‘ফৎওয়া’ মুমিন জীবনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ। যেকোন জিজ্ঞাসার জবাবে দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে শরী‘আতের বিধান বর্ণনা করাকে ফৎওয়া বলে। পবিত্র কুরআনে ‘ফৎওয়া’ শব্দটি ৯টি আয়াতে মোট ১১ বার এসেছে। মহান আল্লাহ নিজের শানেও ফৎওয়া শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেমন- তিনি বলেন, يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ ‘লোকেরা তোমার নিকট ফৎওয়া জানতে চাচ্ছে। তুমি বলে দাও, আল্লাহ তোমাদেরকে ‘কালালাহ’-র (পিতা-পুত্রহীন ব্যক্তির) সম্পত্তি বণ্টন সম্পর্কে ফৎওয়া দিচ্ছেন’ (নিসা ৪/১৭৬)। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আল্লাহ প্রদত্ত এলাহী বিধানের আলোকে সমাজ সংস্কারে ফৎওয়া প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে এযাম, তাবে তাবেঈন এবং তৎপরবর্তী বিভিন্ন খলীফাদের আমলেও ফৎওয়া প্রদান অব্যাহত ছিল। যুগ পরম্পরায় বর্তমানে ফৎওয়া প্রদানের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি  পেয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, আজকাল যত্রতত্র এমন সব মুফতী দেখা যাচ্ছে, যারা কুরআন-হাদীছের যথার্থ জ্ঞান ছাড়াই ফৎওয়া দিয়ে থাকে। ফলে ভুল ফৎওয়ার জালে আটকা পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাসিক ‘আত-তাহরীক’ প্রকাশের ১ম সংখ্যা থেকে নিয়মিত প্রকাশ হ’তে থাকে ‘প্রশ্নোত্তর বিভাগ’। ছহীহ দলীল ভিত্তিক যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব সন্নিবেশিত হয় অত্র বিভাগে। আলোচ্য নিবন্ধে আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া বিভাগ ও সমাজ সংস্কারে তার প্রভাব ও ভূমিকা সম্পর্কে আলোকপাত করা হ’ল।-

দারুল ইফতা গঠন :

১ম সংখ্যা থেকে মাত্র ৩টি ফৎওয়া দিয়ে ‘আত-তাহরীক’-এর ‘প্রশ্নোত্তর’ বিভাগ তার যাত্রা শুরু করে। ১ম সংখ্যায় ৩টি, ২য় সংখ্যায় ১০টি। অতঃপর ২য় বর্ষ ১ম সংখ্যা অক্টোবর’৯৮ হ’তে ১৫টি, একই বর্ষ ৮ম সংখ্যা জুন’৯৯ হ’তে ২৫টি, ৩য় বর্ষ ১ম সংখ্যা অক্টোবর’৯৯ হ’তে ৩০টি, ৪র্থ বর্ষ ১ম সংখ্যা অক্টোবর’২০০০ হ’তে ৩৫টি ও ৬ষ্ঠ বর্ষ ৪র্থ সংখ্যা জানুয়ারী’০৩ হ’তে নিয়মিত ৪০টি করে প্রশ্নোত্তর প্রকাশিত হ’তে থাকে। যা অদ্যাবধি চলছে। সমৃদ্ধ হচ্ছে ফৎওয়ার ভান্ডার। ইতিমধ্যে পুনরুল্লেখ সহ সর্বমোট প্রকাশিত ফৎওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৯১০টি (মার্চ’১৬ সহ)।

শুরুতে আত-তাহরীক এর কোন ফৎওয়া বোর্ড ছিল না। প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব পরে কেন্দ্রীয় ফৎওয়া বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সে লক্ষ্যে বিগত ১৫.৯.৯৮ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর পরিচালনা কমিটির ১৩নং বৈঠকের ৯নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক গঠিত হয় কেন্দ্রীয় ফৎওয়া বোর্ড ‘দারুল ইফতা’। মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সভাপতিত্বে ফৎওয়া বোর্ডে সে সময় যাদেরকে সদস্য করা হয় তারা হ’লেন, ২. আব্দুছ ছামাদ সালাফী (নওদাপাড়া মাদ্রাসা) ৩. আব্দুর রাযযাক সালাফী (নওদাপাড়া মাদ্রাসা) ৪. আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ (ঐ) ৫. সাঈদুর রহমান (ঐ) ৬. আখতারুল আমান (ঐ, ঠাকুরগাঁও) ৭. শিহাবুদ্দীন সুন্নী (গাইবান্ধা) ৮. আব্দুর রশীদ (গাইবান্ধা)।

