পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ ।

দিরঈইয়া : ১১৫৭ হিঃ/১৭৪৬ খৃষ্টাব্দে তিনি উয়ায়না[1] থেকে বের হয়ে এক স্বাধীনচেতা আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদের শাসনাধীন ছোট্ট নগরী ‘দিরঈইয়া’-তে উপস্থিত হ’লেন[2] এবং স্বীয় ছাত্র আহমাদ ইবনু সুওয়াইলিমের গৃহে আশ্রয় নিলেন। শীঘ্রই আশ-পাশের অঞ্চলসমূহে তার আগমনের খবর ছড়িয়ে পড়ল। আম জনসাধারণ জ্ঞানার্জনের জন্য এই গৃহে জড়ো হতে শুরু করল। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর আবাসস্থল তাওহীদের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হ’ল। এই ধাপে এসে তাঁর সংস্কার আন্দোলন দাওয়াতের ময়দান ছেড়ে ইলমী ময়দানে এসে উপনীত হয়। ইতোমধ্যে তাঁর খ্যাতির কথা পৌঁছে গেল আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদের দরবারেও। তাঁর সুখ্যাতির কথা জানতে পেরে আমীর মুহাম্মাদ সাগ্রহে স্বয়ং শায়খের দরসগাহে উপস্থিত হলেন[3] এবং তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বললেন, أبشر ببلاد خير من بلادك وأبشر بالعز والمنعة- ‘আপনাকে খোশ আমদেদ, আপনার দেশের চেয়ে উত্তম এই দেশে। আমি আপনার জন্য মর্যাদা ও প্রতিরক্ষার সুসংবাদ দিচ্ছি।’ জবাবে শায়খ দৃঢ়কণ্ঠে বললেন,وأنا أبشرك بالعز والتمكين والنصر المبين وهذه كلمة التوحيد وأول ما دعت إليه الرسل من أولهم إلى آخرهم، من تمسك بها وعمل بها ونصرها ملك بها البلاد والعباد- ‘আর আমি আপনাকে সুসংবাদ দিচ্ছি মর্যাদা লাভ, ক্ষমতা অর্জন ও সুস্পষ্ট বিজয়ের। এই সেই তাওহীদের কালেমা; যার দিকে সর্বপ্রথম রাসূলগণ আহবান জানিয়েছিলেন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই। যে ব্যক্তি তা দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে ও আমলে পরিণত করবে এবং তা প্রতিষ্ঠার জন্য সহযোগিতা করবে, সে রাজ্যসমূহ ও জনগণের উপর ক্ষমতা লাভ করবে।’[4] অতঃপর তিনি তাওহীদ ও শিরকের উপর নাতিদীর্ঘ বক্তব্য রাখলেন। তাঁর তেজোদীপ্ত ভাষণে আমীর মুহাম্মাদ বিমোহিত হয়ে পড়লেন এবং হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, يا شيخ إن هذا دين الله ورسوله الذي لا شك فيه وأبشر بالنصر لك ولما أمرت به والجهاد لمن خالف التوحيد ‘হে শায়খ! নিঃসন্দেহে এটাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রচারিত দ্বীন। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন যে, আপনি যা নির্দেশ করবেন সে ব্যাপারে আমি আপনার সহযোগিতায় থাকব এবং তাওহীদের বিরোধীদের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্যও প্রস্ত্তত থাকব’।[5] অতঃপর তিনি শায়খের হাতে হাত রেখে বায়‘আত গ্রহণ করে স্বীয় রাজ্যে আমর বিল মা‘রূফ ও নাহি ‘আনিল মুনকারের অনুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং কিতাব ও সুন্নাত অনুযায়ী জীবন পরিচালনার জন্য অঙ্গিকারাবদ্ধ হ’লেন। ১৭৪৬ খৃষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত এই ঐতিহাসিক বায়‘আতই ‘দিরঈইয়া চুক্তি’ হিসাবে পরিচিত, যা দুই মুহাম্মাদের ভাগ্যকে একসূত্রে গ্রথিত করে দিয়েছিল।[6] আর এর মাধ্যমেই আরব উপদ্বীপের ধর্মীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ইতিহাস এক নতুন মোড় নিল। সূচনা হ’ল আধুনিক ইসলামী রেনেসাঁ ও আরবীয় গণজাগরণের পাদপীঠে এক গৌরবোজ্জ্বল যুগান্তকারী অধ্যায়ের।[7]

