر و عذاب النار، آمين-
(২) ভাই আনছার আলী মাষ্টার চলে গেলেন
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর সাবেক বগুড়া যেলা সভাপতি জনাব মাষ্টার আনছার আলী গত ২৪ জানুয়ারী ’১০ বিকাল ৫ টা ৪০ মিনিটে নিজ বাড়ীতে মৃত্যু বরণ করেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। বগুড়া শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদীছ সালাফিয়া ও হাফেযিয়া মাদরাসা ময়দানে তাঁর ছালাতে জানাযায় ইমামতি করেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। এতদ্ব্যতীত জানাযায় উপস্থিত ছিলেন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ডঃ মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ডঃ এ.এস.এম. আযীযুল্লাহ, সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মোফাক্ষার হোসাইন, সোনামণি-র কেন্দ্রীয় পরিচালক শিহাবুদ্দীন আহমাদ, বগুড়া যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি জনাব আব্দুর রহীম, নওদাপাড়া মাদরাসার হেফয বিভাগের প্রধান হাফেয লুৎফর রহমান, এলাকার বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, দারুল হাদীছ মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রবৃন্দ এবং যেলা ‘আন্দোলন’ ও যুবসংঘের নেতৃবৃন্দ সহ বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ। অতঃপর নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
তিনি ১৫ মার্চ ১৯৮৮ সালে ‘যুবসংঘে’ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর ’৯৪-এ ‘আন্দোলনে’ যোগদান করে আজীবন হক্বের আওয়াজ বুলন্দ করার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিজ বাড়ীতে শয্যাশায়ী ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন।
তিনি বগুড়ার শাহজাহানপুর থানাধীন মারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদীছ সালাফিইয়াহ ও হাফেযিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। বগুড়া অঞ্চলে আহলেহাদীছ আন্দোলনের অগ্রগতিতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আল্লাহ তাঁর সকল গোনাহ-খাতা মাফ করুন ও জান্নাতুল ফেরদৌস নছীব করুন। আমীন!
(৩) প্রাচীন পুঁথি সংগ্রাহক আব্দুল্লাহ খান সালাফী চিরবিদায় নিলেন
বাংলা একাডেমীর প্রাচীন পুঁথি সংগ্রাহক আব্দুল্লাহ খান সালাফী প্রায় ৯৫ বছর বয়সে গত ২৮.১.২০১০ বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা সদর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। খুলনা নিরালা আবাসিক এলাকার জামে মসজিদে তাঁর ছালাতে জানাযায় ইমামতি করেন খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম। এতদ্ব্যতীত জানাযায় উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জনাব গোলাম মোক্তাদির, জনাব এ.কে.এম. ইয়াকূব আলী (দৌলতপুর), জনাব ডাঃ লিয়াকত আলী ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অতঃপর নিরালা-র পার্শ্ববর্তী বাগমারায় খুলনা সিটি কর্পোরেশন কবরস্থানে তিনি সমাহিত হন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে জনাব আব্দুল্লাহ খান সালাফী প্রথমে হিন্দু ছিলেন। তাঁর পূর্ব নাম ছিল কালীদাস রায়, পিতা কার্তিক চন্দ্র রায়, সাং শিখরবালি, থানা- বারইপুর, যেলাঃ আলীপুর, পশ্চিমবঙ্গ। পরে তিনি মুসলমান হন ও হিজরত করে এ দেশে চলে আসেন। তিনি বাংলা একাডেমীতে দীর্ঘদিন চাকুরীরত ছিলেন। অবসর জীবনে তিনি অধিকাংশ সময় দ্বীনের দাওয়াতে সময় কাটাতেন এবং প্রাচীন পুঁথি সমূহ সংগ্রহ করতেন। তিনি মূলতঃ প্রাচীন পুঁথি সংগ্রাহক হিসাবেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন পাক্কা আহলেহাদীছ ছিলেন এবং মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবের একজন ভক্ত অনুসারী ছিলেন। তিনি অনেকদিন খুলনা যেলার ফকিরহাট থানাধীন পিলজঙ্গ গ্রামে অবস্থান করেন এবং তাঁর উদ্যোগেই সেখানে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত কুয়েতী অনুদানে একটি জামে মসজিদ নির্মাণ করে দেন। শেষ দিকে তিনি গাযীপুরের পিরুজালী বর্তাপাড়ায় কিছু জমি কিনে তার এক পালক পুত্রের কাছে থাকতেন। কিন্তু ঐ পুত্র মারা গেলে তিনি নিরাশ্রয় হয়ে পড়েন। মৃত্যুর প্রায় পাঁচমাস পূর্বে তিনি বৃদ্ধাশ্রমের খন্ডকালীন চিকিৎসক ডাঃ লিয়াকত আলীর পরামর্শে খুলনার নিরালায় অবস্থিত একটি বেসরকারী ‘বৃদ্ধাশ্রমে’ আশ্রয় নেন। গত ১৬ জানুয়ারী শনিবারে হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি জ্ঞান হারান এবং ঐ অবস্থায় খুলনা সদর হাসপাতালে ২৮ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
[আমরা তাঁদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। -সম্পাদক]