পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩  পর্ব ৪ । শেষ পর্ব ।

[মূল বই পৃষ্ঠা ৮০ থেকে ৯১]

তাক্বলীদ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন ও তার জবাব

শেষে তাক্বলীদ এবং তাক্বলীদপন্থীদের সম্পর্কে কতিপয় মানুষের কিছু প্রশ্ন এবং তার জবাব পেশ করা হ’ল-

প্রশ্ন-১ : তাক্বলীদ কাকে বলে?

জবাব : অভিধান এবং উছূলে ফিক্বহ-এর আলোকে চোখ বন্ধ করে এবং চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই উম্মতের কোন ব্যক্তির দলীলবিহীন কথা মান্য করাকে তাক্বলীদ বলা হয়।

নব্য মুক্বাল্লিদদের কর্মপদ্ধতির আলোকে ‘কিতাব ও সুন্নাতের বিপরীত ও বিরোধী বক্তব্য’ মানাকে তাক্বলীদ বলা হয়। মুক্বাল্লিদগণ কুরআন ও হাদীছকে দলীল মনে করেন না। বরং তাদের নিকট স্রেফ ইমামের কথাই দলীল হয়ে থাকে। দারুল ইফতা ওয়াল ইরশাদ, নাযিমাবাদ, করাচী-এর মুফতী মুহাম্মাদ (দেওবন্দী) লিখেছেন, ‘মুক্বাল্লিদের জন্য স্বীয় ইমামের কথাই সবচেয়ে বড় দলীল’।[1]

প্রশ্ন-২ : হাদীছ মানাকে কি তাক্বলীদ বলে?

জবাব : হাদীছ মানাকে তাক্বলীদ বলে না; বরং ইত্তিবা বলা হয়। এর অর্থ, নবী করীম (ছাঃ)-এর হাদীছ মানা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করা। অসংখ্য ফক্বীহ লিখেছেন, নবী করীম (ছাঃ)-এর দিকে প্রত্যাবর্তন করা তাক্বলীদ নয়।

প্রশ্ন-৩ : ছিহাহ সিত্তাহ[2] (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবূদাঊদ, নাসাঈ এবং ইবনু মাজাহ) মানা এবং সেগুলির উপর আমল করা কি তাক্বলীদ নয়?

জবাব : জ্বি হাঁ, এটি তাক্বলীদ নয় বরং ইত্তিবা। ইত্তিবার দু’টি প্রকার রয়েছে- প্রথম : দলীলসহ ইত্তিবা করা। দ্বিতীয় : দলীলবিহীন ইত্তিবা করা। একে তাক্বলীদ বলা হয়। ইসলামী শরী‘আতে দলীলসহ ইত্তিবা কাম্য এবং দলীলবিহীন ইত্তিবা নিষিদ্ধ। ছিহাহ সিত্তাহ ও অন্যান্য হাদীছ গ্রন্থগুলির হাদীছ সমূহের উপর ঈমান ও আমল করা দলীল সহ ইত্তিবা।

প্রশ্ন-৪ : আলেমের কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করা কি তাক্বলীদ নয়?

জবাব : জি হাঁ, আলেমের কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করা তাক্বলীদ নয়। দেওবন্দী ও ব্রেলভী সাধারণ জনতা তাদের আলেমদের নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করে। যেমন- রশীদ আহমাদ দেওবন্দী তাদের আলেম, মৌলভী মুজীবুর রহমান-এর কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করেন। তাহ’লে কি দেওবন্দী আলেমগণ এটা বলবেন যে, রশীদ আহমাদ এখন মুজীবুর রহমানের মুক্বাল্লিদ হয়ে ‘মুজীবী’ হয়ে গেছেন?

যখন হানাফী ব্যক্তি স্বীয় মৌলভীর নিকট হ’তে মাসআলা জিজ্ঞেস করে হানাফীই (!) থেকে যায়, তখন এর উদ্দেশ্য স্পষ্ট যে, জিজ্ঞেস করাটা তাক্বলীদ নয়।

প্রশ্ন-৫ : আল্লাহ তা‘আলা কি আমাদেরকে হানাফী বা শাফেঈ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন?