উল্লেখ্য যে, প্রথম গঠিত বোর্ডের সদস্যদের অনেকেই এখন আর সদস্য নেই। পরবর্তীতে উক্ত বোর্ডের সদস্য করা হয় প্রবীণ আলেম মাওলানা বদীউযযামান (রাজশাহী) ও আব্দুল খালেক সালাফী (নওগাঁ)-কে। মাওলানা বদীউযযামান ছাহেব গত ১৪ নভেম্বর’১২ তারিখে ইন্তিকাল করেন (ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেঊন)। বর্তমানে আরো যারা ফৎওয়া বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট আছেন তারা হচ্ছেন- মুযাফফর বিন মুহসিন (রাজশাহী), হাফেয আখতার মাদানী (সঊদী আরব), আকমাল হোসাইন (দক্ষিণ আফ্রিকা), শরীফুল ইসলাম (বাহরাইন) প্রমুখ। এতদ্ব্যতীত হাদীছ ফাউন্ডেশন গবেষণা বিভাগের গবেষণা সহকারীগণ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেন এই বিভাগে। উল্লেখ্য যে, দেশে আহলেহাদীছ জামা‘আতের এটিই প্রথম ফৎওয়া বোর্ড।

পরবর্তীতে ‘গবেষণা বিভাগ’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১লা ডিসেম্বর ২০১০-য়ে। এটিও ছিল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশে প্রথম। এরপরে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে চালু হয় ‘ফৎওয়া হটলাইন’। এটিও ছিল দেশে প্রথম। ফালিল্লাহিল হামদ। হট লাইনে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে যেকোন ব্যক্তি ফোন করে তার উত্তর জেনে নিতে পারেন। যা আজও অব্যাহত আছে।

যেভাবে প্রস্ত্তত হয় আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া :

প্রথমে প্রাপ্ত প্রশ্নগুলি বাছাই করা হয়। কেননা প্রতিনিয়ত ডাক, ইমেইল, ফৎওয়া হটলাইন, এসএমএস ইত্যাদির মাধ্যমে বহু প্রশ্ন জমা হয় অত্র বিভাগে। বাছাইয়ে বিশেষত প্রশ্নের মান, গুরুত্ব ও অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রকাশ হয়েছে কি-না ইত্যাদি বিষয় দেখা হয়। অতঃপর বাছাইকৃত প্রশ্নগুলি সদস্যগণের মধ্যে ভাগ করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রবাসী সদস্যগণের নিকটে ই-মেইলের মাধ্যমে এবং অন্যান্যদের নিকটে হাতে হাতে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উত্তর পাওয়ার পর প্রথমে কম্পোজ করা হয়। তারপর গবেষণা বিভাগ কর্তৃক প্রাথমিক সম্পাদনার পর ফৎওয়া বোর্ডে পেশ করা হয়। অতঃপর নির্ধারিত দিনে ফৎওয়া বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দারুল ইফতা প্রধান মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের নেতৃত্বে উপস্থিত সদস্যগণ এবং আত-তাহরীক-এর সম্পাদকমন্ডলী সেখানে উপস্থিত থাকেন। প্রত্যেকটি ফৎওয়ার চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় সেখানে। তাহকীকী পর্যালোচনার ফলে একক চিন্তার আলোকে লিখিত অনেক ফৎওয়ার চেহারাই পাল্টে যায়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পূর্ণ ফৎওয়াই পরিবর্তন হয়ে যায়। প্রত্যেকটি ফৎওয়ার পিছনে ব্যয় হয় বিস্তর সময় ও শ্রম। কোন মাসআলায় ইখতেলাফ হ’লে পুনরায় কিতাবপত্র দেখা হয় এবং ভুল থাকলে সংশোধন করা হয়। কোন মাসআলায় একমত হওয়া সম্ভব না হ’লে সেটি পরবর্তী বোর্ডের জন্য রেখে দিয়ে সংশ্লিষ্ট লেখককে এবং গবেষণা বিভাগকে পুনরায় এ বিষয়ে তাহকীক করতে বলা হয়। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে চলে ফৎওয়া দানের প্রক্রিয়া। অতঃপর সকলের সম্মতিতে বোর্ডে পাশ হওয়া ফৎওয়াগুলিই আত-তাহরীকে প্রকাশের জন্য মনোনীত হয়। সবশেষে ফৎওয়া বোর্ডের মাননীয় পরিচালক মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের চূড়ান্ত সংশোধন ও পরিমার্জনের পর তা আত-তাহরীকে ছাপা হয়। এরপরেও যদি কোন ভুল ধরা পড়ে বা পাঠকদের কেউ দৃষ্টিতে এনে দেন, তাহ’লে পুনরায় বোর্ডে আলোচনার পর সেটি গৃহীত হ’লে পরবর্তী কোন সংখ্যায় ‘সংশোধনী’ আকারে তা প্রকাশ করা হয়। যা ইতিমধ্যে অনেক বিদ্বানের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সমাজ সংস্কারে আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া

