পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । শেষ পর্ব ।
(১৪)
শায়খ, বড় আলেম, মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ ফাখের বিন মুহাম্মাদ ইয়াহ্ইয়া বিন
মুহাম্মাদ আমীন আববাসী সালাফী ইলাহাবাদী (১১২০-১১৬৪ হিঃ) তাক্বলীদ করতেন
না। বরং কুরআন ও সুন্নাহর দলীল সমূহের উপরে আমল করতেন এবং নিজে ইজতিহাদ
করতেন।[1]
ইমাম মুহাম্মাদ ফাখের ইলাহাবাদী
বলেছেন, ‘তাক্বলীদ’ অর্থ দলীল অবগত না হয়ে কারো কথার উপরে আমল করা। কোন
বর্ণনাকে গ্রহণ করা এবং তদনুযায়ী আমল করাকে তাক্বলীদ বলে না। আলেমদের ইজমা
রয়েছে যে, দ্বীনের মূলনীতিসমূহে তাক্বলীদ নিষিদ্ধ। জমহূরের নিকটে নির্দিষ্ট
কোন মাযহাবের তাক্বলীদ করা জায়েয নয়। বরং ইজতিহাদ ওয়াজিব। তাক্বলীদের
বিদ‘আত হিজরী চতুর্থ শতাব্দীতে জন্মলাভ করেছে’।[2]
মুহাদ্দিছ
ফাখের (রহঃ) বলেছেন, ‘নাজাত প্রত্যাশীর জন্য আবশ্যক হ’ল যে, প্রথমে কুরআন ও
সুন্নাহ অনুযায়ী নিজের আক্বীদা সমূহকে ঠিক করবে। আর এ ব্যাপারে কারো কথা ও
কাজের দিকে অবশ্যই ভ্রূক্ষেপ করবে না’।[3]
উপরন্তু
তিনি বলেছেন, ‘আহলে সুন্নাতের সকল মাযহাবে হক বিদ্যমান রয়েছে এবং সকল
মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা হকের কিছু না কিছু অংশ পেয়েছেন। কিন্তু আহলেহাদীছের
মাযহাব অন্য সব মাযহাবের চেয়ে বেশী হকের উপরে আছে’।[4]
জ্ঞাতব্য : আল্লামা মুহাম্মাদ ফাখের (রহঃ)-এর মৃত্যু ১১৬৪ হিজরীর অনেক পরে দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ ক্বাসেম নানূতুবী (জন্ম ১২৪৮ হিঃ) এবং ব্রেলী মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আহমাদ রেযা খান ব্রেলভী (জন্ম ১২৭২ হিঃ) ছাহেব জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
(১৫) শায়খ ইমাম ছালেহ বিন মুহাম্মাদ আল-উমরী আল-ফাল্লানী (মৃঃ ১২১৮ হিঃ) তাক্বলীদের খন্ডনে একটি শক্তিশালী গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর নাম হ’ল ‘ঈক্বাযু হিমামি উলিল আবছার লিল-ইকতিদা বি-সাইয়িদিল মুহাজিরীন ওয়াল আনছার ওয়া তাহযীরুহুম ‘আনিল ইবতিদা আশ-শায়ে‘ ফিল কুরা ওয়াল আমছার, মিন তাক্বলীদিল মাযাহিব মা‘আল হামিয়্যাতি ওয়াল আছাবিয়্যাতি বায়না ফুক্বাহাইল আ‘ছার’(ايقاظ همم أولى الأبصار للاقتداء بسيد المهاجرين والأنصار وتحذيرهم عن الابتداع الشائع فى القرى والأمصار، من تقليد المذاهب مع الحمية والعصبية بين فقهاء الأعصار) এটি পুরাটাই একটি গ্রন্থের নাম, যেটি ‘ঈক্বাযু হিমামি উলিল আবছার’ নামে প্রসিদ্ধ।
(১৬) শায়খ হুসায়েন বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব এবং শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব (রহঃ) বলেছেন,
عقيدة الشيخ رحمه الله.. اتباع ما دل عليه الدليل من كتاب الله تعالى، وسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم، وعرض أقوال العلماء على ذلك، فما وافق كتاب الله وسنة رسوله قبلناه وأفتينا به، وما خالف ذلك رددناه على قائله.