জবাব : কখনো নয়। বরং আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাঁর এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্য করার হুকুম দিয়েছেন (আলে ইমরান ৩/৩২)

মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (মৃঃ ১০১৪ হিঃ) বলেছেন,

ومن المعلوم ان الله سبحانه ما كلف احدا ان يكون حنفيا او مالكيا او شافعيا او حنبليا بل كلفهم ان يعملوا بالكتاب والسنة ان كانوا علماء وان يقلدوا العلماء اذا كانوا جهلاء-

‘এটি জানা কথা যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা কাউকে বাধ্য করেননি এজন্য যে, সে হানাফী, মালেকী, শাফেঈ বা হাম্বলী হৌক। বরং তাদেরকে বাধ্য করেছেন এজন্য যে, তারা কিতাব ও সুন্নাত অনুযায়ী আমল করুক যদি তারা আলেম হয়। আর জাহিল হ’লে আলেমদের তাক্বলীদ করুক’।[3]

মোল্লা আলী ক্বারীর এই স্বীকারোক্তি থেকে প্রতীয়মান হ’ল যে- (ক) আল্লাহ তা‘আলা লোকদেরকে হানাফী ও শাফেঈ হওয়ার হুকুম দেননি। (খ) কিতাব ও সুন্নাতের অনুসরণ করতে হবে। (গ) জাহিলদের কর্তব্য হ’ল তারা আলেমদের নিকট থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করে তার উপর আমল করবে।

সতর্কীকরণ : মোল্লা আলী ক্বারী এখানে ‘তাক্বলীদ করুক’ শব্দটি ভুলভাবে ব্যবহার করেছেন। মাসআলা জিজ্ঞেস করা এবং তার উপর আমল করাকে তাক্বলীদ বলা হয় না। বরং ইত্তিবা ও ইক্তিদা বলা হয়। এজন্য ছহীহ শব্দ হল নিম্নরূপ- وأن يتبعوا العلماء إذا كانوا جهلاء- ‘যদি তারা জাহিল হয় তাহ’লে আলেমদের অনুসরণ করবে’।

প্রশ্ন-৬ : আলেমের কাছ থেকে কিভাবে মাসআলা জিজ্ঞেস করতে হবে?

জবাব : সর্বপ্রথম কিতাব ও সুন্নাতের আলেম খুঁজতে হবে। তারপর তাঁর কাছে গিয়ে বা যোগাযোগ করে আদব ও সম্মানের সাথে জিজ্ঞেস করতে হবে যে, এই মাসআলায় আমাকে আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হুকুম বলুন বা কুরআন ও হাদীছ হ’তে জবাব দিন বা দলীল সহ জবাব দিন।

প্রশ্ন-৭ : মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কি স্রেফ চারজন ইমামই গত হয়েছেন, নাকি অন্য ইমামও ছিলেন?

জবাব : মুসলিম উম্মাহর মধ্যে স্রেফ চারজন ইমামই গত হননি; বরং হাযারো ইমাম গত হয়েছেন। যেমন- সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব, ক্বাসেম বিন মুহাম্মাদ, উবায়দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ বিন উতবাহ, সালেম বিন আব্দুল্লাহ বিন উমর, হাসান বাছরী, সাঈদ বিন জুবায়ের, আওযাঈ, লায়েছ বিন সা‘দ, বুখারী, মুসলিম, ইবনু খুযায়মাহ, ইবনু হিববান, ইবনুল জারূদ প্রমুখ। আল্লাহ তাদের সকলের উপর রহম করুন!

প্রশ্ন-৮ : এই ইমাম চতুষ্টয়ের পূর্বে লোকেরা কার তাক্বলীদ করত?

জবাব : তাঁদের আগে লোকেরা কুরআন ও সুন্নাহর উপর আমল করত। কোন ধরনের তাক্বলীদ করত না।

প্রশ্ন-৯ : ইমামগণ কি নিজেদের তাক্বলীদ করার হুকুম দিয়েছেন?

জবাব : এই চারজন ইমাম কি নিজেদের তাক্বলীদ করার হুকুম দেননি। বরং কুরআন ও সুন্নাহর উপর আমল করার হুকুম দিয়েছেন।

প্রশ্ন-১০ : এঁরা কি নিজেদের তাক্বলীদ করতে জনগণকে নিষেধ করেছেন?

জবাব : জি হাঁ, এই চারজন ইমাম থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা তাক্বলীদ থেকে লোকদেরকে নিষেধ করেছেন।

প্রশ্ন-১১ : চার ইমাম কার মুক্বাল্লিদ ছিলেন?

জবাব : কেউ কারু মুক্বাল্লিদ ছিলেন না। তাঁরা কিতাব ও সুন্নাতের উপর আমল করতেন।

প্রশ্ন-১২ : সম্মানিত ইমাম চতুষ্টয় শ্রেষ্ঠ, নাকি খুলাফায়ে রাশেদীন? যখন উক্ত চারজন ইমামের তাক্বলীদ ওয়াজিব তখন চার খলীফার তাক্বলীদ কেন ওয়াজিব নয়?

জবাব : খুলাফায়ে রাশেদীন উক্ত ইমাম চতুষ্টয় এমনকি সকল উম্মত থেকে সর্বসম্মতিক্রমে শ্রেষ্ঠ। তবে না খুলাফায়ে রাশেদীনের তাক্বলীদ ওয়াজিব আর না অন্য কারো। হাদীছে খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের উপর আমল করার এবং তাদের অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যা দলীলভিত্তিক ইত্তিবা বা অনুসরণ। চার ইমামের তাক্বলীদ ওয়াজিব আখ্যা দেয়া একেবারেই বাতিল এবং প্রত্যাখ্যাত।

প্রশ্ন-১৩ : কুরআন মাজীদের সাত ক্বিরাআত এবং ফিক্বহী চার মাযহাব কি একই মর্যাদা রাখে?