আত-তাহরীক-এর বিশেষত্ব এখানেই যে, আত-তাহরীক বিনা দলীলে কোন কিছুই প্রকাশ করে না। পাশাপাশি জাল ও যঈফ দলীল থেকেও নিজেকে বিরত রাখে। কেননা মিথ্যা হাদীছ বর্ণনা থেকে সাবধান করে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন,مَنْ كَذَبَ عَلَىَّ مُتَعَمِّدًا  فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়’।[1]

আত-তাহরীকের ফৎওয়ার বৈশিষ্ট্য :

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুখপত্র হিসাবে আত-তাহরীক সর্বদা পবিত্র কুরআন, ছহীহ হাদীছ ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী ফৎওয়া দিয়ে থাকে। প্রয়োজনবোধে প্রাচীন ও আধুনিক সুন্নী মুজতাহিদ বিদ্বানগণের সিদ্ধান্ত যাচাই করা হয়। অতঃপর যেটি কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর সাধারণ নির্দেশ ও ইঙ্গিত সমূহের সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়, সেটিকে গ্রহণ করা হয়। নির্দিষ্টভাবে কোন মাযহাবী ফিক্বহ বা উছূলে ফিক্বহের অনুসরণ করা হয় না (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : থিসিস ১৩৪-৩৫ পৃ.; আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন? ২৩ পৃ.)। এই নিরপেক্ষ নীতির ফল দাঁড়িয়েছে এই যে, অনেক হানাফী বিদ্বানের মুখে এখন শোনা যাচ্ছে যে, এ যুগে ফিক্বহ ব্যতীত কেবল কুরআন ও হাদীছ দিয়ে ফৎওয়া দেওয়া হয়, আত-তাহরীকের পূর্বে কেউ সেটা কল্পনাও করতে পারত না। আত-তাহরীক তাই এদেশে এক নীরব বিপ্লব সৃষ্টি করে চলেছে। একথার বাস্তবতা আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, মাত্র ২০০০ কপি দিয়ে যাত্রা শুরু করে আত-তাহরীকের গ্রাহক সংখ্যা এখন ২৯ হাযার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও রয়েছে ১৭ হাযার ইন্টারনেট পাঠক। যা ক্রমবর্ধমান। অথচ অন্যান্য ইসলামী পত্রিকার অনেকগুলি গ্রাহক সংকটে বন্ধ হ’তে চলেছে।

শিরক-বিদ‘আত ও ভ্রান্ত আক্বীদার মূলোৎপাটনে ভূমিকা :

শিরক বিমুক্ত নির্ভেজাল তাওহীদ বিশ্বাস ও বিদ‘আত মুক্ত ছহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমল ব্যতীত কোন ইবাদত কবুল হবে না। শরী‘আতের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য দু’টি অন্যায় হচ্ছে শিরক ও বিদ‘আত। শিরক আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত। আর বিদ‘আত তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে সম্পৃক্ত। দু’টিই মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যায়।[2]

