ঘ. হাদীছ লিখতে বারণ ও তার কারণ :
কোন
কোন আলেম ছহীহ মুসলিমের একটি হাদীছকে পুঁজি করে প্রশ্ন তুলতে পারেন যে,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদীছ লিখতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং হাদীছ সংকলন করা
বিদ‘আত। হাদীছটি হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,لاَ تَكْتُبُوْا عَنِّىْ
وَمَنْ كَتَبَ عَنِّىْ غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ، ‘তোমরা আমার থেকে
লিখ না। যে ব্যক্তি আমার থেকে কুরআন ব্যতীত লিখেছে সে যেন তা মুছে ফেলে’।[1]
ইমাম
নববী (রহঃ) উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত
হাদীছের উদ্দেশ্যের বিষয়ে ওলামায়ে কেরাম মতবিরোধ করেছেন। কেউ বলেছেন, এই
হাদীছটি তাদের উদ্দেশ্যে, যারা মুখস্থের উপর নির্ভর করেন এবং লিখলে লেখার
উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কাবোধ করেন। নিম্ন বর্ণিত হাদীছসমূহ প্রমাণ
বহন করে যে, যারা মুখস্থের উপর নির্ভরশীল হ’তে সক্ষম নন তাদের জন্য হাদীছ
লিখে সংরক্ষণ করার অনুমতি রয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আবু শাহকে
লিখে দাও’। আলী (রাঃ)-এর ছহীফা সম্পর্কিত হাদীছ, আমর ইবনু হাযমের প্রতি
প্রেরিত ছহীফা যাতে ফরয, সুন্নাত বিষয়সমূহ, রক্তপণ সম্পর্কিত বিধিবিধান
বর্ণিত ছিল। আনাস ইবনে মালেক (রাঃ)-এর প্রতি খলীফা আবু বকর (রাঃ)-এর
পুস্তিকা যখন তাকে বাহরায়নের গভর্নর নিযুক্ত করেছিলেন, যাতে ছাদাক্বা ও
যাকাতের নিছাব সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা ছিল। আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর হাদীছ
যাতে তিনি বলেছেন, আমর ইবনুল ‘আছ হাদীছ লিখতেন, আমি লিখতাম না এবং এছাড়াও
অন্যান্য হাদীছসমূহ। আবার কেউ কেউ বলেছেন, উল্লিখিত হাদীছসমূহ দ্বারা হাদীছ
লিখার নিষেধাজ্ঞার হাদীছটি মানসূখ হয়ে গেছে। কুরআনের সাথে সংমিশ্রণের যখন
আশঙ্কা ছিল এ নিষেধাজ্ঞা সে সময়ের জন্য ছিল, যখন এ আশঙ্কা থেকে নিরাপদ লাভ
করেছে, তখন লেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, মূলতঃ এ
নিষেধাজ্ঞা ছিল একই খাতায় বা বস্ত্ততে কুরআন ও হাদীছ উভয়টি লেখার বিষয়ে।
যাতে সংমিশ্রণের আশঙ্কা ছিল এবং একটি ছহীফাতে উভয়টি লিখলে ক্বারী বা পাঠক
তা একই বস্ত্ত মনে করত। তবে এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলাই সর্বাধিক জ্ঞাত’।[2]
আল্লামা ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) লিখেছেন যে,
أَنَّ النَّهْيَ خَاصٌّ بِوَقْتِ نُزُولِ الْقُرْآنِ خَشْيَةَ الْتِبَاسِهِ بِغَيْرِهِ
وَالْإِذْنَ فِي غَيْرِ ذَلِكَ أَوْ أَنَّ النَّهْيَ خَاصٌّ بِكِتَابَةِ غَيْرِ الْقُرْآنِ مَعَ الْقُرْآنِ فِي شَيْءٍ وَاحِدٍ وَالْإِذْنَ فِي تَفْرِيقِهِمَا أَوِ النَّهْيَ مُتَقَدِّمٌ وَالْإِذْنَ نَاسِخٌ لَهُ عِنْدَ الْأَمْنِ مِنَ الِالْتِبَاسِ وَهُوَ أَقْرَبُهَا مَعَ أَنَّهُ لَا يُنَافِيهَا وَقِيلَ النَّهْيُ خَاصٌّ بِمَنْ خُشِيَ مِنْهُ الِاتِّكَالُ عَلَى الْكِتَابَةِ دُونَ الْحِفْظِ وَالْإِذْنُ لِمَنْ أُمِنَ مِنْهُ ذَلِكَ وَمِنْهُمْ مَنْ أَعَلَّ حَدِيثَ أَبِي سَعِيدٍ وَقَالَ الصَّوَابُ وَقْفُهُ عَلَى أَبِي سَعِيدٍ قَالَهُ الْبُخَارِيُّ وَغَيْرُهُ-