জবাব : কুরআন মাজীদের সাত ক্বিরাআত রেওয়ায়াত হিসাবে নবী করীম (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত রয়েছে। পক্ষান্তরে ফিক্বহী চার মাযহাবের ভিতরের অনেক কিছু ইমামগণ এবং ইমামগণের অনুসারীদের রায়, ক্বিয়াস ও ইজতিহাদ সমূহকে শামিল করে। রায় ও রেওয়ায়াতের মাঝে আসমান ও যমীনের পার্থক্য। যেমন- ‘আলিফ’ একজন সত্যবাদী মানুষ। সে ‘বা’-এর কাছে গিয়ে তাকে বলছে যে, আমাকে তোমার পিতা বলেছেন যে, আমার ছেলেকে দ্রুত বাড়িতে আসতে বলো। এটি হ’ল রেওয়ায়াত। ‘বা’ তার রেওয়ায়াত মেনে যদি দ্রুত বাড়ি চলে যায় তাহ’লে ‘বা’ তার পিতার আনুগত্য করল। ‘আলিফ’-এর তো স্রেফ রেওয়ায়াতটি মানল। এই ‘আলিফ’-ই তার বন্ধু ‘বা’-কে বলছে যে, চলো বাযারে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করি। এটি ‘আলিফ’-এর রায় বা মতামত। এখন ‘বা’ মর্যি হ’ল সেটা মানবে অথবা মানবে না।

ইসলামী শরী‘আতে সত্যবাদী রাবী বা বর্ণনাকারীর রেওয়ায়াত মানার হুকুম রয়েছে। কিন্তু একজনের রায় বা মত মান্য করা অন্য ব্যক্তির জন্য যরূরী নয়। হানাফী আলেমগণ ইমাম শাফেঈ এবং অন্যদের রায় ও ইজতিহাদ সমূহ মানেন না। তারা স্রেফ নিজেদের মাযহাবের প্রদত্ত ফৎওয়াগুলিই গ্রহণ করার দাবীদার। ছহীহ সনদে প্রমাণিত ক্বিরাআত সমূহের কোন একটি ক্বিরাআত অস্বীকার করাও কুফরী। পক্ষান্তরে নবী ব্যতীত অন্য কারো ছহীহ সনদের রায়কে অস্বীকার করা না কুফরী আর না গোমরাহী। বরং জায়েয।

ছাহাবী ও তাবেঈগণের অসংখ্য প্রমাণিত এমন ফৎওয়া রয়েছে যেগুলি হানাফী আলেমগণ মানেন না। যেমন-

(ক) ইবনু ওমর (রাঃ) জানাযার ছালাতে প্রত্যেক তাকবীরের সময় হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন।[4]

(খ) ইবরাহীম নাখঈ ও সাঈদ বিন জুবায়ের উভয়েই (কাপড়ের) মোযার উপর মাসাহ করতেন।[5]

(গ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে প্রমাণিত আছে যে, তিনি ঈদের ছালাতে বার তাকবীর বলেছিলেন।[6]

(ঘ) ত্বাউস (রহঃ) তিন রাক‘আত বিতর পড়তেন। এর মাঝে বসতেন না। অর্থাৎ স্রেফ শেষ রাক‘আতেই তাশাহহুদের জন্য বসতেন।[7]

এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। যদি কোন একজন মুজতাহিদের কোন রায় না মানা ‘লা মাযহাবিয়াত’ হয় তাহ’লে দেওবন্দী ও ব্রেলভী আলেমগণ নিশ্চিতরূপে ‘লা মাযহাবী’। কেননা এরা ইমাম আবূ হানীফা ও ফিক্বহে হানাফী ব্যতীত অন্য মুজতাহিদদের রায় ও ফৎওয়া সমূহকে প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, ‘কিন্তু ইমাম ব্যতীত অন্য কারো উক্তির দ্বারা আমাদের উপর দলীল কায়েম করা বিবেক বর্জিত’।[8]

প্রশ্ন-১৪ : বুখারী ও মুসলিমের রাবী কি মুক্বাল্লিদ (তাক্বলীদকারী) ছিলেন?