সমাজে জেঁকে বসা শিরক ও বিদ‘আত দূরীকরণে আত-তাহরীকের ফৎওয়া বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর প্রকাশিত হওয়ার ফলে সমাজের একজন সাধারণ পাঠকও আত-তাহরীক-এর মাধ্যমে কোনটা শিরক, কোনটা বিদ‘আত এবং এর পরিণতি কত ভয়াবহ তা জানতে পারছে। এভাবে ক্রমান্বয়ে সমাজ থেকে শিরক ও বিদ‘আত দূরীভূত হচ্ছে। মানুষ শিরকী আক্বীদা ছেড়ে দিয়ে তাওহীদী আক্বীদায় এবং বিদ‘আত ছেড়ে দিয়ে সুন্নাতী তরীকায় ফিরে আসছে। সেই সাথে দেশে প্রচলিত ব্রেলভী, দেওবন্দী, ছূফী, কাদিয়ানী, শী‘আ ও অন্যান্য ভ্রান্ত মতবাদ সমূহের বিরুদ্ধে আত-তাহরীকে বিভিন্ন সময় ফৎওয়া সমূহ ছাপা হয়। ফলে এসব বাতিল ফিরক্বা ও মতবাদ সমূহ থেকে মানুষ ক্রমেই সতর্ক হচ্ছে।

কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনে ফৎওয়া বিভাগ :

নানাবিধ কুসংস্কারে নিমজ্জিত আমাদের দেশ। ধর্মের নামে, রাজনীতির নামে, অর্থনীতির নামে, সংস্কৃতির নামে চলছে এসব কুসংস্কার। ধর্মের নামে মাযহাবী তাক্বলীদ, মীলাদ, ক্বিয়াম, শবেবরাত, কুলখানী, চেহলাম, চল্লিশা, জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস ইত্যাদি। রাজনীতির নামে গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজবাদ। অর্থনীতির নামে পুঁজিবাদ, সূদ, ঘুষ, জুয়া, লটারী ইত্যাদি সমাজ বিধ্বংসী কর্ম। সংস্কৃতির নামে নাচ-গান-আনন্দমেলা ও বিদেশ থেকে চালান করা আকাশ সংস্কৃতির নীল দংশনে আমাদের যুবচরিত্র ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছে। উপরের প্রতিটি বিষয়েই আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া সমূহ প্রকাশিত হয়েছে। ফলে কুসংস্কারে নিমজ্জিত মানুষকে জাগিয়ে দিয়েছে আত-তাহরীক। তার অবচেতন মনে ফিরিয়ে দিয়েছে এলাহী চেতনা।

চরমপন্থা প্রতিরোধে ফৎওয়া বিভাগ :

নববই-এর দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে চরমপন্থী মতবাদের আনাগোনা শুরু হয়। অতঃপর ক্রমান্বয়ে তা বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে। উঠতি বয়সের তরুণদের জিহাদের সুড়সুড়ি দিয়ে এ পথে নামানো হয়। অল্পশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত এইসব তরুণরা বনে-জঙ্গলে ঘুরে সশ্রস্ত্র ট্রেনিং নিতে থাকে। যাদের দাবী সশ্রস্ত্র জিহাদ ছাড়া ইসলাম কায়েম সম্ভব নয়। অতঃপর দেশব্যাপী বোমা হামলার মাধ্যমে এরা প্রকারান্তরে শান্তিপূর্ণ ধর্ম ইসলামকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে  তুলে। খারেজী আক্বীদাপুষ্ট এই চরমপন্থী মতবাদের বিরুদ্ধে কুরআন ও হাদীছের আলোকে সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে আত-তাহরীক এই সব তরুণদের চরমপন্থা থেকে ফিরে আসার আহবান জানায়, যা আজও অব্যাহত রয়েছে।[3]

প্রচলিত স্রোতের বিপরীতে সাহসী পদক্ষেপ :

ইসলাম সমর্থিত নয় এমন যেকোন বিষয়ের বিরুদ্ধে আত-তাহরীক সব সময়ই সোচ্চার থেকেছে। সেটি ধর্মীয়, সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক যেকোন বিষয়েই হোক না কেন। এমনকি এর সাথে কোন আলেম-ওলামা জড়িত থাকলেও হক প্রকাশে আত-তাহরীক কখনো কুণ্ঠাবোধ করেনি। বরং আপোষহীন দৃঢ়তা অক্ষুণ্ণ রেখে দলীল ভিত্তিক ফৎওয়ার মাধ্যমে জাতির সামনে প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছে। ফলে অনেক দ্বীনদার মুসলমান নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হারাম থেকে হালালের পথে ফিরে এসেছেন। নিম্নে এ জাতীয় দু’একটি বিষয় তুলে ধরা হ’ল।-

