একজন জমি দিয়েছেন তো আরেকজন অ্যাম্বুলেন্স। কেউ সরঞ্জাম কিনে দিয়েছেন, কেউ আবার নগদ টাকা। এর সঙ্গে কিছু মানুষের স্বপ্ন আর উদ্যম মিলে গড়ে উঠছে সকলের জন্য হাসপাতাল।
উদ্যোক্তারা বলছেন, তারা এখানে ধনী-গরীব, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার উন্নত মানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে চান। অলাভজনক এই হাসপাতালের উদ্দেশ্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা নয়, আবার মুনাফাও নয়। ধনী ও সচ্ছল রোগীরা চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবেন। মধ্য আয়ের রোগীরা কম টাকায় আর দরিদ্র-প্রান্তিক আয়ের মানুষ বিনা মূল্যে একই সেবা পাবেন।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপযেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের মরাজানেরপাড় এলাকায় নবনির্মিত হাসপাতাল ভবনটি ‘দশে মিলে করি কাজে’র একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবাসীদের সহায়তায় গড়ে ওঠা এই হাসপাতালে চিকিৎসক বসছেন। নিয়মিত রোগীও দেখছেন।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়ন সহ আশপাশে চিকিৎসা গ্রহণের তেমন কোন সুযোগ না থাকায় বছর পাঁচেক আগে হাসপাতাল করার বিষয়টি জোরালোভাবে আলোচনায় আসে। শমশেরনগরের মানুষ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ময়নুল ইসলাম খান তৎপরতা শুরু করেন। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে থাকা প্রচুর প্রবাসী সাড়া দেন। এগিয়ে আসেন দেশের ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষও। গঠিত হয় কমিটি। ঝাপিয়ে পড়েন একদল স্বেচ্ছাসেবী মানুষ। হাসপাতালের মতো একটি ভালো উদ্যোগে সাড়া দিয়ে ১৫১ শতাংশ জায়গা দান করেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সরওয়ার জামান।
ইতিমধ্যে তৈরী হয়েছে ১ তলা ভবন। বাকি দু’তলার কাজ অচিরেই শুরু হবে। রোগীর শয্যা (বেড), পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি অনেকটাই কেনা হয়ে গেছে। কিছু আসার পথে আছে। সরঞ্জাম অনেকই দান করছেন। কেউ দান করেছেন এ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতাল-সংশ্লিষ্ট একটি মসজিদ নির্মাণের কাজ চলছে।
হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি সেলিম চৌধুরী বলেন, প্রথমে ছোট কিছু করার উদ্যোগ ছিল। কিন্তু মানুষের সাড়া দেখে এখন ১৫০ শয্যার হাসপাতাল করার চিন্তা করছি। একই সাথে এখানে একটি নার্সিং ইনস্টিটিউট ও মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রথম পর্যায়ে ছয় মাস আট ঘণ্টা করে শুধু বহির্বিভাগে রোগী দেখা হবে। পরবর্তী ছয় মাস ১৬ ঘণ্টা করে হাসপাতাল খোলা রাখা হবে। এরপর ২৪ ঘণ্টা হাসপাতাল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।