জবাব : বুখারী ও মুসলিমের উছূলের (অর্থাৎ মৌলিক) রাবী নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য আলেমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কোন আলেমের তাক্বলীদ করা কিতাব, সুন্নাত, ইজমা ও আছারে সালাফে ছালেহীন দ্বারা প্রমাণিত নেই। ইমাম ইবনু হাযম ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিমের অসংখ্য রাবীর নাম লিখেছেন, যারা তাক্বলীদ করতেন না। যেমন- আহমাদ বিন হাম্বল, ইসহাক্ব বিন রাহাওয়াইহ, আবূ উবায়েদ, আবূ খায়ছামাহ, মুহাম্মাদ বিন ইয়াহ্ইয়া আয-যুহলী, আবূবকর বিন আবী শায়বাহ, উছমান বিন আবী শায়বাহ, সাঈদ বিন মানছূর, কুতায়বা, মুসাদ্দাদ, আল-ফযল বিন দুকায়েন, মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না, ইবনু নুমায়ের, মুহাম্মাদ ইবনুল ‘আলা, সুলায়মান বিন হারব, ইয়াহ্ইয়া বিন সাঈদ আল-ক্বাত্তবান, আব্দুর রহমান বিন মাহদী, আব্দুর রাযযাক, ওয়াকী‘, ইয়াহ্ইয়া বিন আদম, ইবনুল মুবারক, মুহাম্মাদ বিন জা‘ফর, ইসমাঈল বিন উলাইয়াহ, ‘আফ্ফান, আবূ ‘আছেম আন-নাবীল, লায়েছ বিন সা‘দ, আওযাঈ, সুফিয়ান ছাওরী, হাম্মাদ বিন যায়েদ, হুশায়েম, ইবনু আবী যি’ব প্রমুখ।[9]

ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিম এবং ছহীহ হাদীছ সমূহের রাবীগণের মধ্য হ’তে কোন একজন রাবীরও মুক্বাল্লিদ হওয়া প্রমাণিত নেই।

প্রশ্ন-১৫ : আহলেহাদীছ কাকে বলে?

জবাব : দু’ ধরনের লোকদেরকে আহলেহাদীছ বলা হয়। (ক) মুহাদ্দিছীনে কেরাম (সম্মানিত মুহাদ্দিছগণ)। (খ) হাদীছের অনুসরণকারী। (অর্থাৎ মুহাদ্দিছীনে কেরামের অনুসারী সাধারণ জনতা)।[10]

মুহাদ্দিছীনে কেরাম তাক্বলীদ করতেন না।[11]

আল্লামা সুয়ূত্বী লিখেছেন,لَيْسَ لِأَهْلِ الْحَدِيثِ مَنْقَبَةٌ أَشْرَفَ مِنْ ذَلِكَ لِأَنَّهُ لَا إِمَامَ لَهُمْ غَيْرُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ‘আহলেহাদীছদের জন্য এর চেয়ে অধিক মর্যাদা আর নেই। কেননা মুহাম্মাদ (ছাঃ) ছাড়া তাদের আর কোন ইমাম নেই’।[12]

প্রশ্ন-১৬ : فَاسْأَلُوْا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ (নাহল ১৬/৪৩; আম্বিয়া ২১/৭) আয়াতের মর্ম ও অনুবাদ কি?

জবাব : অনুবাদ : ‘যদি তোমাদের জানা না থাকে তাহলে জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস কর’।

মর্ম : প্রতীয়মান হ’ল যে, লোকদের দু’টি প্রকার রয়েছে- (ক) আহলে যিকর অর্থাৎ আলেমগণ। (খ) لاَ يَعْلَمُونَ অর্থাৎ সাধারণ মানুষ।

সাধারণ মানুষের উপর আবশ্যক হ’ল যে, দু’টি শর্তের ভিত্তিতে আলেমদের নিকট থেকে মাসআলা-মাসায়েল জিজ্ঞেস করবে। (ক) কুরআন ও হাদীছ-এর উপর আমলকারী আলেম হবেন। তাক্বলীদপন্থী হবেন না। (খ) এটি জিজ্ঞেস করা হবে যে, আমাকে কুরআন ও হাদীছ থেকে মাসআলা বলে দিন। অথবা আল্লাহ ও রাসূলের বিধান বলে দিন।

সাধারণ মানুষের আলেমের দিকে প্রত্যাবর্তন করা তাক্বলীদ নয়। যেমনটি পূর্বে গত হয়েছে। প্রচলিত অর্থেও একে তাক্বলীদ মনে করা হয় না। কেননা দেওবন্দী ও ব্রেলভীদের সাধারণ জনতা তাদের মৌলভীদের কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করে এবং তার উপর আমল করে। আর এটা কেউই বলেন না যে, সে তার অমুক অমুক মৌলভী- যার কাছ থেকে মাসআলা জিজ্ঞাসা করেছে, তার মুক্বাল্লিদ হয়ে গেছে।

প্রশ্ন-১৭ : শিক্ষকের নিকট পড়া কি তাক্বলীদ?