‘শায়খ
মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাবের আক্বীদা হ’ল, যার উপর কুরআন ও সুন্নাহর
দলীল আছে তার অনুসরণ করা এবং বিদ্বানদের উক্তি সমূহকে এর উপর (কুরআন ও
সুন্নাহ) পেশ করা। যেটি কুরআন ও সুন্নাহর অনুকূলে হবে সেটি আমরা গ্রহণ করি
এবং তার উপর ফৎওয়া দেই। আর যা তার (কুরআন ও সুন্নাহর) বিপরীত হয় সেটিকে
আমরা প্রত্যাখ্যান করি’।[5]
(১৭) আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ বিন সঊদ (সঊদী আরবের বাদশাহ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এক ব্যক্তি প্রসিদ্ধ মাযহাব সমূহের তাক্বলীদ করে না। এ ব্যক্তি কি মুক্তি পাবে? সুলতান আব্দুল আযীয বললেন,
من عبد الله وحده لا شريك له، فلم يستغث إلا بالله، ولم يدع إلا الله وحده، ولم يذبح إلا لله وحده، ولم ينذر إلا لله وحده، ولم يتوكل إلا عليه، ويذب عن دين الله، وعمل بما عرف من ذلك بقدر استطاعته، فهو ناج بلا شك، وإن لم يعرف هذه المذاهب المشهورة-
‘যে ব্যক্তি এক ও লা শরীক (শরীক বিহীন) আল্লাহর ইবাদত
করবে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে না। একমাত্র
আল্লাহর কাছেই দো‘আ করবে। আল্লাহ ব্যতীত কারো জন্য যবেহ করবে না এবং স্রেফ
আল্লাহর জন্যই মানত করবে। একমাত্র তাঁর উপরেই ভরসা করবে। আল্লাহর দ্বীনকে
রক্ষা করবে এবং এর মধ্য হ’তে যা জেনেছে তার উপর সাধ্যানুযায়ী আমল করবে।
এরূপ ব্যক্তি নিঃসন্দেহে মুক্তি পাবে। যদিও সে এ প্রসিদ্ধ মাযহাবগুলিকে না
চিনে’।[6]
(১৮) সঊদী আরবের
মুফতী শায়খ আব্দুল আযীয বিন বায (রহঃ) বলেছেন, وانا الحمد لله لست بمتعصب
ولكني احكم الكتاب والسنة وابني فتاواي علي ما قاله الله ورسوله، لا علي
تقليد الحنابلة ولا غيرهم- ‘আল-হামদুলিল্লাহ আমি গোঁড়া নই। কিন্তু আমি
কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী ফায়ছালা দেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর আমার
ফৎওয়া সমূহের ভিত্তি নির্মাণ করি। হাম্বলী বা অন্যদের তাক্বলীদের উপরে
নয়’।[7]
(১৯) ইয়েমেনের
প্রসিদ্ধ সালাফী আলেম শায়খ মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদিঈ (রহঃ)
বলেছেন,التقليد حرام لا يجوز لمسلم ان يقلد في دين الله ‘তাক্বলীদ হারাম।
কোন মুসলমানের জন্য আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে কারো তাক্বলীদ করা জায়েয নয়’।[8]
শায়খ
মুক্ববিল (রহঃ) আরো বলেছেন, فالتقليد لا يجوز والذين يبيحون تقليد العامي
للعالم نقول لهم اين الدليل، ‘তাক্বলীদ জায়েয নয়। যারা সাধারণ মানুষের জন্য
আলেমের তাক্বলীদ করার বৈধতা দেন তাদেরকে আমরা বলি, (এর) দলীল কোথায়’?[9]
শায়খ
মুক্ববিল বিন হাদী (রহঃ) ছাত্রদেরকে নছীহত করেছেন,نصيحتي لطلبة العلم:
الابتعاد عن التقليد قال الله سبحانه وتعالي ولا تقف ما ليس لك به علم
‘ছাত্রদের জন্য আমার নছীহত হ’ল, তাক্বলীদ থেকে দূরে অবস্থান করা। আল্লাহ
তা‘আলা বলেছেন, ‘তার পিছে ছুটবে না যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই’।[10]
(২০) মদীনা ত্বাইয়েবার নির্ভেজাল আরবী সালাফী শায়খ মুহাম্মাদ বিন হাদী বিন আলী আল-মাদখালী হাফিযাহুল্লাহ তাক্বলীদের খন্ডনে ‘আল-ইক্বনা‘ বিমা জা-আ ‘আন আইম্মাতিদ দাওয়াহ মিনাল আক্বওয়াল ফিল-ইত্তিবা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। আমি যখন শায়খের বাসায় গিয়েছিলাম তখন তিনি নিজ হাতে এই গ্রন্থটি আমাকে দিয়েছিলেন। আল-হামদুলিল্লাহ।
