জুম‘আর খুৎবা :
ইজতেমার ২য় দিন শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত এবং কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম জুম‘আর খুৎবা প্রদান করেন। এ সময় মহিলা মাদরাসা ও ট্রাক টার্মিনালের পার্শ্ববর্তী পৃথক স্থানে মহিলা প্যান্ডেল সহ ট্রাক টার্মিনালের পুরো ময়দানব্যাপী সুবিশাল প্যান্ডেল পূর্ণ হয়ে প্যান্ডেলের বাইরে ও মহাসড়কে খোলা স্থানে বসে মুছল্লীরা খুৎবা শ্রবণ করেন। একই মাইক্রোফোনে প্রদত্ত জুম‘আর খুৎবায় সমবেত পুরুষ ও মহিলা মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, ‘জান্নাত লাভের আবশ্যিক পূর্বশর্ত হ’ল ইখলাছ’। তিনি সূরা লোকমান ৩৩ আয়াতের আলোকে বলেন, ক্বিয়ামত আসবেই। আল্লাহর নিকটে সবকাজের হিসাব দিতে হবেই। অতএব আমরা যেন পার্থিব জীবনের ধোঁকায় না পড়ি এবং শয়তানী প্রতারণার ফাঁদে পা না দেই। তিনি বলেন, আল্লাহর নিকট পুরস্কার ও দুনিয়াতে প্রসিদ্ধি দু’টি এক সঙ্গে কামনা করলে কোনটাই পাওয়া যাবে না। কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইখলাছের সাথে কাজ করলেই সেটি আল্লাহর নিকট কবুল হবে। অতএব আসুন! আমরা আমাদের সকল কাজ স্রেফ আল্লাহকে খুশী করার জন্য করি এবং তাঁর প্রেরিত তরীকা মোতাবেক সম্পন্ন করি।
উল্লেখ্য যে, খুৎবা শুরুর কিছু পূর্বে জুম‘আর ছালাতের উদ্দেশ্যে মঞ্চে আগমন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন। জুম‘আর ছালাতের পর তিনি উঠে মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে সালাম করেন। তখন সকলে তাঁর নিকটে ইজতেমার জন্য বৃহৎ আয়তন বিশিষ্ট সরকারী খাস জমি বরাদ্দ দাবী করেন। জবাবে তিনি এজন্য সার্বিক চেষ্টা করবেন বলে মুছল্লীদের আশ্বস্ত করেন।
যুবসমাবেশ :
ইজতেমার ২য় দিন সকাল ১০-টায় প্রস্তাবিত দারুলহাদীছ বিশ্ববিদ্যালয় (প্রাঃ) জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে পৃথক প্যান্ডেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর উদ্যোগে ‘যুবসমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রশীদ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, লক্ষ্যে দৃঢ়তা ও কর্মে একনিষ্ঠতা ব্যতীত কোন উদ্দেশ্যই সফলকাম হয় না। তাই ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কর্মীদের প্রতি আমাদের একটাই মাত্র উপদেশ, আপনারা সংগঠনের লক্ষ্য পূরণে অবিচল ও একনিষ্ঠ থাকুন।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম, শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম ও পাবনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর প্রবীণ উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মাদ রবীউল ইসলাম। যেলা দায়িত্বশীলদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন ‘যুবসংঘ’ সাতক্ষীরা যেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-মামূন, জয়পুরহাট যেলা সভাপতি নাজমুল হক, নারায়ণগঞ্জ যেলা সভাপতি জালালুল কবীর, রংপুর যেলা সভাপতি শিহাবুদ্দীন, সিরাজগঞ্জ যেলা সভাপতি শামীম আহমাদ, বগুড়া যেলা সভাপতি আল-আমীন, রাজশাহী সদর সাংগঠনিক যেলা সভাপতি হায়দার আলী, কুমিল্লা যেলা সাধারণ সম্পাদক আহমাদুল্লাহ ও রাজশাহী-পূর্ব সাংগঠনিক যেলার সাধারণ সম্পাদক যিল্লুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবুল কালাম। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক কর্মী ও সুধী অংশগ্রহণ করেন।
মহিলা সমাবেশ :
ইজতেমার ২য় দিন শুক্রবার সকাল ৮-টায় মহিলা সালাফিইয়াহ মাদরাসা ময়দানে মহিলাদের প্যান্ডেলে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্যা আঞ্জুমান আরার সভানেত্রীত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত মহিলা সমাবেশ বক্তব্য রাখেন শরীফা খাতুন (মারকায বালিকা শাখা প্রধান) প্রমুখ। সমাবেশে মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।
আত-তাহরীক এজেন্ট সম্মেলন :
ইজতেমার ২য় দিন বাদ আছর প্রস্তাবিত দারুলহাদীছ বিশ্ববিদ্যালয় (প্রাঃ) জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম বারের মত মাসিক আত-তাহরীক-এর এজেণ্ট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ১০৩২ জন এজেণ্টের অধিকাংশ উক্ত সম্মেলনে যোগদান করেন। এজেণ্টদের সবাইকে আত-তাহরীকের পক্ষ থেকে একটি করে ‘ডায়েরী’ উপহার দেওয়া হয় এবং ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীদের ডায়েরী ছাড়াও বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। ১ম হন আনীসুর রহমান (বগুড়া) ৩২০ কপি। ২য় হন হাবীবুর রহমান (সাতক্ষীরা) ২২৬ কপি এবং ৩য় হন মোস্তাক আহমাদ সরোয়ার (জয়পুরহাট) ২১০ কপি।
উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে আত-তাহরীক-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বলেন, নির্ভেজাল তাওহীদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার সহযোগী হিসাবে আত-তাহরীক প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং সে লক্ষ্যে অবিচল থেকে এটি এগিয়ে চলেছে। দুই- নেকীর উদ্দেশ্যে ও ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ হিসাবে আমরা আত-তাহরীক পরিচালনা করি। এজেণ্ট ভাইগণ একই উদ্দেশ্যের সাথী। এজন্য তারা অনেক ক্ষতি স্বীকার করে থাকেন। তিন- সমাজ পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আত-তাহরীক পরিচালিত হয়। সেকারণ তাকে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরোতে হয়। আমরা কারাগারে থাকাকালীন একে লক্ষ্যচ্যুত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ইমারতের প্রতি অবিচল থাকায় বর্তমান সম্পাদক মন্ডলীকে তারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারেনি। সরকারী রোষাণলেও মাঝে-মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এজেণ্ট ভাইদের অনেকে তাতে ভীত হচ্ছেন। ফলে গ্রাহক সংখ্যায় মাঝে-মধ্যে ছন্দ-পতন ঘটছে। তবুও দেশের প্রায় সকল ইসলামী পত্রিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে মাসিক ‘আত-তাহরীক’। কেননা এটি কেবল সংবাদপত্র নয়। বরং জ্ঞানের অক্ষয় খনি। যা ঘরে থাকলে সারা জীবন আপনাকে আলোর পথ দেখাবে ইনশাআল্লাহ।
মাসিক আত-তাহরীক-এর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর সচিব অধ্যাপক আব্দুল লতীফ, দফতর ও যুববিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আমীনুল ইসলাম ও ‘আন্দোলন’-এর শূরা সদস্য অধ্যাপক শেখ রফীকুল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলনে আত-তাহরীক পরিবারের পক্ষ থেকে সহকারী সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম এবং এজেণ্টদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান (সাতক্ষীরা) ও আনীসুর রহমান (বগুড়া)। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর গবেষণা সহকারী নূরুল ইসলাম (রাজশাহী)।
জাতীয় গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান :
বিগত বছরের ন্যায় এবারও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর উদ্যোগে ‘জাতীয় গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতা’ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের নির্বাচিত গ্রন্থ ছিল আমীরে জামা‘আত রচিত ‘তাফসীরুল কুরআন ৩০তম পারা (২য় সংস্করণ)’। এতে শীর্ষস্থান অধিকারী তিনজন হ’ল যথাক্রমে ১. আসাদুল্লাহ আল-গালিব (কুষ্টিয়া), ২. শরীফুল ইসলাম (সাতক্ষীরা) ও ৩. আব্দুল কাদের (চাঁপাই নবাবগঞ্জ)। এছাড়া ৫ জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার তুলে দেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত।
ফৎওয়া বুথ :
২৭তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমা উপলক্ষে এবারই প্রথম ফৎওয়া বুথের ব্যবস্থা করা হয়। মাসিক আত-তাহরীক-এর কার্যালয়ে স্থাপিত ফৎওয়া বুথে বিভিন্ন যেলা থেকে আগত কর্মী ও সুধীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর গবেষণা সহকারী মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম। বিকাল ৪-টা থেকে রাত ১১-টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
স্বেচ্ছাসেবী নিরাপদ রক্তদান সংস্থা ‘আল-‘আওন’-এর যাত্রা শুরু :
‘মাদক মুক্ত রক্তদান, সুস্থ থাকবে জাতির প্রাণ’ এই শ্লোগান নিয়ে ২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭ বৃহস্পতিবার ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর অন্যতম সমাজকল্যাণ সংগঠন হিসাবে ‘আল-‘আওন’ স্বেচ্ছাসেবী নিরাপদ রক্তদান সংস্থা যাত্রা শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- রক্তের গ্রুপ সমূহ নির্ধারণ করে যেলা ভিত্তিক রক্তদাতাদের তালিকা প্রস্ত্তত করা এবং প্রয়োজন মুহূর্তে অসহায় রোগীকে চাহিবা মাত্র রক্ত দাতার সন্ধান দেওয়া। তাবলীগী ইজতেমার ১ম দিন বৃহস্পতিবার আমীরে জামা‘আতের নির্দেশক্রমে এর কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং ইজতেমার দু’দিন ‘আল-‘আওন’-এর দায়িত্বশীল ও কর্মীরা নিরলসভাবে প্রায় দু’শ জন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ ও তাদের নাম-ঠিকানা তালিকাভুক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে, ‘আল-‘আওন’-এর বর্তমান কার্যালয় আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহীর পূর্ব পার্শ্বস্থ ভবনের ২য় তলায় অবস্থিত।