জবাব : শিক্ষকের নিকট পড়া তাক্বলীদ নয়। আর না কেউ একে তাক্বলীদ বলেছেন। যেমন- গোলামুল্লাহ খান দেওবন্দীর নিকটে অধ্যয়নকারী ছাত্রদেরকে কোন দেওবন্দীও গোলামুল্লাহ খানের মুক্বাল্লিদ বলেন না। বরং নিজেদের দেওবন্দী আক্বীদায় বিশ্বাসী বা হানাফীর শিষ্য হানাফীই মনে করেন।

প্রশ্ন-১৮ : وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ আয়াতের অনুবাদ ও মর্ম কি?

জবাব : অনুবাদ : ‘আনুগত্য কর তাদের পথের, যারা আমার প্রতি ধাবিত হয়েছে’ (লোক্বমান, ৩১/১৫)

মর্ম : ‘আনুগত্য’-র দু’টি প্রকার রয়েছে। (ক) দলীল সহ আনুগত্য (খ) দলীলবিহীন আনুগত্য।

এখানে দলীলসহ আনুগত্য উদ্দেশ্য, যা তাক্বলীদ নয়। এই দাবী করা যে, লোক্বমান (আঃ) স্বীয় পুত্রকে চোখ বন্ধ করে নবী ব্যতীত অন্যের দলীল বিহীন কথার অন্ধের মত তাক্বলীদ করার নির্দেশ দিয়েছেন- একেবারেই বাতিল এবং মিথ্যা কথা।

ইমাম ইবনু কাছীর (মৃঃ ৭৭৪ হিঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, يَعْنِي الْمُؤْمِنِينَ، অর্থাৎ মুমিনদের রাস্তার আনুগত্য কর’।[13]

সুতরাং প্রতীয়মান হ’ল যে, এই আয়াত দ্বারা ইজমার দলীল হওয়া প্রমাণিত আছে। আলহামদুলিল্লাহ

প্রশ্ন-১৯ : اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ- صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ- আয়াতদ্বয়ের অনুবাদ ও মর্ম কি?

জবাব : অনুবাদ : ‘তুমি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর। এমন ব্যক্তিদের পথ, যাদেরকে তুমি পুরস্কৃত করেছ’ (ফাতিহা ১/৫-৬)

মর্ম : এখানে আল্লাহ কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত সব মানুষের পথের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কতিপয় পুরস্কার প্রাপ্তের কথা নয়। এজন্য এই আয়াতে কারীমা দ্বারা ইজমার দলীল হওয়া প্রমাণিত হয়েছে। এটি সাধারণ মানুষেরও জানা আছে যে, রবের পুরস্কার প্রাপ্তদের (নবীগণ, সত্যবাদীগণ, শহীদগণ এবং সৎ লোকদের) পথ হ’ল আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করা। চোখ বন্ধ করে নবী ব্যতীত অন্য কারো দলীলবিহীন ও প্রমাণ ব্যতীত আনুগত্য করা নয়। সুতরাং এই আয়াত দ্বারাও তাক্বলীদের খন্ডনই প্রমাণিত রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।

প্রশ্ন-২০ :

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا-

আয়াতের অনুবাদ ও মর্ম কি?

জবাব : অনুবাদ : ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর ও তোমাদের নেতৃবৃন্দের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি কোন বিষয়ে তোমরা বিতন্ডা কর, তাহ’লে বিষয়টি আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে সর্বোত্তম’ (নিসা ৪/৫৯)

...এর দ্বারা তাক্বলীদ প্রমাণিত হয়নি। আয়াতের দ্বিতীয় অংশ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, তাক্বলীদ হারাম। কেননা সকল মতানৈক্য ও বিবাদের ক্ষেত্রে কোন আলেম বা ফক্বীহর দিকে প্রত্যাবর্তন করার হুকুম নেই। বরং স্রেফ আল্লাহ (কুরআন) এবং রাসূল (হাদীছ)-এর দিকে প্রত্যাবর্তন করার হুকুম রয়েছে। (সমাপ্ত, আলহামদুলিল্লাহ, ১২ই ছফর ১৪২৬ হিজরী)

তাক্বলীদে শাখছীর ক্ষতিসমূহ

এক্ষণে এই গবেষণাধর্মী গ্রন্থের শেষে তাক্বলীদে শাখছীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি পেশ করা হ’ল-

(১) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে কুরআন মাজীদের বরকতময় আয়াত সমূহকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করা হয়। যেমন- কারখী হানাফী (মুক্বাল্লিদ) বলেছেন, ‘আসল কথা এই যে, প্রতিটি আয়াত যা আমাদের সাথীদের (হানাফী ফক্বীহদের) বিপরীত, সেটিকে মানসূখ (রহিত) রূপে গণ্য করতে হবে অথবা দুর্বল মনে করতে হবে। উত্তম এই যে, সমন্বয় করতে গিয়ে তার তাবীল বা দূরতম ব্যাখ্যা করতে হবে’।[14]