এ জাতীয় আরো অনেক উদ্ধৃতি রয়েছে। যেগুলি দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, তাক্বলীদকে প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে স্বর্ণ যুগে ইজমা ছিল এবং পরে জমহূরের এই মাসলাক, মাযহাব ও গবেষণা হ’ল যে, তাক্বলীদ জায়েয নয়।
জ্ঞাতব্য-১ : ইমাম খত্বীব বাগদাদী (রহঃ) লিখেছেন,
أَمَا مَنْ يَسُوغُ لَهُ التَّقْلِيدُ فَهُوَ الْعَامِّيُّ: الَّذِي لَا يَعْرِفُ طُرُقَ الْأَحْكَامِ الشَّرْعِيَّةِ، فَيَجُوزُ لَهُ أَنْ يُقَلِّدَ عَالِمًا، وَيَعْمَلَ بِقَوْلِهِ قَالَ اللهُ تَعَالَى: فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ،
‘যার
জন্য তাক্বলীদ জায়েয আছে সে এমন সাধারণ মানুষ, যে শরী‘আতের বিধি-বিধানের
দলীলসমূহ জানে না। তার জন্য কোন আলেমের তাক্বলীদ করা জায়েয। সে আল্লাহর
বাণী ‘তোমরা জ্ঞানীদের কাছে জিজ্ঞেস কর। যদি তোমরা না জানো’-এর উপর আমল
করবে।[11]
হাফেয ইবনু আব্দিল বার্র
বলেছেন,وَهَذَا كُلُّهُ لِغَيْرِ الْعَامَّةِ؛ فَإِنَّ الْعَامَّةَ لَا
بُدَّ لَهَا مِنْ تَقْلِيدِ عُلَمَائِهَا عِنْدَ النَّازِلَةِ تَنْزِلُ
بِهَا؛ لِأَنَّهَا لَا تَتَبَيَّنُ مَوْقِعَ الْحُجَّةِ وَلَا تَصِلُ
لِعَدَمِ الْفَهْمِ إِلَى عِلْمِ ذَلِكَ، ‘এসব (তাক্বলীদের নিষেধাজ্ঞা)
সাধারণ জনগণ ব্যতীত অন্যদের (আলেমদের) জন্য। কেননা কোন মাসআলা সামনে আসলে
সাধারণ জনগণ অবশ্যই আলেমদের তাক্বলীদ করবে। কেননা তার কাছে দলীল সুস্পষ্ট
হয়নি। আর বুঝ না থাকার কারণে সে এর ইলম পর্যন্ত পেŠঁছতে পারে না’।[12]
এ ধরনের উক্তি সমূহ অন্যান্য কতিপয় আলেমেরও আছে। যার সারাংশ এই যে, সাধারণ মানুষ (জাহেল) আলেমের নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করে তার উপর আমল করবে। আর এটা ‘তাক্বলীদ’!!
আরয হ’ল যে, সাধারণ মানুষের (জাহেল) আলেমের কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করা সম্পূর্ণরূপে সঠিক। কিন্তু পূর্বে বরাতসহ উল্লেখ করা হয়েছে যে, এটি তাক্বলীদ নয় (বরং ইত্তিবা ও ইক্তিদা)। একে তাক্বলীদ বলা ভুল।
সাধারণ মানুষ দু’টি ইজতিহাদ করে-
(১) সে ছহীহ আক্বীদাসম্পন্ন আহলে সুন্নাতের আলেমকে নির্বাচন করে। যদি সে দুর্ভাগ্যবশতঃ কোন বিদ‘আতী আলেমকে নির্বাচন করে নেয় তাহ’লে ছহীহ বুখারীর হাদীছ فيضلون ويضلون ‘তারা নিজেরা বিভ্রান্ত হবে ও অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করবে’ (বুখারী হা/৭৩০৭)-এর আলোকে গোমরাহ হ’তে পারে।
(২) সে
ছহীহ আক্বীদাসম্পন্ন আহলে সুন্নাতের আলেমের নিকটে গিয়ে মাসআলা জিজ্ঞাসা
করে যে, আমাকে দলীল দ্বারা জবাব দিন। সাধারণ মানুষের এটিই হ’ল ইজতিহাদ
(প্রচেষ্টা)।[13]
সাধারণ মানুষ দ্বারা
উদ্দেশ্য হ’ল,الصّرْف الْجَاهِل الَّذِي لَا يعرف مَعَاني النُّصُوص
وَالْأَحَادِيث وتأويلاتها ‘নিরেট মূর্খ যে নুছূছ ও হাদীছ সমূহের অর্থ এবং
এগুলির ব্যাখ্যা জানে না’।[14]
সাধারণ মানুষ যদি জঙ্গলে থাকে এবং কেবলার দিক তার জানা না থাকে, তবে সে ছালাত আদায় করার জন্য চেষ্টা (ইজতিহাদ) করবে।
একজন সাধারণ মানুষ যদি (যেমন দেওবন্দী) স্বীয় মৌলভী, যেমন- ইউনুস নো‘মানী (দেওবন্দী)-এর নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করে তার উপর আমল করে তবে কেউই এটা বলে না যে, এ সাধারণ মানুষটি ইউনুস নো‘মানীর মুক্বাল্লিদ হয়ে গেছে এবং এখন সে হানাফী নয় বরং ইউনুসী!