‘হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞাটি কুরআন অবতীর্ণ হওয়াকালীন সময়ের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, এই আশঙ্কায় যাতে কুরআনের সাথে হাদীছের সংমিশ্রণ না ঘটে। এতদ্ব্যতীত অন্য সময়ের জন্য অনুমতি ছিল। অথবা নিষেধাজ্ঞাটি ছিল কুরআন ও হাদীছ একই বস্ত্ততে লেখার ক্ষেত্রে (কেননা এতে সংমিশ্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে), তবে ভিন্ন ভিন্ন বস্ত্ততে লেখাতে কোন আপত্তি ছিল না। অথবা প্রথমে নিষেধ করা হয়েছিল, অতঃপর সংমিশ্রণের আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা লাভের পর লেখার অনুমতি দানের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞাকে রহিত করা হয়েছে। আমার দৃষ্টিতে প্রথম দুই অভিমতের চেয়ে এটিই সঠিকতার অধিক নিকটবর্তী। অথবা লেখার নিষেধাজ্ঞাটি শুধু সে সকল লোকের জন্য ছিল যাদের পক্ষে লেখার উপর নির্ভর করে হেফযকে ত্যাগ করার আশঙ্কা ছিল। আর অনুমতি সে সকল লোকের জন্য যাদের পক্ষে এরূপ আশঙ্কা ছিল না।
ইমাম
বুখারী (রহঃ) ও অন্যান্য কতিপয় ইমামের মতে, আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত
হাদীছটি মারফূ‘ হাদীছ নয় বরং মাওকূফ তথা তার নিজস্ব উক্তি’।[3]
রাসূলুল্লাহ
(ছাঃ) ছিলেন উম্মতের রূহানী শিক্ষক। তাই তিনি স্থান, কাল, পাত্রভেদে
অবস্থার পরিপেক্ষিতে একই বিষয়ে কখনও ইতিবাচক আবার কখনও নেতিবাচক নির্দেশ
দিয়েছেন। যেমন মুত‘আহ বিবাহ। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুত‘আহ বিবাহের অনুমতি
দিয়েছিলেন।[4] কিন্তু খায়বরের যুদ্ধের দিন একে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।[5] অতঃপর মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশকালে সাময়িকের জন্য মুত‘আহ বিবাহকে বৈধ ঘোষণা করেন।[6] কিন্তু মক্কা বিজয়ের পর ক্বিয়ামত অবধি মুত‘আহ বিবাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।[7]
অনুরূপভাবে বিশেষ অবস্থার পরিপেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদীছ লিখতে নিষেধ করেছিলেন এবং সেই বিশেষ অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় আবার তিনিই হাদীছ লিখতে অনুমতি দিয়েছেন, এমনকি নির্দেশও দিয়েছেন। ইতিপূর্বে এ বিষয়ে প্রামাণ্য দলীলসহ আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং হাদীছ সংকলন বিদ‘আত বা বিদ‘আতে হাসানাহ কোনটিই নয়। কেউ কেউ আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত হাদীছটিকে পুঁজি করে বলেন, যেহেতু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদীছ লিখতে নিষেধ করেছেন, তারপরেও প্রয়োজনের তাকিদে হাদীছ সংকলন করা হয়েছে সেহেতু ইহা বিদ‘আতে হাসানাহ। এ অভিমতটিও সঠিক নয়। কেননা হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞাটি যদি মানসূখ নাও হয়ে থাকে তথাপিও হাদীছ সংকলন করাটা বিদ‘আতে হাসানাহ বা সাইয়্যিয়াহ কোনটিই নয়। কেননা যে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকে সেটা বিদ‘আত হয় কিভাবে? মূলতঃ হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞার হাদীছটি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রাথমিক যুগের এবং লেখার অনুমতি সম্বলিত হাদীছগুলো তাঁর শেষ যামানার। যেমন আবু শাহ (রাঃ)-কে হাদীছ লিখে দেয়ার জন্য ছাহাবীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন মক্কা বিজয়ের দিনে[8] এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বয়ং হাদীছ লিখে দেয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছিলেন একেবারে তার অন্তিম শয্যায় অর্থাৎ মৃত্যুর মাত্র ৪দিন পূর্বে।