(২) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে ছহীহ হাদীছ সমূহকে পিছনে নিক্ষেপ করা হয়। যেমন- উল্লেখিত কারখী লিখেছেন, الاصل ان كل خبر يجي بخلاف قول اصحابنا فانه يحمل علي النسخ او علي انه معارض بمثله ثم صار الي دليل اخر ‘আসল কথা হ’ল যে, প্রত্যেকটি হাদীছ যেটি আমাদের সাথীদের বক্তব্যের বিপরীতে আসবে সেটিকে রহিত কিংবা তদ্রুপ অন্য বর্ণনার বিরোধী মনে করতে হবে। অতঃপর অন্য দলীলের দিকে ধাবিত হ’তে হবে’।[15]

ইউসুফ বিন মূসা আল-মালাত্বী হানাফী (৭২৬-৮০৩ হিঃ) বলেছেন,من نظر في كتاب البخاري تزندق  ‘যে ব্যক্তি ইমাম বুখারীর কিতাব (ছহীহ বুখারী) পড়ে সে যিনদীক্ব (নাস্তিক) হয়ে যায়’।[16]

(৩) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে বহু জায়গায় ইজমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। যেমন- ‘খায়রুল কুরূন’ বা স্বর্ণ যুগে এর উপর ইজমা রয়েছে যে, তাক্বলীদে শাখছী নাজায়েয।[17] কিন্তু মুক্বাল্লিদ আলেমগণ দিন-রাত তাক্বলীদে শাখছীর গান গেয়েই যাচ্ছেন।

(৪) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে সালাফে ছালেহীনের সাক্ষ্যসমূহ এবং তাহকীকগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে অনেক সময় খোলাখুলিভাবে তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যও করা হয়। যেমন- হানাফী মুক্বাল্লিদদের গ্রন্থ উছূলে শাশী-তে আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে ইজহিতাদ ও ফৎওয়া প্রদানের মর্যাদা থেকে বের করে দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে যে,وعَلى هَذَا ترك أَصْحَابُنَا رِوَايَةَ أبي هُرَيْرَة ‘আর এর উপর ভিত্তি করেই আমাদের সাথীগণ আবূ হুরায়রার রেওয়ায়াতকে বর্জন করেছেন’।[18]

এক হানাফী মুক্বাল্লিদ যুবক শত শত বছর পূর্বে বাগদাদের জামে মসজিদে বলেছিলেন, أَبُو هُرَيْرَةَ غَيْرُ مَقْبُوْلِ الحَدِيْثِ ‘আবূ হুরায়রার হাদীছ অগ্রহণযোগ্য’।[19]

(৫) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে তাক্বলীদপন্থীগণ এটা মনে করেন যে, কুরআন মাজীদের দু’টি আয়াতের মাঝে বিরোধ হ’তে পারে। যেমন- মোল্লা জিঊন হানাফী লিখেছেন,لان الآيتين إذا تعارضا تساقطتا ‘কেননা যখন দু’টি আয়াত পরস্পর বিরোধী হয়ে যায়, তখন দু’টিই বাতিল হয়ে যায়’।[20]

অথচ কুরআন মাজীদের আয়াত সমূহের মাঝে আদতেই কোন পরস্পর বিরোধিতা নেই। আর না কুরআন ও ছহীহ হাদীছ সমূহের মাঝে কোন প্রকারের বৈপরীত্য রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।

(৬) তাকবলীদে শাখছীর কারণে তাক্বলীদপন্থীরা স্বীয় মুক্বাল্লিদ ভাইদের বিরুদ্ধে ফৎওয়া পর্যন্ত দিয়ে দেয়। যেমন- দামেষ্কের বিচারপতি মুহাম্মাদ বিন মূসা আল-বালাসাগূনী হানাফী হ’তে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন,لو كان لي أمر لاخذت الجزية من الشافعية ‘যদি আমার হাতে ক্ষমতা থাকত তবে আমি শাফেঈদের নিকট থেকে জিযিয়া গ্রহণ করতাম’।[21]

ঈসা বিন আবূবকর বিন আইয়ূব হানাফীকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, তুমি কেন হানাফী হয়ে গেলে, অথচ তোমার পুরা বংশ শাফেঈ? তখন তিনি উত্তর দেন,أترغبون عن أن يكون فيكم رجل واحد مسلم তোমরা কি এটা চাও না যে, ঘরে একজন মুসলমান থাকুক’?[22]

হানাফীদের একজন ইমাম আস-সাফকারদারী বলেছেন,لا ينبغي للحنفية ان يزوج بنته من شافعي المذهب ولكن يتزوج منهم ‘হানাফীর উচিৎ নয় যে, সে তার মেয়েকে শাফেঈ মাযহাবের কোন লোকের সাথে বিবাহ দিবে। কিন্তু তাদের মেয়েকে বিবাহ করবে’।[23] অর্থাৎ শাফেঈ মাযহাবের মানুষ হানাফীদের নিকটে আহলে কিতাব (ইহূদী ও নাছারা)-এর হুকুমে।[24]