জ্ঞাতব্য-২ : খত্বীব বাগদাদী, ইবনু আব্দিল বার্র এবং অন্যরা আলেমদের জন্য তাক্বলীদ না জায়েয বলেছেন। এর বিপরীতে দেওবন্দী ও ব্রেলভী আলেমগণ এটি বলে বেড়ান যে, আলেমের উপরেও তাক্বলীদ ওয়াজিব। একারণেই তাদের নামসর্বস্ব আলেমদেরকেও মুক্বাল্লিদ বলা হয়।
জ্ঞাতব্য-৩ : কতিপয় আলেমের নামের আগে-পিছে হানাফী, শাফেঈ, মালেকী ও হাম্বলী শব্দ যুক্ত থাকে। যার দ্বারা কতিপয় ব্যক্তি এই দলীল গ্রহণ করে যে, এসব আলেম মুক্বাল্লিদগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই দলীল গ্রহণ বাতিল হওয়ার কতিপয় দলীল নিম্নরূপ-
(১) হানাফী ও শাফেঈ আলেমগণ স্বয়ং কঠিনভাবে তাক্বলীদকে খন্ডন করে রেখেছেন।[15]
(২)
এই আলেমদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা তাক্বলীদকে অস্বীকার করতেন। শাফেঈদের
আলেম আবূ বকর আল-ক্বফাল, আবূ আলী ও ক্বাযী হুসায়েন থেকে বর্ণিত আছে যে,
তারা বলেছেন,لَسْنَا مُقَلِّدَيْنِ لِلشَّافِعِيِّ، بَلْ وَافَقَ رَأْيُنَا
رَأْيَهُ ‘আমরা শাফেঈর মুক্বাল্লিদ নই। বরং আমাদের মত তাঁর মতের সাথে মিলে
গেছে’।[16]
আলেমগণ স্বয়ং ঘোষণা করছেন যে, আমরা মুক্বাল্লিদ নই। আর মুক্বাল্লিদরা চেচামেচি করছেন যে, এই আলেমগণ অবশ্যই মুক্বাল্লিদ। سُبْحَانَكَ هَذَا بُهْتانٌ عَظِيمٌ
(৩) কোন নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে এ উক্তি প্রমাণিত নয় যে, انا مقلد ‘আমি মুক্বাল্লিদ’!!
জ্ঞাতব্য-৪ : কতিপয় আলেমকে ত্বাবাক্বাতুশ শাফেঈইয়া, ত্বাবাক্বাতুল হানাফিইয়া, ত্বাবাক্বাতুল মালিকিইয়া, ত্বাবাক্বাতুল হানাবিলাহ-এ উল্লেখ করা হয়েছে। এটি এর দলীল নয় যে, এ আলেমগণ মুক্বাল্লিদ ছিলেন।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) ত্বাবাক্বাতুল হানাবিলাহ (১/২৮) ও ত্বাবাক্বাতুল মালিকিইয়া (আদ-দীবাজুল মুযাহ্হাব, পৃঃ ৩২৬, জীবনী ক্রমিক নং ৪৩৭) গ্রন্থে উল্লেখিত আছেন। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) ত্বাবাক্বাতুল মালিকিইয়া ও ত্বাবাক্বাতুল হানাবিলাহ-তে উল্লেখিত আছে। এই দু’জন ইমামও কি মুক্বাল্লিদদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন? আসল কারণ হ’ল, উস্তাদী-শাগরেদী কিংবা নিজেদের নাম বাড়ানো ইত্যাদির জন্য এই আলেমদেরকে ত্বাবাক্বাতের গ্রন্থসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি তাদের মুক্বাল্লিদ হওয়ার দলীল নয়। এই দীর্ঘ ভূমিকার পরে এখন মাস্টার আমীন উকাড়বী ছাহেবের ‘তাহক্বীক্ব মাসআলায়ে তাক্বলীদ’ পুস্তিকার জবাব পেশ করা হ’ল। সূচনাতে মাস্টার ছাহেবের ইবারতের ফটো এবং তারপর ধারাবাহিক ভাবে জবাবসমূহ লেখা হয়েছে। ওয়াল-হামদুলিল্লাহ।
আমীন উকাড়বীর দশটি মিথ্যাচার
(১)
‘তাহক্বীক্ব’ শব্দটি ‘তাক্বলীদ’-এর বিপরীতার্থক। যখন তাহক্বীক্ব হবে তখন
তাক্বলীদ খতম হয়ে যাবে। তাক্বলীদ তখনই আসে যখন তাহক্বীক্ব হয় না। এক গোঁড়া
দেওবন্দী মৌলভী ইমদাদুল হক্ব শুয়ূবী (ফাযেলে জামে‘আতুল উলূম আল-ইসলামিয়া,
আল্লামা বিন্নূরী টাউন, করাচী) পরিস্কার লিখেছেন, حققوا ولا
تقلدوا‘তাহক্বীক্ব কর, তাক্বলীদ কর না’।[17]
প্রতীয়মান হ’ল যে, ‘তাক্বলীদ’ তাহক্বীক্বের বিপরীত। আল-হামদুলিল্লাহ।