এই চুক্তির পর ছোট্ট দিরঈইয়া রাজ্য অতি শীঘ্রই ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতির দিকে ধাবিত হতে লাগল। আর রাষ্ট্রশক্তির আনুকূল্য শায়খের দাওয়াতী তৎপরতাকেও বাধামুক্ত করে দিল। ফলে নাজদের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষের ঢল নামা শুরু হ’ল তার দরসগাহে। সাধারণ মানুষের মধ্যে তাওহীদের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে তিনি খুব সহজ-সরল ভাষায় সবকিছু উপস্থাপন করতেন। যেমন ইসলামের প্রথম কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর মর্মকথা তিনি এভাবে বুঝাতেন- ‘লা ইলাহা’ অর্থাৎ ‘নেই কোন ইলাহ’ দ্বারা যাবতীয় উপাস্যকে[8] বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, আর ‘ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহ ব্যতীত’ দ্বারা কেবলমাত্র এক আল্লাহর জন্যই সকল ইবাদত সাব্যস্ত করা হয়েছে, যার কোন শরীক নেই। সুতরাং তাওহীদের অপরিহার্যতা ও শিরক বর্জনের আবশ্যকতা বুঝার জন্য কেবল এই কালেমার মূলকথা বুঝাই যথেষ্ট।[9]

তিনি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন রাজ্যসমূহের প্রশাসনিক দায়িত্বশীলদেরকে পত্র প্রেরণ শুরু করলেন।[10] পরবর্তী দু’টি বছরও তিনি ব্যস্ত থাকলেন একাধারে দরস-তাদরীস, ইলমী বিতর্ক, আলেম-ওলামা, আমীর-ওমারাদের কাছে চিঠি-পত্র প্রেরণ, পুস্তিকা প্রণয়ন প্রভৃতিতে। নাজদ সহ রিয়ায, আল-ক্বাছীম, হায়েল, সুদায়ের, আহসা, মক্কা, মদীনাসহ আরবের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর দাওয়াত পৌঁছে গেল। হজ্জের সময় আগত হাজীদের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে তথা মিসর, সুদান, সিরিয়া, ইরাক, ইয়ামান, ভারতবর্ষ প্রভৃতি শিরক-বিদ‘আত অধ্যুষিত এলাকায় তাঁর দাওয়াত ছড়িয়ে পড়ল।[11] সাধারণ মানুষের মত অনেক আলেম-ওলামাও তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এলেন। ১১৫৮ হিজরীতে পার্শ্ববর্তী উয়ায়না রাজ্যের আমীর ওছমান তাঁর হাতে বায়‘আত গ্রহণ করেন এবং স্বীয় রাজ্যে ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েমের অঙ্গীকার করেন। এছাড়া হুরায়মিলা ও মানফূহার অধিবাসীরাও তাঁর হাতে বায়‘আত গ্রহণ করল।[12] এভাবে জাযীরাতুল আরবে ওয়াহ্হাবী আন্দোলন এক মযবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে গেল।

যদিও মুহাম্মাদ বিন সঊদ ছিলেন দিরঈইয়ার প্রশাসনিক প্রধান, তবে কার্যতঃ শায়খই ছিলেন এই রাজ্যের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী। রাজ্যের সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হ’ত তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদলের সাথে তিনিই রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসাবে সাক্ষাৎ করতেন।[13] এভাবে বাতাস যখন এ আন্দোলনের অনুকূলে প্রবাহিত হচ্ছিল, চতুর্দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছিল হক্বের দাওয়াত, মানুষ বিমুগ্ধচিত্তে অবলোকন করছিল নতুন এই আন্দোলনের অভূতপূর্ব ফলাফল; তখন এই নাজদ এবং আরব উপদ্বীপেরই বিভিন্ন অঞ্চলে ঈর্ষান্বিত বিদ‘আতপন্থী আলেম-ওলামা, বিভ্রান্ত আমল-আক্বীদার শিখন্ডী ছূফী কবরপুজারী এবং রাজনৈতিক ক্ষমতাধর আমীর-ওমারা তাঁর চূড়ান্ত বিরোধিতায় লিপ্ত হ’ল। তারা তাঁকে খারেজী, কাফের, বিদ‘আতী নানা অপবাদ দিয়ে সাধারণ মানুষকে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলল এবং এ আন্দোলনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি সংঘাতের চক্রান্ত করল।[14] আল্লামা রশীদ রেযা বলেন, فنهدت لمناهضته واضطهاده القُوى الثلاث: قوة الدولة والحكام، وقوة أنصارها من علماء النفاق، وقوة العوام الطغاة، وكان أقوى سلاحهم في الرد عليه أنه خالف جمهور المسلمين- ‘তাঁর বিরোধিতায় যে তিনটি শক্তির উদ্ভব ঘটেছিল, তারা হ’ল- ১. রাষ্ট্রশক্তি ও প্রশাসনযন্ত্র, ২. সরকারের লেজুড় মুনাফিক আলেম-ওলামা, ৩. উগ্র জনসাধারণ। তাঁর বিরোধিতায় তাদের সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র ছিল এই যুক্তি যে, তিনি জমহুর তথা অধিকাংশ মুসলমানের আক্বীদা পরিপন্থী মত পোষণ করেছেন (?)।[15]