[9] সুতরাং প্রমাণিত হ’ল যে, হাদীছ লেখার নিষেধাজ্ঞার হাদীছটি মানসূখ হয়ে গেছে এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদীছ লিখতে অনুমতি ও নির্দেশ দিয়েছেন।
চ. জামা‘আতবদ্ধ তারাবীহ :
জামা‘আতবদ্ধ তারাবীহ ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং নিজেই একে نعم البدعة هذه ‘কতই না সুন্দর বিদ‘আত এটি’[10] বলে মন্তব্য করেছেন। সুতরাং জামা‘আতবদ্ধ তারাবীহ বিদ‘আতে হাসানাহ।
পর্যালোচনা : জামা‘আতবদ্ধ তারাবীহ বিদ‘আত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বয়ং জামা‘আতবদ্ধভাবে তারাবীহর ছালাত আদায় করেছেন। অতঃপর ফরয হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় জামা‘আত পরিত্যাগ করেছেন।[11] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যর পর ফরয হওয়ার আশঙ্কা দূরীভূত হয়ে যাওয়ায় ছাহাবীগণ মসজিদে খন্ড খন্ড জামা‘আত সহকারে তারাবীহর ছালাত আদায় করেন। ওমর (রাঃ) এ বিক্ষিপ্ত জামা‘আত গুলোকে এক ইমামের পিছনে একত্রিত করেছেন মাত্র। আব্দুর রহমান ইবনু আব্দুল ক্বারী বলেন,
خَرَجْتُ مَعَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رضى الله عنه لَيْلَةً فِى رَمَضَانَ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَإِذَا النَّاسُ أَوْزَاعٌ مُتَفَرِّقُوْنَ يُصَلِّى الرَّجُلُ لِنَفْسِهِ، وَيُصَلِّى الرَّجُلُ فَيُصَلِّى بِصَلاَتِهِ الرَّهْطُ فَقَالَ عُمَرُ إِنِّى أَرَى لَوْ جَمَعْتُ هَؤُلاَءِ عَلَى قَارِئٍ وَاحِدٍ لَكَانَ أَمْثَلَ. ثُمَّ عَزَمَ فَجَمَعَهُمْ عَلَى أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ-
‘আমি রামাযানের এক রাতে ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব
(রাঃ)-এর সাথে মসজিদে নববীতে গিয়ে দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামা‘আতে
বিভক্ত। কেউ একাকী ছালাত আদায় করছে, আবার কোন ব্যক্তি ছালাত আদায় করছে এবং
একতেদা করে একদল লোক ছালাত আদায় করছে। ওমর (রাঃ) বললেন, আমি মনে করি যে, এই
লোকদের যদি আমি একজন ক্বারীর (ইমামের) পিছনে জমা করে দেই, তবে তা উত্তম
হবে। এরপর তিনি উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর পিছনে সকলকে জমা করে দিলেন’।[12]
এখন
থাকল, পুরো রামাযান মাস জামা‘আতবদ্ধভাবে তারাবীহ ছালাত আদায়ের বিষয়টি।
এটিও বিদ‘আত নয়। কারণ এটি খুলাফায়ে রাশেদীন ও ছাহাবীদের আমল। সুতরাং তা
বিদ‘আত নয়, বরং সুন্নাত।[13]
ছাহাবীগণ ছিলেন
দ্বীন সংরক্ষণের অতন্দ্রপ্রহরী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর সাথে ছাহাবীগণকেও
ইসলামী শারী‘আতের মানদন্ড হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, বনী ইসরাঈলগণ
৭২ দলে বিভক্ত ছিল। আর আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তারা সকলেই