তাহক্বীক্ব ও তাক্বলীদ একে অপরের বিপরীতার্থক। তাহক্বীক্বের মূল হ’ল ‘হক’। যার অর্থ, প্রমাণিত ও বিশুদ্ধ কথা ইত্যাদি। আর ‘তাহক্বীক্ব’-এর অর্থ প্রমাণ করা, ছহীহ বক্তব্য পর্যন্ত পেŠঁছা। অথচ ‘তাক্বলীদ’ তার একেবারেই বিপরীত- অপ্রমাণিত বক্তব্যসমূহকে মানা এবং আপন করে নেয়া।
(২) মুহাম্মাদ আমীন ছফদর ছাহেব ‘হায়াতী’ দেওবন্দীদের প্রসিদ্ধ তার্কিক ছিলেন। লেখক তার বিস্তারিত জবাব ‘আমীন উকাড়বী কা তা‘আকুব’, ‘তাহক্বীক্ব জুযউ রফ‘ইল ইয়াদায়েন’ এবং ‘তাহক্বীক্ব জুযউল ক্বিরা‘আত লিল-বুখারী’-তে লিখেছেন। উকাড়বী ছাহেবের মিথ্যাচার ও অপবাদগুলির উপর আলাদা গ্রন্থ সংকলন করার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে তার দশটি মিথ্যাচার পেশ করা হ’ল-
(১) আমীন উকাড়বী বলেছেন, ‘এর রাবী আহমাদ বিন সাঈদ দারেমী মুজাসসিম্মাহ ফিরক্বার বিদ‘আতী’।[18]
পর্যালোচনা :
ইমাম আহমাদ বিন সাঈদ আদ-দারেমী (রহঃ)-এর জীবনী ‘তাহযীবুত তাহযীব’-এ
(১/৩১-৩২) ও অন্য গ্রন্থে উল্লেখ আছে। তিনি ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিম
প্রভৃতির রাবী এবং সর্বসম্মতিক্রমে নির্ভরযোগ্য। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল
(রহঃ) তাঁর প্রশংসা করেছেন। হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেছেন, ثقة حافظ
তিনি নির্ভরযোগ্য, (হাদীছের) হাফেয’।[19]
তার উপর কোন মুহাদ্দিছ বা ইমাম বা আলেম মুজাস্সিম্মাহ ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপবাদ দেননি।
(২) উকাড়বী বলেছেন, ‘রাসূলে (ছাঃ) বলেছেন, لَا جُمُعَةَ إِلَّا بِخُطْبَةٍ ‘খুতবা ব্যতীত কোন জুম‘আ নেই’।[20]
পর্যালোচনা : এ শব্দের সাথে এই হাদীছটি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে অকাট্যরূপে সাব্যস্ত নেই। মালেকীদের অনির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ‘আল-মুদাওয়ানাতুল কুবরা’-তে ইবনু শিহাবের (আয-যুহরী) দিকে সম্পর্কিত একটি কথা লেখা হয়েছে,بَلَغَنِي أَنَّهُ لَا جُمُعَةَ إلَّا بِخُطْبَةٍ فَمَنْ لَمْ يَخْطُبْ صَلَّى الظُّهْرَ أَرْبَعًا ‘আমার কাছে সংবাদ পেŠঁছেছে যে, খুতবা ব্যতীত কোন জুম‘আ নেই। আর যে খুতবা দেয়নি সে চার রাক‘আত যোহর পড়বে’ (১/১৪৭)।
এই অপ্রমাণিত বক্তব্যকে উকাড়বী ছাহেব সরাসরি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দিকে সম্পর্কিত করেছেন।
(৩)
উকাড়বী বলেছেন, ‘বেরাদারানে ইসলাম! আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে কাফেরদের
মুকাবিলায় আমাদের নাম মুসলিম রেখেছেন। তেমনি আহলেহাদীছদের বিপরীতে হযরত
মুহাম্মাদ (ছাঃ) আমাদের নাম আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত রেখেছেন’।[21]
পর্যালোচনা : কোন একটি হাদীছেও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আহলে হাদীছদের বিপরীতে দেওবন্দীদের নাম ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত’ রাখেননি। এ বিষয়টি হক্বপন্থী সাধারণ আলেমদের জানা আছে যে, দেওবন্দী আলেমগণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত নন। বরং ছূফী, অদ্বৈতবাদী এবং গোঁড়া মুক্বাল্লিদ।
(৪) উকাড়বী
ছিহাহ সিত্তার কেন্দ্রীয় রাবী ইবনু জুরায়েজ সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটাও
স্মতর্ব্য যে, এই ইবনু জুরায়েজ সেই ব্যক্তি যিনি মক্কায় ‘মুত‘আ’র (সাময়িক
সময়ের জন্য চুক্তিভিত্তিক বিবাহ) সূচনা করেন এবং নয়জন মহিলার সাথে ‘মুত‘আ’