(৭) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে হানাফী ও শাফেঈরা পরস্পরের সাথে রক্তাক্ত যুদ্ধ করেছে। একজন আরেকজনকে হত্যা করেছে, দোকানপাট লুট করেছে এবং মহল্লা জ্বালিয়ে দিয়েছে।[25]

হানাফী ও শাফেঈদের মাঝে পারস্পরিক উক্ত কঠিন লড়াই এবং হত্যা ও যুদ্ধ সত্ত্বেও আশরাফ আলী থানবী ছাহেব লিখেছেন, ‘যদি কারণ এটাই হ’ত তবে হানাফী ও শাফেঈর কখনো বনিবনা হ’ত না। লড়াই-দাঙ্গা চলতেই থাকত। অথচ সর্বদা মিল ও ঐক্য ছিল’।[26]

(৮) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে মানুষ হক ও ইনছাফ এবং দলীল মানে না। বরং অন্ধের মতো স্বীয় কল্পিত ইমামের দলীলবিহীন আনুগত্যে পেরেশান থাকে। একজন একটি হাদীছকে শক্তিশালী (অর্থাৎ ছহীহ) স্বীকার করেও এর জবাবে চৌদ্দ বছর লাগিয়ে দিয়েছেন।[27]

মাহমূদুল হাসান দেওবন্দী বলেন,الحق والانصاف ان الترجيح للشافعي في هذه المسئلة ونحن مقلدون يجب علينا تقليد إمامنا أبي حنيفة ‘হক ও ইনছাফ এই যে, এই মাসআলায় ইমাম শাফেঈর অগ্রাধিকার রয়েছে। আর আমরা মুক্বাল্লিদ। আমাদের উপর আমাদের ইমাম আবূ হানীফার তাক্বলীদ করা ওয়াজিব’।[28]

আহমাদ ইয়ার নাঈমী ব্রেলভী বলেছেন, ‘কেননা এই বর্ণনাসমূহ হানাফীদের দলীল নয়। তাদের দলীল স্রেফ ইমামের কথা’।[29]

(৯) তাক্বলীদে শাখছীর কারণে গোঁড়া মুক্বাল্লিদগণ বায়তুল্লাহতে চার মুছাল্লা বানিয়েছিল। যে সম্পর্কে রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী ছাহেব বলেছেন, ‘অবশ্য চার মুছাল্লা যা মক্কা মু‘আয্যামায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল নিঃসন্দেহে এটি নিকৃষ্ট বিষয় যে, জামা‘আতের পুনরাবৃত্তি এবং বিছিন্নতার কারণে এটা আবশ্যক হয়ে গিয়েছিল যে, একটি জামা‘আত চলার সময় অন্য মাযহাবের লোকজন বসে থাকত, জামা‘আতে শরীক হত না এবং হারাম কাজের পাপী হত’।[30]

(১০) তাক্বলীদের কারণে মুক্বাল্লিদ আলেমগণ তাদের বিরোধীদের ব্যাপারে মিথ্যা বলতেও লজ্জা করেন না। বরং কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাপারেও নির্লজ্জভাবে মিথ্যা বলতে থাকেন। যেমন- একজনفإن تنازعتم في شئ فردوه الى الله والرسول আয়াতের শেষে (وإِلَى أُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ) বৃদ্ধি করে এই ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ঐ কুরআনের উপরোল্লেখিত আয়াতটিতে আমি অক্ষমও মওজুদ আছি’।[31]

আহলেহাদীছ সম্পর্কে আশরাফ আলী থানভী ছাহেব লিখেছেন, ‘এবং দ্বিতীয়বার তারাবীহ চালু করার কারণে হযরত উমর (রাঃ)-কে বিদ‘আতী বলে’।[32]

অথচ আহলেহাদীছের দায়িত্বশীল আলেমগণ এবং সাধারণ মানুষের মধ্য হ’তে কারো পক্ষ থেকেই সুন্নাতের অনুসারী উমর ফারূক (রাঃ)-এর উপর ‘বিদ‘আতী’র ফৎওয়া দেওয়া প্রমাণিত নেই। আমরা প্রত্যেক ঐ ব্যক্তিকে গোমরাহ ও শয়তান মনে করি, যে উমর (রাঃ)-কে বিদ‘আতী বলে।

এছাড়া তাক্বলীদে শাখছীর আরো অনেক ক্ষতি রয়েছে। যেমন- ফিরক্বাপূজা, বিদ‘আতপূজা, বাড়াবাড়ি, কঠিন গোঁড়ামি এবং তাহক্বীক্ব থেকে বঞ্চিত হওয়া ইত্যাদি।