জাহান্নামী হবে। কেবল একটি দল ব্যতীত। ছাহাবীগণ বললেন, তারা কারা? তিনি
বললেন, مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِيْ ‘আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে
আছি, তারা’।[14]
সুতরাং ওমর (রাঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও সমস্ত ছাহাবীগণ কর্তৃক মেনে নেয়া আমল জামা‘আতবদ্ধ তারাবীহ্কে বিদ‘আত বলা দুঃসাহস বৈকি?
প্রশ্ন
থেকে যায় যে, ওমর (রাঃ) কেন একে نعم البدعة هذه বলে মন্তব্য করলেন? এর
জবাব হ’ল, আরবী ভাষায় শব্দসমূহ সর্বদা একই অর্থে ব্যবহৃত হয় না।
স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। ওমর (রাঃ) এখানেالبدعة
শব্দটিকে শাব্দিক অর্থে ব্যবহার করেছেন, পারিভাষিক অর্থে নয়।[15]
ছ. ইসলামী গ্রন্থাবলী রচনা :
ইসলামী
গ্রন্থাবলী রচনা করা বিদ‘আত। এ দাবীও সঠিক নয়। কেননা এটি দ্বীন প্রচারের
একটি মাধ্যম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,بَلِّغُوْا عَنِّىْ وَلَوْ آيَةً
‘আমার পক্ষ হ’তে একটি বাক্য হ’লেও পৌঁছে দাও’।[16]
উক্ত হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কুরআন ও হাদীছের বাণী মানুষের নিকট পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পৌঁছানোর মাধ্যম তিনি বলেননি। বিধায় কুরআন-হাদীছের বাণী মানুষের নিকট পৌঁছানোর সকল পথ ও পন্থা অবারিত। অর্থাৎ ইলম শিক্ষাদান, বক্তব্য, উপদেশ, লেখনি, ইন্টারনেট, ফেইসবুকসহ প্রাচীন ও আধুনিক যে কোন পদ্ধতিতে কুরআন-হাদীছ প্রচার করলে তা সুন্নাত হিসাবে গণ্য হবে, এটা বিদ‘আত নয়। আর গ্রন্থ রচনার মাধ্যম হ’ল কলম। যা আল্লাহ সর্বপ্রথম সৃষ্টি করেছেন।[17] অপরদিকে আল্লাহ সর্বপ্রথম নির্দেশ দিয়েছেন পড়ার জন্য। আর পড়ার মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ করেছেন কলমকে (আলাক্ব ১-৫)।
আল্লাহ তা‘আলা কলম ও লেখকের লেখার মর্যাদা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُوْنَ ‘কলমের ক্বসম আর লেখকেরা যা লেখে তার ক্বসম’ (কলম-১)।
উল্লিখিত আয়াত ও হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কলম ও কলম দ্বারা লেখার বিষয়টি সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যাবধি চলে এসেছে। সুতরাং এতে নতুনত্বের কিছুই নেই বরং এটি সবচেয়ে প্রাচীন একটি বিষয়। সুতরাং ইসলামী গ্রন্থ রচনা করা বিদ‘আত নয়।
জ. মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা :
মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করাকেও বিদ‘আত দাবী করা চরম অজ্ঞতা ও মূর্খতার পরিচায়ক। কেননা উম্মতে মুহাম্মদীর প্রতি মহান আল্লাহর সর্বপ্রথম নির্দেশ اقرأ ‘পড়’। কুরআনের সর্বপ্রথম অবতীর্ণ আয়াতসমূহ হ’ল-اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ، خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ، اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ، الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ، عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ، ‘পড়, তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট বাঁধা রক্তপিন্ড হ’তে। পড়, তোমার প্রতিপালক মহামহিম। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষাদান করেছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতো না’ (আলাক্ব ১-৫)। অন্যত্র তিনি বলেন, قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِيْنَ يَعْلَمُوْنَ وَالَّذِيْنَ لاَ يَعْلَمُوْنَ- ‘বল, যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান? (যুমার-৯)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ ‘ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয’।[18]
তিনি আরো বলেন,
مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَطْلُبُ فِيْهِ عِلْمًا سَلَكَ اللهُ بِهِ طَرِيْقًا مِنْ طُرُقِ الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ الْعِلْمِ وَإِنَّ الْعَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِى السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِى الأَرْضِ وَالْحِيتَانُ فِىْ جَوْفِ الْمَاءِ وَإِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ وَإِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوْا دِيْنَارًا وَلاَ دِرْهَمًا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ-
‘যে
ব্যক্তি (কুরআন ও হাদীছের) ‘ইলম সন্ধানের উদ্দেশ্যে কোন পথ অবলম্বন করে,
আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতের পথসমূহের একটি পথে পৌঁছিয়ে দিবেন এবং
ফেরেশতামন্ডলী ‘ইলম অনুসন্ধানকারীর সন্তুষ্টি এবং পথে তার আরামের জন্য
তাদের পালক বা ডানা বিছিয়ে দেন। অতঃপর আলিমদের জন্য আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর
সকলেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও দো‘আ করতে থাকেন, এমনকি পানির
মাছসমূহও (ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে)। আলিমদের মর্যাদা ইবাদাতকারীর চেয়ে
অনেক বেশী। যেমন পূর্ণিমা চাঁদের মর্যাদা তারকারাজির উপর। আলিমগণ হচ্ছেন
নবীগণের ওয়ারিছ। নবীগণ কোন দীনার বা দিরহাম (ধন-সম্পদ) উত্তরাধিকারী হিসাবে
রেখে যান না। তাঁরা মীরাছ হিসাবে রেখে যান শুধুমাত্র ইলম। তাই যে ব্যক্তি
ইলম অর্জন করেছে সে পূর্ণ অংশ গ্রহণ করেছে’।[19]
পবিত্র কুরআনের উল্লিখিত আয়াতসমূহ ও হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা ফরয। তবে দ্বীনী ইলম কিভাবে বা কি পদ্ধতিতে অর্জন করবে সেটা একান্তই নিজস্ব ব্যাপার। অর্থাৎ মাদরাসা, মক্তব, মসজিদ, শিক্ষক, গ্রন্থপাঠ, পত্রিকা-জার্নাল, ইসলামী জালসা, আধুনিককালে ইন্টারনেট, ফেইসবুক, ইউটিউবসহ যে কোন মাধ্যমে ইলম অর্জন করা যাবে।
আর মাদরাসা হ’ল দ্বীনী ইলম শিক্ষা প্রদান ও গ্রহণের একটি অন্যতম মাধ্যম। সুতরাং মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা বিদ‘আত নয়। উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছাহাবীদেরকে নির্দিষ্ট জায়গায় একত্রিত করে দ্বীনী ইলম শিক্ষা দিতেন। যেমন, দারুল আরকাম ও মসজিদে নববী প্রভৃতি। মূলতঃ দারুল আরকামের বৃহত্তর পরিসর বা আধুনিকায়ন হ’ল মাদরাসা। যারা মাদরাসাকে বিদ‘আতে হাসানাহ প্রমাণের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে, তারাই বলে থাকে যে, মসজিদ আল্লাহর ঘর আর মাদরাসা নবীর ঘর। সুতরাং নবীর ঘর প্রতিষ্ঠা করা সুন্নাত না হয়ে বিদ‘আতে হয় কিভাবে?