এমতাবস্থায় শায়খ একদিকে আত্মরক্ষা অন্যদিকে দাওয়াতী কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অনুসারীদেরকে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করার নির্দেশ দিলেন।[16] ১১৫৯ হিজরীর (১৭৪৮ খৃঃ) মুহাররাম মাসে সর্বপ্রথম সশস্ত্র জিহাদের মুখোমুখি হলেন এ আন্দোলনের অনুসারীরা।[17] দিরঈইয়া ও অন্যান্য স্থান থেকে হিজরত করে আসা শহুরে ও বেদুঈন অনুসারীরা গোত্রীয় বিভক্তির উঁচু দেওয়াল গুঁড়িয়ে ঈমানের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে গেল।[18] এ এক অপূর্ব দৃশ্য, যা প্রায় সহস্র বছর পূর্বে ইসলামের স্বর্ণযুগে পরিদৃষ্ট হয়েছিল। এভাবে আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদের আন্তরিক সহযোগিতায় ওয়াহ্হাবী আন্দোলন অবশেষে চূড়ান্ত স্তর তথা জিহাদের স্তরে উপনীত হ’ল।

১১৭৯/১৭৬৫ খৃষ্টাব্দে আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদ মৃত্যুবরণ করেন এবং তদস্থলে তদীয় পুত্র আব্দুল আযীয শাসনভার গ্রহণ করেন। তিনিও পিতার মতই শায়খের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতেন এবং তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী রাজ্য পরিচালনা করতেন। তাঁর আমলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহের উপর দিরঈইয়ার নিরংকুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর হাতেই ১১৮৭ হিঃ/১৭৭৩ খৃষ্টাব্দে দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর লড়াই চলার পর অত্যাচারী শাসক দাহ্হাম বিন দাওয়াসের কর্তৃত্বাধীন রিয়ায নগরী পদানত হয়। এই বিজয়ের পর শায়খ তাদরীস ও তা‘লীমের কাজে পুরোপুরিভাবে আত্মনিয়োগ করেন। যদিও আমীর আব্দুল আযীয যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর অনুমতি ও পরামর্শ ছাড়া সিদ্ধান্ত নিতেন না।[19]

১২০৬ হিঃ/১৭৯২ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুর[20] পূর্ব পর্যন্ত মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব প্রায় ৫০ বছর যাবৎ দাওয়াত ও জিহাদের এই বন্ধুর ময়দানে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদের মৃত্যুর পর তাঁর পরবর্তী বংশধরগণও তাঁকে সমানভাবে সহযোগিতা করেন এবং তাঁর দাওয়াত ছড়িয়ে দিতে বিরাট ভূমিকা রাখেন। তাঁর তাক্বওয়া, সত্যনিষ্ঠা, অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা, সাহস, দৃঢ়চিত্ততা, পার্থিব মোহহীনতা আর ইখলাছের বরকতে মানুষ বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা কুসংস্কার ও বিকৃত রসম-রেওয়াজ থেকে পবিত্র হয়ে দলে দলে আবার বিশুদ্ধ ইসলামের দিকে প্রত্যাবর্তন শুরু করল। শিরক ও বিদ‘আতের যাবতীয় জঞ্জালকে ধূলিসাৎ করে তদস্থলে তাওহীদ ও সুন্নাতের নতুন রাজপথ নির্মাণ করল। জাযীরাতুল আরব আর হারামাইন শরীফাইন থেকে কবর-মাযার পূজা সংস্কৃতির উচ্ছেদ সাধিত হ’ল চিরতরে। আর তদস্থলে নির্মিত হ’ল নতুন মসজিদ ও ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র। প্রতিষ্ঠিত হ’ল যাকাত আদায় কেন্দ্র ও ইসলামী আদালত।[21] দেশের প্রান্তে প্রান্তে দ্বীনী হুকুম-আহকাম শিক্ষাদানের জন্য দাঈ ও বিচারক প্রেরিত হ’ল। মানুষ দ্বীনকে নতুন করে চিনতে শিখল। মরুময় আরবের বিস্তীর্ণ বালুকাসমুদ্রে দেখা দিল চক্ষু শীতল করা এক প্রশান্ত মরুদ্যান। ফিরে এল সহস্র বছর পূর্বে গত হওয়া সেই দ্বীনী নবজাগরণের প্রাণোচ্ছ্বাস। সর্বত্র বইতে লাগল হক্ব ও ন্যায়ের অনাবিল ফল্গুধারা।

মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাবের হাত ধরে এভাবেই আরবের বুকে আল্লাহর দ্বীনের এক অনন্যসাধারণ বিজয় সাধিত হ’ল। সূচিত হ’ল মুসলিম বিশ্বের জন্য এক অনুসরণীয়, অনুপ্রেরণাদায়ক দৃশ্যপট, যা মহাকালের বুকে গেঁথে দিয়েছে ইসলামের আরো একটি মহত্তম বিজয়ের শুভ্র নিশান।

তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহ :

শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করেছেন দরস-তাদরীস আর দাওয়াত ও জিহাদের ময়দানে। হক্বের দাওয়াতকে সর্বমহলে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি প্রচলিত প্রায় সব মাধ্যমই ব্যবহার করেছিলেন। খুৎবা প্রদান, পত্র প্রদান, প্রতিনিধি প্রেরণ, শিক্ষাদান, ইলমী বিতর্ক, গ্রন্থ রচনা এবং সর্বশেষ জিহাদের ময়দানে পদার্পণ- অর্থাৎ এমন কোন ক্ষেত্র বাকী ছিল না যেখানে তিনি পদচারণা করেননি। বাস্তব কর্মজগতে এই ব্যস্ততার ফলে তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহ প্রচলিত অর্থে ‘গ্রন্থ’ হয়ে উঠেনি; বরং তা হয়েছে মানুষের কাছে দাওয়াত পৌঁছনোর একটি মাধ্যম। তাই তাঁর প্রায় রচনাই দেখা যায় খুব সংক্ষিপ্ত, সহজ-সরল এবং সর্বজনবোধ্য ভাষায় রচিত। এজন্য লেখক হিসাবে তাঁর মূল্যায়নে স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত বিশিষ্ট আমেরিকান গবেষক জামালুদ্দীন জারাবোজো যথার্থই লিখেছেন, তাঁর প্রকৃত জ্ঞানবত্তা ও লেখনী শক্তির পরিচয় তাঁর লিখিত গ্রন্থের চেয়ে বরং চিঠি-পত্রেই অধিক প্রকাশ পেয়েছে।[22] 

তাঁর রচনায় ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ বা ইবনুল ক্বাইয়িম প্রমুখ সংস্কারকের মত পান্ডিত্য অথবা ছূফীবাদী, মুতাকালিলম, ফিক্বহবিদ বা গ্রীক দর্শনের প্রভাবপুষ্ট দার্শনিকদের মত জটিল ভাববিলাস, যুক্তি-তর্ক ও উন্নত ভাষাশৈলীর সমাহার নেই; কিন্তু এটা সুনিশ্চিত যে, যা লিখেছেন তা একেবারেই জটিলতামুক্ত, অকপট, সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন। একমাত্র পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহকেই উৎস হিসাবে গ্রহণ করেছেন বলে কোনরূপ অতিরঞ্জন, অতিকথন সেখানে স্থান পায়নি। তাঁর লেখকসত্তার বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে এখানেই। তবে সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর সংক্ষিপ্ত এ ক’টি পুস্তিকাই এমন একটি বিপ্লবী আন্দোলনের জীবন্ত স্বাক্ষর বহন করে চলেছে, যা সমগ্র মুসলিম বিশ্বজুড়ে এক বিরাট পট-পরিবর্তনকারী ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কার আন্দোলনে সফল নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই জামালুদ্দীন আফগানী সম্পর্কে আমীর শাকীব আরসালানের করা একটি প্রসিদ্ধ মন্তব্য শায়খের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য-فإنه لم يكن يحفل بوفرة التصانيف وإنما كان يؤلف أمما ويصنف ممالك- অর্থাৎ ‘তিনি অধিক লেখনীর বহর রেখে যেতে পারেননি বটে; কিন্তু রচনা করে গেছেন জাতিসমূহ আর রাষ্ট্রসমূহের ভিত্তি’।[23] 