(ক) এমএলএম ব্যবসা : MLM-এর পুরো নাম Multi level marketing অর্থাৎ বহুস্তর বিপণন। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। জিজিএন বা ‘গ্লোবাল গার্ডিয়ান নেটওয়ার্ক’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বপ্রথম এই প্রতারণা পূর্ণ ব্যবসা শুরু করে। দুর্ভাগ্যজনক যে, এসব ব্যবসার সাথে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে একশ্রেণীর দুনিয়াদার আলেম।

মাসিক আত-তাহরীক শুরু থেকেই এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠভাবে কথা বলেছে। ১৯৯৮ সালে জিজিএন চালু হওয়ার পর যখন ক্রমান্বয়ে এই হারাম ব্যবসা জনগণের মাঝে বিস্তৃত হ’তে থাকে, সে সময় ২০০০ সালের অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত হয় ‘প্রতারণার অপর নাম জিজিএন’ শিরোনামে তথ্যবহুল একটি প্রবন্ধ। ফলে সরকারের নযর পড়ে এবং ২০০০ সালেই জিজিএন নিষিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে ‘নিউওয়ে প্রাইভেট লিমিটেড’ ও ‘ডেসটিনি ২০০০ লিঃ’-এর বিরুদ্ধে মার্চ’০৪ সংখ্যার ২৫/২২৫ নং প্রশ্নোত্তরে এবং মার্চ ’১২ সংখ্যার ১/২০৯ নং প্রশ্নোত্তরে বিস্তারিত ফৎওয়া প্রকাশিত হয়। ফলে ২০১২ সালে সরকার ডেসটিনির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং ঐ বছরের অক্টোবর মাসে ডেসটিনির মালিক ও কর্মচারীদের গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য যে, জিজিএন ও ডেসটিনি বন্ধ হওয়ায় বহু আলেম আত-তাহরীক ও সংগঠনের উপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

(খ) ব্যাংক ও বীমা : দেশে ব্যাঙের ছাতার মত ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অতঃপর কৌশলে এগুলিকে হালাল করার জন্য অনেকে ‘ইসলামী’ সাইনবোর্ড জুড়ে দেয়। যাতে সাধারণ মানুষ এগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়। অথচ ব্যাংক ও বীমার লেনদেন বেশির ভাগই সূদ ভিত্তিক। সেকারণ এগুলি স্পষ্ট হারাম।

দেশের এই স্রোতধারার বিপরীতে আত-তাহরীক পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর ভিত্তিতে ইসলামী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য এবং সূদ ভিত্তিক এসব পুঁজিবাদী অর্থনীতি হ’তে বেঁচে থাকার জন্য জাতির প্রতি আহবান জানায়। ফলে অনেক দ্বীনদার ব্যক্তি এসবের খপ্পর থেকে বেরিয়ে হালাল রূযীর পথে ফিরে আসেন।

(গ) কোয়ান্টাম মেথড : মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে ফিরিয়ে কথিত অন্তর্গুরুর ইবাদতে লিপ্ত করার অভিনব প্রতারণার নাম হ’ল কোয়ান্টাম মেথড। হাযার বছর পূর্বে ফেলে আসা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান পাদ্রী ও যোগী-সন্ন্যাসীদের যোগ সাধনার আধুনিক কলা-কৌশলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেডিটেশন’। যা ব্যক্তিকে আল্লাহর উপর বাদ দিয়ে নিজের উপর তাওয়াক্কুল করতে বলে এবং শিখানো হয় যে, ‘তুমি চাইলেই সব করতে পার’। এদের আকর্ষণীয় কথার ফুলঝুরিতে ভুলে বিশেষ করে টাকাওয়ালা মানুষেরা এদের প্রতারণার ফাঁদে নিজেদেরকে সঁপে দিচ্ছেন অবলীলাক্রমে। কথিত ধ্যানের পিছনে ব্যয় করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অথচ একটা অবাস্তব স্বপ্ন ছাড়া এদের ভাগ্যে কিছুই জুটছে না। আত-তাহরীক শিরকী আক্বীদা সম্পন্ন এই মেথড ও মেডিটেশনকে নাকচ করে ডিসেম্বর’১১ সংখ্যার ১৬/৯৬নং প্রশ্নোত্তরে এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীন জওয়াব দেয়। তাছাড়া আগষ্ট’১২ সংখ্যার সম্পাদকীয় কলামে ‘কোয়ান্টাম মেথড : একটি শয়তানী ফাঁদ’ শিরোনামে এক বলিষ্ঠ সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। ফলে বহু পাঠক এই ফাঁদ হ’তে বাঁচার সুযোগ লাভ করে।