করেন’ (তাযকিরাতুল হুফ্ফায)।[22]
পর্যালোচনা : যাহাবীর ‘তাযকিরাতুল হুফ্ফায’ (১/১৬৯-৭১) গ্রন্থে ইবনু জুরায়েজের জীবনী উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘মুত‘আ বিবাহের সূচনা করা’র কোন উল্লেখ নেই। এটা উকাড়বীর নির্জলা মিথ্যাচার। বাকী থাকল এ কথাটি যে, ইবনু জুরায়েজ নয়জন মহিলার সাথে মুত‘আ করেছিলেন। তাযকিরাতুল হুফ্ফায (পৃঃ ১৭০-১৭১)-এর বরাত অনুসারে। এটিও প্রমাণিত নয়। কেননা ইমাম যাহাবী ইবনু আব্দিল হাকাম পর্যন্ত কোন সনদ বর্ণনা করেননি।
সরফরায খান ছফদর দেওবন্দী লিখেছেন, ‘সনদবিহীন কথা হুজ্জাত হ’তে পারে না’।[23]
(৫)
একটি প্রত্যাখ্যাত বর্ণনা সম্পর্কে উকাড়বী ছাহেব লিখেছেন, ‘কিন্তু
ত্বাহত্বাভীর (১/১৬০) পৃষ্ঠায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, মুখতার স্বয়ং এই
হাদীছটি হযরত আলী (রাঃ)-এর নিকট থেকে শ্রবণ করেছেন’।[24]
পর্যালোচনা : ত্বাহাভীর মা‘আনিল আছার (বৈরূত ছাপা, ১/২১৯; এইচ এম সাঈদ কোম্পানীর নুসখা, আদব মনযিল, পাকিস্তান, চক করাচী, ১/১৫০) গ্রন্থে লিখিত আছে,
عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَالَ قَالَ عَلِي رَضِيَ اللهُ عَنْهُ،
এ কথা সাধারণ ছাত্রদেরও জানা আছে যে, قَالَ (তিনি বলেছেন) এবং سَمِعْتُ (আমি শ্রবণ করেছি)-এর মাঝে বিশাল পার্থক্য রয়েছে। قَالَ শব্দটি শ্রবণের ঘোষণার অত্যাবশ্যকীয় দলীল হয় না। জুযউল ক্বিরাআত-এর একটি বর্ণনায় ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেছেন, قَالَ لَنَا أَبُو نُعَيْمٍ ‘আবূ নু‘আঈম আমাদেরকে বলেছেন’ (হা/৪৮)।
এ
বিষয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে উকাড়বী বলেছেন, ‘এই সনদে না বুখারী (রহঃ)-এর
সামা (শ্রবণ) আবূ নু‘আঈম থেকে আছে, আর ইবনু আবিল হাসানাও অপরিচিত’।[25]
(৬)
উকাড়বী বলেছেন, ‘আর অন্য ‘ছহীহ সনদে’ উক্তি আছে যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
لَا يَقْرَأُ خَلْفَ الْإِمَامِ ‘ইমামের পিছে কোন ব্যক্তি ক্বিরাআত পড়বে
না’।[26]
পর্যালোচনা : এ শব্দে মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বায় রাসূল (ছাঃ)-এর কোন হাদীছ বিদ্যমান নেই। বরং এটি জাবের (রাঃ)-এর উক্তি। যাকে উকাড়বী ছাহেব মারফূ‘ হাদীছ বানিয়ে নিয়েছেন।
(৭) উকাড়বী বলেছেন, ‘হযরত ওমর (রাঃ) হযরত
নাফে‘ এবং আনাস বিন সীরীনকে বলেছেন, تَكْفِيْكَ قِرَاءَةُ الْإِمَامِ
‘তোমার জন্য ইমামের ক্বিরাআতই যথেষ্ট’।[27]
পর্যালোচনা : আনাস বিন সীরীন (রহঃ) ৩৩ বা ৩৪ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেছেন।[28] আর ওমর (রাঃ) ২৩ হিজরীতে শহীদ হয়েছেন।[29] নাফে‘ ওমর (রাঃ)-কে পাননি।[30] প্রতীয়মান হ’ল যে, আনাস বিন সীরীন এবং নাফে‘ উভয়ই আমীরুল মুমিনীন ওমর (রাঃ)-এর যুগে জীবিতই ছিলেন না। তাহ’লে ‘বলেছেন’ সরাসরি মিথ্যাচার। যা উকাড়বী ছাহেব বানিয়ে নিয়েছেন।
(৮) উকাড়বী বলেছেন,
‘তাক্বলীদে শাখছীকে অস্বীকার করা রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলে শুরু হয়েছে। এর আগে
তাক্বলীদকে অস্বীকার করা হ’ত না; বরং সবাই ‘তাক্বলীদে শাখছী’ করত’।[31]
পর্যালোচনা :
আহমাদ শাহ দুর্রানীকে পরাজিতকারী মোগল বাদশাহ আহমাদ শাহ বিন নাছিরুদ্দীন
মুহাম্মাদ শাহ (শাসনকাল : ১১৬১-১১৬৭ হিঃ)-এর যুগে মৃত্যুবরণকারী শায়খ