তাঁর লিখিত পুস্তকসংখ্যা ১৬টির অধিক। যার মধ্যে ‘কিতাবুত তাওহীদ’ (كتاب التوحيد) সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। এ গ্রন্থটিকে তাঁর আন্দোলনের সারনির্যাস বলা চলে। এর বেশ কয়েকটি আরবী ভাষ্যগ্রন্থ রচিত হয়েছে। যার মধ্যে ‘ফাতহুল মাজীদ’ গ্রন্থটি আরববিশ্বে বিশববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্যসূচীভুক্ত।[24] তার পরবর্তী রচনা ‘কাশফুশ শুবহাত’(كشف الشبهات) পূর্ববর্তী গ্রন্থেরই উপসংহার হিসাবে লিখিত হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল- উছূলুছ ছালাছাহ ওয়া আদিল্লাতুহা (الأصول الثلاثة وأدلتها), কিতাবুস সীরাহ (كتاب السيرة)-যেটি সীরাতে ইবনে হিশামের তালখীছ (সংক্ষিপ্তসার) হিসাবে রচিত হয়েছে, আল-হাদিউন নবভী الهدي النبوي))-যেটি যাদুল মা‘আদের তালখীছ হিসাবে রচিত হয়েছে এবং মাসায়েলুল জাহেলিয়াহ (مسائل الجاهلية)- যেটি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব কর্তৃক ‘ইসলাম ও জাহেলিয়াতের দ্বন্দ্ব’ শিরোনামে বাংলায় অনুদিত হয়েছে। তাঁর অধিকাংশ লেখনী আক্বীদা বিষয়ক। বাকিগুলো তাফসীর, হাদীছ, ফিক্বহ এবং ইতিহাস বিষয়ক। এছাড়া দেশ-বিদেশের আলেম-ওলামা ও আমীর-ওমারাদের নিকট তাঁর প্রেরিত চিঠিপত্রসমূহকে একত্রিত করেছেন তাঁর ছাত্র হুসাইন বিন গান্নাম স্বীয় গ্রন্থে। যা পরবর্তীতে পৃথকভাবে ৩৭৩ পৃষ্ঠায় গ্রন্থাবদ্ধ হয়ে ‘চিঠিপত্র সমগ্র’ নামে প্রকাশিত হয়েছে।[25] ১৯৮০ খৃষ্টাব্দে রিয়াযের মুহাম্মাদ বিন সঊদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শায়খের রচনাসমগ্র, চিঠিপত্র ও ফৎওয়াসমূহ একত্রিত করে ১২ খন্ডের একটি সংকলনগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।[26]

শায়খের সহযোগীবৃন্দ ও ছাত্রবৃন্দ :

শায়খ এক দিক দিয়ে খুব ভাগ্যবান ছিলেন এই জন্য যে, তিনি তাঁর দাওয়াত প্রসারে যোগ্য সাথী পেয়েছিলেন, যা পৃথিবীর অধিকাংশ সংস্কারকের ভাগ্যে জুটেনি। দিরঈইয়ার আমীরের সাথে বায়‘আতবদ্ধ হওয়ার পর আমীরসহ আমীরের তিন ভ্রাতা মুশারী, ছুনিইয়ান ও ফারহান তাঁকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেন। দিরঈইয়ার ওলামায়ে কেরামের মধ্যে যারা তাঁর অন্তরঙ্গ সহযোগী ছিলেন তাদের মধ্যে মুহাম্মাদ আল-হুযাইমী, আব্দুল্লাহ বিন দুগায়ছীর, সুলায়মান আল-উশায়ক্বারী ও মুহাম্মাদ বিন হুসায়েনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বৃটিশ কুটনৈতিক ফিলবী লিখেছেন, ‘এঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন ওয়াহ্হাবী আন্দোলনের এক এক জন বীর যোদ্ধা, যাদের নাম আজও পর্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হয়। এঁদের উত্তরাধিকারীরাও ওয়াহ্হাবী রাজত্বের কেন্দ্রস্থলে বিশেষ সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী বিবেচিত হ’তেন।[27]