দাম্পত্য জীবনের আশার আলো ফৎওয়া বিভাগ :

মানব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হ’ল বৈবাহিক জীবন। একাকী মানুষ থাকতে পারে না। তাই এই বন্ধন মহান আল্লাহর পক্ষ হ’তে এক কল্যাণ বিধান। দুর্ভাগ্য যে, ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালনেও ভুলের কোন শেষ নেই। বিবাহের সঠিক পদ্ধতি এদেশের অধিকাংশ মানুষ জানে না। বিবাহকে ঘিরে হাযারো কুসংস্কার চালু আছে আমাদের সমাজে। এছাড়া ইসলামে বিবাহ বিচ্ছেদের সুন্দর পদ্ধতি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বিধৃত আছে। যেখানে তিন তহুরে তিন তালাকের সুন্দরতম বিধান রয়েছে। যেন এত বড় একটি মারাত্মক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামী দীর্ঘ সময় যাবৎ চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পায়। প্রতিটি তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতকাল অর্থাৎ তিন মাস সময় থাকে চিন্তা-ভাবনা করার জন্য। এই ইদ্দতকালের মধ্যে সে ইচ্ছা করলে স্ত্রী ফেরত নিতে পারবে। এভাবে দু’বার সুযোগ দেওয়ার পর ৩য় তালাকের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়।

অথচ আমাদের সমাজে এক বৈঠকে তিন তালাক কার্যকরের ভ্রান্ত ফৎওয়া চালু আছে। আর তার প্রতিক্রিয়ায় চালু হয়েছে আরেক জঘন্য প্রথা ‘হিল্লা’। এভাবে মুমিনের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে ভুল ফৎওয়ার কারণে।

মাসিক আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া বিভাগে বিবাহের সঠিক পদ্ধতি ও তালাকের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে এ যাবৎ সর্বাধিক সংখ্যক ফৎওয়া প্রকাশিত হয়েছে। যার মাধ্যমে বিবাহ ও তালাক সম্পর্কিত ত্রুটি-বিচ্যুতি হ’তে জাতিকে সর্বাত্মকভাবে সাবধান করা হয়েছে। ফলে শত শত পরিবার নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে এসেছে সঠিক পথে।

ভাঙ্গা সংসার গড়ে দিল আত-তাহরীক : ঢাকা বিমান বন্দরে কর্মরত জনৈক কর্মকর্তা। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। দু’কন্যা সন্তানের পিতা। স্ত্রীও সম্ভ্রান্ত পরিবারের। দাম্পত্য জীবনে অসুখী নন তারা। সাংসারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মন ধরাধরি হ’তেই পারে। তেমনি এক পরিস্থিতিতে রাগের মাথায় স্ত্রীর প্রতি তিন তালাক উচ্চারণ করেন। পরক্ষণেই স্বাভাবিক হ’লে নিজের ভুল বুঝতে পারেন। কিন্তু উপায় কি? মাযহাবী ফৎওয়া অনুযায়ী তো স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। এবার স্ত্রী ফিরে পাবার আশায় ছুটতে লাগলেন রাজধানী ঢাকার নামকরা সব আলেমের নিকটে। সকলেরই একই কথা, স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। ফিরে পাওয়ার কোন পথ নেই ‘হিল্লা’ ব্যতীত। এদের মধ্যে জনৈক টিভি ব্যক্তিত্ব ও দেশ-বিদেশে খ্যাতিমান আলেম বললেন, হানাফী মাযহাবের ফৎওয়া অনুযায়ী আপনার স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে আপনার স্ত্রী তালাক হয়নি। তবে এই ফৎওয়া আমরা দিতে পারব না। যেহেতু আমরা একটি মাযহাবের প্রতিনিধিত্ব করি এজন্য আমাদের জন্য এই ফৎওয়া দেওয়া দুষ্কর। আমি আপনাকে একটি পথ দেখিয়ে দিতে পারি, যাতে আপনি স্ত্রী ফেরত নিতে পারেন। রাজশাহীতে একজন বড় আলেম আছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর। নাম ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। তাঁর নিকটে গেলে তিনি কুরআন-হাদীছের দলীল সহ আপনাকে এ বিষয়ে সঠিক ফৎওয়া দিতে পারবেন।