মুহাম্মাদ ফাখের ইলাহাবাদী (মৃঃ ১১৬৪ হিঃ) বলেছেন যে, ‘জমহূর-এর নিকটে কোন
নির্দিষ্ট মাযহাবের তাক্বলীদ করা জায়েয নয়। বরং ইজতিহাদ ওয়াজিব। হিজরী
চতুর্থ শতকে তাক্বলীদের বিদ‘আত সৃষ্টি হয়েছে’।[32]
শায়খুল
ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) ও অন্যরা তাক্বলীদে শাখছীর বিরোধিতা করেছেন।
ইমাম ইবনু হাযম ঘোষণা করেছেন যে, وَالتَّقْلِيْدُ حَرَامٌ ‘তাক্বলীদ
হারাম’।[33]
এঁরা সবই রাণী ভিক্টোরিয়ার বহু আগে মারা গেছেন।
(৯) উকাড়বী বলেছেন, ‘এটাই কারণ হ’ল যে, সকল মুহাদ্দিছ ইমাম চতুষ্টয়ের কারো না কারোর মুক্বাল্লিদ’।[34]
পর্যালোচনা :
শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (মৃঃ ৭২৮ হিঃ)-কে মুহাদ্দিছীনে কেরামের
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, هَلْ كَانَ هَؤُلَاءِ مُجْتَهِدِيْنَ لَمْ
يُقَلِّدُوْا أَحَدًا مِنْ الْأَئِمَّةِ؛ أَمْ كَانُوْا مُقَلِّدِيْنَ؟
‘এরা কি মুজতাহিদ ছিলেন? তারা কোন ইমামের তাক্বলীদ করেননি, নাকি তারা
মুক্বাল্লিদ ছিলেন?।[35]
শায়খুল ইসলাম জবাবে বলেন,
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، أَمَّا الْبُخَارِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ فَإِمَامَانِ فِي الْفِقْهِ مِنْ أَهْلِ الِاجْتِهَادِ. وَأَمَّا مُسْلِمٌ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَه وَابْنُ خُزَيْمَةَ وَأَبُو يَعْلَى وَالْبَزَّارُ وَنَحْوُهُمْ فَهُمْ عَلَى مَذْهَبِ أَهْلِ الْحَدِيثِ. لَيْسُوا مُقَلِّدِينَ لِوَاحِدٍ بِعَيْنِهِ مِنَ الْعُلَمَاءِ وَلَا هُمْ مِنَ الْأَئِمَّةِ الْمُجْتَهِدِينَ عَلَى الْإِطْلَاقِ-
‘সমস্ত
প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। ইমাম বুখারী ও আবুদাঊদ
ফিক্বহের ইমাম ও মুজতাহিদ (মুত্বলাক্ব) ছিলেন। পক্ষান্তরে ইমাম মুসলিম,
তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে খুযায়মাহ, আবু ই‘য়ালা, বাযযার প্রমুখ
আহলেহাদীছ মাযহাবের উপরে ছিলেন। তারা কোন নির্দিষ্ট আলেমের মুক্বাল্লিদ
ছিলেন না। আর তারা মুজতাহিদ মুত্বলাক্বও ছিলেন না’।[36]
এ মর্মের এ বক্তব্যটি নিমেণাক্ত গ্রন্থসমূহেও আছে- জাযায়েরী রচিত ‘তাওজীহুন নাযার ইলা উছূলিল আছার’ (পৃঃ ১৮৫), সরফরায খান ছফদর দেওবন্দী রচিত ‘আল-কালামুল মুফীদ ফী ইছবাতিত তাক্বলীদ’ (পৃঃ ১২৭, ছাপা : ১৪১৩ হিঃ), ‘মা তামাস্সু ইলায়হিল হাজাহ লি-মাই য়ুত্বালিউ সুনান ইবনে মাজাহ’ (পৃঃ ২৬)।
জ্ঞাতব্য : শায়খুল ইসলামের হাদীছের এই বড় ইমামদের সম্পর্কে এটি বলা যে, ‘মুজতাহিদ মুত্বলাক্ব ছিলেন না’ ভুল। আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন। আমীন!
(১০)
উকাড়বী ছাহেব ইমাম আত্বা বিন আবী রাবাহ (রহঃ) সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি
বলেছি, আদতেও এটি সাব্যস্ত নেই যে, আত্বার সাথে দু’শ ছাহাবীর সাক্ষাৎ
হয়েছিল। আর এটা তো একেবারেই ভুল যে, ইবনু যুবায়ের (রাঃ)-এর সময় পর্যন্ত কোন
একটি শহরে দু’শ ছাহাবী বিদ্যমান ছিলেন’।[37]
অন্য
এক জায়গায় এই উকাড়বী ছাহেবই ঘোষণা করেছেন যে, ‘মক্কা মুকার্রামাও ইসলাম
এবং মুসলমানদের কেন্দ্র। হযরত আত্বা বিন আবী রাবাহ এখানকার মুফতী। দু’শ
ছাহাবীর সাথে সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন’।[38]