শায়খের ছাত্ররাও তাঁর জন্য বিরাট সম্পদে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁর অগণিত ছাত্রের মধ্যে শতাধিকই নবগঠিত ওয়াহ্হাবী রাজ্যের বিশিষ্ট আলেম ও বিচারক হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। ওয়াহ্হাবী আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ দিকপালদের মধ্যে আমীর মুহাম্মাদ বিন সঊদের পুত্র আব্দুল আযীয ও তদীয় পুত্র সঊদ বিন আব্দুল আযীয ছিলেন তাঁরই ছাত্র ।[28]

এছাড়া শায়খের ছাত্র হিসাবে তাঁর চারজন সন্তান এবং তাঁদের সন্তানেরাও এ আন্দোলনের প্রচার ও প্রসারে বিরাট ভূমিকা পালন করেন। জেষ্ঠ্য সন্তান হুসাইন দৃষ্টিহীন হওয়া সত্ত্বেও যোগ্য আলেমে দ্বীন হিসাবে প্রসিদ্ধি অর্জন করেন এবং দিরঈয়ার বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তদীয় পুত্র আলী, হাসান, আব্দুর রহমান প্রত্যেকেই রাষ্ট্রীয় বড় বড় দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। দ্বিতীয় সন্তান আব্দুল্লাহ খ্যাতনামা আলেম ও লেখক ছিলেন। তিনি সঊদ বিন আব্দুল আযীযের সাথে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং বীর বিক্রমে যুদ্ধের পর শত্রুসৈন্যদের হাতে বন্দী হন। পরে যুদ্ধবন্দী হিসাবে মিসরে নীত হন এবং সেখানেই কারারুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তৃতীয় সন্তান আলীও খুব মুত্তাকী ও পরহেযগার আলেম ছিলেন। তাঁকে বিচারক পদের জন্য নির্বাচন করা হ’লেও তাক্বওয়াশীলতার কারণে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। কনিষ্ঠ সন্তান ইবরাহীমও একজন শিক্ষাগুরু ছিলেন। ঐতিহাসিক ওছমান বিন আব্দুল্লাহ বিন বিশর ছিলেন তাঁরই ছাত্র। তিনিও বিচারকের দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। শায়খের পৌত্রদের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতি লাভ করেছিলেন শায়খ আব্দুর রহমান বিন হাসান যিনি একাধারে রিয়ায নগরীর বিচারক ও খ্যাতনামা লেখক ছিলেন। তাঁর সন্তানরাও আপন আপন ক্ষেত্রে খ্যাতির অধিকারী হয়েছিলেন।[29]

অন্যান্য খ্যাতনামা ছাত্রদের মধ্যে আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ আল-হুসাইন, হামাদ বিন নাছির বিন ওছমান বিন মু‘আম্মার, মুহাম্মাদ বিন সুওয়াইলিম, আব্দুর রহমান বিন খুমাইয়িস, হুসায়েন বিন গান্নাম প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

[চলবে]

আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব

এম.ফিল গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

[1]. এই শহরটি বর্তমানে দিরঈইয়া নগরীর একটি উপশহর। দিরঈইয়া থেকে প্রায় ৩০ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে এর অবস্থান।

[2]. ওছমান বিন আব্দুল্লাহ বিন বিশর, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১/৪১; উল্লেখ্য যে, দিরঈইয়া নগরী সঊদী আরবের রাজধানী রিয়ায থেকে প্রায় ২০ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি রিয়াদ প্রভিন্সেরই অন্তর্ভুক্ত একটি যেলা। সঊদী রাজপরিবারের প্রাচীন আবাসস্থল হওয়ায় সঊদী সরকার এই শহরকে পর্যটন শহরে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এখানে বেশ কিছু প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। এজন্য ২০০০ সালে ইউনেস্কো এই যেলার তুরাইফ অঞ্চলকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য সাইট’ হিসাবে ঘোষণা করেছে। দ্রঃ উইকিপিডিয়া