যেমন পরামর্শ তেমনি কাজ। পরের দিনের বিমান যোগেই তিনি চলে আসেন রাজশাহীতে। একদিন এক রাত থাকেন মারকাযে। প্রথমে আমীরে জামা‘আতের ‘তালাক ও তাহলীল’ বইটা দেওয়া হ’ল। বইটি পাঠেই তার মনে আশার সঞ্চার হ’ল। অতঃপর দারুল ইফতার প্যাডে আমীরে জামা‘আতের স্বাক্ষরিত দলীল ভিত্তিক লিখিত ফৎওয়া পেয়ে তিনি যেন নতুন জীবন ফিরে পেলেন। পরদিনের বিমানে ফিরে গেলেন ঢাকা। ফৎওয়া অনুযায়ী এক তালাকে রাজঈ হওয়ায় স্ত্রী ফিরিয়ে নিলেন। এখনও তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন চলছে।

অবৈধ বিবাহ ভেঙ্গে দিল তাহরীক : জনৈক ব্যক্তি তার বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়েকে বিবাহ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাহরীক স্পষ্ট বলে দেয় যে, সহোদর ভাইয়ের মেয়ের মেয়েকে যেমনভাবে বিবাহ করা হারাম, তেমনি বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়েকেও বিবাহ করা হারাম। এ ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। অন্যথায় তা যেনা হিসাবে বিবেচিত হবে।[4]

২. জনৈক হিন্দু একজন মুসলিম মহিলাকে বিবাহ করেছে এবং তাদের সন্তানও আছে। এ বিবাহ সম্পর্কেও তাহরীকের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘শরী‘আতের দৃষ্টিতে তাদের বিবাহ হয়নি। তারা ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর অন্তর্ভুক্ত। তাদের সন্তান-সন্ততি জারজ সন্তান হিসাবে পরিগণিত।[5]

৩. তিন সন্তানের জনক-জননী। দাম্পত্য জীবনও বেশ ভালই কাটছিল। কিন্তু তারা ছিল দুধ ভাই-বোন। শিশুকালে স্ত্রী তার স্বামীর মায়ের দুধ পান করেছিল। তাহরীকের নিকট জানতে চাইলে এ বিষয়ে স্পষ্ট জওয়াব দেওয়া হয় যে, দুধ বোন হওয়ার কারণে এ বিবাহ বাতিল। এক্ষণে জানার পর উভয়কে পৃথক করে দিতে হবে। অন্যথায় তাদের যেনার পাপ হবে।[6] কি মর্মান্তিক বাস্তবতা। সঠিক ফৎওয়া না জানার কারণে তিন সন্তানের জনক-জননীরও বিবাহ বাতিল হয়ে গেল।

৪. ভাগনীর মেয়ে সম্পর্কে নাতনী হয়। এরূপ নাতনীকে বিবাহ করে স্বামী-স্ত্রী বসবাস করছিল এরা। প্রশ্ন আসলো ফৎওয়া বিভাগে। উত্তর প্রকাশিত হ’ল, মার্চ’০২ সংখ্যায়। জানিয়ে দেওয়া হ’ল এরূপ বিবাহ হারাম। কেননা আল্লাহ তা‘আলা নিজ মেয়ে ও বোনের মেয়েকে হারাম করেছেন (নিসা ৪/২৩)। আর মেয়ে বলতে মেয়ের মেয়ে, তার মেয়ে এরূপ যত নীচে যাবে সবাই অন্তর্ভুক্ত।[7]

এভাবে অনেক হারাম বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায় আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া বিভাগের অবদানে। চলমান পাপ হ’তে নিষ্কৃতি পায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পরিবার। সাবধান হয়ে যায় বহু পাঠক-পাঠিকারা। ফালিল্লাহিল হাম্দ।

