গত ৩রা জুলাই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশী সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী ‘ইসলাম’ সম্পর্কে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য পেশ করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় উক্ত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আজকের আরবী ভাষায় যেসব শব্দ; এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন আল্লাহর ৯৯ নাম। সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট (সংযোজন) করেছিল।

নারীদের বোরকা ও হিজাব নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এটা হচ্ছে ওয়াহহাবীদের লাস্ট কালচারাল ইনভলব। আমি অবাক হচ্ছি। ক্লাস টু’য়ের মেয়েরা হিজাব ও বোরকা পরবে! এটা আমাদের ধর্ম শিক্ষা হ’তে পারে? মুসলমান মেয়েরা মনে করে হিজাব, বোরকা হচ্ছে ইসলামের আইডিন্টিটি। আসলে কি তাই?...

কট্টর আওয়ামীপন্থী ও ইসলাম বিদ্বেষী হিসাবে পরিচিত লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেন, এখন যুগ পাল্টেছে। এখন বাংলাদেশে বোরকা পরার বিপক্ষে অনেকেই জেগে উঠেছে। এসব ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’।

রাসূল ও রাসূলুল্লাহ এক নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাসূল মানে দূত, অ্যাম্ব্যাসেডর। ‘রাসূলে সালাম’ মানে শান্তির দূত। রাসূল বললেই আপনারা মনে করেন হযরত মুহাম্মদ। তা কিন্তু নয়। যখন রাসূলুল্লাহ বলবেন তখন মনে করবেন আল্লাহর প্রতিনিধি। এখন মোমেন ভাই আমেরিকায় থেকে যদি বলেন কিংবা আমি নিজেকে রাসূল দাবি করলে কল্লা যাবে’।

কিছুদিন মাদ্রাসায় পড়ার কথা জানিয়ে আব্দুল গাফফার চৌধুরী আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি হাদীছ সংগ্রহকারী আবু হুরায়রা নামের অর্থ হচ্ছে বিড়ালের বাবা। আবুবকর নামের অর্থ হচ্ছে ছাগলের বাবা। তিনি বলেন, সাতশ’ বছর ধরে আমরা নামায, খোদা হাফেয শব্দ বলেছি। এখন ছালাত, আল্লাহ হাফেয শব্দে পরিণত হয়েছে। এগুলো ওহাবীদের সৃষ্টি। কাফেরদের মধ্যে যারা মুসলমান হয়েছিল পরবর্তীতে তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়নি’।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরো দেশ এখন দাড়ি-টুপিতে ছেয়ে গেছে। সরকারী অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টুপি আর দাড়ির সমাহার। অথচ তারা ঘুষ খাচ্ছেন। এত বড় দাড়ি, এত বড় টুপি; কিন্তু ঘুষ না পেলে ফাইলে হাত দেন না। এটা কি ইসলামের শিক্ষা?

রাসূল (ছাঃ), হজ্জ ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার দায়ে মন্ত্রীত্ব হারানো আব্দুল লতীফ সিদ্দীকীর পক্ষে সাফাই গেয়ে রসিকতার সুরে তিনি বলেন, ‘আব্দুল লতীফ সিদ্দীকী কী এমন বলেছিল? তাকে বিপদে পড়তে হয়েছে। তার জন্য আজকে দেশে আন্দোলন হচ্ছে। এসবই হচ্ছে ওহাবীয় মতবাদ ও মাওলানা মওদূদীর চাপিয়ে দেয়া সংস্কৃতি। ...আব্দুল ওহাব নামে কট্টর এক ব্যক্তির ধারায় এ অঞ্চলে ওহাবী মতবাদ চাপিয়ে দেয় সউদী আরব।

বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদের উত্থান প্রসঙ্গে তথাকথিত প্রগতিশীল এই লেখক বলেন, ‘আমেরিকা তালেবান সৃষ্টি করে বিপদে পড়েছে। আর ব্রিটিশরা ভারতবর্ষকে ভেঙে টুকরো করার পাশাপাশি ইসলামী মতবাদকেও বিভক্ত করেছে পাকিস্তানকে দিয়ে। তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে সঊদী আরব ও ইরানের অর্থায়নে এ অঞ্চলে ওহাবী মতবাদ মাওলানা মওদূদীকে দিয়ে জামায়াতের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।...

তিনি বলেন, ‘এভাবে মুসলমানে মুসলমানে বিভেদ সৃষ্টি করেছে ওহাবী ইযম। আমি তো মনে করি শেখ হাসিনার শত ভুলত্রুটি থাকলেও আজকের বাংলাদেশে সিম্বল অব সেক্যুলারিজম হচ্ছেন তিনি। তিনি শক্ত হাতে এ সব দমন না করলে বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যেত।

তিনি বলেন, আমার হয়ত ভুল হ’তে পারে। কিন্তু আমার একটি বিশ্বাস আছে। সেই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই আমি লিখছি। আমি বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। মৌলবাদী রাষ্ট্র আমরা চাই না, আমরা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই’।

তার এ বক্তব্য নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনায় মূল বিষয়ের বাইরে গিয়ে আল্লাহ ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই বিব্রতবোধ করেন। ওই আলোচনা সভায় উপস্থিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যুক্তরাষ্ট্র কমান্ডের আহবায়ক আব্দুল মুক্বীত চৌধুরী বলেন, বক্তব্যের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা যে দল কিংবা মতের হই না কেন, আল্লাহ, রাসূল (ছাঃ), ইসলাম ও নারীর পর্দা নিয়ে এসব কথা বলা উচিত নয়।

[কথায় বলে পাগলে কি-না কয়, ছাগলে কি-না খায়। আব্দুল লতীফ ছিদ্দীক্বী, আব্দুল গাফফার চৌধুরী ঐসব হস্তীমূর্খদের প্রতিনিধি। বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় এরূপ আরও কয়েকজন নাস্তিক ও পাগল আছেন। এইসব লোকদের জন্যই বাংলাদেশের ইসলামী ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে। অথচ এরা ১৬ কোটি মুসলিমের আদর্শিক প্রতিনিধি নয়। বরং জনবিচ্ছিন্ন কিছু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মাত্র। জানিনা এদেরকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন স্বার্থ হাছিল করছেন। আমরা এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি (স.স.)]

-আবদুল গাফফার চৌধুরী






আরও
আরও
.