এ সকল রোগের স্রেফ একটিই চিকিৎসা রয়েছে যে, কিতাব ও সুন্নাত এবং ইজমার উপর সালাফে ছালেহীনের বুঝের আলোকে আমল করা। আল্লাহই তাওফীক দাতা। (১৩ই রবীউল আউয়াল ১৪২৭ হিঃ)।


[1]. যরবে মুমিন, ৩/১৫ সংখ্যা, ৯-১৫ই এপ্রিল ১৯৯৯ইং

[2]. ছিহাহ সিত্তাহ না বলে কুতুবে সিত্তাহ বলাই সঠিক-সম্পাদক

[3]. শরহে আয়নুল ইলম ওয়া যায়নুল হিলম, ১/৪৪৬

[4]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, ৩/২৯৬, হা/১১৩৮০, সনদ ছহীহ

[5]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, ১/১৮৮, হা/১৯৭৭, ১/১৮৯, হা/১৯৮৯

[6]. মুওয়াত্ত্বা ইমাম মালেক, ১/১৮০, হা/৪৩৫

[7]. মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, ৩/২৭, হা/৪৬৬৯, সনদ ছহীহ

[8]. ঈযাহুল আদিল্লাহ, পৃঃ ২৭৬

[9]. সুয়ূত্বী, আর-রদ্দু ‘আলা মান উখলিদা ইলাল আরয, পৃঃ ১৩৬, ১৩৭

[10]. দেখুন : ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ৪/৯৫।

[11]. ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ২০/৪০; আর-রদ্দু ‘আলা মান উখলিদা ইলাল আরয, পৃঃ ১৩৬, ১৩৭

[12]. তাদরীবুর রাবী, ২/১২৬, ২৭তম প্রকার

[13]. তাফসীর ইবনে কাছীর, ৫/১০৬

[14]. উছূলে কারখী, পৃঃ ২৯

[15]. উছূলে কারখী, পৃঃ ২৯, মূলনীতি-৩০

[16]. ইবনুল ইমাদ, শাযারাতুয যাহাব, ৭/৩৯

[17]. দ্রঃ আন-নুবযাতুল কাফিয়াহ, পৃঃ ৭১

[18]. উছূলুশ শাশী মা‘আ আহসানিল হাওয়াশী, পৃঃ ৭৫

[19]. সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা, ২/৬১৯; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ৪/৫৩৮; দুমায়রী, হায়াতুল হায়ওয়ান, ১/৩৯৯

[20]. নূরুল আনওয়ার মা‘আ ক্বমারিল আক্বমার, পৃঃ ১৯৩

[21]. যাহাবী, মীযানুল ই‘তিদাল, ৪/৫২

[22]. আল-ফাওয়াইদুল বাহিইয়াহ, পৃঃ ১৫২, ১৫৩

[23]. ফাতাওয়া বায্যাযিয়াহ ‘আলা হামিশি ফাতাওয়া আলমগীরিয়াহ, ৪/১১২

[24]. আল-বাহরুর রায়েক্ক ২/৪৬

[25]. বিস্তারিত দ্রঃ ইয়াকূত আল-হামাবী, মু‘জামুল বুলদান ১/২০৯ ‘ইস্পাহান’, ৩/১১৭ ‘রায়’; ইবনুল আছীর, আল-কামিল, ৯/৯২, ৫৬১ হিজরী শতকের ঘটনাপ্রবাহ

[26]. ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৪/৫৬২

[27]. দেখুন : আল-আরফুশ শাযী, ১/১০৭

[28]. তাক্বরীরে তিরমিযী, পৃঃ ৩৬

[29]. জা-আল হক, ২/৯

[30]. তালীফাতে রশীদিয়াহ, পৃঃ ৫১৭

[31]. মাহমূদুল হাসান দেওবন্দী, ঈযাহুল আদিল্লাহ, পৃঃ ৯৭

[32]. ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৪/৫৬২





কুরআনের বঙ্গানুবাদ, মুদ্রণ প্রযুক্তি ও ঊনিশ শতকের মুসলিম সমাজে এর প্রভাব - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
দো‘আর আদব বা শিষ্টাচার সমূহ - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
গাদ্দাফী, সাম্রাজ্যবাদ ও লিবিয়ার রক্তাক্ত জনগণ - ফাহমীদুর রহমান
ছিয়ামের ফাযায়েল ও মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
আহলেহাদীছ আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামী আন্দোলন : তুলনামূলক আলোচনা - মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম
মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল - আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রাযযাক
ঈদায়নের কতিপয় মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
হকের পথে বাধা : মুমিনের করণীয় (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
যাকাত ও ছাদাক্বা : আর্থিক পরিশুদ্ধির অনন্য মাধ্যম - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
আক্বীদা ও আহকামে হাদীছের প্রামাণ্যতা (৩য় কিস্তি) - মীযানুর রহমান মাদানী
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমান - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
আরও
আরও
.