[3]. ইবনে বিশর বর্ণনা করেন, আমীরের স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণা ও বুদ্ধিমতী। তিনিই আমীরকে শায়খের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘এই লোকটিকে আল্লাহ্ই এখানে নিয়ে এসেছেন, তিনি আমাদের জন্য গণীমত। আপনি এখনই আল্লাহ নির্ধারিত এই গণীমত সংগ্রহ করুন (ইবনে বিশর, ১/৪২) তবে মুনীর আল-আজলানী ও আল-উছায়মীন বলেন, এ ঘটনা যথেষ্ট প্রমাণসাপেক্ষ নয়, বরং অবস্থাদৃষ্টে জোর দিয়ে বলা যায় যে, মুহাম্মাদ বিন সঊদই তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেনদ্রঃ আল-উছায়মীন, প্রাগুক্ত, ৫৪ পৃঃ

[4]. ইবনে বিশর, প্রাগুক্ত, ১/৪২ পৃঃ ।

[5]. ইবনে বিশর, প্রাগুক্ত, ১/৪২ পৃঃ; হুসায়েন বিন গান্নাম, প্রাগুক্ত, ৮৭ পৃঃ।

[6]. মুহাম্মাদ বিন সউদ এ দু’টি শর্তারোপের মাধ্যমে শায়খের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন- ১. যদি আল্লাহ কখনো বিজয় দান করেন তবে শায়খ যেন তাঁকে ছেড়ে অন্যত্র না যান। ২. ফসল তোলার সময় জনগণের কাছ থেকে বার্ষিক যে কর নেয়া হয় তা যেন রদ না করেন। শায়খ প্রথম শর্তে একমত হলেন, তবে দ্বিতীয় শর্তের সাথে সরাসরি একমত না হয়ে বললেন, আশা করি আল্লাহ আপনাকে অনেক বিজয়ের মুখ দেখাবেন, আর তাতে আপনি এত গণীমত লাভ করবেন যে আপনার কর আদায়ের প্রয়োজনই হবে না (ইবনে গান্নাম, ৮৭ পৃঃ)। আহমাদ আত্তার, উছায়মীন, ভ্যাসিলেভ প্রমুখ লেখকবৃন্দ শায়খের এই নৈতিক দৃঢ়তার প্রশংসা করে বলেন, ‘এরূপ পরিস্থিতিতেও যা ন্যায় ও সত্য- তা প্রকাশ করতে শায়খের পিছপা না হওয়া প্রমাণ করে যে, কুরআন ও সুন্নাহর উপর অটল থাকার ব্যাপারে তিনি কতটা সতর্ক ছিলেন। দ্রঃJamaal Al-Din M. Zarabozo, Ibid, P. 40

[7]. ড. মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আস-সালমান, প্রাগুক্ত, ১২৬ পৃঃ।

[8]. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে উপাসনার যোগ্য মনে করা বা সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী মনে করা, আল্লাহর আইনকে উপেক্ষা করে মানবরচিত আইনকে শ্রেষ্ঠ মনে করা, এসবই শিরকের পর্যায়ভুক্ত অপরাধ।

[9]. আহমদ বিন হাজার আলে বুত্বামী, প্রাগুক্ত, ৩১ পৃঃ, আল-হুকায়েল, প্রাগুক্ত, ৬০ পৃঃ।

[10]. তাঁর দাওয়াত প্রদানের ভঙ্গি ছিল খুবই স্বহৃদয় ও দরদপূর্ণ। তিনি যথাসম্ভব চাইতেন তাঁর বিরোধীদের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসতে, যাতে তাদের ভুলগুলো যথার্থভাবে ধরিয়ে দিতে পারেন। কেননা লেখনীর মাধ্যমে সব সময় ভুল ধারণা দূর করা যায় না। দ্রঃ আব্দুল মুহসিন ইবনে বায, রাসায়েলুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দিল ওয়াহ্হাব আশ-শাখছিয়্যাহ দিরাসাহ দাআভিয়াহ (রিয়ায: দারুল ইশবেলিয়া; ২০০০ খৃঃ), ১/১৩৫-১৩৬ পৃঃ। 

[11]. আববাস মাহমূদ আল-আক্কাদ, প্রবন্ধ : আল-ইসলাম ফিল ক্বারনিল ইশরীন, মাওসু‘আতু আববাস মাহমূদ আল-আক্কাদ আল-ইসলামিয়াহ (বৈরূত : দারুল কুতুব আল-আরাবী, ১ম প্রকাশ : ১৯৭০ খৃঃ), ৪/৬০৮ পৃঃ।