পর্যালোচনা : এ দু’টি ইবারতের মধ্যে একটি ইবারত একেবারেই মিথ্যা। উকাড়বী ছাহেবের দশটি মিথ্যাচারের বর্ণনা শেষ হ’ল।
[চলবে]
[1]. নুযহাতুল খাওয়াত্বির ৬/৩৫০, জীবনী ক্রমিক নং ৬৩৬।
[2]. রিসালাহ নাজাতিয়াহ, পৃঃ ৪১-৪২।
[3]. ঐ, পৃঃ ১৭।
[4]. ঐ, পৃঃ ৪১।
[5]. আদ-দুরারুস সানিইয়া, ১/২১৯-২২০, অন্য সংস্করণ, ৪/১২-১৪; আল-ইক্বনা‘ বিমা জা-আ আন আইম্মাতিদ দাওয়াহ মিনাল আক্বওয়ালি ফিল-ইত্তিবা‘, পৃঃ ২৭।
[6]. আদ-দুরারুস সানিইয়া ২/১৭০-১৭৩ নতুন সংস্করণ, আল-ইক্বনা‘, পৃঃ ৩৯-৪০।
[7]. আল-মাজাল্লাহ, সংখ্যা ৮০৬, ২৫শে ছফর, ১৪১৬ হিঃ, পৃঃ ২৩; আল-ইক্বনা‘, পৃঃ ৯২।
[8]. তুহফাতুল মুজীব আলা আসইলাতিল হাযির ওয়াল গারীব, পৃঃ ২০৫।
[9]. ঐ, পৃঃ ২৬।
[10]. গারাতিল আশরিত্বাহ ‘আলা আহলিল জাহল ওয়াস-সাফসাতাহ, পৃঃ ১১-১২।
[11]. আল-ফক্বীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ, ২/৬৮।
[12]. জামে‘উ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাযলিহি, ২/১১৪; আর-রদ্দু ‘আলা মান উখলিদা ইলাল ‘আরয, পৃঃ ১২৩।
[13]. আরো দ্রঃ ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ২০/২০৪; ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন, ৪/২১৬; ঈক্বাযু হিমামি উলিল আবছার, পৃঃ ৩৯।
[14]. ঈক্বাযু হিমাম-এর বরাতে খাযানাতুর রিওয়াত, পৃঃ ৩৮।
[15]. [দ্রঃ উদ্ধৃতি-৯ (আবূ জা‘ফর ত্বাহাভী), উদ্ধৃতি-১০ (আয়নী), উদ্ধৃতি-১১, (যায়লাঈ) ও অন্যরা]।
[16]. আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী, আন-নাফে‘উল কাবীর লি-মাই য়ুত্বালি‘উ আল-জামে‘ আছ-ছাগীর/ত্বাবাক্বাতুল ফুক্বাহা, পৃঃ ৭; তাক্বরীরাতুর রাফেঈ, ১/১১; আত-তাক্বরীর ওয়াত-তাহবীর, ৩/৪৫৩।
[17]. হাক্বীক্বাতে হাক্বীক্বাতুল ইলহাদ, পৃঃ ২৩১, প্রকাশক: ইসলামী কুতুবখানা, আল্লামা বিন্নূরী টাউন, করাচী-৫।
[18]. মাস‘ঊদী ফিরক্বা কে ই‘তিরাযাত’ কে জওয়াবাত, পৃঃ ৪১-৪২; তাজাল্লিয়াতে ছফদর, প্রকাশক : জমঈয়তে ইশা‘আতুল উলূম আল-হানাফিয়া, ২/৩৪৮-৩৪৯।
[19]. তাক্বরীবুত তাহযীব, জীবনী ক্রমিক নং ৩৯।
[20]. মাজমূ‘আ রাসায়েল, ২/১৬৯, ছাপা : জুন ১৯৯৩ ইং।
[21]. মাজমূ‘আ রাসায়েল, ৪/৩৬, প্রকাশ : নভেম্বর ১৯৯৫ ইং।
[22]. মাজমূ‘আ রাসায়েল, ৪/১৬৪।
[23]. আহসানুল কালাম, ১/৩২৭ দ্বাদশ সংস্করণ।
[24]. জুযউল ক্বিরাআত লিল-বুখারী, উকাড়বীর পরিবর্তনসহ, পৃঃ ৫৮, হা/৩৮-এর আলোচনা দ্রঃ।
[25]. জুযউল ক্বিরাআত, অনূদিত, পৃঃ ৬৪।
[26]. জুযউল ক্বিরাআত, অনুবাদ ও ব্যাখ্যা : আমীন উকাড়বী, পৃঃ ৬৩, হা/৪৭-এর আলোচনা দ্রঃ।
[27]. জুযউল ক্বিরাআত, উকাড়বী, পৃঃ ৬৬, হা/৫১ দ্রঃ।
[28]. তাহযীবুত তাহযীব, ১/৩৭৪।
[29]. তাক্বরীবুত তাহযীব, জীবনী ক্রমিক নং ৪৮৮৮।
[30]. হাফেয ইবনু হাজার, ইতহাফুল মাহারাহ, ১২/৩৮৬, হা/১৫৮১০-এর পূর্বে।
[31]. তাজাল্লিয়াতে ছফদর, ২/৪১০, ফায়ছালাবাদ ছাপা।
[32]. রিসালাহ নাজাতিয়া, পৃঃ ৪১, ৪২।
[33]. আন-নুবযাতুল কাফিয়া, পৃঃ ৭০, ৭১।
[34]. মাজমূ‘আ রাসায়েল, ৪/৬২, প্রথম প্রকাশ : ১৯৯৫ইং।
[35]. মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ২০/৩৯।
[36]. ঐ, ২০/৪০।
[37]. তাহক্বীক্ব মাসআলায়ে আমীন, পৃঃ ৪৪; মাজমূ‘আ রাসায়েল, ১/১৫৪, ছাপা : অক্টোবর ১৯৯১ইং।
[38]. নামাযে জানাযা মেঁ সূরায়ে ফাতিহা কী শারঈ হায়ছিয়াত, পৃঃ ৯; মাজমূ‘আহ রাসায়েল, ১/২৬৫।