ঝ. পাকা মসজিদ নির্মাণ করা :
অনেকে পাকা মসজিদ নির্মাণ করাকে বিদ‘আতে হাসানার উদাহরণ হিসাবে পেশ করে থাকে। এটা অজ্ঞতা ও ধর্মীয় জ্ঞানের দীনতা বৈকি? কারণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পাকা মসজিদ নির্মাণ করেছেন। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) মসজিদে নববী নির্মাণের ঘটনা বর্ণনায় বলেন,
كُنَّا نَحْمِلُ لَبِنَةً لَبِنَةً، وَعَمَّارٌ لَبِنَتَيْنِ لَبِنَتَيْنِ، فَرَآهُ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم فَيَنْفُضُ التُّرَابَ عَنْهُ وَيَقُوْلُ وَيْحَ عَمَّارٍ تَقْتُلُهُ الْفِئَةُ الْبَاغِيَةُ، يَدْعُوْهُمْ إِلَى الْجَنَّةِ، وَيَدْعُوْنَهُ إِلَى النَّارِ. قَالَ يَقُولُ عَمَّارٌ أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الْفِتَنِ-
‘আমরা একটা করে কাঁচা ইট বহন করছিলাম আর আম্মার (রাঃ) দু’টি করে কাঁচা ইট বহন করছিলেন। নবী করীম (ছাঃ) তা দেখে তাঁর দেহ হ’তে মাটি ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন, আম্মারের জন্য আফসোস, বিদ্রোহী দল তাকে হত্যা করবে। সে তাদেরকে আহবান করবে জান্নাতের দিকে আর তারা তাকে আহবান করবে জাহান্নামের দিকে’।[20] সুতরাং পাকা মসজিদ নির্মাণ করা বিদ‘আত- এরূপ প্রচারণা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও চরম মিথ্যাচার।
মসজিদে নববী প্রথমে খেজুর গাছের গুঁড়ি ও তার পাতা দিয়ে নির্মাণ করা হয় এবং চার বছর পর এটি ইট দ্বারা নির্মিত হয়।[21] এর দু’বাহুর স্তম্ভগুলো ছিল পাথরের, দেয়াল কাঁচা ইটের, মেঝে ছিল বালু সমেত ছোট ছোট কংকর বিছানো।[22]
মসজিদে নববী নির্মাণ প্রসঙ্গে আনাস (রাঃ) বলেন,
فَأَمَرَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم بِقُبُوْرِ الْمُشْرِكِيْنَ فَنُبِشَتْ، ثُمَّ بِالْخَرِبِ فَسُوِّيَتْ، وَبِالنَّخْلِ فَقُطِعَ، فَصَفُّوا النَّخْلَ قِبْلَةَ الْمَسْجِدِ، وَجَعَلُوْا عِضَادَتَيْهِ الْحِجَارَةَ، وَجَعَلُوْا يَنْقُلُوْنَ الصَّخْرَ، وَهُمْ يَرْتَجِزُوْنَ، وَالنَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم مَعَهُمْ وَهُوَ يَقُوْلُ اللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَه-
‘নবী
করীম (ছাঃ)-এর নির্দেশে মুশরিকদের কবর খুঁড়ে ফেলা হ’ল, অতঃপর ভগ্নাবশেষ
সমতল করে দেয়া হ’ল, খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলা হ’ল। অতঃপর মাসজিদের ক্বিবলায়
সারিবদ্ধ করে রাখা হ’ল এবং তার দুই পাশে পাথর বসানো হ’ল। ছাহাবীগণ পাথর
তুলতে তুলতে ছন্দোবদ্ধ কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। আর নবী করীম (ছাঃ)ও তাঁদের
সাথে ছিলেন। তিনি তখন বলছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আখেরাতের কল্যাণ ব্যতীত
(প্রকৃত) আর কোন কল্যাণ নেই। তুমি আনছার ও মুহাজিরগণকে ক্ষমা কর’।[23]