[12]. ইবনে বিশর, প্রাগুক্ত, ১/৪২ পৃঃ।

[13]. হুসায়েন বিন গান্নাম, প্রাগুক্ত, ৮৯ পৃঃ; ইবনে বিশর, প্রাগুক্ত, ১/৪৬ পৃঃ।

[14]. হুসায়েন বিন গান্নাম, প্রাগুক্ত, ৮৯ পৃঃ।

[15]. ছিয়ানাতুল ইনসান’ গ্রন্থের ভূমিকা দ্রষ্টব্য; গৃহীত : আহমদ বিন হাজার আলে বুত্বামী, প্রাগুক্ত, ১২২ পৃঃ।

[16]. তবে এই সশস্ত্র সংগ্রাম ছিল আত্মরক্ষামূলক। শায়খ নিজেই আব্দুর রহমান আল-সুওয়াইদীকে লেখা এক পত্রে বলেন, আজ পর্যন্ত আমরা কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইনি কেবলমাত্র মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্য ছাড়া (আল-হুকায়েল, প্রাগুক্ত, ৬৩ পৃঃ)। 

[17]. আল-হুকায়েল, প্রাগুক্ত, ৬৩ পৃঃ; রিয়াযের শাসক দাহ্হাম বিন দাওয়াস মানফুহাহ রাজ্যে আক্রমণ চালালে এই যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

[18]. Jamaal Al-Din M. Zarabozo, Ibid, P.44.

[19]. মাসঊদ আলম নদভী, প্রাগুক্ত, ৫৭ পৃঃ।

[20]. ৯২ বছর বয়সে এই আজীবন মুজাহিদ যখন নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান তখন তিনি কোন উত্তরাধিকার সম্পদ রেখে যাননি। যুদ্ধকালীন গণীমত হিসাবে প্রাপ্ত সম্পদ তিনি অকাতরে বিলিয়ে দিতেন অন্যের সাহায্যার্থে। আর ততদিন তিনি দেখে ফেলেছেন তার দাওয়াত নজদের সর্বত্র ও আল-আহসার অধিকাংশ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তার অনুসারীরা হেজাযের শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করছে। দ্রঃ ইবনে গান্নাম, পৃঃ ৯০; Jamaal Al-Din M. Zarabozo, P. 56

[21]. ছালেহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দিল আযীয আলে শায়েখ, বাহছুন হাওলাশ শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দিল ওয়াহ্হাব ও হারাকাতিহিল মুজাদ্দিদাহ (রিয়াদ : ১৪১৯ হিঃ), গৃহীত : www.saaid.net

[22]. Jamaal Al-Din M. Zarabozo, Ibid, P.141.

[23]. মাসঊদ আলম নদভী, প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৫৯।

[24]. এটি রচনা করেছেন শায়খেরই পৌত্র শায়খ আব্দুর রহমান বিন হাসান আলে শায়েখ (মৃঃ ১২৮৫হিঃ/১৮৬৮খৃঃ)।

[25]. আহমদ বিন হাজার আলে বুত্বামী, প্রাগুক্ত, ৩১ পৃঃ; আব্দুল মুহসিন বিন উছায়মীন বিন বায তাঁর এই চিঠিসমূহের উপর পৃথক গবেষণা থিসিস রচনা করেছেন, যা ২০০০ সালে দুই খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। দ্রঃJamaal Al-Din M. Zarabozo, P.141.

[26]. মাসঊদ আলম নদভী, প্রাগুক্ত, ১৭১ পৃঃ।

[27]. প্রাগুক্ত, ৫৫ পৃঃ।

[28]. Jamaal Al-Din M. Zarabozo, Ibid, P.154.

[29]. মাসঊদ আলম নদভী, প্রাগুক্ত, ৭২ পৃঃ; Jamaal Al-Din M. Zarabozo, Ibid, P.154.






ইস্রাঈলীদের মন্দ পরিণতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ঈমান (শেষ কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
ছাহাবায়ে কেরামের প্রতি আমাদের কর্তব্য (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
হাদীছ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পরিক্রমা - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
জুম‘আর পূর্বে সুন্নাতে রাতেবা : একটি পর্যালোচনা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত (৭ম কিস্তি) - মুযাফফর বিন মুহসিন
আল্লাহর জন্য কাউকে ভালবাসা (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রতি দরূদ পাঠের গুরুত্ব ও ফযীলত (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
শরী‘আহ আইন বনাম সাধারণ আইন : একটি পর্যালোচনা - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
মানুষের দো‘আয় শামিল হওয়ার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কর্তব্য - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
যাকাত সম্পর্কিত বিবিধ মাসায়েল (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
আরও
আরও
.