বিদায়ী ভাষণ ও দো‘আ :
ইজতেমার ৩য় দিন শনিবার ইজতেমা ময়দানে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত-এর ইমামতিতে ফজরের ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর তিনি মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বিদায়ী ভাষণ পেশ করেন। সবাইকে ছহীহ-সালামতে স্ব স্ব গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেন। অতঃপর সভাপতি হিসাবে তিনি বিদায়কালীন ও বৈঠক ভঙ্গের দো‘আ পাঠের মাধ্যমে দু’দিনব্যাপী ২৭তম বার্ষিক তাবলীগী ইজতেমার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ইজতেমায় গৃহীত প্রস্তাব সমূহ :
ইজতেমার ২য় দিন রাতে আমীরে জামা‘আতের ভাষণের পর ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম সরকারের নিকট নিম্নোক্ত প্রস্তাব ও দাবী সমূহ পেশ করেন এবং উপস্থিত সকলে হাত তুলে সমস্বরে সেগুলির প্রতি জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন।-
(১) পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে দেশের আইন ও শাসন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে এবং মানুষের রক্তচোষা সূদভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা বাতিল করে অনতিবিলম্বে ইসলামী অর্থনীতি চালু করতে হবে।
(২) হিংসা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করে দল ও প্রার্থীবিহীন ইসলামী নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
(৩) জঙ্গীবাদের বিশ্বাসগত ভ্রান্তি দূর করার জন্য শিক্ষার সর্বস্তরে সঠিক ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
(৪) মূর্তি ভাঙ্গা জাতি মুসলমানের দেশে সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে প্রাচীন গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন তাওহীদের বিরুদ্ধে শিরকের যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। অতএব এ মূর্তি দ্রুত অপসারণ করতে হবে। সেই সাথে এই সম্মেলন হবিগঞ্জে জনৈক রজত রায় কর্তৃক কা‘বাগৃহের উপরে হনুমানের মূর্তি স্থাপন করার ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে ও দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছে।
(৫) আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে বিষোদগার বন্ধ করতে হবে এবং জঙ্গীবাদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নির্দোষ ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে যামিন না দেওয়া এবং ইসলামী বই-পুস্তককে ‘জিহাদী বই’ বলে আখ্যায়িত করার অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
(৬) সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে এবং রূপপুর পারমাণবিক চুল্লী নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে শিল্পায়নের নামে বিদেশীদেরকে শতশত একর জমি ইজারা দিয়ে ছোট্ট এই দেশটিকে অন্যদের করায়ত্ত করার সুযোগ না দেওয়ার আহবান জানাচ্ছে।
(৭) আণবিক বোমার চেয়েও ভয়ংকর ফারাক্কা বাঁধ, গজলডোবা বাঁধ, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প প্রভৃতি ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
(৮) দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে দেশের সকল সেক্টরে মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিযুক্ত করার আহবান জানাচ্ছে। সেই সাথে হিজাব ও নিক্বাবধারী পর্দানশীন ছাত্রী ও চাকুরী প্রার্থীদের হয়রানীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
(৯) বর্মী দুঃশাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য ‘পৃথক আরাকান রাষ্ট্র’ ঘোষণা অথবা মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করে সসম্মানে পুনর্বাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এ সম্মেলন জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
(১০) যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধের জন্য মাদকের সয়লাব ও পর্ণো সাইট সমূহ বন্ধ করার জন্য এবং পিস টিভি বাংলার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য এ সম্মেলন সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছে।
[স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক ছাড়াও ২৪, ২৫ ও ২৭শে ফেব্রুয়ারী দৈনিক ইনকিলাবে প্রস্তাবগুলি সহ ইজতেমার পূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।-সম্পাদক]