উল্লিখিত হাদীছসমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইট-পাথর দিয়ে মসজিদে নববী নির্মাণ করেছেন। সুতরাং পাকা মসজিদ নির্মাণ করা বিদ‘আত নয়।
ঞ. জুম‘আর ডাক আযান :
কেউ কেউ জুম‘আর ডাক আযানকে বিদ‘আতে হাসানার উদাহরণ হিসাবে পেশ করে থাকেন। তাদের দাবী যে, একে সকল মুসলমান সানন্দে গ্রহণ করেছেন। ভাবখানা এমন যে, জুম‘আর ডাক আযানের এ বিদ‘আত ব্যতীত শরী‘আত অচল। সুতরাং বিদ‘আতে হাসানাহ মানতে সকলেই বাধ্য।
এ দাবীর মাধ্যমেও দাবীদাররা অজ্ঞতার পরিচয়
দিয়েছেন। কেননা খুলাফায়ে রাশদীনের প্রবর্তিত আমল বিদ‘আত হয় কিভাবে? অথচ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের সুন্নাতও অাঁকড়ে ধরতে নির্দেশ দিয়েছেন।[24]
এ কথা সর্বজন বিদিত যে, জুম‘আর ডাক আযান প্রবর্তন করেছেন তৃতীয় খলীফা ওছমান (রাঃ)। জাবের বিন ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন,
كَانَ النِّدَاءُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوَّلُهُ إِذَا جَلَسَ الإِمَامُ عَلَى الْمِنْبَرِ عَلَى عَهْدِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِى بَكْرٍ وَعُمَرَ رضى الله عنهما فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ رضى الله عنه وَكَثُرَ النَّاسُ زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى الزَّوْرَاءِ، قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ الزَّوْرَاءُ مَوْضِعٌ بِالسُّوقِ بِالْمَدِينَةِ،
‘নবী
করীম (ছাঃ), আবূ বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)-এর যুগে জুম‘আর দিন ইমাম যখন
মিম্বরের উপরে বসতেন, তখন আযান দেয়া হ’ত। পরে যখন ওছমান (রাঃ) খলীফা হ’লেন
এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি ‘যাওরাহ’ হ’তে তৃতীয় আযান বৃদ্ধি করেন।
আবূ আব্দুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, ‘যাওরাহ’ হ’ল মদীনার অদূরে একটি
বাযার’।[25]
বর্তমান সমাজে এ আযান যেভাবে
দেয়া হয় তা প্রকারান্তরে বিদ‘আতেরই পর্যায়ভুক্ত হয়ে যায়। কেননা ওছমান (রাঃ)
মসজিদে দু’বার আযান প্রবর্তন করেননি। বরং মসজিদে নববী থেকে বেশ দূরে
‘যাওরা’ নামক বাযারে কর্মব্যস্ত মানুষকে জুম‘আর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য
এ আযান চালু করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সে আযানকে মসজিদে দেওয়া হচ্ছে।
এখনও যদি এমন বাজার থাকে যেখানে জামে মসজিদ নেই, সেখানে এ ডাক আযান দিলে
সেটি ওছমান (রাঃ) প্রবর্তিত সুন্নাতী ডাক আযান হিসাবে গণ্য হবে।[26]
পরিশেষে বলব, যার দৃষ্টান্ত রাসূলের যুগে ও ছাবায়ে কেরামের আমলে রয়েছে, তা বিদ‘আত নয়। আবার তাকে বিদ‘আতে হাসানাহ দাবী করে নিজেদের আচরিত সুন্নাত বিরোধী আমলকে যায়েজ করার অযুহাত খাড়া করার চেষ্টা করার ফল ইহ ও পরকারে শুভ হবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নাতের উপরে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুন-আমীন!