হিল্লা থেকে বাঁচালো আত-তাহরীক : মেহেন্দীগঞ্জ বরিশাল : ১১টি পরিবার ভেঙ্গে গেছে হিল্লার ফৎওয়ায়। অবশেষে একটি ফাযিল মাদরাসার জনৈক মাওলানা শিক্ষক এক মজলিসে তিন তালাক দিয়ে নিজেই হিল্লা-র ফাঁদে পড়ে গেলেন। অতঃপর মাদরাসার বড় বড় আলেমরা বসে গেলেন। কোন কুল-কিনারা করতে না পেরে অবশেষে শরণাপন্ন হলেন পাশের নতুন আহলেহাদীছদের কাছে। কিছু দিন পূর্বে যাদের মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থকে পেলেন ‘তালাক ও তাহলীল’ বই। পেলেন আত-তাহরীকের ফৎওয়া ও দরস। বইটি পড়ে তাঁরা একমত হলেন ও নিজেদের এতদিনের ফৎওয়া বাদ দিয়ে সসম্মানে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার ফৎওয়া দিলেন। ফলে জীবন ফিরে পেল ১১ জন মহিলা ও তাদের পরিবার।[8] এভাবে আত-তাহরীক-এর ফৎওয়ার মাধ্যমে দেশের আনাচে-কানাচে হিল্লার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন অসংখ্য মা-বোন।

পরিশেষে সমাজ সংস্কারের যে মহান লক্ষ্য নিয়ে আত-তাহরীক-এর জন্ম হয়েছিল শত বাধা-বিপত্তি ও চড়াই-উৎরাইয়ের মুখেও তাহরীক তার লক্ষ্যমূলে দৃঢ় থেকে সমাজ সংস্কারে নীরব বিপ্লব সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে আত-তাহরীক-এর ফৎওয়া বিভাগ। প্রতি সংখ্যায় ৪০টি দলীল ভিত্তিক ফৎওয়ার মাধ্যমে পাঠকগণ অনেক অজানা বিষয় জানতে পারছেন এবং সে অনুযায়ী জীবন গঠনে সচেষ্ট হচ্ছেন। ফলে ক্রমান্বয়ে বিদ‘আতী সমাজ হেদায়াতী সমাজে পরিণত হচ্ছে। আল্লাহ আমাদের সকলকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী জীবন গড়ার তাওফীক দিন- আমীন!


[1]. আবুদাঊদ হা/৩৬৫১

[2]. নাসাঈ হা/১৫৭৮; ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ হা/১৭৮৫।

[3]. আত-তাহরীক, আগষ্ট’০০, প্রশ্নোত্তর নং ২৪/৩২৪; ফেব্রুয়ারী’০৯, প্রশ্নোত্তর নং ৩৭/১৯৭ফেব্রুয়ারী’১৩, প্রশ্নোত্তর নং ৪০/২০০

[4]. আত-তাহরীক নভেম্বর ’৯৯, প্রশ্নোত্তর নং ২১/৫১

[5]. আত-তাহরীক, জানু-ফেব্রুয়ারী ’০০, প্রশ্নোত্তর নং ৫৪/১৪৪

[6]. আত-তাহরীক, নভেম্বর ২০০০, প্রশ্নোত্তর নং ২৪/৫৯

[7]. আত-তাহরীক, মার্চ’০২, প্রশ্নোত্তর নং ১৬/১৯১

[8]. দ্রঃ ‘তালাক ও তাহলীল পৃঃ ২৩-২৭।





আল্লাহর নিদর্শন (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
আলেমগণের মধ্যে মতভেদের কারণ (শেষ কিস্তি) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
দাওয়াতের ক্ষেত্র ও আধুনিক মাধ্যম সমূহ (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
চিন্তার ইবাদত (শেষ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
সীমালংঘন - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
কুরআনের বঙ্গানুবাদ, মুদ্রণ প্রযুক্তি ও ঊনিশ শতকের মুসলিম সমাজে এর প্রভাব - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
খেয়াল-খুশির অনুসরণ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে কতিপয় ভ্রান্ত আক্বীদা - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
বর্তমান পরিস্থিতিতে ইমামদের দায়িত্ব ও কর্তব্য - তানযীলুর রহমান - শিক্ষক, বাউটিয়া দাখিল মাদ্রাসা, রাজশাহী
শিশুদের চরিত্র গঠনে ‘সোনামণি’ সংগঠনের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ : একটি পর্যালোচনা - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ইবাদতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.