[1]. মুসলিম হা/৩০০৪ ‘দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণহীনতা ও মর্মস্পর্শী বিষয়সমূহ’ অধ্যায়।
[2]. নববী, শরহুে ছহীহ মুসলিম ১৮/১২২পৃঃ।
[3]. ফাতহুল বারী ১/২৫৩পৃঃ।
[4]. বুখারী হা/৫১১৭, ৫১১৮; মুসলিম হা/১৪০৫।
[5]. বুখারী হা/৪২১৬, ৫১১৫, ৫৫২৩, ৬৯৬১; মুসলিম হা/১৪০৭।
[6]. মুসলিম হা/১৪০৬; ই.ফা ৩২৯০; ই.সে ৩২৮৮।
[7]. মুসলিম হা/১৪০৬; ই.ফা ৩২৯৬; ই.সে ৩২৯৪।
[8]. বুখারী হা/১১২, ২৪৩৪; মুসলিম হা/১৩৫৫; আবু দাঊদ হা/২০১৭; ছহীহ তিরমিযী হা/২৬৬৭; ইবনু হিববান হা/৩৭১৫।
[9]. বুখারী হা/৭৩৬৬; মুসলিম হা/১৬৩৭; মিশকাত হা/৫৯৬৬।
[10]. বুখারী হা/২০১০; মুয়াত্তা হা/৩৭৮; মিশকাত হা/১২২৭।
[11]. বুখারী হা/২০১২, ১১২৯; মুসলিম হা/১৭৮; মিশকাত হা/১২৯৫।
[12]. বুখারী হা/২০১০; মুয়াত্তা হা/৩৭৮; মিশকাত হা/১২২৭।
[13]. আবু দাঊদ হা/৪৬০৭; তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪২; মুসনাদে আহমাদ হা/১৬৬৯৪; মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ।
[14]. তিরমিযী হা/২৬৪১; ছহীহুল জামি‘ হা/৫৩৪৩; মিশকাত হা/১৭১।
[15]. ইকতিয়াউছ ছিরাতিল মুস্তাক্বীম ২/৯৫ পৃঃ; মির‘আতুল মাফাতীহ ৪/৩২৭; ছালাতুত তারাবীহ, পৃঃ ১৩।
[16]. বুখারী হা/৩৪৬১ ‘নবীগণের হাদীছ’ অধ্যায়; তিরমিযী হা/২৬৬৯।
[17]. তিরমিযী হা/২১৫৫; ছহীহুল জামে‘ হা/২০১৭; মিশকাত হা/৯৪।
[18]. ইবনু মাজাহ হা/২২৪; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৯১৩, ৩৯১৪; মিশকাত হা/২১৮।
[19]. আবু দাঊদ হা/৩৬৪১; তিরমিযী হা/২৬৮২; ইবনু মাজাহ হা/২২৩; ছহীহুত তারগীব হা/৭০; মিশকাত হা/১১২।
[20]. বুখারী হা/৪৪৭ ‘ছালাত’ অধ্যায়, ‘মসজিদ নিমার্ণে সহযোগিতা’ অনুচ্ছেদ; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৭০৭৯ ।
[21]. ফৎহুল বারী হা/৩৯০৬ ও ৩৫৩৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[22]. সীরাতুর রাসূল (ছাঃ), পৃঃ ২৬০।
[23]. বুখারী হা/৪২৮ ‘ছালাত’ অধ্যায়; নাসাঈ হা/৭০১; আবূ দাঊদ হা/৪৫৩।
[24]. আবু দাঊদ হা/৪৬০৭; তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ (ইন্ডিয়ান ছাপা) পৃঃ ৫; মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ।
[25]. বুখারী হা/৯১২; ‘জুম‘আহ’ অধ্যায়; মিশকাত হা/১৪০৪।
[26]. বুখারী হা/৯১২; তিরমিযী হা/৫১৬; ইবনু মাজাহ হা/১১৩৫; মিশকাত হা/১৪০৪।